তুমি নামক প্রাপ্তি’ পর্ব-২১

0
1917

#তুমি_নামক_প্রাপ্তি
#part:21
#Suraiya_Aayat

আরু লক্ষ করলো মিনহাজ সাহেব নিঃশব্দে ওনার নিজের রুমে ঢুকে গেলেন , অন্যদিন সকলকে উদ্দেশ্য করে গুড মর্নিং বলে আজকে তাও বলেন নি ৷ এমনিতেই ওনার মুখ দেখে বোঝাই আবশ্যক যে এমন কিছু হয়েছে যার জন্য ওনার মনটা খারাপ ৷

আরু ভাবলো এখন হয়তো ওনাকে বিরক্ত করা ঠিক হবে না , উনাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত নিজেকে সামলানোর জন্য ৷ খানিকটা সময় পর ওনার মুড কিছুটা ঠিক হলে উনার সাথে না হয় কথা বলা যাবে আর তখন কথায় কথায় ওনাকে জিজ্ঞাসাও করা যাবে যে ওনার কি হয়েছে , যদি ওনার একান্তই ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আরু কখনোই উনাকে বেশি ঘেটে জানতে চাইবে না যে আসলে কি হয়েছে ৷

💖

দিনের পর দিন নিজেকে নিহান প্রমান করার জন্য, নিহান হয়ে ফেম তৌরী করার জন্য এই নায়কের অভিনয় করতে করতে রোজ দিনের এই ব্যস্ততা ভরা শুটিংয়ের জীবনযাত্রায হাঁপিয়ে উঠেছে আরিশ ৷ কবে যে সব অভিনয়ের দিন শেষ হবে সেই দিনের অপেক্ষায় আছে আরিশ ৷
ও নিজে স্বাভাবিক মানুষদের মতো স্বচ্ছন্দভাবে আর প্রাণোচ্ছল হয়েই থাকতে ভালোবাসে, অভিনেতাদের জীবনটা ততটাও সহজ নয় যতটা তাদেরকে দেখে মনে হয় ৷ প্রতিনিয়ত কত রং চং মেখে নিজেদের চেহারার পরিবর্তন করে প্রতিনিয়ত অভিনয় করে যেতে হয় , এই জীবনে ক্লান্ত আরিস ৷ অনেকটা দায়ভার সারার মতো করেই কোনরকমে অভিনয়টা করে ৷ এই শুটিং যে ওর জীবনের কতটা অবদান রাখে তা ও কখনোই বলে ব্যাখ্যা করতে পারবে না ৷ অনেকটা ঠেলায় পড়ে শুটিং করে আরিশ ৷ শুটিং শেষে প্রত্যেকদিন রাতে ফেরে আরিশ ৷ রোজ মধ্যরাতের একাকী নির্জনতায় আরুশি আর আরশিয়ানের কথা ভাবে ৷ রোজ ব্যালকনিতে মধ্যরাত অবধি জোছনা বিলাস করে আর ওর পাশের ফাঁকা স্থানে আরু আর আর্শিয়ান কে কল্পনা করে ৷

পাঁচ বছর আগে সেদিন আরিশ আরুর হাত ধরে ছেড়ে চলে এসেছিল ঠিকই কিন্তু আরুর জীবন থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য নয় বরং ইলমাজের মাঝে লুকিয়ে থাকা সত্যতা জানার জন্য ৷
আরিশ জানতো যে আরুর প্রাক্তন ইলমাজ আর আরূর মাঝে আরিশের জন্যই সমস্ত দূরত্ব তৈরি হয়েছিল যার ফলস্বরূপ আরু আরিশকে কখনোই সহ্য করতে পারত না, কিন্তু দিন দিন আরুর ব্যবহারে আরিশ বুঝতে পেরেছিল যে আরুর মনে ঘৃনার কালো মেঘ সরে গিয়ে আরিশের জন্য ভালোবাসার অনুভূতি তৌরি হচ্ছে ৷ আরিশ আরুর ভলোবাসার কথা আরুর মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিল ৷

আরিশ সেদিন ইলমাজের বাসায় গিয়েছিল এটা বলার জন্য যে সে আর যাই হোক আরিশের পক্ষে আরুকে হারানো সম্ভব নই ৷ কিন্তু সেই কথা ইলমাজ এর কান অব্দি পৌঁছানোর পূর্বেই আরিশ মৃন্ময়ীকে দেখলো ৷ পরে ইলমাজের কাছ থেকে জানতে পারলো যে ইলমাজ এখনো আরুকে চাই এবং তার বাসায় মৃন্ময়ী বলে যে মেয়েটা থাকে সে বিগত এক বছর ধরে ইলমাজের দেখাশোনা করার কাজে আছে ৷

