#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২২
কেউ একজন পিছন থেকে বলে উঠলো …..
তোমরা চাইলে তোমাদের আমি ঘুরতে নিয়ে যেতে পারি…
জান্নাত ইসরাত পিছনে তাকিয়ে দেখলো ঈশান বলছে এই কথা….
জান্নাত: ইসরাত একটা চিমটি দে তো আমি মনে হয় জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছি।
ইসরাত: শুধু তুই না আমি ও দেখছি।
ঈশান ওদের কথা শুনে ইসরাত আর জান্নাত কে জোরে চিমটি কাটলো….
ইসরাত: আল্লাহ এই চিমটি নাকি বিশ পিপরার কামর বুঝতে পারছি না (হাত নাড়িয়ে)
জান্নাত: ফাজিল পোলা এত জোড়ে চিমটি কেউ দেয় আমার হাত শেষ এখন আমার আর বিয়ে হবে না শুধু মাত্র তোর জন্য চুন্নির ভাই কোথাকার।
ঈশান: ঠিকই বলছিস বাই দা ওয়ে তোরা কি যাবি ঘুরতে নাকি আমি গিয়ে ঘুমাবো
..
জান্নাত: না না যাবো ইসরাত যা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়…
ঈশান: আমি অপেক্ষা করছি তোরা গিয়ে রেডি হয় আর তাড়াতাড়ি রেডি হবি বলে দিলাম।
জান্নাত: উক্কে
ঈশান নিচে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে….
ঈশানের বাবা: ঈশান তুই ঠিক আছিস তো…
ঈশান: হুম আমি ঠিক কেনো বলোতো…?
ঈশানের বাবা: নাহ এমনি…..
হুম আমি চলে এসেছি..
ঈশান কারো মিষ্টি কণ্ঠ শুনে ডাকিয়ে দেখে ইসরাত….
বোরকা পড়েছে মাথায় হিজাব হাতে আর পায়ে মুজা চোখে একটা চশমা কিন্তু ওই চশমার ভিতরে চোখ গুলো ও মনে হচ্ছে আমায় বেশি আকর্ষণ করছে।
জান্নাত: আমি ও এসে পড়ছি…
ঈশান দেখলো জান্নাত আর ইসরাত এখোই রকম ভাবে এসেছে তাই ওদের রাগানোর জন্য বললো….
ঈশান: হায় হায় এখন যদি রাস্তায় যাই মানুষ বলবে আমি আমার দুই দাদী কে নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছি।
জান্নাত: ভালো হইছে।
ঈশান জান্নাতের কথা শুনে অবাক হলো কজ জান্নাত রাগ করলো না তাই আর সে কথা বা বাড়িয়ে ইসরাত আর জান্নাত কে নিয়ে ঘুরতে গেলো…..
একটা পার্কের সামনে এসে….
জান্নাত: ভাইয়া ওই ভাইয়া…
ঈশান: বলে ফেল…
জান্নাত: আমি আর ইসু পাখি ওই বেঞ্চে বসবো আর তুই একটা পিক তুলবি….
ঈশান: হাহাহা
ইসরাত: হাসার কি হলো?
ঈশান: হাসার কথা বললে তো হাসবই। তোমাদের পিক তুলবে নাকি বোরকার পিক তুলবে বুঝতে পারছি না।
জান্নাত: তোর এত কিছু বুঝতে হবে না তুই পিক তুল(ইসরাত কে বেঞ্চে বসে)
ঈশান: আমি কি তোদের চাকর যে এইভাবে হুকুম করছিস?
জান্নাত: তুই যা মনে করিস এখন পিক তুল…
ইসরাত আর জান্নাত একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো আর ঈশান পিক তুললো….
জান্নাত: ভাইয়া এইবার তুই ইসু পাখির কাছে বস আমি তোদের পিক তুলবো….
ঈশান: না আমি পিক তুলবো না।
জান্নাত: ভাইয়া তুই এখন আর আমায় ভালবাসিস না তাই না 🥺 যেদিন চলে যাবো ওইদিন বুঝবি যে বোন কি…
ঈশান: আবারো শুরু হয়ে গেল ইমোশনাল ব্লাকমেইল।
জান্নাত: প্লিজ ভাইয়া
ঈশান: আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি….
ঈশান গিয়ে ইসরাতের থেকে কিছু দূরে গিয়ে বসলো…..
জান্নাত: তোর মতো হাবলা কিভাবে যে আমার ভাই হলো আমি বুঝতে পারছি না।
ঈশান: আমি হাবলা না দেখ এখন(বলেই ইসরাত কে ওইখানে জড়িয়ে ধরলো) তুল এইবার পিক….
ইসরাত: এএএএএ কি করছেন রাস্তায় মানুষ দেখছে ছাড়েন।
ঈশান: বেশি কথা বললে খুলে তুলে পিক তুলবো।
জান্নাত: ইসু পাখি কিছু বল না প্লিজ …. তোকে ভাইয়ার খুলে দেখতে চাই….
ইসরাত জান্নাতের দিকে তাকালো বাট কিছু বললো না চুপ করে রইলো যদি খুলে তুলে নেয় সেই ভয়ে…..
পিক তোলা শেষে…..
জান্নাত: ইসু পাখি তোর জন্য আমার ইচ্ছা পূরণ হলো না।
ইসরাত: এত কথা না বলে চল….
জান্নাত: আমি ফুচকা খাবো
ফুচকার কথা শুনে ইসরাত ও খেতে ইচ্ছা হলো কিন্তু কিছু বললো না….
