পর্ব ৬-১০ #নসীব #পার্ট_৬ #আরবি_আরভী

0
28

পর্ব ৬-১০
#নসীব
#পার্ট_৬
#আরবি_আরভী

উনি আমার হাতটা ধরে ঘুরিয়ে উমার বুকের সাথে মিশিয় এক হাত আমার হাতে আর অন্য হাত কোমরে রেখে গানের সাথে তাল মিলাতে থাকেন,,,

পরেরদিন আবিরের রুম পরিষ্কার করতে এলে উনি আমাকে তাচ্ছিল্যের সাথে বলতে থাকেন,,,

-রাতে ইচ্ছে করে আমার উপর এসে পড়েছিলে যেন কোনো একটা নাটক শুরু করতে পারো তাই না,,
-আপনার যা ইচ্ছে ভাবোন,,,
-তোমার বাবার কি সামান্যতম লজ্জাটুকু নেই কিভাবে পারলেন মেয়েকে এখানে পাঠিয়ে দিতে আত্মামর্যাদাহীন মানুষ,,, তোমার বাবা কি আমার উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছেন ,, বুড়ো বাস্টার্ড টা আমার কিছুই করতে পারবে না বলে দিও উনাকে,,
-বাবা মারা গেছে আবির,,, আমার জন্য নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন,,,প্লিজ উনাকে কিছু বলবেন না আমি পাপী যা বলার আমাকে বলেন,,

আবির নিস্তব্ধ হয়ে আমার কথাগুলো শুনছেন।। দুঃখ পেয়েছেন নাকি খুশি হয়েছেন তা বোঝা বড় ভাড়।।পৃথিবীতে উনি একমাত্র ব্যক্তি যাকে হয়তো আমি কোনোদিন ভালোবাসতে পারবো না।।আমি ঘৃণা করে উনাকে।।

গভীর রাতে বারান্দায় এসে দাড়িয়ে আছি।। বারান্দা থেকে আবিরের রুমটা স্পষ্ট দেখা যায়।।একটু পরেই আবির ফোনে কথা বলতে বলতে জানালার দ্বারে এসে আমাকে দেখে ফোনটা সরিয়ে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।। যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানেন না।।আমার প্রতি আবার উনার মায়া-টায়া হলো নাকি।। ধ্যাৎ।। কি যে ভাবছি।। আমি বিরক্তিকর লুক নিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম।।

পরেরদিন আমি আর নিপা বাসার খরচের জন্য বাজারে গেলে ফেরার সময় কোনো রিকশা টেক্সী কিছুই পাচ্ছি না।। বাধ্য হয়ে দুজন হাটা শুরু করলাম।।শুনশান রাস্তায় অনেকটা পথ চলে এসেছি।।পা ব্যাথায় আর হাটতে পারছি না।। হঠাৎ একটা প্রাইভেটকার দেখে নিপা প্রায় মাঝ রাস্তায় গিয়ে লিভ নেয়ার জন্য গাড়িটাকে সিগন্যাল দিয়ে থামায়,,, মেয়েটা পারেও বটে আর একটু হলেই জানে মরতো,,,।।

-হ্যালো হায় ভাইয়া আমাদের একটু সাহায্য করেন দেখেন না আমার ম্যাডাম অনেক অসুস্থ,,,, (আমার দিকে ইশারা করে )

আমি দু হাতে খরচের ব্যাগ নিয়ে ভেবাচেকা খেয়ে দাড়িয়ে আছি।। এরই মধ্যে ছেলেটা আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে গাড়িতে উঠার পারমিশন দিয়ে দেয়,,,

-কি হয়েছে আপনার ম্যাডামের,,,
-কিচ্ছু হয়নি,,
-ওয়াট,,
-ও হ্যা প্রচন্ড মাথা ব্যাথা,,,
-আচ্ছা আপনার ম্যাডামের নাম কি,,
-এত কিছু জেনে আপনার লাভ কি,,,, এই যে এই বড় গেইটার সামনে রাখেন,,

তারাহুরা করে দুজন গাড়ি থেকে নেমে চলেই আসছিলাম লোকটা পেছন থেকে ডেকে বলল,,

-একটা থ্যাংকস তো দিতে পারতেন নাকি,,,

নিপা মুখ ঘুরিয়ে,,
-থ্যাংকু আসেন বাড়ি এসে চা কফি খেয়ে যান মন চাইলে একটু শুয়েও যেতে পারেন,, যত্তসব।। মেয়ে দেখলেই শুধু কথা বলতে ইচ্ছা করে তাই না।। লোচ্চা ছেলে কোথাকার,,

ছেলেটা নিপার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।। শতহলেও উনি আমাদের সাহায্য করেছেন।। তাই আমি গাড়ির জানালার কাছে গিয়ে বললাম,,,

