#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৪৭……………………………..
তামান্নাকে নিয়ে সিয়াম বাসায় আসে।
সিয়ামের মা তামান্নার অবস্থা দেখে রীতিমতো পাগল হওয়ার অবস্থা।অন্যান্য শাশুড়ি হলে এতক্ষণে প্রশ্ন করতো গালে খামচির দাগ কেনো।কিন্তু সিয়ামের মা রীতিমতো কান্না শুরু করেছে।তামান্নার মাথাটা নিজের কোলের উপর উঠিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকছে,
“ও মা,চোখ খোল।মা রে।ওর সেন্স চলে গেলো কি করে??হায় আল্লাহ!মা রে…ও মা তাকা আমার দিকে।”
সিয়ামের বাবাকে ফোন করলেন তিনি।
সিয়ামের দিকে তাকিয়ে রাগে গজগজ করে বললো,
“মরতে পারিস না তুই।আমার এতদিনে মনে হচ্ছে তোর সাথে এই মেয়েটার বিয়ে দিয়ে আমি মস্ত বড় ভুল করেছি।মেয়েটাকে ভার্সিটিতেই তুই দেখে শোনে রাখতে পারিস না।সারা জীবন তো বাকী এখনো!!আল্লাহ্!”
সিয়াম কিছু মনে করলো না।এসব মায়ের রাগের কথা সে জানে।
কারণ ওর মা এখনো কিছু জানে না।
তামান্নার সেন্স নেই তাতেই ওনি এতোটা ঘাবড়ে গেছেন।পুরা টা জানলে তো সিয়ামকে পেটানোই শুরু করবে।
তবে সত্যিই তো ওর দেখে রাখা উচিত ছিলো-ভাবতেই খারাপ লাগছে ওর।
তবে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রোদ।
তাকেও হসপিটালে নিতে হবে।
তাই সিয়াম বললো,
“আম্মু আমি আসছি….”
“কোথায় যাস তুই??মেয়েটার এই অবস্থা?”
আকাশ বললো,
“আন্টি আঙ্কেল তো আসছে।আর রিধী,সাইমা আছে এখানে তামান্নার কোনো প্রবলেম হবে না।”
“কিন্তু যাচ্ছে টা কোথায় তোমরা??”
“আম্মু,এসে সবটা বলবো তোমায়।এখন হাতে সময় নেই।”
!
সিয়াম আকাশকে নিয়ে ভার্সিটি চলে যায়।সিয়াম বাইরে প্রকাশ না করলেও ভেতরে একটু ভয়ে পাচ্ছে।
আর তার কারণ হচ্ছে তামান্না।সিয়াম কোনো ভাবেই চায় না তামান্নার হাতে কারো ক্ষতি হোক।কেন না তামান্না এটা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারবে না।
ল্যাবের কাছাকাছি গিয়ে আকাশ বললো,
“কি ব্যাপার??এদিকে সব তালা বদ্ধ??কেউ কি সত্যই আসে নি এদিকে।”
“দোস্ত,মাঝে মাঝে জীবনে চলার পথে ক্ষমতার উগ্র প্রয়োগও করতে হয়।ভালোবাসার মানুষটার জন্য হলেও।তা না হলে টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়।”
আকাশ কিছু বললো না।যা বুঝার সে বুঝে গেছে।সিয়াম-আকাশ ভেতরে ডুকলো।
সিয়াম ভয় পাচ্ছে এতক্ষণ এসিড পুরা হয়ে রোদের না উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায়।
কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো তাদের।
রোদের নিশ্বাস চলছে।
তবে এই মুহুর্তে হসপিটালে না নিয়ে গেলে বিশাল কিছু হয়ে যেতে পারে।
আকাশ আর সিয়াম ধরাধরি করে রোদকে ল্যাব থেকে বের করলো।ল্যাবের সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
সাধারণ ছাত্ররা দেখে ফেললে আরেক ঝামেলা হবে।ক্ষমতা উপরমহলে দেখানো যতটা না সোজা তার চেয়ে সাধারণ জনগণের উপর প্রয়োগ করা ততটাই কঠিন।
ল্যাবের পেছনেই গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলো সিয়াম।সরাসরি রোদকে নিয়ে সেখানে চলে যায়।তারপর সোজা হসপিটাল।ডাক্তার প্রথমে পুলিশ কেস বললেও আকাশ রোদের আইডি কার্ড শো করে বললো,
“ল্যাবে কাজ করতে গিয়ে ফ্লিটার করতে গিয়ে এমন হয়েছে।”
ক্যামিকেল ক্যামেস্ট্রির ছাত্র দেখে ডাক্তার কথাটা বিশ্বাস না করে পারলেন।
কেন না আল্লাহর রহমতে রোদের চোখে মুখে কোনো এসিড লাগে নি।
!
এদিকে রিধী,সাইয়া সবটা খুলে বললো সিয়ামের বাবা মাকে।শুধু এসিড মারা ঘটনা টা লুকিয়ে রাখলো।সব শুনে সিয়ামের বাবা রীতিমতো রেগে আগুন।রোদের মতো ছেলেকে সাইজ করতে যে ওনার পাঁচ মিনিটও লাগবে না তা তিনি জানিয়ে দিলেন।আরও জানালেন ভার্সিটিতে কি করে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।তিনি ভার্সিরি কতৃপক্ষেরও সাথেও কথা বলবেন।আর এই কাজ টা তিনি ফেলে রাখলেন না।
সরাসরি ভিসি কেই ফোন করে বসলেন।ওনি যেভাবে ভিসির সাথে কথা বলেছেন তাকে আলাপ বলা হয় না বলা হয় শাসানো।
তিনি জানান,
“রোদ,নামের ছেলে টা যদি আর দ্বিতীয় বার ভার্সিটিতে আসে তাহলে এমন ভিসি পাল্টাতে দুবার ভাববো না আমি।আর যে ঘটনা টা আমার ছেলের বউয়ের সাথে হয়েছে সে জন্য যেনো তার কোনো রকম সম্মানহানি না হয়।ব্যাপার টা মাথায় রাখবেন।”
এদিকে রোদের বাবা-মাকেও খবর দিয়েছে সিয়াম।
তারা এলে জানতে চাইলে আকাশ বললো,
“আন্টি,আমরা জানি না।রোদ ই ভালো বলতে পারবে।ওর সেন্স আসলে আপনারা ওর কাছে যেনে নিবেন।আর ডাক্তার বলেছে ভয়ের কিছু নেই।তবে যেটুকু পুরেছে সেরে উঠতে মাস খানেক লাগবে।
!
রোদেকে বার্ন ইউনিটে রাখা হয়েছে।ব্যথানাশক ঔষধ আর এসিড রিমোভ দেওয়ায় বারো ঘন্টার আগে চোখ খুলবে না সে।এই সুযোগে সিয়াম তামান্নার কাছে যাওয়ার কথা বললো আকাশকে।
আকাশ বললো,
“হ্যাঁ।কিন্তু রোদের সেন্স আশা মাত্রই প্রথমে যেনো আমরা দেখা করতে পারি।কোনো রিস্ক নেওয়া যাবে না।”