#গল্পের_নাম: ||গাঙচিল ||
#লেখিকা: অজান্তা অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব_____১৮ (অন্তিম–২য় বা শেষ খন্ড)
—“রোদ্দুর ভাইয়া, আপনার জন্য দুটো খবর আছে।একটা ভালো খবর,আরেকটা খারাপ খবর!”
শফিকের কথায় রোদ্দুরের বুকের ভেতর ঝড় বয়ে গেল।খারাপ খবর?সে চমকে শফিকের মুখপানে তাকাল।তার মন কু ডাকছে।তার অতি প্রিয়জনদের কিছু হলো না তো?বিদেশের মাটিতে থাকতে সে সবসময় এই ভয়টা পেত।না জানি কার কখন কি হয়ে গেল!সে ছটফট করছে ভেতরে ভেতরে।কিন্তু শফিক নিশ্চুপ রয়েছে।
রোদ্দুর জার্নির ধকলে ক্লান্ত শরীরটা সিটে এলিয়ে দিয়ে মাথা দু হাতে চেপে ধরলো।বিক্ষিপ্ত মনটাকে শান্ত করার চেষ্টা করে শফিককে কিছু জিগ্যেস করতে চাইলো।কিন্তু তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হলো না।সে চোখ বন্ধ করে মনে মনে ক্রমাগত প্রার্থনা করলো তার অতি প্রিয়জনদের সাথে যেন কোনো খারাপ না ঘটে!
ঘন্টা দুয়েক পর সাদা রঙের মাইক্রো গাড়িটা গুলিস্তান ফ্ল্যাটের দিকে না গিয়ে ফার্মগেট এলাকা দিয়ে ঢাকা মেডিকেলের দিকে ছুটতে রোদ্দুর আর ঠিক থাকতে পারলো না।তবে কি কেউ গুরুতর অসুস্থ?কারো প্রাণ সংকটে?তার মা বা অহির কিছু হয়ে যায়নি তো?সে ছটফট করতে করতে বলল,
—“শফিক!গাড়ি হসপিটালের দিকে ছুটছে কেন?ক-কে অসুস্থ?বলো!”
শফিক হাত বাড়িয়ে রোদ্দুরের দিকে ফ্রেশ পানির বোতল এগিয়ে দিল।ইশারায় পানি খেতে বলল।রোদ্দুর পানির বোতল হাতে নিয়ে অধীর আগ্রহে শফিকের জবাবের আশায় রইলো।শফিক জবাব না দিয়ে রোদ্দুরের হাতে ধরা বোতলের ছিপি খুলে দিল।রোদ্দুর সঙ্গে সঙ্গে বোতল উঁচিয়ে কয়েক ঢোক পানি খেল।
বোতলের ছিপি আটকাতে নিতে শফিক ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় বললো,
—“রোদ্দুর ভাইয়া,আপনার বাবা আজাদ রহমান ভীষণ অসুস্থ।হৃদরোগের লাস্ট স্টেজ।আজ সতেরো দিন হলো লাইফ সাপোর্টে।”
রোদ্দুরের হাত পা অবশ হয়ে আসছে।মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে যেন।নিঃসঙ্কোচে তার বাম হাতে ধরে রাখা বোতলটা খসে পড়লো।যতটা আনন্দ নিয়ে সে এক বছর চার দিন পর বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছিল, তার দ্বিগুণ বিষাদ ছড়িয়ে পড়লো সমস্ত শরীর ও মনে।রক্তের প্রতিটি শিরা উপশিরায়!
তার বাবা অসুস্থ?সেই মানুষটা?একটা সময় যেই মানুষটা খাবার তুলে না খাইয়ে দিলে সে ঘন্টার পর ঘন্টা না খেয়ে থাকতো?সেই মানুষটা যেই মানুষটা হাত মুখ না ধুইয়ে দিলে সারাক্ষণ ময়লা নিয়ে থাকতো?যেই মানুষটার হাত ধরে এই শহর চিনেছে,ছোট ছোট পা ফেলে যার হাতের আঙুল আঁকড়ে এই জীবন চিনেছে?
রোদ্দুর চুপচাপ চোখ বন্ধ করলো।বন্ধ করতেই কয়েক ফোঁটা জল চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো।
আইসিইউ এর সামনে ভিড় জমে আছে।রোদ্দুরকে বিধ্বস্ত চেহারায় পা ফেলে এগিয়ে যেতে সবাই সন্তর্পনে তার দিকে তাকাল।রোদ্দুর মাথা নিচু করে এগিয়ে গিয়ে হসপিটালের বারান্দায় লাগোয়া চেয়ারে বসে থাকা মায়ের কাঁধে হাত রেখে বলল,
—“মা!”
