পবিত্র ভালোবাসা❣️পর্ব-৫

0
1945

#পবিত্র_ভালোবাসা
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_৫

জান্নাত: পাশে তাকা…

ইসরাত পাশে তাকাতেই দেখলো….

একটা মেয়ে অনেকগুলো ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে । শুধু কথা না একে উপরের গায়ে পরে যাচ্ছে।

জান্নাত: দেখেছিস কি ফাজিল মেয়ে। আর দেখ কি ড্রেস পড়েছে! একটু তো লজ্জা থাকা উচিত। আর ওরা হইতো ভুলে গেছে যে এইটা বাংলাদেশ, বিদেশ না। আমি ও তো আগে পর্দা করতাম না বাট ওই মেয়ের মতো এত ছোট ছোট জামা কখনই পড়তাম না। ওই ইসু পাখি জানিস আমার মনে মেয়েটার জামা বানানোর সময় গরীব বলে কম কাপড় কিনেছে বা কাপড় কম ছিল দর্জির দোকানে। (রেগে রেগে বলতে লাগলো)

উপরের নামে গীবত করা ও কিন্তু পাপ জান্নাত। ইসরাত বললো…..

জান্নাত: গীবত মানে? আর কি পাপের বলছি একটু বল তো…তুই দেখ মেয়েটার জামা কাপড়ের অবস্থা আর দেখ ছেলে গুলো ও খুব খারাপ নজরে তাকিয়ে আছে….

ইসরাত: আল্লাহর শাস্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রত্যেক মুসলিমের তার দৃষ্টিকে সংযত রাখা একটি অত্যন্ত জরুরী বিষয়। প্রতিটি বিশ্বাসী মুসলমানের উচিত নিজের দৃষ্টির সংরক্ষণের জন্য ও নিজের এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া ও এ বিষয়ে কোন রকম ত্রুটি না করা।

জান্নাত: হুম….বুঝছি বাট যদি কখনো চোখ চলে যায় তখন….

ইসরাত: চোখ সরিয়ে নিবি দ্বিতীয় বার আর তাকাবি না।কেননা প্রথম টা ভুলে চোখ চলে যাওয়া তে তাতে খারাপ দৃষ্টি থাকে না বাট পরেরবার খারাপ দৃষ্টি থাকে ।আর তাতে চোখের পর্দা নষ্ট হয়।

জান্নাত: ওওওও…

ইসরাত:হুম…. তুই তোর মতো হাটতে চলতে থাকবি অন্য দিকে তাকানোর কোনো প্রয়োজন তো নেই…

জান্নাত: হুম,,,,, এখন বলতো গীবত কি?

ইসরাত: গীবত হলো…পরনিন্দা, পরচর্চা, পরোক্ষে নিন্দা ইত্যাদি। কারো অগোচরে তার পোশাক-পরিচ্ছদ, বংশ, চরিত্র, দেহাকৃতি, কর্ম, দ্বীন, চলাফেরা, ইত্যাদি যে কোনো বিষয়ে কোন দোষ অপরের কাছে প্রকাশ করা।
ইবনুল আছীর রহ. বলেছেন :
গীবত হলো কোন মানুষের অগোচরে তার মন্দ বিষয় উল্লেখ করা, যদিও সে ত্রুটি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে।
এ প্রসঙ্গে হাসান বসরী (রহ.) বলেন :
পরচর্চায় তিন ধরণের পাপ হতে পারে। অপরের মধ্যে যে দোষ বিদ্যমান তা আলোচনা করা গীবত; যে ত্রুটি তার মধ্যে নেই তা আলোচনা করা অপবাদ; আর তার সম্বন্ধে যা কিছু শ্রুত তা আলোচনা করা মিথ্যা বলার শামিল। গীবত হলো একটি মারাত্মক কবিরা গুনাহ। একটি আয়াতে বলা হয়েছে….

তোমরা কেউ কারো গীবত করো না, তোমরা কি কেউ আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে ? একে তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করবে।, (সূরা হুজুরাত আয়াত নং ১২)

এখন বুঝতে পেরেছিস গীবত কি? আর গীবত নিয়ে আরো অনেক হাদীস আছে যা তোকে অন্য একদিন বলবো।

জান্নাত: হুম বুঝতে পেরেছি। দেখ ইসু পাখি আমার গায়ের লোম যেনো দাড়িয়ে গেছে।

ইসরাত: হুম ,আমি তোর বোরকার ভিতরে দেখছি 😒

জান্নাত: তাও তো তুই দেখবি কেমনে হিহিহিহি….

ইসরাত: এত জোরে হাসা ভালো না….

ইসরাত আর জান্নাত আস্তে আস্তে কথা বলছে যেনো শুধু মাত্র তারাই বুঝে এরে মাঝে একজনের একটা কথা ইসরাতের কানে আসলো….

এই দেখ দেখ দুই খালাম্মা দেখা যায় কলেজে ভর্তি হইছে(বলেই হুহুহু হাসা শুরু করলো)

ইসরাত একটু পিছনে তাকিয়ে দেখলো ওই মেয়েটি এই কথা বলছে….আর সে এইটা শুনে মনে মনে একটু হাসলো….

