গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব_৭

গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব_৭
#লেখায়_ফারহানা_ছবি

.
.
🦋
প্রাণোর বুকের ভিতর ধুকধুক করছে ৷ তার পেছনে কোন পুরুষ মানুষ দাড়িয়ে আছে সেটা প্রাণো খুব ভালো করে বুঝতে পারছে৷ প্রাণো পাশে তাকাতে ফ্লাওয়ার ভাস দেখে সাহস পেল ৷ হুট করে ফ্লাওয়ার ভাস টা হাতে তুলে নিয়ে পেছনে থাকা মানুষটাকে আঘাত করতে গিয়ে থেকে যায় প্রাণো কিন্তু তার আগে প্রাণোর হাত চেপে ধরে বলে উঠলো ,” প্রাণো ইট’স মি স্মরণ৷ কাম ডাউন এন্ড সিট৷”

আকাশে ভেঙে মুষলধারে বৃষ্টি তার উপর ঝড়ো হওয়া সাথে বজ্রপাত ৷ প্রাণো বজ্রপাতের শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছে৷ হঠাৎ স্মরণকে দেখে প্রাণো এখনো অবাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় ৷ প্রাণো ভাবেনি স্মরণ তার পেছন পেছন তাদের কটেজে চলে আসবে৷ স্মরণ প্রাণোকে কাঁপতে দেখে বুঝতে পারলো তাকে হয়তো এই মুহূর্তে প্রাণো আশা করেনি তাই এভাবে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে৷ স্মরণ প্রাণোর হাত থেকে বাজ টা টি টেবিলের উপর রেখে প্রাণোর হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেয়৷

প্রাণো চেয়ারে বসতে বৃষ্টির পানির ছিটে মুখে পড়তে প্রাণো বুঝতে পারলো তার সামনে দাড়িয়ে আছে যে ব্যক্তি সে সত্যি স্মরণ৷ মুহূর্তে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল প্রাণো ৷ ব্রু যুগল কুচকে ছোট ছোট চোখ করে কর্কশ গলায় স্মরণের উদ্দেশ্য প্রাণো বলল,” আপনি এখন এখানে কি করছেন মিস্টার স্মরণ?”

স্মরণ আরাম করে প্রাণোর পাশের চেয়ারে বসে বলল,” আপনি বলাটা কিন্তু বারণ ছিলো প্রাণো”

” এটা আমার প্রশ্নের উওর নয় মিস্টার স্মরণ৷ আপনাকে যে প্রশ্নটি করেছি আপনি তার উওর দিন ৷”

” তুমি আমাকে এভোয়েট করছো কেন প্রাণো?”

” তার উওর দেওয়ার জন্য আমি বাধ্য নই মিস্টার স্মরণ আর তার চেয়ে বড় কথা আপনি আমার না বন্ধু না শত্রু না কোন রিলেটিভ সো আপনাকে এভোয়েট করার কোন প্রশ্নই এখানে আসছে না৷”

” প্রাণ যাস্ট টেল মি আমি কি কোন অপরাধ করেছি ?”

” না করেননি তবে এখন করলেন আমাকে প্রাণ বলে ডেকে , যাই হোক আমি চাই না আপনার সঙ্গ তাই দয়া করে আমাকে একা ছেড়ে দিন৷ আর একটা কথা আগ বাড়িয়ে আমাদের সাহায্য করার কোন প্রয়োজন নেই৷ আমরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি৷”

প্রাণোর কথা শুনে স্মরণের পুরো শরীর যেন রাগে ফেঁটে যাচ্ছে কিন্তু নিজেকে শান্ত করার প্রচেষ্টারত স্মরণ৷ এই মুহূর্তে প্রাণোকে তার রাগি হিংস্র ফেসটা দেখাতে চাচ্ছে না যদি হিতে বিপরিত হয় এটা ভেবে৷

স্মরণ উঠে দাড়িয়ে কাঠের রেলিং ধরে বৃষ্টির ছিটে গুলো তার চোখে মুখে ছুঁয়ে যাচ্ছে বারংবার ৷ স্মরণ চোখ থেকে জিরো পাওয়ারের চশমাটা খুলে বুক পকেটে রেখে জোড়ে জোড়ে কয়েক বার শ্বাস নিয়ে হুট করে প্রাণোর হাত টা টেনে ধরে নিজের পাশে দাড় করায় স্মরণ৷ প্রাণো হতবিহ্বল হয়ে স্মরণ কে দেখছে ৷ স্মরণ যে কি করার চেষ্টা করছে তা বুঝার চেষ্টা করছে প্রাণো, স্মরণ প্রাণোর হাত জোড়া নিজের দু’হাতের মুষ্ঠি বদ্ধ করে প্রাণোর চোখে চোখ রেখে বলতে লাগলো, ” আই ডোন্ট নো প্রাণো তুমি কেন এমন বিহেভ করছো! তুমি বলতে না চাইলে বলতে হবে না তোমায়, কিন্তু দয়াকরে আমাদের এই সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাকে তুমি শেষ করে দিও না ৷ তুমি বলো আমি এমন কিছু তোমার সাথে যেটা তোমার খারাপ লাগে?”

