#পূর্ণিমা🍂
#পর্ব_৯
#Sanchita(Writer)
পুকুরের ধারে পানি পা ডুবিয়ে বসে আছে পূর্ণি আর তিথি।কিছুক্ষণ আগেই দুজনে পার্ক থেকে পার্কের পিছনে থাকা পুকুরটায় এসেছে শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে।পূর্ণি ভেবে নিয়েছে সে এই অনাগত সন্তানটাকে বাচিঁয়ে রাখতে সে বাচঁবে মন খুলে শ্বাস নিবে, সব আনন্দই সে উপভোগ করবে।পূর্ণি মুচকি হেসে উঠলো।
তিথি শান্ত পরিবেশে গুনগুন করে শব্দ করতে লাগলো আর পা দোলাতে লাগলো।
তিথির পা দোলানিতে পুকুরে ঢেউয়ের সৃষ্টি হচ্ছে এই প্রতিটা ঢেউয়ের মতোই পূর্ণি আর তিথির মনে ঢেউ খেলছে।
“তিথি তুমি কি তোমার জীবনটাকে আবার রং এ সাজাতে পারবেনা!(শান্ত স্বরে)
তিথি মাথা নিচু করে হালকা হেসে পরিস্কার স্বরে বলে উঠলো।
” উহু আমি এভাবেই অন্তিকের ভাবনায় মত্ব থেকে নিজের বাকি জীবনটাকে কাটিয়ে দিবো!কারন আমি অন্তিকের জায়গাটা কাউকে দিতে পারবোনা।যদি কেউ আসেও তাহলে অন্তিকের মতো তাকে আমি আমার সবটা দিয়ে ভালোবাসতে পারবোনা।(হালকা স্বরে)
পূর্ণি ঘাঁড় ঘুড়িয়ে তিথির মুখশ্রীর দিকে তাকালো।এই মুখশ্রীতে অনেক বড় একটা জিনিস পেয়েও না পাওয়ার আক্ষেপ স্পস্ট ফুটে উঠেছে। পূর্ণি গভীর নিশ্বাস নিলো সবার জীবনেই একটা না একটা আক্ষেপ থেকেই থাকে হয়তো কেউ চাপিয়ে রাখে আর কেউ অশ্রুজলে প্রমাণ করে দেয়।
.
.
রায় চৌধুরি বাড়িতে এখন শোকের ছায়া।মিসেস কণা ও মি অভিনবের সাথে সাথে অর্ণবও মারা গেছে আজ দুদিন হয়ে গেলো।
পরপর তিনটা মৃত্যুতে নির্ঝর প্রায় পাগল হয়ে গেছে আর প্রতিদিন সেই আগন্তুক মেয়েটিও বারবার নির্ঝরকে মৃত্যুর হুমকি দিয়েছে সাথে সাথে বারবার আঘাত করেই যাচ্ছে।
নির্ঝর এখন বিছানায় পড়ে আছে এত আঘাত পেয়ে পেয়ে তার বিছানা থেকেও উঠাও কস্টকর হয়ে গেছে। নির্ঝর তার বিনাশকে নিজের চোখ কে নিজের চোখে দেখেছে আগন্তুক মেয়েটি তাকে দেখিয়ে দিয়েছে যে তার পাপ কর্ম শেষ হয়ে গেছে।এখন তার শাস্তি পাওনা বাকি।
একদিকে বাবা মা বড় ভাইয়ের মৃত্যু অন্যদিকে সেই অজানা মেয়েটির মৃত্যুঘাত।
অর্ণবের মৃত্যুতে সবাই শোকাহত হলেও হয়নি শুধু নিদিয়া,নিরব আর মিশু।
নিরব আর মিশু তাদের লীলাখেলার সবচেয়ে বড় কাটা উপড়ে গেছে দেখে খুব খুশি।তারা তাদের অবৈধ লীলাখেলা আরও গভীর করবে।
নিদিয়া নিজে ট্রাক চাপা দিয়ে অর্ণবকে পিষে ফেলেছে।নিদিয়া যেনো এদের মৃত্যুতে অনেল শান্তি পাচ্ছে নেক্সটে এই বাড়ির বড় কত্রী মিসেস মৌমিকেই সে মেরে ফেলবে তারপর মিশু আর নিরবকে।
