জীবনটা_অনেক_কষ্টের পর্বঃ২

0
888

গল্পঃ #জীবনটা_অনেক_কষ্টের

পর্বঃ ২

লেখাঃ #মোঃ_শাহরিয়ার_ইফতেখায়রুল_হক_সরকার

রিপোর্ট হাতে নিয়ে ঠাশ করে বসে পড়লাম আমি আর
চোখ বন্ধ করে মনে মনে সৃষ্টি কর্তার উদ্দেশ্য একটা
কথাই বললাম,আমার সাথেই কেন বার বার এমন
হয়?এই মুহূর্তে মৃতু্র কাছে নিজেকে সমার্পণ করে
দিতে ইচ্ছে করছে।আমার বেঁচে থাকার যখন সব
দরজাই বন্ধ ছিল তখন এই আঁধার কাটিয়ে আলোর
সন্ধানে একটি মাত্রই বেঁচে থাকার দরজা খোলা ছিল
কিন্তু আজ সেটাও চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো।
এই কদিনে মেয়েকে নিয়ে মনে মনে অনেক স্বপ্নের
জ্বাল বুনে ছিলাম।যতই কষ্ট হোক যতই বাধা-বিপত্তি
আসুক ভেবেছিলাম মেয়েকে এ সমাজে একজন
প্রতিষ্ঠিত নারী হিসেবে তৈরী করবো।রিহিকে ডাক্তারী
পড়াবো।ডাক্তার হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম আমি।
কিন্তু সবার হয়তো সব শখ,আল্লাদ পূরণ হয়না,বেঁচে
থাকার শেষ অবলম্বন মেয়েকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন গুলো এভাবে যে ঝড়ের গতিতে এক নিমিষেই ভেঙে যাবে
সেটা আমি ভাবতে বলতে কল্পনাও করতে পারিনি।
নিহির দিকে চেয়েই অন্তীম শ্বাস অবধি যেতে চেয়ে
ছিলাম আমি কিন্তু হয়তো হবে না আর লম্বা শ্বাস
নেওয়া,বেঁচে থাকা এ ভুবনে।এখন আর কেউ ডাকবে
না আমায় বাবা বলে,বলবে না কেউ চলো যাই
হেঁটে-হেঁটে নদীর তীরে দেখে আসি আশপাশের মন,
মুগ্ধকর সৌন্দর্যকে,বাবা-মেয়ে বসে রইবো এক সাথে,
করবো অনেক গপ্প-সপ্পো।আমার চোখের অশ্রুতে
রিপোর্ট্টা ভিজে একাকার।বুকে লুকায়িত আর্তনাদ
অশ্রু সিক্ত নয়নে ভাইয়া পানি ছিটিয়ে ভাবীর জ্ঞান
ফিরানোর বৃথা চেষ্টাই না করছে।আমি জানি সব
থেকে বেশি স্বয়ং ভাবীই আঘাত পেয়েছেন কারণ
আজ থেকে ভাবীর বুক শূন্যতে রুপান্তর হয়ে গেলো।
যে ভাবী রিহি হীন এক মুহূর্তের জন্যেও থাকতে পারেন
না, না জানি সেই ভাবী রিহি কে ছাড়া আগামী দিন
গুলো কিভাবেই বা কাটাবেন।দু হাত দিয়ে যখন নিজ
মেয়ের লাশ কবরে রেখেছিলাম তখন আমার মন
ব্যথার আর্তনাদে আমায় প্রশ্ন করে ছিল!কেনো পাশের
কবরটা খোঁড়া হলোনা তোর জন্য?এক সপ্তাহ হলো,
প্রতিদিনের মতোই দাঁড়িয়ে আছি মেয়ের কবরের
সামনে।এটা ভেবে আমার আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে,
সাদিয়া কেনো নিহির মৃত্যুর সংবাদটা পেয়েও শেষ
বারের মতোও দেখতে আসলো না ঘুমান্ত অবস্থায়
থাকা নিষ্পাপ মেয়েটিকে?ব্যাপারটা ভাবলেই কষ্ট
গুলো আরও তীব্র আকার ধারণ করে আমার।মনে
প্রচুর ঘৃণা ঝমাট বেঁধেছে সাদিয়ার প্রতি।মনে মনে
করেছি শপথ ভাববো না আর তার কথা।রাখবো না
মনে তার কোনো সৃতি।দিন যতই যাচ্ছে রিহি ছাড়া
ভাবীর কন্ডিশন ততই দিনদিন অবনতির দিকে
এগোচ্ছে।পরের সন্তান কে,যে কেউ এত পরিমাণ
ভালোবাসতে পারে সেটা ভাবীকে না দেখলে আমি,
হয়তো বুঝতে বা জানতেও পারতাম না।নামাযের পর
ভাবীর এরুপ চোখের অশ্রু- আমার কাছে দিন দিন
তীব্র আকারে অসহনীয় হয়ে উঠছিল।আমি আর সয্য
করতে পারছিলাম না।ভাইয়াও বেশ শোকের মাঝে
রয়েছে।আগের থেকে নিশ্চুপ হয়ে গেছে।পুলিশ তদন্ত
