উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ১৪
(নূর নাফিসা)
.
.
– হাতমুখ ধুয়ে ঘরে যাও।
মেঘ উঠে বাইরে থেকে হাতমুখ ধুয়ে নাফিসার রুমে এলো। কিন্তু নাফিসাকে দেখতে পেল না। রোকসানা এসে খাবার দিয়ে গেলো। মেঘ খেয়ে শার্টটা খুলে ফেললো। ঘেমে ভিজে গেছে! এখন পড়নে তার সাদা সেন্টু গেঞ্জি আর প্যান্ট। তার জামাকাপড় রিসোর্টেই রয়ে গেছে। ধীর গতিতে ফ্যানটা ছেড়ে ছোট জানালার পাশে দাড়িয়ে রইলো।
রোকসানা নিজের রুমে এসে নাফিসার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
– উঠে খেয়ে নে।
– খাবো না আমি।
– আর কখনো থাপ্পড় দিবো না, আমার আম্মিকে। উঠো।
– না।
– নাফিসা! না খেলে কিন্তু আমিও খাবো না। ক্ষুধা লেগেছে আমার অনেক। তারাতাড়ি উঠো।
নাফিসা উঠে তার আম্মিকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কাদতে লাগলো। তার আম্মি অনেক বুঝিয়ে শান্ত করলেন। মেয়েকে খায়িয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিলেন। নাফিসা এসে আবার আম্মির বিছানায় শুয়ে পড়লো।
– নাফিসা, তোমার রুমে যাও।
– এখানেই থাকবো আমি।
– তোমার বিয়ে হয়েছে এটা মেনে নিতে হবে। যাও, জামাই একা আছে। ছেলেটা খুব ভালো তার উপর সে তোমার স্বামী। অমান্য করো না তাকে।
– আম্মি, প্লিজ। ওই লোককে কিছুতেই মানবো না আমি। ওই লোকের জন্য আজ আমার জীবনে সব উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে।
– কিছু উল্টাপাল্টা হয়নি। সব ঠিক আছে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। মেয়ে বড় হবে, তার বিয়ে হবে। ওই রুমে যেতে বলেছি। যাও!
মায়ের কড়া কন্ঠ শুনে রাগ করে হনহনিয়ে তার নিজের রুমে চলে এলো। মেঘ জানালার পাশে দাড়িয়ে ফোনে কিছু করছে। নাফিসা এসে কড়া কন্ঠে বললো,
– আপনি এখানে আছেন কেন? হোটেলে ফিরে যান।
নাফিসার কথা শুনে মেঘ ব্রু কুচকে পেছনে তাকালো। নাফিসার কথায় রাগ স্পষ্ট, চেহারায়ও রাগ ভেসে আছে। মেঘ নাফিসার দিকে আসতে আসতে স্বাভাবিকভাবে বললো,
– হোটেলে ফিরে যাবো? আচ্ছা চলো, হোটেলে ফিরে যাবো।
– আমি কেন যাবো! আপনাকে যেতে বলেছি।
– আমি গেলে তো তুমিও যাবে। তোমাকে একা ফেলে যাবো নাকি! যতই হোক তুমি আমার একমাত্র স্ত্রী। তোমার প্রতি আমার দায়িত্ব আছে না!
– না! নেই কোনো..
মেঘ হঠাৎ নাফিসার মুখ চেপে ধরে বললো,
– আস্তে কথা বলো। ভুলে যেও না পাশের রুমে আম্মি আছে। আমি তোমার কাছেই আছি। সুতরাং আস্তে বললেই শুনতে পাবো।
– না। নেই কোনো দায়িত্ব। মুক্তি দিয়ে দিলাম আমি আপনাকে। আমি আপনার স্ত্রীও নই। মানি না এই বিয়ে, আর না মানি আপনাকে।
– তুমি না মানলেও আমি মানি। তাছাড়া আমি তোমার কাছে মুক্তি চাই নি।
– আপনি কি যাবেন! নাকি আমি ঘর থেকে বেরিয়ে যাবো?
মেঘ দরজার কাছে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। নাফিসার কাছে এসে আবার বললো,
– আমিও যাবো না আর তুমিও যাবে না। দুজনেই একসাথে থাকবো। চুপচাপ গিয়ে ঘুমাও। আর ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে আম্মিকে ডাকবো এখন। নাফিসা রেগে ঘরের কোনা থেকে মাদুরটা নিয়ে খাটের পাশে মাটিতে বিছিয়ে দিলো। আলমারি খুলে একটা বালিশ আর একটা কাথা বের করে ঢিল দিয়ে মাদুরের উপর ফেললো। মেঘ এসব দেখে বললো,
– মাটিতে শুতে হবে না। আমার সাথে খাটে শুয়ে পড়ো।
নাফিসা খাটে উঠে মাঝামাঝিতে শুয়ে পড়লো আর বললো,
– আমি মাটিতে শুতে যাবো কেন! আপনার জন্য এসব। চুপচাপ শুয়ে পড়ুন।
– হোয়াট! আমার জন্য মানে! নতুন জামাইয়ের জন্য পারলে সোনার পালঙ্কের ব্যবস্থা করে আর তুমি নিজে খাটে শুয়ে আমাকে বলছো মাটিতে শুতে!
– ইচ্ছে হলে শুয়ে পড়ুন না হয় চুপচাপ ঘর থেকে বেরিয়ে যান। আমার ঘুমে ডিস্টার্ব করবেন না।
মেঘ বালিশ আর কাথা উঠিয়ে খাটের পাশে এসে বললো,
– একপাশে চাপো। আমিও খাটেই ঘুমাবো।
নাফিসা চোখ বুজে আছে। কোন জবাবও দিচ্ছে না, একপাশে চেপেও যাচ্ছে না। মেঘ কোন জবাব না পেয়ে হাতে থাকা কাথা আর বালিশ মাদুরের উপর ফেলে দিলো। খাটে নাফিসার বালিশে মাথা রেখে একপাশে অল্প জায়গাতেই নাফিসাকে ঝাপটে ধরে শুয়ে পড়লো। এমন কাণ্ডে নাফিসা হকচকিয়ে গেল! চোখ খুলেই মেঘের মুখটা তার মুখের কাছাকাছি দেখলো আর মেঘের এক হাত তার পেটের উপর! মেঘ মুচকি হাসি দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো,
– আসলে আমিই বোকা! তুমি অনেক বুদ্ধিমতী! আমি বুঝতেই পারিনি তুমি কি ইঙ্গিত করছো! স্বামী-স্ত্রীর আবার আলাদা কাথা বালিশ লাগে নাকি! একটাই তো যথেষ্ট!
– সরুন…
নাফিসা বিরক্তি নিয়ে শোয়া থেকে উঠতে গেলে মেঘ নাফিসাকে বিছানায় চেপে ধরলো। নাফিসা মেঘকে ধাক্কা দিতে চাইলে মেঘ তার উপর উঠে দু’হাতে নাফিসার দুহাত বিছানায় চেপে ধরলো।
– আজ তো আমাদের বাসর রাত! ঝগড়া করে স্পেশাল রাতটাকে শেষ করে দিও না। ঝগড়া কাল সকালে করবো। ওকে! এখন একটু কাছাকাছি আসো।
– আহ! ছাড়বেন আমাকে? নাকি আমি চিৎকার করবো?
– বোকা মেয়ে! বাসর রাতে চিৎকার করে কেউ! আম্মি কি ভাববে! আশেপাশের সবাই কি ভাববে! ছি! ছি!
নাফিসা আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই মেঘ তার মেঘার ঠোঁটে ঠোঁট জোড়া ডুবিয়ে দিলো। নাফিসা আপ্রাণ চেষ্টা করছে ছোটার জন্য। কিন্তু মেঘের শক্তির কাছে পেরে উঠছে না! মেঘ আরও শক্ত করে নাফিসার হাতদুটো বিছানায় চেপে ধরলো। নাফিসার শরীরের সবটুকু শক্তি যেন আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মেঘ ঠোঁট ছেড়ে দিলে দুজনেই হাপাতে লাগলো। নাফিসার চোখের কোটরে পানি এসে ভীড় জমিয়েছে। মেঘকে সরাতে নাফিসা সজোরে এক লাথি দিলো। হাত আটকাতে পেরেছে কিন্তু পা তো আর আটকে রাখেনি! মেঘ টাল সামলাতে না পেরে বিছানা থেকে মাটিতে মাদুরের উপর পড়ে গেলো। কাত হয়ে পড়ায় একপাশে হাতে আর কোমড়ে ব্যাথা পেয়েছে! মেঘ পড়ে যেতেই নাফিসা শোয়া থেকে দ্রুত উঠে বসলো। মেঘও মাদুরে বসে খাটে নাফিসার দিকে তাকিয়ে বললো,
– ওফ! কি কপাল আমার! বাসর রাতে বউয়ের মেজাজ ঠান্ডা করতে গিয়ে লাথি খাই! এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন! হয়েছে তো! পুরো খাট একা পেয়েছো। এবার শান্তিতে আরাম করে ঘুমাও।
মেঘ কাথা টেনে বালিশে মাথা রেখে উল্টো হয়ে মাদুরে শুয়ে পড়লো। নাফিসা মুখ গোমড়া করে খাটেই বসে আছে। শুতেও ভয় পাচ্ছে। মেঘ এসে যদি আবার তার উপর হামলা করে! মেঘ মাথাটা একটু উঠিয়ে নাফিসাকে বসে থাকতে দেখে বললো,
– বসে আছো কেন! ঘুমাবে না? নাকি এখন আবার আমার সাথে মাদুরে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে! চাইলে আসতে পারো, নিষেধ করবো না।
– আমি ঘুমালে আপনি আবার উপরে আসবেন না তো!
– আল্লাহ! কোথায় রেখেছো আমাকে! বউ নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছিলাম আর বউ হলো এমন!
নাফিসাকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে মৃদুস্বরে বললো,
– আসবো না আমি উপরে। ঘুমাও।
ভয়ে ভয়ে নাফিসা শুয়ে পড়লে মেঘও শুয়ে পড়লো। আর নাফিসার উদ্দেশ্যে বললো,
– ভয় না লাগলে লাইটটা অফ করে দিও মেঘা। আলোতে আমার ঘুম আসে না।
– আমার ভয় লাগে।
মেঘ কাথা টেনে নাকমুখ ঢেকে শুয়ে পড়লো। নাফিসাও অনেক্ষন সজাগ থেকে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।
১৬.
সারারাত ঘুমাতে পারেনি বৃষ্টি। আপুদের পাশে শুয়ে নিশব্দে কেদেছে শুধু। ভোরে পাখিদের কিচিরমিচির শুনে তাবু থেকে বেরিয়েছে। একটা রাত নির্ঘুমে কাটালো সে। বাইরে একটু একটু আলো ফুটতে শুরু করেছে। সূর্য এখনো উঠেনি। কাল বৃষ্টি হওয়ায় পরিবেশটা এখনো খুব ঠান্ডা হয়ে আছে। ঠান্ডা লাগছে একটু একটু। মনে হচ্ছে শীতের দিন টেনে আনবে এই আবহাওয়া। ওড়নাটা ছড়িয়ে গায়ে নিয়ে হাত গুটিসুটি মেরে হাটছে বৃষ্টি। আর কাল রাতের কথা ভেবে এখনো বিরতি নিয়ে এক ফোটা দু ফোটা করে পানি পড়ছে চোখ থেকে। একটু পর আকাশ বেরিয়ে এলো তাবু থেকে। দু’হাত মেলে আড়মোড়া ভেঙে সামনে এগোতে গেলেই তাবু থেকে দূরে কাউকে হাটতে দেখা গেলো। এখানে আসার পর আজ পর্যন্ত কেউ তার আগে উঠেনি। আরেকটু সামনে গেলেই বুঝতে পারলো এটা বৃষ্টি। মেয়েটার একটা ভালো অভ্যাস লক্ষ্য করেছে আকাশ। এখানে তার পরে যদি কারো ঘুম ভাঙে সেটা বৃষ্টি। কিন্তু আজ তারও আগে উঠেছে বৃষ্টি। আকাশ দৌড়ে ব্যায়াম করতে করতেই বৃষ্টির দিকে এগিয়ে গেলো। বৃষ্টি কারো পায়ের শব্দ পেয়ে চমকে পেছনে ফিরে তাকালো। বৃষ্টির চেহারাটা দেখে আকাশ থমকে দাড়ালো! বৃষ্টির চোখে পানি! চোখ কেমন যেন গর্তে চলে গেছে। নির্ঘুম চোখ বুঝাই যাচ্ছে! কাল রাতের ঘটনা মনে করে আকাশের বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো। থাপ্পড় দেয়ায় গালে আঙুলের ছাপগুলো এখনো স্পষ্ট, যা নীল বর্ণ ধারণ করেছে। বৃষ্টি আকাশকে দেখে আবার উল্টো দিকে ঘুরে দু’হাতে চোখের পানি মুছে নিলো। আবার আগের ন্যায় হাটতে লাগলো। আকাশ এসে তার সামনে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– কাদছো কেন তুমি?
বৃষ্টি কোন জবাব না দিয়ে ঘুরে উল্টো দিকে পা বাড়ালো। আকাশ হাত ধরে টেনে তার দিকে ঘুরালো।
– কিছু জিজ্ঞেস করছি, শুনতে পাচ্ছো না? কাদছো কেন?
বৃষ্টি জবাব না দিয়ে হাত ছাড়াতে চেষ্টা করলো। আকাশ হাত আরও চেপে ধরে বললো,
– ঘুমাও নি রাতে?