নির্ঝরকে মারবে তবে অনেক মৃত্যুদায়ক ভয়ংকর যন্ত্রণা দিয়ে। নিদিয়ার ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি সে এই মৃত্যু খেলায় একদম মেতেঁ উঠেছে। তার খুশি হচ্ছে নিজের বোনের সর্বনাশকে নিজ হাতে মারতে।
“আচ্ছা জানু আমরা কি বিয়ে করবোনা দেখো আমাদের পথের কাটাঁ সরে গেছে তাহলে আর বাধাঁ কি?চলোনা আমরা বিয়ে করে ফেলি!(ঋিসফিস করে)
নিরব মিশুর কথা শুনছেনা সেতো মিশুর চুলে মুখ গুজতে ব্যাস্ত।
নিদিয়া দরজার আড়ালে দাড়িয়ে আছে একটা ছুড়িঁ নিয়ে ঠোঁটে তার বাকাঁ হাসি।আজলে যে নির্ঘাত কারো মৃত্যু হবে তা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে।
নিদিয়া হেঁটে হেঁটে ঘরের ভিতর প্রবেশ করলো আর দরজাটাও বন্ধ করে দিলো।
এদিলে দরজা বন্ধ করার আওয়াজেও নিরন আরমিশুর খেয়াল নেই তারাতো আছে তাদের পাপ রাজকর্মে ব্যাস্ত।
নিদিয়া আস্তে আস্তে গিয়ে নিরবের চুল টেনে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো আর বুকে পরপর তিনবার ছুড়িঁটা ডুকিয়ে বের করে ফেলল
নিরবের বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে রক্ত জ্বরজ্বর করে নের হতে লাগলো। এদিকে আচমকা নিদিুার এই কান্ডে ভয়ে মিশু চিৎকার দিয়ে উঠলো তবে রুমটা সাউন্ডপ্রুভ হওয়াতে কোন আওয়াজই বাহিরে গেলোনা।
নিদিয়া গর্জে উঠে ছুড়িঁটা দিয়ে মিশুর গলা কেটে দিলো।মুহুর্তেই দুজনে গলা কাটা মুরগীর মতো ছটফট করতে কেতে মারা গেলো। নিদিয়ার মুখে ভয়ংকর প্রশান্তির হাসি যেনো অনেক আনন্দ লাগছে সামনের দুজন মানুযকে মেরে অবশ্য এরা মানুষ না জানোয়ার এরা।
নিদিয়ার হাতে ছুড়িঁ, ছুড়িঁটার থেকে টপটপ করে রক্ত বেয়ে বেয়ে পড়ছে। সামনে মৃত দুজন মানুষের রক্তে ফ্লোর, বিছানার চাদর একদক রক্তলাল হয়ে গেছে।
নিদিয়া ছুড়িঁটার রক্তগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে আঙ্গুলি নিয়ে চোখের সামনে নিয়ে বলে উঠলো
“একদিন আমারি চোখের সামনে আমার ভালো থাকা,আমার আদর,আমার সম্মান-গর্বকে যন্ত্রণা দিয়ে মেরেছে না তোর ভাই দেখ আজ তা উসুল করে নিচ্ছি!তোদের তো কম যন্ত্রণা দিয়ে মারছি।তোর ভাইয়ের বেলায় যে আমি কতটা ভয়ংকর হবো তা কল্পনাতেও আনতে পারছিস না?অবশ্য তুই কল্পনা করবি কিভাবে তুই তো ফুরৎ হয়ে গেছিস ভালো থাকিস ভাবিবউয়ের সাথে ওপারে।শা*লা জা*নো*য়া*র কোথাকারের।(বাকাঁ হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে)
নিদিয়া আঙ্গুল থাকা রক্তটা নিজের কপালে লম্বা ভাবে দিয়ে ছুড়িঁটাকে সাথে করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
.
.
