#গাংচিল
#৯ম_পর্ব
আজ সে যদি কাঁদতে পারতো হয়তো শান্তি লাগতো। এমন সময় নীলু ছুটে এলো। হাতে কডলেস ফোন টি। কাঁপা স্বরে বললো,
“আফা, খালাম্মায় ফোন দিছে”
কথাটা শুনে নীলুর দিকে তাকালো মৌ। রাগে, অভিমানে তার মুখ লাল হয়ে আছে। শক্ত কন্ঠে বললো,
“তোর খালাম্মাকে বল, আমি ব্যস্ত।“
“খালাম্মায় কইছে, অতি জরুরী। খালুর ব্যাপারে।“
বাবার কথা শুনে চোখ কুচকে আসলো মৌপ্রিয়ার। ফোনটা নিয়ে হিনহিনে কন্ঠে বললো,
“বলো মা, কেনো ফোন দিয়েছো?”
“বাব্বা, অবশেষে তোমাকে ফোনে পাওয়া গেলো। শুনেছি বড় লেখিকা হয়েছো। এখন তোমার ম্যানেজারকে ফোন করে বুঝি এপোয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।“
সূবর্ণা বেগমের ঠেস দেওয়া কথায় মেজাজটা যেনো আরও খারাপ হয়ে যায় মৌপ্রিয়ার। খানিকটা কড়া কন্ঠে বলে,
“তুমি কি মশকরা করার জন্য ফোন করেছো? যদি তাই হয় আমি ফোন রাখছি।“
“আমার সাথে কথা বললে কি তোমার মূল্যবান সময় খসে যাবে?”
“খসবে না ঠিক, তবে তোমার সাথে কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না। বিরক্তিকর লাগে। তোমার কন্ঠ কানে বিষের মতো ঠেকে।“
“ভুলে যেও না মৌপ্রিয়া, আমি তোমার মা।“
ক্ষিপ্র কন্ঠে কথাটা বলে সূবর্ণা। সূবর্ণার কথাটি শুনে দীর্ঘশ্বাস বের হয় মৌপ্রিয়ার বুক চিরে। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো সে। তারপর নিয়ন্ত্রিত কন্ঠে শান্ত গলায় বলে,
“আমি চাইলেও কখনো ভুলতে পারবো না, যে তুমি আমার মা। আমার মা, এমন একজন নারী যিনি কিনা নিজের দশ বছরের মেয়েকে ছেড়ে, নিজের পনেরো বছরের সংসার ভুলে একজন পরপুরুষের সাথে প্রেমে লিপ্ত হয়েছিলে। কিভাবে ভুলি বলো? পনেরোটা বছর ভোলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আফসোস ব্যার্থ হয়েছি। যাক গে, মুখ খুলিও না আমার। শেষে নিজের মেয়ের মুখের সূঁচালো কথায় আঘাত পাবে। নীলাঞ্জনা বলেছিলো বাবার বিষয়ে কথা বলতে চাও। আমরা নাহয় সেটা নিয়েই কথা বলি।“
“ভালোবাসাটা দোষের নয় কি মৌপ্রিয়া।“
“আমি জানি, তবে তোমার ভালোবাসাটা ছিলো নোংরা। নোংরা ভালোবাসাটা দোষের মা।“
মৌপ্রিয়ার কথায় আহত হন সূবর্ণা। তারপর ধীর স্বরে বললো,
“ভালোবাসা তো ভালোবাসা হয়, তাতে নোংরা, পবিত্র কথাগুলো কি খাটে?”
“তর্ক করতে চাচ্ছি না, বাবার বিষয়ে কি বলবে সেটা বলো।“
“তোমার বাবা, আজ বাসায় এসেছিলেন। হাতে ত্রিশটা গোলাপ। সৌভিক ছিলো বাসায়। তবুও সে এমনটা করেছে। সৌভিকের নানা প্রশ্ন আমাকে শুনতে হয়েছে। সে ভেবেছে তার মা বুড়ো বয়সে প্রেম করছে।“
“ঠিক, সে তো জানে না। তার জন্মের আগে তার মায়ের একটা সংসার ছিলো। তা আমি কি করতে পারি?”
