নতুন তুই আমি পর্ব-৫১

0
1891

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৫১…………………………………..
সিয়াম আজ তামান্নাকে নিয়ে লং ড্রাইভে যাচ্ছে।তামান্নার কোথাও যাওয়া মানে দূরে লম্বা জার্নি।কি যে ভালো লাগে তামান্নার!জানালার কাঁচ নামিয়ে দূরে মাঠ-দূরন্ত গাছ দেখতে ভীষণ আনন্দ লাগে তার।
সিয়াম রেডি হচ্ছে।তামান্না ওয়াশরোমে শাড়ি চেন্স করছে।এমন সময় রাইয়ান দৌড়ে রোমে আসে।চিৎকার করে বলে, “ভাবী,আমি রেডি।দেখো না কেমন লাগছে।”
সিয়াম অবাক হয়ে তাকালো।
রাইয়ানও অবাক-কাকে ভাবী ডাকলে ঘরে তো ভাবী নেই।আর সিয়াম অবাক হচ্ছে এই পিচ্চি এতো সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছে!
রাইয়ান উচ্ছাস্বিত হয়ে জামা ধরে ঘুরে ঘুরে বললো, “ভাইয়া দেখো না!কেমন লাগছে আমায়?”
সিয়াম তাকিয়ে থাকলো শুধু।
রাইয়ান আবার বললো, “কি হলো?বলো না?কেমন দেখাচ্ছে।”
“কেমন আবার!পেতনীকে তো পেতনীর মতোই লাগবে।”
“কিহ!!”
তামান্না শাড়ি পড়ে বের হয়ে এলো।
“কি ব্যাপার??কি হলো তোমাদের?”
“ভাবী!আমাকে নাকি পেতনীর মতো লাগছে?”
“ছিঃ কি বলো!একদম পরী লাগছে আমার বোনো টা কে।”
সিয়াম তামান্নার দিকে তাকিয়ে।কালো রং টা তামান্নার সাদা ধবধবে সুন্দর দেহ কাঠামোর উপর এতো সুন্দর মানায়!
সিয়ামের সামনে গিয়ে তামান্না বললো, “তোমার চোখ খারাপ হয়েছে।ডক্টর দেখাতে হবে।”
সিয়ামের ধ্যান ভাঙ্গলো।বললো, “মানে?”
“হুম।তা না হলে নিজের এতো সুন্দরী বোনকে কেউ উল্টাপাল্টা বলে?”
“সুন্দরী।হাঃ হাঃ হাঃ।”
“ধুর তুমি না!রাইয়ান তুই সিউর থাক।তোকে অনেক জোশ লাগছে তোর ভাইয়া কেমন তুই তো জানিস।”
রাইয়ান কিছু বলার আগেই সিয়াম বললো, “রাইয়ান,তুই একটু বাইরে যা তো।”
“উফফফ।ভাবী কেনো??তুমি দ্রুত রেডি হচ্ছো না কেনো??”
সিয়াম চোখ রাঙিয়ে বললো, “রাইয়ান তোকে কি বললাম?”
“ওকে বাবা!যাচ্ছি গো যাচ্ছি।সব সময় এত হাইপার!”
রাইয়ান চলে যাওয়ার পর-ই সিয়াম তামান্নার হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
তামান্না বললো, “আরে?কি হলো?”
“তুমি রাইয়ানকে আমাদের সাথে যাওয়ার পারমিশন দিয়েছো?”
“পারমিশন দিয়েছি বলতে আমি-ই ওকে যেতে বললাম।”
“তোমার মাথা ঠিক আছে!!মানে কি??”
“এখানে মাথা নষ্ট হওয়ার কি হলো?মেয়েটা সারা দিন কলেজ,কোচিং এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকে।কোথাও তো ঘুরতে যায় না।তাই ভাবলাম….”
“তাই তুমি আমাদের দুজনের সাথে নিয়ে নিচ্ছো ওকে।ধ্যাত।শোনো রাইয়ানকে না বলো।তুমি আর আমি যাবো।”
“সিয়াম!হাত ছাড়ো তো রেডি হবো।আর আমি তাকে না করবো কেনো?”
“তুমি আমি একা যাচ্ছি সে কেনো যাবে??আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না।ওকে,তুমি রেডি হও আমি রাইয়ানকে মানা করে আসছি।”
সিয়াম রোম থেকে বের হতে নিলে তামান্না আটকে ফেলে,
“তুমি এমন কেনো করছো।নিজের বোন ও তোমার।আর শোনো রাইয়ান না গেলে আমিও যাবো না।”
“কি?”
“হ্যাঁ।রাইয়ান যদি না যায় তো আমিও না।”
এই বলে তামান্না সোফায় বসে পড়লো।সিয়াম তাকিয়ে আছে তামান্নার দিকে।বেচারা ভেবেছিলো বউকে নিয়ে একটু রোমান্স করবে একা।কিছু প্ল্যানও করে ছিলো।কিন্তু ছোট বোনকে সাথে নিয়ে সেসব কি করে!!
