উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ৫৮
(নূর নাফিসা)
.
.
৫৪.
পরক্ষণেই পাশে থাকা রাজকন্যার ঘুম ভেঙে গেলো। মেঘ বললো,
– এবার হয়েছে মহাজ্বালা! মেয়েকেই সামলাবো নাকি মেয়ের মা কে! আল্লাহ, শক্তি দাও যাতে দু’হাতে দুজনকে সামলে নিতে পারি!
আড়চোখে নাফিসার দিকে তাকিয়ে দেখলো নাফিসা নিজের চোখের পানি মুছে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। এবং হাত বাড়িয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে বললো,
– মেঘ, আমাকে ঢাকা নিয়ে যেতে পারবে?
– ঢাকা! তাও আবার এই অবস্থায়!
– হ্যাঁ।
– মেঘা, তুমি কি আমার জান বের করে পরেই শান্তি হবে! আমি দিনরাত এক করে ফেলছি তোমাদের সুস্থতার জন্য আর তুমি!
– মেঘ প্লিজ, একবার নিয়ে যাও।
– ঢাকা কি প্রয়োজন?
– আব্বুর সাথে দেখা করবো একবার। ক্ষমা চেয়ে আসবো। প্লিজ একবার নিয়ে যাও!
মেঘের চোখ জ্বলজ্বল করছে। সে মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে তুলে নাফিসার কপালে চুমু একে দিয়ে বললো,
– সত্যি বলছো?
– হুম।
– তাহলে আব্বুকে এখানে এনে দেই?
– না, একবার এসেছে এখন আবার আসবে! তার চেয়ে বরং আমরাই যাই। ঢাকা ও বাড়িতে ঘুরে আসবো।
– তা না হয় পরে যাবো। আজ না হয় আব্বুকে এনে দেই।
কথাটা বলে মেঘ বেরিয়ে গেলো রুম থেকে নাফিসা পেছন থেকে ডাকলো কিন্তু শুনলো না! এখন আবার সে কোথায় যাচ্ছে!
একটু পরই মেঘ রুমে এলো সাথে সৈকত মির্জাকে নিয়ে। নাফিসা বাচ্চার পাশে বসে ছিলো। তাদের দেখে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো। তাহলে তারা এখনো সিলেট আছে! জন্মদাতা পিতাকে আজ অন্যচোখে দেখছে নাফিসা। চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে তার! ঘটে যাওয়া মুহুর্তগুলো সব তার চোখে ভাসছে। সৈকত মির্জা শত আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে নাফিসার দিকে। সেই দৃষ্টির ডাকে সাড়া দিয়ে নাফিসা মুখ দিয়ে একটা একটা শব্দ উচ্চারণ করতে পেরেছে “আব্বু”। আরও কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু গলায় আটকে যাচ্ছে তার। একবার মনে হচ্ছে স্বাভাবিক হওয়া প্রয়োজন আরেকবার অতীত এসে বাধা দিচ্ছে! দুইয়ে মিলে খুবই অস্বস্তি বোধ করছে নাফিসা! সৈকত মির্জা কাছে এসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই বাবাকে ঝাপটে ধরে কান্না করতে লাগলো নাফিসা! ভেতরটা বেশ নাড়া দিয়েছে। অতীতকে পেছনে ফেলে সে স্বাভাবিকতাকেই বেছে নিয়েছে।
– আব্বু মাফ করে দাও, আমি এতো কিছু বুঝিনি! জেদ একটাই ছিলো, আম্মি ধোকার সম্মুখীন হয়েছে! সহ্য হয়নি আম্মির কষ্ট! জীবনের প্রত্যেকটা দিন আনেক মিস করেছি তোমাকে। এতো বছর পর দেখা হয়েও অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে, সরি! আমি চাইনি এমন আচরণ করতে, কিভাবে যেন হয়ে গেছে! ভুলতে পারিনি ফেলে আসা দিনগুলো!
– ভুল তো আমারই ছিলো আব্বু। কাদছো কেন তুমি! চুপ করো। কাদলে একদম পঁচা দেখায়!
সৈকত মির্জার কথায় নাফিসা শৈশবে ফিরে গেছে। পরম সুখ অনুভব হচ্ছে আজ। কান্নার মাঝেও মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। নাফিসা বললো,
– তোমার এই শান্তনায় কাজ হবে না! আমি ছোট নেই এখন! আমারই মেয়ে আছে।
– হ্যাঁ, সেটাই তো ভাবছি! চকলেট আমার মেয়েদের আর দিতে পারবো না। এখন থেকে নাতনীকে দিতে হবে!
