#তোর_অপেক্ষায়
#সামান্তা_সিমি
#পর্ব_১৪
‘সে তো ঠিকই আছে তবে তোকে আমি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখছি জেরিন থেকে তুই একশো হাত দূরে থাকবি।মেয়েটা যেন তোর আশেপাশে না থাকে আর তোকেও যেন জেরিনের আশেপাশে না দেখি।তোর নিজের বোকামির কারণে তোর যদি কোনো ক্ষতি হয় বিলিভ মি আমি তোকে জানে মেরে দেব।কথাটা যেন মাথায় থাকে!’
দুর্জয় ভাইয়ার হুমকি শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে রইলাম।জেরিন আপুর সাথে উনার সংঘর্ষ কি নিয়ে তা আমি আজও বুঝতে পারলাম না।শুরু থেকেই দেখে আসছি উনি আপুকে সহ্য করতে পারে না।একটু আগের ঘটনায় জেরিন আপুর কি দোষ থাকতে পারে?আপু হয়তোবা ভিড়ের মাঝে মানুষের ধাক্কাধাক্কির কারণে আমাকে খুঁজে পাচ্ছিল না।সে তো আর ইচ্ছে করে এমনটা করেনি।
কিন্তু এখন উনাকে কিছু না বলাই ভালো।যেরকম রেগে আছে কখন না জানি ঠাস ঠাস থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।আসল কাহিনী কি সেটা জেরিন আপুর থেকেই জানা যাবে।উনার সাথে কথা বলা বৃথা।
এমন সময় দুর্জয় ভাইয়ার ফোন বাজতে উনি নিজেকে শান্ত করে কল রিসিভ করলেন।
‘ হ্যাঁ ইমন বল!’
‘………..’
‘ পেয়েছি।আমার সাথেই আছে।তোরা ওইখানে অপেক্ষা কর আমরা পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।’
কল কেটে উনি বললেন,
‘ চল!’
‘কোথায়?’
আমার প্রশ্নের উত্তরে দুর্জয় ভাইয়া এমন চাহনি দিলেন যে আর কিছু বলার সাহসই পেলাম।হঠাৎ আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি আমার হাত ধরে ভিড় ঠেলে সামনে হাঁটতে লাগলেন।কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমার হৃদপিণ্ড প্রচন্ড শব্দে ধকধক করতে লাগল।যদি এখানে মেলার হৈচৈ আওয়াজ না থাকত তবে নিশ্চয়ই সবাই আমার হৃদপিণ্ডে ঢোল পিটানোর শব্দ স্পষ্ট শুনতে সক্ষম হত।দুর্জয় ভাইয়ার হাতের মুঠোয় আমার হাত ভাবতেই মনে অজানা শিহরণ খেলে যাচ্ছে। নিজের অজান্তে বারবার নজর চলে যাচ্ছে দুটো হাতের ওই বন্দীযুগলের দিকে।অথচ উনার তো কোনোই হেলদুল নেই।বড় বড় পা ফেলে আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রাগ কি উনার এখনো কমেনি?
হঠাৎ এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন দুর্জয় ভাইয়া।আমিও টাল সামলাতে না পেরে উনার সাথে ধড়াম করে খেলাম এক ধাক্কা।উনি ভ্রু কুঁচকে একবার আমার হাতের দিকে দেখছেন আরেকবার পাশের দোকানে সারি সারি করে সাজানো চুড়ি গুলোর দিকে।
উনার মতিগতি না বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ দাঁড়িয়ে পড়লেন যে?কি হলো?’
দুর্জয় ভাইয়া কোনো কথা না বলে দোকানের প্রতিটি চুড়ি স্ক্যান করে অবশেষে নীল রঙের কাচের চুড়ির গোছাটা বেছে নিলেন।আমি চোখ বড়বড় করে দেখছি উনার কর্মকান্ড।মেয়েদের চুড়ি দিয়ে উনি করবেনটা কি?
বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না।সাথে-সাথেই উত্তর পেয়ে গেলাম।দুর্জয় ভাইয়া আমার বামহাত অতি সন্তর্পণে নিজের হাতে তুলে নিয়ে আস্তে আস্তে সবগুলো চুড়ি পড়িয়ে দিলেন।অবাক হয়ে তাকালাম উনার দিকে।উনি বাঁকা হেসে বললেন,
‘এতক্ষণে চুড়িদের আসল সৌন্দর্য প্রকাশ পাচ্ছে।’
দুর্জয় ভাইয়া মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে দোকানির হাতে ধরিয়ে আবার আগের মত হাঁটতে শুরু করলেন।এত হট্টগোলের মধ্যেও আমার হাতের চুড়িগুলোর টুংটাং শব্দ তীব্রভাবে শুনতে পাচ্ছি। উনি কি একটু আগে আমার প্রশংসা করলেন?হ্যাঁ এটা প্রশংসা ছাড়া আর কি?আমার তো এখনো সবটা স্বপ্নের মতো লাগছে যে দুর্জয় ভাইয়া আমাকে চুড়ি কিনে দিয়েছে আবার নিজহাতে তা পরিয়েছে।হঠাৎ করেই মনের ভেতর রঙিন হাওয়া বইতে লাগল।এমন তো আগে কোনোদিন অনুভূত হয়নি!মন কেনো মানতে চাইছে না আমি দুর্জয় ভাইয়ার চোখে শুধুমাত্র বোনের মতই।যেমনটা সুহানা আপু।চোখে ভেসে উঠল একটু আগে উনার বিধ্বস্ত চেহারা।আমাকে খুঁজে না পেয়ে উনি কি এতটাই উতলা হয়ে গেছিলেন!আচ্ছা আমার জায়গায় যদি সুহানা আপু থাকতেন তাহলেও কি উনি এমন চোখ রাঙিয়ে ধমকাতেন আবার কিছুক্ষণ পর নিজের পছন্দমতো চুড়ি কিনে পরিয়ে দিতেন?
কিছুক্ষণের মধ্যেই ইমন ভাইয়াদের দেখা পেলাম। ওরা সবাই ফুচকার দোকানের সামনে টুলে বসে ফুচকা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাকে দেখতে পেয়ে মামা উদ্বিগ্ন হয়ে বলতে লাগলেন,
‘ এসব কি পূর্ণী?তোকে বলেছিলাম না আমাদের না বলে কোথাও যাবি না।কতটা টেনশনে ফেলে দিয়েছিলি জানিস?’
আমি কাঁদোকাঁদো মুখ করে বললাম,
‘ স্যরি মামা।আর হবে না।’
‘ আর হতে দিলে তবে তো হবে!এক্ষুনি ফুচকা খেয়ে সবাই বাড়ির দিকে রওনা দিবে।’
আমি মন খারাপ করে আপুদের সাথে বসলাম।সবসময় আমার জন্য সবার আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়।
জেরিন আপুকে দেখতে পেয়ে আমি নিচুস্বরে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ ব্যাপার কি আপু তোমাকে আমি খুঁজে পেলাম না কেনো?
আপু আমতাআমতা করে বলতে লাগল,
‘ আ’ম স্যরি পূর্ণী।আসলে মানুষের ধাক্কাধাক্কিতে আমি কিভাবে যেন তোমার থেকে দূরে চলে গেছিলাম।আমার এক ফ্রেন্ড কল দিয়েছিল ওর সাথে কথা বলতে বলতে এমনটা ঘটে গেছে।এরপর তোমাকে আর কোথাও দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেছিলাম কিন্তু পাইনি।’
‘ আমিও এটাই সন্দেহ করেছিলাম আপু।এখন এসব নিয়ে আর কথা বলো না।আমি তো ঠিকঠাক ফিরে এসেছি।’
‘ ঠিক বলেছো…’
জেরিন আপু কথা থামিয়ে আমার চুড়িভর্তি হাতের দিকে তাকিয়ে রইলেন।এই প্রথম আপুর সামনে আমার কেনো জানি অস্বস্তি লাগল।নিশ্চয়ই চুড়িগুলোর কথা জিজ্ঞেস করে বসবে।দুর্জয় ভাইয়া দিয়েছে বললে কি ভালো দেখাবে?
