#পাগল_প্রেমিকা
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০৩
___________
এখন এই অবস্থায় ছেলেটা বেআক্কেলের মতো তাকিয়ে আছে বর্ষার যাওয়ার দিকে আর বলতে লাগল কেমন মেয়েরা বাবা পরে যাচ্ছিল কোই আমি বাঁচালাম আমাকে থ্যাংকস না জানিয়ে উল্টো আমাকে কেমন কেমন ছেলের সাথে তুলনা করে চলে গেলো আসলে লোকেরা ঠিকই বলে সুন্দরী মেয়েটা একটু বেশিই অহংকারী হয় কথাটা বলে সে-ও চলে গেলো উপরে পাঁচ তলায়। ছেলের বাড়ির লোকেদের থাকতে দেওয়া হয়েছে চার তলায়। তিন তলা বর্ষার আব্বুর দুই তলা রিমার আব্বুর চার তলা বৃষ্টির আব্বুর আর একদম নিচে বর্ষার ফুপির জয়েন্ট ফ্যামিলি হ্যাপি ফ্যামিলি।
দুপুরে সবাই একত্র হয়। বর্ষার আব্বু ও বৃষ্টি রিমা তনিমার আব্বু সবাই সবার সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে এদিকে অপূর্ব নাহিদ বর্ষা আর রিমার কানের কাছে এসে বলে এখনও সময় আছে বাঁচতে চাইলে এখনই দৌঁড়ে গিয়ে রুমে দরজা বন্ধ করে বসে থাক বরের সাথে কিন্তু অনেক হ্যান্ডসাম কিউট ছেলে আসছে পরে না আবার তোদের কেউ বিয়ে দিতে হয়। কথা গুলো বলে দু’জনে হাত তালি দিচ্ছে সাথে শয়তানের মতো হাহাহা করে হাসছে ইচ্ছে তো করছে একটা ঘুসি মেরে দাঁত ৩২টা ফেলে কিন্তু সেটা সম্ভব না। শুধু বরের সাথে আসা ছেলে গুলোই কিউট নয় ওকে আমার ভাইগুলাও হেব্বি কিউট ও হ্যান্ডসাম কিন্তু সিঙ্গেল প্রেম টেমে নাই সময় হলে ফ্যামিলির পছন্দ মতো মেয়েকেই বিয়ে করবে বলে জানায় কোনো হারাম সম্পর্কে জরাতে চায় না।
ওদিকে ছেলের বাবা বলছে জয়নাল ভাই আপনার মেয়ের কথা অনেক শুনেছি কিন্তু এখনো দেখছি না যে কোথায় সে ডাকুন তাকে।
বরের বাবার মুখে এই কথা শুনে পেছন থেকে বর্ষা আর রিমা সত্যি সত্যি এখন দিলো দৌঁড় আর কিছুক্ষণ এখানে থাকলে বৃষ্টির জায়গায় ওদের যেতো হতো বৃষ্টি তো নেই তাই বর্ষা আর রিমাকেই ডাকতো তা ছাড়া ওরাও তো এই বাড়ির মেয়ে।
জয়নাল শেখ বর্ষা আর রিমাকে পালাতে দেখে সে বুঝে যায় ওরা উনাদের সামনে যেতে চায় না তাই বলে। আমার মেয়ে হোস্টেলে পড়ার চাপে আসতে পারেনি। আর বাকি দুই মেয়ে তারা তাদের তাপ্পির বিয়ে বলে তনিমার রুমে তনিমার সাথে বসে আছে।
বরের মা বলল, ভাই আমাদের পরিবারের একটা নিয়ম আছে হলুদের আগে সেটা আমরা করতে চাই যদি আপনারা অনুমতি দেন তাহলে বলব।
রিমার বাবা, অবশ্যই বলেন বেয়ান।