“তোমার বাবাকে মানা করে দিও যেনো সে এবাড়ি না আসে। বুড়ো বয়সে তার ভালোবাসা নামক পাগলামিটা আমি নিতে পারবো না।“
মৌপ্রিয়া বরফ শীতল কন্ঠে বলে,
“সেটা তুমি তাকে বলতে পারছো না? সরাসরি বলতে কি সমস্যা মা? তোমার এই একটা সমস্যা চিরটাকাল। সরাসরি বাংলা বলতে তোমার আপত্তি। তাকে বলবে এ বাড়িতে বেহায়ার মতো আসবে না। এখন আমি তোমার সূবর্ণা নই। অন্যকারো স্ত্রী, অন্যকারোর মা। আমাদের সম্পর্কের ইতি পনেরো বছর পূর্বেই হয়ে গিয়েছে। কেনো বলতে পারো না?”
“তোমার নির্বুদ্ধি বাবাকে আমি বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত। তার সাথে বন্ধুত্ব রাখার কথা ছিলো। কিন্তু সৌভিকের বাবার মৃত্যুর পর যেনো সে পাগলা ঘোরা হয়ে গিয়েছে। ভাবটা এমন যেনো আমি তার কাছে ফিরে আসবো। তুমি তার মেয়ে আমার, তোমার সব কথা সে শুনে। তুমি একটূ বুঝিয়ে দিও।“
“আমার মাথা ব্যাথা করছে, ফোন রাখলাম।“
বলেই ফোনটা কটাশ করে কেটে দিলো মৌপ্রিয়া। বৃষ্টির বেগ বেড়েছে। বৃষ্টির পানিতে বারান্দাটা ভিজে গিয়েছে। মৌপ্রিয়া হাটু গেড়ে বসে পড়লো। হাত জড়ো করে মুখ গুজলো সে। চোখ জ্বালা করছে। বুকের চিনচিনে ব্যাথাটা মাত্রা ছাড়াচ্ছে। অভিমান জড়ো হচ্ছে দু চোখে। বহুদিন হলো কাঁদে না, আজ কাঁদতে যে বড়ো ইচ্ছে হচ্ছে। খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
সূবর্ণা এবং ইফতেকারের বিয়েটা হয়েছিলো পরিবারের ইচ্ছাতে। যখন এ বাড়িতে বউ হয়ে আসে তখন সূবর্ণার বয়স সবে সতেরো। ইফতেকারের কাছে সূবর্ণাকে মনে হতো একটা পুতুল। গোল মুখ, টসটসে গাল, চশমার আড়ালে গোল গোল বিষ্ময়ভরা চোখ। বিয়ের রাতে যখন হাতটা ধরেছিলো কেঁপে উঠেছিলো সূবর্ণা। লোকটির প্রতি সূবর্ণা ভালোবাসাটা মূলত ছিলো সম্মান এবং একরাশ কৃতজ্ঞতা। ইফতেকারের ভালোবাসার গভিরত্বটা বোঝার ক্ষমতাটা ছিলো না ছোট্ট সূবর্ণার। সে কেবল লজ্জায় লাল হয়ে যেতো ইফতেকারকে দেখলেই। ইফতেকার তার কাছে কেবল একজন অভিভাবক ছিলো। সময়ের ধারার সাথে বড় হয় সূবর্ণা। কিন্তু পৃথিবী বোঝার আগেই তার কোল জুড়ে আসে মৌপ্রিয়া। মৌপ্রিয়ার সাথে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে সে। ওদিকে ইফতেকার ও ব্যাস্ত হয়ে পড়ে তার অধ্যয়নে। কিশোরীর সে সময়টা ভালোবাসায় ডুবে থাকার কথা সেই সময়ে সূবর্ণা পুরোবাড়ি জুড়ে একা একা প্রেতের মতো ঘুরতো। শ্বাশুড়ি যদি গ্রাম থেকে আসতে তবে তার সেবায় দিন কাটতো