#পবিত্র_ভালোবাসা
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_৩
*********************
ঈশান মেয়েটার কাছে যেয়ে….
ঈশান: হাই এই অ্যাম ঈশান(হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
মেয়েটি: হেই আই অ্যাম মারিয়া বাট সবাই মেরি বলে ডাকে(ড্রিঙ্কসের গ্লাস হাতে নিয়ে ড্যান্স করতে করতে)
ঈশান: ওয়াও নাইস নেম । তোমার সাথে নাম টাও মিল আছে। তুমি যেমন সুন্দর,স্মার্ট আর হট ,নাম তাও….
মেরি: সত্যিই কি তাই…!
ঈশান: ইয়াহ,ক্যান উই বি ফ্রেন্ডস?
মেরি: অফকোর্স…..
তো মেরি আর ঈশান ওইদিন অনেক ড্রিঙ্কস আর ড্যান্স করলো….
এইদিকে…..
জান্নাত: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু আম্মু….
জান্নাতের আম্মু: ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু (কিছু টা অবাক হয়ে)
জান্নাত: আচ্ছা আম্মু আমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নামাজ টা পড়ে আসি, তারপর তোমায় কাজে সাহায্য করবো….
জান্নাতের আম্মু: আমি কানে কিছু ভুল শুনছি!!?
জান্নাত: নাহ আম্মু একদম ঠিক শুনছো। আচ্ছা আম্মু টাটা ,সরি সরি আল্লাহ হাফেজ ।আমি নামাজ টা পড়ে আসি পরে সময় চলে যাবে।।
জান্নাতের আম্মু: হুম(হাসি দিয়ে) আল্লাহ তুমি এতদিন পর মুখ তুলে দেখেছো। যেই মেয়ে কিনা বাসায় আসার আগেই জোরে চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় করে পরে ব্যাগ টা ফেলে দিয়ে রুমে গিয়ে ফোন চালায় সেই মেয়ে কিনা আজ সালাম দিয়ে বাসায় ঢুকলো আবার নাকি নামাজ ও পড়বে । আল্লাহ আমার মেয়েটাকে তুমি হেদায়েত দান করো।আমিন। আমার ছেলেটাও যদি…..
কি ভাবছো তুমি…?
জান্নাতের আম্মু: জানো তোমার মেয়ে আজ কেমন যেনো বদলে গেছে….
জান্নাতের আব্বু: মানে…
জান্নাতের আম্মু: শুনো তাহলে,,পরে জান্নাতের মা জান্নাতের আব্বু কে সব বললো।
জান্নাতের আব্বু: আলহামদুলিল্লাহ
ইসরাতের বাসায়…..
ইসরাতের আম্মু: তো আজ কেমন কাটলো তোমার কলেজ মামুনি….?
ইসরাত: আলহামদুলিল্লাহ ভালো…. কিন্তু সবাই আমার দিকে কেমন যেন ভুতের মতো তাকিয়ে ছিলো (মন টা খারাপ করে)
ইসরাতের আম্মু: মামুনি মন খারাপ করবে না বুঝছো। ওরা হইতো এই রকম মেয়ে আর দেখে নাই তাই ওরা অবাক হয়ে ছিলো…
ইসরাত: হুম। কিন্তু জানো আম্মু আজ একটা মেয়ের সাথে কথা বলছি (পরে ইসরাত তার আম্মু কে সব বললো)
ইসরাতের আম্মু: এইটা তো ভালো ।
ইসরাত: জানো আম্মু আমার খুব ইচ্ছা ছিলো ওর সাথে বন্ধুত্ব করতে কিন্তু(মন খারাপ করে)..
ইসরাতের আম্মু: আমার দিকে তাকাও তো মামুনি…
ইসরাত: হুম….
ইসরাতের আম্মু: জান্নাত যদি তোমার ফ্রেন্ড মন থেকে হতে চায় তাহলে দেখবে সেও তোমার মতো মানে আল্লাহ তায়ালার সব আদেশ নির্দেশ মেনে চলবে আর যদি আল্লাহ তায়ালা চায় যে তোমরা ফ্রেন্ড হবে তাহলে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। কেননা উনি যা করেন সবার ভালোর জন্যই করেন।
ইসরাত: হ্যাঁ আম্মু,(খুশি হয়ে) আমার আম্মু টা কত্ত ভালো। আমার মন খারাপ থাকলে কিভাবে যেনো জাদুর মতো ভালো করে দেয় (আম্মু কে চুমু দিয়ে)
ইসরাতের আম্মু: পাগলী একটা
জান্নাত: জানো আম্মু আজ কার দেখা হয়েছে?
জান্নাতের আম্মু: না বললে জানবো কিভাবে?
জান্নাত: শুনো তাহলে কি হয়েছে
জান্নাতের আম্মু: হুম বল…
পরে জান্নাত কলেজ থেকে শুরু করে বাড়ি আসা পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে সব বললো….
জান্নাতের আম্মু: এই রকম এখনও আছে ?
জান্নাত: হুম আম্মু। ওর সাথে ফ্রেন্ড করার খুব ইচ্ছা আমার(কাদো কাঁদো স্বরে বলল)…..
জান্নাতের আম্মু:তো বানিয়ে ফেল…
জান্নাত: কিভাবে ও কি বললো তুমি শোনো নাই…
জান্নাতের আম্মু:আরে বোকা মেয়ে আমার তুই যদি ওর সাথে সত্যিই বন্ধত্ব করতে চাস তাহলে ও যা বুঝাতে চেয়েছে তা হয়ে যা আর ও যা বুঝাতে চেয়েছে তা কিন্তু তোর জন্য মঙ্গল জনকেই(মাথায় হাত বুলিয়ে)
জান্নাত: হুম আম্মু(হেসে দিয়ে)
অনেক রাত…..
