#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৬১………………………………..
!
আকাশ রাইয়ানকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে বসেছে।রাইয়ান সামনে জুস নিয়ে বসে আছে।স্ট্র হাতে নাড়াচাড়া করছে।আকাশ একমনে তাকিয়ে আছে রাইয়ানের দিকে।আকাশ যতটা বাচ্চা ভেবেছিলো রাইয়ানকে স্কুল ড্রেসে তার চেয়েও বেশী বাচ্চা লাগছে।কালো কামিজ সাদা ওড়না আর পায়জামা!ওড়নাগুলো মেয়েরা ড্রেস পড়ার সময় যে ভাবে বাঁধে রাইয়ানও তেমন বেঁধেছে।যেটা আকাশের ভালো লাগার চেয়ে হাসি পাচ্ছে বেশী।তারউপর সামনে আনা দুটি বেণুনী।
রাইয়ান পা দুলিয়ে স্ট্র দিয়ে জুস খাচ্ছে।
আকাশ কফিতে একটা চুমুক দিলো।রাইয়ান পা দুলিয়ে দুলিয়েই আকাশকে প্রশ্ন করলো, “আপনি কি সব সময় কফি খান??”
“কেনো বলো তো?”
“না ঐ দিন আমি আইসক্রিম খেলাম আপনি কফি নিয়েছিলেন।আর আজও।”
“বড়রা এসবই খায়।”
রাইয়ান পা দুলানো থামিয়ে দিলো।প্রশ্ন করলো, “মানে?”
“মানে,তুমি জুস টা শেষ করো।”
“আপনি কিন্তু ইনডিরেক্টলি আমাকে ছোট বললেন।”
“ছোট বলে নি ঘুরিয়ে পিচ্চি বলেছি।”
রাইয়ান এবার আর রাগ করলো না।মুঁচকি হেসে বললো, “আপনার ব্যাখা অনুযায়ী পিচ্চি ডাকছেন আপনি।ডাকুন।সেটা আর কয়দিন?আমার তো আসছে জানুযারীর টুয়েন্টি তারিখেই আঠারো হয়ে যাবে।তখন দেখবো,আপনি কি করে আমাকে পিচ্চি পিচ্চি বলে ডাকেন।”
রাইয়ান এতো ভেবে চিন্তে কথাটা না বললেও আকাশ রাইয়ানের কথায় অনেক বড় একটা তত্ত্ব পেয়ে গেছে।রাইয়ানের জন্মদিন।এটা নভেম্বর মাঝে ডিসেম্বর।তারপরেই রাইয়ানের জন্মদিন।আকাশের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ।রাইয়ানের জন্য কিছু একটা করা।কিন্তু এই আড়াই মাস তো আর বসে থাকা যাবে না।
এগিয়ে যেতে হবে।যতটা সম্ভব ইজি হওয়া যায়।অনুভূতি যদি সত্যি হয় তাহলে অনভূতি টাকে ফেলে রেখে লাভ কি!
!
তামান্না ক্লাস শেষে সিয়ামের সাথে বাড়ি ফিরেছে।আজ স্নাতক জীবনের শেষ ক্লাস হলো ওদের।তামান্না বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে নিলো।আলমারি খুলেই কিছু একটা ভাবলো সে।সিয়াম তখন বিছানায় গা মেলিয়ে শুয়ে পড়েছে।তামান্নাকে আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো, “কি ব্যাপার??ফ্রেস হয়েছিস চেন্স কেনো করছিস না??”
তামান্না কিছুটা আমতা আমতা করে বলল, “নাহ।কিছু না।করছি।”
তামান্না শাড়ি হাতে ওয়াশরোমে ডুকলো।
খুব বেশি সময় না নিয়েই তামান্না বের হয়ে আসে।তামান্না এ বাড়িতে আসার পর থেকেই সালোয়ার কামিজ পড়ছে।কোনো অকেশন না থাকলে শাড়ি পড়ে না।তবে আজ হঠাৎ ক্লাস থেকে এসে শাড়ি!
সিয়ামের অবশ্য শাড়ি পরিহিতা তামান্নাকেই বেশি ভালো লাগে।তবে তামান্নার কমফোরটেবলের কথা ভেবে পোশাক নিয়ে কিছু বলে না।তাই আজ শাড়ি দেখে কিছুটা অবাক হয়েছে সে।
“কি ব্যাপার শাড়ি??”