প্রাণো মাথা ডান বাম নারে যার অর্থ না৷

” তাহলে কেন এমন করছো প্রাণ?” কাতর গলায় বললো স্মরণ৷ স্মরণের এহেতুক কথায় প্রাণোর নিজেরও ভিষণ খারাপ লাগছে ৷ সত্যি একটা সামন্য বিষয় টা তার এতো বড় করে দেখা উচিত হয়নি৷ আর স্মরণ তো তার সাথে কোন প্রকার বাজে বিহেভ করেনি তাহলে কেন এমনটা করছে সে! সাফার কথা শুনে! নাকি অন্য কিছু? যেটা প্রাণো নিজেও বুঝতে পারছে না৷”

প্রাণো কে চুপ থাকতে দেখে স্মরণ প্রাণোর হাত ছেড়ে দিয়ে বৃষ্টির ভিতরে বেড়িয়ে যেতে নিলে প্রাণো স্মরণের হাত ধরে বলে, ” বাইরে বৃষ্টি পড়ছে স্মরণ দেখতে পাচ্ছো নিশ্চয়ই! এখানে বসো আমি দু’কাঁপ চা নিয়ে আসছি৷”
প্রাণো তার অগোছালো চুল গুলো খোপা করতে করতে রুমের সাথে এটার্চ ছোট্ট রান্না ঘড়ে গিয়ে চা বানাতে লাগলো৷ ঐশী আশার সময় শুকনো খাবার চা পাতা চিনি এলাচ কফি গুড়ো দুধের প্যাকেট কিনে এনেছিলো বিধায় প্রাণোকে বেশি কষ্ট করতে হয়নি৷ অন্যদিকে স্মরণের ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠলো৷ প্রাণো যে আবার আগের মতো সহজ স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে তা দেখে স্মরণের ভিষণ খুশি লাগছে৷ কিন্তু হঠাৎ প্রাণো তাকে এভোয়েট করার কারণটা খুজে পাচ্ছে না৷ স্মরণ তার ফোন বের করে কিছু ছবি কারো নাম্বারে সেন্ড করে ম্যাসেজ করলো ” আমার কলিজায় যে হাত দিতে যাবে তার অবস্থা ঠিক এই রকম হবে৷ ” ম্যাসেজ টা সেন্ড করে বাঁকা হেসে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো স্মরণ, ” প্রাণ আজ হোক বা কাল আমার জন্য তোমার মনে দোর গোড়ায় এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে পৌছাবো ৷ তুমি ঠিক দেখে নিও এই ইফতেকার মাহমুদ স্মরণ কখনো হারে নি ৷ তোমার ভালোবাসা জয়ী করে খান্ত হবো প্রাণ৷ যে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করছি তার জন্য না হয় আর একটু অপেক্ষা করলাম৷ আর কেউ একজন বলেছিলো অপেক্ষার ফল যে মিষ্টি হয় ৷ তাই বলা চলে অপেক্ষায় থেকে যদি দারুণ কিছু হয় তাহলে অপেক্ষা করাই ভালো৷

প্রাণো দু’কাঁপ চা নিয়ে ব্যালকনিতে এসে দেখে স্মরণ নিজের মনে কি যেন বিড়বিড় করছে ৷ প্রাণো কপাল কুচকে স্মরণের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো,” একি তুমি একা একা কি বিড়বিড় করছো শুনি?”

” ক,, কিছু না আসলে এই বৃষ্টি মুখর পরিবেশটা ভিষণ সুন্দর লাগছে তাই দেখছি৷”

“ওহ! এই নেও চা” প্রাণো স্মরণের হাতে চায়ের কাঁপ দিয়ে পাশের চেয়ারে বসে পড়ে প্রাণো৷ স্মরণ চায়ের কাঁপে চুমুক দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে তা দেখে প্রাণো বলে,” কি বেপার চা টা কি ভিষণ বাজে খেতে হয়েছে?”

