#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৩১………………………..
তামান্না ঘরে গিয়ে দেখল সিয়াম নেই।
ওয়াশরোমে সাওয়ারের শব্দ পেয়ে বুঝতে পারল সিয়াম গোসল করছে।
এই সুযোগে তামান্না বিছনাটা গুছিয়ে ফেলল।
তখন শুধু সাওয়ার নিয়েছিল আর কিছু করতে পারে নাই।ভাগ্যিস শরীরে গহনা না দেখতে পেরে শাশুড়ি মা কিছু বলে নি!!
কিন্তু এভাবে তো আর থাকা যায় না।
নতুন বউ বলে কথা।
কাল রাতের সব গহনা গুলো গুছিয়ে রাখার চেষ্ঠা করছে তামান্না।
এতো এতো গহনা তার উপর সব এতো দামী।
কোথায় রাখবে বুঝতে পারছে না।
বিকালে তো এখান থেকে অনেক কিছুই লাগবে।তাই আপাপত বক্সে ডুকিয়ে রাখছে।
এমন সময় ওয়াশরোমের দরজার শব্দে পেছন ফিরে একবার সিয়ামকে দেখল।
শুধু টাওয়েল পড়েই বের হয়েছে সে।
তামান্নার বুক টা আবারও সেই প্রথম দিন ভিডিও কলে খালি শরীরে দেখা সিয়ামকে দেখে যেমন আকূল হয়েছিল-আজও তাই হলো।
লজ্জা পেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল তামান্না।
কিছু বলল না।নিজের কাজে মনোযোগ দিল সে।
সিয়াম টি শার্ট আর টাওজার পড়ে নিল।
বাসায় থাকলে সে এসব ই পড়ে।
বিয়ে হয়েছে বলে কি নিজের রোজকার অভ্যাসও চেন্স করতে হবে নাকি!!!
সিয়াম তো কখনোই করবে না।
সিয়াম আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
তামান্নাও আয়নার সামনে বসে কাজ করছিল।
একটা হালকা চেইন,কানের এক জোড়া ছোট ইয়ার রিং বের করে পড়ে নিল সে।
সিয়াম নিজের চুল গুলো তামান্নার পেছনে দাঁড়িয়ে ঠিক করে নিল।
চুলগুলো সব ভেজা তাই তামান্না নিজের ব্যাগ থেকে ড্রায়ার টা নিয়ে যেই না অন করল।
ওমনি সিয়াম সাথে সাথে অফ করে দিল সেটা।
অবাক হল তামান্না।
জানতে চাইল,
“কি হলো??”
“কি করছিস এটা??”
“কি করছি তুই দেখছিস না??”
“ড্রায়ার করিস তুই??”
“ভেজা চুল তো করবো না??”
“আজ থেকে করতে হবে না।”
“আমি রোজ রোজ করি না।ড্রায়ার ইউজ করলে চুল নষ্ট হয় সেটা আমিও জানি।বুঝলি??”
তামান্না সিয়ামের হাত থেকে ড্রায়ার টা টান দিয়ে নিয়ে নিল।
সিয়াম তাঁকিয়ে আছে তামান্নার দিকে।চুল গুলোও এতো সুন্দর হয় কোনো মেয়ের!!!
তামান্না চুল শুকাতে শুকাতে খেয়াল করল সিয়াম ড্যাবড্যাব করে তার দিকে তাঁকিয়ে আছে।
সে বলল,
“কি হলো??হা করে তাঁকিয়ে আছিস কেনো!!!”
সিয়াম ড্রেসিং টেবিলে হেলান দিয়ে বলল,
“আমার বউ আমি তাঁকিয়ে থাকবো। এটাই কি স্বাভাবিক না??”
তামান্না মাথা নিঁচু করে মুঁচকি হাঁসলো।সিয়ামের মুখের ‘বউ’ শব্দটা বেশ লেগেছে ওর।
“হাঁসছিস যে??”
“তো??কি করবো??”