ঈশান: তোরা মুখ খুলে কিভাবে খাবি ?
আপনি ধরে রাখবেন বাটি আমি আর জান্নাত হিজাবের ভিতর থেকে খাবো…..(মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে 🤭)
ঈশান কতক্ষন ইসরাতের দিকে তাকিয়ে রইলো বিচারী ইসরাত ভয়ে আর ঈশানের দিকে তাকালো না…..
জান্নাত তো হাসতে হাসতে শেষ ইসরাতের কথা শুনে…..
ঈশান: এক কাজ করি অনেকগুলো কিনে নিজে যাই তোমরা না হয় বাসায় খেয়ে নিবে।
জান্নাত: ওয়াও গুড আইডিয়া। কজ এক্ষুনি মাগরিবের আজান দিবে এর থেকে ভালো হবে বাসায় নিয়ে গেলে।
পরে ওরা অনেক ফুচকা আর চটপটি নিয়ে বাসায় গেলো……
বাসায়…..
জান্নাত ইসরাত রুমে বসে সব ঠিক করে একটা একটা মুখে ফুরছে…..
জান্নাত: জানিস ইসু পাখি এই ফুচকা যে আমার কি যে ভালো লাগে তা বলে বুঝানো যাবে না।
ইসরাত: আমারও খুব ভালো লাগে। জানিস একবার ফুচকা বানাতে গিয়ে ছোটো ছোটো রুটি বানিয়ে ফেলছিলাম পরে আলু ভর্তা দিয়ে খাইছি পাশে তেতুলের রস টা রেখে……
হাহাহা…তুমি কি পারো হুম শুধু ওই হাদীস ছাড়া ঈশান বললো…..
ইসরাত: যেভাবে বলছে মনে হচ্ছে ওনি সব পারে।
ঈশান: আমি ছেলে মানুষ ওই সব দরকার নাই আমার।
ইসরাত: কিন্তু কাজ করার দরকার আছে তো…..
ঈশান: আমার বাবার যে টাকা আছে তা দিয়ে আমার সারাজীবন কেটে যাবে এমনকি আমার ছেলে মেয়ে নাতি নাতনী রো…..
ইসরাত: বসে বসে খেলে রাজার সম্পদ ও শেষ হয়। দেখেন বাবার বয়স হয়েছে ওনি তো আর এত কিছু আগের মতো সামলাতে পারে না ওনাকে না হয় একটু সাহায্য করেন। এখন তো আপনার দায়িত্ব বাবা কে খেদমত করা।
বাবা-মার সঙ্গে সন্তানের সুসম্পর্ক নিয়ে কুরআন এবং হাদিসে অনেক নির্দেশ ও নসিহত রয়েছে। কুরআনের এসব নির্দেশ ও হাদিসের নসিহত সন্তানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাওহিদের দায়িত্ব পালনের পরপরই বাবা-মার খেদমতের আহ্বান করা হয়েছে কুরআনে।
হাদিসে পাকে প্রিয় নবি বাবা-মাকে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যারা বাবা-মার খেদমত করে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে না। তাদের জন্য সুস্পষ্ট জাহান্নামের কথা বলেছেন বিশ্বনবি।
সুতরাং প্রত্যেক সন্তানের উচিত কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বাবা-মার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। তাওহিদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাবা-মার খেদমতের মাধ্যমে পরকালের নাজাতের পথ উন্মুক্ত করা।
কুরআন ও হাদিসে বাবা-মার ব্যাপারে যেসব নির্দেশনা এসেছে তাহলো-
তাওহিদের দ্বিতীয় দায়িত্ব তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং বাবা-মার সাথে উত্তম ব্যবহার কর।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৩)
বাবা-মাকে ধমক না দেয়া তাদের মধ্যে একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে, তাদের উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদের ধমক দিও না এবং তাদের সঙ্গে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা বল।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৩)
কিন্তু আপনি কিছুদিন আগেই বাবার সাথে খুব খারাপ একটা কাজ করেছেন। ক্ষমা চান মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে এবং নিজের বাবার কাছে।
বাবা-মার অনুগ্রহ স্মরণ করা তাদের সামনে ভালোবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল, ‘হে আমার পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)
কিন্তু আপনি বাবার সাথে উচ্ছসরে কথা বলেছেন ওনার মনে আঘাত করেছেন।
একটা গল্প বলছি শুনুন… আমরা তো প্রায় সময় বলি হজ্ব এ যাবো আল্লাহ তায়ালা চাইলে কিন্তু বাবা-মার প্রতি দায়িত্ব পালন জিহাদের সমতুল্যহজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন এবং জেহাদের যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার পিতামাতা কি জীবিত আছে? তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ’।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, ‘পিতামাতার সেবাই তোমার জন্য জেহাদ।’ (মুসলিম)
ঈশান: হুম সত্যিই ওইদিন খুব খারাপ ব্যাবহার করেছি ডেড এর সাথে(মাথা নিচু করে)
ইসরাত: এখন গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসেন।
ঈশান: ডেড কি আমায় ক্ষমা করবে?
জান্নাত: আরেহ ভাইয়া তুই তো দেখছি লড়াই করার আগেই ভয় পাচ্ছিস।
ইসরাত: কোনো বাবা মাই সন্তানের ডাক ফেলতে পারে না। আপনি মন থেকে ক্ষমা চান দেখবেন ওনি ঠিকই ক্ষমা করে দিবে….
ঈশান: হুম….
ঈশান ওর বাবার কাছে গিয়ে…..
ঈশান: ডেড….
চলবে….
বানান ভূল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।