ডেভিল হ্যাজবেন্ডের পিচ্চি বৌ♥part 14

0
7674

ডেভিল হ্যাজবেন্ডের পিচ্চি বৌ♥
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 14
!
কারন সত্যি তো কাল রাতে নাইট ডিউটি করতে বিজি ছিলাম আমরা,
!
এসব ভাবতে ভাবতে পিচ্চি বৌয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি,
চোখ দুটো ছলছল করছে তার,
!
তাই আমি তখনি ওর গালে আমার হাত ছুঁইয়ে দেই,
আর ও বিরক্ত হয়ে আমার হাত টা সরিয়ে রুমে চলে যায়,
তখন আব্বু আমার হাত ধরে বলেন,
!
বাবা আমি জানিনা তোমাদের মধ্যে কি হয়েছে?
আর আমি জানতে ও চাই না,
শুধু তোমাকে একটা কথাই বলতে চাই,
যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হয় বাবা তার মানে এই নয় যে তোমরা রাগে অভিমানে একে অপরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিবে,
!
দেখো আব্বু আমি তোমার মেয়ে কে অনেক ভালোবাসি,
আর ওকেই ভালোবাস বোঁ,
কিন্তু,
এই সুইট সিম্পল কথা টা তোমার মেয়ে কে আমি কিছু তেই বোঝাতে পারছিনা,
!
নিশ্চই তুমি এমন কিছু করেছ যে মেয়ে আমার রেগে ফায়ার হয়ে আছে?
!
আয় এম সরি আব্বু,
!
আমাকে বললে তো কিছু হবেনা বাবা,
আমার মেয়ে কে আদর করে বুঝিয়ে বলো,
দেখবে ও তোমার কথাই শুনে চলবে,
!
তুমি একদম ঠিক বলেছ আব্বু,
আমি আজি ওকে বুঝিয়ে বলবো,
!
আর তখনি হঠাৎ করে আম্মুর চিৎকার শুনতে পাই,
!
চিৎকার শুনে সবাই ওপরে দৌড়ে যেতেই দেখি,
বৌ আমার অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পরে আছে আর আস্তে আস্তে কেঁপে কেঁপে উঠছে,
!
তাই তখনি আমি ওকে আমার কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেই,
তার কিছুক্ষণ পরে ডক্টর এসে চেকাপ করে আব্বু কে বলেন,
!
মেয়ে ফিজিক্যালি অনেক দূরবল হয়ে পরেছে তাছাড়া ভাইরাল জ্বরের কারনে ও অনেকটা দূরবল হয়ে আছে মেয়ের শরীর,
…….
তাই আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি এ গুলো কন্টিনিউ করলে ও ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করলে সুস্থ হয়ে যাবে ও,
তবে হ্যা অনেক যত্ন ও কেয়ারে রাখতে হবে মেয়ে কে,
………
আর হ্যা এলার্জি জাতীয় কোনো খাবার খাওয়ানো যাবো না ওকে,
এবং অবশ্যই ডাস্টের থেকে দূরে রাখতে হবে ওকে ,
কারন ডাস্টের জন্যই হাত পা লাল হয়ে গেছে ওর,
তাই যতো সম্ভব মেয়ের সব জিনিশ নিট অ্যান্ড ক্লিন করে রাখতে হবে কেমন?
!
ডক্টর আঙ্কেলের কথা শুনেই আম্মু কান্না করে দেয়, আর আব্বু অনেক চিন্তিত হয়ে যায়,
!
সবি আমার করা জোরাজুরির জন্যে হয়েছে,
আমি যদি এমন টা না করতাম তাহলে কখনওই অসুস্থ হয়ে পরতো না ও,
নিজেকে খুবি অসহায় বলে মনে আমার,
!
তখনি ডক্টর আঙ্কল আমাকে ডেকে বলেন,
!
তোমার সাথে একান্তে কিছু কথা আছে বাবা,
!
হ্যা আঙ্কল বলেন?
!
বাবা তোমাদের তো নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে,
তাই আমি যেটা বলতে চেয়েছি সেটা হয়তো তুমি বুঝতে পেরে গেছ,
!
হ্যা আঙ্কল আমি বুঝতে পারছি,
!
তাই তো বলছি ওকে কিছুদিন রেস্ট দাও তাহলে মেয়ে আমার একদম সুস্থ হয়ে যাবে,
!
আচ্ছা আঙ্কল ঠিক আছে,
আঙ্কল আপনি যদি কিছু মনে না করেন আমি একটা প্রশ্ন করতে পারি?