-থ্যাংকস,,

সুযোগ বুজে ছেলেটা তার হাতটা বারিয়ে বলতে লাগল,,
-মাই সেল্ফ নীলয় এড ইউ,,
-নীলা,, (তার সাথে হ্যান্ডসিপ করে)
-এ বাড়িতে থাকেন,,
-জ্বি

বাসায় ফিরে দেখি আবির অফিস থেকে চলে এসেছেন।।ফ্রেশ হয়ে গ্রিন অ্যাপেল খেতে খেতে সিড়ি বেয়ে নিচে নামছেন ।। আমি উনাকে পাত্তা না দিয়ে খরচের ব্যাগগুলো গোছাতে লাগলাম।।আবির আমার কাছে এসে পাশ দিয়ে হেটে যেতে যেতে নিচু স্বরে বলতে থাকেন,,,

-আজকেই লাস্ট আর কোনোদিন যদি দেখেছি অন্য ছেলের হাত ধরেছ তাহলে হাতগুলো কেটে ফেলব বুঝেছ,,,,,নিপা এক কাপ ব্লেক কফি,,

চলবে,,,
#নসীব
#পার্ট_৭
#আরবি_আরভী

-আজকেই লাস্ট আর কোনোদিন যদি দেখেছি অন্য ছেলের হাত ধরেছ তাহলে হাতগুলো কেটে ফেলব বুঝেছ,,,,,নিপা এক কাপ ব্লেক কফি,,,,

আমি কফি হাতে উনার রুমে ডুকে দেখি রুমটা একদম বস্তি হয়ে আছে।। আলমারির সব কাপড় বিছানায় মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। আর মহাশয় আয়নার দিকে তাকিয়ে একটার পর একটা শার্ট চেইঞ্জ করে নিজেকে পার্ফেক্ট করতে ব্যাস্ত ।। আমি বিরক্তিকর লুক নিয়ে কফিটা টেবিলে রাখতেই উনি আমাকে দেখে আঁতকে উঠে জলদি করে হাতে থাকা শার্টটা দিয়ে নিজের খালি শরীরটা কভের করার চেষ্টা করছেন আর রেগে আমাকে বলছেন,,,

-কারো রুমে প্রবেশ করার আগে যে নক করতে হয় জানো না,, বাবা সব শিক্ষা দিয়েছে শুধু এটা বলতে কি ভুলে গেছেন ,,,
-রুমের কি হাল করেছেন আপনি,, (চারদিকে তাকিয়ে)
-সন্ধ্যায় তরীর সাথে মিট করব কিন্তু নিজেকে রেডি করতে পারছি না,,
-তাই বলে রুমটাকে বস্তি করে দিবেন,,,
-তাতে তোমার কি আমার রুম আমি যা ইচ্ছে তাই করব,, bytheway হুট করে একটা হ্যান্ডসাম ছেলের রুমে আসতে তোমার লজ্জা করল না,,,,
-লজ্জা??? কিসের লজ্জা জান?? আপনার আর আমার মাঝে এই লজ্জা শব্দটা একদম বেমানান তাই না বলুন ,, (উনার কাছে গিয়ে আলতো করে উনার কপালে স্পর্শ করে)
-শেটআপ এন্ড গেট আউট,,(রেগে)

উনার হাতে একটা নীল পাঞ্জাবি ধরিয়ে,,
-দয়া করে আর রুমটা এলোমেলো না করে এটা ট্রায় করুন ঠিক আছে,,,রুম গোছাতে কষ্ট হয়,,

গভীর রাতে সবকাজ শেষ করে ঘুমুতে যাব তখনই আবির এসে আমার পথ আটকিয়ে বলে,,,
-কফি খাব,,
-এত রাতে ,,
-তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো আমি বারান্দায় আছি,,,

কি আর করার বনিকের আদেশ।। খুব বিরক্ত লাগছিল।।যদি পারতাম লোকটাকে গুলি করে মারতাম।।

যাইহোক মন মরা হয়ে মগটা উনার হাতে ধরিয়ে চলেই আসছিল হঠাৎ পেছন থেকে উনি বলে উঠলেন,,,

-থ্যাংকস
-লাগবে না,,, এটা আমার কাজ স্যার,,
-কফির জন্য না,,
-তাহলে,,
-তরী পাঞ্জাবি খুব পছন্দ করে আর নীল নাকি ওর ফেবারিট কালার,,,

২দিন পর আবিরে বোন সাফাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসে।। লোকমুখে শুনেছি ছেলের পরিবার নাকি অনেক বড়লোক।। তাছাড়াও দেশে -বিদেশে ছেলের বিজনেস আছে।। একদম আবিরদের সমতুল্য।। খালামনি তো বলেই ফেললেন উনার আদরের সাফার জন্য এমনই ছেলের তালাশে ছিলেন এতদিন ।। শুভক্ষনে আবির বাড়ি নেই বলে খালামনি খুব রাগারাগিও করছেন।।

