#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_৩১
কি হয়েছে কি মেরি কি হয়েছে তোমার?নাঈম বললো…
মেরি: প্লিজ আগে আমায় একটু পানি দেও(খুব ভয় পেয়ে)
নাঈম মেরি কে পানি দিলো আর মেরি এক চুমুকে সব পানি শেষ করে ফেললো।
নাঈম আজ একটা স্বপ্ন দেখে আমি এমন ভয় পেয়েছি আর যদি এইটা সত্যি হয় তাহলে না জানি কতটা ভয়ানক হবে(নাঈম কে জড়িয়ে ধরে)
ডার্লিং স্বপ্ন তো সপ্নই তা কখনো বাস্তব হয় না। ভূলে যাও আর কিভাবে আগামীকাল নিউ কি করবে তা ভাবো।
আমি আর এইসব খারাপ কাজ করবো না নাঈম তুমি যদি সত্যিই আমায় ভালোবাসো তাহলে চলো সব সত্যি বলে দেই আর তওবা কাটি।
কেনো কি হয়েছে তোমার এই মাঝরাতে?
শোনো কি হয়েছে….
আমি স্বপ্ন দেখলাম যে আমি মারা গেছি আর আমি কবরের কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে পারলাম না। আর আমার কবর ছিলো খুব অন্ধকার আর অনেক অনেক বড় বড় সাপ যা আমাকে ছোবল দিচ্ছে। আর আমার কবরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে যা আমার পুরো শরীল টাকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে । আমার পুরো মাথার মগজ ফুটন্ত পানির মতো টগবগ টগবগ করে ফুটছে। আমার জিহ্বা বের করে আমার শরীলের সমস্ত ওজন জিব্বার উপরে ছেরে দেওয়া হয়েছে। আর আর আমার সমস্ত ওজন আবার আমার বুক আই মীন লজ্জা স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমার মুখ শুকুরের মতো আর শরীল গাঁধার মতো হয়ে গেছে। আর আমার পেটে আগুনের সন্তান দেওয়া হয়েছে আর প্রসব বেদনায় আমি খুব চিল্লাছি কিন্তু নেই আমাকে ধরার আমাকে পানি হিসেবে রক্ত আরো অনেক বাজে জিনিস দেওয়া হচ্ছে আর কাটা দেওয়া হচ্ছে আর আমার পুরো শরীল আগুনে জ্বলে যাচ্ছে আবার আগুনে দিচ্ছে এই আগুন এতটাই কালো যে কি বলবো(খুব কান্না করে নাঈম কে জড়িয়ে ধরে) নাঈম চলো আমরা এইসব ছেড়ে দেই আমি আমার এই রূপ শুধু তোমার জন্য। আমার ভালোবাসা তোমার জন্য আমি আর কাউকে আমার এই রূপ দেখাতে পারবো না। আর আমরা আমাদের বাচ্চা নিয়ে খুব সুখে থাকবো দেখো।
নাঈম ও খুব ভয় পেয়ে যায় মেরির কথা শুনে।
আচ্ছা বাবু তুমি যা বলবে তাই হবে এখন ঘোমাও।
না আমি এখন ঘুমাবো না আমি এখন ফ্রেশ হয়ে এসে নামাজ পড়বো।
তাহলে আমি ও পড়বো তোমার সাথে।
খুব ভোরে….
ক্রিং ক্রিং
এত সকালে কে আসলো। আরিফ এই আরিফ দেখতো কে এসেছে(ঈশানের বাবা)
আরিফ গিয়ে সদর দরজা খুলে বললো….
বড়আব্বু একজন লোক আর একজন বোরকা পড়ে আফা আসছে ওরা নাকি আপনাদের সাথে কিছু বলতে চায়।
বাসার ভিতরে নিয়ে আয়
ঈশানের বাবা দেখলো একজন ছেলে আর একটি মেয়ে আর মেয়েটি বোরকা হিজাব আর হাত পা মুজা।
ওদের সালাম বিনিময় করা হলো
ঈশানের বাবা: তোমরা কে ঠিক চিনতে পারলাম না
আমি মারিয়া আই মীন মেরি। মেয়েটি বললো…
ঈশানের বাবা তো মেরি নাম শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো
তোমরা এইখানে কেনো আর এই ছেলেটি আবার কে এখন আবার কি মতলব নিয়ে আসছো (কিছুটা বিরক্ত হয়ে)
নাঈম: আংকেল আজ কিছু সত্যি কথা বলতে চায় প্লিজ শুনুন আমাদের কথাগুলো
ঈশানের বাবা: আর কি সত্যি কথা বলবে তোমরা?
