উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ৪৯
(নূর নাফিসা)
.
.
৪৬.
মেঘ ও নাফিসার সাথে কথা বলে বৃষ্টি অনলাইনে এলো। বন্ধুদের খবর নিলো তারা কোথায় চান্স পেয়েছে জানার জন্য। ভার্সিটিতে তো একটা স্থান পেলো এখন মেডিকেলের রেজাল্টের প্রত্যাশায় বৃষ্টি। ফেসবুকে একটু ঘুরাফেরা করতেই মনে হলো আকাশের কথা। বেশ কয়েকদিন হলো তার সাথে কোনো যোগাযোগ রাখছে না! যোগাযোগের সকল রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। সেদিন রাস্তায় দেখা হওয়ার পর তো চেয়েছিলো কথা বলতে সেখানেও বৃষ্টি সুযোগ দেয়নি! আজ আবার সেই বন্ধ সিমটা চালু করলো। আকাশের নম্বর আনব্লক করলো, ফেসবুকেও আনব্লক করলো। আরও কিছুক্ষণ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য এলো। মা বাবার সাথে গল্প করতে করতে খাওয়া শেষ করে আবার রুমে এলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখলো আকাশ তাকে “হ্যালো” জানিয়েছে মেসেঞ্জারে! দুইটা মিসড কলও উঠে আছে ফোনে! নিশ্চয়ই অনলাইনে এক্টিভ দেখে মেসেজ এবং কল দিয়েছে!
“ভুলে যাও নি তাহলে, মিস্টার আকাশ! খুব জ্বালিয়েছো আমাকে! আমিও দেখতে চাই, তোমার কাছে আমার মূল্য কতটুকু! দাড়াও, মজা নেওয়ার ডোজটা আরেকটু বাড়িয়ে দেই!”
বৃষ্টি নিজেই আকাশের ফোনে কল করলো। সাথে সাথেই রিসিভ হলো! আজ বৃষ্টি কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে আকাশ বললো,
– হ্যালো, কেমন আছো?
– আলহামদুলিল্লাহ। অনেক ভালো। আপনি কেমন আছেন?
– আলহামদুলিল্লাহ, ভালো।
– হুম, ভালো হলেই ভালো।
– ফোন বন্ধ কেন তোমার?
– অপ্রয়োজনে কোন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছি। তাই ফোন বন্ধ।
– তাহলে এখন চালু কেন?
– এখন! এখন প্রয়োজন পড়েছে তাই চালু করেছি! আর বৃষ্টি বিনা কারণে কাউকে কল করা বন্ধ করে দিয়েছে! শুনুন, যে জন্য কল করেছি! আগামী ষোলো তারিখ আমার বিয়ে।
– হোয়াট!
– একবার বললে শুনেন না দেখছি! আগামী ষোলো তারিখ আমার বিয়ে। এবার বুঝতে পারছেন! জঙ্গলে করেকবার আমার প্রাণ বাচিয়েছেন, সে প্রেক্ষিতে তো আপনি আমার পরিচিত! সুতরাং, আপনিও আমার বিয়েতে আমন্ত্রিত। আশা করি আসবেন, মিস্টার আকাশ।
– বৃষ্টি, ফাজলামো বন্ধ করো!
– এক্সিউজমি! বিয়ে শব্দটাকে আপনার কাছে ফাজলামো মনে হচ্ছে! আপনি হয়তো ভিন্ন জগতে বসবাস করেন, কিন্তু আমি সামাজিক জীবনযাপন করি। আপনাকে আমন্ত্রণ জানানোর ইচ্ছে ছিলো তাই জানিয়ে দিলাম। এবার বাকিটা আপনার ইচ্ছে! আল্লাহ হাফেজ।
বৃষ্টি কল কেটে দিলো। আকাশ সাথে সাথে কল ব্যাক করলো! বৃষ্টি দাত চেপে হাসি দিয়ে আবার নিজেকে আগের অবস্থানে এনে ফোন রিসিভ করলো।
– কি ব্যাপার? আবার কল করেছেন যে!
– বৃষ্টি, তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে! কি বলছো এসব! তোমার তো পড়াশোনাও শেষ হয়নি! এখনই বিয়ে! তোমার বাবা মা জানে!
– আশ্চর্য! বিয়ে কি একা একা করা যায় নাকি! বাবা মা জানবে না! বাবা মা ই তো ঠিক করলো আমার বিয়ে! ছেলে অনেক স্মার্ট, ফর্সা, লম্বা, শিক্ষিত, ভালো জব করে, মোটকথা সবদিক থেকেই আমার জন্য পারফেক্ট! বাবা মার পছন্দ আছে বটে! আমারও ভালো লেগেছে তাই রাজি হয়ে গেলাম! বিয়ে তো একদিন করতেই হবে, তাই আর শুধু শুধু দেড়ি করে কি লাভ! প্রিয়জনের সাথে জীবনের সুন্দর মুহুর্তগুলো উপভোগ করার সময় অযথা নষ্ট করার কোনো মানেই হয়না! এটাই উপযুক্ত সময়!
