#নতুন_তুই_আমি [ পর্ব ১]
Writer:Nargis Sultana Ripa.
“দোস্ত,কি হবে এখন??”
“………”
“এই………”
“…………”
“ঐ সিয়াম,কালা…….শুনিস না কি বলি নাকি বোবাও হয়ে গেছিস???”
“উহুহু……কি হইছে চিমটি দিস কেনো…….??”
“কখন থেকে কথা বলছি…..শুনিস না কেনো…কালা নাকি??”
“ভাবছিলাম…..”
“ভাব তুই…আজাইরা।
বাট দোস্ত কি হবে?আমি তো ভাবতেই পারছি না তুই তো তবু ভাবছিস……..”
“কি আর হবে??কিচ্ছু করার নেই এখন…..”
“তুই কি আন্টির সাথে কথা বলছিস?”
“হুম,যবে থেকে ওদের মাথায় এই ভুতের বসবাস শুরু তখন থেকেই তো বুঝাচ্ছি।কিন্তু কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছে না।কাল রাতে যখন বলতে গেলাম তখন আমাকে উল্টো বুঝ বুঝায় ওরা……তুই আন্টি বা আঙ্কেলকে বলিস নাই কিছু??”
“আমি তো মাম্মাকে বললাম,মাম্মাম আমাকে বললো,”আস্তে আস্তে নাকি সব ঠিক হয়ে যাবে”……”
“আচ্ছা।চিন্তা করিস না।যা হয় হোক তুই আর আমি আগে যেমন ছিলাম তেমনি থাকবো।নতুন_তুই-আমি আর হবো না তো….সো তোর আর আমার এতো না ভাবলেও চলবে…..”
“আচ্ছা!!!শোন তুই কি অন্যদের মতো বেশি কিছু চাইবি??”
“মানে??”
“না মানে সব হাসবেন্ড রা যেমন ওয়াইফদের বেশি বেশি কাজ করায়,জোর করে সব কিছুতে তেমন করবি??”
“ঐ ছেরী চুপচাপ খা তো।এতো আবেগে কথা বলতেছিস কেনো???তোর মুখে সব সময় সোজা সাপ্টা কথা মানায়।মনে রাখিস তুই সিয়ামের বেস্ট ফ্রেন্ড।সো তোকে সব সময় স্ট্রং থাকতে হবে….”
“যা আজাইরা।একটা সিরিয়াস কথা বলতেছিলাম।দিলি তো বেগাড় করে।।।তুই না আসলেই……”
“তুই তাড়াতাড়ি খাবি???ক্লাস শুরু হয়ে যাবে কিন্তু।পরে কিন্তু আমাকে ব্ল্যাম করতে পারবি না…..”
“আরে,খাচ্ছি তো।এতো চেঁচাস কেনো???”
“তাড়াতাড়ি কর।ক্লাস শেষে তো ল্যাব আছে আবার।কি ঢিলা মার্কা রে।কি দেখে যে তোকে আম্মু ঘরের বউ করতে চাইছে বুঝি না আমি….”
“সিয়াম!!!!দোস্ত তুই আমাকে এভাবে বলছিস??
আমার কি দোষ বল?আমার টেনশনের সময় সব কিছু আস্তে আস্তে হয়।
আর তুই কি হ্যাঁ??
যা রাগ তোর।গুন্ডা একটা।
মাম্মাম আর পাপা তোর সাথে কেনো আমার বিয়ে দিচ্ছে,আমিও তো বুঝি না…”
“তামান্না!!!!……”
“কুত্তা।লাথি খাবি।সবার সাথে চেঁচাস তাই বলে আমার সাথে চেঁচাবি নাকি???চড় দিয়া ঘর বানাবো কিন্তু…….বিলাই কোথাকার….”
“ধুরু বাল।বিল দিয়ে আসিস….আমি গেলাম….”
“আরে,দোস্ত দ্বারা।আমার কাছে টাকা নাই……”
সিয়াম চলে যাচ্ছিলো।
তামান্নার টাকা নেই শুনে থেমে যায়।
“টাকা নেই মানে??”