তার। একাকী জীবনটাকে ভাগ করার সঙ্গীটুকু ছিলো না। এর মাঝেই পরিচয় হয় নিসাদ নামক ব্যাক্তির সাথে। বয়সের তাড়না, মনের একাকীত্বের প্রবল যন্ত্রণায় আকৃষ্ট হয়ে পড়ে সে নিসাদের প্রতি। ফলে বিবাহজীবনে লাগে কোন্দল। ইফতেকারের সাথে যে বন্ধুত্বপ্টা ছিলো তা নষ্ট হতে থাকে। ইফতেকারের ভালোবাসা কেবলই অভিনয় মনে হতে লাগে সূবর্ণার। এক পর্যায়ে সম্পর্কে ফাটল ধরে। ইফতেকারের প্রতি সম্মানের জায়গাটা নষ্ট হয়ে যায়। ডিভোর্সের আবদার করে সূবর্ণা। ছোট মৌপ্রিয়া তখন ক্লাস ফোরে পড়ে। তাকে এই খবরটা জানায় তার দাদী। দাদীর কথা বেশ মজা লাগতো মৌপ্রিয়ার। গ্রাম্যভাষায় ঠিক কি বলতেন তা মাথার উপর দিয়ে যেতো তার। এক রাতে মা যখন গল্প করে ঘুম পাড়াতে আপত্তি করে তখন দাদীর কাছে কাঁদতে কাঁদতে চলে যায় মৌপ্রিয়া। দাদী পান মুখে বলে,
“কিরে কালাবানু, কান্দস কেরে?”
“মা আমাকে বলেছে একা একা শুতে। তুমি বলো দাদু আমি ভয় পাই না।“
“এখখন থেইক্যা একা একা শুয়োনের অভ্যাস কর। তোর মা তর লগে আর থাকবো না।“
“কেনো? মা কি নানাবাড়ি যাচ্ছে।“
“নারে মুখপুড়ী, তোর কপাল পুড়ছে। তোর মায়ে একখান নাগর জুটাইছে।“
“নাগর কি?”
“তোর মায়ে আরেকটা ব্যাটার লগে হাঙ্গা বইছে। তোর মা-বাপের তালাক হইবো।“
ছোট মৌপ্রিয়ার কাছে ব্যাপারগুলো অস্পষ্ট। সে বুঝতে পারে না দাদী কি বলছে। কিন্তু তার বেশ মজা লাগে ব্যাপারটা। সময় ঘনিয়ে আসে। সূবর্ণা ঘর ছাড়ার জন্য প্রস্তুত। সে মৌপ্রিয়াকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে যায়। কিন্তু মৌপ্রিয়া বুঝতে পারে না কেনো তার বাবা তাদের সাথে যাচ্ছে না। তখন ইফতেকার সাহেব তাকে বুঝিয়ে বলেন,
“মৌ, তোমার কোনো বান্ধবীর সাথে তোমার ঝগড়া লাগলে তুমি কি করো?”
“তার সাথে কথা বলি না, এক বেঞ্চেও বসি না।“
“আমাদের বড়দের মাঝেও ঝগড়া লাগে, যেমনটা তোমার মার আর আমার মাঝে লেগেছে। এখন আমাদের ও কথা বন্ধ, এক সাথে থাকা বন্ধ।“
“তুমি মাকে চকলেট দাও, আবার ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যাবে।“
“বড়দের ঝগড়াগুলো চকলেটে মিটমাট হয় না। অনেক ভালোবাসা লাগে। কিন্তু আমার কাছে তো এতো ভালোবাসা নেই। তোমার মার অন্য কারোর সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে। এখন সে তার সাথেই কথা বলবে, তার বাসায় থাকবে। তুমিও সেখানেই থাকবে। আমি সময় করে তোমার সাথে দেখা করতে আসবো। কি যাবে তোমার মার সাথে?”
