তৃষ্ণার্থ_প্রেয়সী ০২
#লাবিবা_ওয়াহিদ
.
-“আমি বলেছি না আমাকে স্টেশন অবধি পৌঁছে দিন! আমি আপনাদের সাথে কেন যাবো?”
-“স্টেশনে করে কোথায় যেতে? আর এতো রাতে যে ট্রেন পাবা তার কী গ্যারান্টি? তাই তোমার ভালোর জন্যই বলছি আমাদের সাথে চলো। একা একটা মেয়েকে আমরা মাঝরাস্তায় ফেলে যেতে পারি না।”
-“আশ্চর্য! আমি কী আপনাদের আমাকে নিয়ে ভাবতে বলেছি? আর কোনটা আমার জন্য ভালো আর কোনটা খারাপ সেটা নিশ্চয়ই আমাকে শেখাতে হবে না। আমি যথেষ্ট ম্যাচিউরড!”
ফারিশের রাগে যেন মাথা ফেটে যাচ্ছে। এতক্ষণ ধরে মেয়েটাকে ভালো করে বুঝালো কিন্তু এই মেয়ে মুখে মুখে তর্ক করেই চলেছে। এইসব বাচাল মেয়ে ফারিশের একদম পছন্দ না। ফারিশের মন চাচ্ছে ঠাটিয়ে এক চড় মেরে দিতে কিন্তু সেজানের কারণে পারছে না। সেজান আগেই সুযোগ বুঝে তাকে ধরে রেখেছে। রাত প্রায় ৪টা বেজে গেছে এই মেয়েকে বোঝাতে বোঝাতে। আর কতো সহ্য করা যায়? ফারিশ অনেক রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
-“ওকে ফাইন তোমাকে আমরা স্টেশনে দিয়ে আসবো। তুমি বলেছিলে না তুমি তোমার ভালো, খারাপ বুঝো? তাহলে আমরা তোমায় স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে ঘন্টাখানেক আগেরকার ছেলেগুলোকে স্টেশনে পাঠায় দিবো। একা একা ওদের সাথে কী করবে সেটা তখন নাহয় ভেবে নিও কেমন? তুমি তো যথেষ্ট ম্যাচিউরড তাই না? ড্রাইভার চলুন স্টেশনের দিকে।”
বলেই ফারিশ গাড়িতে উঠে বসলো। সেজান এবং সামিও। ফারিশ সানামের পাশে বসেছে। সানাম চিৎকার করে বলে,
-“এই না! আমি যাবো না। আপনারা যেখানে বলবেন আমি সেখানে যাবো তাও প্লিজ এই রাত করে আমায় স্টেশনে নিয়ে যাবেন না।” প্রচন্ড ঘাবড়ে কথাগুলো বললো সানাম। ফারিশ তার রাগটা ততক্ষণে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। সানাম বেচারী যেমন ভয় পেয়েছে তেমন রেগে মনের মধ্যে ফারিশকে হাজারো গালাগাল করে চলেছে।
-“এর রাগ কী সবসময় নাকের ডগায় থাকে নাকি ভাই? কী বলে ওই ছেলেগুলাকেও আমার সাথে স্টেশনে দিয়ে আসবে। এ তো আচ্ছা অমানুষ! আচ্ছা ওদের নাম কী? সেটাই তো জানা হলো না। এই রাগীটার নাম নিশ্চয়ই রাগ মেরি কাসাম হবে। হুহ! তোর কখনো বিয়ে হবে না হতচ্ছাড়া মিলিয়ে নিস আমার কথা। সুন্দর পোলাপানদের সুন্দর সুন্দর কথা বলতে হয়। এ তো সুন্দর কথার সংজ্ঞাই জানে না। শুধু জানে রাগের সংজ্ঞা, কত প্রকার ও বর্ণনা!”
