#ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-১৫)
#হালিমা রহমান
সকাল সকাল সাজ্জাদ সাহেবের ঘরে ডাক পড়লো ইরফানের।সে সবে নাস্তা শেষ করে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে পা বাড়াচ্ছিল।এমন সময় বাবার ডাক পেয়ে একটু অবাকই হলো ইরফান।সকাল সকাল কি এমন দরকার পড়লো?ইরফান হাতঘড়ির দিকে একবার নজর বুলিয়ে বাবার ঘরের দিকে ছুটে যায়।সাড়ে আটটা বেজে গেছে।দেরি করলে চলবে না একদম।
ইরফান এখন ভীষণ ব্যস্ত।সারাদিন কাজের ফাঁকে দম নেওয়ার সময় পায় না।ফজরের সময় ঘুম ভাঙে তার। ভোরে নামাজ পড়ে ঘন্টা দুয়েক জগিং ও ব্যায়াম করে।এরপর তৈরি হয়ে,মায়ের হাতের নাস্তা খেয়ে সাড়ে আটটার মাঝেই ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।ব্যবসায়ের বাইরে আর কিছুতে নজর দেয় না সে।রোবটের মতো একাজ-সেকাজ করতেই থাকে সারাদিন।বহুদিন গাফিলতি করেছে কাজে।এখন একবারে তা পুষিয়ে নিচ্ছে।কাজের চাপে এখন আর রাত জাগতে পারে না ইরফান।ফলস্বরূপ প্রেয়সীর প্রতিচ্ছবি আঁকতে পারে না মনে মনে।সারাদিন কাজের শেষে বিছানায় গা দিলেই চোখের পাতায় ঘুমেরা ভর করে।তথার কথা ভাবার সময় কোথায়?তথাকে মনের ধারে-কাছেও আসতে দেয় না।এই তো কালকে ফেসবুকে স্ক্রল করার সময় তথার একটা ছবি সামনে এলো।কালো শাড়ি পড়ে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে তার অদ্ভুত সুন্দর হাসি।কি সুন্দর দেখাচ্ছিল মেয়েটাকে! মনে হচ্ছিলো একটুকরো কালো মেঘের আকাশ।একনজর দেখেছে ইরফান।তারপর তড়িঘড়ি করে মোবাইল রেখে দিয়েছে।মেয়েটার এই হাস্যোজ্জ্বল ছবিটা পোড়াবে খুব।ইরফান তথাকে ভুলে যেতে চায়। চিরদিনের জন্য একদম ভুলে যেতে চায়।সে পাগল প্রেমিক নয়, আদর্শ পুরুষ হতে চায়।
সাজ্জাদ সাহেব ঘরে একা শুয়ে ছিলেন।ইরফান ঘরে ঢুকে সালাম দিতেই উঠে বসেন তিনি।দুটো কাশি দিয়ে গলাটাকে পরিষ্কার করে নেন।
_” ভিতরে এসো, ইরফান।”
ইরফান তার বাবার খাটের পাশে যেয়ে বসে।বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করেঃ” আমাকে ডেকেছিলেন , বাবা?”
_” হ্যাঁ। যাচ্ছিলে কোথাও?”
_” জ্বি।রেস্টুরেন্টে যাচ্ছিলাম।”
_” এতো সকালে!”
_” জ্বি।”
_” ভালো।তোমার মা কিছু বলেছে কালকে?”
_” কোন বিষয়ে?”
_” তোমার বিয়ে।”
_ ” জ্বি,বলেছে।”
_” তোমার কি মতামত?”
_” আমার কোনো মতামত নেই, বাবা।আপনাদের কথাই শেষ কথা।”
_” সত্যি বলছো?”
_” জ্বি।”
সাজ্জাদ সাহেব বালিশে হেলান দিয়ে বসেন।হালকা চালে বলেনঃ” ওই মেয়েটার কি হবে তাহলে?”
ইরফান নড়েচড়ে বসে।বাবা কার কথা বলছেন?তথার?”
_” কোন মেয়ের কথা বলছেন, বাবা?”
