#ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-১৬)
#হালিমা রহমান
লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন
পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাদগ্রস্ত প্রেমিক পুরুষ বিজয়,ছলছল চোখে চেয়ে আছে তার প্রাণপ্রিয় রমনীর দিকে।এলোমেলো চুলগুলো নামমাত্র খোপায় বেধেছে তার প্রেয়সী।খোপায় তার শুকনো বকুলের মালা জড়ানো।চোখে-মুখে ভীষণ কাঠিন্যের ছাপ।বিজয়ের প্রেয়সীকে দেখতে ঠিক কাঠখোট্টা সন্ন্যাসীনীর মতো লাগছে।মনে হচ্ছে এইমাত্র হিমালয় থেকে আরাধনা করে সাধারণ মানুষদের মাঝে পা রেখেছে।বিজয় দু’পা এগিয়ে যায় তার প্রেয়সীর দিকে।গলায় একরাশ আকুলতা ঢেলে বলেঃ” তুমি আমার জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ রমনী।আমার তুচ্ছ প্রাণের চাইতেও তোমায় বেশি ভালোবাসি, রানু।আমি নিঃস্ব ফকিরের মতো তোমার প্রেম প্রার্থণা করছি।তুমি ফিরিয়ে দিও না আমায়। ওগো হৃদয়রানী, গ্রহণ করো আমার হৃদয় নিংরানো ভালোবাসা।তোমার সুগন্ধমাখা আঁচল ছোঁয়ার অধিকার আমায় দাও।কথা দিচ্ছি, তোমার মুখের একটুখানি হাসির জন্যে জীবন দিতেও দ্বিধা করব না।”
ফিরেও তাকায় না রানু।শরীরে জড়ানো ধবধবে সাদা শাড়ির আঁচলের একাংশ মাথায় টেনে দেয়।দৃঢ় কন্ঠে বলেঃ” আমাকে যেতে দিন বিজয়বাবু।আপনি আমায় অপমান করছেন।আপনি কি ভুলে গেছেন, আমি বিধবা?আপনার এসব কথায় আমার মন গলে না।পরপুরুষের মুখ থেকে এসব কথা শোনাও পাপ।”
রানুর সামনে দু-হাত মেলে তার পথ আটকায় বিজয়।শক্ত কন্ঠে বলেঃ” অবিনশ্বর স্রষ্টার শপথ,আজ আমাক গ্রহণ করতেই হবে ।হয় আমায় গ্রহণ করো, নাহয় নিজমুখে আমার মৃত্যু কামনা করো।প্রেমহীন জীবনের চাইতে মৃত্যু শ্রেয়।”
এমন সময় সেখানে আসে উচ্ছল কিশোরী মিতালী।সে বিজয়ের পিছনে দাঁড়িয়ে বিস্মিত কন্ঠে প্রশ্ন করেঃ” আপনি এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন ছোট জমিদার? আর রানু তুই কেন ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস?”
_”কাট” —উচ্চশব্দে বলে উঠেন ডিরেক্টর আখতার হোসেন।রানুবেশী তথা, বিজয়বেশী শাফিন ও মিতালীবেশী পুনম এতোক্ষণে অভিনয় ছেড়ে বাস্তবে ফিরে আসে।পুনম শাড়ির আচঁলটাকে পাখার মতো ব্যবহার করে বাতাস করে।ইশ! এতো বড় কাপড় গায়ে জড়ানো যায়?শরীরটা মনে হচ্ছে সিদ্ধ হয়ে যাবে।ডিরেক্টর ব্যস্ত পায়ে এগিয়ে আসেন পুনমের দিকে।নরম সুরে বলেনঃ”পুনম ছোট জমিদার নয়, বিজয়বাবু বলবে।আর রানু ক্যারেক্টারটা তোমার চাইতে বয়সে বড়।তাই তুমি তাকে তুই নয় তুমি করে বলবে।যেমন-আর রানু বুবু,তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন?এরকম। ঠিক আছে?”
