না_চাইলেও_তুমি_আমার পর্বঃ ২২

0
3279

না_চাইলেও_তুমি_আমার
পর্বঃ ২২
জাহান আরা

কয়েকদিন ধরে মাইনুল ইসলামের শরীর খারাপ যাচ্ছে।বুকে কেমন যেনো ব্যথা অনুভব করছেন।শরীর খারাপ করলেই তার রাশেদার কথা মনে পড়ে ভীষণ।
তার কি সময় হয়ে এসেছে রাশেদার কাছে যাওয়ার?

এটা ভাবলেও কেমন আনন্দ আনন্দ লাগে তার।শরীর থেকে আত্মাটা বিদায় নিতেই প্রাণাধিকার সাথে দেখা হবে এর চাইতে বড় খুশি আর কি হতে পারে!

সুফিয়া কামালের তাহারে পড়ে মনে কবিতাটি মনে পড়ে।আচ্ছা কবিতা টা কি তাহারেই পড়ে মনে না-কি তাহারেই মনে পড়ে?
মনে নেই তার।
শুধু মনে আছে রাশেদা কে তার ভীষণ মনে পড়ে।একটা সময় ছিলো জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো রাশেদা কে পাওয়া।
আজ কতো বছর হয়ে গেলো রাশেদা নেই,কি ভীষণ ভালো তিনি বেসেছেন রাশেদা ‘কে তা কি কখনো রাশেদা বুঝতে পেরেছিলো?
হয়তো পারে নি,মানুষ তীব্র ভালোবাসা বুঝার ক্ষমতা রাখে না।তাছাড়া রাশেদা কি তাকে আপন করে নিতে পেরেছিলো তা তিনি জানেন না।

দুপুরের খাবারের পর নিজের রুমে বসে বসে রাশেদার স্মৃতিচারণ করছেন।
মনে পড়লো তখন,অনেকগুলো দিন হয়ে গেলো মেয়েদের দেখেন না,এই বয়সে এসে ছেলেমেয়েদের কাছে পেতে ইচ্ছে করছে তার খুব।
মেয়েদের সাথে অনেক গল্প করতে ইচ্ছে করছে,মেয়েদের শোনাবার জন্য একসময় কতো গল্প পড়েছেন,লাল পরী,নীল পরীর গল্প,রাক্ষসের গল্প,ডাইনি বুড়ির গল্প।অথবা তাদের মা-কে কিভাবে পেয়েছে সেই গল্প।
অথচ সময় করে কখনো শোনানো হয় নি।

আচ্ছা,কোনো গল্পই কি আমি মেয়েদের শুনিয়েছি?

নিজের ভিতর থেকে কেউ যেনো জবাব দেয় না বলে।তাহলে কি বাবা হিসেবে তিনি ব্যর্থ?
না তা কেনো হবে?
সন্তানদের সাথে সবসময় দূরত্ব রেখেছেন হয়তো কিন্তু তাদের কিছুর অভাব তো দেন নি।
ইদানীং চিন্তাভাবনা কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে তার।
বয়স হয়ে গেলে কি এরকম হয়?
রাত্রি কে একটা কল দিয়ে আসতে বললে কেমন হয়?

ফোন হাতে নিয়ে রাত্রি কে কল দিলেন তিনি,রাত্রি শুয়ে ছিলো বাবার কল পেয়ে বিছানায় উঠে বসে কল রিসিভ করে,”হ্যালো বাবা,আসসালামু আলাইকুম”

“ওয়ালাইকুম সালাম,কেমন আছিস?”

“এইতো ভালো, তোমরা?”

“আছি ভালোই,কি করিস,জামাই কেমন আছে?”

“ভালো আছে।”

“আচ্ছা রাখছি তাহলে।”

ফোন কেটে দিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলেন তিনি।বাবা হিসেবে আমি সত্যি ব্যর্থ,ইচ্ছে করার পরেও পারলাম না মেয়েকে আসার কথা বলতে।
আমার মতো অসহায় বাবা কি আর দ্বিতীয় টি আছে?

