তোর_পরশে_প্রেম #নুসাইবা_ইভানা #পর্ব-২

0
473

#তোর_পরশে_প্রেম
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব-২

আমি তোর ঠোঁটে গুণে গুণে একশো চুমু খাবো পুতুল।
‘ইশশ একশো চুমু খাবে! চুমু কি চকলেট নাকি যে,কিনবে আর টপাটপ খাবে?
‘আমি খাবো মানে খাবোই দেখি কে আমাকে আটকায়?
‘এক চুমুর বদলে তুমি আমার সুন্দর হাতে একটা চুমু খেতে পারো। তাই বলে একটা চুমুর বদলে একশো চুমু খাবে?

তোর সহস কি করে হলো ভরা কলেজ মাঠে আমাকে চুমু খাওয়ার?ভরা মজলিস আমার তিলে তিলে জমানো ইজ্জত লুটে নিয়েছিস এবার তোর ছাড় নেই।
‘ছেলেদের আবার ইজ্জত থাকে? ইজ্জত তো থাকে মেয়েদের।
‘তোকে কে বললো থাকে না।তোর সাহস হলো কি করে?
‘শুনো দোষ তো আমার না, দোষ হলো জুলিয়ার ও আমাকে বলল তোমার ঠোঁটে, ভরা মাঠে একটা চুমু খেলে ও আমাকে এক ডালা চকলেট দেবে। তো তুমিই বলো তোমার ওই রুক্ষ করলার মত ঠোঁটে একটা চুমুর বদলে যদি এক ডালা চকলেট পাই, এই অফার মিস করা কি বোকামি না?
‘এবার আমি তোর টসটসে গোলাপের পাপড়ি মত মধুমাখা ঠোঁটে একশো চুমু খাবো৷
-তোমাকে কে বলল,আমার ঠোঁটে মধু!আমার ঠোঁট তো চিরতার চেয়ে তেতো!
-চিরতা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী আমি তাহলে একশো দশটা চুমু খাবো।
-নাহহহহহ আমার এইটুকু ঠোঁট তুমি চুমু খেলে আর ঠোঁট পাবো কোথায়?
-আমার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার সময় মনে ছিলো না?
-অতীতের ভাবনায় মগ্ন পুতুল। সাথে হিচকি উঠে গেলো।
-কারো হাতের স্পর্শ কোমড়ে পরতেই চোখ মেলে তাকলো পুতুল।
-আমার কোমড় ছাড়ো পরশ ভাই। পরশ আরো গভীর ভাবে পুতুলের কোমড় আঁকরে ধরলো৷ পুতুল ইষৎত কেঁপে উঠলো। পরশ পুতুলের অধরে অধর মিলিয়ে দিলো। পুতুল পরশের পিঠের টিশার্ট খামচে ধরলো। মিনিট দু’য়েক পর পরশ পুতলের ঠোঁট ছেড়ে
দিলো। চোখ বন্ধ করেই বলে নাহহহহহহহ এটা হতে পারে না।
‘পরশ দেয়ালের দু’পাশ থেকে হাত সরিয়ে পুতুলের মাথায় আস্তে করে থাপ্পড় দিয়ে বলে,দিনদুপুরে তোকে ভূতে ধরলো নাকি?
‘পুতুল চোখ খুলে বলে,তুমি আমার কোমড়ে হাত রাখো নি? আর আমার ঠোঁটে!
‘এই তুই একটু আগে না বললি তুই বাচ্চা মেয়ে তোকে কেন বিয়ে করছি। ক্লাস এইটে থাকতে আমার ঠোঁটের সতীত্ব নষ্ট করেছিস৷ এখন আবার দিনদুপুরে কি ইমাজিন করে চিৎকার করলি?
‘ঠোঁটের আবার সতীত্ব থাকে? যেই না সাধের ঠোঁট তোমার। বলেই ভেংচি কাটলো।
‘ঠোঁটের সতীত্ব থাকে না তো কিসের সতীত্ব থাকে বল।
‘সতীত্ব-তো থাকে…. বলেই নিচের মুখ চেপে ধরে।
‘ইচড়ে পাকা মেয়ে তোকে তো পরে দেখে নেবো৷ আর চুপচাপ পড়তে বসবি। এইসব আউলা, ঝাউলা গানে যদি নাচতে দেখেছি, তাহলো তোকে বোঝাবো কত ধানে কত চাল। বলেই চলে গেলো।
‘পুতুল নিজের বেডের উপর ধপাস করে বসে বলে,দূর যত্তসব বেফাঁস কথা এই লোকটার সামনে আসলেই মুখ থেকে বের হয়ে যায়। অসভ্য বদ লোক৷ বসা থেকে দ্রুত উঠে পড়ার টেবিলে বসলো, বই বের করে, বলে আমার মন বসনে না পড়ার টেবিলে।