পুনম মাথা নাড়ে।সে পুরোপুরি বুঝতে পেরেছে।
_” তথা,তোমার চেহারায় অতিরিক্ত কাঠিন্য চলে আসছে।এতোটা চলবে না।মনে রাখবে,তুমি বিজয়ের বাড়ির আশ্রিতা।তাই এতো কঠিনভাবে কথা বলবে না।বুঝতে পেরেছো?”
_” জ্বি,স্যার।”
_” শাফিন,তোমার চুল নষ্ট হয়ে গেছে।ধুতির এদিকটাও নষ্ট হয়ে গেছে।ঠিক করো।”
মেকাপম্যান দৌড়ে আসে শাফিনের দিকে।তার মুখের সামনে আয়না ধরে চুলে চিরুনি চালায়। এলোমেলো হয়ে যাওয়া ধুতির কুঁচিগুলো ঠিক করে দেয় আরেকজন।তথা ও পুনম মেকাপ ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তথার চোখের কাজল লেপ্টে গেছে।টিস্যু দিয়ে মুছে নেয় তা।অভিনয়কে যতটা সহজ ভেবেছিল,ততোটা সহজ এটা নয়।দশ মিনিট শুটিং করেই জান বেরিয়ে যাচ্ছে।
পুরোদমে শুটিং চলছে।ডিরেক্টরের চেয়ারে বসে আখতার হোসেন সব ঠিকঠাক করছেন,একে-ওকে ফরমায়েশ দিচ্ছেন।সোনালী,মালিহাসহ সব মেয়েরা একপাশে দাঁড়িয়ে শুটিং দেখছে।সোনালী বাদে বাকি সবাই অবাক চোখে দেখছে সবকিছু।এসব তাদের জন্য একদম নতুন।আর সোনালী? সে অলসচোখে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে।মুখে তার অবজ্ঞার হাসি।এই অভিনয় সত্যিকারের অভিনয় বটে।এতোগুলো মেয়ের চোখে ধুলো দিচ্ছে এরা। ভাবা যায়?নিঃসন্দেহে আখতার হোসেন জাত অভিনেতা।আচ্ছা,এখানে কেউ কেন বুঝতে পারছে না যে এটা অভিনয় নয় ছেলেখেলা?আশ্চর্য! এরা কি কখনো এফডিসিতে যায়নি?কখনো সামসামনি কোনো সিনেমার শুটিং দেখেনি? কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই একটা অচেনা লোকের সাথে এতোদূর চলে এলো?অবাক না হয়ে পারে না সোনালী।মেয়েগুলো এতো বোকা কেন?
শুটিং হচ্ছে নিচতলায় ড্রয়িংরুমে।দোতলার বারান্দার রেলিংয়ে দু-হাতের ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ইউসুফ।তার দৃষ্টি নিচে দাঁড়িয়ে থাকা তথার উপরে।ধবধবে সাদা শাড়ির সাথে কালো রঙের ফুলহাতা ব্লাউজ। বেশ মানিয়েছে মেয়েটাকে।একদম স্নিগ্ধ,সতেজ,পবিত্র লাগছে।সাধে কি আর ইউসুফ তাকে কামিনী ফুল বলে?ইউসুফের মনে পড়ে যায় দেড় মাস আগের সেই দিনের কথা,যেদিন তথাকে প্রথম দেখেছিল। আখতার হোসেনের অফিসে যাওয়ার আগেও সে ভাবেনি একটা সাধারণ বাঙালি মেয়ের মাঝেই আটকে যাবে।একগুচ্ছ অনুভূতি জন্ম নেবে এই বোকাসোকা মেয়েটাকে ঘিরে।তথা তো বোকাই।বোকা না হলে পঞ্চগড় অবধি আসে? প্রথম দেখায় কোনো আড়ম্বরতা ছিল না। ইউসুফের সাথে ডিরেক্টরের খুব ঝামেলা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে।সেবার এই জ্ঞানহীন ডিরেক্টরের জন্য প্রায় ধরাই পড়তে যাচ্ছিল।