কিন্তু না আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো।আপু কিছুই বলল না।তাহলে কি সে সব আন্দাজ করে ফেলেছে?আমিও কি ভেবে চুড়িভর্তি হাত লুকিয়ে ফেললাম উড়নার তলায়।
__________________________
দোতলার করিডোরে রেলিঙ ঘেঁষে আকাশের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছি আমি।পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ। দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই এখন নিজেদের ঘরে ঘুমোচ্ছে। একমাত্র আমিই সজাগ প্রাণী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এখন দুপুর হলেও আকাশের অবস্থা দেখলে হঠাৎ সন্ধ্যে বলে মনে হয়।পশ্চিম দিকে কালো মেঘ স্তূপাকারে ধেয়ে আসছে।ভাপসা গরমে পরিবেশ কেমন থম মেরে আছে।মেঘের ঘনঘটা দেখে মনে হচ্ছে তুমুল বৃষ্টি আসবে।কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝিরিঝিরি শীতল বাতাস বইতে লাগল এবং তা একসময় গতি বাড়িয়ে গাছের ডালপালা উড়িয়ে নিতে উদ্যত হলো।আমি খুশিখুশি মনে একলা দাঁড়িয়ে হাওয়া খাচ্ছি। হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো।উপরের ছাদের কার্নিশ বেয়ে বৃষ্টির ধারা নেমে আসছে।হাত বাড়িয়ে দিলাম বৃষ্টির ঠান্ডা স্পর্শ পেতে। আমার হাতে এখনো দুর্জয় ভাইয়ার দেওয়া নীল চুড়ি। বৃষ্টির ফোঁটা স্বচ্ছন্দ্যে চুড়িগুলোকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ মাথায় একটা চমৎকার খেয়াল আসতেই ভেতরটা নেচে উঠল। এখন তো সবাই ঘুমোচ্ছে আমি যদি টুক করে ছাদে গিয়ে কিছুক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে আসি তাহলে কেমন হয়?অবশ্যই ভালো হয়।বাসায় থাকলে এমন আইডিয়া মাথায় আসার আগেই মায়ের অগ্নিমূর্তি সামনে চলে আসে।এতদিন পর এরকম একটা সুন্দর সুযোগ পেলাম।অবশ্য আপুরা থাকলে আরো ভালো হত।সমস্যা নেই আমি আজ একাই ভিজে ভিজে বৃষ্টিবিলাস করব।
পা টিপে টিপে পৌঁছে গেলাম ছাদে। বৃষ্টির ফোঁটা সমস্ত ছাদকে ধুয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সাথে ঠান্ডায় মাখামাখি দমকা হাওয়া বেসামাল করে দিচ্ছে সবকিছু। আমি উৎফুল্ল মন নিয়ে চলে এলাম ছাদের মধ্যখানে। আকাশ থেকে ঝরতে থাকা স্নিগ্ধ ফোঁটা ভিজিয়ে দিতে লাগল আমায়।খোলাচুল এতক্ষণ অগোছালো হয়ে উড়ছিল এবার পানির স্পর্শে যেন নেতিয়ে পড়ল।আমিও দুহাত মেলে আপন করে নিলাম বৃষ্টির আগমনকে।
জানি না এভাবে কতক্ষণ কেটে গেল।বৃষ্টিবিলাসের এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনো হয়নি।হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়তে সজাগ হয়ে উঠলাম।বাড়ির কেউ উঠার আগে আমাকে জামা চেঞ্জ করে ফেলতে হবে।নাহলে…
দরজার কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই থমকে গেলাম।দরজার পাশে একটা অবয়ব দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির ধারা ছাপিয়ে যখন ওই চেহারা স্পষ্ট হয়ে উঠল তখন জমে গেলাম।অবয়বটি দুর্জয় ভাইয়া ছাড়া আর কেউ নয়।আমার সিক্ত শরীরে হঠাৎ কাঁপুনি উঠে গেল।তবুও মনে সাহস জুগিয়ে এগিয়ে গেলাম।থাক না উনি দাঁড়িয়ে। হয়তোবা আমারই মত বৃষ্টি দেখতে এসেছে।তাতে ক্ষতি কি!কিন্তু উনি কখন এলেন এখানে?
নিচের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে উনাকে পাশ কাটিয়ে যেতেই আটকা পড়লাম।যখন বুঝতে পারলাম আমার হাত দুর্জয় ভাইয়ার শক্ত হাতের মাঝে বদ্ধ হয়ে আছে তখনই শরীরে রক্ত চলাচল তরতর করে বাড়তে লাগল।উনি কি কিছু বলতে চায় আমায়?নাহলে এমন নির্জন পরিবেশে আমাকে কেনো আটকাচ্ছে?
কিছু বুঝে উঠার আগেই উনি একটানে আমাকে দাঁড় করিয়ে ফেললেন উনার মুখোমুখি। আমি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছি।পেছনে দেয়াল থাকায় তার সাথে সেঁটে রইলাম একদম।দুর্জয় ভাইয়া একহাত পাশের দেয়ালে ঠেকিয়ে অন্যহাত পকেটে ঢুকিয়ে আমার সামনে বিশাল পর্বতের মত দাঁড়িয়ে থেকে বললেন,
‘ আমাকে পাগল করে বৃষ্টিতে নেচে-কুঁদে বেড়ানো হচ্ছে?’
দুর্জয় ভাইয়ার দুচোখে দুষ্টুমির হাসি। এদিকে আমার মনে প্রশ্নের খই ফুটছে।তাঁর কথাবার্তা আমি যে কিছুই বুঝতে পারছি না।যদিও উনার থেকে আমার দূরত্ব কয়েক ইঞ্চি তবুও উনার উপস্থিতি আমাকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না।
‘ তোর এই চুড়িতে যখন টুংটাং শব্দ শুনি তখন আমার কি ইচ্ছে করে জানিস?ইচ্ছে করে তোকে ঘন্টার পর ঘন্টা চোখের সামনে বসিয়ে রেখে এই চুড়ির ধ্বনি শুনি।কিন্তু পারি না। কেনো জানিস?’
