কুড়িয়ে পাওয়া ধন পার্ট-২৯

#কুড়িয়ে_পাওয়া_ধন
#পার্ট_২৯
জাওয়াদ জামী

কান্তা টালমাটাল পায়ে এসে দাঁড়ায় আরমানের কাছে। শক্ত ধরে সামনে দাঁড়ানো বিধ্বস্ত মানুষটার হাত। কিভাবে তাকে শান্তনা দিবে সেই ভাষা কান্তার জানা নেই। ও ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকে তার একান্ত আপনজন পুরুষের থমকে যাওয়া মুখের দিকে।

শহিদ আহমেদ নিজেকে ধাতস্থ করে এগিয়ে আসে রশিদ বেগের দিকে।

” তুমি যা বলছ সত্যি বলছ রশিদ! তোমাকে বিশ্বাস করে, আমার বাড়িতে ঠাঁই দিয়ে আমি কি বড় ভুল করে ফেলেছি? কেন করলে এমন? কি দোষ করেছিল আইরিন? অথচ দেখ বছরের পর বছর ধরে সেই মানুষটাকে আমি অবিশ্বাস করেছি। তার জন্য বুকের ভেতর রা’গ পুষে রেখেছি। কিন্তু আজ এতবছর পর জানলাম, আমার সব রাগ, অবিশ্বাস সবই বৃথা। সে আজ আমার ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমার রা’গে , অবিশ্বাসে তার কিছুই যায় আসেনা। মিছেই আমার এত আয়োজন। ” শহিদ আহমেদ বাচ্চাদের মত হাউমাউ করে কাঁদছেন।

কান্তা আরমানের মুখের দিকে তাকিয়েই থাকে। আরমানের দৃষ্টিতে অবিশ্বাস, বিষাদের মেঘ জমেছে।

” আপনি এভাবে চুপচাপ আছেন কেন। একটিবার কথা বলুন। আপনার এই নিরবতা আমাকে ভিষণ পোড়াচ্ছে। ” কান্তা মলিন গলায় বলল।

” কান্তা, তুমি ঐ ভদ্রলোককে আমার মা সম্পর্কে কিছু বলতে নিষেধ কর। তার মুখে আমার মায়ের নাম শোভা পায়না। সে এত বছর আমার মা’কে মিথ্যা দোষারোপ করেছে। হঠাৎ আজ তার আমার মা’য়ের ওপর এত দরদ উথলায় কেন! তুমি তাকে নিষেধ করে দাও, কান্তা। ” আরমান ওর বাবার দিকে ইশারা করে কান্তাকে বলে। হঠাৎই ও অসহিষ্ণু হয়ে পরেছে।
এরপর কান্তার হাত ছাড়িয়ে, শ্রীজাকে সরিয়ে দিয়ে রশিদ বেগের সামনে এসে দাঁড়ায়।

” এবার তুই আমাকে বল, আমার মা’য়ের সাথে তুই কি করেছিস? আমি পুরোটাই শুনতে চাই। তুই কোন আঁইগুই না করে সবটা বলবি। তার আগে তুই এটা বল, তোর বুক কাঁপেনি আমার মা’য়ের শরীরে হাত দিতে? তোর মনে হয়নি, তুই ধরা পরলে কি হতে পারে? ” আরমানের সম্মোধন সোজা তুইতে নেমে গেছে। সে রশিদ বেগের শার্টের কলার ধরে তাকে পরপর কয়েকটা থাপ্পড় মা’রে। মা’রে’র চোটে রশিদ বেগের ঠোঁট কে’টে গেছে। চোখের কোনে কালশিটে পরেছে।
কান্তা দৌড়ে এসে আরমানকে বাঁধা দেয়।

” আপনি এভাবে তাকে মারছেন কেন! তাকে এভাবে না মে’রে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিন। যাতে কেউ বলতে না পারে, আপনি আইনের রক্ষক হয়েই, আইন নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন। তার আগে উনি মা’য়ের সাথে কি করেছে সেটা শুনে নিন। সে মা’কে কোথায় রেখেছে এটাও জেনে নিন। ” কান্তার কথা শুনে আরমান থেমে যায়। তার বুকের ভিতর ধুকপুক করছে। আবারও ফিরে এসেছে মা’কে চিরতরে হারিয়ে ফেলার ভয়।

” বল শা’লা , স্যারের মায়ের সাথে কি করেছিস তুই? এবার পুরো ঘটনা বল। তারপর তোর একটা ব্যবস্থা করব। ” সেই ওসি এসে রশিদ বেগের ঘাড় চেপে ধরে বলে।

