#তোর_অপেক্ষায়
#সামান্তা_সিমি
#পর্ব_১৩
“নিশি রাইতে চান্দের আলো ঘরে ঢুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে।”
শুরু হয়ে গেল ইমন ভাইয়ার বেসুরে গলার গান।এত মিষ্টি একটা গানের বারোটা না বাজিয়ে ছাড়লো না সে।ভাইয়ার গান শুনে মনে হলো যেন ঝিঁঝি পোকারাও তাঁদের ডাক থামিয়ে থম মেরে আছে।পরের লাইন গাইতে গেলেই দুর্জয় ভাইয়া ইমন ভাইয়ার পিঠে দুম করে এক কিল বসিয়ে দিয়ে বললেন,
‘ আর একটা শব্দ করলে তোকে আমি হাতপা বেঁধে খালে ফেলে আসবো।ষাড়ের মত চিল্লিয়ে পরিবেশ কেনো নষ্ট করছিস?’
গানের মাঝপথে বাঁধা পেয়ে ইমন ভাইয়া দুঃখী দুঃখী গলায় বলল,
‘ আমি তো পরিবেশ অনুযায়ী গান গাইছিরে দুর্জয়।চাঁদের আলোয় বসে চান্দের গান।ভাব একবার।কিন্তু আফসোস সেটা বোঝার মত তোদের মন এবং মানসিকতা কেনোটাই নেই।’
এমন সময় খালামণি চলে এলেন নাস্তা নিয়ে। সবার জন্য ছোট ছোট বাটিতে সর্ষে তেল দিয়ে ঝাল করে চানাচুর মুড়ি মাখানো।চাঁদের আলোয় বসে সবার সাথে আড্ডা দিতে দিতে মুড়ি খাওয়া এ যেন এক নতুন অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত হচ্ছি আমি।এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে আমার জীবনে কোনো দুঃখ কষ্টের ছিটেফোঁটাও নেই।চারদিকে কত আনন্দ।
জীবন কত অদ্ভুত।মাঝেমাঝে মন খারাপের পাল্লা এতই ভারী হয়ে যায় মনে হয় এর চেয়ে মৃত্যুই ভালো কিন্তু আবার ছোট ছোট কিছু মুহূর্ত এক ছটাক সুখ নিয়ে আসে তখন শুধু বাঁচতেই ইচ্ছে করে।বেঁচে থাকার আনন্দ বোধ হয় এই সুখে ভরা অল্প মুহূর্তগুলোতেই।কষ্ট তো সবার জীবনেই থাকে।
খাওয়ার একপর্যায়ে ইমন ভাইয়া হঠাৎ বলে উঠলেন,
‘ আমাকে তোরা গান গাইতে দিলি না তাহলে এখন তোরা কেউ গা।আমি গাইলে পরিবেশ নষ্ট হয় তোরা গেয়ে দেখিয়ে দে।কিরে দুর্জয় ধর একটা গান।’
এই কথায় আপুরা সবাই কলরব শুরু করল।জেরিন আপুর উৎসাহই যেন বেশি।যাক এটা দেখে ভালো লাগছে যে দুর্জয় ভাইয়ার উপর আপুর আর রাগ নেই।কিন্তু মিস্টার দুর্জয় কি গান গাইবে?
আড়চোখে উনার দিকে তাকিয়ে দেখি চোখেমুখে অসম্ভব বিরক্তি। আপুরা উনাকে খুঁচিয়ে চলেছে গান ধরার জন্য। আপুরা কি বুঝতে পারছে না ওরা ভুল মানুষকে রিকোয়েস্ট করছে। উনি গান গাইবে এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না।
‘ ঠিক আছে গান না গাইলে অন্যকিছু কর।কবিতা বল।শুনেছি তুই স্কুলে থাকতে অনেক ভালো আবৃত্তি করতে পারতি।আমাদেরকেও শোনা ভাই!’
এবার যেন দুর্জয় ভাইয়ার বিরক্তিভাব কেটে গেল।
উনার চেহারার ভঙ্গিমা দেখে বোঝা যাচ্ছে গান গাওয়া নিয়ে তাঁর আগ্রহ কম কিন্তু কবিতাতে ভালো পারদর্শী।
অহনা আপু উৎসাহ নিয়ে বলল,
‘ ঠিক বলেছো ইমন ভাইয়া।ভাই স্কুলে আবৃত্তির জন্য প্রাইজও পেয়েছিল অনেক।প্লিজ ভাই আমাদের রিকোয়েস্ট টা রাখ।তোমার পছন্দমতো একটা কবিতা বলো।’
দুর্জয় ভাইয়া এবার গা ঝাড়া দিয়ে সোজা হয়ে বসে বললেন,
‘ ওকে ওকে।রাখব রিকোয়েস্ট। ভাবতে দে আমায়।’
উনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে হঠাৎ আকাশের দিকে মুখ করে বলে উঠলেন,
“সখী ভাবনা কাহারে বলে
সখী যাতনা কাহারে বলে
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ভালোবাসা
ভালোবাসা
সখী ভালোবাসা করে কয়!সেকি কেবলই যাতনাময়
সেকি কেবলই চোখের জল?সেকি কেবলই দুঃখের শ্বাস?
লোকে তবে করে কি সুখেরই তরে এমন দুঃখের আশ?
আমার চোখে তো সকলই শোভন
সকলই নবীন,সকলই বিমল,সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন,
বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল-সকলই আমার মতো।
তারা কেবলই হাসে,কেবলই গায়,হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়-
না জানে বেদন,না জানে রোদন,না জানে সাধের যাতনা যত।”
এটুকু বলে থামলেন দুর্জয় ভাইয়া।সবাই চুপচাপ। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি উনার দিকে। উনার কন্ঠের মাধুর্য যেন গ্রাস করে ফেলেছে। আজ মনে হচ্ছে উনার মত এমন মধুর কন্ঠ আর কখনো শুনিনি।রবীন্দ্রনাথের এই কবিতাটিও যেন উনার আবৃত্তিতে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।কানে এখনো কবিতার লাইনগুলোর রেশ লেগে আছে।
জোছনামাখা এমন চমৎকার একটা পরিবেশে দুর্জয় ভাইয়ার মুখের কবিতা সত্যিই আমাকে মোহিত করে ফেলেছে।বাকিদেরও একই অবস্থা। উর্ধ্বশ্বাসে ওরা সবাই দুর্জয় ভাইয়ার প্রশংসা করে চলেছে।এতকিছুর ভিড়েও খেয়াল করলাম উনার অপলক দৃষ্টি আমার দিকে।হঠাৎ কেনো জানি ভীষণ লজ্জা লাগছে।মাথা নিচু করে ফেললাম। ভাবছি উনাকে যদি কখনো জিজ্ঞেস করতে পারতাম আপনার ওই চোখ দ্বারা কি বুঝাতে চান আমাকে?আফসোস কোনোদিনও এই প্রশ্ন আমি উনাকে করতে পারবো না।
ইমন ভাইয়া খুকখুক করে কেশে দুর্জয় ভাইয়ার পিঠে চাপড় মেরে বললেন,
‘ দুর্জয় ব্রো তা আপনার সখীর সাথে কবে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন?পরিচয় না হোক অন্তত ছবি তো দেখাতেই পারেন হু?’
দুর্জয় ভাইয়া হাসলেন।ইমন ভাইয়ার মাথার চুল ইচ্ছেমতো অগোছালো করে দিয়ে বললেন,
‘ অপেক্ষা কর।’
.
রাতে ডিনার শেষে ঘুমাতে যাওয়ার সময় মামা এসে বলে গেলেন কাল নাকি আমাদের মেলায় নিয়ে যাবেন।পাশের গ্রামে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে প্রতিবছর এইসময়ে মেলা বসে। মেলার কথা শুনতেই আমার খুশি উপচে পড়ার মতো।গ্রাম্যমেলা সম্পর্কে এতদিন শুধু বইয়ে পড়ে এসেছি কখনো স্বচক্ষে দেখা হয়নি।আমি এখনই কল্পনায় দেখতে পাচ্ছি কালকের দিনটাও আজকের মতো নিঃসন্দেহে খুব মজায় কাটবে।তবে আজকের দিনটা আমার মনে গেঁথে থাকবে আজীবন।বিশেষ করে সবাই মিলে চন্দ্রবিলাস করার সময়টুকু।এরপর থেকে যতদিন চাঁদের জোছনা দেখব আজকের সন্ধ্যার কথা বারবার মনে পড়বে।