“না বাবা, আমি তোমার সাথে থাকবো।“
কোনো চিন্তা না করেই উত্তরটা দিয়েছিলো মৌপ্রিয়া। মৌপ্রিয়ার বাচ্চা মন কি ভেবে সেই উত্তরটা দিয়েছিলো তা এখন অবধি ইফতেকার সাহেবের কাছে অজানা। বিশাল রহস্য এটা। সূবর্ণা অনেক চেষ্টা করে যেন মৌপ্রিয়া তার সাথে ঐ বাড়ি যায়। কিন্তু মৌপ্রিয়ার বাচ্চা মনকে কিছুতেই যেনো রাজি করানো গেলো না। তিনজনের সুখী পরিবারটা সেদিনটি দু খন্ড হয়ে যায়। মৌপ্রিয়া যত বড় হয়, মায়ের প্রতি একতা সুপ্ত ক্ষোভ তার মনকে বিষিয়ে তোলে। আজ পনেরো বছরেও সেই ক্ষোভটা কমে নি, বরং ক্ষণে ক্ষণে বেড়ে দাবানলের আকার নিয়েছে। সে দাবানলে মা-মেয়ের সম্পর্কটা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
৫.
মুখে ব্যান্ডেজ নিয়ে দিব্বি কাজ করে গিয়েছে তিয়াশা। আজ সাতদিন হয়ে গিয়েছে। সেলাই কাটার কথা, কিন্তু এক অজানা দ্বিধা মনে কাজ করছে। অন্তুর সামনে যাবার ইচ্ছেটা অহেতুক কারণে তার দমে যাচ্ছে। অন্তুর সামনে গেলেই মনে হয় এই বুঝি হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে। ঝাঝালো কষ্টে চোখ জ্বলে যাবে। একই হাঁসপাতালে কাজ করা স্বত্তেও খুব একটা সামনা সামনি হতে হয় না তাদের। ডাক্তার এবং রিসেপশনিস্টের কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজনের কাজ রোগীর রিপোর্ট, বিল পত্র সামলানো তো অন্যজনের কাজ তাদের মধ্যে নিজেকে ব্যাস্ত রেখে চিকিৎসা করা। মুখোমুখি টা কাকতালীয় কোনো কারণেই হয়। কিন্তু আজ ইচ্ছাকৃত ভাবে তার সামনে যাবে সে। ব্যাপারটা তার অস্বস্তি দ্বিগুন করে দিয়েছে। অন্তুর কেবিনের সামনে দু তিন পাক চক্কর কাটলো তিয়াশা। কিছুক্ষমণ বাদে নিজেকে বোঝালো,
“সে তোর ডাক্তার আর তুই তার প্যাশেন্ট। এটাই তোদের সম্পর্ক। হ্যা, এতে এতো ভয়ের কি আছে? বি স্ট্রং তিয়াশা”
বলে তিনবার আয়াতুল কুরসী পরে ফু দেয় বুকে। তারপর কেবিনে নক করে। ভেতর থেকে কোনো সাড়া পায় না সে। পুনরায় একই কাজ করতে যাবে তখন পেছন থেকে একটি কন্ঠ কানে আসে,
“এখানে কি চাই?”