সেজান তো মুচকি মুচকি হাসছে সানামের এইটুকুতে ভয় পাওয়া দেখে। তবে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক, ফারিশ যা বলেছে তা সে করেই ছাড়তো। কিন্তু সানাম তো আর তার ঘাড়ত্যাড়ামি এখনো উপলব্ধি করেনি। দেখা যাক জল কতদূর অবধি গড়ায়।
-“আচ্ছা আপনাদের নাম কী?”
সানামের প্রশ্নে সামি সামনের সিট থেকে বলে উঠে,
-“আমি সামি।”
-“আমি সেজান।”
ফারিশ চুপ করেই রইলো। সানাম ফারিশের দিকে তাকালে ফারিশ মুখ গোমড়া করে বলে,
-“ফারিশ, সায়মান ফারিশ।” ফারিশের নাম শুনে সানামের কী হলো সে জানে না। তবে নামটা যেন ফারিশের চেহারার সাথে মিলে গেছে।
ভোর ৬ঃ২৪ মিনিটে ওরা ফারিশদের বাসায় পৌঁছায়। ফারিশদের এপার্টমেন্ট ১২ তলা বিশিষ্ট। সানাম গাড়ি থেকে নেমে হা করে নিচ থেকে উপরের দিকে তাকিয়ে এপার্টমেন্টটার ফ্লোর গণনায় ব্যস্ত হয়ে পরলো। যখন তার গোনা শেষ তখনই ফারিশের ডাক পরলো।
-“ভেতরে আসবা নাকি খাম্বার মতো দাঁড়ায় থাকবা!”
-“আমি মোটেও খাম্বা না।”সানাম গাল ফুলিয়ে বলে। পরক্ষণে আবারও বলে উঠে,
-“আপনার বাসা কতো ফ্লোর?”
-“৮ম!”
মুহূর্তেই সানাম চোখ বড়ো বড়ো করে বলে,
-“এতো উপরে আমার সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে? হায় আল্লাহ!”
-“এই তুমি এতো পকপক করো কেন? সিঁড়ি বেয়ে কে উঠতে বলেছে তোমায়? লিফট আছে, লিফটে করে যাব!”
-“না আমি যাবো না!”
-“কেন?” অবাক হয়ে বললো সেজান। সানাম মুখটা কাচুমাচু করে বলে,
-“আমার মাথা ঘুরায়।” সানামের কথায় তিন বন্ধু হাসবে নাকি কাঁদবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। কোন পাগলির পাল্লায় পরলো এরা? ফারিশ কিছু হবে না বলে আসতে বললো কিন্তু না, সানাম উঠবেই না। শেষে ফারিশ সানামকে জোর করে টেনে নিয়ে লিফটে ঢুকলো। সামি এবং সেজান লিফটের বাইরে থেকে চেঁচিয়ে বলে,
-“কান্ট্রোল ইওরসেল্ফ ব্রো!”
সানাম বারংবার ফারিশের হাত থেকে নিজের হাত ছুটানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই সফল হচ্ছে না। এই ছুটাছুটিতে কখন ৮ম ফ্লোরে চলে আসলো সানাম খেয়ালই করেনি। ৮ম ফ্লোর আসতেই ফারিশ সানামের হাত ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো। সানামও তার ব্যাগ হাতে নিয়ে ফারিশের পিছু নিলো। সানাম অবাক হয়ে বলে,
-“৮ তলায় কি করে এলাম? আমি তো টেরই পাইনি।”
-“বেশি বকরবকর করলে এমনই হবে। এখন শুনো আমার বাসায় গিয়ে কী বলবা!”
-“কী বলবো মানে? আমি কী আপনার বাসায় থাকতে এসেছি নাকি?”
ফারিশ রাগে তার নিজের মাথার চুল টেনে ধরলো৷ অতঃপর নিজেকে শান্ত করে বলে,
-“হ্যাঁ, থাকবা!”
-“কখনোই না! আপনি ভাবলেন কি করে আমি ফ্রিতে আপনার বাসায় থাকবো?”
-“তো ঠিক আছে ভাড়া দিয়েই থেকো। তবে হ্যাঁ ভুলেও আমার বাসায় এই ভাড়ার কথা বলবা না!”