“ব্যাগ তো আনি নাই এখানে…ক্লাসে রেখে আসছি….”
“তাড়াতাড়ি শেষ কর।আমি বিল দিচ্ছি….”
“যা দে…….আমার শেষ….”
“মোটি কোথাকার…..খালি খাওয়া……”
“তোর চেয়ে ভালো বদমাইশ…….তোকে বিয়ে করলে আমার জীবন তেজ পাতা করে দিবি তুই……”
“তুই তো আমার অবস্থা তার চেয়েও খারাপ করে দিবি…..”
সিয়াম বিল দিয়ে তামান্নাকে রেখে হাঁটা শুরু করে।তামান্নাও সিয়ামের রাগে পাত্তা দেয় নি।
ধীরে ধীরে ক্লাসে গিয়ে নিজের সিটে বসে পড়ে।
আর তামান্নার সিট সব সময় সিয়ামের পাশেই থাকে।
ক্লাস সিক্স থেকে এই দুজনের সিট সব সময় পাশাপাশি থাকে।অবশ্য তামান্না গার্লস কলেজে পড়তো।কিন্তু প্রাইভেট আর কোচিং এ দুজন এক সিটে পাশাপাশি।
দু জনের যেমন ভাব তেমন ঝগড়াও হয়।
তবে ভার্সিটি কোচিং ও এক ছিলো না দুজনের।
কিন্তু দেখা হতো রোজ।
সিয়ামের বাসা খিলক্ষেত আর তামান্নার বাসা আজিমপুরে।
খুব বেশি দূরে ছিলো না।
তাই যখন ইচ্ছা দুজন দুজনের বাসায় চলে আসতো।
তামান্না সিয়ামের একমাত্র মেয়ে বন্ধু যে কি না সিয়ামের বাসায় যখন তখন আসতে পারে।
আর সিয়ামের ক্ষেত্রেও তাই।
এদের দুজনের বন্ধু আছে অনেক।কিন্তু বেস্ট ফ্রেন্ড ওরা ওরাই।
তামান্না মেডিকেলে কোচিং করলেও চান্স হয় নি।
আর সিয়াম বুয়েটেরর আশায় মন প্রাণ দিয়েও জায়গা করে নিতে পারে নি বুয়েটে।
ভাগ্য যেনো বার বার দুজনকে এক করে দিচ্ছিলো।
ক্লাস সিক্সের প্রথম থেকেই দুজন একসাথে।
আত্মার বন্ধুত্ব দুজনের।
কিন্তু কেউ কখনো কাউকে বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু ভাবে নি।
তামান্না কখনো আলাদা করে ভাবে নি যে সিয়াম ছেলে।আর সিয়ামও কখনো তামান্নাকে মেয়ে বন্ধু ভাবে নি।ভেবেছে বন্ধু বলে।সেরা বন্ধু হিসেবে দুজনের এতো টা পথ চলা এক সাথে।
হয়তো ওদের কপালে সারা জীবন এক সাথে কাটানোর কথা লিখা আছে।
তা না হলে,এতো এতো ভার্সিটির এতো এতো সাবজেক্ট থাকতে দুজনেরই কেনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “ফার্মেসী” তে চান্স হলো???
আর কেন ই বা ওদের বাবা-মা দুজনের মধ্যে আলাদা কোনো সর্ম্পক নেই জেনেও।অনার্স শেষ না করতেই দুজনের বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগলো???
উত্তর আমার কাছে একটাই…
উপরওয়ালা নিশ্চয় তাঁদের ভাগ্য একসাথে জুরে দিয়েছে।
!
