নতুন তুই আমি পর্ব-৫৭

0
1536

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:-Nargis Sultana Ripa
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৫৭…………………………………
!
সকালের খাবার টা রির্সোটে খেয়ে প্রায় দশটার দিকে তারা বাসার রাস্তায়।দুপুরের দিকে বাসায় পৌঁছে তামান্না ঝটপট ওয়াশরোমে ঢুকে প্রথমেই সাওয়ার করে নিলো।সিয়াম বেডে শুয়ে একবার চিৎকার করে বললো, “আর কত সাওয়ার নিস রে তুই???”
সে সাওয়ারের পানির শব্দে সে টা তামান্নার কান পর্যন্ত আর পৌঁছায় নি।তাই সিয়াম তার বঙ্গ্যাত্মক প্রশ্নের কোনো উত্তরও পেলো না।
তামান্না মিনিট কয়েকপর-ই ফ্রেস হয়ে বের হলো।সিয়াম তাকে দেখা মাত্রই পিন্চ করা শুরু করেছে।তামান্না অবশ্য সে সব গায়ে লাগাচ্ছে না।সে নিজের মতোই চুলগুলো ঝেড়ে ক্রিম-লোশন লাগিয়ে রেডি হয়ে নিলো।আর তারপর সিয়ামকে অবাক করে দিয়ে-তাকে কোনো রকম পাত্তা না দিয়েই হনহন করে রোম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
বেচারা সিয়াম হা করে তাকিয়ে আছে।কি হলো বিষয়টা!ভেবেছিলো তামান্নাও তার সাথে একটু বকবক করবে।তাই রাগানোর চেষ্ঠা করছিলো।কিন্তু তা তো হলোই না বরং-No Information!
রাগে-দূঃখে বেচারা সিয়াম গলা বাড়িয়ে রোম থেকে চেঁচিয়ে উঠলো, “মানুষকে সম্মান দিতে হয়।কেউ কোনো কথা বললে সেটা মনোযোগের সহিত তার কথা শোনতে হয়।”
তামান্না সিরি ধরে নিচে নামছিলো।সিয়ামের কথা শোনে মুঁচকি হাসলো।আশে পাশে তাকালো-আর কেউ শোনেছি কি না!
নাহ্!আর কেউ শোনে নি।আর শোনলেই বা তার সামনে তো শুনলো না।তাই লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।তামান্না রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো-তার শাশুড়ি আর বুয়া মিলে লান্সের সব খাবার তৈরী করে ফেলেছে।শুধু সালাদ টাই বাকী আছে।
তারপরও তামান্না ভদ্রতার খাতিরে বললো, “আম্মু,আমি কি করবো??”
“ও মা!কেনো রে??যা শুয়ে রেস্ট নে।কতটা জার্নি করলি!”
“না আম্মু,আমি তো কাজ করার কথা বললাম।”
“কিহ??”
“হ্যাঁ।”
“একটা মাইর খাবি।তোকে না বলেছি এসব কাজ-কর্মে না থাকতে।তুই শুধু খাবিদাবি,ঘুমাবি,নামাযকালাম পড়ে পড়াশোনা করবি ব্যাস আর কিচ্ছু না।”
তামান্না হাসলো।
তারপর বুয়ার হাত থেকে চাকু টা নিয়ে নিজেই শসা গুলো পিস করতে লাগলো।
বললো, “আমি তাহলে অলস হয়ে যাবো।”
সিয়ামের মা কড়া গলায় জবাব দিলেন, “তোর মা মনে হয় তোকে দিয়ে বাড়ির সব কাজ করাতো।সেখানে যেমন থেকেছিা ঠিক তেমন করে এখানে থাকবি।শুধু এক্সটা যোগ হয়েছে আমার ছেলের বাদড়ামি সহ্য করতে হবে।এই যা-আর কিছু না।”
তামান্না সালাদ কাটা শেষ করলো।একটা প্লেটে রেখে বললো, “তাতে কি একটু আধটু তো মাঝে মাঝে করতাম।”
“হ্যাৃ।এখানেও করিস। তবে মাঝে মাঝে।এবার যা উপরে গিয়ে রেস্ট কর।আযান দিলে নামায পড়ে নিচে আসবি।”
“হুহু।আমার রেস্টের দরকার নেই।এখন তুমি আমাকে স্টোর রোমের চাবি দাও।”
“স্টোর রোমের চাবি!কি করবি সেখানে গিয়ে সব তো ধুলাবালিতে ভরা।”
“আমার একটু কাজ আছে।দাও….”