সঙ্গে সঙ্গে রোনজিদা রোদ্দুরকে জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো কান্না শুরু করলো।রোদ্দুর মাকে জড়িয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।মা তো তার বাবাকে ভালোবাসতো!ভালোবেসে বিয়ে করেছিল।রোদ্দুর তো জানে তার মা এখনো তার বাবাকে ভালোবাসে।অভিমানের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসাটা শুধু রোদ্দুর দেখতে পেত যে!
রোদ্দুরের কাঁধে কেউ হাত রাখতে সে ছলছল নয়নে পেছন ঘুরে তাকাল।জলিল মোল্লা এসে দাঁড়িয়েছে।রোদ্দুর আশপাশে চোখ বুলিয়ে অহিকে খুঁজলো।অহিকে কোথাও দেখতে পেল না।সে বাদে সবাই আছে।
রোদ্দুরের চোখ আটকে গেল কিছুটা দূরে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলাটর উপর।থ্রি পিস পরিহিতা মহিলাটিকে প্রথম দেখেই সে বেশ বুঝতে পারলো ইনি কে!ইনি তার বাবার দ্বিতীয় পক্ষ।মহিলাটির পাশে বয়স্ক এক পুরুষ দাঁড়িয়ে।রোদ্দুর চোখ সরিয়ে নিল।
বিগত সতেরো দিনে আজাদ রহমান তিনবার রেসপন্স করেছে।আজ চতুর্থ বারের মতো রেসপন্স করতে আইসিইউ এর কেবিনে রোদ্দুরের ডাক পড়লো।সে মাকে ছাড়িয়ে দ্রুত ভেতরে ঢুকে গেল।
বাবাকে চিনতে রোদ্দুরের বেশ কষ্ট হলো।এই এক বছরে বাবার চেহারা অনেক ভেঙে গেছে।চোয়াল বেরিয়ে পড়েছে।বয়স যেন অনেক বেড়ে গেছে।মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।বুকের কাছে অনেকগুলো নল লাগানো।এতকিছু হয়ে গেল অথচ কেউ তাকে একটিবার জানাল না?
একটা টুল টেনে রোদ্দুর বাবার পাশে বসে পড়লো।বাবার জীর্ণ ডান হাতে নিজের হাত ছোঁয়াতে তার চোখ ভরে উঠলো।কতগুলো বছর পর বাবার স্পর্শ পাচ্ছে!বাবা নামক শব্দটার আড়ালে থাকা মানুষটাকে বোধ হয় কোনোদিন ঘৃণা করা যায় না!
রোদ্দুর ভেজা কন্ঠে বহু বছর পর ডাকলো,
—“বাবা!ও বাবা।”
আজাদ রহমানের চোখ আধ খোলা।রোদ্দুরের মুখে বাবা ডাক শুনে পূর্ণ খুললেন।স্যালাইনমুক্ত অসুস্থ হাতটা আস্তে আস্তে রোদ্দুরের মাথার কাছে পৌঁছাল।রোদ্দুর ব্যস্ত হয়ে বলল,
—“বাবা,বাবা!কেমন আছো তুমি?এই দেখো,তোমার হিম ফিরে এসেছে।দেখো বাবা!”
বাবার হাত ধরে রোদ্দুর কান্না করে দিল।আজাদ রহমান অক্সিজেন লাগানো মুখেই অস্পষ্ট কন্ঠে বলল,
—“আমায় ক্ষমা করে দিস রে হিম!তো-তোদের উপর যে দায়িত্ব ছিল তা ঠিকমতো পালন করতে পারিনি।আমার হৃদরোগের খবরটা আমি বহু আগে থেকে জানি।গোপনে চিকিৎসা করেছি।কাউকে বুঝতে দিইনি।এ যাত্রায় হয়তো রক্ষা পাব না।আমার সৎ, অসৎ পথে উপার্জিত সবকিছু ইয়াতিম খানা,আর মাদরাসার জন্য দান করেছি।তোর দ্বিতীয় মার প্রাপ্যটুকুও বুঝিয়ে দিয়েছি।তোকে আর তোর মাকে আমার স্মৃতি হিসেবে আমার সৎ পথে উপার্জিত টাকার আমাদের পুরনো স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটা রেখে গেলাম।তোর নামে লিখে দিয়েছি বাড়িটা।তোর অসহায় বাবার মুখ রক্ষা করতে তোর পরিবার নিয়ে ও বাড়িতে চলে যাস!আ-আমি….”
