#কৌমুদিনী
#তাফসিয়া_মেঘলা
#পর্ব ৩১
৫৯
রৌদ্রজ্বল দ্বিপ্রহর চলছে ঝলমলে রৌদ্র কিরণ অলিন্দ আর বড় জানালা দিয়ে প্রবেশ করে কক্ষের অর্ধাংশ হলদেটে আলোয় ভরিয়ে দিয়েছে৷ মেঝেখানা গরম হয়ে আছে৷ থমথমে হয়ে মিফতার কক্ষের কৃত্রিম সাদা মেঝেতে বসে আছে চন্দ্রিকা পরনে তার লাল পার সাদা শাড়ির আচল টা ছড়িয়ে আছে৷ কৃষ্ণ কালো এলোকেশ গুলো মেঝেটা ছুঁয়ে আছে৷
অবচেতন মন নিয়ে বসে আছে চন্দ্রিকা সামনেই দাঁড়িয়ে আছে দুইজন দাসী আর তমা হাতে বাসন্তী রঙের শাড়ি টা৷ চন্দ্রিকার ভাব ভঙ্গি বুঝছে না তারা, সময় পেরিয়েছে থমথমে মহলটা ফের জলজ্যান্ত হচ্ছে যেন৷ সে দিনের পর চার দিন কে’টে গেছে৷ চার দিন যেতে না যেতেই বিয়ের তোরজোর শুরু করলো৷ চন্দ্রিকা ভেবেছিলো মেহনুবা ভে’ঙে পরেছে কিন্তু মেহনুবা নিজে এসে চন্দ্রিকাকে কি সুন্দর শান্ত করে গেলো৷ অথচ নিজের মাঝেই কত কষ্ট চেপে রেখেছে?
ফারহানের খোঁজ চলছে, সে দিন চিলেকোঠার ঘর খুঁজে কিছু রিপোর্ট পেয়েছিলো ফারহান ছোট থেকেই মানুসিক সমস্যায় ভুগছে৷ সে ও জানতো কাউকে বলেনি ব্যাপারটা৷ মারজিয়া সে দিন বলেছে ফারহান হওয়ার পর বলেছিলো ফারহান সব বাচ্চাদের মত স্বাভাবিক নয়৷ মারজিয়া ছেলের বেড়ে উঠা দেখে কথার পাত্তা দেয়নি৷ যাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় সবাই সাইকোপ্যাথ বলে থাকে৷ সাইকোপ্যাথ মুলত পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, নিজে যতই অপরাধ মূলক কাজ করুক না কেন তার কাছে সে নিজে সঠিক৷ সে নিজের ইচ্ছার প্রাধান্য দেয় বেশি তাদের মাথায় অপরাধমূলক চিন্তা ভাবনা বেশি চলে৷
মিফতার কবরের সামনে খাস প্রহরী নিয়োগ দিয়েছে ফারহানের কথা বলা যায় না কি করে আবার৷ আয়াশ মহলের বৈঠকখানায় এসে বসে আছে চন্দ্রিকার সাথে দেখা করার জন্য, তিন দিন যাবত দেখা করতে চাইছে কিন্তু পারছে না৷ চন্দ্রিকা দেখা করবে না বলে না করে দিয়েছে৷ আয়াশ এ নিয়ে ভয়ে আছে সে দিন অনেক কথাই শুনিয়ে দিয়েছিলো আজ নিজের চাকরি নিয়ে ভয়ে আছে এ মেয়ে যেমন একরুখে কি না কি করে দেয়?