জান্নাত: দেখছিস কি বলছে(কিছু টা রেগে)

ইসরাত: হুম ভালোই তো বলছে।

জান্নাত: মানে (ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)

ইসরাত: তারমানে আমাদের আসল বয়স কেউ বুঝছে না । আর পর্দা করার নিয়ন হচ্ছে তুমি কে তা যেনো কেউ বুঝতে না পারে। ওই মেয়েটার কথা মতে আমরা অনেক ভালো ভাবেই পর্দা করছি।

জান্নাত: আলহামদুলিল্লাহ….ইসু পাখি তুই একটু দাড়া আমি আসছি…

ইসরাত: হুম….

তো জান্নাত একটা বিউটি পার্লারে ঢুকলো….

ইসরাত: মেয়ে টা যে মাঝে মাঝে কি করে….বলতেই ওর চোখ জোড়া একটি গাড়িতে আটকে গেলো….

ও দেখলো গাড়ি থেকে একজন ছেলে বের হয়ে আসলো…ছেলেটি ব্ল্যাক টি-শার্ট, ব্ল্যাক কোর্ট, ব্ল্যাক প্যান্ট, ব্ল্যাক ঘড়ি, ব্ল্যাক লোফার পড়েছে, ব্ল্যাক বেল্ট চুল গুলো ব্রাউন কালার আর স্পাইক করা আর ছেলেটি গিয়ে ওই মেয়েটি গিয়ে জড়িয়ে ধরলো….. এইসব দেখছি ঠিক তখনই জান্নাত এসে ডাক দিলো…..

জান্নাত: কিরে ইসু পাখি কি দেখছিস?

ইসরাত: নাহ কিছু না চল…(এই আমি কি করলাম । আমি কোনোদিন কোনো ছেলের দিকে এইভাবে তাকাই নি ,যদি ও বা ভুলে একবার চোখ পড়লে অতি দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নেই আর ছেলেটির দিকে কিনা আমি এতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম। আল্লাহ ক্ষমা করো আমায়)

জান্নাত: ওই ইসু পাখি কি ভাবছিস?

ইসরাত: জান্নাতের ডাকে ঘোর খাটলো…কই

জান্নাত: তোকে কখন থেকে ডাকছি

ইসরাত: হুম বল…

জান্নাত: দেখ তো এইটা কেমন?

জান্নাতের হাতে তাকিয়ে দেখলাম দুইটা মেয়ে ডল। একে উপরকে জড়িয়ে আছে আর লিখা #বেস্ট_ফ্রেন্ড ।

ইসরাত: মাশাআল্লাহ….

জান্নাত: এই গিফট টা তোকে দিলাম কেননা আজ আমাদের দুই জনের জিবনে নতুন কিছু ঘটলো….

ইসরাত: শুকরিয়া,,,,

জান্নাত: জাযাকিল্লাহ….

তো ইসরাত ও জান্নাত ওরা নিজেদের বাসায় নিজেরা চলে গেলো….

মেরি: হেই ঈশান

ঈশান: হাই….

তিয়াস: যাহ মামু তোকে যে আজ কি দেখতে লাগছে…. আজ আমি যদি মেয়ে হতাম তাহলে তোকে এক্ষনি বিয়ে করতাম….

ঈশান: আমি তো করতাম না বিয়ে তোকে…

তিয়াস: কিন্তু কেনো?

ঈশান: কেননা না আমার মেরি জান তো আছে(মেরি কে হ্যাগ করে)

মেরি: ইয়েস এই ঈশান শুধুই আমার ওকে গাইস…

তিয়াস: যথা আজ্ঞা মেরি বাবি….

মেরি: ঈশান বেব চলো না আজ লং ড্রাইভে যাই….

ঈশান: মেরি জান আজ না আজ একটু বাসায় যেতে হবে…..

মেরি: বাট ওয়াই?

ঈশান: জানি না ডেড যেনো কি বলবে…..

মেরি: ওকে….আর আজ তোমায় যা দেখতে লাগছে..

ঈশান: নজর লেগে যাবে

মেরি: আমারই তো লাগবে….(বলেই কিস করলো)

অর্নিল: এইটা পাবলিক প্লেস….

ঈশান: আচ্ছা, আমি যাই বাই বাই। লাভ ইউ মেরি(ফ্লাই কিস দিয়ে)

মেরি: লাভ ইউ টু…..

ইসরাতের বাসায়….

ইসরাত: কি বলছো আব্বু এইসব ?(অনেকটা অবাক হয়ে)

চলবে…..

শিক্ষণীয় কিছু কথা: আমরা কিন্তু প্রতিনিয়িও উপরের নিন্দা করে যাচ্ছি। ইসলামে কিন্তু কারো অনুপস্থিতিতে কারো নামে নিন্দা করা একটা পাপ। আমরা যা নিয়ে কথা বলি ওইসব যদি ওই ব্যাক্তির মাঝে থাকেও তারপর ও তার নামে কিছু না বলে যদি পারেন তাকে বুঝাতে হবে যে এইসব ভালো না। কারণ গীবত করা হলো নিজের আপন ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করা একই কথা। তাই চলুন আজ থেকে গীবত করা থেকে বিরত থাকি ☺️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here