করছেন তবে অপরাধীর শিখরে যাওয়ার কোন ক্লুই
পাচ্ছেন না তারা।নদীর পারে বসে আছি।এক সময়
কতই না বাবা মেয়ে সময় কাটাতাম এখানে।উত্তর
দিক দিয়ে বয়ে আসা বাতাস আমার মন কে দুলিয়ে
তোলার বৃথাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।সন্ধ্যা হয়ে গেছে
মাগরিবের আজান দিচ্ছে,নদীর পার থেকে উঠে
বাড়িতে আসার পথে হঠাৎ পিছন থেকে কেউ একজন
ডাক দিলো আমায় বাবা বলে, কন্ঠটা আমার মনকে
মুহূর্তেই বিমোহিত করে তুলতে বাঁধ্য করলো কিন্তু
আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে পিছনে ফিরে আমি কাউকেই
দেখতে পেলাম না।মাগরিবের নামাযের পরে রুমে
সুয়ে ছিলাম,জ্বরে শরীরটা আমার পুরে যাচ্ছিলো সেই
মুহূর্তে।মাথা জিমজিম করছিল,সারা শরীরে হঠাৎ
অজস্র যন্ত্রণার আর্তনাদে আমি কুকিয়ে উঠলাম।
অতঃপর সেদিন খুব গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি
আমি।আজ ৮ দিন পর আমি সম্পূর্ণ সুস্থটা লাভ
করতে সক্ষম হই।রিহির পড়ার টেবিলে চেয়ার টেনে
মন খারাপ করে বসে ছিলাম আর আনমনে একটা
খাতার পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছিলাম হঠাৎ থেমে যাই আমি,মাঝ
পৃষ্ঠায় কিছু যঘন্য ঘৃণাপূর্ণ ভাষায় কিছু লেখা দেখে।
আমার এখনো মনে আছে,মৃত্যুর এক দিন আগে রিহি
খাতাটা ক্রয় করে বাসায় নিয়ে এসেছিল।মধ্য-খানের
পৃষ্ঠা ছাড়া বাকি পৃষ্ঠা গুলো সম্পূর্ণ ফাঁকা।স্পষ্ট ভাবে
মধ্য-খানের পৃষ্ঠাটিতে অনেক বাজে ধরনের,ঘৃণাপূর্ণ
ভাষায় লেখা ছিল যা মুখে উচ্চারণ বা উল্লেখ করাও
পাপ।আমি নিশ্চিত অন্তত আমার মেয়ে এরুপ কিছু
লিখতে পারে না তাহলে কে লিখতে পারে এরুপ যঘন্য
লেখা?হয়তো বা আগে থেকেই কেউ লিখে রেখেছিল?
অতঃপর গোলাপী রঙের খাতাটা বন্ধ করলাম।কভার
পেইজের বাম-পাশে ছোট্ট করে লিখা,জনতা লাইব্রেরী
পরের দিন সকালে,ধীর পায়ে নিহির স্কুলের সম্মুখে
এসে দাঁড়ালাম।স্কুলের বেশ কিছুটা পিছনের দিকে
জনতা লাইব্রেরী।আশ’পাশটা বেশ কিছুটা শুন-সান ও
বটে।স্কুলের সব ছাত্র-ছাত্রীই হয়তো এখান থেকেই
নিজেদের যাবতীয় জিনিস পত্র কিনে থাকে।লাইব্রেরী
থেকে বেশ খানিকটা ধুরে অবস্থান করছি আমি।নিহির
বয়সী একটা মেয়ে লাইব্রেরীর ভিতরে অবস্থান করছে,
চকচকে একটা নোট এগিয়ে দিয়ে গোলাপী রঙের
খাতাটা ক্রয় করে মেয়েটি যখন লাইব্রেরি থেকে বের
হচ্ছিলো তখন লাইব্রেরীতে থাকা বিক্রয়-কর্তা বয়স
তেমন একটা হবে না ১৯,২০ হবে।সেই ছেলেটা
লোভার্ত এক জানোয়ারের মতো তাকিয়ে ছিল সেই
মেয়েটির দিকে অতঃপর মেয়েটি যখন খাতাটা নিয়ে
আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো তখন আমি মেয়েটিকে
আটকিয়ে তার হাত থেকে গোলাপী রঙের খাতাটা
নিয়ে মাঝখানের পৃষ্ঠা উল্টাতেই থমকে যাই।এখানেও সেই একি রকম ঘৃণাপূর্ণ ভাষায় অনেক কিছুই লেখা
রয়েছে যা উচ্চারণ করার স্বাদ্য অন্তত আমার নেই।
মুহূর্তেই সন্দেহ বেড়ে গেলো আমার।হুঠ করে সেই
পৃষ্ঠাটা ছিঁড়ে নিয়ে মেয়েটির দিকে খাতাটা এগিয়ে
দিয়ে বললাম,সরি মামনি আমার এই মুহূর্তে একটা
খাতার পৃষ্ঠার প্রয়োজন ছিল।