আগে ইউসুফের কাজ চলতো ঢাকায়।ঢাকা থেকে অবৈধ মালগুলো চট্টগ্রামে চলে যেত।সেখানে আলাদা আরেকটা টিম ছিল।সেই টিম সেগুলো পাচার করতো অন্যান্য দেশগুলোতে।দীর্ঘদিন এভাবেই ব্যবসা চলেছে ইউসুফের। এই স্বাভাবিক নিয়মগুলোর মাঝেই ভাঙন ধরে দু’বছর আগে।ডিরেক্টরের সাথে নারী পাচার সম্পর্কিত একটা ডিল করেছিল ইউসুফ। ডিরেক্টরের কাজ হলো বিশটা মেয়ে জোগার করে দেওয়া।ঠিক সেবারেই ব্যবসায় ধরা খেয়েছে সে।ইউসুফের অগোচরে পুলিশ বিভাগ ডিরেক্টরকে ধরেছিল।পেট থেকে ইউসুফের ব্যবসা সংক্রান্ত সব কথা বের করে হানা দিয়েছিল ইউসুফের আস্তানায়।ইউসুফের ভাগ্য খুব ভালো বলা যায়।কারণ খুব বেশি প্রমাণ পুলিশ পায়নি সেদিন।তবে এই ডিরেক্টরের কারণে ক্ষতি হয়েছে খুব।চট্টগ্রামের কর্মীদেরকে সরাতে হয়েছে, সেখান থেকে ব্যবসা গুটাতে হয়েছে,দু’দিনের মাঝে দেশ ছাড়তে হয়েছে।এরপর অনেকদিন দেশে আসতে পারেনি ইউসুফ।এবারে প্রায় দেড় বছর পর দেশে ফিরেছে সে।অদ্ভূত ব্যাপার হলো, দেশে আসার পর ইউসুফ দ্বিতীয় ডিলটাই করেছে এই ডিরেক্টরের সাথে।এর পিছনেও একটা ঘটনা আছে।ব্যবসার বিরাট ক্ষতির কথা ভুলেনি ইউসুফ।দেড় মাস আগে বৃষ্টিময় এক বিকালে স্থির করলো সে প্রতিশোধ নেবে।হারামজাদা ডিরেক্টরের মাথায় ছয়টা বুলেট পুরে দেবে একবারে।যেই ভাবা সেই কাজ।হুট করেই হাজির হয় ডিরেক্টরের অফিসে।ডিরেক্টর অবশ্য তখনো দেখেনি ইউসুফকে।সেখানে কোনো একটা নাটকের জন্য স্ক্রিনটেস্ট চলছিল তখন।সবার সামনে তো আর মানুষ খুন করা যায় না।তাই নিতান্ত অনাহূতের মতো একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল ইউসুফ।তখনই তথার সাথে দেখা।সিএনজি থেকে নেমে বৃষ্টির ভয়ে একটা ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে ছিল।শরীরের সাদা জামার একাংশ ভিজে গিয়েছিল বৃষ্টির ছাটে।পুরোটা সময় মেয়েটার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে ছিল ইউসুফ।এতো এতো সুন্দরী রমনীদের মাঝে কিভাবে যেন এই মেয়েটাতেই আটকে গেল ইউসুফ।মনে হচ্ছিল মেয়ে নয় একটা বৃষ্টিভেজা কামিনী ফুল দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে।সৌন্দর্য, সুগন্ধে একদম পরিনত ফুলটা। শুধু ছোঁয়ার অপেক্ষা মাত্র। হুট করে প্রেমে পড়লো ইউসুফ। তার দুর্বলতাকে প্রথম দর্শনের প্রেমের কাতারেই ফেলা যায়।ভালো লাগার পর আর দেরি করেনি ইউসুফ।প্রেয়সীকে নিজের কাছে আনার জন্য যা করার দরকার তাই করেছে।তথার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছে,দু’দিন অনুসরণ করেছে,লুকিয়ে ছবি তুলেছে,আখতার হোসেনের সাথে আবার নতুন করে চুক্তি করেছে।