স্মরণ হুট করে চোখ মেলে দিয়ে ব্যস্ত গলায় বলতে লাগলো, ” না না একদম না , সত্যি বলতে তোমার হাতে চা অসাধারণ হয়েছে৷”

” তাহলে এখানে যে কয়টা দিন আছি সময় পেলে তোমাকে চা বানিয়ে খাওয়াবো৷”

স্মরণ মুচকি হেসে মনে মনে বলে ,” এই কয়টা দিন কেন প্রাণ! খুব শীগ্রই আমি সারা জীবন যাতে তোমার হাতে চা খেতে পারি তার ব্যবস্থা করছি৷”

” তুমি খাওয়াতে চাইলে আমি না বলবো এমন দুঃসাহস আমার নেই ৷ আর না তোমার হাতে বানানো চা খাওয়া মিস করতে চাই৷ ”

স্মরণের কথা শুনে প্রাণো মুচকি হেসে বললো,” আজ যে পরিমান বৃষ্টি পড়ছে মনে হয় না বার্বিকিউ পার্টি করা যাবে৷”

” হুম ঠিক বলেছো প্রাণ , আমার ও মনে হয়না পার্টি টা হবে বলে৷”

স্মরণ ইচ্ছে করে প্রাণো না বলে প্রাণ বললো কারণ আজ আবার প্রাণোর রিয়েক্ট করে কি না তা দেখতে চাইছে স্মরণ , কিন্তু আজ প্রাণো কোন রিয়েক্ট করলো না ৷ প্রাণো নিজের মনে মনে ভাবতে লাগলো , সাজিত এখন তার ছোট বোনের স্বামী সেহেতু এখন সম্পর্কে তার বড় হয় ৷ তাকে মনে রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাকে নষ্ট করার কোন মানে হয়না৷ স্মরণ যদি প্রাণ বলে ডাকতে চায় তো ডাকুক না ক্ষতি কি? এমনটা নয় যে মানুষটা খারাপ ৷ এখন তাকে পুরনো সব কথা ভুলে গিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে আর নিজের কাজে কর্নসানট্রেট করতে হবে৷ কোন ভুল চুক হলে কঠিন দাম তাকে দিতে হতে পারে ৷ এটা ভেবে প্রাণো সম্পূর্ণ রুপে সাজিতের ভাবনা বাদ দিয়ে স্মরণের সাথে গল্প করতে লাগলো৷

হুট করে স্মরণ প্রাণোর চুলের খোপা টা খুলে দিয়ে বললো,” তোমাকে খোলা চুলে সব থেকে বেশি সুন্দর লাগে প্রাণ৷ আমার সাথে থাকা সময়ে চুল গুলো খুলে রাখবে প্লিজ আর বাইরের মানুষের সামনে চুল বেধে রাখবে সব সময় ওকে”

” কেন?” হতবিহ্বল হয়ে জিঞ্জাসা করলো প্রাণো…..

স্মরণ বিড় বিড় করে বলতে লাগলো,
” কারণ আমি চাই না আমার প্রাণোর সৌন্দর্য পুরো পৃথিবী দেখুক৷ ”

স্মরণের বিড়বিড় করে বলা কথা গুলো প্রাণোর কান অবধি পৌঁছাতে সময় নিলো না৷ প্রাণো এক দৃষ্টিতে স্মরণের দিকে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণো স্মরণের চোখের দিকে তাকাতে প্রাণো চমকে ওঠে কারণ এই চোখ প্রাণোর খুব করে চেনা৷ কিন্তু কোথায় দেখেছিলো এটাই মনে করতে পারছে না প্রাণো৷ স্মরণকে যে তার খুব চেনা পরিচিত মনে হচ্ছে এটা প্রাণো অস্বীকার করতে পারে না কিন্তু কবে কোথায় দেখেছে সেটা মনে করতে পারছে না প্রাণো৷ স্মরণ বুঝতে পারছে তার প্রাণ কিছু একটা নিয়ে বেশ ডিসটার্ব , স্মরণ হুট করে বলে উঠলো , ” জানো প্রাণ তোমার নীলমনির কাজল কালো চোখ দুটো দেখে যে কোন পুরুষ মানুষ তোমার চোখের প্রেমে পড়তে বাধ্য ৷”

স্মরণের কথা শুনে প্রাণো ভেংচি কেটে বলল,” তাহলে কি ধরে নিবো তুমিও আমার প্রেমে পড়েছো? ”