“নাহ্।কিছু করতে হবে না।”
বলে সিয়াম হাঁটু গেরে বসল।
আয়নার সামনে রাখা চুরিগুলো তামান্নার শাড়ির উপর রাখল।
তামান্না বুঝতে পারছে না সিয়াম কি করতে চলেছে।
তাই দেখছে শুধু।
সিয়াম তাঁকাল তামান্নার দিকে।তারপর মুঁচকি হেঁসে তামান্নার হাত টা ধরে চুরিগুলো এক এক করে তামান্নাকে পড়িয়ে দিচ্ছে।
তামান্নার কাছে এই মুহুর্ত টা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মুহুর্ত লাগছে।
এতো ভালোবাসা ওর কপালে সত্যি আছে!!!বিশ্বাস হয় না মাঝে মাঝে।
দু হাতে চুরি ভর্তি করে দিলো সিয়াম।
হাতদুটো নিজের মুঠোর মধ্যে নিয়ে গভীর ভাবে চুমু খেল।
আর সাথে সাথে চমকে উঠল তামান্না।
হাত দুটো ঘুরিয়ে নিয়ে তামান্নাকে দাঁড় করিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল সিয়াম।
“আরে কি করছিস??”
তামান্নার কাঁধে থুতনি রেখে সিয়াম আয়নায় তামান্নার চোখ রেখে বলল,
“এতো সুন্দর কেনো তুই??”
তামান্না লজ্জায় নিচের দিকে তাঁকিয়ে আছে।
“আহা রে লজ্জাবতী বান্ধবী আমার!!লজ্জা পেলে তোকে না জাস্ট খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করে আমার।”
তামান্নার এবার বেশ লজ্জা লাগছে।সে সিয়ামের থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্ঠা করছে।
“এতো নড়িস না।তোর যা শরীর।তোর কি মনে হয় পাড়বি আমার সাথে??”
তামান্না নিঁচের দিকে তাঁকিয়ে বলল,
“আন্টি নিঁচে যেতে বলেছিলো আমাদের।”
সিয়াম তামান্নার কথাটা গুরুত্ব না দিয়ে বলল,
“আচ্ছা!!তোকে আমি কি বলবো এখন বল তো??বউ নাকি বান্ধবী??কোনটা??তবে আমি যে তোর প্রেমে পড়ে গেছি সেটা শিউর।”
শিউরে উঠলো তামান্না।কাল তামান্নাকে স্পর্শ করার আগেই সিয়াম “ভালোবাসি” শব্দ টা বলেছিল।তারপর হারিয়ে গিয়েছিলো তামান্নার মাঝে।সিয়ামের এই কথাগুলোতে একটা মাদকতা আছে যা খুব সহজেই তামান্নাকে মাতল করতে পারে।
“কি রে কথা বলছিস না কেনো??”
“ছাড় আমায়।নিচে যাবো…..”
“আরে যাস।কিন্তু…”
হঠাৎ সিয়ামের চোখ পড়ে আয়নায় ভেসে উঠা তামান্নার গলার দাগ টার দিকে।তাই কথা থামিয়ে তামান্নাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে ভালো করে খেয়াল করে বলল,
“হ্যায়,তোর গলায় এটা কিসের দাগ??”
তামান্না বুঝতে পারছে না কি বলবে।সিয়ামের তো বুঝা উচিত এটা তার-ই তৈরী করা চিহ্ন।
“কি হলো বল??কালো হলো কি করে??কাল রাতে তো দেখি নি।”
তামান্না কিছু বলল না।সিয়ামের বুকে ধাক্কা দিয়ে বলল,
“আমি জানি না। সর তুই…..”
সিয়াম এই মুহুর্তে ধরতে পেরেছে তামান্নার গলায় দাগ টা কিসের।
সিয়াম দাগ টার দিকে তাঁকিয়ে দুষ্টুমি হাঁসি হাঁসছে।
তামান্নার কেমন যেনো লাগছে।
ঠিক লজ্জাও না আবার খারাপ বা ভালো এমন কিছুও না।তামান্না বুঝতে পারছে না এ যেনো কেমন একটা অনুভুতি!!
“ছাড়…..”
“এই শোন না….”
“কি??”
“তাঁকা আমার দিকে….”
