পবিত্র ভালোবাসা❣️পর্ব-৬

0
1835

#পবিত্র_ভালোবাসা ❣️
#Writer_ইসরাত_জাহান_মাওয়া
#পর্ব_৬
#########################

ইসরাতের বাসায়….

ইসরাত: কি বলছো আব্বু এইসব ?(অনেকটা অবাক হয়ে)

ইসরাতের আব্বু: হুম আম্মু ঠিকই বলছি।

ইসরাত: কিন্তু….

ইসরাতের আব্বু:কিন্তু কি মামুনি,,, তুমি কি রাজি না। যদি তুমি রাজি না হও তাহলে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমরা কিছু করবো না।

ইসরাত: কথাটা তা নয় আব্বু ,

ইসরাতের আব্বু:তাহলে….

ইসরাত: তোমরা হটাৎ করেই আমার বিয়ের কথা বলছো তাও এমন একজন ছেলের সাথে(ইসরাতের আব্বু ছেলের সব কথাই ইসরাত কে বলেছে)

ইসরাতের আম্মু: মামুনি তুমি একটু আমার কাছে আসো তো…..

ইসরাত: হুম(ইসরাতের আম্মুর কাছে গিয়ে বসলো) বলো আম্মু….

ইসরাতের আম্মু: আমি আর তোমার আব্বু কি কখনো তোমার খারাপ চাইতে পারি(মাথায় হাত বুলিয়ে)

ইসরাত: কখনোই না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তোমরা যা করবে আমার ভালোর জন্যই করবে(মিষ্টি হাসি দিয়ে)

ইসরাতের আম্মু: তারপর ও তোমার মতামত ছাড়া তো আমি আর তোমার আব্বু কিছু করতে চাই না। এখন তুমি বলো তোমার মতামত কি?

ইসরাত: তোমরা যা চাইবে তাই হবে।

ইসরাতের আব্বু: আমি জানি মামুনি তুমি কোনোদিন আমার কথায় দ্বিমত পোষণ করবে না। তুমি কি ছেলেকে একবার দেখতে চাও যেহেতু তোমাদের বিয়ে ঠিক…(আর কিছু বলার আগেই)

ইসরাত: নাহ আব্বু, আমার তোমাদের উপর ভরসা আছে।

ইসরাতের আম্মু: কিন্তু….

ইসরাত: কোনো কিন্তু না আম্মু, তোমরা বিয়ের সব ব্যবস্থা করো আমি রাজি।। আর বিয়ে কবে….

ইসরাতের আব্বু: আজকে…..

ইসরাতের আম্মু: আজকে মানে (অবাক হয়ে) কি বলছো তুমি এইসব….

ইসরাতের আব্বু: জাহেদ এমনভাবে বলেছে যে আমি না করতে পারি নাই….

ইসরাতের আম্মু: আমাদের এক মাত্র মেয়ে আমাদের তো একটা শক বলতে কিছু আছে।

ইসরাতের আব্বু: বিয়েটা হয়ে যাক পরে না হয় আমরা ঘরোয়া ভাবে কিছু অনুষ্ঠান করবো…..

ইসরাতের আম্মু আর কথা বাড়ালো না কেননা এখন কিছু বললেও ইসরাতের আব্বু কিছু একটা বলে কথা ঘুরিয়ে নিবে…..

তো সন্ধ্যায় ঘরোয়া ভাবে ইসরাতের বিয়ে হয়ে গেলো । ও জানতেও পারলো না কার সাথে ওর বিয়ে টা হচ্ছে। কিন্তু ইসরাত এইসব নিয়ে কিছু না ভাবলো না কারণ ও জানে আল্লাহ তায়ালা যা ভালো মনে করবে তাই হবে। আর কপালের লিখন যা থাকবে তাই হবে।

ইসরাতের আব্বু ইসরাতের কাছে এসে…..

ইসরাতের আব্বু: মামুনি তোমাকে তো সব বলেছি ছেলের সম্পর্কে….

ইসরাত: জ্বি আব্বু….

ইসরাতের আব্বু: তুমি হইতো ভাবছো আমি কেনো এইরকম একটি ছেলের সাথে তোমার বিয়ে কেনো দিলাম…

ইসরাত: নিশ্চুপ….

ইসরাতের আব্বু: দেখো মামুনি, আমি যদি এখন তোমার বিয়ে একজন ঈমানদার ব্যক্তির সাথে দিতাম তাহলে তুমি ও যেমন একজন পর্দাশীল মেয়ে আর নেকদার মেয়ে দুইজন মিলে খুব ভালো ভাবেই সংসার করতে পারতে (কিছুটা থেমে) একজন ঈমানদার পুরুষ তার স্ত্রী যদি ঈমানদার নাও থাকে ওই ব্যাক্তির সাথে থেকে থেকে সেও কিন্তু ওই ব্যাক্তির মতই হবে এই রকম একজন নেকদার মেয়ের সাথে ও হয়। একজন পর্দাশীল মেয়ে কে যদি কোনো ঈমানদার ব্যক্তি বিয়ে করে তাহলে অন্য বেপর্দা মেয়েরা কোনোদিন ঠিক হবে না পাপ করেই থাকবে পরে ওরা ওদের মতো ছেলে কে বিয়ে করবে আর পৃথিবীতে পাপ কাজ করবে । এখন যদি বেপর্দা নারী কে কোনো ঈমানদার ব্যক্তি বিয়ে করে তাহলে ওই ব্যাক্তির সাথে থেকে থেকে ও নিজে কিছু পালন করবে তাহলে ঘরে ঘরে মুসলিম ও ঈমানদার ব্যক্তি দেখা যাবে। এই রকম ভাবে যদি তোমার মতো মেয়েরা যদি স্টাইলিশ আধুনিক এমন কোনো ছেলে কে বিয়ে করো তাহলে তুমি ওই ছেলে কে কিছু শিখাতে পারবে আমি বলতে চেয়েছি তুমি নিচ্ছয় বুঝতে পেরেছো।

ইসরাত: জ্বি আব্বু….