মেরি: আংকেল আমাকে শুধু একটিবার ইসরাতের সাথে দেখা করতে দিন(অনুনয় করে)
ঈশানের বাবা: কখনো না তোমার মতো মেয়ের আমার মায়ের কাছে কখনোই যেতে দিবো না
মেরি: প্লিজ আংকেল। আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই যে ঈশানের কোনো দোষ নেই সব আমাদের প্ল্যান ছিলো। ঈশানের সন্তান আমার গর্বে না আমার গর্বে আমার স্বামী নাঈমের সন্তান। আমাকে একটু বার শুধু ইসরাতের সাথে দেখা করতে দিন।
ঈশানের বাবা এইসব শুনে মেরি কে ইসরাতের সাথে দেখা করার পারমিশন দিলো….
মেরি ইসরাতের রুমে গিয়ে….
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু বোন।
মেরির মুখে হিজাব থাকায় ইসরাত ঠিক চিনতে পারলো না…
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। কে আপনি?
আমি মেরি ইসরাত।
ইসরাত: ওহহ আপনি(মিষ্টি হাসি দিয়ে) একদিনে ওনি(ঈশান কে বুঝিয়ে) আপনাকে পর্দাশীল বানিয়ে ফেলছে মাশাআল্লাহ।বসেন আপু।
মেরি গিয়ে ইসরাতের হাতে ধরলো আর ওকে নিয়ে খাটে বসলো….
মেরি: বোন আজ তোমাকে সত্যি একটা কথা বলছি।
ইসরাত: হুম বলেন?
মেরি: ঈশানের কোনো দোষ নেই। আর এই বাচ্চা টা হলো আমার স্বামীর। আসলে আমি আর আমার স্বামী টাকার লোভে পড়ে এইসব করেছি। আমার স্বামী আমার রূপ নিয়ে এইসব করিয়েছে আমায়। আর ঈশান সত্যিই খুব ভালো ছেলে ওর মনে কিন্তু তোমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি আমি। আর ওই ছবি গুলো হলো ঈশান একদিন খুব বেশি ড্রিঙ্কস করে তাই ওকে আমি আর আমার স্বামী একটা রুমে নিয়ে যাই আর এইসব পিক তুলি(মাথা নিচু করে) আর রিপোর্ট হলো টাকা দিয়ে বানানো। প্লিজ বোন ঈশান কে ভূল বোঝো না।
ইসরাত মেরির কথা শুনে খুব কান্না করছে এই কান্না কষ্টের না সুখের কেননা ওর মন ঠিকই বলছিলো যে ঈশান এমন কাজ কোনোদিন ও করতে পারে না আর অর্নিল ভাইয়া ও যে ওর মনে সাহস দিয়েছিলো।
মেরি: আমাকে ক্ষমা করো বোন
ইসরাত: আমার কাছে তোমার সব ভুল আর নেই তুমি বরং মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাও ওনি যা করে ভালোর জন্যই করে।
মেরি: হুম। বোন একটা কথা বলবো?
ইসরাত: হুম বলেন?
মেরি: আমি গতরাতে একটা স্বপ্ন দেখিছি তুমি কি ওই স্বপ্নের উত্তর আমায় দিতে পারবে আমি জানি তুমি পারবে।
ইসরাত: বলেন যদি জানি ইনশাআল্লাহ দিবো।
মেরি তার স্বপ্নের কথা ইসরাত কে বললো ….