মারিশা ও রোকসানা কখন এসেছে সেটা মেঘ লক্ষ্য করলেও তারা বাবা-মেয়ে লক্ষ্য করেনি। সবার মুখেই লেগে আছে প্রশান্তির হাসি। সৈকত মির্জা এক হাত নাফিসার মাথায় রেখে অন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন মারিশার দিকে। চোখের পানি মুছে মারিশা এগিয়ে এসে বাবার বুকের অন্যপাশে মাথা রাখলো। দুই মেয়েকে কাছে পেয়ে আজ পরম সুখ অনুভব করছেন মির্জা সাহেব। মির্জা নূর মারিশা ও মির্জা নূর নাফিসা, দুই রত্নই আজ তার কাছে আছে। দুই মেয়ের মাথায়ই চুমু দিলেন আর মহান আল্লাহর সুক্রিয়া জানালেন মনে মনে। তা দেখে রোকসানা মির্জা আঁচলে চোখ মুছে প্রশান্তির নিশ্বাস ছাড়লো। মারিশা বাবার বুকে মাথা রেখেই মৃদু হেসে নাফিসার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
– আপু ডাকবে আমাকে?
নাফিসা মৃদু হেসে বললো,
– আপ্পি ডাকবো।
– আর আবদার রাখবে সবসময় আপ্পির কাছে।
প্রতুত্তরে নাফিসা মুচকি হাসলো। মেঘ তার মেয়ের কাছে এসে কোলে নিতে বললো,
– ওরা তো খুশগল্প করছে, তাহলে আমরা বসে থাকবো কেন আব্বু! চলো আমরাও একটু খুশগল্প করি!
মেঘের হিংসেমাখা কথা শুনে মারিশা ও নাফিসা দুজনেই বাবাকে ছেড়ে দাড়ালো। নাফিসা চোখ মুছতে মুছতে মেঘকে ইশারা করতেই মেঘ সৈকত মির্জার কাছে এসে এগিয়ে দিলো। সৈকত মির্জা কোলে নিলেন পিচ্চিটাকে।
– মাশাল্লাহ। নানু ভাইয়ের নাম কি রেখেছো নাফিসা?
বাবুর নাম তো রাখাই হয়নি! নাফিসা মেঘের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে মেঘ বললো,
– মুশফিকা চৌধুরী নিশি।
মির্জা সাহেব বললো,
– অনেক সুন্দর নাম। মির্জা নূর মারিশা ও মির্জা নূর নাফিসার মতো তোমার সন্তানদের নামও মুশফিকা চৌধুরী নিশির সাথে মিলিয়ে রেখো, মেঘ।
– ইনশাআল্লাহ।
নাফিসা তার আম্মির দিকে তাকাতেই তিনি হাসির রেখা আরও প্রশস্ত করলেন এবং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে।
পরক্ষণেই রোকসানার কাছে শুনে মোহিনী রুমে হাজির।
– দেখি, দেখি, মির্জা সাহেব নাতনীর মুখ দেখে কি দিয়েছে!
– নানু ভাই, বলে দাও তোমার দাদুকে। প্রাণ ভরে দোয়া দিয়েছি যা দেখা যায় না।
মোহিনী হেসে বাবুর নাকে স্পর্শ করে বললো,
– কি বুড়ি! নানু ভাইয়ের কোলে উঠে টগবগিয়ে তাকিয়ে আছো কেন শুনি! হুম? রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি কিন্তু!
সবাই হাসলো মোহিনীর কথা শুনে।
মোহিনী মেঘকে বললো,
– মেঘ, টুনটুনির নাম কি ঠিক করেছিস? মৌলভী সাহেব কিন্তু সন্ধ্যায় আসবে, তোর বাবা বললো।
– জ্বি মা। মুশফিকা চৌধুরী নিশি।
– বাহ! বুঝতে হবে তো, আমার ছেলের রুচি!
মারিশা বাবুকে কোলে নিয়ে বের হলো সাথে বাকিরাও। শুধু মেঘ আর নাফিসা রুমে। মেঘ ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে শার্টের হাতা ঠিক করে চুল ঠিক করছে। নাফিসা ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে মুখ লুকিয়ে বললো,
– এতো কিছু কিভাবে পারো জনাব! আর কত সুখের সন্ধান দিবে আমাকে! বিনিময়ে তো কিছুই পেলে না!