প্রাণো যে এমন কোন প্রশ্ন করে বসবে এটা স্মরণ ভাবতে পারেনি, ” ন,, না মানে…. ” বাকিটা শেষ করার পূর্বে প্রাণোর ঠোঁটের কোনে শয়তানি হাসি নিয়ে বলে ওঠে,” তার মানে কি ধরে নিবো আপনি পুরুষ মানুষ নন স্মরণ৷” কথাটা বলে হাসতে লাগলো প্রাণো…

স্মরণ হতবিহ্বল হয়ে প্রাণোর হাসির কারণটা বুঝে উঠতে রেগে তাকালো প্রাণোর দিকে , প্রাণ স্মরণের রাঙ্গানিত চোখ দেখে ভয় পাওয়ার ভান করে বলে ওঠলো, ” আল্লাহ! এভাবে তাকিয়ে আছো কেন স্মরণ? আমি নিশ্পাপ বাচ্চা শিশু এভাবে রাগি চোখে তাকালে নির্ঘাত ভয়ে হার্টএট্যাক করে মরে যাবো৷ তারপর তোমার উপর শিশু হত্যার কেস হবে ৷ তুমি জেলে যাবে বুঝতে পেরেছেন? ”

স্মরণ প্রাণোর কথা শুনে হেসে ফেলে , হাসার সময় স্মরণের ডান গালে টোল পড়ে ৷ যার কারণে স্মরণের হাসিটা আরো মারাত্নক লাগে প্রাণোর, স্মরণ হাসতে হাসতে বলল,” তুমি শিশু? আজ বিয়ে দিলে কাল দু বাচ্চার মা হয়ে যাবে সে বলে কিনা সে এখনো শিশু হা হা হা”

” আজ বিয়ে হলে কাল কি করে বাচ্চা হবে? বাচ্চা হতে ন-দশ মাস সময় লাগে জানো না নাকি?”

” হুম তাই তো ম্যাম আপনি না বললে আমি জানতে পারতাম না ৷ ” বলে আবার হাসতে লাগলো স্মরণ ৷ আর প্রাণো মুখ ফুলিয়ে বৃষ্টি দেখতে লাগলো৷

বৃষ্টি কিছুটা কমে আসতে সাফা, নিলয় , আকাশ , ঐশী, সাগর , স্মিতা তাদের কটেজে ফিরে আসে ভিজতে ভিজতে৷ বৃষ্টিতে ভিজতে দেখে প্রাণো তার তিন বান্ধবীকে ধমক দিয়ে বলে দ্রুত চেন্জ করে নিতে ৷ কিন্তু প্রত্যেকে স্মরণ কে দেখে অবাক হয়ে যায়৷ সাগর আকাশ নিলয় ভেবে ছিলো স্মরণ হয়তো রুমে ফিরে গেছে কিন্তু প্রাণো স্মরণ যে এখানে চা খেতে আড্ডা দিচ্ছে এটা তাদের ধারনার বাইরে ছিলো কারণ স্মরণ মেয়েদের সাথে আড্ডা দেওয়া তো দূর কথা বলতে অস্বস্থি বোধ করতো সে কিনা প্রাণোর সাথে স্বাচ্ছন্দ্যে আড্ডা দিচ্ছে? আকাশ, নিলয়, সাগর তিন জনই তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্মরণের দিকে স্মরণ তার তিন বন্ধুর দিকে না তাকিয়ে দরজার কাছে দাড়িয়ে বলে উঠলো ,” ত্রিশ সেকেন্ড সময় দিলাম তোরা দ্রুত রুমে ফিরে যাবি নাহলে….!”

স্মরণের বলা শেষ হওয়ার পূর্বে তিন বন্ধু দ্রুত প্রাণোর রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ প্রাণো স্মরণ দিকে তাকাতে স্মরণ মুচকি হেসে বললো,” রাতে তোমাদের রেস্টেরেন্টে যেতে হবে না আমি অর্ডার করে দিবো ৷”

প্রাণো কিছু বলবে তার আগে স্মরণ চলে যায়৷ ঐশী স্মিতা সাফা ড্রেস চেন্জ করে এসে প্রাণো নানা ধরনের প্রশ্ন করতে লাগলো ৷ স্মরণ কেন এখানে ছিলো? কেন কি বললো ব্লা ব্লা ব্লা ৷ প্রাণো কোন কথা না শুনে নিজের ফোন টা অন করে , অন করার দু’মিনিট পর দশটা মেসেজ সাথে চল্লিশ+ মিসড কল ৷ প্রাণো নাম্বার টা ভালো করে দেখে দ্রুত সে নাম্বারে ডায়াল করে….
.
.
.
#চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here