রাত্রির ভীষণ কষ্ট হচ্ছে হঠাৎ করেই।বাবার গলা কেমন আড়ষ্ট লাগছে,কতোদিন পরে বাবা কল দিয়েছে।
রাত্রির ও খুব একটা মনে পড়ে না কারো কথা,এই বাড়িতে এতো আদর ভালোবাসা পেয়েছে যে বাড়ির কথা প্রায় ভুলেই গেছে।ভাইয়া খুব কম আসে,বাবা তো আসেই না।
রাত্রিও যেতে চায় না বাসায়।চন্দ্র ও নেই,গিয়ে কি করবে।
মা থাকলে হয়তো এরকম হতো না,মা মানুষ একজন মাত্র,অথচ তার অনুপস্থিতিতে থমকে যায় অনেকগুলো জীবন।
এই যে আজ তার একটা খুশির খবর জানানোর আছে,সেটা তো সবার আগে মা’কে বলতো সে,অথচ কাউকে বলতে পারছে না রাত্রি।বারবার পেটের উপর হাত বুলাচ্ছে।কি এক অজানা আনন্দ-ভয় তার মাঝে কাজ করছে শুধু সে জানে।
রাত্রি ঠিক করেছে নিশান বাসায় আসলে একসাথে শ্বশুর শাশুড়ি সবাইকে সারপ্রাইজ দিবে।তারজন্য কেকও বানিয়ে রেখেছে রাত্রি।

সন্ধ্যায় কিচেনে দাঁড়িয়ে চন্দ্র চা বানাচ্ছে আর গুনগুন করে গান গাইছে।নিষাদ একটা ফাইল দেখছিলো,গানের গুনগুন শুনে ফাইল রেখে উঠে আসে,কিচেনের দরজায় দাঁড়িয়ে চুপ করে গান শোনে।

“সেই প্রেম আমাকে দিও,জেনে নিও।
যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়।
সেই প্রেম আমাকে দিও,জেনে নিও
তুমি আমার..তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়।
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়।

তুমি আর আমি আর কেউ নয়
এমন একটা যদি পৃথিবী হয়।
মিলনের সুখে ভরে যায় বুক
সেখানে আছে শুধু সুখ আর সুখ
সেই সুখ আমাকে দিও,জেনে নিও
তুমি আমার..তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়।
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়। ”

আর গাইতে পারে না,নিষাদ পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে চন্দ্রকে।চমকে উঠে ও স্থির হয়ে যায় চন্দ্র,নিষাদ ছাড়া আর কেউ না মনে পড়ে যায়।
পিছনে ঘুরে দাঁড়ায় নিষাদের দিকে ফিরে হেসে জিজ্ঞেস করে,

“সমস্যা কি?”

“কার সমস্যা? ”

“আপনার সমস্যা জানতে চাইছি।”

“আমার সমস্যা তো অনেক,কয়টা সমাধান দিবে তুমি?”

“আমি সমাধান নিয়ে যেনো বসে আছি আপনার জন্য,আমি চা বানাচ্ছি দেখছেন,তারমধ্যে এসে এরকম করছেন কেনো?”

“আমি তো আসতে চাই নি,তুমি তো ডেকেছো।”

অবাক হয় চন্দ্র,তারপর জিজ্ঞেস করে,”কখন ডেকেছি আমি?”

“আমি তোমার স্বামী না,মুখে ডাকতে হবে কেনো আমাকে,মনের ডাকাই বড় ডাকা বুঝলে।”

চন্দ্র হেসে উঠে খিলখিলিয়ে।
নিষাদ আবার মুগ্ধ হয়ে যায় চন্দ্রর হাসিতে।কি প্রাণবন্ত হাসি,এই হাসির দিকে তাকিয়ে অনায়াসেই মানুষ প্রাণত্যাগ করতে পারবে।

নিশান বাড়ি ফিরেছে প্রচন্ড মাথাব্যথা নিয়ে, রাত্রি শুয়ে ছিলো বিছানায়।নিশানের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝে যায় নিশানের কিছু একটা হয়েছে।
বিছানা থেকে নেমে আসে রাত্রি।
রাত্রির দিকে তাকায় নিশান,তারপর কপালে একটা চুমু খেয়ে রাত্রিকে বলে,”এক কাপ চা খাওয়াতে পারেন ম্যাডাম?”