এই দেড় মাসে ইউসুফের কাজের রুটিন পুরোপুরি বদলে গেছে।নিজেকেই এখন চিনতে পারে না সে।এখনকার ইউসুফ এবং আগের ইউসুফের মাঝে বেশ খানিকটা পার্থক্য রয়েছে। আগে ইউসুফ ছিল কেবল অপরাধী। সবসময় নিজের কথাই চিন্তা করতো।অন্যদিকে এখনকার ইউসুফ একইসাথে অপরাধী এবং প্রেমিক।সে এখন নিজের চাইতে প্রেয়সীর কথা বেশি চিন্তা করে।এখন আর আগের মতো চিন্তা-ভাবনা করতে পারে না।কোনো কাজ করার আগে তথার কথা মাথায় আসে।একটা ভয় কাজ করে সবসময়।যদি তথা জানতে পেরে যায়? কি আশ্চর্যের কথা! এককালের বেপরোয়া ইউসুফও এখন এক সাধারণ মেয়েকে ভয় পায়।প্রেমে পড়লে বোধহয় এভাবেই চিন্তাধারা বদলে যায়।
_” স্যার,স্যার।”
মামুনের কন্ঠে ইউসুফের ভাবনা রাজ্যে ভাঙণ ধরে।ঘাড় ঘুরিয়েই মামুনকে দেখতে পায়।তার দু’হাত দূরেই দাঁড়িয়ে আছে মামুন।
_” বলো মামুন।”
_” শেঠজি ফোন করেছিল একটু আগে।”
_” কোন শেঠ?”
_” মহেন্দ্র শেঠ,কলকাতার ব্রোথেল ম্যানেজার।”
_” কি বলল?”
_” ফোন দিয়ে খুব চোটপাট করলো।এ মাসের মাঝামাঝি নাকি মেয়েগুলোকে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল ”
মামুনের কথা শুনে সোজা হয়ে দাঁড়ায় ইউসুফ।বিরক্তিতে কপাক কুঁচকে আসে তার।
_” মাত্র পাঁচ তারিখ আজকে।মাসের মাঝামাঝি হয়েছে এখনো?”
_” আমি এটাই বলেছি স্যার।পরে রাগ করে কল কেটে দিয়েছে।”
_” হারামী একটা।এরপর আর ওই শেঠের সাথে কাজ করা যাবে না।নিম্ন পর্যায়ের অসভ্য একটা লোক।”
ইউসুফ আবারো নজর দেয় তথার দিকে।স্ক্রিপ্ট পড়ছে মেয়েটা।তথার খোপায় দেওয়া শুকনো বকুলের মালাটা টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে ইউসুফের। একটা সতেজ ফুলের মাঝে নেতানো ফুলগুলো দৃষ্টিকটু লাগছে খুব।মাঝে মাঝে ডিরেক্টরকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করে ইউসুফের।সে না থাকলে তথাকে এ পর্যন্ত টেনে আনা কঠিন হতো।
_” মামুন,তথা খুব আকর্ষণীয় তাই না?আমার বউ হিসেবে ওকে খুব মানাবে। ”
_” আমি ম্যাডামের দিকে খুব বেশি একটা তাকাই না স্যার।”
মামুনের দিকে চেয়ে সন্তুষ্টির হাসি হাসে ইউসুফ।ছেলেটা খুব বিশ্বস্ত।তার উপর চোখ বন্ধ করে সব কাজ ফেলে রাখা যায়।
_” তোমার চাহিদা খুব কম,মামুন।তোমার মতো এমন মানুষ আমি খুব কম দেখেছি।”
_” প্রয়োজনের বাইরে কোনোকিছু চাইতে আমার লজ্জা করে, স্যার।”
_” তোমাকে একটা পুরষ্কার দেব।এতো বিশ্বস্ততা অবশ্যই পুরষ্কারের যোগ্য। ”
_” তাহলে পুরষ্কারটা এখন দিয়েন না স্যার। সময় করে একদিন আমিই কিছু একটা চেয়ে নেব।”
_” কি চাও তুমি?”