যা শুনেছি তার থেকে বেশি দেখছি।।ছেলের পরিবার খুবই ভদ্র।।ড্রইংরুমে সবাই আলাপ করছেন।। সাফাকেও খুব সুন্দর দেখাছে।।১০০% ছেলে পক্ষের পছন্দ হবে ।। কিন্তু কিছুতেই পাত্রকে দেখতে পারছি না।। কথার ফাকে খালামনি ইশারায় আরও নাস্তা দিতে বললে নিপা নাস্তা নিয়ে রুমে উকি দিয়ে আবার ফিরে আসে।।

-কি হলো তুমি ফিরে এলে কেন,,তাড়াতাড়ি যাও খালামনি রাগ করবে কিন্তু,,
-আমার হাত পা কাঁপছে,, আমি পারবো না আপনি নিয়ে যান,,,
-কেন কি হয়েছে,,
-ঐ দিনের ছেলেটা,,উনিই হয়তো পাত্র,,।। আল্লাহ না জেনে উনাকে কত বকাঝকা করেছি,, বড় ম্যাম সাহেব এবার আমার চাকরিটা নট করেই ছাড়বেন,, (কান্না করতে করতে)
-কোন ছেলে,, আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না
-কি যেন নাম হ্যা মনে পড়েছে নীলয়,,,ম্যাডাম আমাকে বাচান,,এবার আমি শেষ,, (কেদে)
-আচ্ছা আচ্ছা আমি নিয়ে যাচ্ছি আমাকে দাও,,

সুন্দর করে গোমটা দিয়ে ড্রইং রুমে যেতেই একজন ভদ্র মহিলা আমাকে দেখে হেসে বলতে লাগলেন,,,

-ঐতো নীলা মা এসেছে,, আহ এগুলোর কি দরকার ছিল,, তুমি নীলয়ের পাশে গিয়ে বসো মা,,,

পরিবেশটা স্তব্ধ হয়ে গেছে।। যদিও আমাকে দেখে নীলয় মুচকি হেসেছে কিন্তু তাদের আচরণে আমার মতো খালামনিসহ সবাই ভেবাচেকা খেয়ে আছে।। আমি ভদ্র মহিলার কথা রাখতে যেইনা উনার পাশে বসেছি অম্নি উনি উঠিয়ে নীলয়ের কাছে ধপাস করে বসিয়ে আবার শুরু করলেন,,,

-বাহ দুজনকে কি সুন্দর মানিয়েছে,,আপনার মেয়ে সত্যি অনেক লক্ষী।। যত দ্রুত সম্ভব আমি দুজনের বিয়ে দিয়ে দিতে চাই,,

বিয়ের কথা শুনে আমি দাড়িয়ে গেলাম।। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো।। সাথে সাথে খালামনি ভীষণ রেখে নাক মুখ লাল করে বলছেন,,,

-আপনারা মাথা ঠিক আছে তো কি বলছেন এসব,,,এই কলঙ্কিনী দূর হও এখান থেকে বারন করেছিলাম না আমাদের পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাতে ,,(আমাকে উদ্দেশ্য করে)

ভদ্র মহিলা আমার দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলে আমি বলতে থাকি,,,

-আপনার ভুল হচ্ছে আন্টি আমি এই বাড়ির চাকর,, আপনি যাকে ভাবছেন আমি সে নই,,,

কথাটা বলে চলে যাচ্ছি হঠাৎ নীলয় আমার হাত দুটো ধরে হাটু গেড়ে বসে বলতে থাকেন,,,
-Will you mary me,,,,তোমার অতীত বর্তমান আমি কিছুই জানতে চাই না,, আমি শুধু তোমার ভবিষ্যত হতে চাই,,

চলবে

(গল্পটা কেমন লাগছে জানাতে ভুলবেন না,,) ☺
#নসীব
#পার্ট_৮
#Arobi_ArVy

কথাটা বলে চলে যাচ্ছি হঠাৎ নীলয় আমার হাত দুটো ধরে হাটু গেড়ে বসে বলতে থাকেন,,,
-Will you mary me,,,,তোমার অতীত বর্তমান আমি কিছুই জানতে চাই না,, আমি শুধু তোমার ভবিষ্যত হতে চাই,,

হাতগুলো ছাড়িয়ে চোখের পানি ফেলে বলতে লাগলাম,,,

-i am sorry আমার কোনো ভবিষ্যত নেই,,, তাছাড়া আমার ব্যাপারে আপনার কোনো ধারণাই নেই,,,,,
-আমি,,,,,

খালামনি নীলয়কে থামিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে বলে।।নীলয় বারেবারে আমাকে কনভেস করার চেষ্টা করছেন।।কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে আছি ।।খালামনি সবটা ম্যানেজ করে নীলয়ের পরিবারকে যতটুকু সম্ভব অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।। যাওয়া সময় নীলয়ও বলে যান উনি আমাকে নিজের করেই ছাড়বেন এটা উনার চ্যালেঞ্জ ।।

খালামনি আমার উপর উনার সব রাগ ঝাড়েন।। উনার সন্দেহ হয় আমিই নাকি নীলয়কে ফুসলিয়ে -ফাসলিয় এমনটা করতে বলেছি সবকিছুই আমার প্ল্যান ছিল।।খালামনিকে কিছুতেই বোঝাতে পারছি না যে আমি নীলয়কে চিনি না পর্যন্ত।।

যাইহোক শাস্তি স্বরুপ খালামনি আমাকে অন্ধকার স্টোর রুমে আটকে রাখে।। আমি অন্ধকার ভীষণ ভয় পাই।। মনে হচ্ছে সাদা পোশাক পড়ে কেউ একজন আমার দিকে এগিয়ে আসছে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে আমার রীতিমতো ঘামতে শুরু করেছি।। বারেবার সাহায্যের জন্য সবার কাছে অনুরোধ করছি কিন্তু কেউ দরজার লক খোলে দেয়ার সাহস পাচ্ছে না যেহেতু এটা খালামনির আদেশ।।

আবির অফিস থেকে ফিরে আমালে বলতে থাকেন,,,

-নীলা কালকের ফাইলটা নিয়ে আমার রুমে আসো,,,

গভীর রাত নিস্তব্ধ পরিবেশ।। নিজেকে খুব একা লাগছে বাবা মায়ের কথা মনে পড়ে খুব কান্না পাচ্ছে।। আজ যদি তারা বেচে থাকতেন ।।দরজার পাশে বসে বসে কথাগুলো ভেবে কাদতে থাকি।। হঠাৎ একজন আমার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে দরজায় নক করে শিউর হচ্ছিলেন রুমে কেউ আছে কি না কেননা রুমটায় মানুষ থাকার জন্য একদম অনুপযোগী।।

কারো সাড়া পেয়ে আমার মধ্যে যেন আস্থা ফিরে এলো আকুতি মিনতি করে দরজাটা খুলে দিতে বললাম।। লোকটাও আর দেরী করল না দরজাটা খোলে দিয়ে আমাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,,

-তুমি?? ওয়েট ওয়েট তুমি না আজকে নিপার বাড়িতে থাকবে বলেছিলা তাহলে গভীর রাতে এখানে কি করছ,,,

ভয়টা এত বেশি জমা হয়ে ছিল যে আবিরকে দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না উনাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলাম।। কথা বলতে পারছি না ঠোঁট দুটো কাপছে।।

-কি সমস্যা তোমার,,,
-খালামনি আমাকে আটকে,,,
-ও আচ্ছা তাহলে আম্মু এমনটা করেছে নিশ্চয়ই তুমি বেয়াদবী করেছ তাই না,,

আমার অবস্থা দেখে উনি আর বেশি কিছু বললেন না।। খালামনি আমার থাকার রুমটাও লক করে রেখেছেন।।

-ও নো আম্মু তো তোমার রুম লক করে রেখেছে,
-কোথায় থাকব আমি,, আপনে একটু রিকুয়েস্ট করেন খালামনিকে প্লিজ,,,(কাদতে কাদতে)
-আর ইউ মেড এত রাতে আম্মুকে ডাকব ??
-তাহলে কি হবে,,
-হুমমম একটা উপায় আছে,, যদি তুমি চাও,,
-কি উপায়,
-আমার রুমে আমার সাথে থাকতে পারো, ,,
-অসম্ভব কল্পনাও করবেন না কোনোদিন,,,
-ওকে কল্পনা করব না বাস্তবে করব,,,এখন হেপ্পি তো,,
-চুপ,,,

শেষমেশ সিদ্ধান্ত হল আমি উনার রুমে থাকব কিন্তু আমি মেঝেতে আর উনি বিছানায়।।।

সকালে খালামনির চেচাঁমেচিতে ঘুম ভাঙলে চোখ খোলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করি আর আবির সোফায়।।
খুব নিষ্পাপ মায়াবী একটা চেহারা।।আমার সন্তানের পিতা।। কিন্তু এই মানুষটার জন্যই আমার বাবা আজ কবরে।। আমি চাইলেও উনার মায়ায় নিজেকে জড়াতে পারবো না।। উনি একজন খুনী।।