___________________________
রিকশা থেকে নামতেই চোখে পড়ল রাস্তার পাশে বিরাট মাঠ জুড়ে মেলা বসেছে।সেখানে লোকে-লোকারণ্য।চারদিকে অনবরত কথা বলা এবং চিৎকার চেঁচামেচির গুঞ্জন।কেমন যেন অগোছালো পরিবেশ। তবে আমার মনে আনন্দ টগবগ করছে।অবশেষে মেলাতে এসেই গেলাম।
মেলার ভেতরে ঢোকার পথে বিভিন্ন খাবারের দোকান।প্রত্যেকটা দোকানে মোটামুটি বেশ ভিড়।আমরা মেয়েদের গ্রুপটা খাওয়ার দোকান এড়িয়ে সোজা এগিয়ে চললাম।পেছনে মামা,ইমন ভাইয়া এবং দুর্জয় ভাইয়া।ভেতরে দোকানগুলো সব একে অপরের সাথে হিজিবিজি হয়ে আছে।মাঝখানের জায়গা ফাঁকা।সেখানেই সবাই ঘুরে ঘুরে দোকান দেখছে।কেউ কেউ আবার দোকানির সাথে জিনিসপত্র নিয়ে কঠোরভাবে দামাদামি চালিয়ে যাচ্ছে।ভিড় ঠেলে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে চললাম।
পেছন থেকে মামা বললেন,
‘ মেয়েরা সবাই হাত ধরাধরি করে থাকো।এখানে হারিয়ে গেলে কিন্তু খুঁজে পেতে মুশকিল হবে।কিছু কিনতে মন চাইলে বলবে আমরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করব।’
আমরা সমস্বরে হ্যাঁ বলে দিলাম।ইমন ভাইয়া হাসতে হাসতে বলল,
‘ এই কাজের মেয়েরা সব সাবধানে থাক।চারজনের মধ্যে একজনও যদি হারিয়ে যায় তো বাড়ি পরিষ্কারের কাজে লোক কম পড়বে।সো নিজ নিজ দায়িত্বে সবাই সেইফ থাকার চেষ্টা করো।’
আমি এবং আপুরা প্রসাধন সামগ্রীর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কসমেটিকস দেখতে লাগলাম।কেনার মত তেমন কোনো জিনিস চোখে পড়ে না।সবই সাধারণ দেখতে।তবে চুড়িগুলো খুব সুন্দর।
আমার পাশে জেরিন আপু দাঁড়িয়ে কানের দুল দেখছিল।হঠাৎ কানে ফিসফিস করে বলল,
‘ পূর্ণী চলো ওই দোকানটাতে যাই।ওটায় অনেক সুন্দর পার্স ব্যাগ দেখা যাচ্ছে।আমি একটা কিনব।সুহানা আর অহনা আপু এটাতে দেখুক।এটাতে তো তেমন ভালো কিছু নেই।’
আমি ঘাড় ফিরিয়ে ভাইয়াদের দিকে তাকালাম।উনারা আমাদের থেকে কিছুটা দূরে একসাথে কথা বলছেন।জেরিন আপুকে বললাম,
‘ মামা তো বলেছে যেখানে যাব উনাদের যেন আগে বলে যাই।’
‘ আরে সমস্যা হবে না।আমরা তো বাইরে কোথাও যাচ্ছি না।জিনিসপত্র গুলো দেখে আবার চলে আসব।’
‘ আচ্ছা আপুদেরকে বলে যাই।’
‘ বলতে হবে না।আমরা বেশি লেট করব না।’
জেরিন আপুর কথায় সায় দিয়ে ভীড় ঠেলে এগিয়ে চললাম কাঙ্ক্ষিত দোকানের দিকে।এই দোকানে বিভিন্ন ডিজাইনের মেয়েদের ব্যাগ।দেখতে গর্জিয়াস না হলেও এগুলোর গায়ে সুতার কাজ সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।একটা ব্যাগ নাড়াচাড়া করতে করতে বললাম,
‘ কোনটা কিনবে আপু? ‘
‘ আমি..কোনটা..আচ্ছা তুমি পছন্দ করে দাও তো। দেখি তোমার পছন্দ কেমন হয়!’
