পরাণ প্রিয়া❤ পর্ব-১৭•১৮

0
3124

#পরাণ_প্রিয়া
#রাবেয়া_সুলতানা
#১৭,১৮

দুইদিন হয়ে গেলো নাদিয়া এইবাড়িতে এসেছে।অধরাও এই দুইদিনে বাড়ির সবাইকে নিজের করে নিয়েছে।
নাদিয়া ড্রইংরুমে এসে দেখে ডাইনিং টেবিলে সবাই আছে। নিবিড়ের পাশে প্রিয়তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,প্রিয়তা তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসো।রিসাদ তাড়াতাড়ি এসো।অধরাকে স্কুলে দিয়ে তুমি অফিসে যেও।
নিবিড় প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে, আমার ফাইলগুলো নিয়ে এসো।
কথাটা বলেই নিবিড় উঠে যেতেই মোশারফ হোসেন বললো,কি ব্যাপার খাওয়া শেষ করে যাও।
-বাবা আমার খাওয়া হয়ে গেছে।
রিসাদ এসে দাঁড়াতেই,রিসাদ সাহেব, নয়টায় আমার একটা মিটিং আছে। আপনি অধরাকে দিয়ে চলে আসবেন।
-জ্বি।

সবার খাওয়াদাওয়া শেষ হতেই , প্রিয়তা রুমে এসে যাক বাবা সবাই খেয়ে নিলো। সকাল সকাল এই এক টেনশন।কিন্তু মিস্টার নিবিড় তো তেমন কিছু খেলেন না।একবার ফোন করে বলবো অফিসে কিছু খেয়ে নিতে?
প্রিয়তা নিজের ফোন নিয়ে ফোন দিতেই নিবিড় ফোন কেটে দিলো।
ওই রাক্ষস ফোন ধরিস না কেন? যাহ্ বাবা আমি এইসব আবার কী বলি?
প্রিয়তা আবার ফোন দিতেই,স্যার ম্যাডাম ফোন দিচ্ছে আপনি কথা বলে নিন।
নিবিড় মিটিং এর সবার দিকে একবার তাকিয়ে প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড!
-ওই তোমার সমস্যা কী?
-কোনো সমস্যা না।কি করছেন আপনি?
– বানর নাচ দেখাচ্ছি।
-ওমা আপনি বানর নাচ দিতে পারেন? যে ভাবে গোমড়া মুখ করে থাকেন দেখেতো মনে হয় না ওসব নাচ নাচতে পারেন।
-জাস্ট শেটাপ।কি সব বোকা বোকা কথা বলছো।তুমি কীভাবে কলেজে চাকরিটা ফেলে আমার মাথায় আসে না।প্রিয়তা তুমি জানো না আমার নয়টায় মিটিং। তারপর কেনো ফোন দিয়েছো? একে তো ফোন দিয়েছো আবার কি সব ভুলবাল কথা শুনাচ্ছো।
-আচ্ছা বাদ দিন।আপনি তো না খেয়ে চলে গেলেন।অফিসে কিছু খেয়ে নিবেন। সে জন্যই ফোন দিলাম।
-হোয়াট? নিবিড় দাঁত খিচিয়ে, তোমার কি মনে হয়ে আমার এখানে বউ আরেকটা আছে? সে আমার জন্য অফিসে রান্না করে? আর মিটিং রেখে তোমার জন্য আমি এখন খাওয়া নিয়ে বসবো?
-ধূর ছাই,আপনাকে যেটাই বলি সেটাতেই সমস্যা।পেট আপনার বুজলেন।আমার কী শুধু শুধু টেনশন করে?
প্রিয়তার কথা শুনে নিবিড় নরম গলায় বললো,আচ্ছা ঠিক আছে, আমি মিটিং শেষ করে বাহিরে খেয়ে নিবো।আমি জানি তুমিও খাওনি এখন গিয়ে খেয়ে নিবে।
প্রিয়তা অবাক হয়ে কিছু বলতেই ভুলে গেলো।এই ফাঁকে নিবিড় ফোন কেটে দিয়ে মিটিংএ আবার যোগ দিলো।
প্রিয়তা ঘোর কাটতেই কি এক আজব মানুষ, কখনো গাঢ় কালো মেঘ আবার কখনো ভোরে আকাশে একফালি সূর্যের মুচকি হাসি। রাক্ষস একটা।হনুমান, কালা বানর।টোমেটো পঁচা,পেয়াজ পঁচা।আর কি বলা যায়? যাইহোক পরে মনে হলে বলবো।

