#চন্দ্রপ্রভায়_তুষার_বর্ষণে।।০৫ পর্ব।।
#তাসনিম_তামান্না
হানিয়া ইমনের রক্তাক্ত হাত দেখে চোখ ছলছল করে উঠল নিশাদ আর হামজার উপস্থিতিতে কান্নাটা আটকে রেখে দিল। আকস্মিক হানিয়ার উপস্থিতিতে ইমন ভড়কে গেলো। নিশাদ বলল
–“শুরু হয়ে গেছে আরেকজনের ম্যালোড্রামা”
হানিয়া নিশাদের কথায় পাত্তা দিল না। ইমনের দিকে জ্বলত চোখে তাকিয়ে বলল
–“কালকে এটা হয়েছে না? জিজ্ঞেসা করলাম তখন আমাকে বললি না কেন? দেখ কতটা কাটছে।”
ইমন বলল “বেশি কাটে নি শুধু চামড়া কাটছে। দেখবি ক’দিন পরে ঠিক হয়ে যাবে। তোর মামা স্ট্রংগ বুঝলি। এই ছোটখাটো কাটাছেঁড়া আমাকে দমাতে পারবে না।”
শেষের কথা গুলো একটু ভাব নিয়েই বলল ইমন। হানিয়া রেগে বলল
–“ডায়লগবাজি কম করে কর। এই নিশাদ ভালো করে ব্যান্ডেজ কর।”
–“১০০০ টাকা ভিজিটিং দিস।”
–“ফুটো পয়সাও পাবি না। ডক্টর হসনি তাই এই ভাব ডক্টর হয়ে গেলে না জানি ভাবে তোর মাটিতে পা ই পড়বে না।”
–“অফকোর্স, সেটা কি বলা লাগে নাকি? তখন বউকে নিয়ে আমি আকাশে উড়ব। বাই দ্যা ওয়ে, কত ভাবলাম তোর বিয়েটা হয়ে গেলে আমার লাইনটা ক্লিয়ার। কিন্তু না তোর তো আমার লাইফে ভিলেনগিরি করতেই হবে।”
হানিয়া নিশাদের কথায় প্রতিত্তোর করল না। হামজাকে বলল
–“হামজা তোর আর হায়াতের এই বাড়িতে যা যা দরকারি জিনিসপত্র আছে বিকালের মধ্যে গুছিয়ে ফেল। আর যেনো কোনো দরকারে এ বাড়িতে পা না পড়ে।”
হামজা অবাক হয়ে বলল “কেনো আপি?”
–“যা বলছি ঝটপট কর যা।”
হামজা চলে গেলো। হানিয়াও আহছানউল্লার রুমে গেলো। সেখানে হানিয়ার নানুমণি, ফুফু-ফুপা, বড় মামা-মামী, রৌদ্দুরের মা, খালা উপস্থিত। হানিয়াকে দেখে আহছানউল্লার চোখ-মুখ তীব্র অনুসূচনায় ছেয়ে গেলো। হানিয়া বলল
–“চাচু সকলে যখন এখানে আছে আমি একটা কথা বলতে চাই। আশা করব আমার এই সিদ্ধান্তটা আপনি মেনে নিবেন।”
রৌদ্দুরের মা বলল
–“কীসের সিদ্ধান্ত? কোন ব্যাপারে?”
–“আমার ও আমার ভাই-বোনদের ব্যাপারে। আজ বিকালে আমরা এখান থেকে চলে যাব। এবাসা ওবাসা থাকাথাকি না করে আমরা ও বাসাই থাকব। ওখান থেকে হামজা-হায়াতের স্কুলও কাছে সব সুবিধার কথা ভেবেই বলছি।”
আহছানউল্লা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল
–“যেটা ভালো মনে হয় করো। বড় হয়েছ নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারো।”
–“ ‘বড় হয়েছি নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারি’ কথাটা যদি আগে বুঝতেন তাহলে হয়ত আজ এমন পরিস্থিতি আসত না।”
সকলে চুপচাপ হয়ে আছে। হানিয়া নিজের নানুমণি ও বড় মামীকে উদ্দেশ্য করে বলল
–“নানুমণি, মাম হামজা-হায়াতকে গোছগাছ করতে একটু সাহায্য করো তো! আর চাচু কিছু ব্যাপারে আপনার সাথে আমার আলাদা করে কথা আছে। আপনি কী ফ্রী আছেন?”