তামান্না সিয়ামের দিকে তাঁকালো।সিয়াম তামান্নার চোখে চোখ রেখে বলল,
“আমি না রেজিস্ট্রির পর থেকে। আই মিন শাড়ি পড়া তামান্নাকে দেখে ক্রাশ খেয়েছিলাম।তারপর কেনো জানি তোকে বন্ধুর চেয়ে আরও বেশী আপন করে নিতে ইচ্ছা করতো।একটা ভালো লাগা বেড়ে উঠেছিলো তখন থেকেই।আর আস্তে আস্তে সেটা প্রেম তারপর ভালোবাসা।তোর মনে আছে??তোঁকে যে শাড়ি টা গিফ্ট করেছিলাম সেদিন রাতে-ঐ দিন খুব ইচ্ছা করছিলো তোকে ভালোবাসি বলতে কিন্তু কেনো জানি পারি নি…..”
তামান্না কিছু বলল না।
সে শুধু সিয়ামের কথা গুলো শুনে যাচ্ছে।
সিয়াম আবার বলা শুরু করল,
“তোর বাসায় যাওয়ার পর রেজিস্ট্রি করার দিন-ই তোর খোলা চুল দেখতে পারি আমি।কেনো?কি কারণ জানি না??আমার ভেতর টা কোনো নারীর প্রতি প্রথম এতোটা গিথে গিয়েছিলো।”
সিয়াম তামান্নাকে নিজের আরও কাছে চেপে ধরল।
বলল,
“এতো সুন্দর কেনো হতে গেলি তুই??আর আমি এত বছর তোর সাথে থেকেও কেনো বুঝতে পারলাম না বলতে পারিস??”
তামান্না চোখ নামিয়ে ফেলল।
ওর গলা জড়িয়ে আসছে।
কি বলবে সে??
কিছু কি বলার আছে!!
“কি হলো!!!কিছু তো বল….”
অস্ফুটস্বরে তামান্না বলল,
“জানি না আমি…..”
সিয়াম হাঁসলো।বলল,
“তুই না জানলেও আমি জানি….”
তামান্না আবারও তাঁকায় সিয়ামের দিকে।কৌতুহল নিয়ে জানতে চায়,
“কি??”
“হুমমম……দেখাচ্ছি…..”
সিয়াম তামান্নাকে এক মুহুর্ত সময় না দিয়েই পাজা কোলে করে করে বারান্দার দিকে যেতে শুরু করল।
ঘটনা আকস্মিক হওয়ায় তামান্না ভয় পেয়েছে একটু।
“আরে কি করছিস???পড়ে যাবে তো….”
সিয়াম তামান্নার দিকে তাঁকিয়েও কিছু না বলে তাঁকে ডিভানে বসিয়ে দিলো।দু হাত দেয়ালের উপর রেখে তামান্নাকে আটকে নিয়ে বলল,
“তুই না জানলেও হবে আমার।আমি সব জানি….”
“মানে??”
সিয়াম তামান্নার কাছে এসে নাকে নাক ঘষলো।বলল,
“বান্ধবী রে।তোর রূপে তো কালীদাস হয়ে যাই আমি।কি হবে বল তো??”
“সর তো।ঢং যতো।কালিদাস তো লুচু একটা।”
“হুম।ঠিক বলেছিস।তোর জন্য আমি কালিদাস হয়ে গেছি।তার মানে আমিও লুচু।তাই না?? ”
“দেখি সর।আন্টির কাছে যাবো আমি….”
“ধাক্কাস কেন রে মেয়ে!!!তোর যা শরীর!!!কাল রাতে তো….”
তামান্না সিয়ামের মুখে হাত দিয়ে আটকে দিল।
বলল,
“প্লিজ!!!…….”
এই মুখটা সিয়ামকে আরও মায়ায় ফেলে দিল।সে তামান্নার হাতে আলতো করে একটা কামড় দিয়ে বলল,
“কি প্লিজ।সত্যি বলছি তুই অনেক স্ফট…..আমার তো বার বার….”
সিয়াম কথা শেষ না করেই তামান্নার দিকে এগুতে থাকে।
তামান্না জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।সিয়াম কাছে আসলে ওর সব কিছু কেনো যে অস্বাভাবিক হয়ে যায় বুঝতে পারে না মেয়েটা।
সিয়াম তামান্নার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবাল বলে!!!!
দুজনেই আবেশিত হওয়ার অপেক্ষায় চোখ বন্ধ করে ফেলল।
আর ঠিক তখনি…………….