#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_২৩
ঈশান ওর বাবার কাছে গিয়ে…..
ঈশান: ডেড….
ঈশানের বাবা: কিছু কি বলবে?
ঈশান: হুম ডেড….
ঈশানের বাবা: বলো কি বলবে….
ঈশান: আই অ্যাম সরি ডেড। ওইদিন একটু বেশি বলে ফেলছি(মাথা নিচু করে) মাফ করে দিও ডেড। জানোই তো রাগ উঠলে যে আমার মাথা ঠিক থাকে না।
ঈশানের বাবা: বাবা-মা সন্তানের জন্য সেরা আশীর্বাদ। কেননা সন্তানকে জন্মের পর থেকেই বাবা-মা তাদের বেড়ে ওঠতে সার্বিক দেখা-শুনা করে থাকেন। সন্তানদের উন্নত জীবনের জন্য এবং তাদেরকে সুস্থ, সুন্দর ও ভালো রাখতেই চলে বাবা-মার যত সংগ্রাম।(ঈশানের মাথায় হাত রেখে)
দুর্ভাগ্যবশত সন্তানরা বাবা-মার সহযোগিতার ক্ষেত্রে পুরোপুরি বিপরীতে অবস্থান করে। যে বাবা-মা সন্তানের সুখের জন্য তাদের সুখকে বিসর্জন দেয়, সে সন্তানই বড় হয়ে সেভাবে বাবা-মার খোঁজ খবর রাখে না। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে কোনো তত্ত্বাবধানই করে না।
এমনকি অনেক বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে থাকতেও পারে না। তাদের স্থান হয় অসহায় পল্লী বৃদ্ধাশ্রমে। অথচ বাবা-মা তাদের যৌবনের সব সুখ-স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছেন সন্তানের অকৃত্রিম স্নেহ, মমতা ও প্রতিপালনে।
আর এভাবেই অনাদর-অবহেলায় অনেক বাবা-মা দুনিয়া থেকে বিদায় নেন পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে। তাই সে সব বাবা-মা’র জন্য সন্তানদের শেষ করণীয় হলো দোয়া করা। সন্তানের সে দোয়া হবে বাবা-মার জন্য আল্লাহর কাছে অনেক শক্তিশালী আবেদন। যা মহান প্রভুই দুনিয়ার সন্তানদেরকে শিখিয়েছেন-
রব্বির হামহুমা কামা রব্বায়ানি সগিরা।‘ (সুরা বনি-ইসরাইল : আয়াত ২৪)অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন; যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’
বাবা-মা কখনো সন্তানের কাছে টাকা-পয়সা, বিলাসিতা কিংবা অসাধ্য-দুষ্প্রাপ্য কোনো কিছুই চায় না। প্রকৃত পক্ষে তারা চায় সন্তানের সঙ্গ, ভালোবাসা ও তত্ত্বাবধান। এ কারণেই হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন- বাবা-মা’র সন্তুষ্টিতেই রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর তাদের অসন্তুষ্টিতে রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি।
সুতরাং দুনিয়ার সব মানুষের প্রতি আহ্বান, যাদের বাবা-মা জীবিত আছে, তাদের পতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা। আর যাদের বাবা মা ইন্তেকাল করেছেন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
আমি আর তোমার মা তো কিছুই চাই না তোমার বা জান্নাতের কাছ থেকে শুধু চাই তোমরা ভালো থাকো সুস্থ্য থাকো। আমাদের মৃত্যুর পর যেনো দু হাত তুলে আমাদের জন্য দোয়া করতে পারো। আমরা যা করি তোমাদের ভালোর জন্যই করি বাবা। আর বাবা আমাদের জন্য ওই মেয়ে টাকে প্লিজ কষ্ট দিও না।
ঈশান মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো….
ঈশানের বাবা: আর শুনো বাবা। কোনো বাবা মাই তার সন্তানের ডাক শুনে স্থির থাকতে পারে না। আর সন্তানের ভুল কিন্তু কোনো মা বাবাই মনে নেয় না।
ঈশান ওর বাবার কথা শুনে দু চোখ বেয়ে কিছু টা নোনা পানি পড়তে লাগলো আর সে চলে গেলো…..