সিয়াম ধপ করে তামান্নার পাশে বসে পড়লো।তামান্নার কমড় টা জড়িয়ে ধরে বললো, “সোনা আমার চল না।তুই আর আমি।উমমমমম্মা”
সিয়াম তামান্নার গালে কিস করলে তামান্না সিয়ামের মুখ টা সরিয়ে দিয়ে বললো, “চুমুতে কিছু হবে না।রাইয়ান যাবে তবেই আমি যাবি।”
“তামান্নু,বেবী!!!!!”
“ইশশশ!কি সব বলে।রাগ পায় কিন্তু।”
“ওকে জান।শোনা না আমরা দুজন যাই??”
“না রাইয়ানও সাথে যাবে।”
“ধুরর।।একা একটু বউয়ের সাথে…..”
তামান্না চোখ বড় করে তাকালে সিয়াম চুপ হয়ে গেলো।
কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থেকে সিয়াম একটা বুদ্ধি বের করলো।তামান্না বললো, “শোন,যদি রিধীকে আমাদের সাথে নিয়ে যাই??রিধী তো ড্রাইভ করতে পারে।রিধী আর রাইয়ান এক গাড়িতে গেলো তুই আর আমি এক গাড়িতে।রাজি তো??”
তামান্না চোখ ছোট করে তাকালো, “দুই গাড়ির কি দরকার।এক গাড়িতেই যাই চারজন।ভালোভাবে হেসে-গল্প করে যাওয়া যাবে।”
“নো নো নো।তুই বলেছিস রাইয়ান আমাদের সাথে যাবে।আমি তোর কথা রেখেছি। এবার আমার কথাও তোর রাখতে হবে।”
তামান্না ভাবলো।তারপর বললো, “ওকে।ডান।”
“তাহলে জানু তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিন।নাকি শুধি শাড়িতেই যাবেন।তবে এই শাড়িতেই যা লাগছে আরও গুছিয়ে নিলে তো…..”
“হ্যায়।সবসময়।রিধীকে ফোন করো আগে।”
!
সিয়াম বারান্দায় গিয়ে রিধীকে কল করলো।তামান্নাকে চুল টা বেধে হিজাব পড়ে হালকা সাজলো।রাইয়ান রোমে এসে বললো, “ভাবী!এখনো হলো না তোমার??”
“বোনো।আমাদের না আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।তোর রিধী আপু আসবে।”
“সত্যি??”
“হ্যাঁ রে।পাগলী।”
“ওয়াও তাহলে তো দারুণ হবে।”
এসময় সিয়াম রোমে এসে বললো, “রিধীর নাকি বাসায় গেস্ট আসবে সন্ধ্যায়। তাই যেতে পারবে।আকাশ যাচ্ছে।”
রাইয়ান বললো, “আকাশ আবার কে??”
তামান্না বললো, “তোর ভাইয়া আর আমার বন্ধু।”
“ওহ্।আমাদের সঙ্গে যাবে ওনি??”
“হ্যাঁ।আসছে।তুই আর আকাশ ভাইয়া এক গাড়িতে যাবি।আমি আর তোর ভাবী।”
“ভাইয়া!!!আমি তো ঐ ভাইয়াকে চিনি না।”
“আরে প্রবলেম নাই বোন।সে তোর ভাইয়ার মতই ভালো।”
“ইশশশশ!!তুমি ভালো???”
“তো??কি বলতে চাস??”
“হু।তুমি যদি ভালো হও তাহলে তো।”
“এই তোরা থামবি।দুটো এক হলেই শুরু করে।”
সিয়াম তামান্নার দিকে তাকালে।তামান্না রেডি।
কালো শাড়ি-সাদা হিজাব-হালকা গোলাপী ঠোঁট-চোখে কাজল ব্যাস এইটুকু।অপস্বরী পুরো!!!কোনো মেয়ে এতো রূপবতী হতে পারে!!আল্লাহ এতো মায়া কারও অবয়ব জুরে ছড়িয়ে দিলো!!যে কিনা সিয়ামের ভাগ্যেই জড়িয়ে গেছে।সিয়াম মুঁচকি হাসলো।
তামান্না রাইয়ানের সামনে এমন হা করে তাকিয়ে থাকায় একটু লজ্জা পেলো।বললো, “আমাদের বের হওয়া উচিত।”
সিয়ামের ঘোর কাটে, “হুম।চলো।”
ওরা নিচে নামতেই আকাশ গাড়ি নিয়ে হাজির।সিয়ামের মতো আকাশও দেখতে হ্যান্ডসাম।সিয়াম আজ কালো রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে।বেশ লাগছে।তামান্না-ই নিজে পচ্ছন্দ করে দিয়েছে সিয়ামকে।নিজের সাথে মিলিয়ে।
আর এদিকে আকাশ নীল রঙের পাঞ্জাবী!শুক্রবার তাই এমন ড্রেসই পেফার করেছে।আকাশ গাড়ি থেকে নেমেই রীতিমতো শকড!
তার চোখের সামনে বিয়ের দিনের দেখা সেই ছোট্ট পরী।
গোল্ডেন গাউন-খোলা চুল-চোখে কাজল-ঠোঁটে লাল লিপস্টিক!! বুকের ভেতর দোলা লাগানো রূপ! আকাশ যেনো চোখ সরাতে পারছে না।ইচ্ছা করছে সারা জীবন ভর দেখতে।রূপের মার্ধুযে হারিয়ে যেতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here