পাহাড়ে মেঘের ছায়া পর্ব-৪১

0
530

উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ৪১
(নূর নাফিসা)
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই নামাজ পড়ে বৃষ্টি কিচেনে চলে এলো। মোহিনী রান্না বসানোর ব্যবস্থা করছিলো। নাফিসাও রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে। বৃষ্টি বললো,
– আম্মা, সরো। আজ আমি রান্না করি!
– নাফিসা, সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয়েছে তো!
মোহিনীর কথা বলার ভঙ্গি দেখে নাফিসা মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললো আর বৃষ্টি নাক ফুলিয়ে বললো,
– এমন ভাব করছো যেন আমি কখনো রান্না করিনি! এদিকে আসো তুমি, আমি আজ বিরিয়ানি রান্না করবো।
– মেঘ বাসায় নেই, তাছাড়া তোর বাবা একটু পর অফিস যাবে। আজ রান্না করতে হবে না।
– রান্না করতে বেশিক্ষণ লাগবে না! বাবা খেয়েই অফিস যেতে পারবে।
– যাক, তাহলে আমি ছুটিতে যাই!
– হুম যাও!
মোহিনী বেরিয়ে গেলো আর নাফিসা বৃষ্টিকে হেল্প করছে। রান্না প্রায় শেষ পর্যায়। মোহিনী এসে ফোন দিয়ে গেলো। লাউড স্পিকারে রেখে বৃষ্টি কথা বলছে,
– ভাইয়া, বিরিয়ানি রান্না করছি আজ!
– যাক, বেচে গেলাম!
– বাচতে দিবো না! আমার জিনিস আমি আদায় করে ছাড়বো।
– কেন, আমি কি তোর রান্না খাবো নাকি!
– আমি তো নিষেধ করিনি! কবে ফিরবে তুমি?
– আজ বা কাল!
– কোথায় আছো?
– পৃথিবীতে।
– স্টুপিড! কখনো ঠিকমতো সত্যি কথা বলে না!
মেঘ হেসে উঠে বললো,
– সত্যিই তো বললাম। মেঘা কোথায়?
– মেঘের পাশে।
– তোর কাছে নেই?
– বলবো কেন!
– দূর! ফোন রাখ!
মেঘ কল কেটে দিলো। নাফিসা তাদের ভাইবোনের কথা বুঝতে না পেরে বললো,
– বৃষ্টি, তোমার ভাইয়া বেচে গেলো কেন? বুঝলাম না!
– আমার হাতের রান্না খেলে গিফট দিতে হবে তাই বেচে গেছে!
– ওহ!
– হুম, যাও গিয়ে দেখো তোমার ফোনে হয়তো অসংখ্য কল দিয়ে যাচ্ছে।
নাফিসা কাজ শেষ করে চলে গেলো। বৃষ্টি তার রান্না শেষ করলো। সবাই একসাথে নাস্তা করছে। রায়হান চৌধুরী খাওয়া শেষ করে বৃষ্টির হাত এক টাকার একটা লাল পয়সা দিলো।
– বাবা, আমি কতবার রান্না করেছি সেই হিসেব কিন্তু তোমার দেওয়া লাল পয়সা ঠিকই রেখেছে!
– কত হলো?
– ছয় টাকা!
– আমি কিন্তু আরও অনেক জমা করে রেখেছি!
মোহিনী বললো,
– জমা করে কি লাভটা হয়েছে! এই পয়সার চালান আছে! এখন এটা মূল্যহীন!
বৃষ্টি প্রতুত্তরে বললো,
– মা, তুমি বুঝবা কি এর মূল্য! এটা আমাদের ভালোবাসার মূল্য!
মোহিনী চুপ হয়ে গেলো! এর উপর আর কোন কথা বলা যায় না! রায়হান চৌধুরী বললেন,
– কি হার মানতে হলো তো! তোমার কাছে লাল পয়সার মূল্য নেই, আমার মেয়ের কাছে আছে!
সবার মুখেই প্রশান্তির হাসি লেগে আছে! নাফিসা এদের যত দেখছে ততই অবাক হচ্ছে! এতো বেশি মেধাবী আর পারস্পরিক সহানুভূতিশীল পরিবার তার এই প্রথম দেখা! বাবা মেয়ের মধ্যে এতো খুশগল্প থাকে সেটা তাদের না দেখলে জানতোই না কখনো!
খাওয়া শেষে বৃষ্টি বন্ধুদের কথা বলে বক্সে বিরিয়ানি তুলে নিলো। কোচিং শেষে বান্ধবীদের সাথে একটু ঘুরেবেড়াবে বলে মায়ের কাছ থেকে গাঢ় সবুজ রঙের একটা জামদানী শাড়ি নিলো। নাফিসার সাহায্যে শাড়িটা খুব সুন্দর ভাবে পড়ে নিলো। বেশি সাজুগুজু করেনি, শুধু চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়েছে! প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে বৃষ্টির চেহারায়। মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো সে। কোচিং-এ বন্ধুবান্ধব দেখে নানা প্রশংসা আর জিজ্ঞাসা! বৃষ্টি বলে দিলো, কোচিং শেষে বেড়াতে যাবে তাই বাসা থেকে একবারে রেডি হয়ে এসেছে।
.
আজও বাড়িতে মারিশা এসেছিলো। মেঘকেও পেল না বৃষ্টিকে ও পেল না! পেয়েছে মোহিনী আর নাফিসাকে! নাফিসা মোহিনীর সাথে বসেই ড্রয়িং রুমে টিভি দেখছিলো। মারিশা মোহিনীর পাশে বসে বললো,
– আন্টি, বৃষ্টি কখন ফিরবে?
– আজ নাকি একটু দেড়ি হবে। ফ্রেন্ডের সাথে বেড়াতে যাবে।
– ওহ, ভালো। ঘুরাফেরা করলে মন ভালো থাকে! আমারও একা ভালো লাগছিলো না তাই তোমার কাছে চলে এলাম। আর প্রায়ই এসে বিরক্ত করে ফেলি!
– একটা মাইর দিবো! কিসের বিরক্ত হুম? যখন ইচ্ছে তখন চলে আসবে। আমি আছি, নাফিসা আছে আমাদের সাথে এসে গল্প করবে। একা একা থাকো কেন বাসায়!
– হুম, গল্প করতেই তো চলে এলাম। নাফিসা, সিলেট যাচ্ছো কবে?
হঠাৎ এমন প্রশ্নে নাফিসা হতবাক! সে কিছু না বলে একবার মোহিনীর দিকে তাকালো আবার মারিশার দিকে তাকালো। মোহিনী বললো,
– সিলেট কেন যাবে! মেয়েদের আসল ঠিকানা শ্বশুর বাড়ি! আর এখন এটাই নাফিসার নিজের বাড়ি।
মারিশা হেসে জবাব দিলো,
– কি বলো আন্টি! বেড়াতে যাবে না! বিয়ের পর মেয়েরা বাবার বাড়ির জন্য আরও বেশি পাগল হয়!
– তা ঠিক বলেছো।
– হুম, কবে যাচ্ছো নাফিসা? বলতে ভয় পাচ্ছো না-কি! চিন্তা করো না, আমি তোমার সাথে যেতে চাচ্ছি না! আমি আমার জায়গায়ই থাকবো।
মারিশা আর মোহিনী একজোটে হেসে উঠলো। নাফিসা বললো,
– ও যেদিন নিয়ে যাবে, সেদিনই যাবো।
মোহিনী বললো,
– মারিশা তুমি যেতে চাইলে নাফিসা না করবে না!
– থাক যেতে চাচ্ছি না! আমার এ জায়গাই পছন্দ।
– চলো, খাওয়াদাওয়া করা যাক।
– না, আন্টি। আমি আজ খেয়ে এসেছি।
– তো কি হয়েছে, আমাদের সাথে আবার খাও।
– উহুম, একটুও ক্ষুধা নেই।
– বৃষ্টি বিরিয়ানি রান্না করেছে। অল্প হলেও খেতে হবে। চলো।
মারিশা গেলো টেবিলে। নাফিসা প্লেট ধুয়ে এনে টেবিলে রাখলো। প্লেটে খাবার বাড়তে যাবে এমন সময় মারিশা উঠে এসে চামচ নিয়ে নিলো। মুখে হাসি ফুটিয়েই বললো,
– তুমি তো সবসময়ই খাবার বেড়ে দাও, আজ না হয় আমি দেই। এ বাড়িতে তোমার অধিকার থাকলে আমারও তো অধিকার আছে! আন্টির প্রতি তো আমারও দায়িত্ব আছে। কি বলো আন্টি?
মোহিনী মুচকি হেসে জবাব দিলো,
– হুম।
মারিশা নাফিসাকে বললো,
– তুমি আজ মেহমানের মতো চেয়ারে বসো, আমি প্লেটে খাবার দিচ্ছি।
নাফিসা কিছু বললো না। চুপচাপ চেয়ারে বসে পড়লো। মেহমান শব্দটা শুনে তার ভেতরে মোচড় দিয়েছে! সত্যিই কি সে এ বাড়ির মেহমান হয়ে এসেছে! মেঘ তাকে মেহমান বানিয়ে এনেছে! ভেতরের কষ্টগুলো চাপা পড়ে আছে! মেঘ তো বলেছিলো তাকে শক্ত হতে! মেঘের কথা অনুযায়ী সে নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলছে। কিন্তু মুখে মুখে জবাব দিতে গেলে সেটা তর্ক হয়ে যাবে! আম্মি ছোট থেকেই নিষেধ করেছে কারো সাথে তর্ক করতে! বড়দের সাথে কথা সাজে না! মারিশা তার চেয়ে অনেক বড়। কথার উপর কথা বললে কথা বাড়ে আর বেয়াদবির পরিচয় পাওয়া যায়! তার আম্মির দেওয়া শিক্ষার সম্মানহানি হতে দিবে না সে! তাই সহ্য করে যাচ্ছে সব! খাওয়া শেষে সবকিছু গুছিয়ে মা এর কাছে বলে রুমে চলে গেলো নাফিসা। মারিশা মোহিনীর সাথে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করে তারপর বেরিয়েছে।
.
কোচিং শেষ করে বৃষ্টি সেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে আকাশের অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু আকাশের খবর নেই! কয়েকবার কল করলো আকাশ ফোন রিসিভ করছে না! এক পর্যায়ে তার ফোন বন্ধ পেলো! আধঘন্টার মতো বসে অপেক্ষা করেছে আকাশের জন্য, কিন্তু আকাশ এলো না! যদি না ই আসতে পারবে তাহলে বলেছিলো কেন আসবে! বৃষ্টির কান্না পাচ্ছে খুব! বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সে রেগেমেগে বেরিয়ে এলো রেস্টুরেন্ট থেকে! মুখ ফুলিয়ে বাসায় ফিরেছে কিন্তু কাউকে কিছু বুঝতে দেয়নি। নিজের রুমে এসে বালিশে মুখ চেপে ইচ্ছেমতো কান্না করতে লাগলো! কার জন্য শুধু শুধু এতো পাগল হয়ে আছে সে! অযথা কেন এই লোকটাকেই পেতে চায়, সবসময় যে তাকে অবহেলাই করে গেছে! সবসময় যে তাকে কাদিয়েই গেছে তাকেই কেনো ভালোবাসে সে! আকাশ তো বলেছিলো তাকে ভালোবাসে, তাহলে তার সাথে এমন করে কেন সে! কই সে তো একটুও ভালোবাসে না! তাহলে মিথ্যে সান্ত্বনা দিয়েছিলো সেদিন! অনেক হয়েছে! আর না! আকাশকে ভুলে যাবে, আর কাদবে না তার জন্য! মানুষকে বেশি গুরুত্ব দিলে সে আবর্জনার মতো ছুড়ে ফেলে দেয়! প্রয়োজন নেই তাকে, আর ভাববে না আকাশকে নিয়ে! আর কখনো কল করবে না, দেখাও করতে চাইবে না!
বেশ কিছুক্ষণ কান্না করে বৃষ্টি চোখের পানি মুছে ফোনটা নিয়ে আকাশের নম্বর ব্লক করে দিলো। তাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলো। একবারে তো আর পারবে না তবে ধীরে ধীরে সরিয়ে ফেলবে আকাশ নামটাকে!
সারাদিন বিষন্নভাবেই কাটালো সে। পরক্ষণে নিজেকে অন্যান্য কাজে নিয়োজিত করে আকাশকে ভুলতে চেষ্টা করলো।
৩৯.
মেঘ সেদিন রাতেই বাসায় ফিরেছিলো। নাফিসা ঢাকায় আছে একমাসেরও বেশি হবে। আম্মিকে দেখে না কতোদিন হয়ে গেছে! তাছাড়া মেঘকে আর আগের মতো মনে হয় না তার কাছে। অনেক পরিবর্তন খুজে পেয়েছে যেটা মানতেই পারছে না নাফিসা!
মারিশা প্রায়ই বাসায় আসতো। মেঘের সাথে গল্প করতো, মেঘকে জোরজবরদস্তি করে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছে দুইদিন! নাফিসাকে যেতে বলেছিলো মেঘ কিন্তু মারিশার সাথে নাফিসা কখনোই ঘুরতে যাবে না! মেঘ প্রায়ই বাসায় ফিরে না! বাড়ির বাইরে কাটায় দু তিনদিন! দিনে না হয় কাজ থাকে কিন্তু রাতে কিসের কাজ তার! আর মেঘ সবসময় তাকে পড়াশোনার জন্য তাড়া করে রাখে। বৃষ্টির সহযোগিতায় সে এক্সামও দিয়েছে। মারিশা এ পরিবারের সবার কাছেই খুব গ্রহণযোগ্য পাত্রী! নাফিসাকে ইশারা ইঙ্গিতে কতটা আঘাত করে যায় সেটা দেখতে পায়না কেউ! সবকিছু, মুখ বুজে সহ্য করে নিচ্ছে নাফিসা। কোনো জবাবদিহিতা চায়না মেঘের কাছে! মেঘকে এতোটা আপন করে নিয়েছে এখন তার কাছেই অবহেলিত! দিন যত পাড় হয়েছে মেঘের দুরত্ব সে ততই অনুভব করেছে!
নাফিসা জানালার পাশে দাড়িয়ে আছে। শীতকাল ছুইছুই, দুপুরের মিষ্টি রোদ দেহকে কোমল স্পর্শ দিতে পারলেও মনটাকে স্পর্শ করতে পারছে না! সবথেকেও তার যেন কিছুই নেই! আগের জীবনটা নিরানন্দ থাকলেও সেটাই ভালো ছিলো। মেঘ নামক মানুষটা এসে তার সাদাকালো জীবন রঙিন করে পালিয়ে গেছে! এখন যে এই রঙ তার ভালো লাগছে না! তুচ্ছ মনে হচ্ছে সব কিছু! পালিয়েই যখন যাবে, অযথা রঙের পরিচয় দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো! এখন আর দিনগুলো আগের মতো উজ্জ্বল রশ্মি ছড়ায় না! রাতগুলো আর আগের মতো মধুর হয় না! মেঘের পরিবর্তন মনে বিষন্নতা ডেকে আনছে।
রুমে এসে নাফিসার বিষন্ন হয়ে থাকা বাইরে দৃষ্টি দেখে বৃষ্টি বললো,
– কি ভাবছো এমন করে?
