#ধূসর_অনুভূতি
পর্ব:১৬
আমি বারান্দায় বসে ছিলাম। ঝিনুক আপু হঠাৎ আমার পাশে এসে বসলো।আমি অবাক হলাম।আপু তো এতো তাড়াতাড়ি ফিরে না কখনো।কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আপু বললো,ডক্টরের রিপোর্ট। নে দেখ…
আমি বললাম,দেখে কি হবে,আমি তো বুঝবো না।ড.রবিউলের ওখানে গিয়েছিলে?
ঝিনুক আপু হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল। বাদশাহ ভাইয়াকে ইদানীং একজন নিউরোসার্জনও দেখছেন।কারণ,ডাক্তারদের ধারণা মানসিক সমস্যা ছাড়াও বাদশাহ ভাইয়ার আরো কোনো রোগ আছে। বাদশাহ ভাইয়া দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে, ইদানীং অনেক বেশি দূর্বল হয়ে পরেছেন,জ্বর-মাথাব্যথা-বমি তো লেগেই আছে।আর কাউকে না চিনার বিষয়টা তো আগে থেকেই ছিল। মানসিক সমস্যা থেকে ভুলে যাওয়ার ব্যাপারটা হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু সব মিলিয়ে দেখলে মনে হয় ব্যাপারটা শুধুমাত্র মানসিক আঘাতের কারণে হচ্ছে না। আগের থেকেই হয়তো কোনো সমস্যা ছিল আর মানসিক আঘাতের পর সেটা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। সাইকোলজিস্টের পরামর্শেই বাদশাহ ভাইয়াকে একজন নিউরোলজিস্ট দেখানো হয়েছে।
ঝিনুক আপুর হাতে তারই রিপোর্ট।
আপু নির্লিপ্ত ভাবে বললো,ডাক্তার বলেছে ভাইয়ার মাথায় টিউমার হয়েছে।ম্যালিগনেন্ট টিউমার।এটা ভীষণ ভয়ানক ব্যাধি বুঝেছিস। ভাইয়া মনে হয় বাঁচবে না।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।এতো বড় কষ্টদায়ক একটা খবর আমাকে শুনতে হলো।
ঝিনুক আপু বললো,আসলে ভাইয়ার বেঁচে থাকার মতো মানসিক জোরও নেই।মালিহা ভাবী যাওয়ার পর সে ভেবেছে এর জন্য সে-ই দায়ী।কোনো রোগ থেকে বেঁচে ফিরতে হলে সর্ব প্রথম যেই জিনিসটা লাগে তা হলো বেঁচে থাকার ইচ্ছাশক্তি।ভিতর থেকে মরে যাওয়া মানুষকে বাঁচিয়ে তোলা যায় না।যা আমার জন্য এক কাপ চা বানিয়ে আন।মাথা ব্যাথায় মরে যাচ্ছি।
আমি কাঁদতে কাঁদতে চা বানালাম।
বললাম,আপু ভাইয়াকে দেখতে যাবো।
আপু বললো,লাভ নাই রে। ভাইয়া কাউকে চিনে না।সেন্সও থাকে না ম্যাক্সিমাম টাইম।
– আমি তবুও ভাইয়াকে দেখতে চাই….
– কান্নাকাটি বন্ধ কর। ভাইয়া কি মরে গেছে? অপারেশন করতে হবে।
– অপারেশন করালে কি ভাইয়া ঠিক হয়ে যাবে?
– ভাগ্য ভালো থাকলে হবে।
– কয়টাকা লাগবে আপু?
– তিন লাখ।
টাকার পরিমাণ শুনে আমি আপুর দিকে তাকালাম।
– এতো টাকা কিভাবে যোগাড় করবে আপু?
– সেটা নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না। দরকার হলে আমার দুইটা কিডনি বিক্রি করে দিবো।
ঝিনুক আপু হাসলো।
আমি তাকিয়ে রইলাম।কি বলা উচিৎ জানি না।
এরপর আস্তে আস্তে ঝিনুক আপু কিছু টাকা যোগাড় করেও ফেললো,যদিও সেটার পরিমাণ বেশি না। শুরুতেই পুরো টাকা দিতে হবে না, সুতরাং কিছু সময় হাতে আছে।
ঝিনুক আপু হন্যে হয়ে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করছে। আমাকে নিয়ে এক দুঃসম্পর্কের মামার বাসায়ও গেলো একদিন, মোটকথা কোনো আত্মীয় বাদ নেই।মামা বাসায় ছিলেন না।তার স্ত্রী আর ছেলে ছিল।সব শুনে তারা বললো,অবশ্যই মামাকে জানানো হবে।
কিন্তু,আদৌ জানাবে কি না কে জানে।আর,জানালেই বা উনি আমাদের সাহায্য করবে এটা হওয়ার কোনো শিউরিটি নেই। আমার মনে হলো আমাদের ভাগ্য টা সবদিক দিয়েই খারাপ।অন্য মানুষেরা বিপদে পড়লে তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ঢাল হয়ে দাঁড়ায়।আর, আমাদের এক সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউই নেই।
হঠাৎ রাস্তায় মেহেদী ভাইয়াকে দেখলাম।
আমি ঝিনুক আপুকে বললাম, আপু দেখো মেহেদী ভাইয়া।
আপু বললো,তো?দেখতে হবে কিসের জন্য? এলিয়েন সে?