প্রিয়তা শেফালীর সাথে রান্নার জোগাড় করে দিয়ে,রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই দেখে জুহি মন খারাপ করে কলেজ থেকে এসে ড্রইংরুমে বসে আছে।
-কী হলো জুহি,মন খারাপ কেনো?
-ভাবী আমি তো ভালো রেজাল্ট করতে পারিনি।আজ পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে।
-তাতে কী হয়েছে? মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়নি।ফাইনাল ভালো হলেই তো হলো।আমি জানি আমার ননদী একবার খারাপ করেছে কী হয়েছে শেষ কিন্তু তার ভালো হবেই তাই না জুহি?
-জুহি মুচকি হেসে,আচ্ছা ভাবী তুমি সবকিছুকে এতোটা সহজ করে কীভাবে নাও? ভাইয়া কাল বাড়ি ছেড়ে কেনো গেছে কেউ না জানলেও আমি জানি।তবে পরে হয়তো বউকে ছাড়া থেকতে পারছে না দেখে চলে এসেছে।
প্রিয়তা জুহির কান টেনে ধরে,তবেরে,,,, এতো ফাঁকি বাজি করলে পড়া মনে থাকবে?
-ওহ্ ভাবী ছাড়ো, আমি কিন্তু সবাইকে বলে দিবো তুমি আর ভাইয়া ছাদে কি করেছো।
প্রিয়তা জুহির কান ছেড়ে দিয়ে,ওকে দাও।আমিও বলে দিবো আমার ননদী লুকিয়ে লুকিয়ে মাহিদ সাহেব আসলে আড় চোখে তাকায়।
জুহি অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে প্রিয়তার দিকে।
-তাকিয়ে লাভ নেই,তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসেন।মাথার ভেতর যে চিন্তাটা ঢুকেছে ওইটা বের করে পড়ায় মনোযোগ দিন।আপনার ভাইয়া শুনলে কিন্তু এইটার জন্য রেহাই দিবে না।প্রিয়তা আর কিছু বললো না, উপরে উঠে যেতেই নাদিয়া নেমে আসছে।প্রিয়তা মুচকি হেসে আপু অধরা এখনো এলো না?
-না! নিবিড় ফোন দিয়েছে ও আসার সময় নাকি নিয়ে আসবে।
-কিন্তু ওনি তো দুপুরে আসে না।
প্রিয়তা কথাটা বলে শেষ করতেই নাদিয়া সামনে নিচের দিকে তাকিয়ে, ওই তো ভাই এসে গেছে।
কথাটা শুনে প্রিয়তা পিছনে ফিরে অবাক হয়ে নিচে তাকিয়ে, সত্যিই তো।অধরা আগে এসেই মাকে জড়িয়ে ধরেছে।আর নিবিড় ফোনে কথা বলতে বলতে উপরে দিকে উঠে এসেই প্রিয়তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ফোন রেখে দিয়ে সুরু চোখে তাকিয়ে, কী দেখছো এমন করে?
-আপনাকে! না অধরাকে।কতো কিউট একটা বাচ্চা তাই না?
-হুম অনেক কিউট।তোমার মতো তো না।
কথাটা বলে নিবিড় রুমে চলে গেলো।প্রিয়তা পিছন পিছন না গিয়ে আবার নিচে চলে এলো।
নিবিড় চেইঞ্জ করে নিজের ফোনটা টেবিলের উপর রাখতে গিয়ে প্রিয়তার ফোনে নজর পড়তেই কিছুটা অবাক হলো।এতো গুলো এসএমএস?
দরজার দিকে তাকিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে,এসএমএস গুলো পড়তেই নিবিড় নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।
প্রথম এসএমএস,আজ তোমায় অনেক সুন্দর দেখাছিলো।হালকা গোলাপি রঙের শাড়িটা বেশ মানিয়েছে।

দ্বিতীয়,
নিবিড় লোকটা তোমায় কিচ্ছু দিবে না।কিন্তু আমি তোমায় দেবো আমার ভালোবাসা। আমি তোমাকে আমার ভালোবাসা দিয়ে সাজিয়ে রাখবো।

৩য়, তোমাকে দেখে আমার পুরোনো স্মৃতিগুলো আবার মনে পড়ে গেলো।কারণ আমার ভালোবাসা তো মিথ্যা ছিলো না।কিন্তু তোমার ছলনার কাছে আমার সব হেরে গেছে।কারণ তুমি তো নিবিড়ের মতো টাকা ওয়ালা একজনকেই চেয়েছো তাই না?

নিবিড় আরও কয়েকটা এসএমএস পড়ে ফোনটা খাটের ওপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।

প্রিয়তা এসে,আরে আপনি এখনো ফ্রেশ হতে যাননি?
আচ্ছা দুপুরে এতো তাড়াতাড়ি তো আপনি বাসায় আসেন না। আজ হঠাৎ?
নিবিড় কথা বলছে না দেখে,জানেন আজ অধরার আমায় কী বলে? ও নাকি আমাকে খুব,,,,,,, প্রিয়তা আর কিছু বলতে পারলো না।
নিবিড় এক হাত ধরে নিজের কাছে টেনে এনে খাটে শুইয়ে প্রিয়তার ঠোঁটে নিজেকে আবদ্ধ করে নিলো।
প্রিয়তা নিজেকে অনেকক্ষণ যাবত ছাড়ানোর চেষ্টা করার পর নিবিড় ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে, এখন ভালো লাগে না? মাত্র তো ঠোঁট দুটোকে বন্ধ করলাম এতেই এই অবস্থা?
প্রিয়তা কান্নাজড়িত চোখে, কী করলেন আপনি এইটা? আপনি আসলেই একটা বাজে লোক।
-মিসেস প্রিয়তা আমি বাজে, বদমেজাজী, রাক্ষস। এসব আগে থেকেই। নতুন করে বলার বা শুনার আমার কোনো ইচ্ছা নেই।
কথাটা বলে প্রিয়তাকে টেনে দাঁড় করে নিজের সামনাসামনি, কিন্তু নিবিড় তার স্ত্রীকে অন্যের হতে দেখলে কখনো সহ্য করবে না।
প্রিয়তা কিছু না বলে কান্না করেই যাচ্ছে।নিবিড় সামান্য ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে, ন্যাকা কান্না বন্ধ করো,আর তোমাকে এই শাড়িটা পরতে যেনো আমি না দেখি।
নিবিড় প্রিয়তার কাছে এগিয়ে এসে কাঁধ দুটো ধরে ঝাঁকিয়ে,দরকার প্রয়োজনে পুরো শপিংমল আমি বাড়িতে বসিয়ে দিবো।কিন্তু তবুও এই শাড়িটা যেনো না দেখি।
প্রিয়তা কাঁদো কাঁদো গলায় বললো কেনো করছেন পাগলের মতো আপনি এইসব? কী করেছি আমি? আপনি আজ যা করলেন আমি আপনাকে কখনো ক্ষমা করবো না।
নিবিড় প্রিয়তাকে কিছু না বলে ধাক্কা দিয়ে খাটের দিকে ফেলে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

প্রিয়তা সেখানেই বসে বসে কান্না করছে।নিবিড়ের স্পর্শটা মনে হলেই প্রিয়তার কান্নার গতি আরও বেড়ে যায়।কেনো করলেন আপনি এইরকম? আমি সবসময় ভাবতাম আপনি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করবেন না।সব ছেলেদের মতো আপনি না।আপনি সবার থেকে আলাদা।নিবিড় কখনো মেয়েদের শরীরের উপর,,,,,,
ছিঃ আমার এখন আপনাকে নিয়ে ভাবতেও ইচ্ছে করছে না।

নিবিড় ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে প্রিয়তা সেখানেই দম মেরে বসে আছে।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।
নিবিড় কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে খেতে চলে গেলো।
দুইদিন কেটে গেলো প্রিয়তা একটা কথাও নিবিড়ের সাথে বলেনি।সারাক্ষণ চুপ করেই থাকে।সন্ধ্যায় নিজের রুমে এসে লাইট জ্বালাতেই দেখে রিসাদ বসে আছে।
-তুমি এখানে অন্ধকারে কী করছো?
-আমার প্রশ্নের উত্তর।
-কিসের প্রশ্ন?
-সেদিন এসএমএস করলাম না? তারপর থেকেই তো দেখছি নিরব হয়ে থাকো ব্যাপার কী?

প্রিয়তা অবাক হিয়ে রিসাদকে কিছু না বলে দৌড়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখে সব এসএমএস আগেই সিন করে রাখা হয়েছে তাই প্রিয়তার চোখে পড়েনি।
প্রিয়তা রিসাদকে কিছু বুজতে না দিয়ে,তুমি কি এখান থেকে যাবে নাকি আমি বাবা মাকে ডেকে সবার সামনে তোমার আসল রূপটা দেখাবো।
রিসাদ মুচকি হেসে, প্রমাণ করবে কীভাবে? কারণ এসএমএস গুলোতো আমি আমার নাম্বার থেকেই দিইনি।আর যদি এইরুমে এসেছি তাও প্রশ্ন আছে,আমি তোমার রুমে আসতেই পারি এতে খারাপ কিছু ভাবার কি আছে?
-রিসাদ দেখো,তোমার ভুল ভাবনাগুলো দূরে সরিয়ে সুন্দর করে একবার ভেবে দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে।নাদিয়া আপু তোমাকে কত ভালোবাসে। তারপরেও তোমার কিসের কমতি আছে বলো?
-তোমার কমতি আছে।
-শেটাপ,নিবিড় জানতে পারলে নিজের অবস্থার কথা একবার ভেবে দেখেছো কী হবে?
-নিবিড় তো কখনো জানবেই না।প্রিয়তা নাদুকে আমি ছেড়ে দিলে সমস্যা নেই।তার বড় লোক ভাই আছে।সব সামলে নিবে।কথাটা বলে প্রিয়তার কাছে এগিয়ে আসতেই প্রিয়তা রিসাদের গালে জোরালো ভাবে একটা থাপ্পড় দিয়ে, এটা অনেক আগেই দেওয়া উচিত ছিলো। আপুর যদি কিছু হয়েছে তুমি কি ভাবো ? তুমি পার পেয়ে যাব? তোমাকে আমি আবারও সাবধান করছি এইবাড়ির জামাই হয়ে এসেছো জামাই হয়েই থাকো।

#পরাণ_প্রিয়া
#রাবেয়া_সুলতানা
#১৮

রাত এগারোটা নিবিড় এখনো বাড়ি আসেনি, প্রিয়তা নিবিড়ের ফোনে অনেক বার কল দিয়েছে।বার বারই ফোন বন্ধ বলছে।প্রিয়তা চিন্তিত হয়ে পড়লো,ওনি তো ফোন এইভাবে বন্ধ রাখে না। সেদিন না জেনে আমি ওনাকে যা ইচ্ছা তাই বলেছি। কিন্তু আমারই বা কি দোষ আমি কী করে জানবো শয়তানটা আমাকে এতোগুলা এসএমএস দিয়ে রাখবে।
প্রিয়তা মাহিদকে ফোন দিয়ে,
-জ্বি ম্যাডাম বলুন?
-আপনার স্যার কোথায়?
-স্যার তো সন্ধ্যায় চলে গেছে। বাসায় যায়নি?
-না,প্লিজ আপনি জানেন ওনি কোথায় যেতে পারে?
-ম্যাডাম আমি কিছুই জানি না। আমি খবর নিয়ে দেখছি ওনি কোথায় আছেন।

কাকে খুঁজে পাচ্ছো না, ভাইকে?
প্রিয়তা ফোন রেখে পিছনে ফিরে, আপু দেখো না তোমার ভাই সেই সকালে বাহিরে গেছে এখনো আসেনি কিন্তু ওনি তো এমন করে থাকেন না।
নাদিয়া প্রিয়তার কাঁধে হাত রেখে ভাই আজ আসবে না প্রিয়তা।
প্রিয়তা একটু অবাক হয়ে কেনো আসবে না?
-তুমি তার জীবনে নতুন তাই এখনো কিছুই জানো না।ভাই এমনি, কাউকে নিজের কষ্টটা বুজতে দেয় না।সবসময় নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়ালে রাখে।চলো আমি তোমাকে দেখাবো কারণ এইটা আমার দ্বায়িত্ব।ভাই যেখানে আছে চলো তোমাকে নিয়ে যাই।কথাটা বলে প্রিয়তার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে,
বাবা, মা তোমাদের হলো? দাদী কই তুমি আসো।আমি প্রিয়তাকে নিয়ে গাড়িতে বসছি।

সালমা বেগম নিরব স্থির হয়ে আছেন।প্রিয়তা কি সব মেনে নিয়ে তাকে আর আগের মতো ভালোবাসবে? সেই ভয় মনে হাজারটা প্রশ্ন জেগেছে।
প্রিয়তা সালমা বেগমের দিকে তাকিয়ে, মা কি হয়েছে তোমার? তুমি কী কোনো কারণে চিন্তিত?
সালমা বেগম মাথা নাড়িয়ে না বুজাল।

গ্রামের রাস্তায় পেরিয়ে গাড়ি এসে থামতেই,আপু আমরা কোথায় আসলাম?

মোশারফ হোসেন গম্ভীর গলায় বললেন তোমার শ্বাশুড়ি মায়ের কবরের স্থানে।

প্রিয়তা মুচকি হেসে, বাবা আপনিও দেখি মাঝে মাঝে সবার মতো হয়ে যান।আপনি মাকে সামনে রেখে এখুনি মেরে ফেলতে চান নাকি?

সালমা বেগম ভারী গলায় বললো, তোর শ্বশুর ঠিক বলছে মা।কথাটা বলতেই দুইজন লোক এসে,বড় সাহেব আপনাগো একক্ষণ আসার সময় হইলো? ছোটো সাহেব সেই সন্ধ্যায় আইসা পড়ছে।বড় মা আপনি কেমন আছেন? অনেক দিন পর আপনি আইলেন।

-চাচা এইবার থেকে সবসময় দেখতে পাবেন। চাচী আপনি কেমন আছেন?
-এই তো বেশি ভালা নাই।তয়ে এখন খুব ভালা আছি।
নিবিড়ের দাদী গাড়ি থেকে নেমে,তোমরা কি এইখানেই সব বইলা ফেলবা? চলো ভেতরে যাওন যাক।
সালমা বেগম কিছু না বলেই চুপচাপ ভেতরে চলে গেলেন। চাচী আপনাদের ছোটো সাহেবের বউ।
– মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর। কিন্তু ছোটো সাহেব বিয়া করলো আর আমাগোরে একটু জানালো না।
-চাচী কেউ জানে না।তবে এখন থেকে জানবে।
প্রিয়তা ইনারা এইবাড়িতে আছেন ত্রিশ বছরের বেশি হবে।আমরা চাচা চাচী বলেই ডাকি।
প্রিয়তার সব কিছু যেনো গোলমেলে হয়ে যাচ্ছে।কি থেকে কি হচ্ছে কিছুই বুজতে পারছে না।
বাড়ির ভিতরে ঢুকে একটু অবাক হলো ঠিক যেনো একটা রাজবাড়ি। দোতালায় ভবন কিন্তু কেমন যেনো সব অদ্ভুত।

প্রিয়তা এইদিক সেদিক তাকিয়ে দেখছে, হঠাৎই করিমের বউ, (যাকে নাদিয়া চাচী বলে ডাকলো।)এসে
বউমা আপনি ছোটো সাহেবরে খুঁজতাছেন? চলেন আমার লগে।ওনি উপরে নিজের ঘরে আছে।প্রিয়তা চাচীর পিছন গিয়ে একটা রুমের সামনে এসে দাঁড়াতেই, এই রুমেই আছে। আপনি যান আমি সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছি।
প্রিয়তা রুমে এসে দেখে নিবিড় একটা ছবির দিকে তাকিয়ে আছে।নিজের চোখের পানি গুলো ওই ছবির গ্লাসের উপর পড়ছে।বাবা, এই রাক্ষস আবার কাঁদতেও জানে নাকি।
প্রিয়তা এসে সামনে দাঁড়াতেই,নিবিড় তড়িঘড়ি করে চোখ মুছে দাঁড়িয়ে, তুমি এইখানে?
-আসলে আমি বুজতে পেরেছি আপনি অনেক কষ্টে আছেন।কারণ আপনাকে আমি কখনো কাঁদতে দেখেনি আজ আপনার চোখে পানি,,,,,

নিবিড় ধমকিয়ে রাগী স্বরে বললো, এনাফ।আজকের দিনে আমি কারো কাছ থেকে সহানুভূতি চাই না।আর তোমাকে এখানে কেনো এনেছে? গেটআউট, নাউ গেটআউট।
প্রিয়তা কাঁদো কাঁদো গলায়, আপনি এমন করছেন কেনো? আমি বুজতে পারছি আপনার কষ্টটা।
-না বুজতে পারো নি। সবাই দূর থেকে শুনিয়ে যায়, আমি বুজতে পেরেছি,আমি কষ্টটা জানি। আসলে কেউ জানে না।কেউ বুজে না।সবাই শুধু উপরের থেকে তামশা করে।নিজের এই দুটো চোখে নিজের মাকে আগুনে জ্বলতে দেখেছি,কেউ বুজবে না এই কষ্ট। প্লিজ আজকের দিনটা অন্তত আমায় একা থাকতে দাও। কথাটা বলেই নিবিড় প্রিয়তাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে দরজাটা আটকিয়ে দিয়ে দরজায় পিঠ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখ বন্ধ করে।

সালমা বেগম এসে প্রিয়তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, তুই আমার সাথে আয়।নিবিড় তোকে আজ ওর জীবনে জায়গা দিবে না এই একটা দিন ও সবার থেকে আলাদা থাকে। প্রিয়তা সালমা বেগমের রুমে আসতেই দেখে এখানেও দেওয়ালে সে ছবিটা।
প্রিয়তা এবার সালমা বেগমের দিকে তাকিয়ে, মা ইনি কে আমায় একটু বলবে?
সালমা বেগম অসহায় গলায় বললো, নাজিফা ইসলাম।নিবিড় আর নাদিয়ার মা!
প্রিয়তা অবাক হয়ে, মানে? মা তুমি এইসব কি বলছো?
-হেরে এটাই সত্য।আমি নিবিড়ের জন্মদাত্রী মা নয়।আমি শুধু নিবিড়কে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি।
-মা তুমিও আমার সাথে ইয়ার্কি করছো? প্লিজ মা আমার এসব আর ভালো লাগে না।
-তোকে যে ভালো লাগাতেই হবে মা। কারণ সত্যের কাছে সবাইকে একদিন হার মানতে হয়।
জানিস? নিবিড় তো প্রথম প্রথম আমায় সহ্যই করতে পারতো না।আমার সাথে কথাও বলতো না।কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি।নিজের ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছি।নাদিয়া এখনো মাঝে মাঝে আমায় ছোটো মা বলে ডাকে। কিন্তু আমি মনে করি জুহির মতো তারার আমার সন্তান।
প্রাপ্তি কথাগুলো শুনে আস্তে আস্তে পিছিয়ে খাটে ধপাস করে বসে পড়লো।সালমা বেগম আবার বললো,নিবিড়ের মায়ের কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু নয়।শুনেছি নিবিড়ের ছোটো চাচার কারণেই নাকি মৃত্যু হয়েছে।তবে নিবিড়ের চাচা এখন দেশে থাকেন না।কোথায় থাকে এটাও কেউ জানে না।আপার লাশ যখন পাওয়া যাই কেউ চিনে নাই।তবুও শনাক্ত করে আপা মনে করেই তোমার বাবা এই বাড়ির সামনে যে মসজিদটা আছে ওইখানেই করব দেওয়া হয়েছে।
কিভাবে মারা গেছে ওনি মা?
আগুনে পুড়ে।এইবাড়ির একদম পশ্চিম পাশের যে রুমটা আছে ওইরুমে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর আপা নাকি তখন সেখানেই ছিলেন।নিবিড় তখন সাত বছরের ছিলো।ও স্কুল থেকে এসে এগুলো সহ্য করতে পারেনি।চোখের সামনে মাকে এভাবে জ্বলে যেতে দেখে কার ভালো লাগে বল?
তবে আরেকটা কথাও এখানে থেকে যায় সেদিনের পর থেকে ওদের কাজের মহিলাটাকেই নাকি খুঁজে পাওয়া যায়নি।তোর শ্বশুর আপাকে করব দিয়ে গ্রাম থেকে শহরে চলে যায় নাদিয়া, নিবিড় আর নিবিড়ের দাদীকে নিয়ে।
কিন্তু মা তুমিই তো আমাকে বললে দাদী নাকি তোমার বিয়ের দশ বছর পর মারা যায়, তাহলে এখন যে আমাদের সাথে থাকে ইনি কিভাবে দাদী হয় আমাদের?
সালমা বেগম মুচকি হেসে, এতোদিন তোর মনে এইপ্রশ্নটা অনেক ঘুরেছে তাই না?
ইনি নাজিফা আপার মা।কিন্তু নিবিড় আর নাদিয়া ওনাকে নানী না বলে দাদী বলেই ডাকে।
প্রিয়তা আমি জানি তুই আর আমাকে আগের মতো ভালোবাসবি না তাই না? কারণ আমি তো নিবিড়ের মা,,,,
প্রিয়তা সালমা বেগমকে বলতে সুযোগ না দিয়ে জড়িয়ে বুকের সাথে নিজেকে মিলিয়ে নিয়ে,তুমিই আমার মা।আমি এতোদিন যা জেনে এসেছি সেটাই ভবিষ্যতেও জানা থাকবে।তুমি কেমন মা সেটা আমার জানার বিষয় নয়।অনেক আপন মাও তোমার কাছে ধোঁপে টিকবে না।কারণ তোমার সন্তানদের জন্য তোমার ভালোবাসা যে অসীম।