“জ্বি জনাব, পারি।”

হেসে উত্তর দেয় রাত্রি,তারপর কিচেনের দিকে যায়।
নিশান রকিং চেয়ারে বসে।মাথায় চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তার।
একটা নারী পাচারকারী চক্রকে অনেক দিন ধরে ধরার জন্য ফাঁদ পেতেছে,কিছুতেই সফল হতে পারছে না নিশান।বিষয়টা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে নিশান,যেভাবেই হোক তাকে পারতে হবেই।

রাত্রি চা বানিয়ে রুমে আসে,নিশান চা এক চুমুক খেয়ে রাত্রির দিকে তাকায়।
রাত্রি হেসে উঠে একটা চুমু খায় নিশানের ঠোঁটে,হাসি-হাসি হয়ে যায় নিশানের মুখ,চা খেতে থাকে।
এটা নিশানের একটা অভ্যাস।
প্রতিবেলা চা খাওয়ার সময় রাত্রির ঠোঁটের ছোঁয়া তার লাগেই।এক চুমুক দিয়ে চুপ করে তাকিয়ে থাকবে যতোক্ষণ না রাত্রি চুমু খাচ্ছে তাকে।

নিশান চা শেষ করে বাবার রুমে যায়।রাত্রি রুমের দরজা লাগিয়ে সাজতে বসে।এই শীতেও তার আজ শীত লাগছে না আনন্দে উত্তেজনায়।

হাসনাত সাহেব অনেকক্ষণ ধরে মনোয়ারা বেগমের রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
মনোয়ারা বেগম খুব রেগে আছে। তার একে-তো রাগ ছিলো ছেলেদের সামনে তাকে মনু বলে ডাকে দেখে,দ্বিতীয়ত নিশানের সাথে বলা কথাগুলো মনোয়ারা বেগম আড়ি পেতে শুনেছে।
হাসনাত সাহেব যে তাকে ইররেসপনসেবল মহিলা বলেছে তার জন্য তিনি আরো রেগে আছেন।

হাসনাত সাহেব কিছুক্ষণ রবীন্দ্র সংগীত গাইলেন,মনোয়ারা বেগমের প্রিয়,শ্রাবণের ধারার মতো গানটি,কিন্তু তাতেও লাভ হলো না।
মনোয়ারা বেগম উল্টো দাঁতমুখ খিঁচিয়ে একটা অঙ্গভঙ্গি করলেন যা শুধু প্রত্যক্ষদর্শী বুঝবে কতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গি ছিলো সেটা।

হাসনাত সাহেব তারপর তেলের বাটি হাতে নিয়ে কাছে গেলেন মনোয়ারা বেগমের চুলে তেল লাগিয়ে দেওয়ার জন্য।

মনোয়ারা বেগম চোখ বড় করে তাকাতেই তার মনে পড়লো,দুপুরে তিনি চুলে তেল দিয়েছেন।
কি করবেন আর ভাবতে ভাবতে নিশান দরজায় নক করলো,নিশানকে দেখে হাসনাত সাহেবের দেহে প্রাণ ফিরে এলো যেনো,লাফিয়ে উঠে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,”এই-তো আমার টিমের প্লেয়ার চলে এসেছে,এবার দেখবো মনু তুমি কিভাবে রেগে থাকো,বাপ-ছেলে মিলে জব্বর একটা প্ল্যান বানিয়ে ফেলবো এখন,জাস্ট ওয়েট মনু”

মনোয়ারা বেগমের মেজাজ আরো তিরিক্ষি হয়ে গেলো। হাসনাত সাহেব তাকে আবারও মনু বলছে ছেলের সামনে!
ব্যাপার টা হাসনাত সাহেব বুঝতে পারলেন না।

“বাবা,তুরাগ যখন এসব বলেছে,রাত্রি কোথায় ছিলো?”