– মিথ্যে বলছো তুমি!
– বিশ্বাস হচ্ছে না আপনার! ইনবক্স চেক করুন, ছবি পাঠাচ্ছি।
বৃষ্টি টেবিলের ড্রয়ার থেকে মেঘ ও নাফিসার বৌভাত প্রোগ্রামের কার্ড নিয়ে ছবি তুলে পাঠালো। কার্ডের উপর থেকে বুঝা যাবে না এটা বৌভাত নাকি বিয়ের কার্ড! আবার আকাশকে কল করে বললো,
– দেখেছেন ছবি? এটা আমার বিয়ের কার্ড। ব্যস্ততার কারণে কার্ড পৌছাতে পারছি না! আশাকরি কল করে বলা আমন্ত্রণই গ্রহণ করবেন।
– বৃষ্টি, আমি জানি তোমার বাবা মা পড়াশোনা শেষ না করে বিয়ে দিবে না তোমাকে! এসব নাটক বন্ধ করো, আর আমার কথা শুনো।
– আরে, পড়াশোনা তো শেষ করবোই বিয়ের পর। সব সুযোগ বুঝেই বিয়ে দিচ্ছেন বাবা-মা। তাছাড়া আপনি এতো মাথা ঘামাচ্ছেন কেন আমার ব্যাপারে!
– কেন মাথা ঘামাচ্ছি জানো না তুমি!
– না জানি না। আর জানতেও চাই না! দয়া করে আর আমার কোনো ব্যাপারে নাক গলাবেন না! পারলে একটু দোয়া করবেন যেন আমি সুখে থাকি! আমার মিস্টার হবু কল করছে। রাখি, আল্লাহ হাফেজ!
– বৃষ্টি!
বৃষ্টি আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না আকাশকে! বৃষ্টির তো এদিকে নাচতে ইচ্ছে করছে! আকাশ আবার কল করেছে, বৃষ্টি কল কেটে দিয়ে তার বান্ধবী রূপার সাথে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া শুরু করলো যাতে আকাশ তাকে কল করে বিজি পায়! রূপা বললো অনেকদিন হলো দেখা হয়না তাই কাল বের হতে দেখা করার জন্য। বৃষ্টিও রাজি হয়ে গেছে। কথা বলা শেষ করে দেখলো আকাশ মেসেঞ্জারে একের পর এক মেসেজ দিয়েই যাচ্ছে। বৃষ্টিকে তার কথা শুনতে বলছে, কল ব্যাক করতে বলছে। আর এদিকে বৃষ্টি তাকে আবার ব্লক করে দিলো। প্রশান্তির নিশ্বাস ছেড়ে শান্তির ঘুম দিলো!
সকালে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলো রূপার সাথে দেখা করতে। বাইরে গিয়ে তো খাবেই তাই হালকা নাস্তা সেড়ে নিলো বাসায়। মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিলো। মোহিনী আরও কিছু টাকা বাড়িয়ে দিলেন তার জন্য একজোড়া ইমিটেশনের চুড়ি কেনার জন্য।
বৃষ্টি রূপার সাথে দেখা করলো রেস্টুরেন্টের সামনে। সাথে আরও দুজন ফ্রেন্ডকে আসতে বলেছে। সবাই মেয়ে, চারজন একত্রিত হয়ে আজ সারাদিন ঘুরাফেরা করবে ভেবে নিয়েছে। তারা চারজনই রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলো সকালের নাস্তা করার জন্য। ফাকা টেবিলের দিকে যেতেই চোখ পড়লো কর্ণারের টেবিলে! সিমি, রওনক, রিজভী, আকাশ সাথে আরও একটা মেয়ে! সিমি বৃষ্টিকে দেখার সাথে সাথেই বললো,
– আরে, বৃষ্টি না!
এখানে এসে এদের দেখবে ভাবতেও পারেনি বৃষ্টি! এখন কথা না বলেও উপায় নেই! কারণ তারা তো দেখেই ফেলেছে! বৃষ্টি তার বান্ধবীদের বসিয়ে রেখে মুখে হাসি ফুটিয়ে সিমির কাছে এলো।
– কেমন আছো আপু?
– এইতো ভালো। তুমি কেমন আছো?
– আলহামদুলিল্লাহ।
– ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকফাস্ট করতে এসেছো?
– হ্যাঁ। তোমরাদেরও তো দেখছি!