মেঘ তাকে ছাড়িয়ে ঘুরে দাড়ালো। নাফিসার মুখখানা ধরে বললো,
– বিনিময়ে আমি কি পেয়েছি সেটা আমিই জানি, মেঘা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপহার দিয়েছো আমার কোলে কন্যা সন্তান তুলে দিয়ে! সারাজীবন উৎসর্গ করে দিলেও ঋণ পরিশোধ হবে না।
এমন সময় বাইরে থেকে মারিশার আওয়াজ ভেসে এলো,
– নাফিসা, নিশি কান্না করছে। ক্ষুধা লেগেছে মনে হয়।
মেঘ এগিয়ে গিয়ে বাবুকে কোলে নিলো। মারিশা চলে গেলো। মেঘ নাফিসার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললো,
– মেঘা, বাবা হওয়ায় যে কি আনন্দ আছে তা তুমি বুঝবে না। আজ মনে হচ্ছে পৃথিবীর সর্ব সুখ আমার কাছে আছে।
মেঘ বাবুর কপালে চুমু দিলো। নাফিসা লক্ষ্য করলো মেঘের চোখে পানি! প্রথমবার মেঘের চোখে পানি দেখেছে বাবুর আগমনের খবর শুনে। আজ দ্বিতীয়বারও চোখে পানি দেখলো বাবুর জন্যই! কতটা খুশি হলে চোখে পানি আসতে পারে, ভাবা দায়!
মেঘ নিশিকে নাফিসার কাছে দিয়ে চোখ মুছে নিলো। নাফিসা বললো,
– একটু কাছে আসো।
– কেন?
– আসো না!
মেঘ নিচু হতেই নাফিসা তার কপালে আলতো চুমু দিলো। মেঘ মুচকি হেসে নাফিসার ঠোঁটে ঠোঁট ছুয়ে বললো,
– হাটাহাটি কম করো। চুপচাপ বসে থাকো। বেশি নড়াচড়া করলে সুস্থ হওয়ার বদলে আরও বেশি প্রব্লেম হবে।
নাফিসা খাটে চলে গেলো। মেঘ দরজা লাগিয়ে তার পাশে এসে হাতে মাথা ভর করে শুয়ে পড়লো। নাফিসার পেটে হাত রেখে বললো,
– মেঘা, সত্যি করে বলোতো বাকি বাবুগুলোকে কোথায় লুকিয়ে রেখে দিয়েছো?
এমন প্রশ্নে নাফিসা চমকে উঠে বললো,
– মানে! কিসব আবোলতাবোল বলছো তুমি!
– এতো বড় পেট থেকে এইটুকু একটা বাচ্চা বের হয়েছে! আমি তো ভেবেছি পাচ ছয়টা ছিলো!
– ছি! কি অসভ্য কথাবার্তা! এতোগুলো বাচ্চা তো গরু ছাগলেরও হয় না!
মেঘ হাহা করে হেসে উঠে বললো,
– আগামী বছর কি বাকি চার-পাঁচজনকে নিয়ে আসবে?
– মেঘ! চুপ থাকো! না হয় সুপার গ্লোব লাগাবো তোমার মুখে!
– তোমার ওষ্ঠ জোড়াই যথেষ্ট! জানো, ভেবেছিলাম এ বছর বোধহয় খরগোশগুলোও বাচ্চা দিবে। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস দেখো, উভয়েই পুরুষ খরগোশ!
– ছি! তোমার কি আর কোনো কাজ নেই! কার বাচ্চা হবে না হবে সেসব নিয়ে ঘুরো!
– ওহ! বলতে ভুলেই গিয়েছি, বৃষ্টির কাছে শুনলাম মারিশার নাকি বেবি হবে!
– তুমি আব্বুকে কোথা থেকে নিয়ে এলে?
– যেতে দেইনি তো তাদের। বৃষ্টির ফ্ল্যাটে থেকেছে তারা।
– মারিশা আপ্পির সাথে হসপিটাল দেখেছিলাম উনিই কি তার হাসব্যান্ড?
– হুম, নিহন।
– আপ্পির তুলনায় বয়স মনে হয় অল্প!
– আমার ক্লাস মেট নিহন। মারিশাকে খুব পছন্দ করতো। বাসা পাশাপাশিই। প্রপোজ করেছে কতবার কিন্তু মারিশা এক্সেপ্ট করেনি। মারিশার বিয়ের ঘটনা শুনবে?
– হুম!
– তোমার কথা জানার দুদিন পর সে নিহনকে কল করে দেখা করতে বলে। নিহন তার কথামতো দেখা করতে আসে। পরক্ষণেই মারিশা প্রত্যক্ষভাবে বিয়ের প্রস্তাব করে।
– নিহন, ভালোবাসো আমাকে?
