#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৫০………………………………
আজ দু দিন পর সিয়াম ভার্সিটিতে যেতে চাইছে।তামান্নাও মোটামোটি স্বাভাবিক।কিন্তু অস্বাভাবিক হয়ে গেছে রোদের জীবন।ভার্সিটি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাকে।আর কোথায় সে তার গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারবে না।দোষস্বরূপ মেয়েদের সম্মানহানীর সিল দেওয়া আছে চারিত্রিক সার্টিফিকেটে।কিন্তু তামান্না যে তাকে এসিড দিয়েছে বা এর সাথে তামান্না জড়িত তা কেউ জানে না।তামান্নার বাবা-মা বিষয় টা শোনে রীতিমতো আতকে গেছেন।তারা কখনো তাদের মেয়েকে নিয়ে এমন ঘটনার সম্মুখীন হন নি।তামান্নার ভাইয়াও ক্ষেপে আছে।কিন্তু একটা ছেলের জীবন নষ্ট করতে আর কি লাগে!এতে যদি রোদের শাস্তি না হয় তাহলে তার সারা জীবনেও শাস্তি হবে না।
!
কিন্তু এদিকে সিয়াম পড়েছে তামান্নাকে নিয়ে।কারণ তামান্না আজও ভার্সিটিতে যেতে চাচ্ছে না।
সিয়াম অনেক জোর করছে তবুও সে রাজি না।সিয়াম শেষমেষ ধমক দিয়ে বসলো, “শেষ বারের মতো বলছি-রেডি হয়ে নে।”
তামান্না মিনমিন করে বললো, “আমার ভালো লাগছে না তো।”
“তোর কি প্রব হ্যাঁ?ভার্সিটিতে না গিয়ে বাসায় বসে থাকতে চাস তুই?তাতে ভালো লাগবে?”
তামান্না মাথা নিঁচু করে বসে রইলো।কিছু বললো না।
সিয়াম কিছুক্ষণ রাগী চোখে তাকিয়ে মাথা ঠান্ডা করে ওর পাশে বসলো।
আর তামান্না তখনি কেঁদে ফেললো।বললো, “আমার ভার্সিটির কথা মনে পড়লেই ঘটনা টা মাথায় আসে।”
সিয়াম একটু ঘাবড়ে গেলো-তামান্না কাঁদছে।আজকাল তামান্নার একটু মন খারাপ, কান্নাকাটিও সিয়ামের সহ্য হয় না।মনে হয় বুকের ভেতরের কি যেনো পুড়ে যায়।
তামান্না সিয়ামকে জড়িয়ে ধরলো।বুকে মাথা চেপে ধরতেই তামান্না আরও বেশি কাঁদলো।সিয়াম তামান্নার চুলের ভেতর হাত দিয়ে তাকে বুকের আরও কাছে নিয়ে আসে।সিয়ামের ইচ্ছা হচ্ছে যদি তামান্নাকে নিজের বুকের ভেতরে ডুকিয়ে রাখতে পারতো তাহলে হয়তো এই পৃথিবীর সমস্ত খারাপ থেকে তামান্নার মুক্তি হতো।কিন্তু তা তো সম্ভব নয়।এই পৃথিবীর সমস্ত ভালোর সাথে খারাপ টাও আমাদের মানতে হবে।হয়তো কষ্ট হবে তারপরও মেনে নিতে হয়।তামান্নার সাথে যা হয়েছে তা যে কোনো মেয়ের জন্যই অসম্মান এবং কষ্টের।তাই বলে তো এভাবে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না।সবকিছু কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে।কিন্তু তামান্না সেটা করতে পারছে না।এই দু-তিন যাবত খুব দরকার না হলে রোম থেকে বের হয় নি।রাইয়ানের সাথেও তেমন কথা বলে নি।শশুড়-শাশুড়ির সামনেও কেমন একটা লজ্জা নিয়ে দাড়ায়।