“কেনো,ওতো কিচেনেই ছিলো,কি হয়েছে?”

হাসনাত সাহেব সিরিয়াস ভাব নিয়ে তাকান নিশানের দিকে।
নিশান হেসে জবাব দেয়,”আরে তেমন কিছু না,এমনিই বলছিলাম রাত্রি শুনলে ও হয়তো তুরাগের কথা সত্যি ভেবে বসে থাকবে,ওর ফ্যামিলি যে অন্যরকম জানোই তো,ওনারা শুনলেও রিয়েক্ট করবে উল্টো তাই বললাম”

“না না তুই ওসব নিয়ে ভাবিস না নিশান,রাত্রিকে আমি তোর বাবা কেউই কিছু বলি নি,তুরাগ একটা মানুষ বুঝি যে ওর কথা বিশ্বাস করতে যাবো আমরা?”

“সেটাই মা।”

“তোদের সমস্যার তো সমাধান হলো এবার আমার কি হবে রে খোকা?”

“তোমার আবার কি হলো বাবা?”

“এই-যে তোর মা’কে আমি একটু আদর করে মনু ডাকলে তোর মা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে তার একটা বিহিত করতেই হবে তোর আজকে।”

হাসনাত সাহেবের কথা শুনে মনোয়ারা বেগম আরো রেগে যায়,”বুড়ো বয়সে ভীমরতি”কথাটা বলে রুম থেকে বের হয়ে যায় ড্রয়িং রুমের দিকে।

নিশানের মাথা ব্যথা উধাও হয়ে গেছে বাবা মায়ের এসব দেখে হাসতে হাসতে।প্রতিদিন বাবা মায়ের এসব মজার কান্ডকারখানা দেখে সবাই বিনোদন পায়।

হাসনাত সাহেব উঠে ও মনু,ও মনু করতে করতে পিছন পিছন যেতে থাকে।তার পিছনে বের হয় নিশান হাসতে হাসতে।

ড্রায়িং রুমে এসে মনোয়ারা বেগম থমকে দাঁড়ায়,ড্রয়িং রুমের লাইট অফ করা,টি-টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাত্রি,হাতে একটা কেক,কেকের গায়ে মোমবাতি জ্বলছে।
মনোয়ারা বেগমের পিছনে হাসনাত সাহেব ও থমকে দাঁড়ায়।নিশান অবাক হয় সবচেয়ে বেশি।

একটা কালো শাড়ি পরেছে রাত্রি,চুল খোপা করা,দু’হাতে চুড়ি ভর্তি।মোমের আলোয় কি মায়াবী লাগছে,নিশানের ইচ্ছে করছে এখনই গিয়ে জড়িয়ে ধরতে বুকে।

বাবা মায়ের সামনে নিজেকে সামলে নেয় নিশান।তারপর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় রাত্রির পাশে।মনোয়ারা বেগম ও যায়।

“কি হয়েছে তোমার,আজ কি বিশেষ কোনো দিন না-কি? “নিশানের প্রশ্নের জবাবে রাত্রি কেক টেবিলে রেখে মনোয়ারা বেগম কে জড়িয়ে ধরে।
কেমন যেনো মা মা ঘ্রাণ পায় রাত্রি মনোয়ারা বেগমের থেকে।
মনোয়ারা বেগম হালকা গলায় জিজ্ঞেস করে,” কি হয়েছে গো আমার মায়ের?”