আরিশের জানামতে একটা ছেলে খুব বেশিদিন একটা মেয়ের থেকে দূরত্ব বজায় করে থাকতে পারে না তাও আবার মেয়েটি আর ছেলেটি যদি একই বাসায় থাকে ৷ আরিশ নিজেই আরুর এত কাছে থেকে আরুর কাছ থেকে অনেক কষ্টে দূরত্ব বজায় রেখে চলে ৷আর সেখানে মৃন্ময়ী ইলমাজের সাথে দীর্ঘ একটা বছর ধরে রয়েছে ৷ তাছাড়া মৃন্ময়ী যথেষ্ট সুন্দরী একজন মহিলা , তাকে দেখে ইলমাজের আকৃষ্ট না হওয়ার কোনো কারনই আরিস সেদিন দেখিনি ৷ খানিকটা হলেও ইলমাজের উপর সন্দেহ জন্মেছিল আরিশের ৷ সেদিন মৃন্ময়ীর গভীর চাহনি আরিশ ভালোভাবে লক্ষ্য করেছিল ৷ তার চাহনি সাধারণ কোনো চাহনির মতো নয় , প্রিয় মানুষের থেকে কোন হুকুম শোনার জন্যই সেই প্রতিক্ষারত চাহনি ৷ মৃন্ময়ী যেন দীর্ঘ প্রতীক্ষায় রয়েছে ইলমাজের হুকুমের যা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেই তর সার্থকতা ৷ তাছাড়া ইলমাজের সাথে মৃন্ময়ীর কথা বলার ধরণ এবং মৃন্ময়ীর হাবভাব দেখে আরিসের খানিকটা সন্দেহ হয়েছিল ৷
সাধারণত মানুষ যখন কোন মিথ্যা কথা বলে তখন তার বলার সময় তার গলার স্বরটা সামান্য হলেও কম্পিত হয় ৷ ইলমাজের ও সেদিন হয়েছিল ৷ কথায় বলে দশটা মিথ্যার সাথে একটা সত্য মেশালে সে সত্যটা মিথ্যা হয়ে যায় ( হিমু) তেমনি মানুষ যতই একটা মিথ্যাকে পরিষ্কার এবং সাবলীল কন্ঠে বলার চেষ্টা করুক না কেন তার কণ্ঠস্বর একবার হলেও কম্পিত হবে ৷ সেদিন ইলমাজের সেই কথার ভাজে তা স্পষ্ট ছিল তা আরিশ বুঝেছিলো ৷
ইলমাজের সেই মিথ্যা বলার কারন, আরুকে পুনরায় এত বছর পর ফিরে পাওয়ার কারন সম্পর্কে আরিশের মনে যথেষ্ট সন্দেহ ছিলো তাই ঘটনাকে খানিকটা গভীর ভাবে ঘেটে তা বিশ্লেষন করার জন্য আরিশ সেদিন ইলমাজকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলো যে সে আরুকে ইলমাজের কাছে ফিরিয়ে দেবে ৷
যদিও বা আরিশ কখনো আরুকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতেই পারে না , যেখানে আরিশ আরুকে পাওয়ার জন্য ওর সারা জীবন অপেক্ষা করেছে , তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা আরিশ কখনো ভাবেনি ৷ তাছাড়া আরু ওর জীবনসঙ্গী , ওর প্রিয়তমা, ওর ভালোবাসা ৷

ইলমাজের বাসা থেকে একরাশ সন্দেহ নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে এসে দাড়াতেই আরিশের মনে হলো বিষয়টা একটু গভীরভাবেই ভেবে দেখা দরকার তাই ইলমাজ যেই বাসায় ভাড়া থাকে সেই বাসার অন্যদের কাছ থেকে খবর নেবে বলে ভাবলো যদিওবা কেউ আদেও সত্তিটা বলতে চাইবে কি তা নিয়ে আরিশের মনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ৷

খানিকটা এদিক ওদিক তাকাতেই দেখল বাসার নীচের তলায় একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্র মহিলাকে খবরের কাগজ পড়তে দেখতে পেল ৷ তার চোখের চশমাটা নাকের ডগায় এসে পড়েছে আর সেই অবস্থায় ওনার মুখশ্রী দেখে আরিশ খানিকটা হলেও বুঝলো যে মহিলা বিচক্ষন, মিথ্যা বলতে চাইলেও গুছিয়ে বলতে পারবেন না তা ওনার মুখের আভায় স্পষ্ট ৷

আরিশ তার দিকে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল
” আসসালামু ওয়ালাইকুই আন্টি , আপনার সাথে একটু কথা বলতে পারি কি !”

মহিলা বিচক্ষন থেকে বললেন
” কি বলবেন বলুন ৷”

আরিশ আর বেশি হেয়ালি আর কথার মাঝে না গিয়ে সরাসরি বলল
” আন্টি এ বাসায় ভাড়া থাকে ইলমাজকে চেনেন?”

“হ্যাঁ চিনি তো, এই সবে কয়েকদিন হল ছেলেটা তার বউকে নিয়ে এই বাসায় এসেছে ৷ প্রথমে তো আমি ভেবেছিলাম প্রেমিকা ট্রেমিকা হবে , তারপর যখন জোরাজুরি করলাম তখন তখন বলল ওটা তার বউ ৷ প্রেমিকা ভেবে আমি আমার বাসা ভাড়া দিতে চাইনি তারপর জানতে পারলাম ওটা ওর বউ ,তাই ভাড়া দিলাম না হলে এরকম একটা অবিবাহিত পুরুষ আর অবিবাহিত মেয়েকে বাসা ভাড়া দেওয়ার কথা কখনো ভাবতেই পারি না ৷”
খানিকটা মুখ বাকিয়ে বাকিয়ে কথাগুলো বলছিলেন ৷
ওনার কথা শুনে বুঝলেন যে ইলমাজের করা সব কাজের মাঝে ইলমাজের বড়ো কোন একটা উদ্দেশ্য আছে , সেটা আরিশ ভালোই বুঝতে পেরেছিল ৷ তবে সে উদ্দেশ্যটা কি তা জানার জন্যই আরিশ সানার বিয়ের দিন যেদিন আরু আরিশকে তার ভালোবাসা ব্যাক্ত করতে চেয়েছিলো সেদিন দিন রাত্রে আরুকে ইলমাজের মুখোমুখি করেছিল এবং আরুকে কিছু দিনের জন্য একলা ছেড়ে দিয়ে নিজে নিরুদ্দেশের পথ বেছে নেবার চেষ্টায় ছিল ৷
যাতে ইলমাজ এই মনোবৃত্তিতে চলে আসে যে আরিশ সম্পূর্ণরূপে ওদের জীবন থেকে সরে গেছে এবং সে তার কার্যসিদ্ধি করার জন্য এখন একটা স্টেপ নেবে ৷ কিন্তু সেদিন অন্ধকারের পথের বাকে নিজে যাওয়ার পরপর আরিশ একা নির্জন রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটছিলো, তারপরে খানিকটা রাস্তা হেঁটে হেঁটেই যেতে লাগলো ৷ ভেবেছিল অনেকদিন পর একটু ভারাক্রান্ত মন নিয়ে খোলা রাস্তা দিয়া হাঁটবে , জোছনা রাত ছিল সেদিন ,গভীর রাতে আকাশের তারাগুলোকে অভিযোগ জানিয়ে মনের কষ্টটা হালকা করবে ৷তখন হঠাৎ করে নিমেষেই পিছন থেকে এসে কেউ ওর মাথায় বড়ো কাঠের ব্যাট বা লাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলার অবস্থা হয়েছিল ৷ পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখার ক্ষমতা না থাকলেও বেশ কয়েকজনের কণ্ঠস্বর কানে ভেসে আসছিল, তাতে যে কেউ বা কারা একত্রিতভাবে পরিকল্পনা করেই ওর উপরে অক্রমন করেছে ৷ হঠাৎ একটা ভারী কন্ঠস্বর বলে উঠলো
” ওকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দে , পারলে টুকরো টুকরো করে দে যাতে ওর আর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া না যায় ৷ ও হলো এই আরুর আর আমার পথের কাটা, ওর জন্য এই ছেমডিডারে বাগে পাইনা সবসময় চোখে চোখে রাখে নইতো কবেই ওকে বিদেশে চালান করে কোটিপতি হোতাম ৷ অনেক জ্বালিয়েছে এই ছেলে, আবার জোর করে বিয়েও করলো কুত্তার বাচ্চা ৷ এর জন্যই আমার যত সমস্যা ৷ আজকে ও শেষ হলো মানে এখন শুধু টাকা টাকা আর টাকা ৷”