এমনকি গতকাল তার পরিবার আসলেও সে দৌড়ে তাদের সামনে যায় নি।দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলো।কিন্তু সিয়ামের জোড়াজোড়িতে যদিও তাদের সামনে গিয়েছিলো বাবা আর ভাইয়াকে দেখে প্রচুর কান্না করছিলো।কেননা এই জীবনে এমন লজ্জাস্কর পরিস্থিতে সে আর পড়ে নি।সারা জীবন বাবা,ভাই,সিয়াম আগলে রেখেছে।আর তারওপর সে এই দুনিয়ার নিষ্ঠুরতম ঘটনা সর্ম্পকে কম অবগত।আর তাছাড়া রোদকে সে এসিড মেরেছে এটাও সে মানতে পারছে না।সআ মিলিয়ে তামান্না নিজেকে গুলিয়ে ফেলছে।
এখনো তামান্না কাঁদছে।সিয়াম একটু কাঁদার সুযোগ দিয়েছে তাকে।তবে আর সহ্য করতে পারছে না।তামান্নার মুখ টা দু হাতে তুলে ধরে চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো, “অনেক হয়েছে।কাঁদার সুযোগ পেয়ছো বলে যে কান্না থামাবে না!সেটা হবে।এই যে এখন থেকে চোখে যেনো একটু পানি না আসে।”
তামান্না সিয়ামের দিকে শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।এই চাহনীতে না কোনো চাওয়া না কোনো আকাঙ্ক্ষা!কিচ্ছু নেই।যেনো রিক্ত চোখের রিক্তার আভাস।সিয়াম তামান্নার গাল থেকে হাত সরিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে এলো।তামান্না যেমন ছিলো তেমন বসে রইলো।সিয়াম আগের মতোই তার পাশে বসে-তামান্নাকে বুকে টেনে নিলো।
গা থেকে ওড়না টা সরিয়ে দিয়ে বললো, “সব সময় আমার সামনে ওড়না না পরলেও পারো।”
তামান্না কিছু বললো না চুপচাপ সিয়ামের বুকে মাথা রেখে বসে রইলো।কত যে শান্তি এই বুকে!তামান্না এই সুখের আভাস রেজিস্ট্রির ঐ যে প্রথন দিন গাড়িতে সিয়ামের বুকে মাথা রেখেছিলো তখনি বুঝে গিয়েছিলো।
সিয়াম তামান্নাকে বুকে নিয়ে শুয়ে রইলো।তামান্নার পিঠে আলতো করে ছুয়ে দিতে দিতে বললো, “কান্নাকাটি যেনো আর না হয়।আজ ভার্সিটি মাফ।কিন্তু কাল যেতে হবে।”
তামান্না কিছু বলতে চাইছিলো।সিয়াম তার আগেই বলে ফেললো,
“ঘুরতে যাবে?”
তামান্না সিয়ামের বুকে না ঘসে বললো, “না।”
“কেনো??”
“এমনি।”
“লং ড্রাইভ।”
“উমহু।”
“তাহলে কি করবে??”
“এভাবেই ভালো লাগছে।”
“আচ্ছা।ঠিক আছে।”
সিয়াম আর কিছু বললো না।তামান্নার মাথাটা বুকে চেপে নিয়ে অন্য হাতে তামান্নার গাল,গলা,পিঠে আলতো করে আদর করতে থাকলো।যেনো তামান্না একটু আবেশিত হয়।তার মনের ভেতর জমে থাকা গোমট ভাবটা কেটে যায়।
বেশকিছুক্ষণ পর তামান্নার হঠাৎ কি যে হলো সে সিয়ামের বুক থেকে মাথা তুলে সিয়ামের মুখের উপর মুখ রাখলো।সিয়াম একটু অবাক হলেও হাসলো।কারণ তামান্না সচারচার এমন করে না।লজ্জা পায়।
তামান্না সিয়ামের মুখের উপর মুখ রেখেই বললো, “হাসছো কেনো?”
“কই?”