বরের মা আমাদের পরিবারের কারো বিয়ে হয়ে হলুদের আগে আমরা তাকে সবাই মিলে হালকা গায়ে হলুদ ছুঁইয়ে গোসল করাই বাকি আত্মীয়রা মজা করে দুষ্টা করে। এটা আমরা এবার করতে চাই যেহেতু আমরা আপনাদের বাড়িতে আছি একা একা তো হবে না তাই ভাবছিলাম তনিমা আর রিমনকে যদি এক সাথে একটু শুধু দু’জনের বাবা মা গায়ে হলুদ ছুঁইয়ে গোসল করাই তাহলে আমাদের….. বরের মাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে বর্ষার দাদু বলল। এটা তো ভালো কথাই আমাদের কোনো সমস্যা নাই অবশ্যই করানো হবে এদিকে কিছুক্ষণ পর আজানও দিবে তাই বলছি কি এখনই এই গোসল করানোর কাজ শেষ করো তারপর নামাজ পরে দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে সন্ধ্যার আয়োজনও তো করতে হবে। রিমার আব্বু বলল, ঠিক আছে তাহলে আমি সবাইকে বলে দিচ্ছি।
এদিকে গোসল করানোর জন্য সব কিছু রেডি করা শেষ রিমার আব্বু সবাইকে বললে বর্ষা আর রিমা দু’জনে মিলে হলুদের একটা নরমাল শাড়ি পরিয়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে দেয় ওরা আর এখন কি সাজবে বিকালে সাজবে তাই তনিমাকে ধরে বাহিরে নিয়ে আসে যেখানে গোসল করানো হবে ওখানে সবাই উপস্থিত শুধু ওদের তিন জনের আসার বাকি ছিল।
তনিমা কে নিয়ে আসতেই বর্ষার ফুপি তনিমাকে নিয়ে রিমনের ঠিক ডানপাশে দাঁড় করিয়ে দেয়। তারপর একটু হলুদ গালে ছুঁইয়ে দেয় দু’জনের পরে দুই কলসি পানি দুজনের মাথার উপর ঢেলে দেয়।
এদিকে মুন্নী রিমার কানে কানে বলছে, (রিমার বেস্ট ফ্রেন্ড মুন্নী) তোদের দুলাভাই তো সেই হ্যান্ডসাম রে তনিমা আপুর সাথে বিয়ে না হলে আমিই নিয়ে পালিয়ে যেতাম। মুন্নীর কথা শুনে রিমা বলে। শুধু কি দুলাভাই দেখ তার সাথে আসা চাঙ্গু পাঙ্গু গুলাও তো সেই কিউট.! বিয়ে বাড়ি বলে কথা ছেলেরা তো মেয়েদের পিছু নেবেই হিহিহি।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন এসে বর্ষার মাথার এক বালতি পানি ঢেলে দেয়।
অন্য দিকে বাকি ছেলে গুলো কাঁদা মাখানো পানি বালতি ভোরে এনে বেয়াই বেয়ান দের উপরে ছুড়ে মারছে।
সবাই তো পুরাই ভেবাচেকা খেয়ে গেলো শেষ মুহুর্তে ছেলের বাড়ির লোকেরা এমন করবে কেউ ভাবতেই পারেনি। বর্ষা পুরো পানি দিয়ে ভিজে গেছে রিমা কাঁদা পানিতে পুরো কাঁদা কাঁদা হয়ে গেছে পুরাই সিনেমা। ছেলে পক্ষের ফাজিল বেয়াই গুলা ভেটকিয়ে হাসছে। এদিকে বর্ষা রিমা রাগে ফুলছে। বাড়ির লোকে রাও হাসছে😫 মান ইজ্জত সব গেলো। বর্ষা ছেলেদের উদ্দেশ্য করে বলল আমাদের সাথে ফাজলামি করার অনেক খারাপ হবে Mr. Whatever…
কি করবেন শুনি মিস.বেয়ান সাহেবা। (ওই সিঁড়ির ছেলেটা) বাকি ছেলেরা হাসছে সেগুলো দেখে বর্ষার আরও রাগ হচ্ছে বর্ষা যেমন কিউট তেমনই রাগী বদমেজাজি হুহহ।
বর্ষা হনহনিয়ে চলে আসলো ওদের সামনে থেকে পেছন পেছন রিমা ও চলে গেলো। ছেলেরা হাসতে হাসতে বলল ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন নাকি?