– তা তো অনেক আগেই বলেছি। কিন্তু তুমি তো মেঘ বলতে পাগল।
– এই মুহুর্তে ভালোবাসো আমাকে?
নিহন একটু হতবাক হয়ে বলেছিলো,
– হ্যাঁ। এই মুহুর্তেও ভালোবাসি।
– তাহলে চলো বিয়ে করবো আজ কাজী অফিসে।
– হোয়াট!
– কি? ভালোবাসতে পারবে আর বিয়ে করতে পারবে না?
– মারিশা, তোমাকে নিয়ে জীবন কাটানোর জন্যই ভালোবাসি। কিন্তু আজ বিয়ে! তাও আবার কাজী অফিসে!
– বাসায় নিয়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছো? দুজন না হয় পথে ঘুরেই জীবন পাড় করে দেবো!
– মারিশা, তুমি ঠিক আছো! আংকেল এসব জানলে কি ভাববে!
– কোনো কথা শুনতে চাচ্ছি না আমি! আজ এই মুহুর্তে বিয়ে করবে কিনা বলো। না হলে আত্মহত্যা করবো আমি!
– মারিশা! কি ধরনের কথা বলছো এসব! কি হয়েছে তোমার!
– ভয় পেয়ো না। আমি ধর্ষিত টর্ষিত হইনি। তোমাকে ফাসাতেও চাচ্ছি না। মেঘ বিয়ে করেছে সেটা তো জানো। এখন আমিও বিয়ে করবো। তুমি রাজি আছো কিনা বলো! তা না হলে চিরতরে হারাবে আমাকে।
নিহন চিন্তিত হয়ে বসে ছিলো। মারিশা কি বলছে আর তারই বা কি করা উচিত কিছুই মাথায় ধরছিলো না। আর এদিকে মারিশার তাড়া,
– কি হলো? এখানে বসে বসে ধ্যানমগ্ন হতে বলেছি নাকি একটা প্রস্তাব করেছি। পছন্দ হলে এক্সেপ্ট করবে নয়তো রিজেক্ট করবে।
– চলো।
দুজন চলে যায় কাজী অফিস। সেখানে গিয়ে আমাকে কল করে জরুরী তলব করে। কাজী অফিসের ঠিকানা শুনে আমি কিছুটা ভয় পাই! মনে হচ্ছিলো মারিশা কোনো হট্টগোল বাধানোর চেষ্টা করছে তাই সাথে আমার ফ্রেন্ড ইয়াছিরকে নিয়ে যাই। গিয়ে শুনি নিহনের সাথে সে বিয়ে করবে। সাক্ষ্যস্বরূপ আমাকে ডেকেছিলো। শেষ পর্যন্ত ইয়াছিরকে বানিয়ে দেয় উকিল বাপ! হয়ে যায় বিয়ে। নিয়নকে সাথে নিয়ে বাসায় যায় এবং আংকেলকে জানায় সে নিজেই। আংকেল কষ্ট তো পেয়েছেনই কিন্তু প্রকাশ করেননি। মেয়ের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে দোয়া করেছেন। নিহন বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। বোন আছে কয়েকজন। ছেলে ফোর্স করে বাবামাকে, যেন মারিশাকে মেনে নেয়। ছেলেকে তো আর ত্যাগ করে পারবে না, তারাও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে এমন বিয়ে।
– নিহন ভাইয়াও কি সিলেট আছে নাকি চলে গেছে?
– সবাই সিলেট আছে।
– মুশফিকার আব্বু?
– হু?
– আমি যদি একাধিক সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম থাকি তবে কি তুমি আরেকটা বিয়ে করবে?
– কি আজেবাজে বলছো এসব। নিশির ক্ষেত্রে কিন্তু তোমার এমন কোনো প্রব্লেম হয়নি। নরমাল আছে সবটা।
– আমি “যদি” বলেছি। প্রব্লেম হয়েছে কি হয়নি সেটা জিজ্ঞেস করিনি। বলো? তুমিও কি আরেকটা বিয়ে করবে?
মেঘ নাফিসার হাত তার হাতের মাঝে নিয়ে বললো,
– মেঘা, তাকিয়ে দেখো। এক হাতেরই পাঁচটা আঙুল অথচ একে অপরের থেকে আলাদা। সবাইকে একরকম ভাবলে কিভাবে হবে, বলো?
– আমার আর আম্মির ভাগ্য একই রকম। তাইতো ভয় হয় আমার।
– এসব দুশ্চিন্তা কেন করো বলো তো! তোমার আম্মির সাথে ঘটেছে বলে তোমার সাথে ঘটবে এমন কোনো কথা নেই। সবাই একইরকম ভাগ্য নিয়ে জন্মায় না মেঘা। আম্মি তো পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করেছে। তুমি কি পালিয়ে বিয়ে করেছো? আর আমার এবং আমার পরিবার সম্পর্কে কি তোমার জানা নেই সবটা?
– জানি সবটা, খুব করে মানি-ও৷ কিন্তু আবার ভয়ও পাই। কোনো অবস্থাতেই আমাকে ছেড়ো না মেঘ। আমি মরে গেলে বিয়ে করে নিও। এতে আমার আপত্তি নেই।
– মেঘা, ভালো লাগছে না এসব শুনতে!
নাফিসা চুপ করে আছে। দুচোখের ধারে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। মেঘ মাথায় চুমু দিয়ে বললো,
– এসব দুশ্চিন্তা কখনো মাথায় আনবে না। এই মেঘ শুধুই মেঘার, হুম?
নাফিসা ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটিয়ে মেঘের হাতটা মুঠোয় ধরে এনে হাতে চুম্বন করলো।
.
রায়হান চৌধুরী বাদে যারা ঢাকা থেকে এসেছিলো দুদিন পর সবাই চলে যাচ্ছে। মির্জা সাহেব রোকসানাকে বললো,
– রোকসানা, তুমি তোমার বাড়িতে উঠবে না কখনো?
অতি সাদরে থাকা সত্ত্বেও নিজের বিবেকেই বাধা পায় মেয়ের বাড়িতে এভাবে থাকতে! রোকসানা নাফিসার দিকে তাকাতেই নাফিসা বললো,
– আম্মিকে কোথাও যেতে দেবো না আমি। আমার কাছেই থাকবে।
– দু মেয়ে তাদের শ্বশুর বাড়ি থাকবে। অত বড় বাড়িতে আমি একা থাকবো কিভাবে! মেঘ তুমি বরং তোমার থার্ড ফ্লোর বেচে দাও আমার কাছে। আমি ঢাকা ছেড়ে এখানেই চলে আসি। ফোর্থ ফ্লোর থেকে না হয় রিসোর্টের কাজ কর?
মারিশা বললো,
– ভালোই তো! সবাই সিলেট। আমি ঢাকা থাকবো একা!
– নিহন আছে তো মা। তুমি না হয় কিছুদিন পর পর বেড়াতে আসবে আমাদের কাছে। তোমার আম্মি তো ঢাকা যাবে না। তাহলে সে বাড়িতে আমি একা। তুমিও নেই!
নাফিসা মেঘকে খোচা দিয়ে ফিসফিস করে বললো,
– এই, বেচে দাও না থার্ড ফ্লোর।
মেঘ মুচকি হাসলো নাফিসার ভঙ্গি দেখে। মির্জা সাহেব আবার জিজ্ঞেস করতেই মেঘ বললো বাবার সাথে কথা বলে বেচে দিবে। এদিকে বৃষ্টির ইচ্ছে করছে না সিলেট ছেড়ে যেতে। আকাশ ও সে রেডি হচ্ছে তাদের রুমে। মুখ মলিন করে বললো,
– আকাশ, আর কয়েকটা দিন থাকলে কি হতো!
– পরীক্ষা যে আগামী সপ্তাহে মনে আছে?
এবার পরীক্ষাকে মনে মনে বকতে বকতে রেডি হয়ে গেলো। নাফিসার রুমে গিয়ে নিশিকে নিয়ে এলো তার রুমে। আকাশের সামনে এসে বললো,
– বাচ্চা তো সামলাতে পারো না, তাই বলে কি কোলে নিতেও জানো না!
আকাশ মুচকি হেসে নিশিকে কোলে নিয়ে বললো,
– নিতে তো জানি। কিন্তু সু্যোগ আছে না-কি! সারাদিন তো তুমিই কোলে নিয়ে ঘুরো, কাউকে সুযোগ দাও একটুও! তবুও তোমার তৃপ্তি মিটে না।
– ঠিকই বলেছো। তৃপ্তি মিটেই না! বুঝো সব, তবুও তো এনে দাও না একটা বাবু!
আকাশ চোখ পাকিয়ে বললো,
– এজন্যই তো আরও তারাতাড়ি যেতে চাচ্ছি এখান থেকে! ভয়ংকর মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছো আস্তে আস্তে আর আমাকে বিরক্ত করা শুরু করবে!
– এমন করো কেন! বাবু আনবে না কখনো? ভাবির বাবু এসেছে, মারিশা আপুও প্রেগন্যান্ট! আমি হলে সমস্যা কি!
