#ধর্ষিতা_বউ
#রাবেয়া_সুলতানা
#১৭
__কথাটা শুনেই আয়েশা বেগম ছেলের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ছেলেটা কি পাগল হয়ে গেলো নাকি।নিজের পায়ে নিজে এইভাবে কেউ কুড়াল মারে?ওই বাড়ীতে কি কি হয়েছে ধীরে ধীরে সব কিছু সুমি আয়েশা বেগমের কাছে বলতে লাগলো।সব শুনে আয়েশা বেগম আয়ান কে উঠিয়ে নিজের পাশে বসালো।
আয়ান -আম্মু তুমিও কিছু বলবে না? কেউ আমার পাশে থাকুক আর না থাকুক আমি জানি আমার আম্মু আমার পাশে থাকবে।
আয়েশা বেগম আয়ানের মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বললো আমি তোকে বলবো না ওই মেয়েকে ছেড়ে দে।কারণ আমি মেয়ে, আমি মা,আমি বোন, ওর কষ্ট টা আমি বুজি।আমি শুধু এইটুকুই বলবো তুই যখন মেয়েটাকে বিয়ে করে এনেছিস ওর কোনো অসম্মান করিস না।তোকে এখন একেক জন একেক কথা বলবে তুই কোনো কথায় কান দিস না।শুধু এইটাই ভাববি ওই এখন তোর জীবনে একটা অংশ।
কথা গুলো শুনে আয়ান চোখের কোনে পানি এসে গেছে আয়েশা বেগমকে জড়িয়ে ধরে thank you আম্মু।আমি তোমার কথা রাখবো।
সুমি আয়ানের চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে মায়ের বাধ্য ছেলে।
আয়েশা বেগম মনে মনে ভাবছে তোর বাবা আসলে জানি না ওই মেয়েকে মেনে নিবে কিনা।তাই তোকে আগেই কথা গুলো বলে দিলাম।যেনো তুই ওই মেয়েকে ছেড়ে না যাস।
ঝিনুক সুমিকে খুঁজতে খুঁজতে আয়েশা বেগমের রুমে এসে আয়ানকে দেখে বাহ্ আগেভাগে মাকে বুজিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
আয়ান -তোর হিংসে হচ্ছে নাকি? অবশ্য তোর হিংসে হতেই পারে।
ঝিনুক -আমি তোকে হিংসে করি? এইটা তুই বলতে পারলি?
সুমি -আপু থাকনা।রুমকি কোথায়?
ঝিনুক -আমিও তাকে খুঁজতে এসেছি।এখানে এসে তো দেখি অন্য কিছু।
সুমি -আচ্ছা চলো দেখি ও কোথায় আছে।
রুমকি প্রাপ্তির পাশে গিয়ে গালে আঙুল দিয়ে প্রাপ্তিকে ভালো করে দেখছে।প্রাপ্তির চোখ পড়তেই মুছকি হাঁসি দিয়ে, এক হাত দিয়ে রুমকিকে কাছে টেনে এনে কোলে বসিয়ে, কি নাম তোমার?
রুমকি কি যেন ভেবে বললো আমি রুমকি। তুমি?
প্রাপ্তি -আমি প্রাপ্তি।
রুমকি -তুমি জানো আমি তোমার কি হই?
প্রাপ্তি -প্রাপ্তি মাথা নাড়িয়ে না বুজালো।
রুমকি -ওমা এটাও জানোনা? আমি তোমার ছোটো মা হই ছোটো মা।এইবার বুজেছো?
প্রাপ্তি এইটাও মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।
রুমকি -তুমি কিন্তু আমার আরেকটা মামনি বুজলেতো?আচ্ছা তুমি গল্প বলতে পারো?
প্রাপ্তি -একটুআধটু পারি।
রুমকি -ধুত তোমার মধ্যে কোনো রোমাঞ্চ নাই।তাহলে ছোটো মামার সাথে কথা বলবা কেমনে।
কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে, তাই নাকি তুমি জানো রোমাঞ্চ কি করে করে।
রুমকি -ওই যে তোমার মতো একটুআধটু জানি।
সুমি আর ঝিনুক এসে দেখে রুমকির আর প্রাপ্তির ভালোই ভাব হয়েছে।
সুমি -বাহ্ আমাদের রুমকি মামনি দেখছি তার ছোটো মামনির সাথে ভালোই ভাব হয়েছে।এইযে প্রাপ্তি এই হচ্ছে এই বাড়ীর মহারাণী। ওর জেনো কোনো অযত্ন না হয়।
ঝিনুক -রুমকি আসো রাত অনেক হয়েছে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।এইখানে বসার কোনো দরকার নেই।
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি ঝিনুকের দিকে আড় চোখে তাকাতেই এই শুনো আমি তোমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি।
সুমি -আপু তুমি ওর সাথে এইভাবে কথা বলো না।
ঝিনুক -আমি কোনো ভাবেই কথা বলছিনা।তোমরা থাকো তোমাদের নিয়ে আমি যাই।
কথাটা বলেই ঝিনুক নিজের রুমে চলে গেলো।
সুমি -প্রাপ্তি! আপুর কথায় কিছু মনে করো না।আপু কিন্তু অনেক ভালো। হয়তো কাল দেখবে সবছেয়ে বেশী আপুই তোমাকে আদর করবে।
প্রাপ্তি -আমি কিছু মনে করিনি।এইগুলো শুনতে শুনতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে।
সুমি -আচ্ছা ঠিক আছে এখন চলো খাবে।
প্রাপ্তি -না ভাবী আমি একটু ও খেতে পারবো না।
সুমি -যার বউ সে দেখবে।এখন চলো তোমাকে রুমে দিয়ে আসি।মিনুটা কই গেলো। মিনু! এই মিনু একটু এইদিকে আসো।
মিনু এসে, ভাবী আমায় ডেকেছো?