-“ঠিক আছে বলবো না। আমাকে টিউশনি খুঁজে দিলেই আমি আপনার ভাড়া মিটিয়ে দিবো।”
-“আগে বলো তুমি কোন ক্লাস?”
-“অনার্স প্রথম বর্ষের অর্ধেক পড়ে আর পড়তে পারিনি টাকার অভাবে।” মাথা নিচু করেই বললো সানাম।
-“তুমি বলেছিলে না তুমি এতিমখানায় বড় হয়েছো? তাহলে সেখানে কেন থাকো না?”
-“১৮ বছর পর্যন্তই থাকা যায়। এরপর নিজেদের পথ নিজেদেরই চলতে হয়।(ম্লান হেসে) এতদিন একটা বস্তিতে একটা ঘর ভাড়া করে থাকতাম কিন্তু মালিকের বাজে দৃষ্টির কারণে সেই বাসাটা আমার ছাড়তে হয়। টিউশনিও ফুরিয়ে যায় তাই বান্ধুবীর বাসায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাসাও ঠিক করতাম সাথে দু’একটা টিউশনিও খুঁজে নিতাম। এই আর কী।”
সানামের কথাতে ফারিশ ভিষণ ব্যথিত হলো। যার বাবা-মা নেই তার পৃথিবী শূন্য, ফাঁকা। একাই তার জীবনের বাকি রাস্তাটুকু চলতে হয়। ফারিশ এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
-“ঠিক আছে আমি তোমাকে টিউশনিও খুঁজে দিবো তবে এক শর্তে!”
-“কীসের শর্ত?”
ফারিশ সবটা সুন্দরভাবে ভেঙ্গে বললো। সব শুনে সানাম অমত জানিয়ে বলে,
-“কখনোই না। আমি অন্যের দয়ায় চলা একদম পছন্দ করি না! আমার নিজেরও আত্মসম্মান আছে। এতিম বলে আত্মসম্মান খুইয়ে যার-তার ঘাড়ে বসে খাবো এমন মেয়ে আমি নই!”
-“তাহলে এতিমখানায় কীভাবে ছিলে? নিজের উপার্জনে? দেখো আমি তোমার ভালোর জন্যই বলছি। নিজের যদি ক্যারিয়ার গড়তে চাও তবে অবশ্যই তোমার পড়াশোনার জরুরি। পড়াশোনা শেষ করো অতঃপর তোমার পিছে আমাদের যাবতীয় খরচ পরিশোধ করে দিও!”
সানাম কিছু বললো না। চুপ করে রইলো সে, আসলেই যদি পড়াশোনা করতে না পারে তাহলে যাবতীয় খরচ মেটাবে কী করে? নাহ জীবনযুদ্ধের মাঝপথে থেমে গেলে হবে না। তাকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে, অনেক দূর। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে সানাম ফারিশের প্রস্তাবে রাজি হলো। ফারিশ সানামের সম্মতি পেতেই তার ফ্লাটের সামনে এসে কলিংবেল বাজালো। দরজা খুলতে সর্বোচ্চ ৫-৬ সেকেন্ড লাগলো৷ এতো জলদি দরজা খোলায় সানাম কিছুটা বিস্মিত হলো। এতো সকালে এতো জলদি দরজা খুললে অবাক হওয়ারই কথা। ইকরাম ফরিদ ফারিশের পাশের মেয়েটাকে দেখে মুচকি হাসি দিলো। সানাম ভাবলো উনি ফারিশের বাবা, তাই সালাম দিলো। ইকরাম ফরিদ সালামের উত্তর নিয়ে ভেতরে আসতে বললেন। সানাম ফারিশের দিকে চাইতেই ফারিশ চোখ দিয়ে ইশারা করলো ভেতরে যেতে। সানাম চোখ নামিয়ে বাসায় প্রবেশ করলো আর পুরো লিভিংটায় চোখ বুলিয়ে নিলো। সানাম প্রবেশ করতেই ফারিশও প্রবেশ করলো আর দরজা লাগিয়ে দেয়। ফারিশ এবং ইকরাম একসাথে কথা বলতে বলতে আসছে।
-“কী সব বুঝিয়ে দিয়েছিস তো?”