ঝিনুক আপু পা চালিয়ে হাঁটতে লাগলো। সাথে আমিও… কিন্তু মেহেদী ভাইয়া ততক্ষণে আমাদের দেখে ফেলেছে। তিনি দৌড়ে এলেন।
জিজ্ঞেস করলেন,কেমন আছো তোমরা?
আমি বললাম,জ্বি ভালো আছি।
মেহেদী ভাইয়া জিজ্ঞেস করলো, ঝিনুক তুমি তো এখন দেশে থাকার কথা না….
ঝিনুক আপু বললো,না আমার তো এখন মঙ্গল গ্রহে থাকার কথা।
মেহেদী ভাইয়া হাসলো।বললো, তুমি আগের মতোই আছো। তোমার স্বামী কেমন আছে?
আমি বললাম, ভাইয়া আপুর বিয়েটা হয়নি। বাদশাহ ভাইয়া ভেঙে দিয়েছিল।
মেহেদী ভাইয়ার চোখে হঠাৎ জল টলমল করে উঠলো।বললো, ঝিনুক তুমি আমাকে এতো বড় খবরটা দাও নি কেন?
ঝিনুক আপু বললো,আপনাকে খবর দিতে হবে কেন? আপনার জানার ইচ্ছা থাকলে আপনি নিজেই খবর নিতেন।
মেহেদী ভাইয়া বললো, আমি তো ভাবছি তোমার……….
এরপর থেমে বললো, আচ্ছা বাদ দেও সব দোষ আমার মেনে নিলাম।এর জন্য আমাকে যা শাস্তি দিবা মেনে নিবো। এখন প্লিজ আসো কোথাও বসি, কতদিন তোমার সাথে কথা হয়না।
ঝিনুক আপু বললো,সময় নেই বসতে পারবো না।তা, আপনার তো স্টাডি শেষ… এখন কি চাকরি খুঁজছেন?
মেহেদী ভাইয়া বললো,আসলে চাকরি খুঁজছি না।ওসব চাকরি বাকরি আমার দ্বারা হবে বলেও মনে হয় না।
– তাহলে এখানে যে?আমি তো খবর পাইছিলাম আপনি নিজের শহরে চলে গেছেন।
মেহেদী ভাইয়া বললো,হ্যাঁ বাড়িতেই থাকতাম। একটা আর্ট এক্সিবিশনের জন্য কিছু দিন হলো এসেছি।আমার কিছু ছবি আছে তো তাই।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।-সত্যি?
মেহেদী ভাইয়া হেসে বললো, হুম সত্যি।দেখবা তোমরা?আসো।কয়েকটা সেল হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।
আমি বললাম,তাহলে আর দেখবো কিভাবে?
– আরে বোকা এক্সিবিশন যতদিন চলবে ততদিন তো সব ছবিই থাকবে মানুষজন দেখার জন্য।যারা কিনেছে তারা এক্সিবিশন শেষ হওয়ার পর ছবি নিয়ে যাবে।
ঝিনুক আপু যেতে চাইলো না। আমার জোরাজুরিতে গেলো।যদিও আপুর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল আপু আসলে যেতে চায়। মেহেদী ভাইয়ার আঁকা ছবি দেখলে আপুর মনটা এমনিতেও একটু ভালো হবে। বাদশাহ ভাইয়ার অসুস্থতার পর থেকে তো আমাদের জীবন থেকে তো সব খুশি হারিয়ে গেছে।
আমরা মেহেদী ভাইয়ার সাথে আর্ট গ্যালারিতে গেলাম।কত সুন্দর সুন্দর ছবি চারপাশে।
এর মধ্যে মেহেদী ভাইয়া তার নিজের আঁকা ছবি গুলো দেখাতে লাগলো।তার একটা ছবি সবচেয়ে পছন্দ হলো আমার.. ছবিটার নাম”ঝিনুক”।উপরে নীল আকাশ আর নিচে সমুদ্রের নীল ঢেউ মিলেমিশে একাকার।সেই ঢেউয়ের মধ্যে একটা মেয়ে বসে আছে।মেয়েটার মাথার চুল উড়ছে। কিছু অবাধ্য চুল তার মুখের উপর পরে আছে।তাই, অর্ধেক টা চেহারা দেখা যাচ্ছে।সেই অর্ধেক টা চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা আসলে ঝিনুক আপুকে ভেবেই আঁকা হয়েছে।ছবিতে মেয়েটার হাতে একটা ঝিনুক আছে…সবাই হয়তো ভাববে এর জন্যই ছবিটার নাম ঝিনুক কিন্তু…..কি জীবন্ত একটা ছবি। ছবিটার দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে যেন আমিও ছবিতে থাকা মেয়েটার সাথে সমুদ্রের বেলাভূমিতে আছি। নীল ঢেউয়েরা এসে আমাকেও ছুঁয়ে দিচ্ছে। সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাস যেন আমার গায়েও লাগছে…আর,ছবিতে থাকা মেয়েটা তো আরো জীবন্ত।মনে হচ্ছে সত্যিই সে মাত্র পাড়ে এই ঝিনুক টা কুড়িয়ে পেয়ে হাতে নিয়েছে।
আমি অবাক হলাম এতো সুন্দরও মানুষ আঁকতে পারে।কত পরিশ্রম না জানি হয়েছে।
তবে,আরো অবাক হলাম যখন শুনলাম এই ছবিটা দশ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আমি চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে রইলাম। ঝিনুক আপু বললো,আপনি তো বড়লোক হয়ে গেছেন…
মেহেদী ভাইয়া হেসে বললো,আরে নাহ…কি যে বলো।আমি যদি আরেকটু বিখ্যাত হতাম তাহলে পঞ্চাশ হাজার টাকা হতো কমপক্ষে এটার দাম।
ঝিনুক আপু বললো,এতো টাকা দিয়ে ছবি কিনার মানুষ আমাদের দেশে আছে এটাই তো জানতাম না।
মেহেদী ভাইয়া হেসে বললো,আছে…আছে অনেক আছে।তবে এটা যিনি কিনেছেন তিনি অ্যামেরিকান।
ঝিনুক আপু দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুঃখ প্রকাশ করে বললো,এতো দাম দিয়ে এসব না কিনে কিছু টাকা আমাদের মতো অসহায়দের দিতে পারে না।
মেহেদী ভাইয়া হঠাৎ খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লো।
বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগলো, আমাদের কোনো সমস্যা কিনা……
ঝিনুক আপু কিছুতেই বললো না।আমাকে নিয়ে চলে এলো।পরে, মেহেদী ভাইয়া আমার ফোনে ম্যাসেজ পাঠালো।আমিই তাকে সবটা বলে দিলাম।
পরদিন হাসপাতালে গিয়ে দেখি মেহেদী ভাইয়া বসে আছে।
ঝিনুক আপু আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকালো।বললো, কেন ওকে জানাইছিস?
ঝিনুক আপু অনেক চেষ্টা করেও বেশি টাকা জোগাড় করতে পারলো না।আসলে, একবারে এতো গুলো টাকা জোগাড় করা কঠিন।তাই ভাইয়ার অপারেশনেও দেরী হচ্ছিল। এদিকে দ্রুত না করালে তো বিপদের আশংকা বাড়ছে।ডাক্তারকে অনেক রিকোয়েস্ট করার পর তিনি আপুকে বললো,আগে পঞ্চাশ হাজার টাকা জমা দেন।সেই সময়টা যে কি ভয়ানক কষ্টদায়ক ছিল। ঝিনুক আপু কেঁদে কেঁদে ডাক্তারকে রিকোয়েস্ট করছিল। আমার বুকটা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু, পঞ্চাশ হাজার টাকাও আমাদের কাছে অনেক টাকা। ঝিনুক আপু শুধু দশ হাজার টাকা যোগাড় করেছে।বাকি চল্লিশ হাজার টাকাই মেহেদী ভাইয়া দিলো। ঝিনুক আপু নিস্তেজ ভাবে জিজ্ঞেস করল, আপনি এতো টাকা কই পেলেন? আপনার সব গুলো ছবিই কি এতো দাম দিয়ে মানুষ কিনেছে?
মেহেদী ভাইয়া বললো,উহু।আমার জমানো টাকা ছিল কিছু,ছবিরও ছিল।তবে,সব ছবি তো বিক্রিও হয়নি।
ঝিনুক আপু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, আপনার টাকা ফেরত দিয়ে দিবো আমি।চিন্তা করবেন না।
ঝিনুক আপু আমাকে ডেকে নিয়ে বললো, আমাদের বাড়ি বিক্রি করে দিবো। এছাড়া তো আর বাকি টাকার কোনো পথ দেখছি না।
আমি তাকিয়ে রইলাম। বললাম,এই অল্প সময়ে তো বাড়ি বিক্রি করা সম্ভব না।
ঝিনুক আপু বললো,সবই সম্ভব।
সত্যি সত্যিই একটা ফ্ল্যাট বিক্রির চেষ্টা করছিল আপু।যদিও শেষমেশ আর তা করতে হয়নি।
কারণ,এক সন্ধ্যায় মালিহা ভাবীর বাবা আমাদের বাসায় আসলেন।
ঝিনুক আপুর হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলেন তিনি। বললেন,এর মধ্যে কিছু টাকা আছে। বাদশার জন্য দিলাম।সে তো আমার সন্তানের মতোই।
আমি,মা আর ঝিনুক আপু অবাক হয়ে গিয়েছিলাম প্রচুর।
ঝিনুক আপু বললো, আপনার টাকা আমি ফেরত দিয়ে দিবো পরে ….
তিনি বললেন,দ্বিধা করো না।তোমাকে দিইও নি যে তুমি ফেরত দিবা ; আমি আমার নাতনির জন্যই দিলাম।তার তো মা নেই,বাবা অন্তত থাকুক।আর, আমি যে টাকা দিয়েছি সেটা তোমরা আর আমি ছাড়া কেউই জানে না।কেউ জানুক আমি চাইও না। এরপর তিনি উঠে চলে গেলেন। দরজার কাছে গিয়ে একটু থেমে বললেন,একটা কথা মালিহাকে তিতলির সাথে দেখা করতে দিও।সে তার ভুল বুঝতে পারছে যদিও শোধরানোর সুযোগ নেই তাও তিতলি তো তার সন্তান।
উনি চলে গেলেন। থামলেন না আর।
আমাদের তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না যে সত্যিই ঘটছে বিষয়টা।মা বাচ্চা মানুষের মতো খুশিতে চিৎকার করে উঠলেন। আমাদের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলেন, আমার ছেলে ঠিক হয়ে যাবে?
আমি আর ঝিনুক আপু তাকিয়ে রইলাম মায়ের দিকে।
মা ছুটে গিয়ে তিতলিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ফেললেন।তিতলিকে কোলে নিয়ে ঘরময় ছোটাছুটি করতে লাগলেন।
…..
ভাইয়ার অপারেশন সাকসেসফুলি শেষ হলো।
ভাইয়ার জ্ঞানও ফিরলো।আমরা ভাইয়ার সাথে দেখা করতে গেলাম। ভাইয়া ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো শুধু। মায়ের চোখ বেয়ে পানি পড়ছে দেখে চোখে না সূচক ইশারা করলো।যেন চোখের পানি না ফেলে।
এরপর আবার কি একটা ইঞ্জেকশন দেওয়া হলো। ভাইয়া ঘুমিয়ে পরলো।
পরদিন আবার একটু সমস্যা দেখা দিলো।ডাক্তারদের চিন্তিত দেখা গেলো।
আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না।
ডাক্তার বললো, হঠাৎ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে আবার…
ঝিনুক আপু ঝাঁঝালো কন্ঠে বললো, আমার ভাই বাঁচবে কিনা সেটা বলেন।
ডাক্তার বললো,আসলে এই টিউমার একবার অপারেশন করলে পুরোপুরি নির্মূল হয়না।এতে ক্যানসারের সেল আছে।ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই সমস্যা টা আবার ফিরে আসে।তবে,এতো দ্রুত যদিও না। কিন্তু, আপনার ভাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ্য করছি হঠাৎ করেই কমপ্লেক্স হয়ে যাচ্ছে বিষয়টা।আসলে…..
ঝিনুক আপু ডাক্তারের কথার মাঝখানে চেঁচিয়ে উঠলো,এতো কথা জানতে চাইছি? আমার ভাই বাঁচবে কিনা শুধু সেটা বলেন।
ঝিনুক আপু কান্না করে দিলো।
ডাক্তার বললো,আল্লাহকে ডাকুন।
মা বলতে লাগলেন,আমি তোদের বলছিলাম না আগেই? বাদশাহ বাঁচবে না… মায়ের মন সব জানে।আমার কপাল তো এতো ভালো না রে….
আমি আর ঝিনুক আপু মাকে জড়িয়ে ধরে ফেললাম।মা আর আমি কাঁদতে লাগলাম। ঝিনুক আপু কেমন পাথরের মত হয়ে গেলো। অনুভূতিহীন।
হঠাৎ, তাকিয়ে দেখি মালিহা ভাবী দাঁড়িয়ে আছে আমাদের থেকে খানিকটা দূরে।
এই গরমেও গায়ে একটা চাদর পেঁচিয়ে রেখেছে সে।
.
লেখক: শাপলা
চলবে,,