এদিকে বাড়ির লোকেরা মনে মনে ভাবছেন বর্ষার ওয়ার্নিং তো খালি যায় না ফাউ কথা বর্ষা বলে না। না জানি কি করবে?
ওইদিকে বর্ষা, রিমা, মুন্নী, মিম, আনিকা সাথে অপূর্ব সাথে দুইটা ৭/৮ বছরের পোলা (ছেলে) বাড়ি থেকে একটু দুরে চলে আসে একটা মাঠে, বাড়ি থেকে একটু দূরেই একটা মাঠ আর মাঠে সারাদিনে অনেক গরু বাধা থাকে। তো বর্ষা টাকা + মজার লোভ দেখিয়ে ছেলে দুইকে কে এক পলিথিন ভোরে কোবর নিয়ে আসতে বলে। ছেলেরাও লোভে পরে পলিথিন ভোরে কোবর টুকিয়ে নিয়ে আসে আর বর্ষার পিছু পিছু বাড়ির পেছনে দাঁড়ায়। ছেলে দুইটাকে দুইটা বালতির মধ্যে গোবর ঢালতে বলে আর পানির সাথে ভালো করে মেশাতে বলে। ছেলেগুলাও যেভাবে বলছে সেইভাবেই করছে। সবাই বর্ষার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে এইগুলো কেনো করাচ্ছে বর্ষা ওদের দিকে তাকিয়ে ওদের সমানে গিয়ে কানে কানে কিছু একটা বলল তারপর পাশেবালতি থেকে কোবর মাখানো পানি মগে নিলো আর বলল ও আমাদের শরীরে পানি দিয়েছে আর তোদের কাঁদা মাখানো পানি দেখ ওদের এবার গোবরের পানি দিয়ে গোসল করাবো।
কথাটা বলে দুই হাত সবাই পেছনে নিয়ে হাঁটা শুরু করে বাড়ির সামনে এসে দেখে সবগুলা এক সাথেই আছে শুধু হবু বর আর হবু বউ ভালো ভাবে গোসল করতে চলে গেছে মানে তাদের নিয়ে গেছে। সবগুলা চাঙ্গু পাঙ্গু এক সাথে চেয়ারে বসে গল্প করছে আর হাসছে। বর্ষা ওদের দেখে সবগুলা উঠে দাঁড়ায় আর ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে সাথে বলে। এখনও ভেজা কাপড়ে আছো তোমরা চেঞ্জ করো নি কেনো? আপনাদের কেও চেঞ্জ করানোর ব্যবস্থা করছিলাম। বর্ষার কথার মানে বা বুঝে ছেলেগুলো জিজ্ঞেস করল মানে।
মানে না মানে হচ্ছে এইটা নিজেই দেখে নিন না। কথাটা বলে সবগুলো মেয়ে মিলে সবগুলো ছেলের উপর গোবরের পানি ছুড়ে মারে! সবগুলো এক সাথে বে বে করছে বাজারে গন্ধ.!