–“হ্যাঁ বলো মামণি কী বলতে চাও?”
সকলে চুপচাপ রুম থেকে প্রস্থান করল। হানিয়া দরজা বন্ধ করে বলল
–“চাচু আর কয়েকদিন পর আমার ফ্লাইট আমি স্কলারশিপ পেয়েছি। তারজন্য অবশ্য অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে।”
আহছানউল্লা বিস্ময়ের সাথে প্রশ্ন করল
–“হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত? তুমি তো এখানে ঢাবিতেই ভালো ছিলে। ঔখানে একা কী করবে? হামজা-হায়াত ওরা…”
আহছানউল্লার পুরো কথা শেষ করতে দিল না। বলল
–“ওদের দেখার জন্য মাম,বাবাই,নানুমণি, ইমন মামা আছে। তাছাড়াও ওরা নিজেদের চলা শিখতে হবে।”
–“ওদেরকে ছাড়া থাকতে পারবে? কখনো দূরে গিয়ে থেকেছ একদিনের জন্যও? রাতে ওদের শুটিং থাকলে তুমি ওখানে গিয়ে বসে থাকো। কখনো চোখের আড়াল হতে দাও না। আর সেই তুমি এমন ডিসিশন নিচ্ছ দেখে অবাক হচ্ছি।”
–“আমি ভেবেই ডিসিশন নিয়েছি। আমি এখানে থাকলে রৌদ্দুর ভাই আমার পিছু ছাড়বে না দোলা নিজের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হবে। তাছাড়া আমি যদি ওখানে সেলেট হতে পারি আমি ভাইবোন মাম-বাবাই, নানুমণি দের নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।”
–“কত বড় হয়ে গেছো? আমার একটা ভুল ডিসিশনে তোমাকে দূরে যেতে হচ্ছে। আমি চিনি আমার ছেলেকে।”
হানিয়া আহছানউল্লার হাত ধরে বলল
–“আমি জানি চাচু, চাচী আপনার ওপরে প্রেসারক্রিয়েট করে। বিয়েটার জন্য ও করেছে। আপনার ওপরে আমার ভীষণ অভিমান আপনি বিয়েটাতে হ্যাঁ বলাই শুধু নিজের ছেলের সার্থর জন্য আমাকে এমন আগুনে ঠেলে দিতে চাইছিলেন?”
–“আমি খুবই অনুতপ্ত রে মামণি। তোর চাচাটাকে মাফ করবি না? আমার যে হাতপা বাধাঁ ছিল”
–“উম… ইট’স ইউর ফল্ট! আপনি চাইলেই বিয়েটা ভাঙতে পারতেন। কিন্তু সেটা করেন নি। চাচীর ইন্ধনে আপনিও সাই জানিয়েছেন।”
কিঞ্চিৎক্ষণ নিরবতা চলল হানিয়া আবারও বলল
–“আই থিংক রৌদ্দুর ভাইয়ের আমার সাথে যতসব শত্রুতা আমার ভাইবোনকে আশা করি কোনো ক্ষতি করবে না আর যদি সেটা করার চেষ্টাও করে না? আমি কিন্তু ছেড়ে দিব না। সব প্রুফ আমার কাছে আছে আইনের সাহায্য নিতে আমাকে বাধ্য করবে না। আমি আপনাকে আগে থেকে বলে রাখলাম এবার শুধু একজন অনাগত বাবা ও স্বামী হিসাবে ক্যারিয়ার বাঁচিয়ে দিলাম।”
•••
দোলার বাসা থেকে দোলার বাবা-মা, ভাই-বোন এসেছে। দোলাকে অবশ্য কিছু বলে নি। শুধু শুনেছে “এগুলো সত্যি?” দোলা ভয় নিয়েই বলেছে “হ্যাঁ”। রৌদ্দুর চুপচাপ বসে আছে ওজানে এখান ওর কোনো চালাকিই খাটবে না সবটা মেনে নিয়ে পরবর্তী চাল দিতে হবে। দোলার প্রেগন্যান্সির ৩ মাস চলছে। দোলা নিজের কাজের জন্য আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে। দোলার