গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ৭
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
আমাকে তার সাথে নিয়ে আসলেন আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ আমাদের খেয়াল করছে কিনা।নাহ কেউ দেখেনি আমি একটা স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে ফায়াজ ভাইকে আসতে করে বললাম,
~আবার আপনি এসব শুরু করেছেন?আপনাকে কে না বলেছি আমার থেকে দূরে থাকবেন।
আমার কথায় তার কোনো হেলদোল হলো না সে আমাকে নিয়ে একটা বাইকের সামনে দ্বার করালেন আমি একবার বাইকের দিকে তাকিয়ে তারপর ফায়াজ ভাইয়ের দিকে তাকালাম সে আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললেন,
~তোর এসব হাবিজাবি ধমকিকে আমি ভয় পাবো একটা কথা মনে রাখিস তোর মতো পুচকি মেয়েকে ফায়াজ হোসেন আদর করতে পারে কিন্তু ভয় কোনো দিন পাবে না।
ফালতু লোকের ফালতু কথা শুনে আমার মাথাটা চড়ে গেলো আমি হাতটা ঝাড়া দিয়ে তার থেকে ছাড়িয়ে বললাম,
~যাবো না আপনার সাথে কোথাও আমি বাসায় চলে যাচ্ছি আবীর ভাইকে ফোন করে বলবো আমাকে এসে নিয়ে যেতে।
আমার বলতে দেরি ফায়াজ ভাইয়ের আমার হাত থেকে ছো মেরে মোবাইলটা নিতে দেরি হলোনা। মোবাইলটা নিজের পকেটে রেখে আমার দিকে তাকালেন।আমি তার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি ফায়াজ ভাই বললেন,
~তোর কাছে না আছে টাকা না আছে ফোন শুধু আছি আমি। এখন বল তুই কী করবি?
বলেই সে বাইকে উঠে বাইক র্স্টাট করে দিলো।আমি না চাইতেও তার পিছে উঠে বসলাম আমি বসতেই সে ধুম সে বাইক চালাতে শুরু করলো আমি হাত দিয়ে তার কাঁধ ধরে ফেললাম।ফায়াজ ভাই মুচকি হেসে স্প্রীড কমিয়ে দিলেন আমি বললাম,
~বাইকটা কার কাছ থেকে এনেছেন?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~আছে কেউ
আমি বললাম,
~আপনি ফাহাদ ভাইয়ের সাথে যেতে পারতেন।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~আমি কী করতে পারতাম আর কী না করতে পারতাম তা তোকে বলতে হবে না।
আমি ভেংচি কেটে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলাম সে নিজের মতো করে বাইক চালাতে লাগলেন।
কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা সেন্টারে চলে আসলাম সেখানে পৌছিয়ে দেখি ফাহাদ ভাইরা ভিতরে চলে গেছে রুপা আপু গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে।
আমাকে বাইক থেকে নামতে দেখে রুপা আপু দৌড়ে আমার কাছে চলে আসলেন।ফায়াজ ভাইকে দেখে সে আরো অবাক হলেন রুপা আপু আমাকে বললো,
~তুমি সায়ন ভাইয়ের সাথে কেন আসনি?
আমি মুখ খুলবো তার আগেই ফায়াজ ভাই বললেন,
~তোকে এতো কৈফিয়ত দিতে হবে কেন?ভিতরে যা আমরা আসছি
রুপা আপু একবার আমার দিকে তাকিয়ে ভিতরে চলে গেলো আমি তার পিছে পিছে যেতে নিবো তখনই ফায়াজ ভাই বললেন,
~আমি বাইক পার্ক করে আসছি ভিতরে গিয়ে তাসিফের সাথে কোনো রকম কথা বলতে জানি না দেখি।
আমি কিছু না বলে ভিতরে চলে আসলাম। সেন্টারের ভিতরে মানুষ দিয়ে ভরতি আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখি রুপা আপু, সায়না কাজল দাড়িয়ে আছে আমি আস্তে আস্তে তাদের কাছে চলে গেলাম।কাজল আর সায়মা আমাকে দেখে হাসি হাসি মুখ করে বললো,
~ফিহা আপু কোথায় ছিলে?আমাদের সাথে আসলে না কেন?
আমি হেসে বললাম,
~আমি ফায়াজ ভাইয়ের সাথে এসেছি।
রুপা আপু বললো,
~তোমাকেই শুধু বাইকে উঠানোর চাকরিটা ভাইয়া নিয়েছে তাই না?
রুপা আপুর কথায় যে বেশ রাগ লুকিয়ে আছে তা আমি বুঝেছি।আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম তখন সায়মা বললো,
~রুপা আপু,ফায়াজ ভাই আমাকে নিয়েও অনেক সময় বাইকে করে ঘুরতে বেরিয়েছে এর মানে তো এইটা না ভাইয়া আমার চাকরি নিয়েছে।
সায়মার কথা শুনে রুপা আপু রেগে বললো,
~আমরা যদি বাসায় থাকতাম তোকে চট করে একটা থাপ্পড় মারতাম বেয়াদব কোথাকার।
বলেই সে গটগট করে সেখান থেকে চলে গেলেন সায়মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপু ওর কথায় কিছু মনে করো না সব কিছু বেশি বুঝে।
আমি শুধু মাথা দুলালাম ফাহাদ ভাই আর প্রিয়া ভাবির বিয়ের কার্যক্রম শুরু হলো দুজনই কবুল বলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো।তাদের বিয়ের পর আমরা একএক করে সবাই ছবি তুললাম সবাই একসাথে গ্রুপ ছবিও তুললাম।ছবি তোলা শেষে আমি স্টেজ থেকে নেমে একপাশে দাড়াতেই আবীর ভাই আমাকে ডেকে বললেন,
~ফিহা তাসিফর সাথে তোর দেখা হয়েছে?