” আমি একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে আইরিনকে দেখি। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। আর আইরিন তখন সেভেনে পড়ে। তখনকার দিনে কয়েকটা গ্রাম মিলে একটা হাইস্কুল থাকত। আমি তখন থাকতাম মায়ের সাথে তার দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে। সেখানে কোন হাইস্কুল না থাকায় আমরা শ্রীখন্ডি হাইস্কুলে পড়তাম। সেখানেই আইরিনকে প্রথম দেখি। তখন থেকেই ওকে ভালো লাগতে শুরু করে। এরপর আমি এসএসসি পাশ করে উপজেলার কলেজে ভর্তি হলাম। আকলিমার বাবা আমাকে খুব ভালোবাসত। একদম নিজের ছেলের মত। তিনি চাইতেন আমি লেখাপড়া শিখি। আমিও তার ইচ্ছে পূরণ করতেই মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করি। কিন্তু কলেজে ভর্তি হলেও আইরিনের প্রতি টান আমার একটুও কমেনা বরং দিনকে দিন বাড়তে থাকে। মাঝেমধ্যে ক্লাস শেষে আইরিনের স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। একদিন সাহস করে ওকে বলে দিলাম আমার মনের কথা। কিন্তু আইরিন রাজি হলোনা। এভাবেই কাটতে থাকে দিন। আমি প্রতিদিন আইরিনের স্কুলের সামনে যাওয়া শুরু করলাম। আইরিনকে বোঝাতে চাইলাম। কিন্তু ও কিছুতেই বুঝতে চায়না। এরইমধ্যে দুই বছর পেরিয়ে গেছে। আমি এইচএসসি পাশ করে জেলা শহরের কলেজে বিএ ভর্তি হলাম। আরেকটা কথা আমি রহমতুল্লাহ খানের বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই সেখানকার সবাই আমাকে ভালোবাসত। রহমতুল্লাহ খানের বোন রাজিয়া খানম আমাকে নিজের ভাইয়ের ছেলের মতই আদর করতেন। তার ছেলে শহিদ ভাইও আমাকে খুব ভালোবাসত। শহিদ ভাইয়ের সাথে আমার খুব জমত। সে তখন ভার্সিটির ছাত্র। অনেকদিন পর একদিন জানলাম শহিদ ভাই একজনকে পছন্দ করে। কিন্তু মেয়েটার নাম তখন ভাই আমাকে জানায়নি। কয়েক বছর কেটে যায়। এরমধ্যে আইরিন এইচএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়। আমিও বিএ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শহিদ ভাই অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে পড়ছে।
একদিন খবর পেলাম শহিদ ভাই বিয়ে করেছে। এই নিয়ে খান পরিবারে ভিষণ অশান্তি শুরু হয়। কারন রাজিয়া খানমের ইচ্ছে ছিল আকলিমাকে ছেলের বউ বানাবে। যদিও আকলিমা শহিদ ভাইয়ের থেকে বেশ ছোট। তবুও দুই পরিবারে কথাবার্তা ঠিক করা ছিল। হঠাৎ করে শহিদ ভাইয়ের বিয়ের খবর শুনে সবাই রে’গে যায়। আমার মা গোপনে আমাকে শহিদ ভাইয়ের বাড়িতে পাঠায় রাজিয়া ফুপুকে একটা সংবাদ দিতে। এখানে বলে রাখি, শহিদ ভাইরা অনেক আগে থেকেই শহরে থাকত। প্রয়োজন ছাড়া গ্রামে যেতনা। সেখানে গিয়েই আমি চমকে যাই শহিদ ভাইয়ের বউ রূপে আইরিনকে দেখে। ফুপুকে মায়ের পাঠানো সংবাদ শুনিয়ে আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। এরপর থেকে মাঝেমধ্যেই সেখানে যাওয়া শুরু করি। আইরিন এসব নিয়ে ভিষণ বিরক্ত ছিল। কিন্তু শ্বাশুড়ির কটুকথা শোনার ভয়ে কাউকে কিছু বলতনা এটা বেশ বুঝতে পারতাম। এভাবেই চলছিল সবকিছু। একসময় আরমানের জন্ম হয়। আর আমার সাথে শহিদ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। আসলে আমি চাইছিলাম সবাইকে নিজের হাতের মুঠোয় আনতে। তাই রাজিয়া ফুপুর কাছে আইরিনের বিরুদ্ধে নানান কথা বলতাম। ত্কে উস্কে দিতাম। এরপর একদিন এলো সেই মহা সুযোগের দিন। আমি শহিদ ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যেয়ে শুনলাম আইরিন ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি গেছে। কিছুক্ষণ পর আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেলাম শ্রীখন্ডি। খোঁজ নিয়ে জানলাম আইরিন সেখানেই আছে। সেখানে বাজারে বসে কাটিয়ে দিলাম সারাদিন। সন্ধ্যায় গ্রামে ফিরে গেলাম। পরদিন সকালে আবার শ্রীখন্ডি গেলাম। দুপুরে দেখলাম আইরিন ছেলেকে নিয়ে ওর ছোট ভাইয়ের সাথে কোথাও যাচ্ছে। আমিও ওদের পিছু নিলাম। কিছুক্ষণ পর বুঝলাম ওরা শহিদ ভাইয়ের গ্রামে যাচ্ছে। আতিক ওর বোনকে শহিদ ভাইয়ের বাড়িতে রেখে সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে চলে যায়। আমি অপেক্ষায় থাকি। রাতে বাড়ির দেয়াল টপকিয়ে ঢুকে পরি বাড়ির ভেতর। সেখানে শুধু আইরিন আর একটা কাজের মেয়ে ছিল। বাইরের ঘরে ওদের বাড়ির পাহারাদার ছিল। আইরিনের ঘরের দরজা খোলা দেখে আমি তরে ঢুকে পরি। আমাকে দেখে আইরিন চমকে যায়। কিন্তু সম্মানের কথা চিন্তা করে কোন চেঁচামেচি করেনা। আমি ওকে অনেকবার করে বোঝানোর চেষ্টা করি, শহিদ ভাইকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু ও আমার কথা শুনতেই চাইছিলনা। এ নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আমি রে’গে গিয়ে আইরিনের গলা টিপে ধরি। রা’গ যখন কমে গেল, তখন দেখলাম আইরিন নিস্তেজ হয়ে গেছে। গলা থেকে হাত সরাতেই ও ধপ করে মেঝেতে পরে যায়। আমি তৎক্ষনাৎ ওকে উঠাতে গিয়ে আবিষ্কার করি ও মা’রা গেছে। আমি ভয় পেয়ে যাই। শহিদ ভাই শুনলে আমাকে খু’ন করে ফেলবে। তার আগেই আইরিনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমি সেই ব্যবস্থাও করলাম। ”