_” ওই যে ওই মেয়েটা।কি যেন নাম,কথা না কি যেন।”
_” তথা।”
_” হ্যাঁ, হ্যাঁ তথা।”
_” আপনি ওর কথা কি করে জানলেন, বাবা?”
_”‘তুমি আমার ছেলে ইরফান।তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ আমি চিনি।আর তুমি একটা মেয়ের জন্য পাগল হবে,ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে দেবে আর আমি জানব না! এটা কি সম্ভব?”
ইরফান মাথা নিচু করে বসে থাকে।বাবা হয়তো সবটাই জানে। তাই তার সাথে মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই।
_” তথা মেয়েটা সুন্দর, ভদ্র।ও যদি অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে না নিত তবে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তোমাদের বিয়ে দিতাম।ওর পেশাটাই আমার পছন্দ না।তাছাড়া,বেশিরভাগ নায়ক-নায়িকা কোনো বন্ধন পছন্দ করে না।তারা বাস্তব জীবনের দায়িত্ব-কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারে না।আমি কি বলতে চাইছি তা বোধহয় তুমি বুঝতে পারছো।”
ইরফান উপর-নিচে মাথা দুলায়।মৃদু সুরে বলেঃ”আমি বুঝতে পারছি।কিন্তু বাবা সবাই তো একরকম হয় না।কেউ কেউ প্রফেশনের পাশাপাশি সফলভাবে ঘর-সংসারও সামলাচ্ছে। ”
_” সেটা ব্যতিক্রম। তুমি তো ব্যতিক্রমকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারো না।”
এরপরে আর কথা থাকে?ইরফানকে চুপ করতে হয়। এই কথার পরেও সে হয়তো অবুঝের মতো তর্ক করতে পারবে।কিন্তু সাজ্জাদ সাহেবের দীর্ঘদিনের লালিত ধারণা বদলাতে পারবে না।
_” দু’দিন পর মেয়ে দেখতে যাব।আমার বন্ধুর মেয়ে।জিনিয়া তাবাসসুম নাম।”
এবারেও চুপ থাকে ইরফান।মেয়ের সম্পর্কে কিছু জানতে চায় না।
_” জিনিয়া পড়াশোনা শেষ করে একটা হাইস্কুলে চাকরি করছে।হিসাববিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স করেছে।মেয়ে সুন্দর,ভদ্র।আশা করছি তোমার পছন্দ হবে।”
বরাবরের মতো এবারেও মাথা নিচু করে চুপ থাকে ইরফান।তা দেখে কপাল কুঁচকে ফেলেন সাজ্জাদ সাহেব।বিরক্তির সুরে বলেনঃ” তুমি কিছু বলবে ইরফান?”
_” জ্বি না, বাবা।”
_” বাঁচালে।তাহলে এই কথাই রইলো।পরশুদিন জিনিয়াদের বাড়িতে যাব।তুমি তৈরি থেকো।”
মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায় ইরফান।তার পায়ের ছন্দ দেখে মনে হয় সে খুব কষ্ট করে পা টেনে নিয়ে যাচ্ছে।মানুষের মন বাইরে থেকে বুঝা যায় না। কে জানে ইরফানের মনে কি চলছে।তবে তার নির্বিকার ভাব দেখে অনায়াসে বলা যায়,ইরফান এক ব্যর্থ প্রেমিকের নাম।
***
খাটের উপর,টেবিলের উপর,আলমারির ভিতর,ব্যাগের ভিতর—সবখানে তন্ন তন্ন করে খুঁজলো তথা।কিন্তু না।মোবাইলটা কোথাও নেই।তার স্পষ্ট মনে আছে কালকে বাড়ি ফেরার পর টেবিলের উপরেই ফোনটা রেখেছিল সে।কিন্তু কোথায় যে গেল।আরো একবার পুরো ঘরে চক্কর দেয় তথা।কিন্তু ফোনটা নজরে আসে না।সোনালীও ঘরে নেই।ও আবার নিলো কি না কে জানে।সোনালীকে খোঁজার জন্য রুম থেকে বেরোয় তথা।এদিক-ওদিক নজর দিলেও সোনালীকে দেখলো না কোথাও।তবে,মালিহাকে নজরে আসে।তথাদের ঘরের দিকেই দ্রুতপায়ে ছুটে আসছে। মালিহার দ্রুতগতি দেখে একটু অবাক হয় তথা।তাই ঘর থেকে বেরিয়ে মালিহার কাছে যায়।মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেঃ” কি হয়েছে, মালিহা?দৌঁড়াচ্ছ কেন?”
_” আমার ফোনটা পাচ্ছি না, তথা আপু।কালকে নদীর তীর থেকে আসার পরে ঘরেই রেখেছিলাম।কিন্তু এখন দেখছি না কোথাও।”
_” তোমারটাও পাচ্ছো না! আমার ফোনটাও পাচ্ছি না।কি একটা অবস্থা বলো তো।”
_” চুরি-টুরি হলো না তো আবার?”
_” কি জানি,বলতে পারছি না।”
কিছুক্ষণ দুজনেই দাঁড়িয়ে থাকে।এর মাঝেই পুনম,চন্দ্রানী,শুভ্রাসহ আরো ছয়-সাতটা মেয়ে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে।কারো ফোন পাওয়া যাচ্ছে না।কি আশ্চর্য একটা ঘটনা!সবার একটাই প্রশ্ন,ফোন কোথায়? এতোগুলো ফোন একসাথে হারিয়ে গেল?কেউ একটুও টের পেল না? পুনম খুব রেগে গেল এসব দেখে।দাঁত কিড়মিড় করে বললঃ” প্রথম থেকেই এ জায়গার কোনোকিছু আমার ভালো লাগে না।কোনো দায়িত্বজ্ঞান নেই এদের।এতোগুলো ফোন কোথায় হাওয়া হয়ে গেল?এর ক্ষতিপূরণ কে দিবে?”
_” দেখো নিজেদের মাঝে এসব বললে তো হবে না।আহমেদ ইউসুফের সাথে কথা বলতে হবে।চলো আমরা যেয়ে বরং তার সাথেই কথা বলি”—শুভ্রার কথা পছন্দ হয় তথার।তবে পুনমের সাথে যেতে রাজি নয় সে।মেয়েটা ভীষণ ঠোঁটকাটা। কি থেকে কি বলে বসে।তথা কিছু বলার আগেই মালিহা বললঃ” আমি যাব না।ওই ইউসুফকে আমার খুব ভয় হয়।”
_” কেন উনি বাঘ নাকি ভাল্লুক যে ভয় পেতে হবে?”–পুনম কপ কুঁচকে প্রশ্ন করে মালিহাকে।
_” উনি মানুষ। কিন্তু তবুও আমার ভয় হয়।”
_” স্টুপিড।”—বিরবির করে গালি দেয় পুনম।তথা তা শুনে কপাল কুঁচকায়। ঠিক একারণেই মেয়েটাকে পছন্দ না তার।তথা সোজা হয়ে দাঁড়ায়।ইউসুফের ঘরের দিকে একবার তাকিয়ে বলেঃ” তোমরা না গেলে না যাও।আমার ফোনটা খুব দরকার।আমিই যাই বরং।”
আর কারো কথা শুনে না তথা।পা বাড়ায় ইউসুফের ঘরের দিকে।
ইউসুফ সবে গোসল শেষ করে শরীরে তোয়ালে চালাচ্ছিল।এমন সময় দরজায় নক করে তথা।উচ্চস্বরে বলেঃ” আসব মি.ইউসুফ?”
_” ওয়েট।”
তড়িঘড়ি করে গায়ে টি-শার্ট চাপায় ইউসুফ।তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে দরজার কাছে যায়।শক্ত হাতে দরজা খুলতেই তথাকে চোখে পড়ে।ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে ইউসুফের। মুচকি হেসে বলেঃ” কি সৌভাগ্য আমার! আজ সকাল সকাল তাজা কামিনী ফুলটা আমার ঘরের দুয়ারে।”
খুব বিরক্ত হয় তথা।এগুলো আবার কেমন কথা?সে খ্যাটখ্যাটে গলায় বলেঃ” কালরাতে আপনার বাড়িতে চুরি হয়েছে,সে খবর কি জানেন আপনি?”