আমি সামনে তাকিয়ে তাসিফকে দেখে আবীর ভাইকে বললাম,
~জ্বী ভাইয়া।
আবীর ভাই বললেন,
~তাসিফও কিন্তু তোর ভার্সিটি থেকেই পড়াশোনা শেষ করেছে।
আমি হেসে বললাম,
~এটা আমি জানতাম না।
তাসিফ বললেন,
~জানতে হলে তো কথা বলতে হবে তাই না তুমি তো কথাই বলোনা।
আবীর ভাই হেসে কিছু বলতে যাবেন তার আগেই ফায়াজ ভাই এসে পরলেন সেখানে মুখে হাসিহাসিভাব।আবীর ভাই তাকে দেখে বললেন,
~ফায়াজ রুপা তোকে খুঁজছিল।
আবীর ভাইয়ের কথায় সে বললেন,
~রুপা হচ্ছে গোয়েন্দা তার কাজই হচ্ছে খুজে বের করা। তাই আমি ওকে নিজ থেকে ধরা দিয়ে বেচারির খেলাটা নষ্ট করতে চাইনা।
ফায়াজ ভাইয়েী কথা শুনে আবীর ভাই আর তাসিফ হেসে উঠলেন।আমরা মুখে কোনো হাসি নেই বরং বিরক্তি প্রকাশ পাচ্ছে ফায়াজ ভাই তাসিফকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
~ফিহা কথা অনেক কম বলে আর তার উপর যদি অচেনা কোনো মানুষ হয় তাহলে তো আরো কথা বলে না।
তাসিফ বললেন,
~আমি কী অচেনা নাকি?এখন আমিও তো ফিহার কাছের মানুষ।
তাসিফের কথায় ফায়াজ ভাই হয়তো রেগে গিয়েছেন যা তার মুখের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে হঠাৎ খালামণি আমাকে ডাকলেন আমি তার ডাক শুনে বললাম,
~আমি যাই খালামণি ডাকছে।
সেখান থেকে একহিসেবে পালিয়ে আসলাম পরিবেশটা একদম অস্তিত্বকর হয়ে গিয়েছিল আমি খালামণির কাছে যেতেই সে বললেন,
~কই থাকিস তুই?তোকে তো দেখাই যায়না।তোর প্রিয়া ভাবি তোকে ডাকে স্টেজে ছবি তুলতে।
আমি বললাম,
~যাচ্ছি।
আমি স্টেজপ উঠে প্রিয়া ভাবির সাথে আরো অনেক ছবি তুললাম এবং প্রিয়া ভাবির মাও আমার সাথে ছবি তুললো।মানুষগুলো অনেক ভালো ফাহাদ ভাই পারফেক্ট শ্বশুর বাড়ি পেয়েছে।
বিয়ের সব কার্যক্রম শেষ হলো এখন বিদায়ের পালা প্রিয়া ভাবি সবাইকে ধরে অনেক কান্নাকাটি করলেন।
তার কান্না দেখে অনেক খারাপ লেগেছে অবশেষে আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম এবার আমি আগেই মায়ের সাথে গাড়িতে উঠে বসলাম।পুরো অনুষ্ঠানে রুপা আপু আমার সাথে কথা বলিনি সে কেন রাগ করেছে তা বুঝতে পারছিনা সে তো আমাকে অনেক আদর করে।তাহলে আজ এমন করলো কেন?আমি বাসায় পৌছেই তাকে জিজ্ঞেস করবো তার এমন ব্যবহারে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।
বাসায় পৌছে নতুন বউকে ফাহাদ ভাইয়ের রুমে বসিয়ে দিলাম।তারপর রুপা আপু সায়মা আর কাজল গেটের সামনে দাড়িয়ে ফাহাদ ভাইকে বললেন,
~দেখেন ভাই আগে টাকা তারপর বউ দর্শন।
ফাহাদ ভাই বললেন,
~নিজের বউ দেখতেও টাকা লাগে নাকি?
রুপা আপু বললেন
~ন্যাকা সাজা হচ্ছে টাকা দাও না হলে খবর আছে।
রুপা আপু কথায় ফাহাদ ভাই টাকা বের করে তার হাতে দিয়ে দিলেন তারা খুশি খুশি ফাহাদ ভাইকে রুমে ডুকতে দিলেন।
আমি রুমে এসে চেঞ্জ করে দুপা ভাজ করে বিছানায় বসে পরলাম।বিয়ে শেষ এরমানে ২দিন পর বাসায় চলে যাবো এরপর আরাম ফায়াজ ভাই নামের আতংক আর থাকবে না।রুপা আপুও মনে হয় রুমে চলে গেছে এখনই তার সাথে কথা বলতে হবে তাই আমি বিছানা থেকে নেমে রুপা আপুর রুমে যেতে নিবো তখনই কেউ আমার হাত ধরে সেই স্টোর রুমে নিয়ে আসে এবার আবছা আলোয় তার চোখ দুটি দেখা যাচ্ছে অনেক চেনা চেনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পারছিনা সে আমার কানের কাছে এসে বললো,
~অতিরিক্ত উড়া ভালো না আমাকে খারাপ হতে বাধ্য করো না।
এই কন্ঠস্বর তো আমি চিনি এতো আর কেউ না আমি আর ভাবতে পারলাম না চোখ দুটি বন্ধ হয়ে আসলো আমি সেই ব্যক্তির বুকে ঢলে পরলান
চলবে
(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/382830010105444/