– আমরা তো বিপদে পড়ে এসেছি। গাজীপুর গিয়েছিলাম, আজ সকালেই এলাম, একবারে ব্রেকফাস্ট সেড়েই বাসায় ফিরবো।
– ওহ!
– সবসময় তো আকাশের সাথে ও ফ্রেন্ডের সাথেই বসো, আজ না হয় আমাদের সাথে বসো ব্রেকফাস্ট করতে?
– না আপু, তোমরা করো ব্রেকফাস্ট! আমি বাসা থেকেই খেয়ে এসেছি। অনেক দিন হলো তাদের সাথে দেখা হয় না তাই একটু বেরিয়েছি।
রিজভী চেয়ার ছেড়ে উঠে বললো,
– আরে ঝড়বৃষ্টি, বসে পড়ো। নাও, আকাশের পাশের সিট ছেড়ে দিলাম।
– লাগবে না ভাইয়া। সিট ছেড়ে দিয়েছেন ভালো কথা, এবার অন্য কাউকে এনে বসিয়ে দিন এখানে। আমি আর নেই!
– কেন! তুমি আবার কোথায় হারিয়ে গেলে!
এতোক্ষণ আকাশ চেয়ারে হেলান দিয়ে শুধু তাকিয়ে ছিলো বৃষ্টির দিকে। এবার উঠে দাড়ালো এবং বৃষ্টির কাছে এসে হাত ধরে টানতে টানতে বের হতে লাগলো। পেছন থেকে সিমি ডাকলো আর আকাশ তাদের বলে দিলো ব্রেকফাস্ট করে নিতে! বৃষ্টি কিছুই বুঝতে পারছে না! এতো জোরে হাত চেপে ধরেছে ছাড়াতেও পারছে না, আকাশকে বারবার থামার জন্য বলছে কিন্তু আকাশ চলছেই। বৃষ্টির ফ্রেন্ডসহ আকাশের ফ্রেন্ডরা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো! রূপা বাদে বৃষ্টির ফ্রেন্ডরা চিৎকার করতে লাগলো। সিমি আর রূপা তাদের থামতে বলছে। রূপা জানে আকাশের ব্যাপারে আর সিমি আশ্বাস দিলো, আকাশ বৃষ্টির সাথে কোনো খারাপ হতে দিবে না!
আকাশ বৃষ্টিকে টানতে টানতে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে তার গাড়ির কাছে এলো। দরজা খুলে বৃষ্টিকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে উঠালো। বৃষ্টি পায়ে ব্যাথা পেয়েছে সেটাও আকাশ লক্ষ্য করছে না! দরজা লক করে সে অপর পাশে উঠে বসলো। অত:পর গাড়ি স্টার্ট দিলো। হাই স্পিডে গাড়ী চালাচ্ছে আকাশ!
– আকাশ! এমন করছো কেন তুমি! গাড়ি থামাও। গাড়ি থামাতে বলেছি! দেখো, আমি ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে এসেছি অযথা প্ল্যান নষ্ট করো না! আকাশ গাড়ি থামাও! আমি কিন্তু এখন চিৎকার করে লোক জানাবো!
আকাশ হঠাৎ করেই গাড়ি ব্রেক করলো! বৃষ্টি ঝুকে পড়ছিলো, আকাশ সিট বেল্ট লাগিয়ে দিয়েছিলো বিধায় রক্ষা! বৃষ্টি সিট বেল্ট খুলতে গেলে আকাশ তার হাত ধরে ফেললো। গাড়ির ড্রয়ারে কিসের যেন চিকন ফিতা রাখা ছিলো সেগুলো একসাথে নিয়ে পুরত্ব বাড়িয়ে বৃষ্টির হাত বেধে ফেলেছে এবং পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ বেধে দিলো। এবার গাড়ি চালাতো লাগলো, স্পিড আগের চেয়ে একটু কম হলেও স্বাভাবিক না! মনে হচ্ছে তাকে কিডন্যাপ করছে আকাশ! বৃষ্টি কিছু বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু তার মুখ থেকে শব্দ বের হচ্ছে বোবার মতো! ব্যর্থ হয়ে চুপ হয়ে গেলো! আকাশের চোখেমুখে রাগ স্পষ্ট! গাড়ি এনে একটা বাড়ির সামনে থামালো। চার পাচ তলা হবে বাড়িটা! তলা গণনারও যেন সুযোগ নেই! আকাশ নিজে গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টিকে টেনে নামালো। টানতে টানতে তাকে নিয়ে দোতলায় উঠলো। একটা ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে একটা রুমের ভেতর এনে দরজা লাগিয়ে দিলো ভেতর থেকে! বৃষ্টির হাতের বাধন ও মুখের বাধন খুলে দিতে দিতে বললো,
– বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে না তোর? ষোলো তারিখ বিয়ে, তাই না?