অন্তুর ভারী কন্ঠ শুনে বুকটা ধক করে উঠে তিয়াশার। পেছনে ফিরে বিব্রত গলায় বলে,
“সেলাই কাটার কথা ছিলো।“
“ওহ, আসুন”
বলেই ভেতরে চলে যায় অন্তু। তিয়াশাও তার পিছু পিছু যায়। তিয়াশা চেয়ারে বসে। অন্তু তার সামনে ঝুকে দাঁড়ায়। অন্তুর গরম নিশ্বাস তার মুখে আছড়ে পড়ছে। বুকের ধুকপুকানি যেনো বহুগুন বেড়ে যায় তিয়াশার। নিজের বরটা এতো সুন্দর মাঝে মাঝে ভাবতেও শিহরণ জাগে মনে। হঠাৎ করেই চোখাচোখি হয় তাদের। অন্তুর মায়ার সাগর নামক আঁখিজোড়ায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে তিয়াশা। ক্ষণিকের জন্য থমকে যায় সে। অন্তুও চোখটা সরায় না তিয়াশার চোখ থেকে। সুগাঢ় নয়নে দেখতে থাকে তার হৃদয়হরণীকে। তিয়াশার চোখজোড়া খুব গভীর। এই চোখের মাঝে ডুবে যেতো অন্ত। হাজারো প্রহর তাকিয়ে থাকতেও তার আপত্তি ছিলো না। আজ এতো বছর বাদেও সেই অনুভূতিটাই হচ্ছে। কিন্তু সময়টা পালটে গেছে। অন্তু চোখ সরিয়ে নেয়। তার কাজে মন দেয়। কিন্তু তিয়াশা বেহায়ার মতো তাকিয়ে থাকে অন্তুর দিকে। এটুকু সময়ই তো, একটু মনভরে দেখতে কি ক্ষতি। ব্যান্ডেজ টা খুলে অন্তু। সেলাই কাটতে যেয়ে দেখলো সেলাই শুকানো তো দূর, বরং আশপাশটা খানিকটা পেঁকে গিয়েছে। তীক্ষ্ণ কন্ঠে অন্তু বলে উঠে,
“পাঁকলো কি করে সেলাই? ঔষধ, ড্রেসিং কিছুই কি করা হয় নি?”
অন্তুর কথায় স্বম্বিত ফেরে তিয়াশার। বেকুবের মতো কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে ধাতস্থ হতে। তারপর মিনমিনিয়ে বলে,
“সবই তো করেছি। কিভাবে হলো জানা নেই।“
“আপনার শরীর আপনার জানা নেই? কথাটা যে মানতে পারলাম না।“
রূঢ় কন্ঠে কথাটা বলে অন্তু। তিয়াশা স্বর খাঁদে নামিয়ে বললো,
“আমি তো আপনার ইন্সট্রাকশন ফলো করেছি।“
“সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। একটা সামান্য চোটের খেয়াল রাখতে পারো না। সেদিন তো বড় বড় বুলি ছাড়ুছিলে। আমার শরীর আমি বুঝি, হ্যান ত্যান। তা আজ কি হলো?”
“……”
“এখন কি ভুগো, এই সেলাই তো কাটাই যাবে না, সুতোই বের হবে না। একটা কথা, বলেছিলাম রেস্ট করো। মেডিসিন আর রেস্ট। কেনো শুনলে কি মহাভারত টা অশুদ্ধ হয়ে যেতো?”
অন্তুর ক্ষিপ্ত কন্ঠের প্রশ্নের উত্তর নেই তিয়াশার কাছে। মাটির দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকে সে। অন্তু হিনহিনে কন্ঠে বলে,
“আজ ছুটি নিবে, আমি এন্টিবায়োটিক দিবো। তিনদিন পর আবার চেষ্টা করবো সেলাই কাটার।“
“ছুটি নিলে তো আমার বেতন কাটবে।“
“বেতন কাটবে না, আমি বলে দিবো।“
“আমার আপনার সাহায্যের প্রয়োজন নেই”
ধীর স্বরে কথাটা বলে তিয়াশা। এবার যেনো অন্তুর রাগটা সপ্তম আকাশ ছোঁয়। নিজেকে কোনো মতেই সংযমে রাখতে পারে না সে। শক্ত করে চেপে ধরে তিয়াশার বাহু। ব্যাথায় কুকড়ে উঠ তিয়াশা। আরোও খানিকটা ঝুকে তীব্র স্বরে বলে অন্তু…….
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি