কি_নেশায়_জড়ালে #পর্ব_৫

#কি_নেশায়_জড়ালে
#পর্ব_৫
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে।
রূপা সেই দিন রাতেই নিজের বাড়িতে চলে আসে।
তারপর কেটে গেছে পনেরো দিন।
রূপা নিজের বাসায় এসে সোহা সহ সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
কাল ওর একটা ইন্টারভিউ আছে। এখনি খুব নার্ভাস লাগছে। অতীতের সব কিছু সে ভুলে যেতে চায়। অতীতের জন্য বর্তমান নষ্ট করতে চায় না। অনেক হয়েছে এখন নিজের স্বপ্ন পূরণের লড়াইয়ে নেমে পড়বে সে। অতীতে যা হয়েছে সবটাই একটা কালবৈশাখী ঝড় যা হঠাৎ ওর জীবনে এসে জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়ে গেছে। সে আর অতীতে ফিরতে চায় না আর আহনাফ এর কাছে তো কখনই না। প্রতারক, ঠকবাজ মানুষকে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেওয়া যায় না। বিশ্বাস নিয়ে যেই মানুষ খেলে, ভালোবাসা নিয়ে যেই মানুষ অভিনয় করতে পারে তার কাছে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আজও সেই দিনের আহনাফ এর বলা কথাগুলো রূপার হৃদয়ে রক্ত ক্ষরন করায়। সব স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে। একবার রূপার দিকে ফিরে তাকায়নি সবার সামনে অপমান করেছে। সেই দিনের সেই ভিডিও রূপার জীবন মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে ছিলো। ঘৃণা করে সে আহনাফ নাম টা কেও।

রূপার আম্মু এসে ডেকে গেছে কয়েক বার খাবার খাওয়ার জন্য। রূপা খাবে না বলে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরলো।

না এই পনেরো দিনে কারো সাথে দেখা হয়নি রূপার৷ আহনাফ এর কথা মনে পড়লেই রাগে, ক্ষু’ভে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিতো রূপা।

সকালের সূর্যের আলো চোখে পড়তেই রূপা বালিশ দিয়ে নিজের চোখ ডেকে নিলো। আবার ঘুমিয়ে পরলো।
রূপার আম্মু এসে রূপাকে অনেক বার ডেকে গেলো কিন্তু তা তে রূপা একটু নড়লো ও না।
কিছুক্ষন পর কেউ এসে রূপার উপর পানি ডেলে দিলো।
ভয়ে লাফ দিয়ে শুয়া থেকে উঠে বসলো রূপা।
সামনে তাকিয়ে দেখে মাহি কোমরে হাত দিয়ে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রূপার দিকে।
রূপা কিছুটা ভীতু চোখে মাহির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ কি হয়েছে ডাইনী এভাবে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছিস কেনো..? বাচ্চা মেয়ে ভয় পাই তো।
মাহি রূপার সামনে ঘড়ি ধরে বললো, ‘ দেখ কয়টা বাজে..?’

রূপা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো আমার চাকরি!! ইন্টারভিউ দেওয়ার আগেই বাদ পরে গেলাম দোস্ত।

মাহি রূপার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আরও ৩০মিনিট সময় আছে জলদি রেডি হয়ে নে। ‘

রূপা তারাতারি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো। শুভ্র রঙের একটা থ্রি পিছ বের করে পড়ে নিলো। চুল গুলো সুন্দর করে বিনুনি করে নিলো।