ইসরাতের আব্বু: তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে মামুনি….আর একটা কথা …

ইসরাত: জ্বি বলেন আব্বু….

ইসরাতের আব্বু: তুমি তো জানোই ইসলাম ধর্মে ধুমধাপ বড় অনুষ্ঠান করে বিয়ে দেওয়া ভালো না।

ইসরাত: জ্বি আব্বু…

ইসরাতের আব্বু: আর তোমার কি তোমার জাহেদ চাচ্চুর কথা মনে আছে….

ইসরাত: ওই ছোটো কালে চাচ্চু কে দেখিছি এর পর তো ওনি বিদেশ চলে যাওয়া তে আর দেখা হয় নাই।(মন খারাপ করে)

ইসরাতের আব্বু: এখন যদি আমি বলি তোমার ওই জাহেদ চাচ্চুই তোমার শশুর মশাই তখন তোমার….

ইসরাত: কি বলছেন কি আব্বু(খুশি হয়ে)

ইসরাতের আব্বু: হুম,,,ওই আজ সকালে এই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছিলো পরে তো ওকে দেখে অবাক…

এখন এই কি সব বলে দিবি তুই….

ইসরাতের আব্বু পিছনে তাকিয়ে দেখে জাহেদ ওনার বন্ধু+ বেয়াই… ইসরাত ভালো করে ঘুমটা টেনে সালম দিলো….

ইসরাত: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু….কেমন আছেন চাচ্চু? আমাদের তো ভুলেই গেছেন বিদেশ যেয়ে… আপনি না বলতেন যে আমি নাকি আপনার মা তাহলে আপনার এই মাকে কিভাবে ভুলে গিয়েছিলেন আপনি(কিছু টা অভিযোগ করে)

জাহেদ: ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু….আগে ভালো ছিলাম না কিন্তু আমার এই মা টাকে এখন আমার বাড়ি নিতে পারবো বলে খুব ভালো আছি। আর কোনো ছেলে কি তার মাকে ভুলতে পারে?

ইসরাত: তাহলে এতদিন কোনো খোঁজ নেন নি কেনো?

জাহেদ: এইটাই তো আমার সবচেয়ে ভুল হয়েছে । আগে যদি জানতাম তাহলে কবেই আমার মা টাকে নিজের বাসায় নিতে পারতাম।

ইসরাতের আব্বু: হুম। এখন তোর বাসা ভরে যাবে আর আমার বাসা(বলেই চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো)

ইসরাত খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে তাই সেও কান্না করছে….

জাহেদ: এই এই কি করছ বাপ বেটি মিলে এখন রুম টা সাগর বানিয়ে ফেলছে এই কেউ কি আছিস একটা পুকুর খুদ ওইখানে পানি ফেলতে হবে।

ইসরাতের আব্বু জাহেদের কথা শুনে হেসে দিলো আর বললো…

ইসরাতের আব্বু: তুই এখনও আগের মতোই আছিস। মামুনি কান্না থামাও(ইসরাতের কাছে গিয়ে)

জাহেদ: এই চল আমরা তুই বাবা মিলে ইসরাত কে চকোলেটের সাগরে বসিয়ে দিয়ে আসি….

এই কথাটা শুনে ইসরাত হেসে দিলো কেননা এই চকোলেট নিয়ে ওর জিবনে একটা হাসির ঘটনা ঘটেছিলো সেই ঘটনা না হয় আমরা অন্য একদিন শুনবো।

আহা কি আনন্দ,,,, আমাকে তো সবাই ভূলে গেছে। ওই তোমরা দুই জন সরো তো আমি এখনও আমার ভাবির মুখখানা দেখতে পেলাম না সরো তো……

ইসরাত মেয়েটার মুখ দেখে তো মনে হয় আকাশ থেকে পড়ছে কেননা মেয়েটার সাথে আজ…..

চলবে….

বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

শিক্ষণীয় কিছু কথা: আমাদের মুসলিম ধর্মে কিন্তু ধুমধাম বিয়ে করা ভালো না। বিয়ে সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু সুন্নাহ বিরোধী কাজ।
বিয়ে আমাদের জীবনের একটি স্বাভাবিক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে বিভিন্ন প্রকার প্রথা ও রীতি প্রচলিত আছে যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম এবং বিদ’আত। বিয়ের সময় গায়ে হলুদ, যৌতুক বা গান বাজনা করা ইত্যাদি হারাম তা আমরা সবাই জানি। এগুলো ছাড়াও আরো কিছু কুপ্রথা সমাজে প্রচলিত আছে। আর ধুমধাম বিয়ের কারণে অনেক পরিবারে টাকার সমস্যা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here