বাবা-মা ও বিশ্বাস করে মেয়েকে একা ছেড়ে দিয়েছিল। দোলাকে এখনো প্রেগন্যান্টের প্রভাব ফেলতে পারে নি। ফলে কেউ সন্দেহও করে নি। দোলার বিয়ের ভিডিও দেখে সকলে একটু স্বস্তি পেলো আর কিছু হোক আর না হোক বাচ্চা তো বৈধ্য। আহছানউল্লা বললেন কয়েকদিন পরে একটা সেন্টার ভাড়া করে রিসিভশনের আয়োজন করা হবে। সেখানে মিডিয়াকেও জানিয়ে দেওয়া হবে ওদের সম্পর্কে কথা।
রাতের অন্ধকারের পরে যেমন সকালে আলো ছড়ায় ঠিক তেমন ই দুঃখের পরে সুখ আসে। আজ সকলে মিলে নতুন বাসায় উঠবে ইমন আর তার বড় ভাই ইউনুস মিলে ঢাকা শহরে এই দোতলা বাড়িটা বানিয়েছে। এতোদিনে বাড়িতে উঠে যাওয়ার কথা থাকলেও হানিয়ার বিয়ে নিয়ে এতোদিন সকলের মনমেজাজ ঠিক ছিল না। এই এক সপ্তাহ হানিয়ার দাদুবাড়িতে ছিল সকলে। নতুন বাড়িতে সব নতুন পুরাতন কোনো জিনিসপত্র তোলে নি সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছে ইমন তার কথা মতে নতুন বাড়ি নতুন জিনিস। হানিয়া-হামজা-হায়াত বাড়ি বানাতে টাকা না দিলে ইচ্ছে পোশন করলে ওদের মামারা নাকচ করে দেয়। ওরাও বুঝতে পারে ভুল বলে ফেলেছে মামারা আর যায় করুক ওদের টাকা নিবে না। তাই এই নতুন বাড়িতে নিয়েদের টাকা দিয়েই নিজেরা ঘর সাজিয়েছে তাতে অবশ্য ইমন বাঁধা দিয়ে বলেছিল কীভাবে সাজাবে ওকে বলতে ও সব ব্যবস্থা করে দিবে কিন্তু ওরা সেটা মানে নি।
রাত তখন বারোটা পেরিয়ে গেছে ইমন হানিয়া ছাদে পাশাপাশি বসে আছে দোলনায়। একটা একটা করে দিন যাচ্ছে আর হানিয়ার মনের তিব্র অস্থিরতার স্রোতের জোয়ার বারতেই আছে।
–“আমার ওপরে তোর ভরসা নেই তাই না?”
–“তেমনটা নয় মামা তুমি বুঝতে পারতেছ না। তোমাদেরকে ছাড়া আমি কী করব? কীভাবে থাকব? আমি ওখানে গেলেও মনটা এখানেই পড়ে থাকবে।”
–“শোন যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি তোর ভালোর জন্যই। কারোর সামনে না যাওয়ার অনিচ্ছা প্রকাশ করলে না কানের নিচে ঝাঁ-ঝাঁ করবে বলে দিলাম। আর আমার মা, ভাবীর সামনে তো মোটেও না”
হানিয়া মনটা ভেঙে গেলো কিছুতেই ইমনকে বোঝাতে পারছে না হানিয়া কাঁদো কাঁদো গলায় বলল
–“তুই এমন ক্যান মামু? সবসময় এমন করিস!”
–“আই নোউ আ’ম ব্যাড বয়। সো, ঢং করিস না। তুই ছুটিতে আসলে তখন আমার বিয়েটা সেরে ফেলব বুঝলি। ভাবীকে মেয়ে দেখতে বলি কী বলিস?”
–“জানি না তুই দূর হয়ে যা। মামী আমি পছন্দ করব তোমার চয়েস খুবই বাজে…”
ইমন হাসল হানিয়ার মন অন্যে দিকে ঘোরানোর জন্যই বিয়ের কথা বলেছে। ইমন জানে হানিয়ার ইচ্ছে অন্য দেশে পড়তে যাবে সারাবিশ্ব ঘোরার শখ ওর। কিন্তু ভাইবোনকে ছাড়া যেতে নারাজ। হাঠাৎ থেমে হানিয়া বলল
–“মামা তুই বিয়ের পর পাল্টে যাবি না তো? আমার মামা থাকবি তো?”
