তুমি একমাত্র আমার অধিকার পর্ব-২০

0
3479

তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার
ছোহা_চৌধুরী
#পর্ব২০(অন্তিম পর্ব)
দেখতে দেখতে সময় কেটে গেল।আমার শুভ্রতার আজকে ৩ বছর হয়েছে।ও তো পুরো ওর পাপার মতোই হয়েছে।আমি ওকে শুভ্রতা বলেই ডাকি।কিন্তু শুভ্র ওকে নিহা বলে ডাকে। আজকে শুভ্রতার জন্মদিন।তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছি।আমি রান্নাবারা একটু কমই পারি।কখনোই চেষ্টা করা হয়নি।শুভ্রের কড়া নিষেধ যেন আমি কিচেনে না যাই।আজকের সব আয়োজন আম্মু আর চাচিমাই করবে।কারন এবার অনেক বড়ো করে অনুষ্ঠান করবো না।শুভ্রতা অনেক বিড় পছন্দ করে না। আজকে শুভ্র ও অফিসে যাবে না।সবাই বাসায়।অয়ন,নয়না,ফুপ্পি,আবির ভাইয়া,অরিন আপু গতকালই চলে এসেছে।সন্ধ্যায় বাকি সবাই আসবে।

____________ ___________

শুভ্র কি করছো কি!আজকে জানো না শুভ্রতার জন্মদিন।কত কাজ বাড়িতে।আর তুমি পাপা হয়ে সব চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুমাচ্ছো।
ওফ পিচ্চি আরেকটু ঘুমাতে দে না প্লিজ।আর তোকে এতো চিন্তা করতে হবে না।সবকিছু সময় মতো হয়ে যাবে।
কি!দেখো তোমাকে কতবার বলেছি যে আমাকে পিচ্চি ডাকবে না।আর তুই করে ডাকার অভ্যাসটাও এখনো যায়নি।ইটস নট ফেয়ার।আর সবকিছুর ব্যবসস্থা কি করে হবে শুনি!
আরে ডাফার তুই সবসময় আমার কাছে পিচ্চিই থাকবি।ওকে।আর তোকে আমি তুই করেই ডাকবো।তোকে তুই করে ডাকার মাঝে ও একটা আলাদা মায়া আছে।বাই দা ওয়ে আমার প্রিন্সেসটা কোথায়?
ও তো ওর দিদুনের কাছে।সকাল সকাল উঠেই বায়না ধরেছে নানুর কাছে যাবে।বাট মা তো রান্না করছে।তাই চাচিমার কাছে দিয়ে আসলাম।
ও তাহলে আপাদত এরুমে আর কেউ আসবে না।
মানে!কি বুঝাতে চাইছো হুহ? আমার অনেক কাজ আছে এখন।
ওকে জাস্ট একটা কিস করে দাও ছেড়ে দিবো প্রমিজ।

_________________ ________________
কি ব্যাপার প্রিন্সেস!তোমার পাপা তোমাকে কত মিস করছে!সবাইকে পেয়ে পাপাকেই ভুলে গেছো। শুভ্র কথাগুলো শুভ্রতাকে বলতেই ও দৌড়িয়ে এসে শুভ্রর কোলে এসে পড়ল।ওর সাথে সাথে আনিশা আসলো।শুভ্র আনিশাকে ও আরেক কোলে বসালো।
(ও আপনাদের তো বলতেই ভুলে গেছি যে অরিন আপু আর আবির ভাইয়ার একটা মেয়ে হয়েছে দুই বছর বয়স।আর অয়ন আর নয়নার একটা ছেলে হয়েছে আদনান ৬ মাস বয়স।)

পাপা পাপা জানো মাম্মাম একটু আগে আমাকে বকেছে আর মেরেছে ও সাথে।।বলে আমি নাকি পচা হয়ে গেছি।তুমি মাম্মাম কে বকে দাও তো।
কি ব্যাপার নিরাপাখি!তুমি নাকি আমার প্রিন্সেসকে বকেছো?
আমি বললাম কি করবো তাহলে?এক ঘন্টা যাবত কর্ণফ্লেক্স নিয়ে ওর পিছন পিছন ঘুরছি।মুখে নেয়ার নাম নেই।
তার জন্য তুমি ওকে মারবা?আমার প্রিন্সেসকে ভুলেও কিছু বলবা না।ও না খেলে আমাকে বলবা।আমি আস্তে আস্তে খাওয়াবো।তবুও বকা দিবে না।আর মার দেয়া তো দুরের কথা।আমার একটা মাত্র প্রিন্সেস ওকে।শুভ্র বললো।
ও তাই নাকি!তুমি প্রশ্রয় দিয়েই ওকে মাথায় তোলেছো।আর তুমি খাওয়াবা মানে!সারাদিন তো অফিসেই থাকো।
আমার কথা শেষ হতে না হতেই নয়না বললো,নিরা তোর কপাল তো কত ভালো।শুভ্র ভাইয়া যতটুকু পারে হেল্প করে।আর অয়ন!আমার তো মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় যে অয়ন কি আসলেই শুভ্র ভাইয়ার কাজিন নাকি!১০০% না হোক ৫০% তো শুভ্র ভাইয়ার মতো হবে!সারাদিন অফিস অফিস করে।আমার তো মাঝে মাঝে অফিসকে আমার সতিন মনে হয়।
অয়ন বার বার নয়নাকে আড় চোখে দেখছে।
নয়নার কথা শুনে আমরা সবাই ফিক হেসে দিলাম।
অরিন আপু বললো,তোদের কপাল ভালো যে আমার ভাইদের মতো মানুষকে লাইফ পার্টনার হিসেবে পেয়েছিস।আর আবির কে দেখ!এক আজব প্রানী।কয়েকদিন পর ওকে জাদুঘরে সাজিয়ে রাখা হবে এজন্য যে সে পৃথিবীর একমাত্র জীব যেকিনা তার বউকে কোনো সাহায্য তো দুরের কথা সময়ই দেয় না।অফিস হচ্ছে ওর ফাস্ট হোম।বিয়ের আগে বলছে আমাকে নাকি কোনো কাজ করতে দিবে না! সবসময় সাহায্য করবে।আর বিয়ের পর!
আবির ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে বলল,ছি!অরিন তুমি এই কথা বলতে পারলে!ফাইন,আমি আজকে থেকে আর অফিসে যাবো না।সারাদিন তোমার সাথে থাকবো।এমনকি পানি খাওয়ার গ্লাসে পানি ঢেলে খায়িয়ে দিবো তোমাকে।আর পারলে তোমার থেকে শাড়ি চুড়ি নিয়ে পড়ে বসে থাকবো কি বলো অয়ন আর শুভ্র! আমি ঠিক বললাম না!
অয়ন হেসে বললো,১০০% ঠিক।আপুর যদি না থাকে আমাকে ফোন দিয়েন।আমি কিনে আপনার বাসায় শাড়ি চুড়ি পৌছে দিবো।
তুই আবার করে থেকে ডেলিভারি ম্যান এর দায়িত্ব নিলি অয়ন?শুভ্র বললো।

_________________ ________________

আচ্ছা শুভ্র আমি আজকে কোন কালার শাড়ি পড়বো?মানে এই ব্লাকটা পড়বো নাকি গোল্ডেন টা!
শুভ্র কিছুক্ষন শাড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো তুমি ব্লাকটা পড়ো।কারন সবাই আজকে গোল্ডের কালার শাড়িই পড়বে।
তো আমি ব্লাক হুয়াইট শার্ট,ব্লাক প্যান্ট, ব্লাট ব্লেজার,ব্লাক ওয়াচ শুভ্রের জন্য বের করলাম।আর আমি ব্লাক শাড়ি পড়ে একদম হালকা মেকাপ করে কিছু জুয়েলারি পড়ে নিলাম।আর শুভ্রতাকে হোয়াইট ফ্রকটা পড়িয়ে সুন্দর করে চুলগুলো ঝুঁটি করে দিলাম।আর সাথে মাথায় ক্রাউনটা পড়িয়ে দিলাম।আমার মাম্মামকে তো আজকে পুরো পরীর মতো লাগছে বলতেই শুভ্রতা হেসে বললো তাই নাকি মাম্মাম!
তখনই শুভ্র এসে বললো,আমার একটা মাত্র প্রিন্সেস তুমি।তোমাকে তো পরীর মতো লাগবেই।যাও তোমার দিদুনকে দেখিয়ে আসো বলতেই শুভ্রতা দৌড় দিলো চাচিমার রুমের দিকে।
তো মিসেস শুভ্র আপনি কি আমাকে মারার প্ল্যান করছেন?
হুয়াট! আমি তোমাকে মারার প্ল্যান করবো কেন?
তাহলে এভাবে কেন সেজেছো!জানো তোমাকে আজকে কেমন দেখাচ্ছে? তোমার এই ঘায়েল লুক আমাকে মারার জন্য যথেষ্ট শুভ্র বুকের বা পাশে হাত দিয়ে বললো।
আমি কিছুটা টিটকারি করে বললাম, তাই নাকি!
হুম।তোমাকে তো ইচ্ছে করছে!!বলে টুপ করে আমাকে কিস করে রেডি হতে চলে গেলো শুভ্র।

___________ ___________

আজকে রাতে শুভ্রতা কোনোভাবেই এ রুমে ঘুমাবে না বায়না ধরেছে।ও নাকি ওর নানুর সাথে ঘুমাবে।কত করে বললাম কিন্তু কে শুনে কার কথা।আর ওকে তো আবার ধমক ও দেয়া যাবে না।তাহলে আবার বাপ-মেয়ে মিলে আমাকে ফ্রাই করবে চুলোই।তাই বাধ্য হয়ে ওকে আম্মুর রুমে দিয়ে আসলাম।

_______________ _________________

আমি এসে ঘুমাতে নিলেই শুভ্র বললো,চলনা আজকে চন্দ্রবিলাশ করি।অনেকদিন ধরে তোকে ঠিকমতো সময় দেয়া হয়না।আমার সেই ছোট পিচ্চি আজকে কত বড়ো হয়ে গেছে।কিন্তু তুই আমার কাছে পিচ্চিই থাকবি।আর কখনো পুরোনো ও হবে না।প্রতিদিন তোর উপর আমি নতুন করে প্রেমে পড়ি।তোকে সারাজীবন আমি নিজের করে রাখবো।কারন #তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার।কখনো নিজেকে আমার থেকে আলাদা করার চিন্তা করবি না।তোকে সারাদিন মিসেস শুভ্র নীল আহমেদ পরিচয়েই বাঁচতে হবে।
আমি ও আর না করে পারলাম না।তাই বারান্দায় গিয়ে দোলনাতে বসে শুভ্রের কাঁধে মাথা রাখলাম।
আমি বললাম, দেখো আজকের চাঁদটা কতো সুন্দর!
শুভ্র হেসে বললো, সুন্দর বাট তোর ধারের কাছে ও না।
জানিস মানুষের জীবনে চাওয়ার শেষ নেই।স্বপ্নের সমাপ্তি নেই।আকুলতার অন্তি নেই। আমার চাওয়া তুই,,স্বপ্ন তুই। আমার সব আকুলতা শুধু তোর মাঝে।আমার জীবন শুধু তোকে ঘিরেই।

———————————–সমাপ্ত —————————————–

বেঁচে থাকুক ওদের ভালোবাসা সারাজীবন।

দেখতে দেখতে গল্পটি শেষ হয়ে গেলো।আমি নতুন লেখিকা।এটা আমার লিখা প্রথম গল্প। তাই গল্পে অনেক কিছুই ভুল ছিল।আশা করি আপনারা ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আর হয়তো বা আমি আপনাদের মন মতো করে গল্পটি শেষ করতে পারিনি।এজন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here