চন্দ্রিকাকে এমন থমথমে হয়ে বসে থাকতে দেখে তমা এবার আমতা আমতা করে মুখ খুললো,
” র রানী ম মেহনুবা বলেছে শাড়ি টা পালটে নিতে৷ ”
তমার কথায় ধ্যান ভঙ্গ হলো চন্দ্রিকার৷ রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো তমার দিকে৷ অতঃপর বললো,
” এখান থেকে এসব নিয়ে বিদায় হও তমা৷ বিয়ে করবো বলে রাজি হয়েছি আজই করতে হবে তা আমি জানাইনি কিন্তু৷ ”
তমা পরেছে মহা বিপাকে রানী মেহনুবা রসুইঘরে ব্যাস্ত তার কাছে গেলে সে এখানে পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ তমা ফের সাহস নিয়ে বলে,
“কিন্তু,,,”
চন্দ্রিকা শক্ত কন্ঠে বললো,
“যাবে তুমি এখান থেকে? এসব রেখে বিদায় হও এখান থেকে৷”
তমা যেন স্বস্থি পেলো এ মেয়ের সামনে থাকা মানে বাঘের সামনে থাকা যে কোন সময় থা’বা মে’রে দিবে৷ ডিফেন্সে এসেছে তারো দের বছর পেরিয়েছে চন্দ্রিকার সম্পর্কে বেশ ভালোই অবগত হুট হাট রেগে যায় এই মেয়ে৷ ডিপার্টমেন্টে জুনিয়র রা সবাই বলতে গেলে চন্দ্রিকাকে ভয় পায়৷ ভয় পেলেও চন্দ্রিকা সবার কাছে বেশ প্রিয় বিশেষ করে ডিপার্টমেন্ট এর হেড এর কাছে সব চাইতে বেশি প্রিয় চন্দ্রিকা৷
তমা সব কিছু রেখে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো দাসী গুলো বেড়িয়ে গেলো কিন্তু তমার কি হলো কে জানে দাঁড়ালো ফের এগিয়ে এলো চন্দ্রিকার দিকে সাহস নিয়ে অদ্ভুত এক প্রশ্ন ছুড়েই দিলো কৌতূহল নিয়ে,
” আপনার কি পছন্দ নয় রাজকুমার শ্রেয়াস কে?”
তমার এহেন প্রশ্নে চমকালো ক্ষানিকটা চন্দ্রিকা, থমকালো কি উত্তর দিবে? ভাবা হয়নি এসব নিয়ে হঠাৎই চোখ মুখ শক্ত হলো চন্দ্রিকার শ্রেয়াস তো খু’নি৷ সে সব যেনেও না জানিয়েছে নবাব কে না আইনের সাহায্য নিয়েছে৷ কিন্তু ওর জানামতে শ্রেয়াস এমন খারাপ কাজ করার ছেলে নয় বোনের জন্য বাধ্য হয়ে খু’ন করলো? ভাবতে পারলো না চন্দ্রিকা আজ এ প্রথম এমন হচ্ছে, এ দু’বছরে কত গুলো কঠিন মা’মলা সামলালো আর এটা আজ এত ঘোলাটে লাগছে কেন?
তমা উত্তর না পেয়ে আশাহত হয়ে বেরিয়ে গেলো কক্ষ ছেড়ে৷
চন্দ্রিকার কক্ষ থেকে ফিরে সবে পরিপাটি হয়ে বাইরে বের হলো এর মাঝেই ফোন এলো অফিস থেকে চন্দ্রিকা সহ যেতে হবে জরুরি আলোচনা আছে৷
কমিশনার আশরিফ মাদক ব্যাবসা করতো তার খবর আগে থেকেই পেয়েছিলো কিন্তু কোন প্রমাণ ছিলো না প্রমান জোগার করার আগেই মৃ’ত্যু ঘটে আশরিফের৷ আশরিফের খু’ন নিয়ে তদন্ত চলছে৷ চন্দ্রিকা যদিও সবটা জানিয়েছে তবুও একবার যেতে হবে তাদের৷ ফারহানের খোঁজ চলছে এখনো ফারহান কমিশনার আশরিফ সহ তিনটা খু’ন করেছে কন্সটেবল ইকবাল, ল্যাবের সেই ডাক্তার কে আর রায়ান কে৷ চন্দ্রিকাও নিরাপদ নেই৷ মারজিয়া এসব যেনে সেই থেকে চুপ হয়ে বসে আছে এখনো কারো সাথে কোন কথা বলেনি৷