‘তা তোর মন কই থাকে শুনি?
‘আমার মন বনে জঙ্গলে যেখানে, সেখানে থাকার থাকে। আমার মন বোঝার তো কেউ নেই৷ তাই মনকে বনবাসে পাঠিয়ে দিয়েছি৷
‘পাগলি মেয়ে আমার। এই নে তোর পছন্দের পাটিসাপটা পিঠা। খেয়ে মনযোগ দিয়ে পড়। পড়া শেষ হলে একবার তোর বড় আব্বুর সাথে দেখা করে আসিস। আমি যাই সবাইকে পিঠা দিয়ে আসি।
‘দূর ভাল্লাগে না কেউ আমার কথা পাত্তাই দেয় না!

পুতুল পিঠা নিয়ে তাতে এক বাইট দিলো। এরমধ্যেই জুলিয়া এসে বলে,জানিস পিঠা কেন বানিয়েছে?
‘শীতের শুরু তাই।
“ঊহু আজ পরাণ ভাইয়া বাসায় আসবে। শুধু কি এই পিঠা কত রকমের পিঠা বানিয়েছে।
‘ভাইয়া আসবে! কই আমি তো কিছু জানিনা।
‘তোর কি আর দুনিয়ার কোন খবর আছে,তুই তো তোর বিয়ে নিয়ে পাগল।
‘হ্যা তা ঠিক বলেছো, জানো পরশ ভাইয়ার মত হ্যান্ডসাম, সুদর্শন আবার কত দ্বায়িত্বশীল এমন ছেলে তো প্রতিটা মেয়ের ড্রীম। সেখানে আমি এমনিতেই পেয়ে যাচ্ছি।আর ভাইয়া যা রোমান্টিক জানো না। বলেই একটু লজ্জা পাওয়ার নাটক করলো।
‘পরশ ভাইয়া আর রোমান্টিক? আমাকে বোকা বানাস?সারাদিন ধমকের উপর রাখে সবাইকে আর তুই কিনা বলিস সে রোমান্টিক!
‘দূর তুমি কিছুই জানোনা। একটু আগে সে আমাকে… বলেই মুখ ডেকে নিলো।
‘জুলিয়া কোন কথা না বলে বড়, বড় পা ফেলে চলে গেলো।
‘জুলিয়া চলে যেতেই পুতুল বলে, পুতুল ভবিষ্যতে তোর নায়িকা হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। কি অভিনয় করিস বাহহহ বাহহহ। বলেই পিঠায় আরেক বাইট বসালো।মনের সুখে পিঠা শেষ করে। সোজা চলে গেলো কিচেনে।

‘জুলিয়া নিজের রুমে এসে,টেবিল থেকে এটা সেটা ছুড়ে ফেলে দিলো। আয়নায় তাকিয়ে বলে,আমার মধ্যে কি এমন কমতি আছে?আমাকে রেখে তুমি পুতুলকে বিয়ে করবে পরশ ভাই? নিজের ফোন বেড় করে কল করলো, ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই বলে,আম্মু আমি আর এখানে থাকবো না৷ আমাকে নিয়ে চলো। তারপর সবটা খুলে বলে।
‘তুই চিন্তা করিস না আমি আসছি।