ক্ষমা কি চেয়েছেন ইসরাত বললো…..
ঈশান: হুম….
ইসরাত: একটা কথা বলবো….
ঈশান: হুম বলো…
ইসরাত: আমার সাথে কি আমার বাসায় একদিনের জন্য যাবেন?
ঈশান কিছুক্ষন ভাবলো পরে বললো….
আচ্ছা ঠিক আছে আমি তুমি আর জান্নাত দুই দিনের জন্য যাবো….
ইসরাত তো মনে হয় আকাশ থেকে পড়লো কেননা ও ভয়ে ভয়ে একদিনের কথা বলছে আর ঈশান কিনা বললো দুই দিন…ও খুশি তে গিয়ে ঈশান কে জড়িয়ে ধরলো….
অনেক অনেক শুকরিয়া আপনাকে। আমি জানি যে আপনার মন টা এখনও পুরোপুরি খারাপ হয়ে যায় নি। আপনার মনে একটু হলেও আল্লাহ তায়ালা দ্বীন আছে….
ঈশান: হুম বুঝছি এইবার ছাড়েন। পরে কেউ চলে আসলে…
ইসরাত ঈশানের কথায় লজ্জা পেয়ে চলে যায়….
ওইদিনের মতো ভালো ভাবে রাত কাটলো পরের দিন সকালে ঈশান ইসরাত ও জান্নাত রওনা দিলো ইসরাতের বাবার বাড়িতে……
ঈশান , ইসরাত ও জান্নাত সবাই কে সালাম দিলো….
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু…
ইসরাতের আম্মু ও আব্বু: ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু….
সবার সাথে কুশল বিনিময় করলো….
ইসরাতের রুমে….
ঈশান: বাহ তোমার রুম টাতো দেখছি খুব সুন্দর।
ইসরাত: শুকরিয়া। আপনাকে একটা কথা বলি?
ঈশান: হুম বলেন?
ইসরাত: আপনি আমায় এই তুমি আবার এই আপনি বলছেন কেনো?
ঈশান: আসলে মনে থাকে না। কখন কি বলি। আচ্ছা একটা কথা বলি?
ইসরাত: হুম বলেন।
ঈশান: আমরা যদি ফ্রেন্ড হই তাহলে তো আমি আপনাকে তুমি আর আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারবেন তাই না
ইসরাত: হুম। কিন্তু আমি আপনার বন্ধুত্ব গ্রহণ করবো না।
ঈশান: কিন্তু কেনো?
ইসরাত: আপনি নামাজ পড়েন না। আবার যারা নামাজ পড়ে তাদের নামাযে বেঘাত ঘটান আবার যারা পর্দা করে তাদের অসম্মান করেন তাই।
ঈশান: ওকে আজ থেকে আর এইসব করবো তাহলে আমরা ফ্রেন্ড ওকে।
ইসরাত: হুম। কিন্তু আমি আপনাকে আপনি বলেই সন্মেধন করবো।
ঈশান: কেনো?
ইসরাত: সম্মান দিবো।
ঈশান: আচ্ছা ঠিক আছে। এখন যেহেতু তুমি আর আমি ফ্রেন্ড তাহলে আজ তোমাকে আমার লাভ স্টোরি টা শোনায় কি বলো।
ইসরাত ঈশানের কথা টা শুনে কষ্ট পাওয়া সত্ত্বেও মুখে হাসির রেখা টেনে বললো…
হুম….
ঈশান শুরু করলো তার লাভ স্টোরি কিভাবে মেরির সাথে ওর পরিচয় কিভাবে ওদের ভালোবাসা শুরু কিভাবে তারা দিনের পর দিন প্রেম করছে এইসব…
আচ্ছা একটা মজার গল্প বলি।
ঈশান ওর লাভ স্টোরির মাঝে ইসরাতের গল্পের কথা শুনে কিছুটা বিরক্ত হলো তাও মুখে প্রকাশ না করে বললো…
বলো….