নিপা এসে আবিরকে ডাকছে খালামনি নাকি ভীষণ রেগে আছেন আমাকে স্টোর রুমে না পেয়ে।।

-স্যার তাড়াতাড়ি আসুন নীলা ম্যাম কোথায় যেন চলে গেছে,,, স্যার

আবির আমার হাতটা ধরে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে দেখে খালামনি চোখগুলো বড় বড় করে আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন,,,,

-এ মেয়ে তোর সাথে কেন আবির,,
-কেন কোথায় থাকার কথা ছিল আম্মু ঐ অন্ধকার অপরিষ্কার রুমটাতে,,,
-মানে,,,
-আম্মু ওঁ একজন মানুষ,,
-লক তুই খোলে দিয়েছিস,,বিশ্বাস করতে পারছি না আমার ছেলে এই মেয়ের সাইড নিয়ে কথা বলছে,,, ,আমার ছেলে,,
-হ্যা আমি করেছি,,, শুধু ওঁ না ওর জায়গায় নিপা থাকলে আমি এটাই করতাম,,,,

খালামনির বান্ধবী সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে থাকেন,,,

-নীলার রুম তো লক,, তাহলে নীলা সাড়া রাত কোথায় ছিল ,,,,

আবির নির্দিধায় বলে উঠেন,,,,
-কেন আমার রুমে আন্টি,,
-ছ্বি ছ্বি ছ্বি আবির বিয়ের আগেই এসব,,,

-আবির,,,,,,(তরী আবিরের দিকে নিথরভাবে তাকিয়ে)

তরীকে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।। খালামনি রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।। উনার সোনার ডিম দেয়া রাজহাঁস এক্ষুনি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এটা কি মেনে নেয়া যায়।।

চলবে,,,,
#নসীব
#পার্ট_৯
#আরবি_আরভী

তরীকে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।। খালামনি রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।। উনার সোনার ডিম দেয়া রাজহাঁস এক্ষুনি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এটা কি মেনে নেয়া যায়।।

আবির দৌড়ে তরীর কাছে গিয়ে বলতে থাকেন,,

-তুমি যা ভাবছ তা না,, ট্রাস্টমি আম্মু রাগ করবে বলে এমনটা করেছি,, আমরা একসাথে ছিলাম কিন্তু নীলা বিছানায় আর আমি সোফায়,,,

তরী আবিরকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ,,
-আই ট্রাস্ট ইউ আবির,,আমি জানি তুমি আমাকে কখনো ধোঁকা দিবে না,,,
-হুমম

আমি কিচেনে গিয়ে কাজ করতে থাকলে নিপা এসে মুচকি হেসে আমাকে আলতো ধাক্কা দিলে আমি বিরক্তির ভাব নিয়ে বলে উঠি,,

-প্লিজ তুমি শুরু কর না,, সত্যি বলছি আবির যেটা বলেছেন সেটাই ঘটেছে আমি বিছানায় আর আবির সোফায়,,,
-আহ্ তাহলে লজ্জা পাচ্ছেন কেন,,
-নাতো,, আমি কেন লজ্জা পাবো,,
-মেনে নিলাম প্রেগন্যান্সির কথাটা তো স্যারকে বলেছেন নাকি,
-বলার আর কি বাকি আছে,,,
-আপনি অপারেশন করেননি এটাই বলবেন,,,
-না,,
-উউফফ কেন বলছেন না আপনি,,,
-এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না নিপা,, আর প্লিজ তুমিও কাউকে কিছু বলতে যেও না,,
-ঠিক আছে কিন্তু,,,থাক আমি আর কিছু বলব না ,, (মন মরা হয়ে)

নিপা তার ফোনটা হাতে নিয়ে মেজাজ খারাপ করে বলতে থাকে,,,

-ধ্যাৎ আজকেও দিবে না,,

আমি সবজি কাটতে কাটতে বললাম,,
-কি দিবে না
-গল্প,,,,,(একটু রেগে)
-কিসের গল্প,,কার গল্প
-আর বলবেন না আরবি আরভী আপুর লেখা নসীব গল্পটা আমি নিয়মিত পড়ি কিন্তু লেখিকা কিছুদিন ধরে গল্পটা আর দিচ্ছেন না,,,
-তা উনি দিচ্ছেন না কেন,,,
-গল্পটা একটু পপুলার হয়েছে তো তাই লেখিকা দেমাগী হয়ে গেছেন,,(বিরক্তকর লুক নিয়ে)
-দেখ নিপা,, তুমি যেমনটি বললে গল্পটা একটু পপুলার,, হতে পারে অনেক অসাধু কপিবাজরা গল্পটা নিজেদের নামে পোস্ট করছে বলে লেখিকা তাতে বিরক্ত বা তার পারিবারিক সমস্যার কারণেও গল্প দিতে দেরী হচ্ছে তাই না,,
-হুমম ঠিক বলেছেন ম্যাডাম,, হতে পারে,,।।