!
হ্যা বাবা অবশ্যই?
কি তোমার প্রশ্ন?
!
আপনি কি আমার পিচ্চির না মানে আমার বৌয়ের মামা?
!
হ্যা বাবা হা হা,
তা হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন?
!
আসলে আপনি এতো আদর করে ওর চেকআপ করেছেন আর ও আপনার হাত ধরে শুয়ে ছিল তাই আর কি?
কিন্তু মামা আপনি আমাদের বিয়েতে ছিলেননা কেন?
!
বাবা আমি তোমাদের বিয়ের সময় দুবাইয়ে ডক্টরস সেমিনারে ছিলাম তাই তো আমি চেয়ে ও আমার একমাত্র ভাগনি বললে ভুল হবে আমার মেয়ের বিয়েতে আসতে পারিনি,
!
ওহহহহ,
তাই বুঝি আপনার মেয়ে আপনাকে বকাবকি করে,
!
হা হা হ্যা বাবা ও রেগে ছিলো আমার ওপরে বাট এখন আর নেই,
!
তখন আম্মু এসে বলে,
মামাশ্বশুর ও জামাইয়ের আলাপ আলোচনা হলে কেউ এসে আমার মেয়ে কে বোঝা ও,
কারন মেয়ে তো আমার কিছু খাচ্ছেই না,
!
তখন আমি ও মামা গিয়ে ওর পাশে বসি,
আর ও আমাদের দেখেই মুখ ফিরিয়ে নেয়,
!
আর তখনি আমি গালে হাত দিয়ে পিচ্চি কে খুশি করার কথা ভাবতে বসে যাই,
ভাবতে ভাবতে খেয়াল করে দেখি মামু তার মেয়ে কে আদর করে সুফ খাইয়ে দিচ্ছে ও আমার বৌ ও চুপচাপ গুডগার্লের মতো খেয়ে নিচ্ছে,
!
তখনি মামু মজা করে বলতে শুরু করেন,
!
কে যেন আমাকে ছোটো বেলায় বাবু বলে ডাকতো?
এক গ্লাস দুধের অর্ধেক টা খেয়ে বাকিটা আমাকে খাইয়ে দিতো?
আমার কোলে কোলে পুরো বাংলাদেশ ঘুরে বেরাতো?
আচ্ছা আম্মু তুমিই বলো এতবড় একটা মানুষ কে বাবু বলা যায় হুমমমম,
!
মামুর কথা শুনেই আমার পিচ্চি টা হা হা করে হেসে দেয়,
!
বাহহহহহহহহহ,
মামু তো খুবি মজার মানুষ,
সেকেন্ডের মধ্যেই আমার পিচ্চি টাকে হাসিয়ে ফেললো?
!
তখন আমার পিচ্চি টা মামু কে বলেন,
!
ওই বাবু আমার জন্যে তুমি দুবাই থেকে কি নিয়ে এসেছ?
!
তখন মামু ওকে একটা ট্রলি দেখিয়ে বলেন,
!
ওটার মধ্যে যাকিছু আছে সবি তোমার আম্মু,
!
ওমা তাই নাকি???
!
হুমমমমমম,
!
তা তুমি ব্রেকফাস্ট করেছ মামু?
!
না আম্মু,
!
আচ্ছা চলো তাহলে আমি তোমাদের খাইয়ে দেই,
!
আমাদের?
!
তুমি ও তোমার জামাইয়ের কথা বলছি,
দুজনেই মুখ টা বাংলার পাঁচের মতো করে আছো,
তাই বলছি আমার কাছে আসো আমি তোমাদের খাইয়ে দিচ্ছি,
!
তারপর আমার পিচ্চি বৌ আমাকে ও মামা কে খাইয়ে দেয়,
!
আর তখনি মামুর ফোন বেজে ওঠে,
আর তাই মামু কোনো মতে খেয়ে হসপিটালে চলে যায় এমার্জেন্সি পেশেন্ট দেখার জন্যে,
!
মামু যেতেই আমি পিচ্চি টাকে জড়িয়ে ধরে সরি বলি,
আর আমার পিচ্চি টা আমাকে রহস্যময় হাসি দিয়ে আকাশ পানে চেয়ে থাকে,
!
আর তখনি হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়,
!
কি সুন্দর বৃষ্টি পরছে তাই না?
!
হুমমমমমমমম, খুবি রোমান্টিক ওয়েদার সোনা,
!