– এ তো দেখছি এখনই ভয়ংকর মায়ায় জড়িয়েই গেছে! ডাক্তার হয়েছো তুমি? এজন্যই আংকেল বিয়ে দিতে চায়নি তোমাকে। আমার কাছে সংসার করার জন্য কিন্তু আনিনি! এনেছি, স্বপ্ন পূরণ করার জন্য। আগে ডাক্তার হও, পরে সব।
– আযব ব্যাপার! ডাক্তার হয়ে কি আমি নিজের অপারেশন নিজে করবো? ছাড়ো বাবুকে। একদম ধরবে না! হুহ্! ডাক্তার হও আগে, পরে সব!
বৃষ্টি নিশিকে কোলে নিয়ে আকাশকে ভেঙচি কেটে হনহন করে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। কিছুক্ষণ পরেই তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
নিশির জন্মের পর দিপা চাকমা আর দিয়া তাদের বাড়িতে এসে দেখে গেছে একবার। মাসখানেক পর বৃষ্টি, আকাশ, মারিশা ও নিহন আবার সিলেট এসেছে বেড়াতে। সৈকত মির্জা আগেই এসেছিলো। মেঘ বেচে দিয়েছে তাদের তৃতীয় তলা। তিনি সেটার কাজ কমপ্লিট করে এখানেই থাকবেন।
বিকেলে নাফিসা রুমেই হাটছিলো নিশিকে কোলে নিয়ে। নিশি এখন খিলখিল করে হাসতে শিখে গেছে। মেঘ ও নাফিসাকে দেখলে অটোমেটিক হাসি চলে আসে তার মুখে। মেঘ তুলে ধরেছে হাসিটা পুরো নাফিসার মতো।
মেঘ রুমে প্রবেশ করলো পিছু পিছু মারিশা ও বৃষ্টিও বকবক করতে করতে রুমে এলো। সকালে যখন নাফিসার সাথে তারা আড্ডা দিয়েছিলো তখন তাদের সেই স্বপ্নের বাড়িটা দেখেছিলো এখান থেকে। সেখানে যাওয়ার জন্যই মেঘের পিছু পিছু ঘুরছে কিন্তু মেঘ পাত্তা দিচ্ছে না তাদের কথায়! বৃষ্টি নাফিসাকে বললো,
– ভাবি, বলো না ভাইয়াকে। একবার নিয়ে যেতে।
– নিয়ে যাও।
মেঘ জবাব দিলো,
– না।
নাফিসা তাদের বললো,
– তোমরাই তো যেতে পারো। দূরে না তো।
– গিয়েছিলাম তো। লাভ হয়নি কোনো! সিড়ির মাঝে কাটা দিয়ে রেখেছে ভাইয়া।
– এই, একবার যেতে চাইছে। নিয়ে যাচ্ছো না কেন?
– মেঘা, আমার ইচ্ছে সেই ঘরে প্রথম যাবে তুমি। তা পূরণ হয়েছে, এখন ইচ্ছে সেই ঘরে দ্বিতীয় ব্যক্তি যাবে আমাদের রাজকন্যা। তাই নিয়ে যাচ্ছি না। আগে নিশি যাবে তারপর তারা।
মেঘের শখের উপর নাফিসা কোনো কথা বলে না। অসহায় দৃষ্টিতে বৃষ্টি ও মারিশার দিকে তাকালো। মেঘের ইচ্ছের কথা শুনে তারাও আজ জোর করলো না। বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। নাফিসা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। বৃষ্টির ফ্ল্যাটের দিকে চোখ পড়তেই দেখলো বারান্দায় রোকসানার হাতের উপর হাত রেখে দাড়িয়ে আছে মির্জা সাহেব। দুজনেই গল্প করছে। মেঘ বারান্দায় এসে নাফিসার দৃষ্টিকে অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখলো সে তার বাবামায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– বাহ! কি রোমান্টিক মুহুর্ত না?
– ছাড়ো, রোমান্স ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না তোমার!
– বাব্বাহ! কি তেজ! চোখ কি আমার পড়েছে নাকি তোমার পড়েছে আগে!
নাফিসা আর কিছু বললো না। এদিকে মায়ের কোলে থেকে বাবাকে দেখতে পেয়ে নিশির মুখে ভুবন জয়ী হাসি! মেঘও মুখে হাসি ফুটিয়ে কোলে নিয়ে মেয়ের সাথে কথা বলতে বলতে রুমে চলে গেলো। পিছু পিছু নাফিসাও এসে বললো,
– ওহে জনাব, চলো তাহলে স্বপ্নের বাড়িতে এখনই যাই রাজকন্যাকে সাথে নিয়ে। সাথে আপ্পিদের ইচ্ছেটাও পূরন হোক।
– যাবে?