এতক্ষণ যেন উঠানে উপস্থিত সকলেই ঘোরের মধ্যে ছিল। কত সহজেই একটা মানুষ তার কুকীর্তির কথা সবাইকে জানিয়ে দিল! একটুও গলা কাঁপলনা তার!

সব শুনে শহিদ আহমেদের হাত-পা কাঁপছে। শেষ সময়ে মেয়েটা কতইনা কষ্ট পেয়েছে!

আরমানের হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে গেছে রশিদ বেগের কথা শুনে। ওর ইচ্ছে করছে এখনই শয়তানটাকে দু-চার ঘা লাগাতে। কিন্তু কান্তার কারনে তা সম্ভব হয়না। কান্তা ওকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। রাগ হলেও আরমানের ভিষণ ভয় করছে। একটু আগ পর্যন্তও ওর আশা ছিল মা’কে খুঁজে পাবে। কিন্তু এই লোকটা ওর সমস্ত আশা চূর্ণ করে দিয়েছে। এখন ঐ শয়তানটাকে শেষ প্রশ্ন করার সাহস পাচ্ছেনা আরমান। কিভাবে করবে সেই প্রশ্ন! শেষ প্রশ্নের উত্তর শোনার ক্ষমতাযে নেই ওর।

” কু’ত্তা’র বা’চ্চা, এমনভাবে বলছিস যেন কোন সিনেমার গল্প। স্যারের মা’য়ের সাথে এরপর কি করেছিলি? কোথায় রেখেছিস তার ডে’ড বডি? ” ওসি এবার রশিদ বেগের চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকিয়ে দেয়।

” আমি বলছি স্যার। সব বলছি। ” ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে রশিদ বেগ।
ওসি চুল ছেড়ে দিলে পুনরায় কথা বলে।