দু জন এক সাথে পড়লেও সিয়াম তামান্নার চেয়ে দেড় বছরের ছোট।
মেয়ে টা যেমন দেখতে তেমন গুনে।সিয়ামের সাথে পাশাপাশি বসেও কখনো গা ঘেষাঘেষি করে নি দুজনে।
সিয়ামও তেমনি আলাদা ভাবে তাঁকায় নি কখনো তামান্নার দিকে।
এক সপ্তাহ আগে,
বিকালের দিকে,
সিয়ামের আম্মু তামান্নার মাম্মামকে ফোন করে।
সিয়াম আর তামান্নার সূত্রে ওদের দু পরিবারের সর্ম্পক টাও বেশ ভালো।
তাদের কথা বার্তা কিছুটা এমন ছিলো::::–
“আসসালামু আলাইকুম ভাবী,কেমন আছেন??”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম ভাবী,এই তো ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন??”
“হ্যাঁ ভালো।তবে ভাবী,আজকে কিন্তু আমি খুশ গল্প করার জন্য ফোন করি নি……একটা আবদার আপনার কাছে।না করতে পারবেন না আপনি…..”
“না না কি আবদার বলুন….”
“অনেক দিন থেকেই বলবো ভাবছি।কিন্তু বলা হয়ে উঠে না…কি না কি ভাবেন আপনারা??”
“না না কোনো ব্যাপার না।আপনি বলুন তো…”
“আসলে ছেলে মেয়ে তো বড় হয়েছে…….”
“হ্যাঁ।।।।অনার্স শেষ করবে এ বছরে ই……ছোট্ট মেয়ে আমার কত বড় হয়ে গেছে।”
“হ্যাঁ।।।ঠিক বলেছেন।আসলে ভাবী,তামান্নার বার্থ ইয়ার তো ১৯৯৭ তাই না??”
“হ্যাঁ।১৯৯৭ এর সাত অক্টোবর।কেনো বলুন তো??”
“তারমানে ২১+…..২২ হয় নি এখনো…..তাই তো??”
“হ্যাঁ…..অক্টোবরে হবে…..কিন্তু ভাবী,আপনি হঠাৎ এসব জিঙ্গাসা করছেন??”
“ভাবী,সিয়ামের জন্ম তারিখ জানেন??”
“আআআ….হ্যাঁ মেয়ে বলেছিলো একদিন।১৯৯৬ এর ১ জানুয়ারী……..”
“এই তো ঠিক ধরেছেন।ছেলের একবার টাইফয়েড হওয়ায় এক ইয়ার লস হয়ে গেছে।তা হলে তামান্নার এক ইয়ার উপরে থাকতো।ক্লাস টু তে এক্সাম দিতে পারে নি।তাই দুবার থাকতে হয়েছে।আর জন্ম হিসাব করতে গেলে আমার সিয়াম আপনার তামান্নার চেয়ে এক বছর দশ মাসের বড়।তার মানে প্রায় দু বছরের ই বড়।তাই না??”
“হ্যাঁ।কিন্তু??”
“আচ্ছা,আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার কি কোনো সন্দেহ আছে??”
“মানে??”
“না মানে আমার ছেলে বেকার থাকবে বা ভবিষ্যৎ এ কিছু করতে পারবে কি না এমন কোনো কিছু নিয়ে আপনার সংশয় আছে??”
“না।তা কেনো থাকবে।একমাত্র ছেলে আপনাদের।আর অনেক ভালো ছাত্র।ব্যবসা তো আগে আর পিছে ও ই সামলাবে।তারপরও জব করতে চাইলেও পারবে।।।”
“হ্যাঁ হ্যাঁ।তার মানে পাত্র হিসেবে আমার ছেলে মাশাল্লাহ???”
“ভাবী,কি বলছেন আপনি এসব???এখনি ছেলের বিয়ে দিবেন???পড়ালেখা শেষ করুক আগে…..”
“আরে পড়ালেখা তো শেষ ই প্রায়।চার মাস পড়েই ফাইনাল।আর মাস্টার্স হেঁসে খেলেও করতে পারবে আমাদের ছেলে মেয়েরা যথেষ্ঠ মেধাবী ওরা…..”
“ভাবী!!!!!আপনি কি বলতে চাইছেন বলুন তো??”