কথাটা আরিশের কান অব্দি পৌঁছাতেই পিছন থেকে দুইজন লোক জোরে লাথি মারতেই আরিশ দূরে ছিটকে মাটিতে পড়ে গেল ৷ ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে , মাথা ফেটে রক্ত গড়াচ্ছে , হাত পায়ের মাংস ছিলে রক্ত বার হচ্ছে , কষ্টে আরিশের চোখের কোনা বেয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো , বাঁচার আশা প্রায় হারিয়েই ফেলেছিলো,,খুব করে মনে পড়ছিলো আরুর কথা, ভাবছিলো তার আরুপাখিকে বুঝি আর 2য় বারের মতো দেখা হলো না ৷
আরমান সাহেবের বাকি কথাগুলো হয়তো আর আরিশের কানে এসে পৌঁছালো না, তার আগেই চোখ বন্ধ করে নিলো ৷ তারপর কি হলো ওর জানা নেই ৷

কথাগুলো ভাবলেই আরিস এর গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে ৷ মানুষের মধ্যে এত হিংস্রতা ওর চোখে ভেসে ওঠতেই পরের ঘটনাগুলো ওর চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠলো , যা যা হয়েছে তাতে ওর জীবনটা রক্ষা করার জন্য আল্লাহ যাদেরকে পাঠিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ আরিশ আর তারাই হল শ্যুটিং-দলের লোকের কয়েকজন আর মিহির ৷

কথাগুলো ভাবছে আর ওর গলা ধরে আসছে , এই কথাগুলো ভাবলেই বারবার ওর চোখে জল চলে আসে , বার বার মনে পড়ে যায় আরু এবং আরশিয়ান এর সাথে না কাটানো সময়গুলোর কথা , প্রিয়জনের এমন বিশ্বাসঘাতকতা ৷ তবে ইলমাজের সত্যতা আরিশ আজও জানতে পারেনি, আরমান সাহেব এর সবটা আলাদা ভাবে বোঝাপড়ার প্রয়োজন তারপর একান্তেই ইলমাজের সাথে , যাতে দ্বিতীয়বার ইলমাজ আর ওদের জীবনে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে আর কখনো ফিরে না আসতে পারে ৷ তবে ইলমাজের উদ্দেশ্যে যে আরমান খানের মতো হিংস্র নই সেটুকু আন্দাজ করতছ পারে আরিশ ৷ তবুও কারনটা কি ?

. কথাগুলো ভাবছে আরিশ, আর ওর হাতে রয়েছে শুটিংয়ের স্ক্রিপ্ট যা কিছুক্ষণ আগে পড়তে পড়তে ওর মনোনিবেশে ব্যাঘাত ঘটলো আর পুরনো সব কথা মনে পড়ে গেল ৷ তখনই দরজায় নক হতেই আরিশ সেথিকে ফিরে তাকাতেই রিংকি বলে উঠলো
” তোমার সাথে কেউ হয়তো দেখা করতে এসেছে আরিশ ৷”

আরিশের ভাবনার ব্যাঘাত ঘটলো ৷
রিঙ্কি কে উদ্দেশ্য করে বলল,,
” আবির এসেছে নাকি ?”

রিঙকি এবার ভ্রু কুঁচকে বললো
” আবির আসলে আমি তোমাকে বলতাম এত সেধে সেধে ৷ ওর কথা বলো না, ওর সাথে ঝগড়া হয়েছে আমার ৷ বাদ দাও এসব, আরে দেখো না একজন মহিলা এসেছে সে নাকি তোমার সাথে দেখা করতে চাই ৷ নাম জিজ্ঞাসা করতেই বলল আফসানা বেগম৷ তুমি কি তাকে চেনো নাকি?”

” হ্যাঁ চিনি তো, উনি তো আমার শাশুড়ি হন ৷”

রিঙ্কি এবার খানিকটা মজার ছলে বলল
” বাহ, শাশুড়ি এসেছে এবার তারমানে জামাই আদর.পাবে ৷”

আরিশ খানিকটা হেসে বলল
” তোমার মেকআপ কমপ্লিট ?”

“হ্যাঁ ওই খানিকটা বাকি আছে ৷ ”

“ওহহ ৷”

“আচ্ছা তুমি ওনার সাথে কথা বলো, আর চা-কফির দরকার হলে একটা কল করে দিও ৷”

” আচ্ছা যাও ৷”

রিংকি চলে যেতেই রিংকির অনুমতি পেয়ে আফসানা বেগম খানিকটা হন্তদন্ত হয়ে আরিসের রুমের ভেতরে ঢুকলেন ৷

#চলবে,,,,,

শুটিং দলের বাকি রহস্য অন্যদিন বলবো, গল্পের সঠিক সময়ে ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here