“আমি দেখেছি।”
“আচ্ছা আর হাসবো না।”
“হুম ঠিক আছে।”
তামান্না নিজেকে আরও একটু লজ্জাহীন করে সিয়ামে গালে,ঠোঁটে আলতো করে স্লাইড করে ঠোঁট জোড়ায় নিজের কমল ঠোঁট দুটো প্রতিস্থাপিত করলো।কি হচ্ছে বুঝা মাত্রই সিয়াম তামান্নার চুলের গোড়ায় শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে আরও গভীর ভাবে নিজের মাঝে আকড়ে ধরলো তামান্নাকে।দু জনে নাম লিখালো ভালোবাসা নামক প্রতিযোগীতায়।কে কতটা গভীর করে ঠোঁটে আদর করতে পারে।কিন্তু কেউ যেনো হারার নয়।দুজনেই উন্মাতাল ভালোবাসার প্রকোপ।
সিয়ামের একটা হাত তামান্নার জামার পেছনে চলে গেছে।সে আস্তে করে জামার চেইন টা খুলে দিয়ে অন্তর্বাসের লকেট টাও খুলে দিলো।তারপর আর কোনো কিছু মাথায় আনে নি।তামান্নাকে তার ভালোবাসার হার মানাতে উল্টো করে নিলো।তামান্নার নরম হাত দুটো চেপে ধরলো চাদরে-ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে গলায় আদর করতে লাগলো।দু জোড়া পায়ের তীব্র ঘর্ষণে বিছানায় চাদর টা যখন এলোমেলো তখন সিয়ামের ভালোবাসার আদরে তামান্না এক ছোট্ট চড়ুই পাখির মতো ছটফট করায় ব্যস্ত।
তারপর তারপর তারপর!
দুজনের শরীর আবৃত হলো সাদা চাদরে।একে একে দুজনের পরিধেয় জিনিসগুলো খসে পড়লো ফ্লোরে।দূরে কোথায় হয়তো কোনো ব্যস্ত গাড়ির হর্ণ শোনতে পাওয়া যাচ্ছে।তবে সেই শব্দ সিয়ামের কানে পৌছাচ্ছে না।তখন তো তার কানে তামান্নার ভালোবাসার কমড় পড়ছে।শব্দ আসছে তামান্নার নেশাতুর সুখশব্দের।
যে সুরে আচ্ছাদ্বিত হয়ে সিয়াম কমশ্র ডুবে যাচ্ছে তামান্নার মাঝে।হারিয়ে যাচ্ছে ভালোবাসার রঙীন মিলন মেলায়।যে মেলায় সুখ কিনতে গিয়ে তামান্না দুনিয়ার সব কিছু ভুলে গেছে।ভুলে গেছে নিজের সব অসম্মান সব কষ্ট।শুধু আকড়ে ধরছে নিজের মাঝে পাওয়া নিজের অর্ধাঙ্গিনীকে।নিজের সব টা সপে দিয়েও যে নারী জাতির এতো সুখ সেটা তামান্না সিয়ামের কাছ থেকে জানতে পেরেছে।বুঝতে পেরেছে একজন পুরুষের বলিষ্ঠ লোহাবিষ্ঠ শরীর কখনোই নারীর উপর আঘাত বা পুরুষত্বের বেড়াঝাল হতে পারে না।এই দেহের কঠোরতা তো নারীর কমল শরীরে ভালোবাসার আন্দোলন।
অথচ দিনের পর দিন যে সব পুরুষ এই কথাটা মাথায় না রেখে নিজের নারীর শরীরেরে উপর জারি করে,ভালোবাসা মানে নারীর যোনীতে প্রবেশ ভেবো বসে তাকে তারা তো নরপশু।তাদের না আছে কোনো সঙ্গা না আছে কোনো মানবিকতা।এই তো ভালোবাসাই!সেটুকু দিয়েই তো জয় করে নেওয়া যা একটা নারীকে।আর কি দরকার হয়?এতো কঠোরতার কি আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে??
কই সিয়ামের তো প্রয়োজন হয় না।কখনো কি মুগ্ধ নামের মানুষটার হয়েছিলো?আচ্ছা কখনো কি সাদাদের হয়েছিলো??হয়েছিলো কি বদ্ধুদেব বা সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের??
তারা ভালোবাসেই জয় করেছিলো নারী।নারীর মন।নারীর মন,শরীর,মস্তিক ছাড়িয়েও প্রবেশ করেছিলো গভীরতম স্মৃতিতে যেখানে দুঃখ থাকলেও সুখের ছায়া ছিলো অমর,অভিলাসী।