#নতুন_তুই_আমি
💜💜
Writer:-Nargis Sultana Ripa
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৬৭
!
সিয়াম ভুত আড্ডায় ডুকলো পাগলের মতো। মিরপুর থেকে এখানে আসতে তার চল্লিশ মিনিটের মতো লেগেছে।
রাত সাড়ে এগারোটার উপরে।
সিয়াম খুব দ্রুত ভেতরে ডুকলো।
এক তলা পাড় হতেই এক কর্মচারী বললো, “স্যার, আমাদের এখনকার সব কার্যকম রাত আট টা থেকে বন্ধ করে দেওয় হয়েছে। আমরা আমাদের সমস্ত ওয়েবে কাল জানিয়ে দিয়েছি। আর বাইরে তো নোটিশ আছে। আপনি হয়তো খেয়াল করেন নি।”
সিয়াম পুরোপুরি দিশেহারা হয়ে গেলো। এটা কি করে সম্ভব!
তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।
তবুও অনেক শক্তি সঞ্চয় করে জানতে চাইলো, “কিন্তু কেনো?”
লোকটা উত্তর দিলো,
“আসলে স্যার, একজন ক্লাইন্ট আজকে রাত আট টা থেকে পুড়ো রাত সম্পূর্ণ সেবা ভাড়ায় নিয়েছেন।”
সিয়াম এবার আরো ভয় পেয়ে গেলো।
“সম্পূর্ণ সেবা মানে?”
“আমাদের পনেরো দিন আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। তাই আমরা তার জন্য আমাদের সমস্ত আবাসিক, অনাবাসিক এবং ভোজ্য সুবিধা আজকে রাতের জন্য তার ওনারে দিয়েছি। আপনার যদি কোনো রোম বা অন্য কোনো সেবা প্রয়োজন নয় তাহলে আগামীকালের জন্য বোকিং করতে পারেন। আমরা মূলত এখন এখানে আছি তার সুবিধা দেওয়ার জন্য এবং যদি নতুন কেউ আমাদের সঙ্গে আগামী কাল কোনো পার্টি, রোম বা ভোজায়োজন রাখতে চাই সেটা বুক করার জন্য।”
সিয়ামের মনে হচ্ছে তার চোখের সামনে হলুদ আলো খেলা করছে।
নীল বিষের মতো ভয়গুলো তার মনে চারা জাগিয়ে চোখের পলকে বড় হয়ে যাচ্ছে।
সে ক্লাইন্ট যে রাফিন- সেটা সিয়াম শিউর। কিন্তু এভাবে সব কিছু বোকিং করে ও তামান্না আর রাইয়ানকে কোন বিপদে ফেললো। নাহ! সিয়াম আর ভাবতে পারছে না।
কিছু একটা করতে হবে তাকে। এভাবে ভয় না চিন্তা করে কিচ্ছু লাভ নেই। তামান্না আর রাইয়ানের খোজ করতে হবে।
সিয়াম ডানে-বা য়ে মাথা ঝাড়লো। সামনে তাকিয়ে দেখলো সে লোক টা রিশেপশনে গিয়ে বসেছে।
সিয়াম সেখানে গিয়ে কড়া গলায় বললো, ” সন্ধ্যার পর এখানে দুজন মেয়ে আসার কথা ছিলো। তারা কোথায়?”
“সরি স্যার?”
সিয়াম রেগে গেলো,
“এখানে দু টো মেয়ে এসেছে। তারা কোথায়?”
“স্যার আট টার আগে আমাদের এখানে অনেকেই এসেছে। আর এটা তো শুধু আবাসিক নয় অনেকে শুধু খাবারের জন্যও আসে তাহলে আমরা কি করে বললো কখন সে এলো?”
“এভাবে ব্যবসা করছেন আপনারা? আপনাদের কি কোনো সিকু…….”