তারমধ্যেই খালামনির ডাক,,
-নিপা আমার ঔষধ কোথায়,,

নিপা আমার সাথে আমতা আমতা করতে করতে,,
-ইশশ রে কালকে আমার ছোট ভাই খেলার ছলে ম্যাম সাহেবের রুমে গিয়ে তার সবগুলো পিল খুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে,,, ভেবেছিলাম কেউ দেখার আগেই কিনে আনবো কিন্তু ভুলে গিয়েছি,,,,,এখন কি হবে(কাদো কাদো কন্ঠে)
-আল্লাহ,,, তুমি এটা কি করলা নিপা,,

খালামনি রেগে কিচেনে এসে,,

-কি রে কথা কানে যায় না?
– খালামনি আপনার ঔষধ তো শেষ,,
-কি এত তাড়াতাড়ি,,
-কি বলছেন সেই কবে এনেছিলাম,,,, যাক কোনো ব্যাপার না আমি এক্ষুনি এনে দিচ্ছি,,
-ঠিক আছে জলদি যাও,,,,
-আমি এই যাব আর এই আসব আপনি কোনো টেনশন করবেন না,,

এদিকটা নিপার হাতে দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পরলাম।। কিছু দূর যেতেই একটা প্রাইভেট কার আমার পিছু নেয়।।আমি যেদিকে যাচ্ছি গাড়িটাও সেদিকে আসছে।। কালো গ্লাসের ভেতরে কাউকে অনুমান করতে পারছি না।। হঠাৎ গাড়িটা থামিয়ে নীলয় বেরিয়ে এসে বলতে শুরু করেন,,

-নীলা কথা শোন,,,
-প্লিজ আর আমাকে ফলো করবেন না,,, চলে যান এখান থেকে
-দাঁড়াও প্লিজ তোমাকে আমার সাথে একটু যেতে হবে,,
-কোথায় যাবো আপনার সাথে ,,
-নীলা আমার জুলিয়েট সরি দাদীমা ICU তে ভর্তি,,সে তোমাকে একবার দেখতে চেয়েছেন,,প্লিজ না কর না,
-আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে আমি পারবো না,,, আপনাকে অনুরোধ করছি প্লিজ চলে যান,,

নীলয় আমার হাতটা ধরে খুব রিকুয়েস্ট করে বলছেন কিন্তু আমি যাবো না বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছি।। হাতাহাতির একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পরলে নীলয় আমাকে কোলে করে গাড়িতে উঠিয়ে ডক্টরের কাছে নিয়ে আসেন,,,,

ডাক্তার সাহেব নীলয়কে কেভিনে নিয়ে বলতে থাকেন,,,

-পেশেন্ট কে হয় আপনার ,
-আমার স্ত্রী,,,,, এনিথিং সিরিয়াস ডক্টর??
-ডোন্ট ওয়ারি মি.নীলয় মা আর বেবী দুজনেই,,
-বেবী???,,,(অবাক হয়ে)
-মি.নীলয় আপনার স্ত্রী ৪মাসের প্রেগন্যান্ট আপনি কি তা জানেন না,,
-ও হ্যা ডক্টর বলুন,,,(আতংকিত হয়ে)
-হুম যা বলছিলাম মা আর বেবী দুজনেই সুস্থ কিন্তু উইক,, কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি সময়মত খাইয়ে দিবেন
-হুম,,

আমি বেড থেকে উঠে চলেই যাচ্ছিলাম।। সামনে নীলয়কে দেখে থেমে যাই।। উনি চিন্তিত চেহারা আমাকে বলে উঠেন,,

-ঠিক আছ?
-হুম,
-আচ্ছা চল তোমাকে মেডিসিন কিনে দিয়ে বাড়ি দিয়ে আসি,,

নীলয় আমার জন্য অনেক করলেন।। এতক্ষণ তাকে ইগ্নোর করছিলাম বলে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।। উনার দাদীমা জাস্ট আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছেন কিন্তু আমি মুখের উপর না করে দিলাম।।

-আপনার দাদীমার হসপিটালটি এখান থেকে কতদূর??