“আমার ছেলে কিন্তু চব্বিশে পা রাখলো বলে ভাবী……।বিয়ের উপযুক্ত একেবারে।সব দিক ঠিক ঠাক।আমি ছেলের বউ ঘরে আনতে চাই।আমার মনে হয় আপনি বুঝতে পারছেন কিছু??”
“কিন্তু ভাবী…….”
“কোনো কিন্তু না ভাবী।আমার আপনার মেয়েকে চাই।আমার ঘরের বউ করে না মেয়ে হিসেবে আনবো।দিবেন ভাবী??”
“………”
“চুপ করে কেনো আছেন ভাবী।ভাইয়ার জন্য???ভাইয়া রাজি হবে….ব্যাপার না।সিয়ামের আব্বু তো এক কথায় রাজি।আর রাজি হবে না কেনো বলুন তো।কোন দিক থেকে তামান্না কম??রূপে গুণে ওর মতো কয়টা মেয়ে আজ কাল পাওয়া যায়।সিয়ামের সাথে কত খাতির তবুও ওর সামনে আজ পর্যন্ত মাথার হিজাব খুলতে দেখলাম না।রাতে বাসায় ফিরা তো দূরের কথা,সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরে আপনার মেয়ে।অথচ ঢাবি তে পড়ে।আজ কাল এতল ভালো মেয়ে পাওয়া যায় নাকি।তাই ভাবী,আমি ফাইনাল করে ফেলেছি তামান্নাকেই ঘরে আনবো সারা জীবনের জন্য।আমার ঘর সে ই আলোকিত করতে পারবে।
আর আপনি ভাবুন তো,ওরা কতটা ক্লোজ।আপনও যদি আপনার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেন তাহলে ওরা কি আমার ছেলের সাথে বন্ধুত্ব রাখতে দিবে??দিবে না….তাতে ওরা দুজনেই একটা কষ্ট পাবে।ওরা দু জন তো দু জনকে খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারে।আর ভালো বন্ধুর মাঝে যদি আমরা ওদের মনে একবার প্রেম ডুকাতে পারি!!!ভাবী,আপনি দেখবেন তখন ওদের মতো সুখী আর কেউ হবে না………”
“ভাবী!!!!!!!আর কিছু বলতে হবে না।আমি রাজি।।।।।আপনার ভাইকে রাজি তো করাবোই যে করেই হোক।এতো ভালো জামাই হাত ছাড়া করবো না আমি।কিন্তু ভাবী,আপনি তো জানেন আমার একমাত্র সন্তান ও??”
“ভাবী,আমারও কিন্তু একটা।আর আমার মেয়ে নেই।আমার মেয়ের মতো করেই রাখবো ওকে।আমি তো জানি সব।ও কতটা বাচ্চা মানুষ এটাও জানি…..আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।”
!
ব্যাস হয়ে গেলো শুরু।
কিন্তু বিয়ের কথা শোনে সিয়াম আর তামান্না যেনো আকাশ থেকে পড়লো।ওরা তো সেরকম ভাবে কিছু ভাবেই নি।
কিন্তু ওদের পরিবার কিছুতেই ওদের বারণ শুনেছে না।তামান্না তো সিয়ামের আম্মুকেও বলেছিলো।কিন্তু তিনি উল্টো সিয়ামকে কি করে নিজের আঁচলে বাঁধতে হবে তা শিখিয়ে দিয়েছেন।
তাই আজ দুই বন্ধু কফি শপে আড্ডা দিচ্ছিলো কি করে এই বিয়ে বন্ধ করা যায়।কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে ক্লাস করছে।
ক্লাস শেষে ল্যাবে চলে যায় সবাই।
“তামান্নু…..”
“কি???”
“ক্যালসিয়াম পেস্ট করছিস??”
“হ্যাঁ…..কেনো??”
“বোনো আমার দে প্লিজ।আমি করি নাই….”
“কুত্তা পাইতাম না…….করতে কষ্ট লাগছে…..”