মেয়েটি আমার কাছ থেকে নিজের খাতাটা নিয়ে
বিরক্ত কর মুডে বলল, It’s ok.

অতঃপর মেয়েটা চলে গেলো আর আমি খাতার ছেঁড়া
পৃষ্ঠাটা নিয়ে লাইব্রেরীর সম্মুখে এসে উপস্থিত হলাম।
লাইব্রেরীর উপরে সাইনবোর্ডে বড় বড় করে লেখা,
মেয়েদের কে সম্মান করতে শিখুন।বেশ সময় ধরে
দাড়িয়ে আছি এখানে এতে যেন ছেলেটির কোনোই
ভ্রু-ক্ষেপ নেই।রাস্তায় কানে হেডফোন লাগিয়ে বখাটে
ছেলেরা যেসব আজে-বাজে গান শুনে,নারীদের পিছন
পিছন হাটে ঠিক তেমনি এক বিরক্তকর গান আমার
মতে যেটাকে গান বলাটাও ভুল সেসব শুনাতে
পুরাপূর্ণ বিভর ছেলেটি।অতঃপর আমার হস্তক্ষেপে
ছেলেটা ক্ষুব্ধ হয়ে বলল,

—সমেস্যা কি?কি চাই?

খাতার ছেঁড়া পৃষ্ঠাটা এগিয়ে দিয়ে আমি রাগান্বিত
কন্ঠে বললাম,

বাচ্চাদের খাতার মাঝ পৃষ্ঠায় এসব ঘৃণাপূর্ণ কথা
লিখে রাখার মানে কী?