রাত্রি চুপিসারে তাকে ফিসফিস করে কিছু বলে।শুনেই মনোয়ারা বেগম খুশিতে জড়িয়ে ধরে রাত্রি কে। তারপর হাত থেকে নিজের মোটা একটা বালা খুলে রাত্রিকে পরিয়ে দিয়ে দোয়া করে দেন।

নিশান আর হাসনাত সাহেব কিছু বুঝতে না পেরে হা করে তাকিয়ে থাকেন।মনোয়ারা বেগম নিশান কে বলেন,”ওরে তাড়াতাড়ি আমাদের নিষাদ কে আর তোর আপাকে কল করে বল,খুশির খবর আছে,আমাদের পরিবারে নতুন সদস্য আসতে চলেছে।”

৩ সেকেন্ড লাগে নিশানের কথাটা বুঝতে,তারপর বুঝতেই হুররে বলে চিৎকার করে রাত্রিকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে।
হাসনাত সাহেব ও খুশির চোটে মনোয়ারা বেগম কে কোলে তুলে নিয়ে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করতে যায়,কিন্তু তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
মনোয়ারা বেগম পড়ে যায় ফ্লোরে হাসনাত সাহেবের হাত ফসকে।

হাসনাত সাহেব অপরাধী চোখে তাকায় মনোয়ারা বেগমের দিকে।
মনোয়ারা বেগম উঠে দাঁড়িয়ে বলে,”আজ আমার পরিবারে নতুন সদস্য আসার খুশিতে তোমাকে মাফ করে দিলাম।”

হেসে উঠে সবাই।

মাইনুল সাহেব ফোন হাতে নিয়ে চন্দ্রকে কল দেয় রাত ৮টার দিকে।হোস্টেলে যাওয়ার পর থেকে আর কথা হয় নি চন্দ্রর সাথে তার।
চন্দ্র কিচেন রুমে চেয়ারে বসে আছে,নিষাদ রান্না করতে করতে কথা বলছে চন্দ্রর সাথে।বেড রুমে চন্দ্রর ফোন বাজছে,চন্দ্রর ইচ্ছে করছে না উঠে গিয়ে ফোন রিসিভ করতে।আরাম করে বসেছে সে,নিষাদ চাদর দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে তাকে।
এখন উঠে ফোন রিসিভ করা অসম্ভব।

৩বার ফোন বেজে কেটে গেলো।চন্দ্র কল রিসিভ করতে যাচ্ছে না দেখে নিষাদ বলে,

“যাও গিয়ে কল রিসিভ করো।”

“উহু,যাবো না,আপনি রিসিভ করেন গিয়ে।”

আবারও ফোন বেজে উঠে,নিষাদ গিয়ে নাম্বার না দেখেই রিসিভ করে হ্যালো বলে।

মাইনুল সাহেব চমকে উঠেন পুরুষ কণ্ঠস্বর শুনে।কে কথা বলছে চন্দ্রর ফোন থেকে?তাও এই রাতের বেলায়?
চন্দ্র কার সাথে আছে?
হোস্টেলে তো কোনো পুরুষ নেই,তবে?

আবারও হ্যালো বলে নিষাদ,ওপাশ থেকে সাড়া না পেয়ে জিজ্ঞেস করে,”কে বলছেন আপনি,চুপ করে আছেন কেনো?”

কল কেটে দেন তিনি।
বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথা শুরু হয় মাইনুল সাহেবের,কপালে ঘাম দেখা দেয়,এরকম কেনো হচ্ছে তার?
এই শীতের রাতেও ঘামছেম তিনি।

ওপাশের কোনো সাড়া না পেয়ে নিষাদ ফোন নিয়ে কিচেনে চন্দ্রর কাছে যায়।
“কে কল দিয়েছে?”

“কি জানি,কথা বলে নি,তুমি দেখো কে কল দিয়েছে।”

“রাখেন ফোন,পরে দেখবো।হাত বের করতে ইচ্ছে করছে না এখন।”

মাইনুল সাহেব তাড়াতাড়ি আমির কে ডাক দেন।আমির কে ডেকে সব বলতেই আমিরের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে।
মাইনুল সাহেব কে বলে,”আমি এখনই ওর হোস্টেলে যাচ্ছি বাবা,আপনি চিন্তা করবেন না।”

রেগে গিয়ে লিফটে উঠে আমির।মাথায় আগুন ধরে গেছে তার বাবার কথা শুনে।

চলবে…???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here