‘নিলুফা বেগম আর সুফিয়া বেগম। দুই জা’মিলে পিঠা বানাচ্ছে আর হাসাহাসি করছে।
‘বড় আম্মু’পরাণ ভাইয়া কি সত্যি দেশে ফিরছে?
‘হুম তাইতো বললো, আজ নাকি আসবে।
‘কখন আসবে?
‘সেটা বলেনি। সবাইকে সারপ্রাইজ দিবে।
‘কচু প্রাইজ দিবে।সেই কবে বলেছি আমার জন্য একটা মোবাইল আর এক বস্তা চকলেট পাঠিয়ে দাও কিছুই পাঠালো না। তোমার ছেলে এতো কিপ্টে কেন বড় মা।
‘তুই যা পড়তে বস। পরশের মত ব্রিলিয়ান্ট ছেলের বউ তো আর ম্যাট্রিক ফেল হতে পারে না। যাহহ ভালো করে পড় পাস করতে হবে।
‘তুমি কি সত্যি আমার মা! না-মানে শ্বাশুড়ির মত বিহেভিয়ার করছো?
ফেল করলেও কি পাস করলেও কি বিয়ে তো আমি করছি না৷
‘সুফিয়া বেগম বলে,তবে রে আর যদি শুনেছি বিয়ে করবো না। তাহলে তোর খবর আছে।
‘পুতুল কিচেনের বাহিরে এসে বলে,তা কয়টার খবর খালাম্মা?
‘তুই দাঁড়া আমি আসছি।
নিলুফা বেগম বলেন, কি শুরু করলি! বাচ্চা মেয়ে ও দুষ্ঠমি করবে না-তো কে করবে শুনি? আর তোর মেয়ে এখন আমার ছেলের বউ তাই ওর সাথে কোন বকাঝকা করবি না।

পুতুল বসার রুমে এসে দেখে সব কিছু কত সুন্দর করে গোছানো। পুতুল মনে মনে বলে,মনে হয় বাড়ির ছেলে না জামাই আসছে!
‘পেছন থেকে একটা পুরুষালী কন্ঠ ভেসে এলো, জামাই হলেও হতে পারে।
‘আমি বুঝিনা এতো মেয়ে থাকতে তোমার আমাকে বিয়ে করার এতো শখ কেন? বলেই পিছনে ঘুরে বলে কে আপনি?।
‘এখন আমাকে না চেনার অভিনয় করছিস।ঠিকি তো একটু আগে জামাই আসার অপেক্ষা করছিলি।
‘পুতুল কোমড়ে দু’হাত দিয়ে বলে,কথা বলার আগে মাস্ক সড়ান।
‘চেহারা দেখার জন্য তর সইছে না।
‘বড়,আম্মু গো……….দেখো বাসায় চোর এসেছে তাড়াতাড়ি কে কোথায় আছো।

যুবকটি সমানে এগিয়ে এসে পুতুলের মুখ ধরতে যাবে তার আগেই কেউ একজন বলে,এক থাপ্পড় দিয়ে তোর সব দাঁত ফেলে দেবো। যাহহহ নিজের রুমে যা।
‘কিন্তু!
‘পুতুল একটাও শব্দ বের করবি না মুখ থেকে সোজা নিজের রুমে যা।
‘পরাণ মাস্ক খুলতে খুলতে বলে,কিরে তুই ওর সাথে এতো রুড বিহেভিয়ার কেন করলি?
‘তুমি বুঝবা না ভাইয়া,ও কত বাঁদর এক্ষুনি চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তুলতো।
‘ওতো ছোট থেকেই চঞ্চল তাতে আর এমন কি।
তুমি বসো।আমি সবাইকে ডেকে নিয়ে আসি।

পরশ ডাকলো,আম্মু’মামুনি দেখো তোমার ছেলে চলে এসেছে।
‘নিলুফা বেগম ছুটে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরলো।
কিছু সময় আবেগে কাটলো সবার। পরাণ দীর্ঘ ছয় বছর পর দেশে ফিরেছে।

‘পুতুল রুমে এসে দরজা বন্ধ করে বসে আছে। মনে, মনে বলে,আমি তোমাকে বিয়ে করবোই না। এখনি দাঁত ফেলে দিতে চাও তখন তো দাঁত ফেলেই দিবে।আমার এতো সুন্দর দাঁত। ক্লোজআপ দিয়ে চকচকে করে রাখি। কই আমার দাঁত দেখলে, সবার মনে বেজে উঠবে, কাছে আসো, কাছে আসো, কাছে আসো না….. তা-না উল্টো দাঁত ফেলে দিতে চায়। এবার থেকে কোলগেট ব্যাবহার করবো যাতে দাঁত মজবুত হয় চাইলেও ফেলে দিতে পারবে না…..!

#চলবে

ভুলত্রুটি মার্জিত ভাবে ধরিয়ে দিবেন৷ ইনশা আল্লাহ শুধরে নেবো।
হ্যাপি রিডিং🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here