সুমি-হুম চলো প্রাপ্তিকে রুমে দিয়ে আসি।
আয়ান এখনো আয়েশা বেগমের রুমে বসে আছে।কিরে বাবা এইখানেই বসে থাকবি?
আয়ান -আম্মু তুমি এতো ভালো কেনো বলো তো?
আয়েশা বেগম -কোনো মাই কখনো খারাপ হয়না।সব বাবা মাই তার সন্তানের জন্য ভালো চায়।এখন যাও রুমে যাও মেয়েটা মনে হয় একাই বসে আছে।
আয়ান মায়ের কোল থেকে মাথা উঠিয়ে, তুমি রেস্ট নাও তাহলে আমি আসি।
প্রাপ্তি বসে আছে আয়ানের রুমেই।রুমটাকে ফুল দিয়ে অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।
সব কিছুই গুছানো। ছেলেদের রুম এতোটা গুছানো হয় তার জানা ছিলো না।প্রাপ্তি মনে মনে তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে রুমটা সাজিয়েছে কার জন্য আর বসে আছে কে? আজ এইখানে অরণীর থাকার কথা ছিলো। আর এখন আমার মতো একটা মেয়ে বসে আছে।আচ্ছা বাসরঘরে নাকি দুজনের জীবনের জন্য একটা সপ্নের রাত।কিন্তু আমার তো কোনো সপ্ন নেই। থাকবেই বা কি করে আমার মতো মেয়েদের থাকার কথাও না। আয়ান চৌধুরী যখন নিজের অধিকার চাইবে আমি কি বলবো।অবশ্য ছেলে বলে কথা নিজের অধিকার ঠিকি ছিনিয়ে নিবে।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আয়ান দরজায় নক করে ভিতরে ঢুকলো। প্রাপ্তিকে বসে থাকতে দেখে, আরে,,,,,,আপনি এখনো ফ্রেশ হননি? এই ভারী সাজ নিয়ে কিভাবে বসে আছেন আপনার কষ্ট হচ্ছে না?কথাটা বলতে বলতে আলমারি থেকে একটা থ্রি পিজ বের করে প্রাপ্তির সামনে দিয়ে ওই পাশে ওয়াশরুম আছে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।(প্রাপ্তি আয়ানের কথা শুনে অবাক হয়েই তার দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে হয়তো তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসতে বলছে তার অধিকার ফলানোর জন্য নাকি?)এইযে,,,, হা াাাাাাাাাাা করে এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন?মশা ডুকে যাবে তো।(কথাটা শুনে লজ্জা পেয়ে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে)তাড়াতাড়ি উঠুন।
প্রাপ্তি উঠে জামা নিয়েই ওয়াশরুমে চলে গেলো। আয়ান ওই বাড়ী থেকে এসেই ফ্রেশ হয়ে আয়েশা বেগমের রুমে গিয়েছিলো । তাই তার ফ্রেশ হওয়ার চিন্তা নেই।ফোন টা হাতে নিয়ে খাটে বসে মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখে এসএমএস এ ভরপুর।অনেক ফ্রেন্ড এর এসএমএস দেখে আয়ানের মেজাজ টাই গরম হয়ে গেলো ফোনটা জিদ করে খাটের উপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে দুই হাত দিয়ে মুখটা মুছেই সামনে চোখ পড়তেই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুমের দরজা আটকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়ানের তাকানো দেখে প্রাপ্তিও লজ্জা পেয়ে গেছে।আয়ান নিজের অজান্তেই বলে উঠলো আমার ঘরে কি কোনো পরী নেমে আসলো নাকি?
এমন সময় দরজায় নক করার শব্দে আয়ানের হুশ ফিরে এলো।আয়ান গিয়ে দরজা খুলেই দেখে সুমি খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আয়ান -সুইট হার্ট তুমি এই সময়?
সুমি -দেখছো না খাবার নিয়ে আসছি।তোমার বউ তো কিছুই খায়নি।এখন সামনে থেকে সরো ভিতরে ঢুকতে দাও।নাকি সমস্যা আছে?
আয়ান -আরে না! না! আসো।
সুমি ঢুকেই প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই, আয়ানের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু একটা হাঁসি দিয়ে আয়ান বাবু আর দেরী সয়েছিলো না।তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি?
কথাটা শুনেই প্রাপ্তি লজ্জায় নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়ান -সুইট হার্ট কি যা তা বলছো, কিছুই তো বুজতেছি না।
সুমি -গোসল ও সেরে নিয়েছে তারপর ও বুজাতে হবে? যাই হোক দুইজনি খেয়ে নাও কথা টা বলে সুমি হাঁসতে হাঁসতে চলে গেলো।
আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে, বুজা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক লজ্জা পেয়েছে।আসলে আপনি কিছু মনে করবেন না।আপনি শাড়ী চেঞ্জ করেছেন বলে ভাবী এই কথা বলেছে
চলবে,,,,,,,