মুহূর্তেই ছেলেটা বেশ হচকচিয়ে উঠে বলল,

—কি যা তা ভুল-বাল বলছেন এসব?সকাল বেলা কি
কিছু আজে-বাজে জিনিস খেয়ে এসেছেন?যার জন্য
এখানে এসে রাস্তার পাগলদের মতো কথা-বার্তা
বলছেন?

মুহূর্তেই ঠাশ করে কয়েকটা থাপ্পর লাগিয়ে দিলাম
ছেলেটিকে।স্তব্ধ হয়ে গালে হাত দিয়ে চেয়ে রয়েছে সে।
অতঃপর পুলিশ কে ফোন করার সাথে সাথে যত দ্রুত
সম্ভব পুলিশ এসে উপস্থিত হয়।ছেলেটি বেশ চাঁলাক
তবে পুলিশের সামনে শেষ-মেস ছেলেটির সব
চাঁলাকিই বৃথা হিসাবে প্রমানিত হলো।পুলিশের এক-
দুই ঘাঁ পড়তেই সুর সুর করে এক নিমিষেই সব সত্য
বলে দিয়ে নিজেকে আমার মেয়ের ধর্ষণ-হত্যার দোষী
হিসেবে সাভ্যস্ত করলো সবার সামনে।কতটা নিচু মন
মানসিকতার অধিকারী না হলে,কেউ এমন একটা
ঘৃণীত,নিকৃষ্ট কাজ করতেও দ্বিধা বোধ করে না।চিকন
আকারের কাঁচা বাশ কেটে এনে ছেলেটিকে সাধারণ
জনগনের সম্মুখে উলঙ্গ করে পিটানো হলো।সবাই
ধিক্কার জানিয়েছেন, এমন ঘটনা যেন আর কোথাও
কারও সাথে না ঘটে।রক্তাক্ত আধমরা অবস্থায় টেনে
হিঁচড়ে ছেলেটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।পরিশেষে
যেখানে ধর্ষণের কোনো সঠিক বিচারি পাওয়া যায়না
সেখানে নিজের মেয়ের ন্যায্য বিচার পেয়ে সুস্থির শ্বাস
নিলাম আজ।খুব দ্রুতই ফাঁসির কার্যক্রম করা হবে
ওর মতো এক নরপশুর।নিজের রুমের জানালার
কাছে বসে আছি আর ভাবছি,তীলে তীলে রক্ত,পানির
বিনিময়ে যে টাকা ব্যাংকে জমা করে ছিলাম সেগুলো
কোথায়,এই ব্যাপারে ভাইয়া আর ভাবীকে জিজ্ঞেস
করলে তারা উভয়ই এক কথাই বলল,তারা কিছুই
জানে না!হয়তো সাদিয়া আত্মসাৎ করে ফেলেছে।
অতঃপর নিজেকে নিজেই সব কিছু ভুলে থাকার জন্য
আহবান করছিলাম তখন হঠাৎ নিচে কারো চিৎকার
চেচামেচিতে আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম।নিজের রুম
থেকে নিচে এসে দেখলাম,একটা লোক আঙুল তুলে
ভাইয়াকে কথা শুনাচ্ছেন,পড়ে জানতে পারলাম
ভাইয়া লোকটির থেকে অনেক টাকা ধার নিয়ে ছিলেন
কিন্তু এখনো সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারায়
বাড়িতে এসে ভাইয়াকে এভাবে কথা শুনিয়ে চলে
গেলেন লোকটি।পড়ে গেলাম বেশ দুশ্চিন্তার মধ্যে।
এত গুলো টাকা কিভাবেই বা ভাইয়া শোধ করবেন।
পরের দিন লোকটি আবার আসলেন,এবং আবারও
ভাইয়ার মুখে না শব্দটা শুনতে পেয়ে বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে
চিৎকার চেঁচামেচি আরম্ভ করে দেয়।অতঃপর আমি
লোকটিকে অনুরোধ করে কিছু সময় চাইলে লোকটি
আমার দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন এবং কি
যেন একটা ভেবে ভাইয়াকে পাশের রুমে নিয়ে গেলেন
কিছুসময় পর ভাইয়া আর লোকটি উভয়ই একসাথেই
রুম থেকে
বের হয় তবে ভাইয়ার মুখ মন্ডল সেই মুহূর্তে আমার
কাছে বেশ অন্য রকম লেগেছিল।লোকটিও চলে যায়।
রুমে কি কথা হয়েছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে আমি
বা ভাবীকে কাউকে কোনো কিছুই বলল না।পরের
দিন সকালটা আমার দুশ্চিন্তার মধ্যেই কাটছিল,দুপুরে
খাবারের দানা মুখে তুলার সময়,আবার সেই লোকটি
এসে হাজির হলেন তবে আজ সঙ্গে পুলিশও নিয়ে
এসেছেন।বাড়ি খালি করতে বললেন দ্রুত।সকালে
না খেয়ে ছিলাম,এখন একটু খাওয়ার ইচ্ছে জেগে
ছিল মনে কিন্তু শেষ-মেস খেতেও পারলাম না।ভাইয়া
একটা ছোট কোম্পানিতে চাকরি করেন যদি এই
বাড়িটা ছেড়ে দিতে হয় তাহলে দৈনন্দিন জীবন
বেশ একটা কষ্ট-স্বাধ্য হয়ে যেতে পারে।অতঃপর গত
কালকের মতো আজো বেশ অনুরোধ করলাম কিন্তু
এতে তিনি আরও রেগে গিয়ে বললেন,