ইমন হানিয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে বলল
–“তোর মামা নামক বেস্ট ফ্রেন্ড পাল্টে যায় এমন মামী আনবি কেনো তুই?”
–“তবুও যদি পাল্টাস বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে আসব”
বলেই হানিয়া হাসল সাথে ইমন ও। ইমন হানিয়ার চার বছরের বড়। দুজনের বন্ডিং ও একটু বেশি-ই ভালো। দুজনে বেস্ট ফ্রেন্ড দুজনের সব কথাই তাদের জানা, না বলতেই জেনো সব বুঝে যায়। একই স্কুল হলেও দুজনের ক্লাস ভিন্ন ছিল। হানিয়া ইমনকে তুমি-তুই সংমিশ্রণে কথা বলে। হানিয়া যে চলে যাবে এখনো বাসার কেউ জানে না। জানলে যে কী হবে ভেবেই অস্থির। হানিয়ার বড় চিন্তা ওর ছোট ভাইবোন দু’টোকে নিয়ে। একটু যেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু তার মামা তো ধরে বেঁধে ঠেলে পাঠাচ্ছে।
•
হানিয়ার আজ শেষ সুট ছিল। বাসা আসতে বেশ লেট হলো। পৌশু চলে যাবে বাসায় এসে এমন ঠান্ডা পরিবেশ দেখে মনে মনে ভড়কে গেলো। অন্য দিন তো হামজা-হায়াত, মামাতো ভাই ইফাদ ড্রাইংরুমে হুটোপুটি করে খাবে না পড়বে না তাই নিয়ে তাদের যতসব বাহানা। হানিয়া বড় মামী সালেহা অবশ্য ছাড় দেন না বকতে বকতে বকতে সহ্যর সীমা পেরিয়ে গেলে দু-চার ঘা লাগিয়ে দেয়। সাহেলা মামী হিসাবে অন্য মামীদের মতো হিংসুটে না কমল মমতাময়ী। হানিয়া-হামজা-হানিয়া মায়ের আদর সালেহার কাছ থেকেই পেয়েছে। থমথমে পরিবেশে হানিয়া ভাবল আজ বেশি মার খেয়েছে ফ্রেশ হয়ে এসে অন্যদিনের মতো করেই বলল
–“মাম কিছু আছে খুদা লেগেছে।”
সালেহা শুকনো মুখে বলল
–“বাবু আয় কী খাবি বল? দেখ এগুলো বানিয়েছি।”
সালেহাকে দেখে হানিয়া চট করে ধরে ফেলল সে কেঁদেছে। হানিয়া ভাবল মামার সাথে ঝগড়া করে কাঁদছে। সালেহাকে জড়িয়ে ধরে বলল
–“কেঁদেছ কেনো মাম? ঝগড়াঝাটি হলেই কাঁদতে হবে? এতো সফট হার্টের মানুষ কেনো হলে বলতো! আর এতো কিছু কেনো করেছ?”
–“তুই চলে যাবি। সেখানে কী খাবি না খাবি তার ঠিক-ঠিকানা আছে না-কি?”
হানিয়া ছেড়ে দিয়ে সালেহার দিকে তাহালো তার নয়ন ছলছল করছে। হানিয়া বুঝে গেলো ইমন সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে। সালেহার কপোলদ্বয় অশ্রুপাত হলো চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল
–“কেঁদো না আমার যেতে ইচ্ছে করবে না। প্লিজ তোমার ভরসাই তো হামজা-হায়াতকে রেখে যাচ্ছি আমি আর তুমিই কাঁদছ?”
–“যাদের কথা বলছিস তারা তো কেঁদে কেটে অস্থির। রুমে ইমন বোঝাচ্ছে কাজ হয়েছে কি-না কি জানি!”
হানিয়া হতাশ নিঃশ্বাস ফেলল সবাইকে ফেলে যেতে ইচ্ছে করছে না। কীভাবে থাকবে এতসব ভালোবাসার মানুষগুলোকে ছাড়া ভেবে কুল পাচ্ছে না। হানিয়া রুমে গিয়ে দেখলো হায়াত কানে ইয়ারফোন গুঁজে চোখ বন্ধ করে আছে। হায়াতের চোখ দিয়ে অশ্রু কণা গড়িয়ে পড়ছে। ইমন সোফায় বসে ফোন দেখছে। হামজা বারান্দায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর রুমে প্রবেশে হামজা-হায়াত টের পেল না ইমন তাকাতেই ও ইশারায় জিজ্ঞেসা করল কী অবস্থা? ইমন দুকাধ তুলে ঠোঁট উল্টালো।
হানিয়া হামজার পাশে গিয়ে আকাশ দেখতে দেখতে বলল
–“কতগুলো তারা গুনলি? বল তারপর থেকে আমিও গুনতে শুরু করি। আজাইরা মানুষ কোনো কাজকাম নাই বল বল”
হামজা হানিয়ার দিকে তাকালো। হানিয়া ঠোঁট উল্টে কিউট ইনোসেন্ট ফেস করে তাকিয়ে আছে হামজা হানিয়াকে জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে কেঁদে দিল বলল
–“আপি তুই যাস না। তোকে ছাড়া থাকতে পারব না আমার ভীষণ কষ্ট হবে।”
ইমন রেগেমেগে বলল “যাবে না মানে? অবশ্যই যাবে। কানের নিচে লাগাব না? তোদের কষ্টের জন্য কী ও এখানে পড়ে থাকবে? ও ক্যারিয়ার নেই? ইচ্ছে নেই?”
হানিয়া হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল “থাম মামা। ওদের থেকে আমার কাছে কিছু ইম্পর্ট্যান্ট না। ওদের জন্য সব কিছু ছাড়তে পাড়ি।”
–“শোন ডায়লগ কম মার। প্রথম প্রথম খারাপ লাগবে বাট ধীরে ধীরে সয়ে যাবে। আর তাছাড়া তোর বিয়ে হয়ে গেলে তো শ্বশুড় বাড়িতে যাবি তখন ভাইবোনকে সাথে নিয়ে যাবি?”
–“হ্যাঁ দরকার পড়লে নিয়ে যাব। ঐ ওয়েট ওয়েট আমি বিয়েই বা করব কেনো? আমি বিয়ে টিয়ে করব না।”
–“ভাইবোনদের জন্য সব ছেড়ে ছুঁড়ে বসে থাক আমার কী? আমি তো তোদের কেউ না! আমার কথা কেনো শুনবি?”
ইমন রাগে গজগজ করতে করতে কথাগুলো বলতে বলতে প্রস্থান করল। হামজা কান্না থামিয়ে বলল
–“মামা টিকই বলেছে রে আপি আমি বা হায়াত যদি বাইরে পড়তে যেতে চাইতাম তুই বাঁধা দিতি না। উল্টো উৎসাহ দিতি। আমি দেখ বোকার মতো কাঁদছি।”
হানিয়া হামজার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আদুরে কণ্ঠে বলল
–“ওরে আমার বাচ্চাটা কাঁদিস না ভাইয়্যু তোদেরকে কাঁদতে দেখলে আমার ভালো লাগে না। আমি খুব তাড়াতাড়ি চলে আসব। পারলে একটা কাজ করব তোরা এসএসসি এক্সামটা দিয়ে নে তোদেরকেও ওখানে নিয়ে যাবো। আমারও কী ভালো লাগবে বল?”
হামজা শাসন সুরে বলল
–“উহুম…শোন আপি ওখানে গিয়ে না ঠিকমতো খাবি। সুভানা আপুর সাথে সাথে থাকবি নতুন জায়গায় যদি হারিয়ে যাস।”
–“আচ্ছা বাবা বোনের সহ নিজের খেয়াল রাখবি। আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরব সোনা দেখিস।”
–“আমরা অপেক্ষায় থাকব আপি।”
চলবে ইনশাআল্লাহ
আসসালামু আলাইকুম। বড়সড় লেখা দিয়েছি বড়সড় কমেন্ট করবেন। খুব শীগ্রই নায়কের দেখা মিলবে।