মাহি রূপার দিকে তাকিয়ে বললো,’ আজ শুনলাম সন্ধ্যায় নাকি নতুন ভাড়াটিয়া উঠবে..?’
রূপা মাহির দিকে না তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ একবার আক্কেল হয়নি আবার নতুন ভাড়াটিয়ার পেছনে লাগা শুরু করবি নাকি..?’
মাহি লজ্জা মাথা নিচু করে নিলো।
রূপাদের বাসার উপর তলায় একটা ছেলে ভাড়াটিয়া ছিলো দেখতে মাশাল্লাহ। প্রথম দেখায় মাহি প্রেমে পড়ে যায়। প্রতি দিন রূপার বাহানা করে ছেলেকে দেখতে আসতো মাহি৷ রূপাও সেটা বুঝতে পারতো। একদিন মাহি ভাবলো ছেলেটাকে প্রপোজ করবে ঠিক সেই দিন ছেলের বাসায় ওর বউ এসে হাজির। শুধু বউ না সাথে বাচ্চাও।

মাহির দিল গেলো ভেঙে। বেচারি যখন যাকে পছন্দ করে তারি গার্লফ্রেন্ড না হয় বউ থাকে। আসলে হাঁটতে বসতে যার-তার উপর ক্রাশ খেলে বাঁশ তো ফ্রী তে খেতেই হবে।

রূপা রেডি হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
রূপার আব্বু সোফায় বসে পেপার পড়ছেন৷
রূপা ওর আব্বুর কাছে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

কোম্পানির সামনে রিক্সা থেকে নেমে রূপা অবাক হয়ে গেলো। এতো বড় কোম্পানি!!

মাহি রূপা কে বলে উঠলো, ‘ দোস্ত নতুন বস কিন্তু খুব রাগী আর উনার নিয়মের বাহিরে কেউ গেলেই সাথে সাথে বের করে দেয়। ‘

রূপা কিছু না বলে ঘড়ির দিকে তাকালো পাঁচ মিনিট বাকি আছে।

রূপা বসে আছে ইন্টারভিউ রুমের সামনে।

মাহি নিজের ক্যাবিনে চলে গেছে । আজ দুই মাস হলো সে এই কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে।

রূপার ইন্টারভিউ সময় হলে সে গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে বের হলো।
মন বলছে চাকরি হবে না। ইন্টারভিউ ভালো হয়নি। মন খারাপ করে বসে আছে ।

দশ মিনিট পর একজন মেয়ে এসে বললো,’ এখানে রূপা কে..?’
রূপা দাঁড়িয়ে বললো “আমি”

~ আপনার চাকরি হয়ে গেছে। আপনি বড় স্যারের সাথে দেখা করে আসুন।

রূপা থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে। ইন্টারভিউ একদম ভালো হয়নি। চাকরি কিভাবে হলো..? হয়তো আমার থেকে ভালো কেউ ইন্টারভিউ দিতে পারেনি তাই হয়েছে। এইসব ভেবে নিজেকে বুঝালো রূপা।

~ আমার সাথে আসুন কিছু এগ্রিমেন্ট আছে আপনার সাইন লাগবে।

রূপা সব কিছু মেনে সাইন করে দিলো।

ম্যানেজার সাহেব এসে রূপাকে নিয়ে গেলো বস এর রুমে।

অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলো ম্যানেজার সাহেব। রূপার বুক ভয়ে ধুকপুক করছে। আসতে আসতে ম্যানেজার সাহেব বস এর বিষয় অনেক কথা রূপাকে বলেছে। বস খুব বদমেজাজী লোক। কাজে অবহেলা, অনিয়ম একদম পছন্দ করেন না।

বস ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ উনাকে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন তো ম্যানেজার সাহেব। ‘

রূপা নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না। সামনে কি সত্যি সেই লোকটা বসে আছে নাকি এটা ওর কল্পনা! রূপা নিজের হাতে নিজে চিমটি কাটলো নাহ এটা তো সত্যি। এই কোম্পানির মালিক তাহলে এই লোক!!?

ম্যানেজার সাহেবঃ জ্বি স্যার সব বুঝিয়ে দিয়েছি।

সাজ্জাদ চৌধুরী ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালো।

সাথে ভ্রু কুঁচকে ফেললো সাজ্জাদ। এই মেয়ে এখানে কি করছে…?

সাজ্জাদ কে চুপ করে থাকতে দেখে ম্যানেজার সাহেব বললো,’ স্যার আপনার নতুন পিএ।

সাজ্জাদ গম্ভীর মুখে ম্যানেজার এর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ ম্যানেজার সাহেব আপনি এখন আসতে পারেন। ‘

ম্যানেজার একবার রূপার দিকে তাকিয়ে সাজ্জাদ এর দিকে তাকালো। জোর পূর্বক মুখে হাসি ঝুলিয়ে বেরিয়ে গেলো।

সাজ্জাদ রূপাকে বসতে বললো।

রূপা ভয়ে ভয়ে বসলো। সে তো জানতো না এটা সাজ্জাদ চৌধুরীর কোম্পানি। জানলে কখনো পা রাখতো না এই কোম্পানিতে।

সাজ্জাদ নিরবতা ভেঙে বললো,’ চা নাকি কফি..?’

রূপা মাথা নেড়ে বুঝালো কিছু চায় না।

সাজ্জাদঃ আপনি কি মুখে কথা বলতে পারেন না?
রূপা কিছু বললো না। রূপা সবার সামনে সাহসী হলেও এই এক লোক যাকে দেখলে রূপার মুখ দিয়ে কথা বের হতে চায় না।
রূপা মাথা নিচু করে বললো, ‘ আমার কিছু লাগবে না। আমি এখন আসি। ‘
সাজ্জাদঃ অনেক দিন পর দেখা হলো। কেমন আছেন..?
রূপাঃ জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি..?সাজ্জাদঃ আলহামদুলিল্লাহ।
রূপা বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো, ‘ আমি এই চাকরি করবো না।’
সাজ্জাদ শান্ত দৃষ্টিতে রূপার দিকে তাকিয়ে বললো,’ কেনো জানতে পারি..?’
রূপা চুপ করে আছে। আসলে তো কোনো কারন নেই। কি বলবে সে..? রূপা চায়না কখনো এই চৌধুরী বাড়ির কারো সাথে ওর দেখা হোক। কিন্তু এটা কিভাবে বলবে সাজ্জাদ কে।

রূপা কে চুপ থাকতে দেখে সাজ্জাদ বলে উঠলো, ‘ আপনি হয়তো সাইন করার সময় এগ্রিমেন্ট পেপার গুলো ভালো করে লক্ষ করেননি। ‘
সাজ্জাদ কাউকে কল দিয়ে বললো এগ্রিমেন্ট পেপার গুলো নিয়ে ওর ক্যাবিনে আসতে।
সাথে সাথে একটা ছেলে এসেছি পেপার গুলো দিয়ে গেলো।
সাজ্জাদ রূপার সামনে পেপার গুলো রেখে বললো,’ আরেক বার দেখে নিন৷ ‘

রূপা পেপার গুলো হাতে নিয়ে উল্টিয়ে দেখলো সাথে সাথে ও স্তব্ধ হয়ে গেলো। অবাক চোখে সাজ্জাদ এর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ ছয় মাস আগে নিজ ইচ্ছায় চাকরি ছাড়া যাবে না..? ‘
সাজ্জাদঃ জ্বি।
রূপা আবার বলে উঠলো, ‘ কিন্তু কোম্পানি চাইলে চাকরি থেকে বের করে দিতে পারবে। আপনি চাইলে বের করে দিতে পারেন। ‘
সাজ্জাদ রূপার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ মিস রূপা আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন এটা অফিস। আমাদের বাহিরের জগতে যেই সম্পর্ক আছে তা অফিসের বাহিরে । অফিস এর জগতে আমরা একদম অপরিচিত। আপনি আপনার যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন এখন চাইলেও করতে হবে না চাইলেও। এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করার আগে একবার ভেবে নেওয়া দরকার ছিলো।

রূপা মনে মনে বলে উঠলো, ‘ এই জন্যই মুরব্বিরা বলে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না।’

সাজ্জাদঃ কাল থেকে আপনার জয়েন সময় মতো চলে আসবেন। আমার লেট একদম পছন্দ না।

রূপা কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে বললো, ‘ অবশ্যই এখন আসি’ বলেই বেরিয়ে গেলো।

রূপার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সাজ্জাদ ল্যাপটপ অন করলো। যেখানে রূপাকে দেখা যাচ্ছে সিঁড়ি দিয়ে নামছে আর বিরবির করে কি যেনো বলছে। সাজ্জাদ এক রহস্যময় হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে ল্যাপটপ এর দিকে।

মাহিও বেরিয়ে গেলো। রূপার সামনে এসে বলে উঠলো, ‘ দোস্ত তোর চাকরি হয়েছে..? ‘
রূপা গম্ভীর মুখে মাহির দিকে তাকালো।
মাহি রূপার তাকানো দেখে হেঁসে বলে উঠলো, ‘ একটা চাকরি হয়নি তো কি হয়েছে দোস্ত । কাল আমি আরেকটা চাকরি খুঁজে দিবো। তাও এই কোম্পানি থেকে ভালো কোম্পানিতে। ‘

রূপা মাহির দিকে তাকিয়ে রেগে বলে উঠলো, ‘ আমার চাকরি হয়ে গেছে কিন্তু আমি এই চাকরি করবো না। ‘
মাহি ইয়া বড় হ্যাঁ করে মুখে হাত দিয়ে বলে উঠলো, ‘ দোস্ত তোর শরীর ঠিক আছে তো..?’
রূপাঃ কেনো আমাকে দেখে কি তোর অসুস্থ মনে হচ্ছে..? ‘
মাহিঃ কিছুটা তো লাগছে। দোস্ত এতো বড় কোম্পানিতে চাকরি পেয়েও করবি না। কিন্তু কেনো..?

রূপা কিছু না বলে একটা রিক্সা ডেকে উঠে পরলো।
মাহি মুখ ভার করে রূপার সাথে বসলো।
হঠাৎ মাহি বলে উঠলো, ‘ দোস্ত বস কে দেখছোস..? তুই হয়তো বস কে দেখিস নি। কতো হ্যান্ডসাম, ফর্সা মুখ সাথে চাপ দাঁড়ি। আহ্ তাকানোর স্টাইল, হাঁটার স্টাইল, সব কিছুতেই ফিদা হয়ে যাই। তুই বস কে দেখলে চাকরি ছাড়ার কথাই ভুলে যাবি। ‘

রূপা রেগে বলে উঠলো, ‘ আর একটা কথা বলবি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো। তোর মতো লুচি ভাবিস সবাই কে..!?

মাহি মুখে হাত দিয়ে চুপ হয়ে গেলো। বিশ্বাস নেই সত্যি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে। তখন আর ক্রাশ কে বিয়ে করা হবে না। বাচ্চার মুখ দেখা হবে না। বিয়ের আগেই ক্রাশ বিদবা হয়ে যাবে বাচ্চারা মা হাড়া।

বাসায় আসার পর রূপার আম্মু মেয়ের মুখ দেখে ভাবলেন হয়তো চাকরি হয়নি তাই মন খারাপ।

রূপার আম্মু ঠান্ডা শরবত এনে মেয়েকে দিলেন। রূপা মা’য়ের দিকে তাকিয়ে হাসলো। এই পৃথিবীতে মা-বাবা ছাড়া কেউ আপন হয়না। কেউ এমন নিখুঁত ভালোবাসে না। হয়তো আসে মজা নিতে না হয় আসে অভিনয় করতে।

সন্ধ্যায় রূপার আম্মু রূপার হাতে বিরিয়ানির বক্স দিয়ে বললো,’ রূপা মা আমার দেখ হাতে কতো কাজ একটু কষ্ট করে নতুন ভাড়াটিয়া কে এটা দিয়ে আয়। নতুন এসেছে কি খাবে না খাবে।