” আমি আইরিনকে ধরে মেঝেতে কিছুক্ষণ বসে থাকি। আরমান তখন ঘুমাচ্ছিল। অনেক ভেবে একটা উপায় বের করলাম। দেখলাম আইরিনের ব্যাগ গোছানোই আছে। আইরিনকে কাঁধে তুলে নিলাম। আর এক হাতে নিলাম ওর ব্যাগ। আস্তে করে ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম উঠানে। মেইন গেইট খুললাম কোন শব্দ না করে। এরপর ওকে বয়ে নিয়ে গেলাম গোরস্তানের দিকে। শহিদ ভাইদের পারিবারিক গোরস্থান। সেখানে নিয়ে রাখলাম আইরিনকে। চারদিকে চোখ বুলালাম। পছন্দ হল গোরস্তানের ভেতরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোন। সেখানে কেউই যায়না। জায়গাটা প্রায় পরিত্যক্ত। হঠাৎ মনে হল, মাটি খোঁড়ার কিছু আনিনি। আবার ফিরে এলাম শহিদ ভাইয়ের বাড়িতে। আগে থেকেই জানতাম কোথায় কি থাকে। একটা কোদাল নিয়ে বেরিয়ে এলাম। কেউই জানতে পারলনা কিছুক্ষণ আগে কি ঘটেছে। গোরস্থানে এসে মাটি খুঁড়ে পুঁ’তে দিলাম আইরিনের দেহ এবং ব্যাগ। এরপর মাটির উপর বিছিয়ে দিলাম কিছু ডালপালা, ঘাস। এরপর কোদাল নিয়ে বেরিয়ে এলাম। আমি জানতাম শহিদ ভাইদের বাড়ির কেউ মা’রা না গেলে গোরস্থানে কেউ আসবেনা। আর কেউ মা’রা গেলেও ঐ কোনার দিকে কেউ যাবেনা। তাই নির্ভয়ে কাজটা করেছি। এরপর পাশের গ্রামের ঝোপের ভেতর কোদালটা ফেলে দিয়ে আমি শহরে ফিরে যাই। এরপরের ঘটনা সবারই জানা। ”

রশিদ বেগের কথা শেষ হওয়া মাত্রই আরমান ছুটে যেতে চায় গোরস্তানের দিকে। কিন্তু কান্তা আর ওসি মিলে ওকে আটকায়। এদিকে আরমান পাগলামি শুরু করেছে।

” স্যার, ওর নামে এ্যারেষ্ট ওয়ারেন্ট আছে। আগে ওকে থানায় নিয়ে যাই। অফিসিয়ালি ফর্মালিটি পালন করেই আমরা গোরস্থানে যাব। আপনি একটু ধৈর্য্য ধরুন। আমরা কাজটা এমনভাবে করব, যাতে এই হা’রা’মি আইনের ফাঁক গলে বের হতে না পারে। ওর কথামত এখন যদি আমরা গোরস্থানে যেয়ে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করি তবে এটা আমাদের জন্য ভুল হবে। আগে আমরা থানায় এর জবানবন্দি নিই। এরপর অফিসিয়ালি কাজ করলে আমাদের জন্য ভালো হবে। ”

আরমান চিন্তা করে দেখল ওসি ঠিক কথাই বলেছে। ও রশিদ বেগের শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। ওর সাথে আসে বাকি পুলিশেরা।

অফিসিয়ালি অর্ডার নিয়ে আরমান আবার আসে গ্রামে। এবার সরাসরি গোরস্থানে যায়। ওদের বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়ে পায়ে হাঁটার রাস্তার মাথায়ই গোরস্থান।

রশিদ বেগের দেখানো স্থানে মাটি খোঁড়া শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর মাটির নিচ থেকে পাওয়া যায় একটা ক’ঙ্কা’ল। এত বছর পর সেখানে ব্যাগের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়না। ক’ঙ্কা’লও আস্ত নেই। অতি সাবধানে মাটি সরাচ্ছে থানা থেকে আসা লোকজন। হঠাৎ একজন মাটি সরাতে যেয়ে একটা গলার চেইন পায়। চেইনের সাথে একটা বড় লকেট ঝুলছে। সে ওসির হাতে চেইনটা দেয়। মাটির নিচে এত বছর থাকার পর চেইনের কোন সৌন্দর্য চোখে পরেনা। দেখে বোঝাই দায় এটা সোনার চেইন। কিন্তু শহিদ আহমেদ ঠিকই চিনতে পেরেছে। সে এক ছোঁ মেরে চেইনটা ওসির হাত থেকে নেয়।

” এটা আমার আইরিনের চেইন। আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে ওকে আমি এটা উপহার দিয়েছিলাম। সেদিনের পর থেকে ও চেইনটা গলা থেকে খুলতনা। অনেক বলেও ওকে গলা থেকে চেইনটা খোলাতে পারিনি। ” শহিদ আহমেদ সবার সামনেই কেঁদে ফেলেন। চেইনটা তিনি বুকে চেপে ধরে রেখেছেন।

চোখের সামনে মা’য়ের শরীরের অবশিষ্টাংশ দেখে আরমান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা। মায়ের ক’ঙ্কা’লে’র পাশে বসেই আহাজারি করে কাঁদতে থাকে। কেউই ওকে সামলাতে পারছেনা।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here