আজাদ রহমানের শ্বাস ঘন হচ্ছে।রোদ্দুর বাধা দিয়ে বলল,
—“বাবা,তুমি চুপ থাকো।কথা বলো না প্লিজ!থামো!”
আজাদ রহমান আর কথা বলতে পারলেন না।তার বুক দ্রুত উঠানামা করছে।হাত পা কাঁপছে।রোদ্দুর বাবার কম্পমান হাতটাতে চুমু দিয়ে বলল,
—“বাবা,আমি ডাক্তার কে ডাকছি।তোমার কিচ্ছু হবে না।আমি বলছি।তোমার কিচ্ছু হবে না।”
রোদ্দুর ডাক্তার কে ডাকতে একজন ডাক্তার আর দুজন নার্স ইনজেকশন হাতে ছুটে এলো।রোদ্দুরকে জোর করে বাইরে বের করে দিল।রোদ্দুরের চোখের পানিতে কালো শার্টের অনেক খানি ভিজে গেছে।এলোমেলো ভঙ্গিতে পা ফেলে সে পাশের চেয়ারে ধপ করে বসে মাথা নিচু করলো।কেউ একজন ধীর পায়ে, শব্দ হীন পদধ্বনি তুলে তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।প্রায় সাথে সাথে চির পরিচিত,অতি চেনা একটা গন্ধ এসে তার নাকে লাগলো।এই গায়ের ঘ্রাণ রোদ্দুরের বড্ড চেনা।মূর্তিটি তার তুলতুলে নরম হাত রোদ্দুরের মাথায় পরম মমতায় স্পর্শ করতেই রোদ্দুর তার পেট জড়িয়ে শব্দ করে কান্না করে দিল।অস্পষ্ট স্বরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
—“অজান্তা, আমার বাবা!আমার বাবা!”
অহি দাঁত চেপে নিজের কান্না আটকালো।বেশিক্ষণ পারলো না।নিঃশব্দে চোখের জল ফেলে রোদ্দুরের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলো।
৩৩.
রোদ্দুর হাসপাতালে পৌঁছাবার ঘন্টা দুই পর আজাদ রহমান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ঠিকই, কিন্তু আর প্রশ্বাস নিতে পারলেন না।সন্ধ্যার সময় তার প্রাণবায়ু বের হয়ে গেল।যেন তিনি রোদ্দুরের সাথে শেষ দেখা করার জন্যই মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে এ কয়েকদিন বেঁচে ছিলেন।সন্ধ্যার পর পরই তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলো।
শফিক কাগজ হাতে ছোটাছুটি করছে হসপিটালের এ মাথা থেকে ও মাথা।মৃত ব্যক্তি হসপিটালে বেশিক্ষণ রাখা উচিত না।অবশেষে লাশ নিয়ে যাওয়ার সব প্রসেস ফিল-আপ করে সে কেবিনের দিকে পৌঁছাল।দরজার পাশের ভিড় ঢেলে কেবিনে ঢুকতে তার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো।রোদ্দুর বাবার পা জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কান্না করছে।একটু দূরে অহি রোদ্দুরের মাকে জড়িয়ে সামলানোর চেষ্টা করছে।
শফিক আর দেরি করলো না।হসপিটালের বারান্দায় বসে থাকা নাজমা খালার কোলে থেকে টাওয়াল দিয়ে পেঁচানো ফুটফুটে শিশুটা কোলে তুলে নিল।ফের কেবিনে ঢুকে রোদ্দুরকে সোজা করে তার কোলে তুলে দিল।কিছুটা আশ্যস্তের সুরে বলল,
—“রোদ্দুর ভাইয়া,সৃষ্টিকর্তা এক বাবাকে কেড়ে নিয়ে আরেক বাবাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন তো।কান্না করছেন কেন?একটু শান্ত হোন!”
রোদ্দুর অবাক হয়ে তার কোলে থাকা ফুটফুটে ফুলের মতো চেহারার বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে আছে।দুই-আড়াই মাসের বাচ্চা হবে হয়তো।অবিকল তার মতো চেহারা।সেই চোখ, সেই নাক,সেই কান,সেই মুখ,সেই ঠোঁট,সেই চিবুক!হুবহু রোদ্দুরের সব!যেন পিচ্চি রোদ্দুর।রোদ্দুরের চোখে মুখে বিস্ময় ফুটে উঠেছে।বাচ্চাটা বড় বড় করে তার দিকে চেয়ে আছে।তুলোর মতো নরম হাতদুটো তার মুখ ধরার চেষ্টা করছে।ঠোঁটের কোণে অবিকল রোদ্দুরের মতো হাসি!