– হুম।
– ওকে।
অত:পর তারা বেরিয়ে এলো। সাথে আকাশ ও নিহনও। বাড়ির কাছে এসে মেঘ নিশিকে নাফিসার কোলে দিয়ে কাটা সরিয়ে পরিষ্কার করলো। তারপর নাফিসাকে প্রথম যেতে বললো কিন্তু সে যাচ্ছে না! মেঘ বললো,
– কি হলো, যাও।
– উহুম, নিশি তার আব্বুর কোলে উঠে যাবে।
মেঘ দুষ্টুমি হাসি দিয়ে বললো,
– ফ্রেন্ডস, এক মিনিটের জন্য তোমরা একটু চোখ বন্ধ করো তো।
তারা বুঝতে পেরে সবাই চোখ বন্ধ করে অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো। মেঘ নাফিসাকে বললো, “তুমি শুধু রাজকন্যাকে ধরে রাখো, মেঘা।” নাফিসা চোখ পাকালো কিন্তু কোনো লাভ হলো না। মেঘ সাথে সাথে নাফিসাকে কোলে তুলে নিলো আর নাফিসার কোলে নিশি! সিড়ির ধাপ সব অতিক্রম করে নামালো এবং বাকিদের বললো উপরে যেতে। সবাই ঘুরে ঘুরে দেখলো এবং মুগ্ধ হলো। বৃষ্টি আকাশকে বললো,
– ভাইয়া তো ভাবিকে গাছের উপর ঘর বানিয়ে দিলো, তুমি আমাকে কি দিবে?
আকাশ মৃদু হেসে বললো,
– কি চাও তুমি, বলো?
– বেশি কিছু না, মাঝে মাঝে জঙ্গলে রাত কাটানো, ঝর্ণার পানিতে গোসল আর পাহাড়ের গোড়ায় মাছ ধরলেই হবে।
– ওকে।
মারিশা নিহনকে বললো,
– এই, মেঘ তো নাফিসাকে গাছের উপর ঘর বানিয়ে দিলো। আকাশ ভাইয়া বৃষ্টিকে নিয়ে জঙ্গলে রাত কাটাবে, ঝর্ণার পানিতে গোসল করবে আর পাহাড়ের গোড়ায় মাছ ধরবে। তুমি আমাকে কি দিবে?
– আমিও তোমাকে এমন একটা ঘর বানিয়ে দিবো, পাহাড়ের গোড়ায় মাছ ধরবো, জঙ্গলে রাত কাটাতে পারবো না। ভয় লাগে আমার। কিন্তু ঝর্ণায় গোসল করবো। ওকে?
– এগুলো তো তাদের কপি করা হয়ে গেলো না? ভিন্ন কিছু চাই আমার! ইউনিক কিছু বলো!
– উম্মম, ইউনিক কিছু! তাহলে বাবাকে বলে তোমাকে নিয়ে চাদের দেশে ঘুরে আসবো। হুম?
– গাধা কোথাকার! এটাই তোর প্রেম! যা তুই, তোর চান্দের দেশে! আমি আর নেই তোর সাথে!
– আরে! আরে! কোথায় যাচ্ছো!
মারিশা হনহন করে ঘর থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো। নিহন পিছু পিছু রোয়াক পর্যন্ত এসে রেলিং ধরে চেচিয়ে বললো,
– মেঘবৃষ্টি রিসোর্টের অপজিটে যে একটা পাহাড় আছে সেখানে একটা তাবু টানাবো। তোমাকে নিয়ে আমাবস্যার রাত তাবুতে কাটাবো আর পূর্নিমার রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘাসের উপর শুয়ে দুজন জ্যোৎস্না উপভোগ করবো। মাঝে মাঝে ঝর্নার ধারে পাথরের উপর বসে গল্প করবো ও নিজের লেখা গান গেয়ে শুনাবো। চলবে?
মারিশা নিচের সিড়ি পর্যন্ত এসে থেমে গেলো নিহনের কথা শুনে। সেখান থেকেই বললো,
– সত্যি তো?
– মিথ্যা না।
মারিশা দ্রুত পায়ে আবার উপরে উঠতে লাগলে নিহন বললো,
– এই, আস্তে। দাড়াও আমি নেমে আসছি।
– চুপচাপ দাড়াও।
মারিশা নিহনের কাছে এসে বললো,
– এতেই চলবে, ফাকি দিলে ঠ্যাং ভেঙে দিবো!