-“হ্যাঁ বাবা। তুমি চিন্তা করিও না। এখন তুমি বলো তোমার ফজরুল বন্ধুকে সবটা বুঝিয়ে দিয়েছো?”
-“হ্যাঁ বুঝিয়েছি। সে ৯টা, ১০টা নাগাদ বাসায় আসবে।”
-“আচ্ছা ঠিক আছে।”
তখনই ফারিশের মা অন্তরা খোপা বাঁধতে বাঁধতে রুম থেকে বের হচ্ছে এবং বলছে,
-“এই সকালে কে এসেছে গো?” বলে সামনে তাকাতেই দেখলো একটা বোরকা পরিহিত মেয়ে। মেয়েটাকে যে চিনতে পারেনি তা অন্তরার ভাব-ভঙ্গিতেই বোঝা যাচ্ছে। অতঃপর অস্ফুট সুরে বলে,
-“এই মেয়ে কে গো? চিনি বলে তো মনে হয় না!”
ফারিশ কিছু বলার আগেই ইকরাম ফরিদ বলে উঠলেন,
-“আরে আমার বন্ধু ফজরুলের কথা মনে আছে? ওইযে কলেজ টিচার! ওরই ছাত্রী এই মেয়েটি। নাম সানাম। এতিমখানায় বড় হয়েছে। থাকার জায়গা নেই বিধায় মেয়েটাকে আমার কাছে পাঠালো। ফারিশই তো সবে নিয়ে আসলো।”
ইকরাম ফরিদের কথা শুনে অন্তরার সানামের প্রতি বড্ড মায়া হলো। অন্তরা বরারবরই নরম মনের মানুষ। অল্পতেই তিনি আবেগী হয়ে যান। তবে এবারের বিষয়টা অল্প নয়, অনেক বড়োকিছু। অন্তরা এগিয়ে এসে আগে ফারিশকে হুকুম করলো,
-“ফারিশ। যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। তোর বাবার ডাকে তো মনে হয় ঘুমাতে পারিসনি। যা ফ্রেশ হয়ে একটু ঘুমিয়ে নে ভালো লাগবে!”
-“ঠিক আছে মা।” বলেই সানামের দিকে তাকালো। সানাম তারই দিকে তাকিয়ে আছে। সানামের চোখে অস্বস্তি ভাব স্পষ্ট। ফারিশ চোখ দিয়ে আশ্বাস দিলো কিছু হবে না।
মায়ের কথামতো ফারিশ তার গায়ের কোর্ট খুলতে খুলতে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। ইকরাম ফরিদ সানামের অস্বস্তির বিষয়টা কিছুটা আন্দাজ করতেই নিজের ঘরে চলে গেলো। ইকরাম ফরিদ যাওয়ার আগে বলে যায় অন্তরা যেন সানামের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। অন্তরা সম্মতি জানিয়ে সানামকে নিয়ে তার গেস্টরুমে নিয়ে যায়। সানাম এতো সুন্দর গোছানো ঘর থেকে আনন্দিত হলো। অন্তরা মুচকি হেসে বলে,
-“এখন থেকে তুমি এই ঘরে থাকবে, বুঝলে? এখন বোরকা খুলে ফ্রেশ হয়ে নাও, আরাম লাগবে। আর আমাকে আন্টি বলে ডাকতে পারো। তোমার নামটা কিন্তু বেশ সুন্দর।”
-“ধন্যবাদ আন্টি।” বলেই সানাম নিজের খিমারের উপরের অংশটা খুলে ফেললো। অন্তরা কিছু খাবারের জন্য রুম থেকে চলে গিয়েছে। সানাম বোরকা খুলে ওয়াশরুমে গিয়ে হাত মুখ ধুঁয়ে নেয়। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে নিজের মাঝারো সাইজের কাপড়ের ব্যাগটি খুলে গামছা নিয়ে হাত, মুখ মুছে নেয়। শেষে গামছা মেলে দেয়ার জন্য চারপাশে তাকাতেই দেখলো কর্ণারে একটা ছোট বারান্দা আছে। সানাম গিয়ে সেই বারান্দাতে গামছা মেলে দেয়। অতঃপর নিজের গায়ের ওড়না ঠিক করে রুমে ফিরে আসে। বেশ গোছানো রুমটা। একটা খাট, কাপড় রাখার র্যাক, ডেসিংটেবিল আর একটা চেয়ার। এরচেয়ে বেশি আশাও করে না সে। যা পেয়েছে তাতেই আলহামদুলিল্লাহ। রুম পর্যবেক্ষণ করার মাঝেই অন্তরা কিছু গরম খাবার নিয়ে হাজির হয়। বিছানায় একটা পাটি বিছিয়ে সেখানে খাবার রাখতে রাখতে বলে,
-“নাও এগুলা ফিনিশ করো, না খেয়ে তো মুখটা শুকিয়ে গেছে।”
-“আরে না আন্টি তেমন কিছু না। আর আপনার খাবারের জন্য ধন্যবাদ আন্টি!”