অবাক হয় ইউসুফ।হতভম্ব গলায় বলেঃ” কি বলছেন এগুলো?এই বাড়িতে চুরি! অসম্ভব। ”
_” এই অসম্ভব ঘটনাটাই ঘটেছে মি.আহমেদ।আমরা কেউ আমাদের ফোন খুঁজে পাচ্ছি না।”
_” ঠিক করে খুঁজেছেন?”
_” কম করে হলেও পঞ্চাশবার খুঁজেছি।”
_” আচ্ছা,আপনি ঘরে যান কামিনী ফুল। আমি দেখছি।”
_” আমি কামিনী ফুল নই, আমি তথা।পরেরবার সঠিক নামে ডাকলেই খুশি হব।আর বিষয়টা একটু তাড়াতাড়ি দেখবেন প্লিজ।এখনো বাড়িতে কথা বলতে পারিনি।”
আর দাঁড়ায় না তথা।ধুপধাপ পা ফেলে ঘরে চলে যায়।ইউসুফ অপলক চেয়ে থাকে সেদিকে।দিনদিন মেয়েটার প্রতি দুর্বলতা বাড়ছে।এটা খুবই খারাপ লক্ষণ। অধিক দুর্বলতা আত্মসমর্পণের পূর্ভাবাস এবং আত্মসমর্পণ পরাজয়ের লক্ষণ।আচ্ছা,ইউসুফের পরাজয় কি তথার হাত ধরেই আসবে?
ইউসুফ ঘরে ঢুকতেই ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে আসে মামুন।তার হাতে একটা হাতুরি।মামুনকে দেখে ইউসুফের দৃষ্টি বদলে যায়।শান্ত চোখে মামুনের দিকে চেয়ে বলেঃ” কাজ শেষ?”
_” জ্বি, স্যার।”
_” মোবাইলগুলো ভালোভাবে গুড়ো গুড়ো করেছো তো?নাহয় কিন্তু পাইপ জ্যাম হয়ে থাকবে।”
_” একেকটাকে কয়েকশো টুকড়া করে কমোডে ফেলেছি।”
_” ফোনগুলো চেক করেছিলে ভালোভাবে?কিছু পেয়েছ?”
_” গুরুত্বপূর্ণ কিছুই পাইনি স্যার।”
_” আচ্ছা।যাও এখন তুমি।আমি আসছি একটু পর।”
_” ওকে স্যার।”
***
সোনালীকে বারান্দায় পায়চারী করতে দেখে এদিক-ওদিক সতর্ক দৃষ্টি ফেলে শাফিন।আশেপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে দৌঁড়ে যায় সোনালীর দিকে।সোনালীর হাত ধরে হাম্মামখানার দিকে দৌঁড় দেয়। আচমকা এমন ঘটনা ঘটায় ভয় পেয়ে যায় সোনালী।তাল সামলাতে না পেরে শাফিনের শরীরের উপর হেলে পড়ে।হাম্মামখানার সামনে পৌঁছে শাফিনের গালে সজোরে চড় মারে।নিজের ডানহাত শাফিনের শক্ত মুঠো থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলেঃ” ছাড় শাফিন্না।তুই আমার বিরুদ্ধে মনির স্যারের কাছে অভিযোগ করেছিস।কুকুর একটা।”
_” আরে আমি করি নাই।এখানে আসার পর থেকে স্যারের সাথে আমার কথাই হয় না।”
_” মিথ্যা বলবি না।”
_” কসম,সত্যি বলছি আমি। তুই আমার একমাত্র চাচাতো বোন।তোর নামে কেন আমি নালিশ করতে যাব?”
_” তাহলে কে করলো কাজটা?তুই ছাড়া কে ছিল ওখানে?”