শোনো আমি এতো রোমান্টিক ফোমান্টিক বুঝি না,
!
পিচ্চি বৌয়ের কথা শেষ হতে না হতেই মেঘেরডাক শুরু হয়ে যায়,
আর আমার বৌ ও সাথে সাথে ভয় পেয়ে আমাকে ওর বুকে চেপে ধরে,
!
আর আমি ও খুবি শক্ত করে ওকে আমার বুকে চেপে ধরি,
!
এর আগে আমার বৌ টাকে আমার এতো কাছে আগে কখনওই পাই নি,
তাই ওকে আমার এতো কাছে পেয়ে মনে হচ্ছে যেন আমি আমার সমস্ত সুখি পেয়ে গেছি,
আর কোনো চাওয়া পাওয়া নেই আমার,
!
কি হলো চুপ করে আছেন কেন?
!
এমনি সোনা,
কাল রাতে তোমার কষ্ট হয়েছে তাই না?
!
আমার কষ্ট হলে আপনার কি?
!
আর কখনওই এমন সোনা,
আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও,
!
দিবো না যাও আমার থেকে দূরে দূরে থাকো,
!
না আমি কখনওই তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারবোনা সোনা,
!
দেন আমি ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আদর করে ওর গালে গলায় চুমু খেতে থাকি,
!
তখনি ও আমাকে বলে,
!
তুমি রিয়া কে খুবি ভালোবাসো তাই না?
!
আমি যে তোমাকে অনেক ভালোবাসি সেটা কি তুমি আমার চোখে দেখতে পাও না সোনা?
!
চোখের দেখাও তো ভুল হতে পারে তাই না?
!
কেন ভুল হবে?
আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি আর আমি শুধু তোমারি বিশ্বাস করো তুমি আমায়?
!
তারপর আমি ওকে আমার বুকে জড়িয়ে
আমার মনের কথা গুলো সবি ওকে খুলে বলি,
আর ও আমাকে জড়িয়ে কান্না করে দেয় আর আমি ও ওকে আমার বুকে চেপে ধরে কান্না করে দেই,
!
পরিশেষে নিজের কাছে প্রমিছ করি যে আর কখনওই ওই রিয়া নামের ভাইরাস কে আমাদের মধ্যে আসতে দিবো না,
!
তখনি নদী ভাবি দরজায় নক করে বলেন,
!
তোমাদের বর বৌয়ের মান অভিমানের পালা শেষ হলে আমরা কি আসতে পারি,
!
তখন আমি আমার পিচ্চির কপালে চুমু খেয়ে আস্তে করে রুমের বাহিরে চলে যাই,
!
এখন আর আমাদের মাঝে কোনো দূরত্ব নেই,
আমার বৌ আমাকে অনেক ভালোবাসে,
!
এভাবে সুখে শান্ত কেটে যায় তিনটে মাস,
!
হঠাৎ একদিন আমার পিচ্চি বৌ কিচেনে মাথা ঘুরে পরে যায়,
!
তাই তখনি মামু কে ফোন করে আসতে বলি তার মেয়ের চেকআপের জন্য,
!
মামু চেকআপ করে মৃদু মৃদু হাসি দিয়ে আমাকে বলেন,
!
বাবা ইমান গিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসো তো?
!
কেন মামু?
!
আগে আনো তারপরে বলছি?
!
কি হলো বাবু বলছ না কেন?
!
কত্ত বড় সাহস আমাকে নাম ধরে ডাকে?
!
আমার ছেলেকে আমি নাম ধরে ডাকি তো?
!
একটু ধৈর্য্য ধরো,
তারপর আমি বলছি আম্মু,
!
মামু কে মিষ্টি এনে দিতেই মামু গবগবিয়ে মিষ্টি খেয়ে বলেন,
!
আম্মু আমাকে বাবু বলা ছেড়ে নিজের বাবু কে বাবু বলার প্রাকটিস করে দাও কেমন?
!
মামুর কথা শুনেই বাড়িতে খুশির রোল পরে যায়,
!
আর আমার পিচ্চি টা লজ্জায় লাল হয়ে মামু কে বলেন,
!
আমার বাবু তো
বাবুই,
তুমি ও আমার বাবু এতে কোনো নড়চড় হবে না বাবু,
!
পিচ্চির কথা শুনেই সবাই হা হা করে হেসে দেয়,
!
তখন মামু ওকে মজা করে বলেন,
!
এত অপেমান ধম্মে সইবে না আম্মু
হা হা হা😂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here