-“এই সানাম, কথায় কথায় এতো ধন্যবাদ দিচ্ছো কেন? এখন থেকে আমরা তোমার আপন মানুষ বুঝলে? তা পড়াশোনা করেছো কতোদূর?”
-“জ্বী, অনার্স ১ম সেমিস্টারের অর্ধেক পড়ে আর পড়া সম্ভব হয়নি!”
-“আগে না পড়তে পারলেও এখন পড়বে। চিন্তা করো না, আজকের দিনটা রেস্ট করো কাল ফারিশকে দিয়ে পাঠাবো তোমায়। এখন তো এডমিশন চলছে বিভিন্ন জায়গায়।”
-“কিন্তু আন্টি, আসলে আমার কাছে পড়ার মতো এতো টাকা নেই!” খুবই নিচুস্বরে বললো সানাম।
-“তোমাকে টাকার চিন্তা করতে হবে না, আমি সেনিটেন ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। তাই এসব বিষয় আমি বুঝে নিবো। তুমি শুধু তোমার জরুরি কাগজপত্র আমায় দিও কেমন? এখন খাওয়া শেষ করে ঘুমাও। চোখের নিচে তো ডার্কসার্কেল বসে আছে।”
সানাম চুপ করেই রইলো। কখনোই কারো প্রতি এমন আপন আপন অনুভূতিটা আসেনি সানামের। কিন্তু কিছু সময়ের ব্যবধানে তাদের পরিবারটাকে সানামের বড্ড আপন লাগছে। সানামের ভাবনার মাঝেই অন্তরার ডাক পরলো,
-“অন্ত! কইরে তুই? মুভ মলমডা পাইতাসি না, খুইঁজা দে তো!”
-“আসছি আম্মা।(চেঁচিয়ে) সানাম, তুমি খাবারগুলো খাও কেমন? আমার মা ডাকছে। বুঝোই বৃদ্ধ মানুষ কখন কী হারিয়ে ফেলে বোঝা মুশকিল। আর শুনো খাওয়া শেষ হলে ওই চেয়ারের উপরে প্লেটগুলো রেখে দিও, আমি সময়মতো এসে নিয়ে যাবো কেমন?”
অন্তরার মায়ের আবার ডাক পরতেই উনি ছুটে বেরিয়ে পরলেন। সানাম খাবার শেষ হলে, প্লেটগুলো নিয়ে বাইরে গিয়ে খুঁজে খুঁজে কিচেন বের করে সেখানে রেখে আসলো। নিজের ঘরে যাওয়ার সময় একটা ঘরে তার নজর গেলো। ভেতরে তাকাতেই দেখলো ফারিশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সানাম বুঝলো এটা ফারিশের ঘর তাই সে এক মুহূর্ত দেরী করে নিজের ঘরে চলে গেলো।
~চলবে।