রোদ্দুর উত্তেজনায় কাঁপছে।উঠে দাঁড়িয়ে হাঁসফাঁস করে বলল,
—“শফিক, এ কে?ও অবিকল আমার মতো হয়েছে কেন?কি হলো কথা বলছো না কেন?”
দৌঁড়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলল,
—“মা!ও মা!এই পিচ্চি আমার মতো হয়েছে কেন?”
অহিকে ঝাঁকিয়ে বলল,
—“অজান্তা,এই বাচ্চা কার?কে ও?বলো না?”
শফিক এগিয়ে এসে রোদ্দুরের কাঁধে হাত চেপে বলল,
—“রোদ্দুর ভাইয়া, এটা আপনার বাচ্চা।আপনি বাবা হয়ে গেছেন যে!এতদিন মিশনে ছিলেন বলে বুবু আপনার থেকে বিষয়টা গোপন রেখেছে।যাতে আপনি বাড়তি টেনশন না করেন।আর আপনার বাবার আশীর্বাদের হাতও কিন্তু ওর মাথায় আছে।কারণ তিনি প্রায়ই আপনার ফ্ল্যাটে গিয়ে আপনার ছেলেকে দেখে আসতো।”
রোদ্দুর অহির চোখে চোখ রাখলো।ভেজা সে দৃষ্টিতে ফুটে উঠেছে একই সাথে কৃতজ্ঞতা ও সুখের অভিমান।রোদ্দুর পরম যত্নে সেই ছোট্ট ছোট্ট হাতগুলোর আঙুল আকড়ে ধরলো।বাবার পাশে গিয়ে এক হাতে নিজের অংশকে বুকে জড়িয়ে, আরেক হাতে মৃত বাবার নিশ্চল হাত চেপে সে ফের হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো।রোদ্দুরের সে কান্নাতে পরম সুখ এবং তার পরম দুঃখ ফুটে উঠেছে।শফিকের কাছে দৃশ্যটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে করুণ দৃশ্য মনে হলো।
৩৪.
#পরিশিষ্ট:
কালো রঙের গাড়িটি গেট দিয়ে ঢুকে ছবির মতো সুন্দর একটা ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে থামলো।গাড়ি থেকে সুদর্শন একজন বের হয়ে ডোরবেল বাজালো।কয়েক সেকেন্ড পরেই দরজা খুলে গেল।রোদ্দুর অধীর আগ্রহে তাকিয়ে দরজা খুলে দেয়া কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে দেখতে পেল।বিগত বছর গুলোতে দু একদিন বাদে রোজ অহি দরজা খুলে দেয়।যাকে দেখার জন্য মন ছটফট করে,তাকে এক পলক দেখে তবে মনটা শান্ত হয়।অফিসের সমস্ত ক্লান্তি এক নিমেষে উধাও হয়ে যায়।রোদ্দুর প্রতিদিনকার মতো এগিয়ে গিয়ে অহির হাত চেপে ধরতে নিতে অহি দ্রুত সরে গিয়ে বলে,
—“দেখো,কারা এসেছে।”
রোদ্দুর যেন সংবিৎ ফিরে পায়।তার চোখ এতক্ষণে ড্রয়িং রুমে গেল।ড্রয়িং রুমে অনেক মানুষ।তার শ্বশুর,শ্বাশুড়ি, মা,শফিকের স্ত্রী রনিয়া আর তাদের চার বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে প্রানমিতা রুপন্তি!রোদ্দুর এগিয়ে গিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে সবার কুশলাদি জিগ্যেস করলো।
আজ তাদের বাসায় ডিনারের দাওয়াত ছিল সবার।সেই উপলক্ষে সবাই এসেছে।রোদ্দুর রুপন্তিকে কোলে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো।রনিয়াকে বলল,
—“শফিক কোথায়?ও আসেনি?”
রনিয়া আলতো হেসে বলল,
—“ভাইয়া ও অফিস শেষে আসবে।আজ একটু এক্সট্রা কাজ আছে।”
শফিকের যে বছর কন্যা সন্তান হয় সে বছর সে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।গভমেন্ট জব করে এখন।তার স্ত্রী রনিয়া টিচিং প্রফেশনে আছে।রেসিডেন্সিয়াল কলেজে আছে।শফিক তার পরিবার নিয়ে মোমাম্মদপুর ফ্ল্যাটে থাকে এখন।
—“হিম,তুই উপরে গিয়ে ফ্রেশ হ তো!”
রোদ্দুর মায়ের কথায় মাথা নেড়ে হুঁ জানাল।উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
—“মা,অভ্র কোথায়?”