সারাটা সাত প্রিয়তা আর সালমা বেগম গল্প করেই কাটিয়ে দিয়েছে।সকালে একটু খানি চোখ লাগতেই ফজরের আজান দিতেই দুজনেই উঠে পড়লেন।বাড়িতে নানা রকমের মানুষের আনাগোনা।বাহিরের উঠানের এক কোণে রান্নার তোড়জোড় আয়োজন চলছে।গ্রামের মানুষেররা এসে মোশারফ হোসেনের সাথে দেখা করে যাচ্ছে।সকাল বেলা জুহি রিসাদ শেফালী আর মাহিদ এসেছে।
নিবিড় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এসে দেখে বাহিরে চেয়ার দিয়ে আসন পাতা হয়েছে, বসার রুম থেকে পেপার নিয়ে সেখানে গিয়ে বসেছে সে। প্রিয়তা কোথায়? ওকে দেখছি না কেনো? কাল ওকে এইভাবে না বললেও হতো।মেয়েটা আসলে যাই বলি না কেনো মুখ বুজে সহ্য করে নেয়।প্রিয়তা জুহি নাদিয়া করিডর দিয়ে হাঁটে এগিয়ে আসতেই হাসির আওয়াজ শুনে নিবিড় নিউজ পেপারটা একপাশে সরিয়ে তাকিয়ে দেখে প্রিয়তা।
সকাল সকাল মেয়েটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তবে বাসার থেকে এখানে আসার পর একটু আলাদা লাগছে মনে হচ্ছে কিছু একটা মিস্টেক হয়েছে।
হঠাৎই এসএমএস এর কথা মনে পড়তেই নিবিড় নিমিষেই গম্ভীর হয়ে, তুমি আমাকে এখনো জানালে না ওই এসএমএসগুলো কে পাঠিয়েছে।আমি জানি তুমি শুধু আমাকে ভালোবাসো কিন্তু ওই লোকটা তোমার পিছনে পড়েছে কেনো সেটাও আমার জানতে হবে।সেদিন নাম্বারটা নিতে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।ঢাকায় ফিরে গিয়ে ওর ফোন থেকে যেই করে হোক নাম্বারটা নিয়ে আমাকে দেখতে হবে।

মাহিদ নিবিড়ের পিছনে এসে দাঁড়িয়ে, স্যার আপনাদের বাড়িটা খুব সুন্দর। একদম আগেরকার জমিদার বাড়ির মতো।তবে বাড়িটায় রঙ করে নিলে আরও ভালো লাগবে।
নিবিড় মাহিদের কথার প্রসংগ পাল্টিয়ে, রিসাদ সাহেব কোথায়?
-ওনি রান্নার লোকদের দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখিয়ে দিচ্ছেন।আপনার বাবাই ওনাকে বলেছে।

প্রিয়তাকে ডেকে সালমা বেগম সবার জন্য নাশতার ট্রেটা হাতে তুলে দিয়ে,যা তো সবার সকাল থেকে খাওয়া হয়নি।নিবিড় একটুপর কফি না ফেলে খবর আছে।
সবাই এসে বসছে নাশতা খাওয়া জন্য।প্রিয়তা নিবিড়ের হাতে কফির কাপ দিতেই,বসো এখানে!
প্রিয়তা বসছে না দেখে, কথা কানে যায় না?
প্রিয়তা বসতেই নিবিড় বিড়বিড় করে,চুল গুলো ছেড়ে দাও।
-মানে কী? সবার সামনে আমি চুল খুলে হাঁটবো? বাবা দেখলে আমার আস্ত রাখবে?
নিবিড় রাগী চোখে তাকাতেই,খুলছি তো,এমন করছেন কেনো?
প্রিয়তা চুল চেড়ে দিতেই, এইবার মাথায় ওড়না দাও।যেনো বুজা না যায়।
-উহু,কি আজব প্রানী আপনি?
নিবিড় কফিটা শেষ করে, রুমে চলো।
-মানে?
-তোমার জানতে ইচ্ছে হলো না আমি কোন প্রানী? সেদিন যেহেতু বুজতে পারোনি আমি কোন প্রানী আজ বুজিয়ে দিবো চলো।
-আপনি আসলেই একটা রাক্ষস। নাদিয়ার চোখ পড়তেই,কিরে ভাই দুজনে মিলে কি এতো ফুসুরফুসুর করছিস আমাদেরকেও বল একটু শুনি।
-আপু,প্রিয়তা বলতে চাইছে যে আজ সন্ধ্যায় সে সবাইকে রান্না করে খাওয়াবে কিন্তু লজ্জায় বলতে পারছে না।
-আমি এই কথা কখন বললাম?
-এইকি তুমি ভুলে গেলে? মাত্রই তো বললা।দেখ আপু বাবা আমায় কি বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসছে কয়েকদিন পর তো বলবে আমাকেই চিনে না।আমি কে?
রিসাদ নিবিড় আর প্রিয়তার এসব দেখে শুধু গম্ভীরমুখে তাকিয়ে দেখছে।
-আপনি আমার সাথে এসব কি করছেন।আপু সত্যি বলছি আমি এইকথা বলিনি।ওনিই তো আমাকে বললো,রুমে চলো, সেদিনের,,,,,,কথাটা বলতেই জিভে কামড় দিয়ে,প্রিয়তা তুই এসব কি বলছিস সবার সামনে?
সবাই শুনে অট্র হাসি দিতেই নিবিড় বললো,থামলে কেনো বলো সেদিন কি? আপু জিজ্ঞেস কর ওকে কি হয়েছে সেদিন?
প্রিয়তা নিবিড়ের কানের কাছে এসে,আপনি কিন্তু আমাকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন।এইসব বলা যায়?
-সেটা আমি কি করে জানবো? তোমার বলতে ইচ্ছে হয়েছে তুমি বলো।আমি ঘরে গেলেম।
নিবিড় উঠে চলে যেতেই,দিলেন তো আমায় ফাঁসিয়ে।রাক্ষস একটা।সবার সামনে আমাকে অপদস্ত করে গেলো।