–তোমার অনুরোধেই গত কাল তোমার ভাই কে একটা
শর্ত দিয়ে ছিলাম কিন্তু সে শ্বিকার করে নি তাই এখন
কিছুই করার নেই আমার।

কেমন শর্ত?

–শর্ত এটাই দিয়েছিলাম তোমার ভাই কে,যে তোমাকে
আমার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য যাতে রাজি করায়?

বয়স্ক লোকটির এমন কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে যায়।
অতএব আমি বললাম, আমার মধ্যে এমন কি দেখেছেন,যার জন্য নিজের মেয়ের বিয়ে আমার সাথে
দিতে চাচ্ছেন।আপনি কি আমার সম্বন্ধে সব কিছু
জেনে শুনে এমনটা বলছেন তো ?

–তোমার ব্যাপারে আমি সব কিছুই জানি।এখন এর
চেয়ে বেশি আর কিছুই বলতে পারবো না।সিদ্ধান্তটা
তোমার হাতে?আরও একদিন সময় দিলাম ভেবে
দেখো?

কথাটা বলার পরপরই তিনি চলে যান এবং তার সাথে
আসা পুলিশ গুলোও।অতঃপর ভাইয়া বললো,

—ভাবছি বাড়িটা খালি করে দিবো।

ভাইয়ার কথার জবাবে আমি বহু কষ্টে বললাম,

না ভাইয়া আমি চাইনা তোমরা নিজ বাড়িহীন থেকে
কষ্টে জীবনযাপন করো?তার চেয়ে হবে এটাই ভালো
শর্তে রাজি হয়ে যাওয়া।

–পাগল হয়েছিস?ওনার মেয়ের বয়স ত্রিশ বছর?

তাতে কি হয়েছে আমার বয়সও তো তার চেয়েও
অধিক।

–ওনার মেয়ে কোনো দিনই মা হতে পারবে না যার
জন্যই একের পর এক সম্বন্ধ ভেঙে গেছে।আর তোকে
সেখানে ঘর জামাই হিসেবে থাকতে হবে।আমি চাইনা
আমার জন্য নতুন করে তোর জীবনে আবার কোনো
কষ্টের সুত্রপাত হোক।

ভাইয়ার কথার উত্তরে আমি কিছুটা স্তব্ধ হয়ে বললাম,

তাতেও আমি রাজি ভাইয়া?