রোদ্দুর আর অহির ভালোবাসার প্রথম ফুল অভ্র রাজ!রোনজিদা একটা হাই তুলে বলল,
—“তোর ছেলে মানুষ জন দেখলে লুকিয়ে পড়ে।বিশেষ করে মেয়ে মানুষ।গতকাল ওর স্কুলের চারজন ক্লাসমেট এসেছিল।ও তাদের দেখেই এক দৌঁড়ে রুমে দরজা বন্ধ করে দিল।কি এক বিচ্ছিরি কান্ড!”
সবাই একচোট হেসে ফেলল।অহি থমথমে মুখে বলল,
—“ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস কিন্তু।রাজ সারাক্ষণ গম্ভীর হয়ে থাকে।বাসায় যা কথাবার্তা বলে,স্কুলে গিয়ে একদম চুপ।কারো সাথে বন্ধুত্ব করবে না,মেয়েদের থেকে দূরে দূরে থাকবে।মেয়েদের দেখলে আতংকে পড়ে যেন।আর ক্লাসের মেয়েগুলো আবার ভীষণ পাজি।ওকে লজ্জায় ফেলতে হুটহাট বাসায় চলে আসে।রাজ তো ওদের দেখে নিজের রুমের দরজা আটকে বসে থাকে।আমিই তখন ওদের আপ্যায়ন করে খাওয়া দাওয়া করাই।এরকম থাকলে তো সমস্যা।সবার সাথে মিশতে হবে তো।”
জলিল মোল্লা এতক্ষণে মুখ খুলল।হেসে বলল,
—“ঠিক হয়েছে যাবে রে অহি।চিন্তা করিস না।”
সবাই মাথা নাড়লো।রোদ্দুর কিছুদূর গিয়ে পেছন ঘুরে অহিকে ইশারা করলো উপরে আসার জন্য।অহি দেখেও না দেখার ভান করে রান্নাঘরে চলে গেল।
অগত্যা রোদ্দুর মন খারাপ করে নিজের রুমে ঢুকলো।কিছুক্ষণ পায়চারী করে ওয়াশরুমে ঢুকলো।মিনিট বিশেক সময় নিয়ে শাওয়ার নিল।মাথা মুছতে মুছতে বের হয়ে সারা রুমে অহিকে খুঁজলো।অহি এখনো রুমে আসেনি।রোদ্দুর আর থাকতে না পেরে সিঁড়ির কাছে গিয়ে চেঁচিয়ে বলল,
—“অজান্তা,আমার সবুজ টিশার্টটা পাচ্ছি না।কোথায় রেখেছ?দিয়ে যাও তো!”
অহি উপরে আসলে না।নিচ থেকে বলল,
—“আলমারিতে ভাঁজ করে রেখেছি।তৃতীয় সারিতে দেখো।”
রোদ্দুর প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে আবার রুমে ঢুকলো।টিশার্ট ফিশার্ট সে খুঁজে পেয়েছে।তার উদ্দেশ্য ছিল অহিকে রুমে ডেকে আনা।একটু জড়িয়ে টড়িয়ে ধরা।কিন্তু এই মেয়ে তো বুঝেও না বোঝার ভান করছে।বার কয়েক সারা রুমে পায়চারি করলো আবার।বেলকনিতে চার বার গেল আর বের হলো।কিছুক্ষণ গভীর চিন্তা করে এক দৌঁড়ে সিঁড়ির কাছে গিয়ে নিচের দিকে তাকালো।গলা উঁচিয়ে আবার বলল,
—“অজান্তা,তোমার ফোন বাজছে অনেকক্ষণ হলো।আসো তো!”
অহি একটু আড়ালে ছিল।মুখ বের করে উপরের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল,
—“কি বলছো তুমি?আমার ফোন তো আমার হাতে।কখন বাজলো আবার?এই দেখো!শফিককে ফোন দেয়ার জন্য মাত্র ফোন হাতে নিয়েছি।”
রনিয়া অহির পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে।রোদ্দুর আমতা আমতা করে বলল,
—“ও আচ্ছা।ম-মনে হয় আমার ফোন বাজছে।যাই, দেখে আসি।”
বলেই সে চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে গেল।রুমে ঢুকে নিজের মাথার চুল নিজে টেনে ধরলো।এই মেয়ে কেন বুঝছে না?একবার উপরে এসে একটু ছুঁয়ে দিলে কি হয়!সে না হয় এত মানুষের মধ্যে সরাসরি রুমে ডাকতে লজ্জা পাচ্ছে।কিন্তু অহি তো জানে।সারাদিন অফিস করে এসে ওর কাছাকাছি না থাকলে রোদ্দুর কেমন হয়ে যায়!