_” এখন বলব না স্যার।এখনো সময় হয়নি।তবে আমার জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পুরষ্কারটা আপনার থেকে চেয়ে নেব আমি।”
_” ঠিক আছে ,চেয়ে নিও। আমিও অপেক্ষায় থাকব।”
মামুন চোখ ফিরায় নিচের দিকে।ঐ তো মেয়েটাকে দেখা যাচ্ছে।একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে সামনের দিকে।মেয়েটার দিকে তাকালেই মামুনের সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।শরীর ভেঙে আসে।মেয়েটার হাসির শব্দ মামুনের হৃদয়ে কাঁপন ধরায়।তার গলার স্বরে মামুন অপ্রস্তুত হয়।আচ্ছা,এটাই কি সর্বগ্রাসী প্রেম?
***
আজ রাতেও বেরিয়েছে সোনালী।তার আনাগোনাই এখন রাতে।দিনের বেলা এদিক-ওদিক ঢু মারার সুযোগ হয় না।কেউ না কেউ পিছনে লেগেই থাকে।আজ মোবাইলটাও নেই সাথে।তাই একটু চিন্তায় আছে সোনালী।অন্ধকার রাতে পুরো বাড়িতে চক্কর দেওয়ার জন্য আলোর দরকার।এই আলোরই অভাব এখানে।বিশাল বিশাল ডালপালা এড়িয়ে, ঝোঁপঝাড় এড়িয়ে পথ চলতে খুব কষ্ট হয়। বাড়ির পিছনে কতগুলো কাঁটাগাছ আছে।হাত-পায়ের অনেক জায়গায় কাঁটার সাথে ব্যাথা পেয়েছে সে।আজকে শরীরটা খুব একটা ভালো নেই সোনালীর।মাথা ব্যাথা করছে খুব।হাত-পায়ের আঘাতের জায়গাগুলো জ্বলছে।কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে মনটাও সায় দিচ্ছে না।আজ আর সদর দরজা দিয়ে বেরোয় না সোনালী।কেন যেন ভিতরে খুব অস্থিরতা কাজ করছে। মনে হচ্ছে পিছনে কেউ আছে।কেউ চুপিচুপি অনুসরণ করছে তাকে।সোনালী ঘাড় ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকায়।না কেউ নেই।পুরো বারান্দাটা খালি।বড় এক দম নেয় সোনালী।খানিকটা থু থু ছিটিয়ে দেয় বুকে।মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে বারান্দা দিয়ে হেঁটে চলে। আজ হাম্মামখানার জানলা টপকে বাইরে বের হবে।তবে খুব বেশি দূর যেতে পারে না।আবছা আলোয় কারো ছায়া পড়ে সোনালীর সামনে। মুহূর্তেই ব্রেইন কাজ করা বন্ধ করে দেয়।সোনালী দম আটকে দাঁড়িয়ে থাকে।পিছন ফিরে তাকায় না।পিছন থেকে
যেকোনো সময় আঘাত আসতে পারে।সোনালী জিন্সের পকেটে হাত ঢুকিয়ে রিভলবারটাকে চেপে ধরে।কয়েক সেকেন্ড অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোনো আঘাত না পেয়ে অবাক হয় সোনালী ।ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকানোর আগেই কানে আসে মামুনের শীতল কন্ঠস্বর।
_” কোথায় যাচ্ছেন, ছোট্ট মেয়ে?”
চলবে…
(বি.দ্রঃ হুট করেই ফোনটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এতোদিন গল্পটা দিতে পারিনি।আন্তরিকভাবে দুঃখিত আমি।)