#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৪৮………………………….
সিয়াম তামান্নার পাশে বসে আছে।
তামান্নাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে।সে ঘুমাচ্ছে।সিয়াম তার বাবার সাথে রোদের বিষয় টা নিয়ে কথা বলেছে।তবে সিয়াম এখন সেসব নিয়ে ভাবছে না।ও অপেক্ষা করছে কখন তামান্নার ঘুম ভাঙবে।
ঘড়ির দিকে তাকালো সিয়াম।রাত প্রায় তিন টা।
ঘুমও আসছে না।বারবার তামান্নার কান্নারত মুখ টা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।আর রোদের প্রতি রাগ টাও যেন ক্রমশ বেড়ে উঠছে।
রোদের জীবন টা শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছিলো সিয়ামের।কিন্তু তা করে নি।
শুধু তামান্নার কথা ভেবে।
তামান্না যে এসব সহ্য করতে পারবে না।
তবে রোদকে তার উচিত শিক্ষা দিবে সে।
যেভাবে তামান্নার দিকে নজর দিয়েছে,যেভাবে ওর ক্ষতি করার চেষ্ঠা করেছে তার চেয়ে আরও বেশী ক্ষতি করবে সিয়াম।
ভাবতে ভাবতে সিয়াম একটু চমকে উঠলো।
তামান্নার দিকে তাকাতেই দেখলো-সে বিড়বিড় করে কিছু বলার চেষ্ঠা করছে।
তবে কি বলছে স্পষ্ট কিছু বুঝা যাচ্ছে না।
সিয়াম তামান্নার মুখের কাছে কান নিয়ে শোনার চেষ্ঠা করলো।তামান্না বলছে,”ছেড়ে দাও আমাকে।”
আবার বলছে,”না….”
“ও আমার স্বামী….”
“তুই একটা জানোয়ার…”
সিয়াম বেশ বুঝতে পারছে তামান্না স্বপ্ন দেখছে।দিনে যা হয়েছে ওর সাথে তাই রিপিস হচ্ছে।
তামান্না ঘুমের মাঝের সিয়ামের হাত দুটো খামচে ধরলো।দরদর করে ঘামছে সে।
সিয়াম তামান্নার এই ভীত সন্ত্রস্ত মুখটা আর সহ্য করতে পারলো না।আস্তে করে ডাকলো তামান্নাকে।
“তামান্নু….”
“তামান্নু,এই তো আমি।চোখ খোল।দেখ,কিচ্ছু হয় নি।”
তামান্না হঠাৎ ধপ করে উঠে বসলো।
সিয়ামকে আশে থেকে বেশ চমকেও বেশ।
তারপর হঠাৎ আশেপাশে খেয়াল করতেই পুরো বিষয়টা মাথায় আসলো ওর।
তামান্না এসি তেও ঘেমে একাকার।
ভয়ে পুরো শরীর কাপছে ওর।
সিয়াম কিছু বলার আগেই তামান্না সিয়ামের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।বললো,
“আমি……..”
কান্না করে ফেললো তামান্না।
আর কিছু বলতে পারলো না।
সিয়াম তামান্নার মাথায় পিঠে হাত রেখে সান্তনা দিতে দিতে বললো,
“কাদিস না।তুই ভয় কেনো পাচ্ছিস?আমি আছি না।”
তামান্না ডুকরে কাদছে।আর কাদবেই বা না কেনো!ওর একুশ বছরের জীবনে আজকের মতো এমন জঘন্য পরিস্থিতে ও কখনো পড়ে নি।
সিয়াম তামান্নাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
“ঐ পাগলী,এভাবে কাঁদলে আমার ভালো লাগে বল তো?আমি আছি তো তোর পাশে।কিচ্ছু হয় নি। এভাবে কাঁদার কি আছে!কাঁদিস না আর।”
তামান্না সিয়ামের শার্ট খামচে ধরে আছে।সিয়ামের বুকের ভেতর ছোট্ট একটা পাখির মতো আটকে আছে ও।
সেভাবে থেকেই কেঁদে কেঁদে জবাব দিলো,
“তুমি জানো না ও আমার….”
“আমি জানতে চাইছি না এখন।আগে কান্না বন্ধ কর তুই।”
সিয়াম তামান্নার দু গালে হাত দিয়ে চোখ মুখ টা তুলে ধরলো।চোখের পানি মুছে তামান্নার দু’চোখে চুমু দিয়ে বললো,
“এই চোখে আর পানি না প্লিজ।”
তামান্না কেদেছে অনেক।তাই হিচকি এসে গেছে।সিয়াম পানির গ্লাস টা এগিয়ে দিলো তামান্নার দিকে,”আগে পানি টা খা।”
তামান্না ঢকঢক করে পুরো গ্লাসের পানি টা খেয়ে নিলো।
সিয়াম আবারও তামান্নাকে বুকে টেনে নিলো।
বললো,”এখন বল কি বলবি।”
তামান্না ছলছল চোখে তাঁকালো সিয়ামের দিকে।ডান হাতে সিয়ামের গালে আলতো করে স্পর্শ করে কাঁপাকাঁপা হাতে ঠোঁটে আঙ্গুল রাখলো।
তারপর আদুরে কন্ঠে বললো,
“আমার ঠোঁটে তো তুমি কিস কর।রোদ না…..”