রূপা বক্স নিয়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে উপরে তালায় গেলো।

দরজার সামনে গিয়ে কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে কেউ বেরিয়ে আসলো।
রূপা নিচের দিকে তাকিয়ে হাতের বক্সটা বাড়িয়ে দিয়ে বললো,’ আম্মু পাঠিয়েছে.’
~ ধন্যবাদ..
পরিচিত কন্ঠ শুনে রূপা থমকে গেলো। আসতে আসতে চোখ তুলে উপরে তাকালো।সাথে সাথে হাত থেকে বক্স নিচে পড়ে গেলো।
অবাক হয়ে বলে উঠলো, ‘ তুমি!!! ‘

আহনাফ এক গাল হেঁসে বলে উঠলো, ‘ যাক চিনতে পারলে তাহলে।কিন্তু আমার খাবার!
রূপা রাগে গজগজ করতে করতে বললো, ‘ ভালো, ভদ্র ভাষায় কথা আপনাদের মতো ছেলেদের জন্য না। অনেক ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলেছি আমি৷ কিন্তু নির্লজ্জের মতো আমার বাসায় চলে আসলেন। এমনটা কেনো করছেন জানতে পারি..?’
আহনাফঃ যদি সত্যি বলি তাহলে তোমাকে চাই। যদি মিথ্যা বলি তাও তোমাকে চাই।

রূপা রেগে অগ্নি দৃষ্টিতে আহনাফ কে বলে উঠলো, ‘ ভাড়াটিয়া হয়ে এসেছেন ভাড়াটিয়া হয়ে থাকেন। মালিক এর সাথে কথা বলার আগে দশ বার ভেবে নিবেন। না হলে ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করতে আমি দ্বিতীয় বার ভাববো না৷ ‘

আহনাফ আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, ‘ প্লিজ রূপা আর একটা সুযোগ… ‘
রূপা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো, ‘ আজ আপনার মৌ মিতা মৌ কোথায়..? যে ঠকায় সেও ঠকে। আজ আবার প্রমাণ হয়ে গেলো। যা যা নিয়ে এসেছেন সব গুছিয়ে নিন। কাল সকালে এই বাসা খালি চাই আমি। ‘
আহনাফ শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ আমি ছয় মাসের ভাড়া দিয়ে উঠেছি। ছয় মাস আগে যাচ্ছি না।
রূপা আহনাফ এর দিকে তাকিয়ে বললো,’ আপনার টাকা পাঁচ মিনিট এর মধ্যে পেয়ে যাবেন। আর কাল সকালে এই বাড়ি ছেড়ে যাবেন। ‘

রূপা পেছন ফিরতেই আহনাফ রূপার হাত ধরে নিলো।

সাথে সাথে রূপা আহনাফ এর গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
আহনাফ অবিশ্বাস্য চোখে রূপার দিকে তাকালো।
রূপা আঙ্গুল তুলে আহনাফ এর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ দ্বিতীয় বার আমার হাত ধরার সাহস করলে হাত ভেঙে দিবো। কথাটা মাথায় রাখবেন।

আহনাফ রূপার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ মানুষ বদলায় জানতাম তবে এতোটা বদলায় তা জানতাম না । তবে হাত ভাঙে দাও বা যাই করো তাও তো তোমার স্পর্শ পাবো। ‘
রূপা হেঁসে আহনাফ এর সামনে এসে বলে উঠলো, ‘ মানুষ ভালোবাসে জানতাম তবে ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে এতোটা নিকৃষ্ট গেইম খেলে জানতাম না। চারটা বছর কম নয়।কাল যেনো আপনার এই মুখ আমি দ্বিতীয় বার না দেখি। খারাপ ব্যাবহার করতে বাধ্য করবেন না।

চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here