বাড়ির বড়রা হা করে তাকিয়ে দেখছে।
এইগুলো কি দিছো তোমরা আমাদের গায়ে এত গন্ধ কেনো? (ছেলেরা)
সবে তো মাত্র শুরু খেলা তো মাত্র শুরু হয়েছে। আমরাও খেলতে জানি। (মেয়েরা)
কথাটা বলে ডান পাশের ছোটো বাচ্চাদের ইশারা দিতেই বাচ্চারা দৌঁড়ে এসে মগ ভর্তি কালো পানি ওদের দিকে ছুড়ে মারে। অন্য বাম পাশের বাচ্চাদের ইশারা করলে তারাও দৌঁড়ে আসে আর কাঁদা+রং মেশানো পানি ওরা ওদের উপর দেয়। ওদের তো গন্ধে পেটের ভেতর থেকে সব বেরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে বর্ষার বাবা বর্ষাকে কিছু বলার জন্য উঠলে বরের বাবা বলে আরও বেয়াই ওরা বাচ্চা ওরা তো দুষ্টামি করবেই বিয়ে বলে কথা আমরা বড়রা কেনো ওদের মধ্যে যাবো চলুন আমরা ওইদিকে যাই তারপর সবাই বরের বাবার সাথে চলে গেলো।
এটা হলো আমাদের সাথে ফাজলামো করার ফল যত্তোসব ফাজিল পোলাপান। (বর্ষা)
একদম উচিত শিক্ষা আমার গায়ে কাঁদা পানি দেওয়া। (রিমা)
গোবরের আইডিয়া টা কিন্তু সে-ই ছিলো…. (অপূর্ব)
গোবরের পানি মানে গোবর মেশানো পানি দিয়েছো তোমরা আমাদের গায়ে আজকে তোমাদের খের নেই। বলেই মাটিতে বসে দুই হাত ভরে ছেলেগুলো কাঁদা হাতে নিলো আর এটা দেখে মেয়েগুলা সব উল্টো দিকে দৌঁড়াতে লাগল। কিন্তু কোনো লাভ নেই ওরাও পেছনে দৌড়াচ্ছে এদিকে সেদিকে ছুটাছুটি করছে দু দলের যুদ্ধ শুরু হয়েছে এখন দেখার পালা কারা জিতে বর্ষা পেছনপ অন্য একটা ছেলে হাতে কাঁদা নিয়ে বর্ষাকে দৌড়ানি দিছে বর্ষা ও দিছে দৌড় পেছনে ছেলেটার দিকে ঘুরে সামনের দিকে দৌড়াতে গেলে বর্ষা গিয়ে ধাক্কা খায় একটা ছেলের সাথে। ছেলেটা ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে যায় আর বর্ষা ছেলেটার উপর আর ছেলেটা মাটির উপর কি একটা “রোমান্টিক মোমেন্ট” ছেলেটা বর্ষার দুই গালে কালী লাগিয়ে দেয় আর বলে। এই তো লাগিয়ে দিলাম কালী আর কেউ নজর লাগাবে না। বর্ষা কি করবে এখন কিছুই করার নেই ছেলেটার উপর থেকে সরে সোজা বাড়ির দিকে দেয় দৌঁড়।
সন্ধ্যায় প্যান্ডেলে সবাই বসে আছে কিছুক্ষণের মধ্যেই হলুদ এর অনুষ্ঠান শুরু হবে।
মেক-আপ আর্টিস্ট এসে তনিমাকে সাজাচ্ছে অন্য দিকে বর্ষা আর রিমা রুমের মধ্যে একটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঠেলাঠেলি করছে।
বর্ষা, আমি আগে সাজবো তুই তোর রুমে যা।
রিমা, আমি এখানেই সাজবো তুই সাইড দে!
শুরু ঠেলাঠেলি ওইদিকে। এতক্ষণে সবগুলা ছেলের ১২/১৩টা দুপুর থেকে এই সন্ধ্যা পর্যন্ত না হয় ১০বার গোসল করে ফেলছে। তবুও গন্ধ যাচ্ছে না এই সেই গন্ধ নাকি গোবরের গন্ধ। ওই কিউট ছেলে তো এখন আবারও বাথরুমে গেছে গোসল করতে।
কিছুক্ষণ পর বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বলে। ওই কিউট মেয়েটা কে আজকে দেখিস কেমন শিক্ষা দেই আর নয়তো আমিও অভ্র নীল নই।
তুই আবার কি করবি তুই তো মনে হয় মেয়েটার প্রেমে পরে গেছিস আর পড়বিই তো কিউট একটা মেয়ে পরীর মতো সুন… ? নিলয় বর্ষার প্রশংসা করছে অভ্র এসে নিলয়ের মুখ চেপে ধরে আর বলে..