” হেই মিস তোমার জামার পিছনে লাল হয়ে গেছে এই শার্টটা দিয়ে ঢাকো দ্রুত,মানুষ দেখার আগে!(কাঠ কাঠ গলার স্বরে)
তিথি চমকে উঠলো কারো এমন স্বরের কথাটা শুনে।দ্রুত সে থমকে দাড়ালো আর পিছু ঘুড়তে চাইলো তবে ছেলেটি তিথিকে পিছু ঘুড়তে দিলোনা উল্টো তিথির দুবাহু ধরে নিকেে থেকে একটু দূরে তবে কাছে ধরে রাখলো যেনো তিথির পি*রি*য়*ডের রক্তের দাগ যাতে কেউ না দেখে। তিথি অস্বস্তি ভয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে।এভাবে এতলোকের মাঝে একটা অজানা ছেলের এভাবে স্পর্শ আর দ্বিতীয়ত এইরকম একটা কান্ড সব মিলিয়ে অস্বস্তি লাগছে তিথির সাথে সে ব্লাসিংও হচ্ছে জীবনে প্রথম বার এইরকম পরিস্থিতিতে পড়েছে সে।
তিথি ছেলেটার হাত থেকে শার্টটা নিয়ে কোমড়ে বেধে নিলো যাতে জামার পেছনের দাগটা না দেখা যায়।
তিথি ঢুগ গিলে পিছু তাকালো।দেখলো তার পিছনে কেউ ই নেই।চারদিকে তাকালো তিথি সেই কাঙ্খিত লোকটাকে দেখতে পেলোনা সে।
তিথি এতকিছু না ভেবে দ্রুত পা চালিয়ে হাটা ধরলো আপাতত বাড়িতে পৌঁছাতে পারলেই সে বাচেঁ।
🍂
“তোমাকে এত আপসেট লাগছে কেনো তিথি!কিছু হয়েছে!(চিন্তিত গলায়)
তিথি আপসেট আর মনমরা হয়ে বসে আছে।পূর্ণি কথাটা বলার পরও তিথির হুস নেই।
তিথি আছে নিজের ভাবনায় মত্ব।
পূর্ণি তিথিকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে উঠলো।
তোমার কি হয়েছে তিথি কোন কিছু নিয়ে কি আপসেট বা চিন্তিত আছো?
তিথি এবার হতচকিত হয়ে উঠলো।হতচকিত গলায় বলে উঠলো।
” না মানে আসলে, কিছুনা..ওই আজকে ক্যাফে থেকে ফেরার পথে আমার পি*রি*য়*ড হয়েছে তবে একটা ছেলে তার দেখে ফেলেছে পরে আমাকে একটা শার্ট কোমড়ে বাধঁতে দিয়েছে এরপর আমি যখন পিছু ফিরি তখন কাউকেই দেখতে পাইনা।আমি এইটা নিয়েই আপসেট আছি জীবনে প্রথমবার এইরকম একটা পরিস্থিতিতে পড়েছি!(হতচকিত গলায়)
পূর্ণি চুপ করে আছে তিথিকে কি বলবে বুঝতে পারছেনা সে।সেও এইরকম পরিস্থিতিতে পড়েছে তবে সেই মানুষটাকে সে স্বচোক্ষে দেখেছে। সেই মানুষটা তাকে প্রাণ খুলে ভালোবেসেছিলো অবশ্য পূর্ণি তার ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়নি। তার সাথে চোখ উঠিয়ে কখনো কথা বলেনি সবসময় তার সাথে দেখা হলে মাথা নত করে এড়িয়ে যেতো
একটা সময় মানুষটাও হুট করে উধাও হয়ে যায় এরপর থেকে তার সাথে আর দেখা হয়নি পূর্ণির। ভাবতেও পূর্ণির বুক চিড়েঁ গভীর নিশ্বাস বেড়িয়ে আসলো।
পেটে হাত দিয়ে বলে উঠলো।
“তুমি এত ভেবোনা চলো সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমরা ব্যালকনিতে বসে কথা বলবো আর আকাশ দেখবো।বলো এটা আমাদের নিত্যসিনের কাজে পরিণত হচ্ছে আসলেই সন্ধ্যাকাশ,জ্বল মলে তারা, গোল ইয়া বড় চাঁদ সাথে কিছু কথাবার্তা আর হালকা স্বরের কিছু পেয়েও না পাওয়ার ব্যার্থতা রাখে এমন কিছু গান। মনটাকে একদম ফুরফুরে করে দেয় তাইনা তিথি?
#চলবে,,
[গল্পটা নিয়ে এক লাইন বলে যান কেমন লাগছে।বোরিং লাগছে তাইনা সামনে টুইস্ট আসতে চলেছে,অপেক্ষা করুন।আর সরি দিতে ইদানিং দেরি হয় স্কুল-প্রাইভেট নিয়ে ব্যাস্ত সাথে বাড়ির কাজও আছে তাই দিতে লেট হলো।আর গল্প সম্পর্কে আপনার কি মতামত অবশ্যই বলে যাইয়েন।ভুল-ক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]