তমা বের হতেই বাসন্তী রঙের শাড়িটা পরে বের হলো চন্দ্রিকা৷ তমা ক্ষানিকটা থমকালো চেখানে এসে চন্দ্রিকাকে দু’বার শাড়ি পরতে দেখলো মেয়েটাকে রঙিন কাপরে মন্দ লাগে না কিন্তু সবসময় কেমন সাদামাটা রঙের জামা কাপর পরে থাকে৷ চন্দ্রিকার মা মেয়েকে দেখে এগিয়ে এলো এ মেয়ে একটুও তার মত হয়নি ছোট থেকেই অদ্ভুত ধাঁচের শাড়িতে মেয়কে আজ অন্যরকম লাগছে৷ তারি না নজর লেগে যায়৷ মেয়ের কাছে গিয়ে সন্তপর্ণে ললাটে ভালোবাসার পরশ একে দিলো৷ মিষ্টি হাসলো চন্দ্রিকা এর মাঝেই মেহনুবা রসুই ঘর ছেড়ে বের হলো চন্দ্রিকাকে কোথাও যেতে দেখে৷ সব করার জন্য আলাদা আলাদা মানুষ থাকলেও সে সবটা নিজে নজরদারি করছে৷ মেহনুবা এসে চন্দ্রিকার পথ আ’টকে ব্রু কুচকে বলে,
” কোথায় যাচ্ছিস তুই? ”
চন্দ্রিকা স্বাভাবিক ভঙ্গিতে এদিক ওদিক পরখ করে বলে,
“কাজ আছে আম্মা যেতে হবে আমার৷ ”
মেহনুবা এবার উত্তেজিত হয়ে পরলো, মিফতার বিয়ের দিন যা ভুল করেছে আজ সে ভু’ল করতে পারবে না মেয়েটাকে সে দিন সে খেয়াল রাখতে পারেনি শাহনেওয়াজ মে’রে দিয়েছে মেয়েটাকে৷ মাঝে মাঝে মনে হয় দুধ কলা দিয়ে কাল সাপ পুষেছেন এ মহলে৷ সে দিন যা হয়েছে আজ এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেওয়া যাবে না ওই ফারহান মোটেও সুবিধার না কখন কি করে দেয়৷ মেহনুবা এবার শক্ত হলো খানিকটা রাগী কন্ঠেই বললো,
” যাবিনা কোথাও তুই৷ যেতে হবে না কোথাও, সব তো মিটে গেছে কেন বাইরে বের হবি?”
” আম্মা আমার কাজ আছে৷ ”
চন্দ্রিকার এহেন অকপটে উত্তরে মেহনুবা ফের বলে,
“আমি না করেছি তো? এমন করছিস কেন?”
চন্দ্রিকার মা বিরক্ত হলো এ মেয়ে অবাধ্য বরাবরই কারো কথা শুনে না৷ সে এবার মুখ খুললো শক্ত কন্ঠে বললো,
” না করছে তো তবুও যাবি কেন?”
চন্দ্রিকাও বিরক্ত হলো একজন শুনছে না আরেকজন যুক্ত হলো৷
মেহনুবা নাছোড়বান্দা সে ও ছাড়বে না তার ভয় মিফতার মত যদি চন্দ্রিকারো কিছু হয়ে যায়? সে নিজে চন্দ্রিকাকে সব দিক দিয়ে পারদর্শী বানিয়েছে তবুও বলাতো যায় না যতই হোক মেয়ে তো? ভয় দূর করতে পারছে না মেহনুবা৷
চন্দ্রিকাও শুনলো না আশ্বাস দিয়ে বললো,
“আম্মা ভয় পেয়ো না তুমি আমি সব দিক সামলে নিবো৷ তাড়াতাড়ি আসবো আমি৷ ”
তবুও মানতে নারাজ মেহনুবা৷ চন্দ্রিকাও কম যায় না বুঝিয়ে সুজিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তমাকে নিলো না মেহনুবার কাছে রেখে গেলো৷ চন্দ্রিকা কয়েক কদম এগিয়েও পিছ ফিরে তাকালো৷ অতঃপর ক্ষানিকটা হেসে বললো,
” আম্মা তোমার ছেলেকে বোঝাও, পারলে আমাকে বিয়ে করার ভুত টা তার মাথা থেকে সরাতে বলো৷ ”
বলেই দাঁড়ালো না চন্দ্রিকা বেরিয়ে গেলো৷ তমা আর মেহনুবা হতাশ নিশ্বাস ত্যাগ করলো৷
মেয়ে মানুষ কি করে এমন অনুভূতি শূন্য হয়? হ্যাঁ মেয়েরা দূর্বল হলে চলে না তাই বলে এমন কঠিন কি সাজে?