ওই পরীর মতো মেয়ের প্রশংসা আমি করবো শুধু তোরা কেউ করবি না মনে রাখ তোদের ভাবি।
অভ্রর কথা শুনে নিলয় সিটি বাজালো আর বলল, আসছে ওকে আমাদের ভাবি বানাতে গেছিলি তো পানি নিয়া আসছিস গোবর নিয়া। কথাটা শেষ না করেই নিলয় পেটে হাত দিয়ে হাসতে শুরু করল এটা দেখে অভ্রর প্রচুর মেজাজ খারাপ হলো আবারও চলে গেলো বাথরুমে গন্ধ এখনও একটু একটু আছে।
অভ্র বাথরুম থেকে বের হয়ে নীল শার্ট কালো প্যান্ট সাদা ব্লেজার কালো কেস জুতা পরে নেয়। আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুলে জেল দিচ্ছে চুল ঠিক করা হলে বডি স্প্রে দিচ্ছে পুরে বোতল মনে হয় এখনই শেষ করে ফেলবে নিজের গায়ে তো দিছেই সাথে রুমটা তে ও দিলো রুমটাও গন্ধ হয়ে গেছিলো এখন ঠিক আছে।
রিমা রেডি হয়ে বর্ষাকে রুমে রেখে চলে যায় কারণ ওর হয়ে গেছে। রুম থেকে বের হয়ে সোজা হাঁটছে অভ্র এদিকে বর্ষার ব্লাউজের চেইন আটকাতে পারছে না। ব্লাউজের চেইন পেছনে আর চেইন লাগানোর জন্য একজনের হেল্প লাগবে। (এখন কেউ বলবেন না ব্লাউজের পেছনে চেইন থাকে নাকি যারা জানেন না তাদের কে বলি হ্যাঁ থাকে নিউ স্টাইল ব্লাউজ ডিজাইন আমারও কয়েকটার আছে তাই কেউ বলবেন না হয় না)
রিমা রুম থেকে বের হওয়ার আগে দরজা টাও বন্ধ করে যায়নি সোজা খুলে চলে গেছে সেদিকে লক্ষ্য করেনি বর্ষা বেডের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ব্লাউজ পেটিকোট আর গায়ে একটা ওড়না জরিয়ে রেখেছে তাও আবার ব্লাউজের চেইন খোলা তা যাইহোক এভাবেই উল্টো দিক হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে হঠাৎ রুমের সামনে দিয়ে কারো পায়ে হেঁটে যাওয়ার শব্দ শুনে বর্ষা না দেখেই বলল। দরজার সামনে যেই আছো প্লিজ দয়া করে রুমে চলে আসো আমার একটা হেল্প লাগবে প্লিজ তারাতাড়ি আসো।
এদিকে অভ্র চলে যাচ্ছিল শুধু বর্ষার ভয়েস শুনে দাড়িয়ে রুমের মধ্যে উঁকি দেয়। বর্ষার পিঠের দৃশ্য দেখে অভ্র মাথা নিচু করে চলে যেতে নিলে বর্ষা বলে। প্লিজ আমার চেইন টা লাগিয়ে দাও না প্লিজ আমি অনেকক্ষণ যাবৎ চেষ্টা করছি কিন্তু লাগাতে পারছি না প্লিজ হেল্প মি। বর্ষার এতবার করে করা রিকুয়েষ্ট অভ্র ফেলতে পারেনি তাই আর দেরি না করে বর্ষার পেছনে দাঁড়িয়ে শরীর টাচ না করে আলতো ভাবে চেইনটা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো আর বর্ষা দেখতেও পেলো না চেইনটা কে লাগালো পেছনে ঘুরে দেখল কেউ নেই।
রুমের বাহিরে এসে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে অভ্র বুকে হাত দিয়ে বড় বড় নিশ্বাস ফেলছে আর একটু হলেই স্টোক করতো মনে হচ্ছে অভ্র এত কাছ থেকে প্রথম কোনো মেয়েকে দেখছে। (নিজেকে নিয়ে এত বিশ্লেষণ লিখতে পারছি না পরে আপনারা ভাববেন লেখিকা নিজেকে সবার কাছে সুন্দর প্রমান করতে চাচ্ছে তো যাইহোক পর থেকে বলি)
বর্ষা রুমের মধ্যে শাড়ি পরে রেডি হয়ে নেয় আর সুন্দর করে সেজেগুজে রুম থেকে বের হতে যাবে তখনই দেখল রুমে দরজা খোলা সাথে সাথে বর্ষা বলল।