আমি হাসিমুখে সব ব্যাগ উল্টেপাল্টে দেখতে লাগলাম।এখানে ডিজাইনের সাথে বিভিন্ন কালারও আছে।অনেক খোঁজাখুঁজির পর লাল রঙের একটা ব্যাগে চোখ আটকে গেল।ব্যাগের চেইন খুলতে খুলতে আপুকে বললাম,
‘ এটা কিন্তু দারুণ।উজ্জ্বল কালার।দেখো এটা।’
পাশ থেকে জেরিন আপুর কোনো সাড়া না পেয়ে তাকিয়ে দেখি আপু নেই। ব্যাগ ফেলে রেখে পেছনে ফিরলাম।আপু নেই মানে নেই।আশেপাশে অচেনা মানুষ গিজগিজ করছে।কেউ কারো দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।এবার আমার চেহারায় কালো ছায়া নেমে আসলো।একটু আগেই তো আপু এখানে ছিল। হায় আল্লাহ্ আপুকে যদি না পাই তাহলে মামা তো আমাকে বকতে বকতে শেষ করে ফেলবে।মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলাম যেখানে আপুরা এবং ভাইয়ারা দাঁড়িয়ে ছিল।কিন্তু কই ওরা সব?কাউকেই তো নজরে আসছে না।আমি কি রাস্তা ভুলে গেলাম নাকি?
বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর মনে সন্দেহ আসলো আসলে জেরিন আপু হারিয়ে যায়নি।হারিয়েছি আমি।এবার যেন বুক ভেঙে কান্না নেমে আসলো।আমার ফোনও তো সাথে নেই।ওটা সুহানা আপুর ব্যাগে রয়ে গেছে।একটা দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে আমি অস্থির চোখে চারদিকে তাকাতে লাগলাম যদি চেনামুখ গুলো দেখা যায়।চেনামুখ দূরে থাক কারো ছায়াও তো নেই।শুকনো মুখে আশেপাশের দোকানগুলোতে ঘুরতে লাগলাম।এভাবে প্রায় দশমিনিট কেটে গেল কিন্তু কারো দেখা পেলাম না।আমি কি আজ বাড়ি ফিরতে পারব না?চারদিকে সবাই অজানা।কারো সাথে কথা বলার সাহসও পাচ্ছি না।ঘুরতে ঘুরতে একজায়গায় এসে থামলাম।বহু কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছি এতক্ষণ। এবার না পেরে কেঁদে দিলাম।এমন সময়,
‘ পূর্ণতা?’
পেছন থেকে পরিচিত ডাক শুনতে পেয়ে চমকে উঠলাম।তাকিয়ে দেখি দুর্জয় ভাইয়া।আমার ছোট্ট প্রাণটা যেন নতুন করে জীবিত হয়ে উঠল।কান্না সামলে অস্ফুটস্বরে বললাম,
‘ ভাইয়া…!’
কিন্তু দুর্জয় ভাইয়া গলা ফাটিয়ে ধমক দিয়ে উঠলেন,
‘ থাপ্পড় চিনিস বেয়াদপ?একা একা ঘুরে বেড়ানোর সাহস কে দিয়েছে তোকে?এদিকে আমরা খুঁজে খুঁজে পাগল হয়ে যাচ্ছি আর তুই?আমার অবস্থাটা কি হয়েছিল ভাবতে পারছিস একবার?’
ধমক শুনে আমার চোখের জল আর সামলাতে পারলাম না।উনার মুখের দিকে তাকাতে দেখলাম ফর্সা চেহারায় লাল আভা।চোখ দুটো লালচে।মাথার চুলগুলো এলোমেলো।যদি এই জায়গাটা মেলা না হত তাহলে সত্যি সত্যি বোধ হয় উনি আমাকে চড় মেরে বসতেন।
আমতাআমতা করে বললাম,
‘ আ..আমি তো জেরিন আপুর সাথে একটা দোকানে ঢুকেছিলাম।হঠাৎ দেখি পাশে আপু নেই।ভেবেছি আপু হারিয় গেছে কোথাও।ক..কিন্তু পরে দেখলাম যে আমিই আপনাদের কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না।’
দুর্জয় ভাইয়ার চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল।একহাতে নিজের চুল খামচে ধরে কিছুক্ষণ জ্বলন্ত চোখে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলেন।
আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো?জেরিন আপু কোথায়?সে ঠিক আছে তো?’
দুর্জয় ভাইয়া আমার দিকে আগুনের ফুলকির মত চাহনি দিয়ে বলে উঠলেন,
‘সে তো ঠিকই আছে তবে তোকে আমি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখছি জেরিন থেকে তুই একশো হাত দূরে থাকবি।মেয়েটা যেন তোর আশেপাশে না থাকে আর তোকেও যেন জেরিনের আশেপাশে না দেখি।তোর নিজের বোকামির কারণে তোর যদি কোনো ক্ষতি হয় বিলিভ মি আমি তোকে জানে মেরে দেব।কথাটা যেন মাথায় থাকে!’
চলবে…
[প্রতিদিন গল্প দিতে পারছি না তারজন্য দুঃখিত ]