#তাসের_ঘরে_তুমি_আমি
#পর্ব_১২
#লেখক_আয়াশ
‘বেহায়া মেয়ে, বাড়িঘর ছেড়ে এখানে পড়ে আছিস?’ মিথিলার মামীর কর্কশ আওয়াজে ঘর কেপে উঠল, সাথে মিথিলাও। শান দেখলেও কিছু বলতে পারছে না।
‘মা মা মামী!’
‘চুপ কর হতচ্ছাড়ি। তোর বাপ মাকে খে’য়েছিস এবার আমাদের মান সম্মান ডুবাতেও উঠে পড়ে লেগেছিস?’
‘আহা, শান্ত হও, বাসায় যাই তারপর না হয় বলব।’ মিথিলার মামা একটু শান্ত করার জন্য কথাটা বলল তার মামীকে।
‘তুমি চুপ থাক। তোমার আস্কারাতেই আজ এই অবস্থা।’
শানের মা বাবাও ততসময় চলে এসেছে।
‘দেখুন আপনারা ভুল ভাবছেন। আজ কি হল সেটা তো শুনেছেনই। শানের মা রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাই মিথিলা বাসায় এসেছে।’
শানের বাবা মিথিলার মামীকে বুঝাতে চেষ্টা করল। কিন্তু মনে হয় না কাজ হল তেমন একটা। মিথিলার মামী মিথিলার হাত ধরে জোড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে’ চল তোর সব পাখনা আজ কেটে দিব আমি।’ মিথিলা চোখের জল ফেলছে, যাওয়ার সময় একবার শানের দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে চলে গেলো।
শানের মনে একটু খারাপ লাগলো। মেয়েটা তার জন্যই এত কিছু করল আর বিনিময়ে সে তাকে কিছুই দিতে পারলো না, তার হয়ে একটা কথাও বলতে পারলো না।
কিন্তু এখন শানের মাথায় অন্যকিছু চলছে। নিচের দিকে তাকিয়ে পড়ে থাকা ফোনটা দেখতেই সেটা আবার মাথায় আসলো।
পুলিশ স্টেশনে বসে আছে শান। তার পাশে তার বসও আছে আর পুলিশ অফিসাররা। তাদের সামনে একটা লাশ শোয়ানো আছে। সেদিকেই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে শান।
কিছুক্ষন আগে পু’লিশ তাকে ফোন করে একটা লা’শ পাওয়ার কথা বলেছিল। লাশটা আর কারো নয়, সাব্বিরের!!! তাকে মাথায় অনেক ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে মারা হয়েছে।
খবরটা শুনে শানের মাথায় ৪৪০ ভোল্টের শক লেগেছিল।
‘সাব্বিরকে কে মারবে?’
শানের বসের কথায় শানসহ সব পুলিশ অফিসার তার দিকে তাকালো।
‘না মানে আমি বলছি যে এত সময় তো আমরা সন্দেহ করছিলাম সাব্বিরই পুতুলকে মেরে পালিয়েছে তাহলে?’
শান অন্ধের ভাব করে মাথা নিচু করে আছে। এখন মনে হয় সন্দেহ আবার তার দিকেই গেল। কি থেকে কি হচ্ছে সে কিছুই বুঝতেছে না।
ডিআইজি সাহেব বলল,’শান তুমি টেনশন করো না। আগে লাশের পোস্ট মর্টাম হোক, তারপর না হয় দেখা যাবে।’
‘হুম।’ এই ছোট্ট শব্দটি ছাড়া কিচ্ছু বেড়লো না শানের মুখ দিয়ে।
সেইদিন রাতটা অনেক কষ্টে পার হয়েছে শানের। তার মা বাবা তাকে স্বান্তনা দিয়েছে যে নির্দোষদের উপরওয়ালা কোনো ক্ষতি হতে দিবেন না আর পুতুল নামক কা’লনাগিনী গিয়েছে তো ভালই হয়েছে।
শান স্টুডিওতে কাজটা রাতের বদলে দিনে নিয়েছে। এখন তার লাইভ শো সকালের শুরুতেই টেলিকাস্ট হবে। গতকাল রাতেই তার সাথে এ নিয়ে বসের কথা হয়েছে। সবাই শুধু আর যে শানকে চায়। তাই সকাল বেলাই সে স্টুডিওর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। কাজ থামাবে না শান সে যাই হয়ে যাক না কেনো। কিন্তু যাওয়ার পথে ডিআইজি সাহেবের নির্দেশে পুলিশ স্টেশনে গেল। লাশের পোস্ট মর্টাম নাকি ইতিমধ্যে হয়েছে। আর সাব্বিরকে গতকাল দুপুরের দিকে মারা হয়েছে। একটু আশার আলো দেখলো শান। কারণ তখন তো সে পুলিশ স্টেশনে ছিল। যদিও পুতুলের খুন নিয়ে এখনো মামলা তার উপরই আছে তবুও উটকো একটা ঝামেলা থেকে তো বাচলো।
আরো একটা ইনফরমেশন পেলো শান। আততায়ী বামহাতী ছিল। সেই মোটা ভারী বস্তু দিয়ে বামহাতে সাব্বিরকে প্রহার করা হয়েছে।
শান ভাবতে লাগলো তার চেনাজানা কেউ বামহাতী আছে নাকি। কিন্তু সে নিযে বাদে কাউকেই খুজে পেলো না। যদিও এখন তার ওই অভ্যাস নেই, তবে আগে সে সামান্য কাজেই ঝুলের ভিতর বাম হাত দিয়ে ফেলত। এই নিয়ে পুতুলের সাথে অনেক ঝগড়াও হয়েছে৷ পুতুল তার বামহাত ব্যবহারের স্বভাব বাদ দিয়ে তবে ছেড়েছে।
মাথায় আবারও সেই পুতুলের কথা আসছে! ভাবতেই গা রিরি করে উঠলো শানের৷ না আর সে তার কথা ভাববে না, যে শানকে ঠকিয়ে এসেছে প্রতিনিয়ত।
কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করছে শান। পুতুলের মা বাবাকে আর দেখা যায়নি থানায়। মনে কৌতুহল জাগতেও সেটা কাউকে জিজ্ঞেস করেনি। কিভাবেই করবে! সে তো দুনিয়ার কাছে অন্ধ।
স্টুডিওর কাজ শেষে দুপুরে বাসায় ফিরবে তখনই বাড়ি ঢোকার ঠিক আগ মুহুর্তে মিথিলার মামা ছুটে আসলো।
‘বাবা, আমার ভাগ্নীটাকে বাচাও বাবা। আমার মিথিলাকে বাচাও।’
‘কেন কি হয়েছে মিথিলার আঙ্কেল!! এমন করছেন কেন?’
‘বাবা শান,, মিথিলা,,,,,,,’
চলবে
আপনাদের আজকের প্রশ্ন মিথিলার কি হল?
আসলে একটু ব্যস্ত থাকায় গল্প লেখার সময় করে উঠতে পারছি না৷ সবার কাছে দুঃখিত। সবাই পেজে লাইক ফলো দিয়ে সাথে থাকুন। পরবর্তী পর্ব দ্রুতই দিব।