নীলয় হাটা থামিয়ে পেছনে মোড়ে,,
-এইতো ১ঘন্টার রাস্তা,,কেন
-দাদীমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে,
-তোমার শরীর,,,
-আমি একদম ঠিক আছি আপনি আমাকে নিয়ে চলুন,,
-ওকে,,

গাড়িতে বসে আছি।।নীলয় গম্ভীর হয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছেন।। কেন জানি না মনে হচ্ছে উনার কিছু একটা হয়েছে।। আমার দিকে একবারও তাকাচ্ছেন না।।

হসপিটালে এসে আমি স্তব্ধ।। নীলয়ের গোটা পরিবার এখানে।। খুব অস্বস্তি লাগছিল।। নীলয়ের আম্মু আমাকে দেখে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছেন।।

নীলয় শক্ত করে আমার হাতটা ধরে,,

-জুলিয়েট নীলাকে দেখতে চেয়েছিল তাই ও এসেছে,,,

চলবে,,,,,,,
#নসীব
#পার্ট_১০
#আরবি_আরভী

নীলয় শক্ত করে আমার হাতটা ধরে,,

-জুলিয়েট নীলাকে দেখতে চেয়েছিল তাই ও এসেছে,,,

ডক্টর অনুমতি দিলে নীলয় আমাকে কেভিনের ভেতর পাঠিয়ে দিয়ে বাহিরে অপেক্ষা করতে থাকেন ।।

অক্সিজেন মাস্ক পড়া একজন বৃদ্ধা।। আমি কাছে গিয়ে উনাকে সালাম দিলে উনি চোখ খুলে আলতো হেসে,,, ইশারায় আমাকে উনার পাশে বসতে বললে আমি বসে পড়ি,,

-কেমন আছিস,
-ভালো,, আপনার শরীর এখন কেমন?
-ভালো না,, রোমিও টার জন্য সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়,,,
-জ্বি????
-হা হা হা নীলয়টার কথা বলছি,,আমার দাদুভাই,, আমার বন্ধু।।
-ও আচ্ছা,,

উনি আমার হাত দুটো আকড়ে ধরে ছলছল করে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,
– দাদুভাই তোকে খুব পছন্দ করে,,,তোর সাথে পরিচয় হওয়ার পর দাদুভাইকে আমি নতুন করে হাসতে দেখেছি,, বছর কয়েক আগে যে ছেলে তার প্রিয়তমাকে হারিয়ে মরতে বসেছিল সে নতুন করে বাঁচতে শিখছে শুধু তোর কারনে,,,, আমার দাদুভাই একটু রাগি কিন্তু ওঁর মনটা খুব নরম,,,,
-নীলয় কাউকে ভালোবাসতো?
-হ্যাঁ,, ওয়ালিফা নামের একটা মেয়ে দাদুভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল তারপর আস্তে আস্তে ভালোবাসা,, ১৩ বছর একসাথে অনেকটা পথ চললেছিল তারা,, কিন্তু বিয়ের এক সপ্তাহ আগে ওয়ালিফা ,,,,,(চোখ বেয়ে পানি পরছে)
-দাদীমা কি হয়েছিল ওয়ালিফার বলুন প্লিজ,,
-ওয়ালিফার কার এক্সিডেন্ট হয়ে যায়,, রোমিও তা কিছুতেই মানতে পারেনি প্রচুর ডিপ্রেশনে চলে যায় তারপর রাত করে বাড়ি ফেরা, পার্টি নেশাদ্রবে নিজেকে বিলিয়ে দেয় অনেকবার নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল,,,,কারো কোনো কথা শুনতো না পাগল হয়ে গিয়েছি দাদুভাই,,, (কাদতে কাদতে)
-প্লিজ কাদবেন না,,
-তোকে দেখার পর ওঁ জীবন ফিরে পেয়েছে তোকে ভালোবেসে কাছে পেতে চেয়েছে,, তোর মাঝে নাকি দাদুভাই ওয়ালিফার দেহের সুগন্ধ অনুভব করতে পারে,,,,,, আমি জানি আমার দাদুভাইকে তুই ঠিক করতে পারবি,, আমাকে কথা দে ওঁকে ছেড়ে কখনো যাবি না,,,

কিছু বলতে যাবো তখনই ডক্টর এসে আমাকে বের করে দেয়।। পেশেন্টর সাথে ইমোশনাল হয়ে পরলে নাকি উনার কন্ডিশন আরও খারাপ হয়ে যাবে।।

গাড়িতে বসে আছি।। নীলয় আমার মেডিসিন গুলো কিনতে ফার্মাসিতে গেলে আমি টাইম দেখতে নীলয়ের ফোনটা অন করলে ডিসপ্লেতে আমার ছবি দেখে ফোনটা অফ করে দেই।। বাসায় ফিরছি।।নীলয়ের দিকে বার বার তাকাচ্ছি বলে নীলয় মুচকি হেসে বলতে লাগল,,