৬০
তখন ধরনিতে সাঁঝের বেলার রাজত্ব চলছে৷ অম্বরটা লালচে কালো, থেমে থেমে ঠান্ডা হাওয়া বইছে পুরো মহল ঝলমল করছে আলোয়৷ সাদা মরিচা বাতি গুলো আলোকিত করে দিচ্ছে সব৷ বৈঠক খানার মাঝের বড় রঙের আলপনাটায় প্রদীপ জ্বালাতে ব্যাস্ত তখন তমা প্রিয়ম তখন উপর থেকে নিচে নামলো বেখেয়ালিতে নিচের দিকে না তাকাতে একটা প্রদীপ পা লেগে নিচে পরে মাটির প্রদীপ দানি টা ভে’ঙে গেলো৷ শব্দ পেতেই প্রিয়ম থামলো তমা বড় বড় চোখ করে তাকালো এদিকে ভা’ঙা প্রদীপ দানী টা দেখে রাগে ফোস করে নিশ্বাস টানলো কে ভা’ঙলো জিনিসটা তা দেখার জন্য উপরের দিকে তাকাতেই অপ্রিয় মুখখানা দেখতে পেলো সাথে সাথে রাগ বাড়লো বসে থেকেই কর্কশ কন্ঠে শুধালো,
” আরে কি করলেন এটা? চোখে কি দেখতে পান না?”
প্রিয়ম এই কাজ করায় প্রথমত একটু আফসোস করলেও মনে মনে এই মেয়েকে দেখে পৈচাশিক আনন্দ পেলো নিজেকে শ-খানেক বার বাহবা দিলো এ কাজে৷ ঠোঁট কোনে বিশ্ব জয়ের হাসি ফুটিয়ে বলে,
” কি করেছি?”
তমার রাগ বাড়লো উঠে প্রিয়মের সামনে এসে দাঁড়ালো ক্রুদ্ধ কন্ঠে বললো,
” চোখে পরছে না কি করেছেন? চোখ কি আকাশে নিয়ে ঘুরেন?”
প্রিয়মের হাসি চওড়া হলো এ মেয়ে কে আরেকটু জ্বালানোর ইচ্ছা জাগলো হেসেই উত্তর দিলো,
“না আপনার কাছে রেখে ঘুরি৷ ”
তমা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো এই ছেলের হাসি দেখে আর হেয়ালিপানা উত্তর শুনে৷ একই ভঙ্গিতে বললো,
” ইচ্ছে করছে এখানেই মে’রে দেই৷ এটা ঠিক করে দিয়ে যাবেন নয়তো ব’ন্দুক দিয়ে সব কটা গু’লি খুলির ভিতর ঠুকে দিবো৷ ”
প্রিয়ম এবার ঠিকঠাক হয়ে দাঁড়ালো, ভুলেই গিয়েছিলো অদ্ভুত মেয়ের সাথে কথা বলছে৷ কোথায় ভাবলো শ্রেয়াসের পর নিজের লাইনটা পরিষ্কার করে নিবে কিন্তু এই মেয়ে যা প্রেমের প্রস্তাব দিলে হয়তো মে’রেই দিবে৷ চন্দ্রিকার সাথে থাকে তো এর থেকে আদৌকি ভালো কিছু আশা করা যায়?
প্রিয়মের কাচুমাচু মুখ দেখে শান্তি লাগলো তমার আড়ালে মুখ টিপে হাসলো৷ আড়ালে হাসলেও দৃষ্টি এড়ালো না প্রিয়মের অদ্ভুত ওই হাসিতে দৃষ্টি আ’টকালো৷ প্রিয়মের ধ্যান ভঙ্গ করে তমা শক্ত কন্ঠে বলে,
“তেল মুছে নতুন প্রদীপ জালিয়ে দিন৷ ”
প্রিয়ম ব্রু কুচকে কিছু বলবে তার আগেই তমা কঠিন দৃষ্টিতে তাকালো প্রিয়ম অসহায় হয়ে নিচে বসলো তেল মোছার জন্য৷
তেল মুছতে মুছতে নিজেকে নিজে বিড়বিড় করে বললো,
” এ মেয়ের হাসিতে ফাসিস না প্রিয়ম তাহলে মরন নিশ্চিত৷”
৬১
শ্রেয়াস সবে ফিরলো মহলে, কিছু কাজে আহসান মীরের সাথে বের হতে হয়েছিলো কিন্তু মহলে ফিরে চন্দ্রিকা নেই জেনে র’ক্ত মাথায় উঠে গেলো তমাও মহলে আছে চন্দ্রিকাকে একা ছেড়েছেন৷।
শ্রেয়াস এবার নিজের কক্ষ থেকে বেড়িয়ে নিচে এলেন ওকেই বের হতে হবে এখন৷ চন্দ্রিকাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায়না সে, ও মেয়ে যে এখন তার দূর্বলতা ওই অবাধ্য মেয়ে ছাড়া নিশ্বাস আটকে আসে শ্রেয়াসের৷ ওই মেয়ে অনুভূতি শূন্য হলেও ও তো অবাধ্য মেয়ের মায়ায় পরেছে৷
অন্দর মহল ছেড়ে বেড়িয়ে বাগান পেড়িয়ে মহলের প্রবেশ পথে যাবে তার আগেই চন্দ্রিকা প্রবেশ করলো সাথে আয়াশ ও ৷ চন্দ্রিকাকে দেখে স্বস্তি পেলো যেন শ্রেয়াস এগিয়ে গেলো চন্দ্রিকার দিকে কাঠকাঠ কন্ঠে প্রশ্ন ছুড়লেন,
“কোথায় গিয়েছিলেন? তমাকে নিলেন না কেন?”