“কেনো?ভালো লাগছে না??”
“না না তা না।হঠাৎ পরলি তো তাই।”
“ইচ্ছা হলো তাই।”
“ওহ্।লোকিং প্রিটি।”
“হু……”
তামান্না মুঁচকি হাসলো।চুল টূ আচড়ে নিয়ে সিয়ামকে বললো, “চা খাবে??”
“ঘুম পাচ্ছে রে।চা খেলে ঘুম টা নষ্ট হবে।”
তামান্না সিয়ামের পাশে বসলো।বললো, “এখন ঘুমাবে তুমি??”
সিয়াম বালিশে মুখ গুজে বললো, “হুমমম।”
“মানে কি???তুমি কি পড়াশোনা বাদ দিয়েই পরীক্ষা দিবে নাকি??”
“তুই আমার পড়াশোনা নিলে পড়লি?”
“হয়েছে,হয়েছে।তোমার যা ইচ্ছা।বাট লান্সের জন্য আম্মু বলে দিলো যে।সেটা খেয়াল আছে??”
“পরে খেয়ে নিবো।”
তামান্না সিয়ামের মাথা থেকে বালিশ টা টেনে সরিয়ে নিলো।
খটখটে গলায় বললো, “আমি এখন লান্স করবো সবার সাথে তুমিও চলো।”
সিয়াম রাগে চোখ বড়বড় করে তাকালো তামান্নার দিকে।
বললো, “বালিশ টা সরালি কেনো??”
“বললাম তো লান্স করবো।”
“তো যাহ্।”
“তুমিও চলো।”
“তামান্না!!!”
“ধুর!ধমকায় খালি…..”
এই বলেই তামান্না বালিশ টা বিছানায় ছুড়ে দিয়ে চলে আসতে নিলো।
কিন্তু পারলো না।
সিয়াম তার আগেই হাত টা ধরে ফেললো।
“কি হলো??হাত ছাড়ো।”
সিয়াম ছাড়লো না।
উল্টো তামান্নাকে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।
“রাগ করছিস কেনো??”
“নাহ্।আমার কি আর রাগ আছে।সব তো তোমার।”
সিয়াম হাসলো।
তামান্নার খোলা চুলগুলো সিয়ামের মুখের চারপাশ ছেয়ে আছে।সিয়াম আচমকা তামান্নার এলোমেলো চুলে টান দিয়ে বললো, “রাগলে তো লাল টমেটো হয়ে যাস।”
“আওওও….উহুহু রে।ব্যথা পাই তো।”
সিয়াম আবারও আরেকপাশের চুল ধরে টান দিলো।
তামান্না এবার আরও একটু চেঁচিয়ে উঠলো,
“ওহু।মা গো!!!লাগে না আমার?ইসসস…ছাড়ো।”
সিয়াম তামান্নার নাকে নাক ঘষে হাসলো।
বললো, “একটু লাগুক।লাগলে কি হয়??লাল টমেটো একটা।”
“আমি মোটেও লাল টমেটো নই।বাজে বাজে কাজ আর কথা সব তো নিজের মাঝে।”
“বাজে কি কাজ শুনি??”
“চুল ধরে টানাটানি এটা খুব ভালো কাজ??”
“আমি কি তোকে মারছি নাকি??এটা আমার আদরের একটা পার্ট।”
“হু।আরও কত ভাবে আদর আপনি করেন তো তাই না!”
“কেনো??তোর কি ধারণা নেই??আমি কত ভাবে আদর করতে পারি-সেটা তো…..”
তামান্না সিয়ামের মুখে হাত চেপে ধরলো।
বললো, “চুপ।একদম না।”
সিয়াম তামান্নার হাতের তালুতে চুমু দিলো।তামান্না চট করে হাত টা সরিয়ে উঠে আসতে নিলে সিয়াম এবার তামান্নাকে হ্যাচকা টানে বিছানায় শুইয়ে তারউপর শুে পড়ে।হাত দুটো বিছানায় চেপে ধরে বললো, “আদর করে একটু দেখাতে ইচ্ছা করছে।”
“এই না একদম না।সরো।”
সিয়াম তামান্নার গলায় মুখ ঘষে বললো, “ঘুমাতে না দেওয়ার শাস্তি টা অত্যন্ত নাও মিসেস।”
“না প্লিজ।তুমি ঘুমাও।”
“এখন আর বলে কি হবে??যা হওয়ার তা তো…. ”
“সিয়াম!!প্লিজ প্লিজ সরো।দরজা খোলা তো।”
সিয়াম দরজার দিকে তাকলো।সত্যিই দরজটা একদম খোলা।তবুও সিয়াম পাত্তা দিলো না।
বললো, “আমাদের রোমে কেউ আসবে না।”
“সিয়াম,রাইয়ান আসবে।সরো।”
“আরে একটুই তো।থাকো না।”
“না না। সরো বলছি।”
“ওয়ান লিপ কিস।ওকে?”