-কি প্রেমে-ট্রেমে পড়ে গেলে নাকি,
-কার?
-কার আবার আমার,,,
-ইস!! চেহারা দেখেছেন আয়নায়,,
-ও হ্যালো কত মেয়ে আমার উপর ক্রাসড তুমি জানো,,
-কাউকে ভালোবাসতেন,,,
-এখনো বাসি,,খুব খুব অনেকটা বেশি,,

পৌঁছে গেলে আমি গাড়ি থেকে নামতেই নীলয় পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলল,,,

-নীলা,,
-হুমম,,
-You are most beautiful girl in the world,,

আমি ভেবাচেকা খেয়ে দাড়িয়ে থাকলে নীলয় মুচকি হেসে চলে যায়,,,

বাসায় ফিরে আমার মনে পড়ে খালামনির ঔষধের কথা।। নিপা আমাকে দেখে রাগ দেখিয়ে বলে,,,

-কোথায় ছিলেন ম্যাডাম কত চিন্তা হচ্ছিল জানেন,,
-খালামনির ঔষধ আনতে,,,
-আপনি আসতে দেরী হচ্ছিল বলে আমি নিয়ে এসেছি,,,
-থ্যাংকস নিপা,,

রাতে শুয়ে শুয়ে নিপার সাথে গল্প করছি এমন সময় অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ দিয়ে কেউ একজন আমাকে গার্ডেনে যেতে বলে।। সেখানে গিয়ে একটা গিফট বক্স খুজে পাই।।ওপেন করে অবাক ।। খুব সুন্দর একটা নীল শাড়ি।।

আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটা নীলয়ের কাজ,,ঝটপট নীলয়কে কল দিয়ে বললাম,,,

-থ্যংকস খুব সুন্দর গিফট,,
-কিসের গিফট???,, (বিস্মিত হয়ে)
– আর নাটক করতে হবে না,,,
-সরি্ বুঝতে পারছি না কি বলছ,,,
-হ্যালো হে হ্যালো,,, ধুর নেটওয়ার্ক প্রব্লেম মনে হচ্ছে।।

কয়েকদিন পর নীলয় আমাকে দাদীমার কথা বলে।। উনি নাকি আমাকে দেখতে খুব জেদ করছেন।। আমি নীলয়ের দেয়া নীল শাড়িটা পড়ে দাদীমাকে দেখতে যাচ্ছি।। যাওয়ার পথে জ্যাম পরলে আমি জানালার দ্বারে তাকিয়ে আছি।। হঠাৎ আমার নজর কালো গাড়িটার দিকে যায় যেটা আবির ড্রাইভ করছেন।।

আমি উনার দিকে তাকিয়ে থাকলে একপর্যায়ে আবিরের চোখ আমার উপর আটকা পড়ে,, আমাকে আর নীলয়কে একসাথে দেখে নিমিষেই তার চেহারার রঙ বদলে গম্ভীর হয়ে যায়,,,,

হসপিটাল থেকে ফিরতে আমাদের রাত হয়ে যায়।। প্রচুর ঝড় হচ্ছে বলে দাদীমা ছাড়ছিলেন না।। কিন্তু ঝড়ের তীব্রতা বেড়েই চলছে তাই আর দেরি করিনি।।

বাসায় সবাই চিন্তিত।। আবির নাকি এখনো অফিস থেকে ফিরেননি।।ফোনটাও অফ।। কোনো এক্সট্রা মিটিং নেই এমনকি তরীদের ওদিকেও যাননি।। কোথায় আছেন কেউ কিচ্ছু জানে না।।

এরমধ্যে আমাকে দৌড়ে কাকভেজা হয়ে রুমে ডুকতে দেখে খালামনি ভীষণ রেগে বলে,,,
-এসেছে নবাবের সাহজাদী,,
-না মানে খালামনি ,,,
-কোথায় ছিলি সারাদিন ,,বাবার প্রতিশোধ নিতে আবার আমার ছেলেটার খুন করে দিলি নাতো,,(কাদো কাদো কন্ঠে )
-কি বলছেন খালামনি,,,,
-এই একদম ন্যাকামি করবি না কার প্রাইভেটকার দিয়ে এসেছিস এত রাতে কোথা থেকে এসেছিস,, তোর মত এই নষ্টামী আমাদের বাড়িতে আর চলবে না ,,বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে,,

নিপা ভীতু কন্ঠে বলতে থাকে,,
-ম্যাম সাহেব বাহিরে অনেক বৃষ্টি,,, সকালে,,,,
-তুই চুপ কর নীলা আজকে এক্ষুনি এই মূহুর্তে বাড়ি ছেড়ে যাবে,,,

কান্না করে খুব মিনতি করছি কিন্তু খালামনি কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না আমাকে টেনে গেইটের বাহিরে রেখে গেলেন।। খুব কান্না করছি।। বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে কাঁপতে শুরু করেছি রীতিমত,,,

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here