ইসরাত: আপনার স্বপ্নের উত্তর হলো…তুমি পরপুরুষ দেখে মাথায় কাপড় দিতে না তোমার চুল কে ঢেকে রাখতে না। নগ্ন মাথায় পর পুরুষকে দেখানোর জন্য চুল ঝুলিয়ে ঘুরিয়ে বেড়াতে।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে মহিলাদেরকে মাথা ঘাড় ও বুক মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মহিলারা মাথায় বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক ব্যাবহার করে মাথায় কাপড় না দিয়ে রাস্তা ঘাটে হাঁটা চলা করছে অথচ পর্দা রেখে চুল ঢেকে রাখা সকল নারির উপর ফরজ। তাই আমাদের সকল নারীদের উচিত মাথার চুল ঢেকে রাখা। আর কেউ যদি তার স্বামী কে কষ্ট দেয় বা কটু কথা বলে আর সেই নারীর জন্য যদি তার শশুর শাশুড়ি বা আত্মীয় স্বজন রা , প্রতিবেশী র নিরাপদে থাকতে পারে না। ওই নারী যতই নামাজ পড়ুক তার জন্য কিন্তু এই শাস্তি নিয়োজিত(জিহ্বা দিয়ে জুলানো) আর যে নারী বিবাহিত থাকা সত্বেও পর পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়ায় সেই নারির জন্য বুকে ওজন দেওয়া হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে নারী তার লজ্জাস্থান হেফাজত রাখতে পারবে সেই নারীকে জান্নাতী গোষণা করা হবে(সূরা মূ মিনুন:৫) আর যে নারী তার লজ্জাস্থান হেফাজত করবে না তার জন্য জাহান্নামে শাস্তি রয়েছে পরণিন্দা আর মিথ্যা বলার জন্য তার শাস্তি শকুনের মতো মুখ আর গাধার মতো শরীল। হিংসা আর খোটা দেওয়া ভালো না তার জন্যও রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।
মেরি তো এইসব শুনে ভয় পেয়ে যায় আর প্রচুর কান্না করতে লাগলো….
আমার এত দিনের ভূল কি আর ঠিক হবে না ইসরাত।
ইসরাত: কেনো হবে না। আপনি যদি মন থেকে ক্ষমা চান মহান আল্লাহ তায়ালার সব আদেশ নির্দেশ মেনে চলেন আমাদের প্রিয় নবী র পথ অনুসারে চলেন তাহলে দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
মেরি: তোমাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো বোন।
ইসরাত: ধন্যবাদ কেনো দিবেন আমি তো কিছু করি নাই।
মেরি: আজ তুমি জিতে গেছো যেতে গিছে তোমার #পবিত্র_ভালোবাসা। আমি জানি ঈশান একদিন সব বুঝবে। এখন আসি।
ইসরাত: আসি মানে কি হুম আজ সকালের নাস্তা করে পরে যাবেন।
মেরি: আজকে না অন্য একদিন যদি বেঁচে থাকি।আর একটা কথা আমি আমার নাম চেঞ্জ করে ফেলেছি আমার নাম এখন মরিয়ম।
ইসরাত: ও আচ্ছা ঠিক করেছো কেননা মারিয়া নাম হলো খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একটি নাম।
হুম…
মেরি আর নাঈম চলে গেলো।
সবার মন থেকে বড় একটা পাথর সরে গেছে বলে সবাই বসার রুমে বসে কথা বলছে….
ইসরাতের বাবা: যাক বাঁচা গেছে। সত্যি টা জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা পারে না কোনো কিছুই নাই। মহান আল্লাহ তায়ালা হইতো আমার মায়ের কান্না সহ্য করতে পারছিলো না তাই হইতো এই রকম করেছে।
ঈশানের বাবা: হুম। কিন্তু ঈশান কই কখন থেকে ফোন দিচ্ছি ধরে না। ছেলেটা হইতো অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমিই বা কি করবো মাথা তো তখন ঠিক ছিলো না।
ইসরাত: এখনও ফোন তুলছে না। আপনি বরং তিয়াস ভাইয়া কে একটা ফোন দিন বাবা।
ঈশানের বাবা: তিয়াস কেও দিয়েছিলাম ফোন কিন্তু তিয়াস বললো গতকাল নাকি ঈশান খুব ড্রিঙ্কস করেছে আর তিয়াস কে ও অনেক বকাচকা দিয়েছে তার জন্যও সে নাকি বাসায় চলে গিয়েছিলো। এখন সে জানে না।
ইসরাতের বাবা: মনে হয় এখন ওইখানেই আছে ঈশান বাবা।
ইসরাত: ওনাকে যে কিভাবে এইসব হারাম জিনিস থেকে বেরিয়ে আনবো কিন্তু কিভাবে। আর বাবা আপনি ও কিন্তু হারাম জিনিস খাচ্ছেন(ঈশানের বাবা বেশি চিন্তায় থাকলে সিগারেট খান) সিগারেট ও কিন্তু হারাম
#মদ বা শরাব খাওয়া হারাম
এ ব্যাপারে কুরআন-হাদীস কি বলে একটু দেখে নেয়ার পর আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেব। ইনশাআল্লাহ!!!!!
#আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না।” [বাকারা-১৯৫]
#মদ নেশাজাতীয় জিনিস। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক নেশার বস্তুই মাদক (খামার) আর প্রত্যেক নেশার জিনিসই হারাম।” [মুসলিম-২০০৩]
#রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যা অধিক সেবন করলে নেশার সৃষ্টি হয় তা কম সেবন করাও হারাম।” [তিরমিযি-১৮৬৫, আবু দাঊদ-৩৬৮১]
# মদ অপবিত্র জিনিস।
আল্লাহ পাক বলেন, “তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল ও অপবিত্র বস্তু হারাম করা হয়েছে।” [আরাফ-১৫৭]
#মদ অপব্যায় ছাড়া কোন ফায়দা নেই। আল্লাহ পাক বলেন, “নিশ্চয়ই অপব্যায়কারী শয়তানের ভাই।” [সূরা ইসরা-২৭]
#মদ সেবনে পরিবারের সদস্যরা চরম কষ্ট পায়, মদপানে সমাজের বয়স্ক ও যুবকরা সমাজের পরিবেশ ও আশেপাশে মানুষের চরম ক্ষতি করে, নেশার টাকা যোগাড় করতে গিয়ে সমাজে চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই,রাহাজানি ও খুন বেড়ে যায়।
রাসূল (সাঃ) বলেন “যে ব্যক্তি আখিরাতে বিশ্বাস রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।” [বুখারী]
#মদ পুষ্টিকর কিংবা ক্ষুধা নিবারণ মূলকও কিছুই নয়।
জাহান্নামীদের খাবারের প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন, “এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবে না ক্ষুধাও নিবারণ করবে না।” [গাশিয়াহ-৭] [
ঈশানের বাবা: আজ থেকে আমি আমার ব্যাবসায়ী কাজে আর কোনোদিন ড্রিঙ্কস আনবো না আগে এইসব জানতাম না বাট নিজে এইসব কোনোদিন খাই নি বাট অন্যদের দিয়েছি । আজ থেকে আর এইসব করবো না।
হটাৎ ঈশানের বাবার ফোনে একটা ফোন আসলো আর দেখলো ঈশানের ফোন…
ঈশানের বাবা: এইতো ঈশান ফোন দিয়েছে,,,, ফোন রিসিভ করে,,,,কি কই তুই দেখ বাবা আমার ভূল হয়েছে কোথায় তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়…
ফোনের ওপাশ কিছু কথা আসলো যা শুনে ঈশানের বাবার হাতে থাকা ফোনটা নিচে পড়ে গেলো…
ইসরাত: বাবা কি হয়েছে কি বলেছেন ওনি বাবা।
ইসরাতের বাবা: কিরে কি হয়েছে বল কিছু…..
ঈশানের দাদী: কি বলেছে ঈশান বল কিছু…
ঈশানের বাবা: মা মা ঈশান নাকি অ্যাকসিডেন্ট করেছে….
এই কথা শুনে তো সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে ইসরাত তো প্রায় জ্ঞান হারানোর পথে….
চলবে…..
বানান ভূল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ইসলাম ধর্মে কিন্তু কাওকে মেরে বা তাকে বকাঝকা করে কিছু করার জন্য বলা হয় নাই। সবাই বলেছেন যেনো মেরি কে শাস্তি দেই কিন্তু যেহেতু এইটা একটা ইসলামিক গল্প তাই ইসলামী ভাবেই মেরি কে ভালো করলাম। #পবিত্র বলা মানে সব ভালো ভাবে হওয়া। তাই আর কি মেরি কে শাস্তি দিলাম না ☺️