–আমি জানি শাহরিয়ার’তুই এসব মন থেকে নয় বাধ্য
হয়ে বলছিস?তোর কষ্ট আমি কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে সক্ষম।

না ভাইয়া আমি মন থেকেই বলছি।তোমরা আমার
অবর্তমানে আমার মেয়ে কে অনেক আদর স্নেহ মমতা
দিয়ে নিজের সন্তানের মতো রেখেছিলে আর আমি
তোমাদের জন্য এটুকু করতে পারবো না আর আমি
এমনিতেই চাইনা তোমরা এভাবে নিজ বাড়ি হীন থাকো?

–কিন্তু……

অতঃপর ভাইয়াকে আমি থামিয়ে দিয়ে নিজেই ফোন
করে হ্যা সম্মতি প্রধান করলাম।সবশেষে আবার
নতুন করে এক বিবাহে আবদ্ধ হলাম যা আমি সত্যি
বলতে কখনই চাইনি।ভাইয়া সে সময় ঠিকি বলেছিল
আমি ব্যাধ্য হয়েই রাজি হয়েছি কারণ এতগুলো টাকা
পরিশোধ করা অন্তত ভাইয়ার দ্বারা সম্ভব হতো না
তাই রাজি হয়ে যাওয়াটাই আমার কাছে বেটার মনে
হয়েছিল।আর এমনিতেই বারবার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার
বেদনা একটা মেয়ের কাছে কতই না বেদনা-দ্বায়ক
হয়ে থাকে।মেয়েটা দেখতেও যথেষ্ট সুন্দরী তবে এতে
কোনো ভ্রুক্ষেপ আমার নেই।বিয়ের প্রথম রাতেও
আমার বর্তমান স্ত্রীর সাথে কোনো প্রকার
কথোপকথন হয়নি।সারা রাত সোফায় বসে ছিলাম
আমি আর ভাবছিলাম কি হবে আমার আগামী দিন
গুলোতে।বিয়ের দিন উপস্থিত না হতে পেরে পরের
দিন শশুর বাড়ি থেকে আমার বর্তমান স্ত্রীর বড় বোন
এসে ছিল দেখতে আমায়।তবে তাকে দেখে আমার
শরীরটা সম্পূর্ণ শিউরে উঠে ছিল সেই মুহূর্তে।নিমিষেই
যেন একজন বোবা মানুষে পরিণত হয়ে গেছিলাম
আমি।সেই মুহূর্তে,মুখের ভাষাই হারিয়ে ফেলেছিলাম
কারণ এই সেই মেয়ে যার মিথ্যা সাক্ষ্যের জন্য আমায়
কুয়েতে ১৫টা বছর জেল খাটতে হয়েছিল………..

…………………………চলবে……………………………
(১ম পর্ব নিয়ে কিছু কথা,
মেয়েটা তারই মেয়ে সেটা নায়ক প্রথমে জানতো না।
আর মানুষ কাউকে দেখেই সঠিক বয়স বলতে পারে
না।তাই গল্পে আনুমানিক ১২,১৩ বছর বলা হয়েছে।
এসাইনমেন্টও লিখছিলাম আবার গল্পও লিখছিলাম
তাই তেমন একটা খেয়াল করিনি আর যেহেতু আনুমানিক বলেছিলাম তাহলে বোঝার উচিত ছিল,
সিউর না।)

গত কাল গল্প দিতে পারিনি এর জন্য দুঃখীত, পড়াশোনার চাপ বেশি ছিল🙂

ভুল ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন

গঠন মূলক মন্তব্য করুন ধন্যবাদ 😊🔰

বানান ভুল গুলো একটু ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here