#টিপ_টিপ_বৃষ্টিতে
#পর্ব_২৮
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
শুভ ঐশীর পায়ে খুব সুন্দর একটা পায়েল পড়িয়ে দিলো।
ঐশী পায়েল টির দিকে তাকিয়ে খুশিতে সব রাগ ভুলে শুভর দিকে তাকালো।
শুভ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে ঐশীর সেই হাসির দিকে।
ঐশী বলে উঠলো,’ পায়েল টা খুব সুন্দর। ‘
শুভঃ আপনার পছন্দ হয়েছে আমার মনের রানী…
ঐশী একটু লাজুক হেসে বললো,’ খুব পছন্দ হয়েছে। ‘
শুভঃ আচ্ছা তাহলে এখন আমার পাওনা টা আমাকে দাও।
ঐশী ঠোঁট উল্টে বললো,’ আমি তো জানি শুধু স্বামী বউকে ভালোবেসে গিফট দেয় কিন্তু বউ কিছু দেয় সেটা তো শুনিনি।
শুভঃ তাহলে তুমি ভুল শুনেছো ঐশী।
ঐশী মন খারাপ করে বললো,’ আমি তো কিছুই আনিনি কি দিবো। আচ্ছা আমি না হয় কাল দিবো।
শুভঃ কিন্তু আমার তো আজকে চাই।
ঐশীঃ কিন্তু আমার কাছে তো দেওয়ার মতো কিছুই নেই এখন।
শুভঃ ভেবে দেখো।
ঐশীঃ নেই তো।
শুভ ঐশীর কাছে গিয়ে বললো,’ তুমি তো আছো…তুমি না হয় আমার হয়ে যাও।
ঐশী প্রথমে বুঝলো না শুভর দিকে তাকিয়ে আছে। যখন বুঝলো লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।
শুভ ঐশীর দিকে ঝুঁকে তাকাতেই ঐশীর গাল দুটো অসম্ভব লাল হয়ে গেলো। লজ্জায় ঐশী শুভর বুকে মুখ লোকালো।
শুভ মুচকি হেঁসে কোলে তুলে নিলো ঐশীকে।
*******🍁
মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেলো মৌ এর। পাশে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন দীপ্ত।
মৌ শুয়া থেকে উঠে পানি খেয়ে আবার রুমে আসলো।
হঠাৎ মৌ এর চোখ গেলো দীপ্তর মুখের উপর, গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেলো দীপ্তর কাছে।
দীপ্তর পাশে বসে তাকিয়ে রইলো দীপ্তর মুখের দিকে। কেমন বাচ্চা বাচ্চা ছাপ লেগে আছে দীপ্তর মুখে।
মৌ আপন মনে হেঁসে হাত বাড়ালো দীপ্তর গালে।
দীপ্তর উপর ঝুঁকে ঠোঁট ছুঁয়ালো দীপ্তর কপালে।লজ্জায় তারাহুরো করে সরে যেতে গিয়ে শাড়ির আঁচলে টান অনুভব করলো। ভয়ে বুক কেঁপে উঠল। তাহলে কি দীপ্ত জেগে আছে। ইসস কি লজ্জা, কি লজ্জা!!