নাফিসা পেছনে ফিরে মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে বললো,
– কিছু না।
– উহুম, তোমার মন খারাপ! ভাইয়াটাও আজকাল কাজের প্রতি বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে! তোমাকে বেড়াতেও নিয়ে যায় না কোথাও! বাসায় ফিরুক, জবাব নিবো আজ।
– আমি কোথাও ঘুরতে যাবো না। তোমার ভাইয়া এমনিতেই কাজে ব্যস্ত। শুধু শুধু এসব বলো না।
– বাব্বাহ! দরদ কতো! চলো আজ তুমি আর আমিই ঘুরে আসি বাইরে থেকে।
– না, ভালো লাগছে না। যাও তুমি।
– ভালো লাগছে না বলেই তো যেতে চাচ্ছি। চলো তো। শপিং মলে যাওয়ার প্রয়োজন ছিলো একটু। চলো শপিং করতেই যাই।
– ইচ্ছে করছে না যেতে।
– ইচ্ছে না করলেও যাবো। তাড়াতাড়ি রেডি হও। আমি এখনই আসছি মা কে বলে।
নাফিসাকে তাড়া দিয়ে বৃষ্টি চলে গেলো রেডি হতে। মোহিনী এসেও বললো, বাইরে থেকে ঘুরে আসতে। তাই নাফিসাকে যেতেই হলো। প্রথমেই বৃষ্টির সাথে শপিংমলে এলো। প্রয়োজনীয় কিছু কিনলো দুজনেই। শপিং শেষে নাফিসাকে সাথে নিয়ে বাইরে ফুচকা খেতে এলো বৃষ্টি। দুজনেই প্রতিযোগিতা নিয়ে ফুচকা খেলো! খুব মজা পেয়েছে দুজন! বৃষ্টি এতোটা স্মার্ট, পাশে থাকা সকলকেই স্মার্ট বানাতে সক্ষম এই মেয়েটা! নাফিসার মনটা ভালো হয়ে গেছে বৃষ্টির সাথে বাইরে এসে! সারাক্ষণ মজার গল্প করে হাসিয়ে যায়!
ফুচকা খাওয়া শেষে দুজনেই কথা বলতে বলতে হাটতে লাগলো রাস্তার পাশ দিয়ে। কিছুটা পথ যেতেই আকাশ সামনে পড়লো সাথে দুজন লোকও আছে। বন্ধুবান্ধব হবে হয়তো! বৃষ্টি আর আকাশ দুজনেই একে অপরকে দেখে থমকে গেলো! আকাশ হয়তো কিছু বলতে চাচ্ছিলো, নাফিসাকে পাশে দেখে থেমে গেলো। বৃষ্টি না দেখার ভান করে নাফিসার সাথে কথা বলতে বলতে হাটতে লাগলো। আকাশের একদম কাছাকাছি আসতেই আকাশ মৃদু স্বরে বললো,
– তোমার ফোন বন্ধ কেন?
বৃষ্টি না শুনার ভান করে নাফিসার সাথে কথা বলতে বলতে হাটছে। নাফিসা বললো,
– তোমাকে মনে হয় লোকটা কিছু জিজ্ঞেস করেছে!
– আমাকে! আমাকে কেন জিজ্ঞেস করবে! আমি চিনি না তো উনাকে! অন্য কাউকে বলেছে হয়তো!
– তোমাকেই বললো মনে হচ্ছে! সিলেট যে একটা ছেলের সাথে দেখেছিলাম উনার মতো মনে হচ্ছে!
– আরে নাহ! সেটা তো আমার ফ্রেন্ড ছিলো! অনেক হেটেছি, চলো এবার রিকশায় উঠে বাসায় যাই।
কথাগুলো শুনে আকাশ রাগে ফুসছে! তাকে ইগনোর করা তো কিছুতেই মানতে পারছে না! নাফিসা না থাকলে এখন অনেক কিছুই জানিয়ে দিতো বৃষ্টিকে! তাকে চেনে না! কথা শুনেও শুনেনি! কি করে এমন আচরণ করতে পারলো তার সাথে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here