_” টিম বি’র অনেকেই ছিল।তোর জাতশত্রু সৌরভও ছিল।”
_” ওহ হো মনেই ছিল না।নিশ্চিত ওই হারামজাদার কাজ এটা।জানিস কাল ওই মনির চোরা কি বলে আমাকে?বলে আমরা নাকি এখানে আরামে আছি।ভাবতে পারিস কত বড় কথা! বুলেটের মাথায় দাঁড়িয়ে কাজ করছি আমরা।”
_” বাদ দে তো এসব।এসিরুমে বসে এরকম কথা আমিও বলতে পারি।তুই আসল কথা বল।কালকে পেয়েছিস কিছু?”
_” একটা বিশাল জীর্ণ-শীর্ণ ঘর ছাড়া আর কিছুই পাইনি।বাড়ির পিছনে অনেক গাছ।রাতেরবেলা পথ চলাই মুশকিল। তাছাড়া ওই ঘরটাও কাজে লাগে না বোধহয়। দেয়ালগুলো অনেক জায়গায় ফাটা।দরজায় এক বিশাল তালা আবার মরচে ধরা। অনেকদিন ব্যবহার করা হয় না হয়তো।”
_” আর কিছু দেখিসনি?”
_” উঁহু। আমার মনে হয় এবাড়িতে পাতালঘর আছে।নাহয় অস্ত্র ও ড্রাগসগুলো কোথায় রাখে?”
কিছু বলে না শাফিন।এবাড়িতে পাতালঘর না থাকাটাই অস্বাভাবিক। সে চিন্তিত স্বরে বলেঃ ” পাতাল থাকলে খুব সমস্যা হবে বুঝলি।খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।”
_” কিছু করার নেই।খুঁজতে তো হবেই ”
_” এরপর থেকে তোর সাথে আমিও খুঁজব।একা আর কিছুতেই ছাড়ছি না তোকে।”
_” পাগল হয়েছিস?চৌদ্দগুষ্টি সাথে নিয়ে খুঁজতে বের হব আমি?ধরা পড়লে খবর আছে।
_” তোর কথা শুনলে তো।কালরাতে ফোনগুলো কিভাবে গায়েব করলো দেখলি?বুঝতেও পারলাম না একটু।আমার ত্রিশ হাজার টাকার ফোন।”
_” ফোনগুলো কালরাতে নয় আজ ভোরের দিকে সরিয়েছে।কারণ আমি ঘরে ঢুকেছি চারটায়।তখন ফোন আমার কাছেই ছিল।খুব ঝামেলায় পড়ে গেলাম।ফোন ছাড়া ঢাকা যোগাযোগ করব কিভাবে?”
_” চিন্তা করিস না।সব ঠিক হয়ে—আরে ওটা কি?কি লেখা ওখানে?”
শাফিনের কথার ধরনে অবাক না হয়ে পারে না সোনালী।শাফিনের দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে তাকাতেই চোখ পড়ে হাম্মামখানার দেয়ালে।একটুকরো সাদা কাগজ স্কচটেপ দিয়ে আটকানো সেখানে।লাল কালি দিয়ে কি যেন একটা লেখা।সোনালী দু’পা এগিয়ে যায়। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলে ত্যাড়া-ব্যাকা অক্ষরের ছোট্ট লাইনটি।
—” আপনার ও আমার মাঝে কোনো পর্দা নেই।”
একে অন্যের মুখের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে দুই ভাই-বোন।এই বিদঘুটে কথাটার মানে কি?কে লিখলো এটা?কাকে উদ্দেশ্য করে লিখলো?এটা কোনো সংকেত নাকি অহেতুক লেখা একটি অর্থহীন লাইন?
অনেকগুলো প্রশ্ন।কিন্তু দুজনের একজনের কাছে কোনো উত্তর নেই।।।
চলবে…
(বি.দ্রঃ দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত।আমার আদরের ছোট সদস্যটি অসুস্থ,হাসপাতালে ভর্তি।তাই এতো দেরি হয়েছে।)