রোদ্দুর উঠে দাঁড়ালো।আলমারির কাছে গিয়ে অহির সব কাপড়চোপড় নিচে ফেলে দিল রাগে।তারপর হাত দিয়ে সব এলোমেলো করে পেঁচিয়ে বস্তার মতো করে ফের আলমারিতে ঢুকিয়ে দিল।কিছুক্ষণ আবার হাঁটাহাঁটি করে সুন্দর মতো অভ্রর রুমে ঢুকে গেল।
অভ্র বিছানায় বসে ছবি আঁকছিল।চারপাশে রঙের ছড়াছড়ি।চাদরেও কিছু রঙ মিলেমিশে একাকার।ছবিতে অস্পষ্ট ভাবে নদী আর গাছপালা দেখা যাচ্ছে।রোদ্দুর এগিয়ে গিয়ে অভ্রর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
—“আমার সোনা বাবা!আমার ময়না বাবা।আমার কলিজা কই রে!”
অভ্র বড়দের মতো গম্ভীর কন্ঠে বলল,
—“পাপা,এতো মিষ্টি করে কথা বলে লাভ নেই।আমি এখন নিচে গিয়ে মামণিকে ডেকে দিতে পারবো না।আমি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা ছবি আঁকছি।”
রোদ্দুর জোর করে ধরে অভ্রর গালে চুমু খেল।কাছে ডেকে বলল,
—“কি সুন্দর ছবি আঁকিস অভ্র তুই।কালই তোর ওসি বাপ এক বস্তা রঙ কিনে দিবে।আয়,কোলে নেই অভ্র!”
অভ্র চোখ ছোট ছোট করে বলল,
—“পাপা!কিছুদিন আগে আমার নবম তম জন্মদিন পালিত হয়েছে।আমি বড় হয়ে গেছি পাপা।কোলে উঠার বয়স শেষ।তুমি গিয়ে মামণিকে ডাকো।আমি পারবো না।”
রোদ্দুর কেঁদে দিয়েছে প্রায়।তার এই ছেলেটা খুব পাজি হচ্ছে দিন দিন।পাঁচ-ছয় বছর না হতেই সে বায়না ধরলো আলাদা ঘুমাবে।আবার মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলে যে রোদ্দুর টাস্কি খেয়ে বসে থাকে।কই!সে তো এতটুকু বয়সে এমন ছিল না।এই ছেলে বড় হয়ে যে কি করবে কে জানে!
রোদ্দুর মন খারাপ ভাব নিয়ে অভ্রর মাথায় চাটি মেরে বলল,
—“বাপের মান রাখিস বাপ!”
তারপর সিঁড়ির উপর দিয়ে উঁকিঝুঁকি মেরে অহিকে দেখার চেষ্টা করলো।কোথাও চোখে পড়লো না।হয়তো রান্নাঘরে।রোদ্দুর রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ করে অতিসত্বর রুমে আসতে বলল।কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনো রেসপন্স এলো না।শেষ মেষ রোদ্দুর কয়েক সিঁড়ি নেমে রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে বলল,
—“অজান্তা,অভ্র কাঁদছে।তোমায় ডাকে।ওর রঙ পেন্সিল খুঁজে পাচ্ছে না।উপরে আসো তো।”
প্রায় সঙ্গে সঙ্গে রোদ্দুরের পেছন থেকে কেউ সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলল,
—“মামণি পাপা মিথ্যে বলছে।আমি মোটেও তোমায় ডাকিনি।পাপা নিজে তোমাকে ডাকছে।”
অহি সহ বেশকিছু মুখ রান্নাঘর থেকে বের হয়ে অদ্ভুত দৃষ্টিতে রোদ্দুরের দিকে তাকিয়ে আছে।রোদ্দুর জোরপূর্বক সবার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো।কিন্তু কারো মুখের অভিব্যক্তির পরিবর্তন হলো না।রোদ্দুর আর এক সেকেন্ড না দাঁড়িয়ে উপরে উঠে গেল।
অভ্র নিচে নেমে অহির পাশে দাঁড়িয়ে পড়লো।রনিয়া রোদ্দুরের গাল টিপে হাসতে হাসতে বলল,
—“অবশেষে নবাবের পুত্তুর নিচে নামলো!কি সুন্দর চেহারা হচ্ছে অভ্রর।কেমন আছো অভ্র?”
অভ্র গম্ভীর কন্ঠে বলল,
—“ভালো, আন্টি!”