জুহি ভ্রু কুঁচকে, কি হলো ভাবী বলো? সেদিন কি?
-আসলে,
-কি
-আসলে ওনি,,,
নিবিড় দোতালায় করিডোর দাঁড়িয়ে প্রিয়তা উঠে আসো আমার ফাইলটা খুঁজে দিয়ে যাও।
-আসলে আমায় ডাকছে,বলেই তড়িৎ ভাবে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলো।
সবাই হাসতে হাসতে নাদিয়া বললো,বাবা তুমি একটা জিনিস খেয়াল করেছো?
-হু।
-ভাই কতো চেইঞ্জ হয়ে গেছে।আগে তো কারো সাথে কথাই বলতো না।
-আপু জানিস ভাবী আসার পর থেকেই ভাইয়া এখন একটু একটু সবার সাথেই মিশে।

প্রিয়তা আসতেই,তোমার ভিতরে কোনো কিছু আটকে রাখতে পারো না তাইনা?
-আমি কি করলাম, আপনার কারনেই তো সব হলো।
-তোমার মাঝে কোনো গভীরতা নেই।আসলে আমি ভুল ভেবেছিলাম।আমি ভাবতাম প্রিয়তার গভীরতা অনেক। আর মুখটাও তো একটু বন্ধ রাখতে পারো তাই না?
প্রিয়তা কথাগুলো শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আর বিড়বিড় করে বলছে,সারাক্ষণ শুধু বকাঝকা করে।একটু ভালোবাসলেই তো পারে।তা না খালি রাগ দেখাবে।
নিবিড় সামনে এসে দাঁড়িয়ে, ওড়নাটা মাথার থেকে সরিয়ে,ওইটা সবার সামনে দিতে বলেছিলাম।তুমি জানো? চুল বাঁধা থাকলে আমার কাছে মনে হয় তোমার রূপে একটা কিছু মিস্টেক।তোমাকে খোলা চুলেই সুন্দর দেখায়।
প্রিয়তার মুখ হাসি হাসি দেখে নিবিড় এইবার গম্ভীর গলায় বললো, তাই বলে সারাদিন পেত্নীর মতো চুল ছেড়ে রাখতেও বলিনি।
-কিহ আমি পেত্নী? আমি আর এখানে থাকবোই না।
কথাটা শুনে নিবিড় মুচকি হেসে প্রিয়তার পিছন থেকে হাত টেনে ধরে,নিজের সামনে এনে,আস্তে করে কানের কাছে চুমু দিয়ে,রাগ ভেঙ্গেছে?
প্রিয়তা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।খাটের উপরে একটা প্যাকেট আছে, একটা শাড়ি আর কিছু জুয়েলারি ।দুপুরের আগেই পরে নিবে।
কারণ দুপুরে অনেক লোক আসবে।আর আমি চাই নিবিড়ের বউয়ের প্রসংশায় সবাই মেতে উঠুক।
-আপনি কি বউ বাজারে তুলবেন নাকি যে গ্রামের সবাইকে দেখাতে হবে?
-প্রিয়তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে, আমি সবাই বলতে বুজাইছি আমার ফুফুরা,কাজিন।অন্য কাউকে নয়।ওকে?
-হু।
-এইবার যাও।আমার অফিসের কিছু কাজ আছে।সেগুলো শেষ করেই আমি আসছি।

রিসাদ নিজের রুমে এসে, থমথমে হয়ে বসে আছে।অধরা খাটে বসে খেলছে আর নানান কথা জিজ্ঞেস করছে কিন্তু রিসাদের সেইদিকে কান নেই।নাদিয়া এসে, কি হলো? মেয়েটা তোমার সাথে কথা বলছে আর তুমি অন্যমনস্ক হয়ে আছো?
কিছু হয়েছে রিসাদ?
-না।স্যরি আসলে আমি খেয়াল করিনি।
-তুমি কি কিছু নিয়ে চিন্তা করছো?
– হ্যাঁ, নাহ্। কই নাতো।
নাদিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে, আমি জানি তোমার কিছু হয়েছে।খারাপ কিছু হলে আমাকে জানিয়েও প্লিজ।
-হুম

চলবে,,,,,

(আজ অনেকের কথাই রেখেছি।বলেছেন ফিরে আসলে একসাথে দুই পার্ট দিতে হবে,তাই দিয়েছি।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here