তামান্না আর বলতে পারলো।গাল বয়ে থরথর করে পানি পড়লে লাগলো।
তামান্নার কথাটা শোনে বুঝতে সিয়ামের বুঝতে আর বাকী রইলো না।রোদ কি করেছে ওর সাথে।
সিয়াম কিছু বলার আগের তামান্না পাগলের মতো ওর চোখ দুটো মুছে নিলো।
সিয়ামের একদম কাছে গিয়ে নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বললো,
“জানো,ও আমার এখানেই জোর করে চুমু দিয়েছে।তুমি আমাকে এখানে এমন ভাবে আদর করো যেনো ওর কোনো….”
তামান্না আর কিছু বলতে পারলো না।সিয়াম তামান্নার দু গাল চেপে ধরে গভীর ভাবে চুমু দিতে লাগলো।
তামান্নার মনে হলো ওর এই ঠোঁটের সব পাপ ধুয়ে মুছে যাচ্ছে।সে ও পাগলের মতো সিয়ামের ঠোঁট আকড়ে ধরলো।সিয়াম তামান্নার চুলের ভেতর হাত দিয়ে তামান্নাকে আরও গভীর করে সুখ দিতে শুরু করেছে।যতটা সম্ভব হয় সঙ্গিনীকে ভালোবাসার ততটা!হৃদয়ের গভীর থেকে।ও চায় না তামান্নার কোনো কমতি থাক।ওর আদরে তো একদম না।
সিয়াম তামান্নার ঠোঁটে বেশ কয়েকটা কমড়ও দিলো।তামান্নাও সিয়ামের শার্ট আকড়ে ধরে এমন করে আদর করলো সিয়ামের ঠোঁটে।যেনো সমস্ত অপমান,পাপ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার কামনায় মেতে উঠেছে সে।
দীর্ঘ সময় পর সিয়াম তামান্নার মুখ টা তুলে ধরে বললো,
“কি হুম??রোদ তোকে এভাবে চুমু দিতে পেরেছিলো??”
তামান্না মাথা নাড়ে না জানালো।সিয়াম বললো,
“এটা নিয়ে আর কোনো দিন কথা তুলবি না।তুই দেখিস ওর ঠোঁট আমি কি করি!!”
তামান্না সিয়ামের দিকে তাঁকিয়ে রইলো।তারপর তা থেকে ওড়না টা ফেলে দিয়ে নিজের গালে হাত রেখে বললো,
“এখানে হাত দিয়েছিলো ও।”
তারপর ঘাড়ের পেছন আর গলায়ও হাত দিয়ে বললো,
“এখানেও মুখ দিতে চেয়েছিলো।আর যখন ওড়না টা খুলে চাইছিলো আমি নিজেকে বাঁচানোর জন্য এসিড…..”
তামান্না আঁতকে উঠলো।ও কখনো কারও ওপর হাত তুলে নি।ছোট সময়ও না।আর সে মেয়ে কি না আজ বাধ্য হয়েছে কাউকে এসিড ছুড়তে।
সিয়াম তামান্নার দু কাঁধে হাত রেখে বললো,
“যা করেছিস ঠিক করেছিস।”
“আমি না বাধ্য হয়ে ছিলাম।”
“আমি জানি তো।আমার জান না টা নিজের সম্মানের জন্য এমন টা করেছে।মুখে মারতে পারলি না ওর?তাহলে তো আরও ভালো হতো।”
“আমি তো খালি নিজেকে ছাড়াতে চেয়েছি।পায়ে দিতে চেয়েছিলাম।কিন্তু ও তো পেছণ থেকে এমন করে জড়িয়ে ধরেছে তাই সরাসরি যেভাবে পেরেছি ছুড়ে দিয়েছি।আমি ওর ক্ষতি চাই না।শুধু….”
“চুপ।এত দয়া কেনো তোর।খুন করে দিলে আরও খুশি হতাম।শুধু তোর কথা ভেবেই ওকে হসপিটালে ভর্তি করেছি।তা না হলে ল্যাবই খুন করতাম আমি।”
“না। ”
“আমি জানি তো।তাই করে নি কিছু।”
“এখন কেমন আছে?”
“ভালো।”
“বেশি পুরেছে?”
“গলা আর বুক।”
“ও….”
“আচ্ছা ঠিক আছে।তুই ঘুমা এখন।আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।”
সিয়াম তামান্নাকে শুইয়ে দিতে চাইলো।তামান্না সিয়ামের হাত টা ধরে ফেললো।
“না।ঘুমাবো না আমি।”
“কেনো?”
তামান্না সিয়ামের একদম কাছে গিয়ে বসলো।তারপর গলায় হাত দিয়ে বললো,
“আজ আমার শরীর অন্য কারও হাত লেগেছিলো।আমি কিছুতেই মানতে পারছি না।তুমি আমায় আজ এমন করে আদর করো যেন আমি সে খারাপ স্পর্শ আমার মাথাতেই না আসে।”
সিয়াম তামান্নার হাত ধরে বললো,
“কেনো এমন করছিস।তোকে ডাক্তার….”
“আমার ডাক্তারের পরামর্শ মানার দরকাী নেই।আমার তোমার স্পর্শ দরকার।করো না আমায় স্পর্শ।আমি চাই।”
সিয়াম তাকিয়ে রইলো তামান্নার দিকে।তামান্নার দু কাধে হাত দিয়ে আস্তে করে শুইয়ে দিলো তাকে।
সিয়াম তামান্নার কাছে আসতেই তামান্না আটকে নিয়ে বললো,
“শার্ট টা খুলো না!!”
সিয়াম তাই করলো।
তামান্নার উপর শরীর রাখা মাত্রই তামান্না বললো,
“আমাকে প্লিজ কিছু মনে করতে দিও না।আমি ভুলতে চাই সব।তোমার ভালোবাসায় ভুলিয়ে দাও…প্লিজ….”