কথাগুলো বলতে বলতে দুর্জয় ভাইয়া আমার হাত সামনে এনে চুড়িগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছেন।আমি কোনোরকমে শ্বাস বন্ধ করে উনার সব কথা শুনে যাচ্ছি।ভেজা কাপড়ের ঠান্ডায় কাঁপছি ঠকঠক করে।তবুও দম খিঁচে দাঁড়িয়ে আছি আমাকে নিয়ে দুর্জয় ভাইয়ার মনের অভিব্যক্তি শোনার অপেক্ষায়।
আমার নীরবতা দেখে উনি বললেন,
‘ তুই তো জানিস না কিছুই।পারিস শুধু আমার থেকে পালিয়ে বেড়াতে!আমাকে যন্ত্রণা দিতে।একবার আমার চোখের দিকে তাকা!আমার চোখ তোকে প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে বলে যায় আমার মনের কথা অথচ তুই বুঝিস না! নাকি বুঝেও না বোঝার মত থাকিস?’
বাইরে বৃষ্টির বেগ আরো বেড়েছে।হুহু করে বাতাসের ঝাপটা এসে আছড়ে পড়ছে।এই মুহূর্তে দুর্জয় ভাইয়ার কথা ছাড়া আমার কানে জগতের আর কিছুই ঢুকছে না।বাড়িভর্তি লোকজন যে কেউই এখানে হাজির হতে পারে। আমাদের দুজনকে এমন অবস্থায় দেখলে কি অঘটন ঘটতে পারে সেই ভয়টাও যেন মন থেকে দূর হয়ে গেছে।অধীর আগ্রহ নিয়ে দুর্জয় ভাইয়ার চোখে চোখ মিলিয়ে রেখেছি যদি আরো কিছু বলেন সেই আশায়।
দুর্জয় ভাইয়া এবার কাতর গলায় বলে উঠলেন,
‘ পূর্ণতা, আবার চলে আয় আমার জীবনে। তোর থেকে এই দূরত্ব আমাকে ভালো থাকতে দিচ্ছে না।পূর্ণতাকে ছাড়া সবদিকে দিয়েই আমি অপূর্ণ। এতদিন দূরে ছিলাম বলে আমার কিছুই করার ছিল না।আমার জন্যই তোর উপর এতবড় আঘাত এসেছে।কিন্তু এখন আমি এসে গেছি। আমার দম থাকতে একটা আচড়ও তোর উপর পড়তে দেব না পূর্ণতা।আই প্রমিস।’
দুর্জয় ভাইয়া থেমে গেলেন।হয়তোবা আমার ভ্রুঁ কুঁচকানো দেখে থামলেন।উনার শেষের কথাগুলোর কোনো অর্থ আমি খুঁজে পাচ্ছি না।উনার জন্য আমার উপর আঘাত এসেছে এটা আমার মাথায় অনবরত ঘুরপাক খাচ্ছে।
দুর্জয় ভাইয়া আমার থেকে দূরে সরে ছাদের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললেন,
‘ জানি তোর মাথায় এখন হাজার প্রশ্ন ঘুরছে। তোর প্রশ্নের সব উত্তরই আমার কাছে আছে তবুও আমি কিছুই বলব না।কারণ সবকিছুরই একটা উপযুক্ত সময় আছে।সেই সময়টা এখনো আসেনি তাই তুই আমাকে কোনোরকম প্রশ্ন করবি না।’
কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলে উঠলেন,
‘ এভাবে স্ট্যাচু হয়ে কি দেখছিস আমাকে?অবাক হয়েছিস নাকি শক খেয়েছিস?ব্যাপার না।তবে এটা মাথায় ঢুকিয়ে নে তুই আমার ছিলি,আমার আছিস,ইন ফিউচার আমারই থাকতে হবে।আমাদের মাঝে যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে তাঁকে গুম করে দেওয়ার ব্যবস্থা আমি নিজের হাতে করব।’
দুর্জয় ভাইয়া চলে গেলেন।সিড়িতে উনার নেমে যাওয়ার আওয়াজ পেতেই নড়েচড়ে দাঁড়ালাম।আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা এখনো যায়নি।বোধহয় আজ আর এই বৃষ্টি থামবে না।ছাদের উপর বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে ছোটখাটো একটা নদীর মতো হয়ে গেছে।সেখানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমি যেন হারিয়ে গেলাম অন্য এক জগতে।
চলবে…