অভ্র সরে গিয়ে সোফায় বসলো।টিভি অন করে সেদিকে তাকাতে রুপন্তি এসে আধো আধো কন্ঠে ভেঙ্গে ভেঙে বলল,
—“আমায় কোলে নাও ভাইয়া!”
—“এক চড় খাবি।যা সরে যা!ছি!নাক দিয়ে কি বের হচ্ছে।”
অভ্র নাক সিঁটকে মুহূর্তে পিছিয়ে গেল।এই বাচ্চা কাচ্চার জন্য সে এতক্ষণ নিচে নামছিল না।রুপন্তি আবার এগিয়ে এসে কোলে নিতে বললে অভ্র এক দৌঁড়ে দাদির কাছে গেল।
শফিকসহ সবাই ডিনার শেষ করে গল্পগুজব করে যখন মোহাম্মদ পুর রওনা দিল তখন মোটামুটি রাত হয়ে গেছে।রোদ্দুর অনেক থেকে যেতে বলেছিল, কিন্তু কেউ রাজি হলো না।সকাল বেলা শফিকের অফিস আছে।সবাই চলে যাওয়ার পর নাজমা খালার সাথে ডাইনিং গুছিয়ে অহি উপরে এলো।অভ্রর রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো ঘুমিয়ে পড়েছে এলোমেলো ভাবে।এই ছেলেটাও তার বাপের মতো।ঘুমানোর কোনো শ্রী নেই।অহি মুচকি হেসে অভ্রর গায়ে কম্বল টেনে দিল।মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে চুমু এঁকে দিল।তারপর বের হয়ে আসলো।শ্বাশুড়ির রুমে উঁকি দিয়ে দেখলো তিনি গভীর ঘুমে।অবশেষে নিজের রুমের দিকে পা বাড়াল।
দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে সে পেছন ফিরে তাকাল।রুম অন্ধকার।রোদ্দুর ঘুমিয়ে পড়েছে কি?আজ বিকেল থেকে রোদ্দুর তার সাথে একাকী কথা বলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু সে রান্না করতে ব্যস্ত ছিল বলে সময় পায়নি।রোদ্দুর যে রেগে আছে তা সে বেশ বুঝতে পারছে।কারন ডিনারের সময় রোদ্দুর সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলেছে।শুধু অহি ছাড়া!
অন্ধকারে বিছানা হাতড়ে অহি বুঝতে পারলো রোদ্দুর বিছানায় নেই।তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।এক দৌঁড়ে বেলকনির কাচ ঠেলে ভেতরে ঢুকে দেখে রোদ্দুর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কাচ ঠেলার শব্দে পেছন ফিরে তাকাল না।অহি গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলল,
—“শুনছো!”
রোদ্দুর প্রতিত্তর করলো না।একটু সরে গেল।অহি বেশ বুঝতে পারছে রোদ্দুরের অভিমান জমেছে।সে বুঝতে পারে না,একটা মানুষ কিভাবে একজনকে এতটা ভালো বাসতে পারে।তার প্রতি রোদ্দুরের ভালোবাসা যেন দিন দিন আরো বেড়ে চলেছে।রোদ্দুর একদম অহিনির্ভর হয়ে পড়েছে।তাকে ছাড়া নিজের অস্তিত্ব নেই যেন!
অহি সাবধানে রোদ্দুরের সামনে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো।গভীর ভাবে রোদ্দুরের সাথে মিশে গেল।রোদ্দুরের বুকে মুখ ঘষতে নিতে রোদ্দুর বলল,
—“ছাড়ো তো!তোমার গা থেকে তরকারি তরকারি গন্ধ আসছে।”
রোদ্দুর হাত দুটো টান টান করে মুঠ চেপে আছে।অহিকে সেদিকে এক নজর চেয়ে মুচকি হাসলো।ফের রোদ্দুরের বুকে মুখ ঘষে বলল,
—“নিজে যে অফিস থেকে ফিরেই ঘামের গন্ধ নিয়ে মিনিটের পর মিনিট জড়িয়ে রাখে তার বেলা?”
রোদ্দুর বড় করে শ্বাস ফেলে বলল,
—“সেই বিকেল থেকে ডাকছি,অবশেষে সময় হলো?”
—“ভালোবাসি!”