বৃষ্টি উচ্চস্বরে জবাব দিলো,
– না ঘুমাইনি, রাতে। আমি ঘুমাই বা না ঘুমাই আপনার কি তাতে? আপনার তো নিশ্চয়ই কোনো অসুবিধা করছি না। হাত ছাড়ুন আমার।
আকাশ হাত না ছেড়ে আরো শক্ত করে চেপে ধরে টানতে টানতে জঙ্গলের বাইরের দিকে নিয়ে এলো বৃষ্টিকে। হাত ছেড়ে দিয়ে আকাশ দেখলো বৃষ্টির হাত লাল হয়ে গেছে। চেপে ধরায় ব্যাথা পেয়েছে নিশ্চয়ই কিন্তু একবারও বলেনি সে ব্যাথা পাচ্ছে। আকাশ মলিন সুরে বললো,
– সরি জোরে হাত চেপে ধরার জন্য। কাল রাতে থাপ্পড় দেয়ার জন্যও সরি। আমি তোমাকে বারবার ওয়ার্নিং দিয়ে যাচ্ছিলাম তুমি তবুও শুননি। তাই রেগে এমন বিহেভ করেছি। আমি তোমাকে আগেও বলেছি এখনো বলছি। দেখো বৃষ্টি, আমি কাউকে ভালোবাসতে পারবো না কখনো। আমার এসব প্রেমটেম একদমই ভালো লাগে না। আমি ইউনিক লাইফ এনজয় করা পছন্দ করি। কারো খেয়াল রাখা, মন রক্ষা করা এসব আমার দ্বারা সম্ভব না। আমি আশেপাশের লোকজনকে দেখে আমার সিদ্ধান্তে অটুট হয়েছি। এমন অনেক সিচুয়েশন এসেছে আমার লাইফে। কেউ হাত কেটে ফেলেছে, কেউ পুলিশের ভয় দেখিয়েছে কেউ ফাজলামো করার চেষ্টা করেছে। আমি বারবার নিষেধ করা সত্যেও আমাকেই কেন পছন্দ করে আমি বুঝি না। প্লিজ তুমিও তোমার পাগলামো বন্ধ করো। বয়স তোমার অল্প। ক্যারিয়ার গড়ার বয়স মাত্র শুরু। নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়িত কর। আমিও আমার নিজের মতো করে সাজাতে চাই আমার লাইফটাকে। এসব লাইফ পার্টনার জাস্ট বোরিং লাগে আমার।
– আকাশ তুমি ভুলে যাও কেন তুমিও একটা মানুষ! মানুষ একা থাকতে পারেনা কখনো। তার জীবনে সঙ্গী প্রয়োজন। তুমি যেই ইউনিক লাইফ এনজয় করতে চাইছো সেটা একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কখনোই সম্ভব না। আমাকে না বুঝিয়ে একবার নিজেকে বুঝাও। একটু ভালো করে ভেবে দেখো তোমার নিজের ভাবনায় সম্পূর্ণ ভুল খুজে পাবে তুমি। একা কয়দিন কাটাতে পারবে তুমি? আজ অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশে তোমার কাউকে লাগবে না? আজ কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে কাউকে জানাতে হবে না, সেটা ভুল না সঠিক! কোন কাজে অগ্রসর হতে হলে কারো সাপোর্টের প্রয়োজন হবে না? তোমার পরিবার নেই? তারা কি তোমার কাছে কিছু প্রত্যাশা করছে না? তারা কি তোমাকে সংসারে ঠেলে দিতে চাইবে না একসময়? কয়দিন এভাবে সবার বিপরীতে যুদ্ধ করে যাবে? প্রকৃতি কি তোমার নিয়মে চলবে? তুমি হয়তো ভাবছো তুমি সঠিক, এককভাবে চলে মহৎ হয়ে যাবে সবার কাছে। তুমি কি জানো এভাবে বোকা হয়ে যাচ্ছো তুমি। একসময় ভেবে আফসোস করবে নিজের জীবনটাকে নিয়ে। খুব আফসোস করবে।
হঠাৎ করেই বৃষ্টি আকাশকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে বললো,
– আকাশ, সিদ্ধান্ত বদলাও। ভালোবাসি তোমাকে। মানুষের মাঝে ভালোবাসা এতো তারাতাড়ি ধরা দেয় না। কিন্তু আমার এমন হয়েছে কেন আমি নিজেও জানিনা। অনেক ভালোবাসি তোমাকে। সেই প্রথম দিন থেকেই তোমার সবকিছু ভালো লাগে আমার। প্রথমদিনই জংলী বেশে লুকিয়ে থাকা তোমার কথা, তোমার সুর আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিশ্বাস করো, তুমিই প্রথম ব্যক্তি যে আমাকে এতো জোরে থাপ্পড় দিয়েছে। আমার বাবা-মাও কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি। আমার ভাইয়া বেত নিয়ে দুষ্টুমি করে মাঝে মাঝে মেরেছে কিন্তু এতো জোরে মারেনি কখনো। কাল সারারাত আমি কান্না করেছি। বিশ্বাস করো, এক মিনিটের জন্যও ঘুমাইনি। আমার একটুও কষ্ট নেই, তুমি শুধু আমাকে একটু বুঝার চেষ্টা করো । আমি সেই কষ্ট চিরতরে ভুলে যাবো। আকাশ প্লিজ। আকাশ…