এতক্ষণ আমি খেয়াল করিনি দরজা খোলা আর আমি না দেখেই চেঞ্জ করলাম আল্লাহ ভাগ্য ভালো কেউ আসেনি তখন আসলে আমার কি হতো আজ এই রিমার ১২টা বাজাতেই হবে। বলে রুম থেকে বের হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ কে জেনো বর্ষার হাত টেনে ধরে ওকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে। বর্ষা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতো করতে সামনে তাকিয়ে দেখে অভ্র ওর সামনে তালগাছের মতো দাঁড়িয়ে আছে মুখে ঠোঁটের কোনে একটা শয়তানি হাসি একটু একটু করে বর্ষার মুখের সামনে অভ্র ওর মুখ নিয়ে আসে। বর্ষার ভয়ে আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে উপরে বর্ষা ও অভ্র ছাড়া আর কেউ নেই। সবাই নিচে হলুদের সেরেমানির ওখানে ব্যস্ত সাথে বাহিরে এত লাউড স্পিকারে গান বাজছে যে এখানে চিৎকার করে মরে গেলেও কেউ শুনবে না। তাই বর্ষার ভয় লাগছে তার উপর ভয় এখন আরও বেশিই বেড়ে গেলো অভ্র কে ওর এভাবে কাছে আসতে দেখে বর্ষা ওর দুই চোখ বন্ধ করে নেয় আর অভ্রর গরম নিঃশ্বাস গিয়ে পরছে বর্ষার মুখের উপর।
বর্ষার মুখের সামনে থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে অভ্র কানে কানে বলল।
তোমার পিঠের মধ্যখানে কালো তিলটা খুব সুন্দর আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে তোমার পিঠের তিলটা তোমার সৌন্দর্য প্রকাশ করে তাছাড়া ড্রেস চেঞ্জ করার সময় রুমের দরজা ভেতর থেকে ভালো করে বন্ধ করতে হয়। নির্ঘাত আমি ভদ্র গাজীপুরের পোলা তাই তোমার…
বর্ষা চোখ খুলে অভ্রকে জিজ্ঞেস করল। তাই কি? অভ্র বলল next time দরজা বন্ধ করে নিবেন আর সেটা ভালো করে চেক করবেন got it.
বলেই চলে যেতে নিলে বর্ষা পেছন থেকে ডেকে বলল,, আপনি আবারও আমাকে টাচ করেছেন? বর্ষার কথা শুনে অভ্র হাঁটতে হাঁটতে উত্তর দিলো। আমি টাচ করিনি আমি টাচ করলে তুমি ফিল করতে তুমি বুঝো ইনি কে টাচ করেছে তাই মিথ্যা বলিও না।
বর্ষা চুপচাপ হেঁটে নিচে প্যান্ডেলে চলে যায় আর গিয়ে দেখে বর বউয়ের খবর নাই পাড়া প্রতিবেশীর ঘুম নাই কথাটা এখানে বেশ মানায়। এখনো ওরা স্টেজে আসে নাই এদিকে এনাদের আইসা খাওয়াও শুরু হয়ে গেছে আজব না সত্যি অনেকটাই আজব কিন্তু বাঙালি তো বাঙালি।
কিছুক্ষণের মধ্যে তনিমা ও রিমনকে স্টেজে নিয়ে আসে স্টেজে পাশাপাশি বসানোও হয়। তনিমার পাশে বর্ষা রিমা আর ওদের চাঙ্গু পাঙ্গু রিমনের পাশে অভ্র-নীল, নিলয়, শুভ, আর মেয়ে তো আছে সামিয়া তিয়া আরও আছে নাম জানি না।
এদিকে নিলয় বলল, এটা কি হলুদ সেরে মানি হচ্ছে নাকি শোক পালন করা হচ্ছে বুঝতেছি না তো।
নিলয় তো আমার কিউটের ডিব্বা আর রিমার ক্রাশ😑 কিন্তু এখন পর্যন্ত রিমা বা অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকায়ও না ওইদিকে নিলয়ের কোনো নেশা নেই ২৪তম বয়সে মো গার্লফ্রেন্ড নো ক্রাশ পার্সোনালিটি আছে বস বুঝতে হবে।
রিমা বলল, কেনো কি হয়েছে? নিলয় বলল, গান বাজছে কিন্তু কোনো আনন্দ হচ্ছে না হলুদের শুরু টা হোক কাঁপল ডান্স দিয়ে!