রোদ্দুর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।অহিকে দু হাতে আঁকড়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।চোখ বন্ধ করে কম্পমান গলায় বললো,
—“অজান্তা,আমি দিন দিন আরো কেমন জানি হয়ে যাচ্ছি।পাগল হয়ে যাব বোধ হয়।তোমাকে সারাক্ষণ দেখেও চোখ ভরে না যেন।প্রতিদিন ভোরবেলা চোখ খুলে তোমার মুখ দেখে আমার হৃদয় কেঁপে উঠে।মানুষ এত সুন্দর আর অনন্য হয় কি করে!তুমি দিন দিন আরো পাগল করে দিচ্ছো আমায়।আর কিছু জানি বা না জানি,শুধু এটা জানি যে আমি তোমাকে ছাড়া একটা সেকেন্ড ও থাকতে পারবো না।তুমিহীন পৃথিবীতে আমি দমবন্ধ হয়ে মারা যাব।জানো,গাঙচিল!আমি এখন একমনে শুধু এটা চাই,ভবিষ্যতে আমি যেন তোমার আগে পৃথিবী ছাড়তে পারি।আমি সত্যি তোমাকে ছাড়া একটা সেকেন্ড অতিবাহিত করতে পারবো না।আমার মনের আকাশে তুমি উড়বে।ক্লান্ত হয়ে গেলে বুকে পা রেখে জিরিয়ে নিবে।হৃদয়ের সমুদ্রে পানি দিয়ে খেলা করবে।ফের আমার বুকের খাঁজে ঘুমিয়ে পড়বে আমার গাঙচিল!তাকে ছাড়া আমি অস্তিত্বহীন।”
রোদ্দুরের রুদ্ধ কন্ঠ অহির বুকে গিয়ে বিঁধলো।রোদ্দুর কাঁদছে।অহিরও দু চোখ ফেটে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।সে রোদ্দুরের বুকে মুখ গুঁজে বলল,
—“তোমার গাঙচিল,তোমাকে রেখে পরিযায়ী হবে না।আমরা বাঁচলে একসাথে বাঁচবো।মরলে একসাথে মরবো!তোমার গাঙচিল তোমাকে এই পৃথিবীতে একা রেখে কোথাও যাবে না। কোথাও না!”
রোদ্দুর ঝাপসা চোখে অহির মুখটা দুহাতে ধরে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।অন্ধকারের ছিঁটেফোঁটা আলো এসে পড়েছে সে মুখে।মন্ত্রমুগ্ধের মতো চেয়ে রইলো সে মুখপানে।দুটো চোখে চোখ স্থির হতেই সময় থেমে গেল যেন।কল্পনায় দূর থেকে শুধু সমুদ্র মৃদুমন্দ গর্জন শোনা যাচ্ছে যেন।ঢেউয়ের তালে তালে দুটো গাঙচিল উড়ে চলেছে।তাদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ কানে ঝংকার তুলে যাচ্ছে।সুখে থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি গাঙচিল!
*সমাপ্ত*
🐢আসসালামু আলাইকুম!যদিও গতকালের পর্বটা লেখার সময় মাথায় এসেছিল অনেকে হয়তো স্যাড এন্ডিং ভাববে।কিন্তু সবাই এতটা আপসেট হয়ে যাবে ধারণা ছিল না।থাকলে আগেই স্পয়লার দিয়ে দিতাম।
অহি বা রোদ্দুরকে মেরে ফেলার প্লান আমার প্লটের মধ্যে ছিল না।ওদের জুটিতে কখনো ভাঙন ধরবে না।ওরা একে অপরের পরিপূরক!অহি ছাড়া রোদ্দুর অস্তিত্বহীন।বেচারা বাঁচবে না তো!
এদিকে শুনুন।আমার গল্প পড়ার সময় একদম চিল মুডে থাকবেন।কোনো ধরনের স্যাড এন্ডিং হবে না আশা করি।(নিতান্ত বাধ্য না হলে!) কারণ আমি গল্পই লিখি ব্যক্তিগত দুঃখ লুকিয়ে হাসি,তামাশা,আনন্দ,সামান্য মন ভালো করার জন্য।সেখানে চরিত্রগুলোকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ!আমাদের কল্পনাতে সবাই সুখে থাকুক না!তাতে দোষের কি!আচ্ছা, ভালো থাকবেন সবাই।নতুন গল্প নিয়ে ফিরবো খুব তাড়াতাড়ি।এতদিন রোজান্তার পাশে থাকার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও ভালোবাসা।দোয়া করি সবার জীবনে রোদ্দুর নেমে আসুক।(কারো জীবনে ব্যক্তি রোদ্দুর, কারো জীবনে সূর্যের রোদ্দুর।)🤎
গল্পটি নিয়ে এক লাইন মন্দ দিক বা কোন অংশ অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে তা বলে যাওয়ার অনুরোধ রইলো।🐢