চন্দ্রিকা বিরক্ত নিয়ে উত্তর দিলো,
” সবসময় এতো কৈফিয়ত চান কেন? আপনি আপনাকে সব বলতে বাধ্য নই৷ ”
শ্রেয়াস হতাশ হলো চন্দ্রিকাকে কিছু বলবে এর আগেই বিকট এক শব্দ হলো৷ শব্দ টা গু’লির৷ তিন জন সে শব্দ অনুসরণ করে গেলো ফের আরেকটা বিকট শব্দ হলো মিফতার কবরের দিক থেকে৷।
এখানে এসে যা দেখলো তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না ফারহান উম্মাদের মত কবর খুঁড়ছে৷ নিচে দুইজন প্রহরী র’ক্তা’ক্ত অবস্থায় পরে আছে৷ চন্দ্রিকা দৌড়ে এগিয়ে গেলো৷ ফারহান চন্দ্রিকাকে কে দেখে উঠে দাঁড়ালো আয়াশ নিজের আ’গ্নেয়াস্ত্র বের করে ফারহানের দিকে এগোবে এর আগেই চন্দ্রিকাকে হ্যাচকা টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে এলো গলায় নিজের হাতে থাকা আ’গ্নেয়াস্ত্র টা তাক করলো৷
অদ্ভুত ভঙ্গিতে বললো,
” আবার আমার মিফতাকে তোরা ওই অন্ধকার ঘরে রেখে দিয়েছিস চন্দ্র? তুইও ওকে ভালোবাসিস না৷ ”
শ্রেয়াস ফারহানের কর্মকান্ডে রেগে বলে,
” কি করছো ফারহান? ছাড়ো ওকে৷ ”
শ্রেয়াসের কথা শুনে হাসলো ফারহান তাচ্ছিল্য হাসি অতঃপর বললো,
” আমি ছেড়ে দিবো আর তুই ওকে বিয়ে করে নিবি এ কি করে হতে দেই আমি? চন্দ্রিকা আমার৷”
আয়াশ আর শ্রেয়াস এদিকে এগিয়ে আসতে নিলেই ফারহান চেপে ধরলো আরো জোরে গলায় ব’ন্দুক তাক করে বা’কা হাসলো৷
চন্দ্রিকার রাগে শরীর কে’পে কে’পে উঠছে হঠাৎই কিছু মাথায় আসতেই হাত মুঠো করে নিচে দিয়ে ফারহানের থুতনিতে জোরে ঘু’ষি মা’রলো যার ফলে কয়েককদম পিছিয়ে গেলো ফারহান চন্দ্রিকা সরে এলো ফারহানের সামনে থেকে৷ ঘটনা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো মাথার উপর দিয়ে গেলো, রাগে র’ক্ত মাথায় উঠে গেলো নিচে পরে থাকা ব’ন্দুকটা তুললো৷ শ্রেয়াস ক্রুদ্ধ হয়ে ফারহানের দিকে এগিয়ে আসবে ঠিক তখনই পর পর দুইটা গুলি ছুড়ে দিলো শ্রেয়াসের দিকে৷ আয়াশ এগিয়ে এসে সরিয়ে দিলো শ্রেয়াস কে ফারহান ফের ট্রিগারে চাপ দিবে এর আগে চন্দ্রিকা নিজের আগ্নেয়াস্ত্র বের করে ফারহানের দিকে গু’লি ছুড়ে দিলো বুকের উপরে গিয়ে লাগতেই ছিটকে উঠলো র’ক্ত ফারহান থমকালো কয়েকফোটা পানি গড়িয়ে পরলো নেত্র থেকে৷ নিচে লুটিয়ে পরলো ঝাপসা চোখে বড় বড় শ্বাস নিয়ে হাসলো৷ তাচ্ছিল্য হাসি নিজেকে সামলে বুক চেপে ধরে উঠে বসলো৷ ফারহানের এহেন কান্ডে অবাক না হয়ে পারলো না তিনজনই৷ বসে থাকতে পারলো না মিফতার ক’বরের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো৷ তার উষ্ঠ এখনো হাসি বিরাজ করছে মুখে হাসি রেখেই অদ্ভুত ভঙ্গিতে বললো,