“পরে।এখন না।দরজা টা খোলা তো।যে কেউ এসে পড়বে।কোনো সার্ভেন্টও হতে পা….উমমমমমমমম”
তামান্না কথা শেষ করতে পারে নি।তার আগেই সিয়াম তামান্নার ঠোঁট জোড়া দখলে নিয়ে নিয়েছে।
নিজের কাজ টা ঠিকই আদায় করে নিলো সিয়াম।
তামান্না সিয়ামের দিকে রাগী চোখে তাকালো।
বললো, “লিপস্টিক টা নষ্ট হলো না আমার??একটু আগে লাগালাম।”
সিয়াম হাসলো।তারপর আলতো করে তামান্নার ঠোঁটে চুমু দিয়ে বললো, “আমাী পেটেই তো গেছে।”
“পেট খারাপ হবে তোমার।”
সিয়াম শরীর কাপিয়ে হাসলো।তারপর তামান্নার হাতের উপর ঠাস করে শুয়ে পড়তেই তামান্না চিৎকার করলো, “ওহু!লাগে আমার।”
“ইসসসস।”
“হ্যাঁ।সরো।হাতির মতো মাথা টা আমার হাতে রাখলে ব্যাথা পাবো না??”
“ব্যাথা! ব্যাথা!ব্যাথা!এতো ব্যাথায় সুখ টা তো ঠিকই পাস।হুমমম??”
সিয়াম তামান্নার গাল টানলো।
নাকটা দুষ্টুমি করে চেপে ধরে বললো, “তুলতুলে বেবী ডল।ব্যাথা তো পাবিই একটু।”
তামান্নাও এবার সিয়ামের সাথে তাল মিলিয়ে হাসলো।
সিয়ামে বুকের কাছে মাথা নিয়ে বললো, “হু।পাবোই তো।স্টিল বডির একটা লোক সব সময় এমন করলে ব্যাথা পাওয়া নরমাল।”
“আমার পেট খারাপ হওয়াটাও কিন্তু নরমাল।”
তামান্না মুখ তুলে তাকালো, “মানে?”
“মানে??লিপস্টিক আর নাইট ক্রিম দিয়ে যদি পেট ফুল হয়ে যায় তাহলে পেট খারাপ হওয়াটা তো স্বাভাবিক।তাই না??”
তামান্না সিয়ামের বুকে ইচ্ছা মতো থাপ্পর শুরু করলো।এক হাতে।বেচারী অন্য হাত তো সিয়ামের মাথার নিচে।সিয়াম এই হাতটাও ধরে ফেললে তামান্না সিয়ামের বুকে কামড় বসিয়ে দিলো একটা।
তারপর আবার একটা।সংখ্যায় একটা,দুটো!তিনটা!চারটা!আর পঞ্চম টা আর কামড় নয় তামান্নার নরন ঠোঁটের গভীর চুমু।
সংখ্যায় নয় এক থেকে অসংখ্য।একের পর একটা।সিয়ামের লোমাষ্ন শক্ত বুকে প্রিয়তমার ভালোবাসার ওষ্ঠ ছোঁয়া।
এক পর্যায়ে তামান্নার খেয়াল হলো যে সে কি করছে।লজ্জায় কুকড়ে গিয়ে সাথে সাথেই সিয়ামের বুকে মুখ লুকালো সে।সিয়াম টু শব্দও করলো না,এমনকি হাসলোও না দু হাতে শক্ত করে তামান্নার মাথা টা নিজের বুকে চেপে ধরে রইলো।অনুভব করতে লাগলো পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর আর প্রবিত্রতম মুহুর্তের সুতৃপ্ত স্পর্শ।