“বইন আমার দে।।।।”
ল্যাব টিচার কথা বলতে বারণ করায় চুপ হয়ে যায় দুজনে।
কিছুক্ষণ পর সিয়াম আবার ছেলে বন্ধুদের কাছে চেয়েও যখন পায় না তখন ওর শেঅ ঠিকনা তামান্নার কাছেই ঘুরে ফিরে যায়।
“তামান্নু দে….তোর তো অনেক টা পেস্ট।পুরা টা তো লাগবে না….”
একটা মুখ ভেঙচি দিয়ে তামান্না উপকরণ টা দিয়ে দিলো সিয়াম কে।ও জানতো সিয়াম বানাবে না পেস্ট টা।ওর আশাতেই থাকবে।সিয়াম এমনি করে ল্যাবের যে সব কাজ করে আনতে হয় সব তামান্নাকে দিয়েই করায়।আর তামান্না রাও এতো দিনে অভ্যাস হয়ে গেছে জিনিসটা।
সব উপকরণ ই বেশি বেশি করবে যেনো দুজনের হয়ে যায়।
ভার্সিটির সব কাজ শেষে সবাই মিলে আড্ডা দিয়ে রোজকার মতো যে কার হলে,কেউ আবার ম্যাসে।আর যারা ঢাকার বাসিন্দা তারা যার যার বাসায়।
সিয়াম আর তামান্নার বাসা একমুখী হওয়ায় দুজনে এক বাসে চলে যায়।সব সময় সিট পায় না।একটা সিট খালি থাকলে সিয়াম সেটা যেভাবেই হোক তামান্নার জন্য ম্যানেজ করবে।তবে আজ কোনো সিট খালি নেই।তাই দুজনেই দাঁড়িয়ে প্রায় ই এমন হয়।
তবে সিয়াম তামান্নার এভাবে দাঁড়িয়ে যাওয়া টা পচ্ছন্দ করে না।কারণ পাশে অনেক বাজে লোক থাকে।যারা মেয়ে পেলেই ঘা ঘেষে দাঁড়াতে চায়।
তাই যত টা সম্ভব তামান্নাকে নিজের সাইডে রাখে যেনো কেউ প্রিয় বন্ধু টার সাথে অসভ্যতা না করতে পারে।
আজও সে রকম হচ্ছে।
হঠাৎ একটা সম বয়সী ছেলে ইচ্ছা করে তামান্নার পেছনের দিকে গিয়ে দাঁড়ায়।কিন্তু সেখানে দাঁড়ানোর মতো তেমন জায়গা নেই।
তামান্নার খুব অস্তত্বি লাগছিলো।কারণ লোক টা বার বার তামান্নার পিঠের সাথে মিশে যাচ্ছিলো।ঘটনা টা চোখ এড়ায় না সিয়ামের।
সিয়াম তামান্নার দিকে রাগী লোক নিয়ে তাঁকিয়ে।
আবার লোক টার দিকে তাঁকালো।
তামান্নাকে সাথে নিয়ে বাইরের লোকের সাথে ঝামেলা করলে নেহাত ই বোকামী হবে।তাই লোক টাকে কিছু বললো না সিয়াম।এতে তামান্নাকে আবার খারাপ স্লিপ করবে ছেলেকে।আর তখন ঝামেলার সৃষ্টি হবে।
তাই তামান্নাকে একটু সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে।লোক টাকে নিজের পেছনে দাঁড় করায় সে।
বাস কিন্তু আজিমপুর হয়ে ই যাবে।তবুও যে দিন সিট না থাকে সিয়ামের সাথে খিলক্ষেত মেনে যায় তামান্না।রিক্সসা করে যায় বাকী টা।
গাড়ি থেকে নেমে রেগে গিয়ে তামান্নাকে প্রশ্ন করে সিয়াম,
“ঐ তুই গাড়ি আনিস না কেনো???”
“এমনি…..”
“আাজাইরা।বাসে আসতে এতো ভালো লাগে??”
“বাসে মজা লাগে।”
“হু….লাগে।মানুষ যে ডিস্টার্ব করে….তার বেলা??গাড়ি আনলে তো সেভ এ যেতে পারিস….”