ঈশান: রাস্তা বড় ছোটো ধীরে ধীরে হাঁটো রাস্তা বড়ই ছোট (হেলেদুলে হাটতে হাটতে)
তিয়াস: ঈশান ভাই তুই তো দেখছি আজ পুরাই গেছিস। আর আজ তো তুই সেই লেভেলের ড্যান্স করছিস।আর আজ যে পরিমাণ এনজয় করেছি মনে হয় না এই রকম এনজয় আরো করেছি।
ঈশান: আমি ঈশান চৌধুরী আমি যাই করি তাই বেস্ট হয়। হুম এইবার তো আমার মেরি ডার্লিং ছিলো তাই সব কিছুই বেস্ট ছিলো(বলেই তিয়াস আর ঈশান hi-five করলো✋)
অর্নিল: তিতাস ঈশান চুপ কর তো…
ঈশান: কেনো কেনো? কি হয়েছে যেভাবে বলছিস মনে হয় সামনে আমার ভিলেন বজ্জাত ডেড দাড়িয়ে আছে (বলেই হাসতে লাগলো) তোরা কি জানিস আমি ডেডের সামনে এমন লুক নিয়ে থাকি যেনো ডেড ভাবে আমি একদম সরল সোজা,ইনোসেন্ট,ভদ্র কিন্তু সে তো জানে না আমার আসল রূপ হাহাহা
তিয়াস: এইটা তো আজ গলার উপরে খেয়ে সব বলে দিচ্ছে বাট ও তো আর জানে না ওর সামনে সয়ং আজরাইল দাড়িয়ে আছে (অর্ণীলের কানে কানে বলল)
ঈশান: কিরে কি বলছিস তোরা (যেই সামনে তাকালাম আর দেখলাম ভিলেন ওহ সরি ডেড দাড়িয়ে আছে আর সাথে মম) ডেড (দুলতে দুলতে)
অর্নিল: আংকেল আজ একটু ভুল করে….
ঈশানের বাবা: স্টপপপপপপপপপ,আর মিথ্যা বলতে হবে না আমি সব বুঝে গেছি। তোমার ছেলে এইসব কু-কৃর্তি করে যাচ্ছে আর তুমি কিনা আমার কাছ থেকে…(ঈশানের মাকে উদ্দেশ্য করে)
ঈশানের মা: মনে হয় আজকে ভুল করে….
ঈশানের বাবা: আর একটা কথা বলবে না তুমি (ধমক দিয়ে)
তিয়াস ও অর্নিল: আংকেল….
ঈশানের বাবা: চুপ থাক তোরা । তোদের এত বিশ্বাস করেছিলাম আর সেই বিশ্বাসের ফল এখন পেলাম(কান্না করে)
ঈশান: এইখানে দাড়িয়ে আছি কেনো আমরা why why (বলে বাড়ির ভিতরে যেতে লাগলো) ‘হটি-নটি তোর ওই ফিগারে কারেন্ট যেন আছে। ছুঁয়ে দিলে ঝাটকা লাগে রে, আয় না আরো কাছে। তোর ঠোঁটে রাখলে এই ঠোঁট প্রাণটা যেন বাঁচে। তোর রিস্কি রিস্কি চাহনিতে হুইস্কির ফ্লেভার আছে। উম্মা, এই দিলাম চুম্মা…।’উম্মা মেরি তোমায় দিলাম চুম্মা(সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে)
ঈশানের বাবা: হাহ কি শান্তি আমার যে ছেলে কে নিয়ে এত গর্ব করতাম আর সেই ছেলে কিনা
ঈশানের আম্মু: প্লিজ তুমি মন খারাপ করো না সকালে ওকে বুঝিয়ে বললেই হবে….
ঈশানের বাবা: কি বলবো না কি বুঝাবো সব আমার বুঝা হয়ে গেছে ।(বলেই কাকে যেনো ফোন দিলো)
সকালে….
ঈশানের বাবা: ঈশানননননন ঈশানননননননন(চিল্লিয়ে ডাকতে লাগলো)
ঈশান: আহ্ কি সুন্দর স্বপ্ন টা । আমি আর মেরি ঠিক এই সময় কারো ডাকার আওয়াজ পেলাম। চোখ মেলে তাকাতেই বুঝলাম ডেড ডাকছে তাই বেশি দেরি না করে চলে গেলাম ডেড এর যাচ্ছে…..
হুম ডেড বলো….
ঈশানের বাবা: তোমার তো দেখছি খুব ভালো উন্নতিই হচ্ছে
ঈশান: সরি আসলে গতকাল…
ঈশানের বাবা: নো এক্সকিউজ,,,,আমার কথা টা শোনো ভালো করে…..
চলবে…..
বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
শিক্ষণীয় কিছু কথা: গতকাল পর্বে বলে ছিলাম “সৎ সঙ্গে সর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ” তার প্রমাণ কিন্তু ঈশান। আজ যদি ঈশান এমন কোনো ফ্রেন্ডের সাথে চলা ফেরা করতো তাহলে হইতো তাকে এমন মাঝরাতে নেশা করে বাসায় ফিরতো না। আমাদের সমাজে ভালো ছেলে বা মেয়েরা কিছু অসৎ বন্ধু পেয়ে তারা তাদের জীবন টা ধ্বংস করে দেয়। আমরা অনেক ছেলেকেই দেখেছি যে ছেলে কিনা আগে সিগারেটের গন্ধ টা সইতে পারতো না আর সেই ছেলে এখন একটার পর একটা সিগারেটের প্যাকেট শেষ করে। তাই আমাদের সচেতন হওয়া উচিত কেননা”সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে” ☺️
#হেদায়েতের_গল্প