আসতে আসতে পেছন ফিরে তাকালো। লম্বা একটা শ্বাস ফেলে মুচকি হাসলো দিয়ে দীপ্তর দিকে তাকালো। ওর শাড়ির আঁচল আঁটকে গেছে দীপ্তর হাতের নিচে।
মৌ আসতে করে আঁচল সরিয়ে নিলো। গিয়ে শুয়ে পরলো দীপ্তর পাশে। কিছু সময় যেতেই দীপ্ত নিজের হাত রাখলো মৌ এর উপর। মৌ চোখ বন্ধ করে আছে। দীপ্ত মুচকি হেসে আরও শক্ত করলো হাতের বাঁধন।
মৌ ভেবেছে দীপ্ত ঘুমের মধ্যে ওকে জড়িয়ে ধরেছে তাই চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে আছে।
🍁🍁🍁🍁
সকালে গোসল করে ঐশী বের হলো। শুভ ঘুমিয়ে আছে। ঐশীর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসলো।
ঐশী শুভর সামনে গিয়ে ভেজা চুল জাড়া দিলো।
শুভর মুখে পানির ছিটা পড়তেই পিটপিট করে চোখ খোলে তাকালো।
ঐশী আয়নার সামনে দাড়িয়ে গুনগুন করে গান গাচ্ছে আর চুল আঁচড়াচ্ছে।
শুভঃ গুডমর্নিং বউ।
ঐশী মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো,’ গুডমর্নিং। ‘
বিথী রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো অফিসের উদ্দেশ্য।
****🍁*******
দেখতে দেখতে কেটে গেলো চার মাস। এই চার মাসে পাল্টে গেছে কতোগুলো সম্পর্ক।
ঐশী আর শুভর ভালোবাসা গভীর থেকে গভীর হলো। এখন একজন আরেক জনকে চোখে হারায়।
ঐশী গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
শুভ বাসায় এসে দেখে ঐশীর মন খারাপ করে জানালার ধারে বসে আছে।
শুভ পেছন থেকে গিয়ে ঐশীকে জড়িয়ে ধরলো।
ঐশী শুভর হাত সরিয়ে দিলো।
শুভঃ আমার মিষ্টি বউটা এমন রেগে আছে কেনো শুনি..?
ঐশী শুভর দিকে তাকালো না।
শুভ জোর করে ঐশীকে নিজের দিকে ঘুরালো।
শুভঃ কি হয়েছে বলবে তো। না বললে বুঝবো কিভাবে।
ঐশী ঠোঁট উল্টে কান্না করে দিলো।
শুভ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,’ কি হয়েছে ঐশী সোনা। তুমি কান্না কেনো করছো..?
ঐশীঃ আপনি কথা দিয়ে একদম কথা রাখেন না পঁচা লোক।
শুভ জিহ্বায় কামড় দিয়ে কানে ধরে বললো,’ সরি বউ। একদম মনে ছিলো না।’
ঐশীঃ আপনার সব কিছুই মনে থাকে শুধু আমার কথাই মনে থাকে না।
শুভঃ সরি!…
ঐশীঃ এভাবে বললে হবে না।
শুভঃ তাহলে..?
ঐশীঃ আমাকে এখন ফুচকা খাওয়াতে নিয়ে যেতে হবে।
শুভ হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,’ এতো রাতে..? কাল নিয়ে যাই।’
ঐশী আবার মন খারাপ করে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।
শুভ একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো,’ রেডি হয়ে আসেন মহারাণী।’
ঐশী খুশি হয়ে বললো,’ আমি তো রেডি।’
শুভ ভালো করে ঐশীর দিকে তাকালো। শাড়ি পড়েছে আগে আগে রেডি হয়ে বসে আছে। ঐশী ভালো করেই জানে একটু রাগ করলেই শুভ নিয়ে যাবে। ঐশী এখন সব সময় শাড়ি পড়ে কারন এটা শুভর পছন্দ তাই।
শুভঃ তাহলে চলো।
বিথী কাপড় গুছিয়ে ব্যাগে রাখছে।
বিথীর আম্মু বলে উঠলো,’ বিথী মা আরেক বার ভেবে দেখ না। ‘
বিথীঃ আমার আর কোনো ভাবা ভাবির কিছু নেই। তোমাদের তো বলেছি তোমরা এখানে থাকো।
বিথীর আম্মু কিছুটা রেগে বলে উঠলো,’ হে আমি থাকি আর তুমি এই অবস্থা একা চলে যাও। বলেই রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে গেলেন। অনেক গুছ গাছ বাকি।
বিথী ঐশীর কাছে ফোন দিলো। কয়েক বার ফোন দেওয়ার পরে-ও যখন ঐশী ফোন ধরলো না। তখন ফোন রেখে বারান্দায় গেলো৷ আকাশে আজ চাঁদ উঠেনি। ঘুটঘুটে অন্ধকার আকাশটা। ল্যামপোস্ট এর আলোয় রাস্তা আলোকিত হয়ে আছে।
কিছু সময় বাহিরে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করলো। চোখের সামনে ভেসে উঠলো আকাশ আর ওর কাটানো সেই মুহূর্তের দিনগুলো। কতোই না ভালোবাসায় ঘেরা ছিলো তাদের প্রেমের শহর। এতো নিখুঁত ভাবে মানুষ কেনো অভিনয় করে।
যেই মানুষটির বুকে এক সময় ওর রাজত্ব ছিলো কাল সেই বুকে অন্য কেউ ঘুমাবে ভাবতে চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পরলো।
হাতের মুঠোফোন বেজে উঠলো।
বিথীঃ হ্যালো…
….
বিথীঃ কি হলো কথা বলছেন না কেনো..??
….
বিথীঃ আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন…?
ওপাশের লোকটি কিছু না বলে চুপচাপ ফোন কেটে দিলো।
বিথী কিছু সময় ফোন এর দিকে তাকিয়ে আবার রুমে এসে সব গুছগাছ শুরু করলো।
কাল এই শহর ছেড়ে দিবে বিথী। যেই শহরে জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়ে দিলো আজ ভাগ্য তাকে সেই শহর ছাড়তে বাধ্য করলো।
কাল আকাশ আবার বিয়ে করতে যাচ্ছে ।
পুরুষ মানুষ বউ মা-রা যাওয়ার তিন দিন ও দেখে না দ্বিতীয় বিয়ে করে নেয় আর এটা তো ডিভোর্স হয়ে গেছে।
বিথী আর কখনো আকাশের সামনে পড়তে চায় না। দেখতে চায় না কোনো প্রতারক এর মুখ। কাল পুরো পরিবার এই শহর ছাড়বে।
বিথীর এমন কথায় ঐশী মোটেও রাজি না।
ঐশী রেগে বিথীর সাথে কথা বলে না।
বিথী সব কিছু গুছিয়ে রাখার সময় চোখ পরে একটা বক্সের দিকে।
বক্সটি হাতে নিয়ে কিছু সময় তাকিয়ে থাকলো।
এই বক্সটা আজকে অফিস থেকে চলে আসবার সময় মুরতাসিম ওর দিকে বাড়িয়ে ধরে ছিলো।
বিথী বক্সটা খোলে দেখে অনেক রঙ বেরঙের চুড়ি।
বিথী ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে।
এই কয়েক মাসে মুরতাসিম আর ওর খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে।
বিথী নিজের পেটের দিকে তাকালো। সাত মাস চলছে।
অনেকটা উঁচু হয়ে গেছে পেট।
বিথী রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো মায়ের রুমে সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছে কিনা দেখতে।
****
অথৈ বাসা থেকে দেয়াল টপকে বেরিয়ে পরলো।
রাস্তায় এসেই এদিক ওদিকে তাকালো। কিছুটা দূরে বাইকে বসে আছে একজন ছেলে।
অথৈ দৌড়ে গিয়ে বসে পরলো বাইকের পেছনে।
বাইক স্টার্ট দিতেই অথৈ বলে উঠলো,’ সৌরভ কাল আমাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে। ‘
সৌরভ অবাক হয়ে বললে,’ তাই না-কি, ছেলে কি করে..? ‘
অথৈ মন খারাপ করে সৌরভ এর পিঠে মাথা রেখে বললো,’ জানিনা। ‘
সৌরভঃ ভালো।
অথৈঃ কিসের ভালো। যদি ছেলে আমাকে পছন্দ করে নেয় তাহলে..?
সৌরভঃ তাহলে বিয়ে করে নিবে।
অথৈ রেগে বললো,’ আপনার কাছে কি এটা মজা মনে হচ্ছে।
সৌরভঃ কখন বললাম..
অথৈঃ আপনি এমন ভাবে কথা বলছেন কেনো..? আমার বিয়ে হয়ে গেলে আপনার কি কোনো যায় আশে না..?
সৌরভ কিছু না বলে আপন মনে রাতের অন্ধকারে বাইক চালিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে।
অথৈ রেগে বললো,’ বাইক থামান সৌরভ।
সৌরভ অথৈর কথা শুনেও না শুনার মতো বাইক চালাচ্ছে।
অথৈ এবার একটু বেশিই রেগে গেছে।
সব পুরুষ এক প্রেম করার জন্য পায়েও ধরতে রাজি বিয়ের কথা শুনলেই ওরা কেটে পড়ে।
অথৈ সৌরভ এর থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে বসলো। আজ হয়তো শেষ দেখা অথৈ আর এই মানুষটির সাথে কখনো দেখা করতে চায় না।
অথৈ সৌরভ এর থেকে দূরত্ব রেখে বসতেই সৌরভ বাঁকা হেঁসে বাইক ঘুরিয়ে অথৈর বাড়ির দিকে আবার গেলো।
অথৈ কে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে সৌরভ কিছু না বলে মিনিটেই চোখের আড়াল হয়ে গেলো।
অথৈ রাগে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে বিরবির করে বলে উঠলো,’ কাল যেই ছেলেই ওকে দেখতে আসবে সে তাকেই বিয়ে করে নিবে হউক না সেই ছেলে কানা, লেঙরা, প্রতিবন্ধী।
***
সব কিছু নিয়ে বেরিয়ে পরলো বিথী আর ওর পরিবার।
ঐশীর আম্মু বিথীকে জড়িয়ে ধরলো।
বিথীর আম্মু কান্না করে বলে উঠলো,’ তুই আমার ছোটো বোনের মতো ছিলি আমরা আবার আসবো। নিজের যত্ন নিস৷
বিথী বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছে যদি একবার ঐশীকে দেখতে পায় সেই আশায়। কিন্তু আসে না ঐশী।
বিথী গাড়িতে উঠেও তাকিয়ে থাকে গেইটের দিকে শুধু একবার ঐশীকে দেখার জন্য । চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে পানি। শেষ মূহুর্তে ও দেখতে পেলো না ঐশীকে৷
বিথীদের গাড়ি গেইট দিয়ে বের হয়ে যেতেই ঐশীর গাড়ি ডুকে।
ঐশী গাড়ি থেকে নেমে দেখে ওর আম্মু চোখ মুছছে।
ঐশী ওর আম্মুকে বলে উঠলো বিথী কোথায়..?
~ চলে গেছে…
ঐশী কাউকে কিছু না বলে চলে যায় নিজের রুমে।
ওর জন্য কি একটু অপেক্ষা করতে পারলো না বিথী। আজ নিজের আপন বোন হলে এমন করতে পারতো না। বিথী জানে ঐশী ওর উপর রেগে আছে। একবার দেখা করে যেতো। পর পরি হয়। পর কখনো আপন হয় না।
🍁🍁🍁
সময় কারো জন্য থমকে থাকে না।
দেখতে দেখতে কেটে গেছে তিন বছর।
বিথী বাসায় আসতেই ওর সামনে বেত হাতে নিয়ে এসে দাঁড়ালো একটা পিচ্চি।
বিথী কানে ধরে বললো,’ সরি আব্বু আর কখনো এমন হবে না।’
পিচ্চি টা কিছু না বলে গাল ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
বিথী মুচকি হেঁসে বললো,’ দেখো মাম্মা কি এনেছি। ‘
চকলেট দেখেই খুশিতে বিথীকে জড়িয়ে ধরলো পিচ্চি।
রুমের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসলো বিথীর আম্মু।
বিথী ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো,’ কিছু বলবে আম্মু…? ‘
~ তীব্র ঐশীকে দেখতে গেছে। আমার মনে হয় আমাদের আবার নিজের শহরে ফিরে যাওয়া দরকার। ছোটো ফোন দিয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়।
বিথী একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ক্লান্ত শরীরটা টেনে চললো নিজের রুমে।
বিথীর আম্মুও মেয়ের সাথে গেলো৷
ছেলেকে বসিয়ে বিথী ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো।
আব্বুকে বলো গাড়ি দেখতে।
,,🍁🍁🍁
ঐশী শপিং মল থেকে বের হতেই আকাশ কে দেখে চমকে উঠলো।
প্রথমে আকাশকে চিনতে অসুবিধা হলেও পরে ঐশী চিনলো।
কেমন রোগা-সোগা হয়ে গেছে।
ঐশী আকাশের সামনে যেতেই আকাশ অন্য দিকে হাঁটা শুরু করলো।
ঐশী দৌড়ে আকাশের সামনে গিয়ে বললো,’ আকাশ! আপনি আমাকে দেখে পালাচ্ছেন কেনো..??
আকাশ আমতাআমতা করে বললো,’ কখন, আসলে আমি আপনাকে দেখিনি।’
ঐশী আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,’ আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই।
আকাশঃ আমার এখন সময় নেই। অন্য একদিন দেখা হলে বলবো।
ঐশীঃ বেশি সময় নিবো না পাঁচ মিনিট।
আকাশ আর না করতে পারে না।
ঐশী একটা রেস্টুরেন্টে যেতে চাইলে আকাশ বলে, ‘ এক কাপ চায়ের সঙ্গে পাঁচ মিনিট রাস্তার মোড়ে কোনো এক টং দোকানে হলে মন্দ হয় না।
ঐশী আকাশের কথা শুনে মনে মনে অবাক হলেও মুখে হাসি ঝুলিয়ে রাখলো।
দুই কাপ চা হাতে নিয়ে দুইজন বসে আছে।
ঐশী বলে উঠলো, ‘ আন্টি কেমন আছে..?
আকাশ মুচকি হেসে বললো,’ মা তো নেই..
ঐশীঃ নেই মানে..
আকাশঃ মা আমাকে ছেড়ে অনেক আগেই না ফেরার দেশে চলে গেছে ।
ঐশী নিজেকে সামলে আবার প্রশ্ন করলো,’ আপনি এখন কোথায় থাকেন..?’
আকাশঃ কেনো..?
ঐশী বোকার মতো হেঁসে বললো,’ আপনার বউ এর সাথে দেখা করার ইচ্ছে ছিলো তাই।
আকাশ মুচকি হেসে বললো,’ সে তো নেই।
ঐশী আরও অবাক হয়ে বললো,’ নেই মানে..?
আকাশঃ আজ থেকে দুই বছর হবে আমার কোম্পানিতে লছ হয়। কোম্পানি একদম বন্ধ হয়ে যায়। বাসায় এসে দেখি আমার বউ তরী ওর আগের প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে সাথে আমার টাকা, গহনা সব নিয়ে গেছে৷ এই শুখে আম্মু স্টোক করে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা করাতে পারিনি। আম্মু মা-রা যায়। আর আমি রাস্তায় নামতে হয়।
ঐশী কিছু বলতে গেলে আকাশ বলে উঠলো,’ পাঁচ মিনিট শেষ ব’লেই চায়ের বিল মিটিয়ে হাঁটা শুরু করলো।
ঐশী তাকিয়ে রইলো আকাশের যাওয়ার দিকে।
মানুষ ছাড় দিলেও প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেয় না। নিকেলে বাদশা সকালে ফকির। আজ আকাশের অবস্থা ঠিক তেমন। সব হারিয়ে নৃশ্য।
কিন্তু বিথী আজ সুখী নিজের ছেলে নিয়ে সে খুব ভালো আছে। আজ আর তাকে কষ্টরা তারা করে বেড়ায় না সর্বক্ষন। সে অতীত ভুলে নিজের সন্তান নিয়ে খুব ভালো আছে৷
ঐশী আকাশের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায় বাসায় যেতে হবে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে বাবুনী হয়তো কান্না করছে।
চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।