“মৃত্যু কি সুখকর রে চন্দ্র৷ তোর হাতে ম’রতে পারলে তো আমি শতবার এই ব্যা’থা সহ্য করতে রাজি৷ তোর কাছেই যে আমার সকল সুখ বিসৃত৷”
বলেই থামলো ফারহান জোরে জোরে শ্বাস টানলো চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরলেও উষ্ট কোণে হাসি বিরাজ করছে৷
ফারহান শ্বাস টেনে ফের বললো,
” তোকে পাওয়াটা আমার জেদ হলেও আমি তোকে সত্যি ভালোবাসতাম চন্দ্র৷ আমার মিফতা তোকে ভালোবাসতো পছন্দ করতো তাই বলে মিফতার অনুপস্থিতিতে তোর মাঝে মিফতাকে খুঁজতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু বিশ্বাস কর তোর মাঝে মিফতাকে আমি পাইনি তোর মত পাষাণ চন্দ্রিকাকেই ভালোবেসেছি আমি৷ আমি অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছিলাম চন্দ্র তুই আমাকে অন্ধকার থেকে নিজের আলোতে আলোকিত করিসনি অতল অন্ধকারে ডুবিয়েই দিলি৷ কিন্তু বিশ্বাস কির তুই শুধু আমার জেদ নস চন্দ্র তুই আমার ভালোবাসা ৷ আমার শেষ ভালোবাসা৷ মিফতা যদি আমার অনূভুতির সূচনা ছিলো তুই আমার অনূভুতির সমাপ্তি৷ আমার শেষ অধ্যায় তুই, তোকে ছাড়া আমার এক মূহুর্ত ভাবতেই অন্তর আত্মা কে’পে উঠে৷
আমায় এমন ম’রণ যন্ত্রনা দেওয়ায় আমি খুশি৷ কিছুতো দিলি আমায়? এটা যে আমার বড় প্রাপ্তি৷ এ ম’রণ যে আমার সুখের, প্রেয়সীর হাতে কতজন ম’রতে পারে? এখন আমি আমার মিফতার কাছে একেবারে যেতে পারবো তো বল?
কিন্তু আমি যে খুব স্বার্থপর মৃ’ত্যুর পরেও আমি ওই শ্রেয়াসের সাথে সহ্য করতে পারবো না৷ তোকেও আমার চাই৷ ”
এইটুকু বলে ফের পৈচাশিক হাসলো৷ কারো কিছু বুঝে উঠের আগে নিজের হাতের আগ্নেয়াস্ত্র টা শক্ত করে ধরে ট্রিগার চেপে ধরলো৷ সাথে সাথেই বিকট শব্দ হলো থমকে গেলো সব বুকের মাঝে গিয়েই লাগলো গু’লিটা চন্দ্রিকার সাথে সাথেই লুটিয়ে পরলো নিচে ফারহান হেসে জোরে শ্বাস টেনে মুখে হাসি রেখেই চোখ বন্ধ করতে করতে বললো,
“তুই আমার না তো কারো না চন্দ্র৷ ”
চলবে,
[নোটঃ২১০০ শব্দ৷ শেষ পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে রেসপন্স বাড়ান৷ কেমন হলো জানাত্র ভুলবেন না আজ আমার দাদার মৃ’ত্যু বার্ষিকী দোয়া করবেন সবাই বাসায় অনুষ্ঠান তাই দিতে দেরি হলো৷ রিচেক হয় নি৷ ]