– কোথায় একটু মধু মিশ্রিত কন্ঠে কথা বলবে, তা না করে উল্টো থ্রেড দিচ্ছো!
মারিশা মুচকি হেসে চট করেই নিহনের গালে চুমু দিয়ে বললো,
– যাও ভালোবাসা দিলাম।
– এটা কি করলে! পাবলিক প্লেসে এভাবে খুন করে কেউ! ইশশ! আশেপাশে কতো মানুষ দেখছে, আমারই তো লজ্জা লাগছে! আমাদের বাবুটাও লজ্জা পেয়েছে। তোমার লজ্জা লাগছে না গো বাবুর আম্মু?
মারিশা নিহনকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– না, লাগছে না লজ্জা। তারা দেখে কেন, তাদের লজ্জা নেই!
নিহনও পরম আবেশে জড়িয়ে রাখলো।
ফিসফিসিয়ে করছে দুজন খুশগল্প। বৃষ্টি তাদের দেখে আকাশের শরীরে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বললো,
– আকাশ, খুব সুখী দম্পতি দেখাচ্ছে না তাদের?
আকাশ এক হাতে বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– আমরা কি দম্পতি হিসেবে সুখী না?
– হুম, অনেক! এবার বলো মিস্টার আকাশ, কোথায় গেলো তোমার ইউনিক লাইফ?
– কেউ এসে যদি হুট করেই ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে নেয়, কেউ যদি আমার হাত টেনে নিয়ে ঝর্নার পানি স্পর্শ করায়, কেউ যদি আমার খোজে জংলীর কাছে চলে যায়, আবার আমার কোলে উঠে ঘুরাফেরা করে, একটা রাত আমার বুকে কাটানোর আবদার করে তাহলে কিভাবে সম্ভব ইউনিক লাইফ এনজয় করা!
বৃষ্টি হিহি করে হেসে বললো,
– অবশেষে হার মানলে তো ভালোবাসার কাছে!
– সবটাই তোমার জন্য।
তারাও মেতে উঠেছে খোশগল্পে। নাফিসা ঘরের ভেতরে থেকে দুই রোয়াকের সুখী দম্পতিদের দেখছে। মেঘ তার সামনে দাড়িয়ে বললো,
– ওইদিকে কি দেখো, হুম? দেখার হলে আমাকে দেখো। আমি সামনেই আছি।
নাফিসা হেসে দুষ্টুমি করে বললো,
– ঘরে অন্ধকার, বারান্দায় চলো তোমাকে দেখি।
– আজকে দেখতে আবার লাইটের প্রয়োজন পড়ে গেলো! ঠিক আছে, চলো তাহলে।
মেঘ নিশিকে কোলে নিয়ে অন্যপাশের রোয়াকে এলো। নাফিসা পাশে এসে মেঘের এক হাত ঝাপটে ধরে হাতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
– মেঘ।
– হুম?
– ভালোবাসি।
– মেঘা।
– হুম?
– ভালোবাসি তার চেয়েও বেশি।
দুজনেই খুশগল্প করছে আর তাদের মেয়ে মুশফিকা চৌধুরী নিশির সাথে খেলা করছে।
মেঘবৃষ্টি রিসোর্টের ছাদে দাড়িয়ে আছে রায়হান চৌধুরী, মোহিনী চৌধুরী, সৈকত মির্জা ও রোকসানা মির্জা। ছেলেমেয়েরা বের হওয়ার পরপরই তারা আড্ডা দেওয়ার জন্য ছাদে এসেছে। চারজনই ছাদের একপাশে দাড়িয়ে উপর থেকে এতোক্ষণ ধরে তাদের ছেলেমেয়েদের কান্ড দেখছিলেন। কথা শুনতে পায়নি কিন্তু দূর থেকে দেখেই বুঝতে পেরেছে তারা আজ সবাই সুখী। ছেলেমেয়েদের সুখ দেখে এখন পিতামাতার মনেও প্রবাহিত হচ্ছে সুখের মেলা। শত দুখের পাহাড় ভেঙে আজ সব পরিবার একসাথে আছে এবং পুরনো অতীত ভুলে সুখে আছে সবাই। আর এই সুখের মূলে আছে মেঘ। ভাঙ্গা পরিবার জোড়া লেগেছে তারই প্রচেষ্টায়। গড়ে উঠছে সুখ নামক বিশাল পর্বত। মহান আল্লাহর রহমতে সবই সম্ভব হয়েছে কেবল, পড়েছে বলে “পাহাড়ে মেঘের ছায়া”!
.
(সমাপ্ত)