তনিমা, কিন্তু কাঁপল ডান্স করবে কে?
কারা আবার করবে সামনেই তো আছে বর্ষা আর অভ্র বেস্ট কাঁপল। নিলয়ের কথা শুনে অভ্র খুশি হলেও বর্ষার মাথা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে মনে হয়।
তনিমা বলল, that’s good Idea.. তনিনাকে চুপ করিয়ে দিয়ে বর্ষা বলল, ওই তাপ্পি তুমি চুপ করো কি that’s good idea বলছো পাগল হয়ে গেছো নাকি তোমরাধুরর আমি তো গেলাম। বর্ষা যাওয়ার জন্য এক পা বাড়ালেই অভ্র বলে। ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছো নাচতে গিয়ে পরে যাবে ভেবে? অভ্রর কথায় বর্ষার প্রচুর রাগ হলো আর কাঁপল ডান্সের জন্য হ্যাঁ বলে দেয়। সবাই হাতে তালি দিচ্ছে।
Oi DJ Music বাজাও Music….
DJ একটা রোমান্টিক গান দিলো দু’জনে স্টেজের সামনে খালি জায়গায় চলে আসলো আর তারপর কাঁপল ডান্স শুরু হয়।
🎶Ye Humne Soch Rakha Tha
Mohabbat Na Karenge🎶
Kisi🎶 Ko Dil Nahi Denge Kisi Pe Na
Marange Hum…..🎶 (“)
🎶Tumhari Mast Aankhon Ne Ye
Kaisa Haal Kar Dala…..🎶
🎶Ke Ye Dil Cheez Kya Hai Maanglo
Tho Jaan Denge Hum……🎶 (″)
🎶Palat Ke Ishq Ki Galiyon Se
Jaana Hai Bada Mushkil….🎶
🎶Dil Galti Kar Baitha Hai
Galti Kar Baitha Hai Dil…..🎶
🎶Dil Galti Kar Baitha Hai
Galti Kar Baitha Hai Dil…..🎶 (“)
পুরো গানটা শুনতে চাইলে নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন। আমি মাঝখান থেকে কুছু কিছু লাইন লিখিনি তাই কেউ কিছু বইলো না আবার।
গানটার মাঝ খানে অভ্র বর্ষার হাত ধরে ওকে এক ঘোড়ানি দিয়ে নিজের হাতের উপর ফেলে আর উঠিয়ে পেছন থেকে জরিয়ে ধরার মতো করে ধরে পায়ে পা মিলিয়ে ঘুরতে। বর্ষার প্রচুর রাগ হচহচ্ছে এত মানুষ বলে কিছু বলছে না আর না হলে আজকে এই ছেলের ১২টা বাজাইয়া দিতো বর্ষা।
অভ্র গান শেষ হওয়ার পরপরই বর্ষাকে ওর ঘাড়ের চুল সরিয়ে দিয়ে ঘাড়ে চুমু দিলো। বর্ষা ঘাড়ে কারো ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে বর্ষা পেছনে তাকিয়ে অভ্র কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আর বলে….
#চলবে….?