সিয়াম আর কিছু বলার আগেই রিশেপশনের ফোন টা বেজে উঠলো।
লোকটা কার সাথে কি কথা বলে “ঠিক আছে। ” বলে রেখে দিলো।
সিয়ামকে কিছু বলবে তার আগে সিয়াম জোর গলায় বললো, “ভাড়ায় কে নিয়েছে তার নাম বলুন।”
লোকটি স্বহাস্যে বললো, “স্যার, আপনকে উপরে যেতে বলা হয়েছে। তিন নম্বর ফ্লোরে।”
সিয়াম আর এক মুহুর্তও দাঁড়ালো না।
ছুটে গেলো লিফটের কাছে।
তারপর তিন তলায়-পার্টি কর্ণারে।
কিন্তু সেখানে গিয়ে সিয়াম আরও বেশী ভড়কে যায়।
চারপাশ ঘোর স্তব্ধ, ঘুটঘুটে অন্ধকার। মনে হচ্ছে কোনো ঘন জঙ্গলের গুহা।
সিয়াম স্বশব্দে চিৎকার করলো, “তামান্না!”
নাহ্ কোনো সাড়া নেই।
সিয়াম আবার ডাকলো। তবে এ ডাকে আছ তীব্র ভয় আর আর্তনাদ,
“তামান্না! তুই কোথায়?”
অন্ধকার ঘরে তামান্নার মন টা ধুকপুক করছে। তার ইচ্ছে করছে এখনি ছোট সিয়ামকে ধরা দিতে।
কিন্তু সব কটা বাঁদরের দল তাকে আটকে রেখে দিয়েছে।
“আর মাত্র পাঁচ মিনিট দাঁড়া। এতো উতলা হচ্ছিস কেনো?”
তামান্নার হাত টেনে ধরে বললো সিয়াম।
“আরে। ওর গলা টা শোনছিস? ও ঘাবড়ে আছ। আর টেনশন দিয়ে কি লাভ?”
আকাশ রেগে গিয়ে বললো, “এসবের প্ল্যান কিন্তু তুই করেছিস। ওকে? তাই এভাবে শেষ মুহুর্তে আমেজ টা নষ্ট করা যাবে না।”
“আমি করেছিলাম বাট রাফিনের কথা তো তোরা বললি। তা না হলে ও এতটা উতলা হতো না।”
এবার রাইয়ান ক্ষেপে গেল তামান্নার উপর।
বললো, “দেখো ভাবী! এরকম টা যদি করো না তাহলে নেক্সট টাইম তোমার কোনো প্ল্যানেই আমরা হেল্প করবো না। ”
তামান্না আর কিছু বললো না। হাতের চুরিগুলো ঠিক করে চুপচাপ গভীর উৎকন্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
আর ঠিক তখনি সিয়াম বাঘের মতো গর্জন করলো, “রাফিন! শুয়রের বাচ্চা কোথায় তুই?”
তামান্না কেঁপে উঠলো।
মোবাইল স্ক্রিনে দেখলো এগারো টা ছাপান্ন।
তাই মু্চকি হাসলো সে।
পূর্বের পরিকল্পনা মতো সিয়ামের পাশের মৃদু ছোট্ট নীল বাল্ব টা আলো দিতে শুরু করলো।
সিয়াম এতে অবশ্য একটু চমকে গেছে। কিন্তু সেটা তামান্নাকে নিয়ে টেনশনের কাছে কিচ্ছু না।
সিয়ামের চোখ পড়লো সামনে।
একটা আলো আধারি ভাব চলে এসেছে।
এতক্ষণ যে ঘোর অন্ধকার টা ছিলো সেটা এখন আর নেই।
তারপর আরো একটু।
তারপর আরো অনেক টা।
একটা ছায়া। কে সে?
সে এই ছায়ামূর্তি?
ভয় দূরে সরে গিয়ে মনের ভেতর প্রবল আগ্রহ জেগে উঠলো সিয়ামের। এ ছায়ামূর্তি তো খুব চেনা তার!
তবে এ বেশে কেনো?
সিয়াম ধীর পায়ে এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতে লাগলো সে আলো আধারীর দিকে।