“শেফালিকে নিয়ে যা।তোর যা দরকার ও বের করে দিবে।”
“না আম্মু।আমি পারবো।শেফালি তুমি রান্না করে ট্রায়াড বরং তুমি একটু রেস্ট করো যাও।”
তামান্নাকে স্টোর রোমের চাবি টা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “যা।তবে কারও হেল্প লাগলে বলিস।”
“আচ্ছা।বলবো।”
তামান্না চাবি নিয়ে স্টোর রোমে চলে গেলো।পুরোনো সব জিনিস পত্র ভরা।পেছন পেছন রাইয়ানও দৌড়ে এলো।
“ভাবী,কি করছো এখানে??”
“তুই??এখানে কি যা।”
“তুমি কি করো??তোমাকে দেখেই এলাম।”
“একটা জিনিস দরকার আমার।তোর না ধুলোবালিতে এর্লাজি।যা এখান থেকে।”
“হ্যাঁ।ঠিক ধরেছে।তাই ভালো আমি বরং যাই।”
তামান্না পুরানো আলমারিগুলো এক এক করে দেখছে।কোথায় তার নিজের জিনিস টা পাচ্ছে না।
অবশেষে ব্যর্থ হয়ে যখন ফিরে আসছিলো দরজার পাশে ছোট্ট একটা ডেস্কে নজর দিতেই আনন্দে চোখে পানি আসার উপায় হয়ে গেছে।
তামান্না খুব সাবধানে জিনিসটায় হাত দিলো।কত ভালোবাসার জিনিস!অথচ কিভাবে ধুলিমাখা হয়ে পড়ে আছে!
তামান্না শাড়ির আঁচল দিয়ে পরম যত্নে ধুলাবালিগুলো পরিষ্কার করলো।পাশে রাখা ব্যাগটাও ভালো করে ঝেরে নিজের মতো করে তুলে রাখলো।যেনো সময় মতো আর খুজতে না হয়।
তারপর মুঁচকি হেসে স্টোর রোমে তালা দিয়ে ফিরে এলো।
!
রাইয়ান রোমে এসে পড়ছে।একাদশ-দ্বাদশে পড়ার চাপ টা সত্যিই একটু বেশি থাকে।এই সময় টাতে লাইফের একটা টার্নিং পয়েন্টের সম্মুখীন হয় ছাত্র-ছাত্রীরা।রাইয়ান পড়ছে।ফোনের নেশা মোটামোটি থাকলেও পড়ার সময় ফোন ধরেও দেখে না।তবে এখন হঠাৎ একটা এসএমএস আসায় ফোন টা হাতে নিয়ে একটু চমকে গেলো।
“কি খবর পিচ্চি??কি করছো??”
নাম্বার টা সেভ করা নেয়।তাই রাইয়ান বুঝতে পারলো না কে এসএমএস টা দিয়েছে।কিন্তু পরবর্তী এসএমএস টা “কাল রাতে অনেক গল্পের মাঝে একটা জিনিস খেয়াল করলাম-তুমি অন্ধ একটা ব্যক্তি।”
রাইয়ান তো থ!
কি হলো এটা???
এসএমএস টা যে আকাশের দেওয়া সেটা ধরতে পেরেছে।তবে এটা কোন ধরনের এসএমএস!
আর আকাশকে তো সে ফোন নাম্বার দেয় নি।তাহলে???কি করে পেলো??
রাইয়ান বই বন্ধ করে ভাবছে?
সে কি রির্টান এসএমএস করবে??নাকি ফোন দিয়ে জানতে চাইবে-কি করে নাম্বার পেলো আর পেলোই যখন তাহলে উল্টা পাল্টা এসএমএস দিয়ে অন্ধ-ই ডাকলো কেনো!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here