বৃষ্টিও জেদ নিয়ে বললো,
– হ্যাঁ, হয়েছে বিয়ে ঠিক। দাড়াও, কার্ড আছে। দিচ্ছি।
বৃষ্টি পার্স থেকে কার্ড বের করে দিতেই আকাশ কার্ড ছিড়ে দু টুকরো করে ছুড়ে ফেলে দিলো। বৃষ্টির হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো,
– তোর মিস্টার হবুর নম্বর কোনটা, বল আমাকে। দেখি তোকে বিয়ে করে কিভাবে!
বৃষ্টি ফোন হাতে নিয়ে বললো,
– দেখতে হলে বিয়ের দিন গিয়ে দেখো।
আকাশ আবার ফোন নিয়ে চেচিয়ে বললো,
– নম্বর বল, কোনটা? কল করবো। শুধু কল না, ভিডিও কল করে লাইভে দেখাবো আজ! কল কর তোর মিস্টার হবুকে!
– আকাশ পাগল হয়ে গেছো তুমি! এভাবে কথা বলছো কেন! ফোন দাও আমার।
বৃষ্টি ফোন নিতে গেলে আকাশ তাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো। ফোনও ঢিল মেরে বিছানায় ফেলে দিলো। অত:পর শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বললো,
– ভিডিও কল কর তোর মিস্টার হবুকে! আজ তোর এমন অবস্থা করবো যাতে আকাশ ছাড়া কেউ না পায় তোকে! কারো সাহস হবে না তোকে বিয়ে করার! দেখি তোর কাছে কাকে মানায়, আর কে ই বা তোর জন্য পারফেক্ট!
বৃষ্টির ভয় লাগছে খুব! সে সোজা হয়ে উঠতে লাগলো এবং ভয়ে ভয়ে বললো,
– কি বলছো তুমি এসব! কি করতে চাইছো!
– দেখবেই তো সুইটহার্ট!
কথাটা বলে আকাশ একটানে বৃষ্টির গা থেকে ওড়না নিয়ে নিলো এবং ফ্লোরে ছুড়ে মারলো! বৃষ্টি চমকে উঠে বললো, “আকাশ!”
বৃষ্টি বুঝতে পারছে আকাশের মাথা ঠিক নেই! সে অনেক রেগে গেছে! চোখ মুখ লাল হয়ে আছে! ও এখন যেকোনো কিছুই ঘটাতে পারে! ফ্লোর থেকে দ্রুত ওড়না নিতে গেলেই আকাশ তাকে ধরে আবার বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেললো। বৃষ্টি উঠতে গেলে আকাশ বিছানায় চেপে ধরলো।
– আকাশ ছাড়ো, আকাশ ছাড়ো প্লিজ! এমনটা করো না, তোমার মাথা ঠিক নেই! আকাশ! ছাড়ো বলছি!
আকাশ জোড়াজুড়ি করে বৃষ্টির উপর শুয়ে পড়তে লাগলো। আর বৃষ্টি চিৎকার করেই যাচ্ছে আর তাকে থামানোর চেষ্টা করছে!
হাত ছাড়া পেয়ে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে জোরে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে দরজার কাছে এলো বৃষ্টি। আকাশ উঠে এসে দরজা খুলার আগেই তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিলো! বৃষ্টি কোনোমত উঠে বাথরুমে এসে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো। আর এদিকে রুমের দরজার সামনেই আকাশ দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়লো! মাথাটা দরজায় হেলান দিয়ে চোখ বুজে রইলো এবং ঘনঘন নিশ্বাস ছাড়তে লাগলো। বৃষ্টি বাথরুমের দরজা আটকিয়ে জোরে শব্দ করে কাদতে লাগলো! আকাশের কান পর্যন্ত যাচ্ছে কান্নার আওয়াজ! কেমন মানুষকে ভালোবেসেছে সে ভাবতে পারছে না! এতোটা জঘন্য কাজে এগিয়ে আসবে আকাশ সেটা কল্পনার বাইরে ছিলো! এটা কি করে করতে পারলো! কেন এমন করতে যাচ্ছিলো! বৃষ্টির বিয়ে ঠিক হয়েছে বলে! আগে কতো বাহানা খুজতো বৃষ্টি তার সাথে দেখা করার কথা বলার! তখন তো পাত্তা দেয়নি! এখন এতো ভালোবাসা দেখাচ্ছে কেন! এমন পাগলামিই বা কেন করছে! একটা মেয়ের কোনো সম্মান নেই তার কাছে! মেয়েদের দিকে তো তাকায়ও না তেমন, তাহলে আজ কিভাবে পারলো কারো ইজ্জত ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে! এই আকাশকে তো চেনেনি সে! তাকে তো ভালোবাসেনি! মানুষ এতোটা বদলায় কিভাবে!