“ডিস্টার্ব করলে তো তুই সেভ করিস…..তাই ভাবা লাগে না সেসব….”
“হো।বিয়ের পর তোর হাসবেন্ড রে বলিস সেভ করতে……”
সিয়ামের কথা শোনে হাঁটা বন্ধ করে তামান্না।থেমে যায়।
“ঐ কি হইলো??হাঁট….”
অবাক হয়ে তাঁকিয়ে আছে তামান্না সিয়ামের দিকে।
সিয়াম তামান্নার কাছে এসে জানতে চায় “কি হয়েছে??”
জবাব দেয় তামান্না,”দোস্ত তুই তো আমার হাসবেন্ড হতে যাচ্ছিস…..”
এতক্ষণে মাথায় আসে সিয়ামের যে তামান্নার সাথে ওর বিয়ে হচ্ছে।আর ওদের মা-বাবা কিছুতেই ওদের বিয়ে না দিয়ে থামবে না।বরং ওরা দুজন রাজি না হওয়ায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে টা সেরে ফেলবে।
সিয়াম তামান্নার দিকে অসহায় ভাবে কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে থাকার পর বললো,”তোকে ডিস্টার্ব করা থেকে বাঁচাতে হবে আমায়??আর কত??ক্লাস এইট থেকে দেখে যাচ্ছি তোর পেছনে মানুষ লেগে বেড়ায়।আর আমি তোরে বাঁচাই।আর এখন সারা জীবনের জন্যই আমার মা তোর মতো একটা মেয়ে আমার গলায় ঝুলাতে চাচ্ছে……”
সিয়ামের কথায় রাগ হয় তামান্না।এতোই ফেলনা নাকি সে???যে ওর গলায় ঝুলানোর কথা বলছে!!!
“ঐ হারামি আমি ফেলনা???”
“তো??”
“দেখ সিয়াম বিয়ে ভাঙতে পারিস না ভালো কথা।কিন্তু অপমান করবি না এভাবে।আমারর কিন্তু আত্মসম্মান আছে একটা…..”
“হা হা হা হা।।।।তোর আবার আত্মসম্মান।দাঁড়া হাঁসি শেষ করি আগে……”
তামান্না তো রেগে আগুন।
“বদমাইশ,হারামি জুতা মারি তোকে।আমি আজকেই পাপাকে যেভাবে হোক রাজি করাবো।তোর মতো বান্দর পোলা আমার দরকার নাই।আমার কপালে অনেক ভালো জামাই আছে….”
“আচ্ছা।যা যা তোর মতো কুৎসিত আমি বিয়ে করি না।যা না চেহারা!!!!ইশশশশ,মর্জিনা মার্কা মাইয়া।ওর আবার এতো দাম।বাঁচি আমি তোর সাথে বিয়ে না হলে…..”
তামান্নার আর সহ্য হলো না।দুনিয়াতে একমাত্র সিয়াম ছাড়া কোনো মানুষ তাঁকে কুৎসিত বলে নাই।একমাত্র সিয়াম হাজার ভাবে পঁচায় মেয়েটাকে।
তামান্না রাগে দুঃখে চোখের পানি নাকের পানি এক করে,কাঁদতে কাঁদতে রিক্সসা নিয়ে বাসায় চলে যায়।
সিয়ামও মহা আনন্দে বাড়ি ফির।আর মনে মনে দোয়া করতে থাকে যেনো তামান্না বিয়ে ভাঙতে সফল হয়।
নিয়ত করে,যদি তামান্না বিয়টা ভাঙতে পারে তাহলে তামান্নাকে ভর পেট ফুচকা খাওয়াবে।
কিন্তু বাসায় ঢুকা মাত্র ই আম্মুজান যা শুনালেন তার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলো না সিয়াম…………………..
লেখিকার গ্রুপ : https://facebook.com/groups/646951215765318/
সেরা সব গল্পের লিংক পেতে :https://www.facebook.com/SeraGolpo500/
সেরা সব গল্পের লিংক পেতে 👉👇💘
https://www.facebook.com/SeraGolpo500/