একটি শিক্ষনীয় ইসলামিক গল্প:
এক ব্যক্তি জঙ্গলে হাটছিলেন। হঠাৎ দেখলেন এক সিংহ তার পিছু নিয়েছে।তিনি প্রাণভয়ে দৌড়াতে লাগলেন। কিছুদূর গিয়ে একটি পানিহীন কুয়া দেখতে পেলেন।
তিনি চোখ বন্ধ করে দিলেন ঝাঁপ। পড়তে পড়তে তিনি একটি ঝুলন্ত দড়ি দেখে তা খপ করে ধরে ফেললেন এবং ঐ অবস্থায় ঝুলে রইলেন।উপরে চেয়ে দেখলেন কুয়ার
মুখে সিংহটি তাকে খাওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।
নিচে চেয়ে দেখলেন বিশাল এক সাপ তার নিচে নামার অপেক্ষায় চেয়ে আছে। বিপদের উপর আরো বিপদ
হিসেবে দেখতে পেলেন একটি সাদা আর একটি কালো ইঁদুর তার দড়িটি কামড়ে ছিড়ে ফেলতে চাইছে।এমন হিমশিম অবস্থায় কি করবেন যখন তিনি বুঝতে পার ছিলেন না, তখন হঠাৎ তার সামনে কুয়ার সাথে লাগোয়া গাছে একটা মৌচাক দেখতে পেলেন। তিনি কি মনে করে সেই মৌচাকের মধুতে আঙ্গুল ডুবিয়ে তা চেটে দেখলেন। সেই মধুর মিষ্টতা এতই বেশি ছিল যে তিনি কিছু মুহূর্তের জন্য উপরের গর্জনরত সিংহ, নিচের হাঁ করে থাকা সাপ, আর দড়ি কাঁটা ইঁদুরদেরকথা ভূলে গেলেন।
ফলে তার বিপদ অবিশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়ালো।
ঈশান: তো এখন কি হয়েছে লোকটি এখন ওই সাপের মুখে পড়বে হাহাহা। ভালোই হয়েছে বোকা লোক। নিজের জান না বাঁচিয়ে সে মধু খেতে লাগছে হাহাহা নাইস স্টোরি ইসরাত (হাসতে হাসতে) সামনে মৃত্যু রেখে কেউ খাবারের কথা ভাবতে পারে আই ক্যান্ট ভিলিব ইট(হাসতে হাসতে)
ইসরাত ঈশানের হাসি দেখে মুচকি হাসলো আর বললো…
ইসরাত: আপনি এখনো পুরো গল্প টা শুনেন নাই।
ঈশান: ওহ আরো আছে নাকি বলো বলো।।।।।
ইসরাত: হুম শুনেন….গল্পে যে সিংহ টা সে হচ্ছে আমাদের মৃত্যু যে সর্বক্ষণ আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সেই সাপটি হচ্ছে আমাদের কবর , যা আমাদের অপেক্ষায় আছে। দড়িটি হচ্ছে আমাদের জীবন, যাকে আশ্রয় করে আমাদের বেঁচে থাকা।সাদা ইদুর হলো দিন আর কালো ইদুর হলো রাত যারা প্রতিনিয়ত ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের আয়ু কমিয়ে দিয়ে আমাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর সেই মৌচাক হলো আমাদের দুনিয়া যার সামান্য মিষ্টতা পরখ করে দেখতে গেলেও আমাদের এই চতুর্মুখী ভয়নক বিপদের কথা ভুলে যাওয়াটা বাধ্য….
ঈশান ইসরাতের কথা শুনে কিছুক্ষণ ইসরাতের দিকে তাকিয়ে বললো আরেকটা বলো আর প্লিজ আমার একটু কাছে আসো…..
ইসরাত ঈশানের কাছে গিয়ে বললো….
ইসরাত: আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে পড়ে আছেন কিন্তু আপনার মৃত্যু আপনার দরজায় প্রতিদিন ডেকে যায় তার খবর তো নেন না।
হাহাহা,,,, দূরে যাও দূরে যাও…
ইসরাত হটাৎ ঈশানের এই রকম কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো….
ঈশান: বলছিনা দূরে যাও(ধমক দিয়ে)
চলবে…..
বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন