#প্রিয়ংবদা
#নবম_পর্ব
#লেখনীতেঃমৌশ্রী_রায়
সেদিন পিকনিক শেষ হলো একটু বেলা করে দুপুরের লালচে রবি তখন একটু একটু করে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়তে আরম্ভ করেছে। নীলচে আকাশের বুকে ময়ুখমালীর প্রখর তেজে তাকানোই দায়,তবুও সারে সারে বিহঙ্গের আনাগোনা দৃষ্টির আড়াল হচ্ছে না। পাখপাখালির কলতানে মুখর পৃথিবী যখন তার রুপের ছটা জগৎময় ছড়াতে ব্যস্ত, তখনই টাপুর দেবী মেয়েকে আদেশের স্বরে বললেন,
“অনেক মজা হয়েছে আজ। এবার যাও একটু পড়তে বসো!উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো করে না পড়লে, অ্যাডমিশনের সময় গিয়ে অনেক চাপ পড়বে হৃদ। যাও পড়তে বসো। তুমিতো দুর্বল ইংরেজীতে। বাবা আজ বাড়িতে আছে। যাও,বাবার কাছে সমস্যা গুলো একটু দেখিয়ে নাও।”
হৃদিতা বাধ্যমেয়েটির মতো মাথা নাড়লো। টাপুর দেবী আর কথা বাড়ালেন না। রান্নাঘরে অনেক কাজ। সেসব, শেষ করতে হবে যে!
হৃদিতা মায়ের কথা মতো বাবার কাছে গেল।হাতে ইংরেজি ব্যকরণের মোটা একটা বই আর খাতা-কলম।
ঋতমবাবু তখনও বরাবরের মতো বইয়ের পাতায় নিমগ্ন।দরজায় দাঁড়িয়ে ঠিক বইয়ের নামটা পড়তে পারলো না হৃদিতা। বাবাকে ডাকলো,
“বাবা!”
ঋতমবাবু ভারী বইটার পৃষ্ঠা থেকে চোখ তুলে মেয়ের দিকে তাকালেন। হাসি ফুটলো তার মুখে। বইটা বন্ধ করে রেখে মেয়েকে অত্যন্ত আদুরে কন্ঠে ডাকলেন,
“হৃদ!আয় মা। ”
হৃদিতা গুটিগুটি পায়ে বাবার দিকে এগিয়ে গেল। বাবার সামনে বই-খাতা-কলম গুলো রেখে আলতো হেসে বললো,
“মা, পড়তে পাঠালো। তোমার বই পড়াতে কি, বিরক্ত করলাম?”
ঋতমবাবু মেয়ের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রাখলেন, হালকা হেসে বললেন,
“ধুররর!বোকা মেয়ে। বাবারা কি মেয়ের জন্য কখনো বিরক্ত হয়?একদমই না। তুই মোটেও আমাকে বিরক্ত করিসনি। কি পড়বি সেটা বল তো। ”
হৃদিতা এবারে ম্লান মুখে চায়। প্রকান্ড এক মনখারাপ এসে গ্রাস করে হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী। ঋতমবাবু লক্ষ্য করেন। হালকা হেসে বলেন,
“আমরা সবকিছুই শিখতে পারি মা। শুধু শেখার আগে মনোবল রাখতে হবে যে আমরা পারব, আগেই যদি অপারগতার ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিই,তবে এ বিশ্বসংসারের শ্রেষ্ঠ গুরুও তোমায় শেখাতে পারবে না।”
হৃদিতা বাবার দিকে চোখ তুলে চাইলো। বুঝতে পেরেছে এমন ভাবেই মাথা নাড়লো। তারপর মিনমিনিয়ে বাবাকে বললো,
“ভয়েস শিখি বাবা!অ্যাক্টিভ টু প্যাসিভ!”
ঋতমবাবু সহাস্যে সম্মতি জানালেন। হৃদিতা বই মেলল। ঋতমবাবু পড়াতে আরম্ভ করলেন,
” Voice is the way of expressing verbs which describes whether the subject does the work or it has been done by the subject.
মানে হলো, ভয়েস বা বাচ্য হচ্ছে ক্রিয়ার প্রকাশভঙ্গি যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে কোন বাক্যের কর্তা কাজটি করছে/করেছে/করবে নাকি কাজটি কর্তা দ্বারা করা হচ্ছে/হয়েছে/হবে।”
ঋতমবাবু চশমার ওপর দিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে শুধালেন,
“বুঝতে পারলি হৃদ?”
হৃদিতা মৃদু হেসে সম্মতিসূচক মাথা নাড়াতেই তিনি আবার বলতে শুরু করলেন,
“আচ্ছা, তো এবারে আসা যাক ভয়েস চেঞ্জের বিষয়ে।
ভয়েস প্রধানত দু প্রকার,
১.অ্যাক্টিভ ভয়েস
২.প্যাসিভ ভয়েস
যে বাক্যে কর্তা নিজে সক্রিয়ভাবে কাজটি করে সেই বাক্যে ক্রিয়ার অ্যাক্টিভ ভয়েস হয়।যেমনঃI eat Rice!
এখানে ভাত কিন্তু আমি খাচ্ছি, মানে কাজটা নিজের করা। তাই এটা অ্যাক্টিভ ভয়েস।
তারপরে আসি প্যাসিভ ভয়েসে।
যে বাক্যে কর্তা নিজে সক্রিয়ভাবে কাজটি করে না বরং কাজটি তার দ্বারা করা হয় সেই বাক্যে ক্রিয়ার প্যাসিভ ভয়েস হয়।যেমনঃRice is eaten by me!এখানে ভাতকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে, এবং তা আমার দ্বারা খাদ্য রুপে গৃহীত হচ্ছে। মানে কর্ম প্রাধান্য পাচ্ছে।
এ পর্যন্ত বুঝলি? ”
হৃদিতা আবারো মাথা নাড়ায়। ঋতমবাবু আবারো বলেন,
“ভয়েস চেঞ্জ করার নিয়ম খুবই সোজা। একটু, মনে করে রাখতে পারলেই, যেকোন বাক্য বুঝে চেঞ্জ করে ফেলতে পারবি।
১.অ্যাক্টিভ ভয়েসের কর্তা, প্যাসিভ ভয়েসের কর্মে রূপান্তরিত হয়।
২.অ্যাক্টিভ ভয়েসের কর্ম, প্যাসিভ ভয়েসের সাবজেক্টে রূপান্তরিত হয়।
৩.মূল ক্রিয়ার পাস্ট পার্টিসিপল ব্যবহৃত হয় এবং সাহায্যকারী ক্রিয়া নির্বাচন করা হয় কর্তা এবং ক্রিয়ার কাল অনুযায়ী। যেমন ধরো, থার্ড পার্সন, সিঙ্গুলার নাম্বারের ক্ষেত্রে ক্রিয়ার সাথে এস বার ইএস যোগ হয়। আবার প্রেজেন্ট ইন্ডিফিনিট থাকলে সাহায্যকারী ভার্ব হিসেবে ব্যবহৃত হয় অ্যাম,ইজ,আর,এবং তারপরে ভার্বের পাস্ট পার্টিসিপল ফর্ম। এরকম পাস্ট ইনডিফিনিট থাকলে বসে ওয়াজ,ওয়্যার,আর ফিউচার ইনডিফিনিট থাকলে বসে শ্যাল বি, উইল বি বসবে।
এখন যদি তোকে উদাহরণ দিই তোকে।
১.I get a car.
এটা প্রেজেন্ট ইনডিফিনিট। তো, প্যাসিভ করলে কি হবে?”
হৃদিতা চটপট উত্তর দিল,
“A car is gotten by me!”
ঋতমবাবু প্রসন্ন নয়নে মেয়ের দিকে চাইলেন। তারপরে আবার বললেন,
“এবারে বলতো, You did the work! এটার প্যাসিভ ভয়েস কি হবে?”
হৃদিতা এবারেও নিঃসঙ্কোচ উত্তর দিল, দেরি করলো না মোটেও,
” The work was done by you!”
ঋতমবাবুর ঠোঁটের কোণের চওড়া হাসি আরো বৃদ্ধি পেল।মেয়েকে আবার প্রশ্ন করলো,
“আচ্ছা এবার, He shall praise me! এটা?”
হৃদিতা জবাব দিল,
” I shall be praised by him!”
ঋতমবাবু চমৎকার হাসলেন। মেয়েকে বাহবা দিয়ে উৎসাহিত করতে বললেন,
“প্রাউড অফ ইউ মা!”
হৃদিতা হাসে। ঋতমবাবু বইয়ের কিছু হোকওয়ার্ক দাগিয়ে দিয়ে হৃদিতাকে সেগুলো চেঞ্জ করতে বলে আবার ভইয়েতে মুখ গোঁজে।
এতক্ষণেহৃদিতার নজরে আসে, বাবার পাঠরত বইটির নাম,
“উত্তরাধিকার
সমরেশ মজুমদার!”
.
স্টাডি রুম থেকে বেরোনোর পরে হৃদিতা ড্রয়িংয়েই বসে পড়ে পড়তে।
প্রায় আধঘন্টাবাদেই কলিংবেলের আওয়াজে চোখ তুলে তাকায় হৃদিতা। ভানুদেব তখন অস্তাচলে যাবার তোড়জোড় করছেন। দিনের প্রখর আলো ধীরে ধীরে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। বৃত্তবৎসূর্যের আধখানি ইতোমধ্যেই ডুব দিয়েছে দিগন্তের শেষ প্রান্তে।
হৃদিতা উঠে দাঁড়িয়ে দরজার কাছে যায়। দরজা খুলতেই দেখতে পায় সেই জ্বালাময়ী মুখ। খনিকের তরেই চোখাচোখি হয় দুজনের। হৃদিতা চোখ নামিয়ে নেয়,গতরাত্রীর তিক্ত অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করার কোন শখ নেই তার। তবে আদৃতের মাঝে কোন ভাবান্তর দেখা যায় না। সে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয় তার সম্ম্খে উপস্থিত কৃষ্ণবতীটির দিকে,একদম নিষ্পলক ভাবে। যেন পলক পড়লেই সেই কৃষ্ণরমণী হারিয়ে যাবে দুর দুরান্তে। তবে কোথাও একটা অপূর্ণতা গিয়ে বেঁধে আদৃতের মনে। মেয়েটা মাঝে আজ কি যেন নেই! হ্যাঁ!কিছু একটা নেই!কিন্তু কি?সেকেন্ড তিনেক সময় লাগে তার খুঁজতে। পেয়ে যায় তারপর। টিপ! ইশ!মেয়েটার কপালে, ঐ ভ্রু দুটোর ঠিক ওপরটায় একটা ছোট মতোন কালো টিপ ছিল না কাল?হ্যাঁ!আজ ওটাই নেই। আদৃতের আচমকা ঐ ছোট্ট টিপটির ওপরেও বড্ড হিংসে হয়। সেও তো অমন কপালের টিপ হতে পারতো!হৃদয়হরণীর ললাটরেখায় নিজের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার সেই সূবর্ণসুযোগটা কখনো পাওয়া হবে না ভেবে মনে মনে কষ্ট পেল।আদৃতের দৃষ্টি তখনো স্থির, স্বচ্ছ।
হৃদিতার এবারটায় তীক্ষ্ণ সংকোচে সারা শরীরে কাঁপন দিল। লোকটা চেয়ে আছে কেন ওভাবে?সে মিনমিন করে বললো,
“বাবা বাড়িতে আছেন। আসুন, ভেতরে আসুন!”
আদৃতের বিভোর দৃষ্টি এবার ঘোর থেকে বেরোলো। সে অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে দৃষ্টি লুকোবার অযথা, নিতান্তই অকারণ প্রচেষ্টা করলো।হৃদিতা আর তাকালো না। কালকের মতো,দরজার পাশে সরে গিয়ে ভেতরে প্রবেশের রাস্তা করে দিল। আদৃত এলো ভেতরে। দরজা বন্ধ করে হৃদিতাও গেল তার পিছু পিছু। সেন্টার টেবিলটার ওপরে তখনো বই খাতা সব মেলে রাখা।আদৃতের চোখে পড়লো। খাতার ওপরে গোটা গোটা করে লেখা,
” The flower was picked by Harun!”
মেয়েটা পড়ছিল তার মানে! আদৃত আপনমনেই বলে উঠল। খাতার পাতায় ভাসা ভাসা হাতের লেখার দিকে একপলক মুগ্ধ হয়ে চাইলো। মেয়েটার হাতের লেখা বেশ সুন্দর।
হৃদিতা খাতাটার মাঝে কলম রেখে তা বন্ধ করে স্টাডি রুমের দিকে পা বাড়ালো,যাবার আগে আদৃতের উদ্দেশ্যে বলে গেল,
“বাবা কে ডেকে দিচ্ছি। একটু বসুন!”
আদৃত উত্তর দিল না। অদ্ভুত কারণেই তার মনে হলো হৃদিতা তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। তার অস্তিত্বটুকুকে নেহাৎই বড্ড অপ্রয়োজনীয়, গুরুত্বহীন মনে করছে।
এই যে এই সহজ কথার তারে সাজানো ভাবনাটুকু, এটুকুই আদৃতের বুকের ভেতর প্রকান্ড এক ছুড়িকাঘাতের মতো গিয়ে বিধলো। চিনচিনে ব্যাথায় ভারী হলো মন। শিকারীর তীরের আঘাতে পাখি যেমন ছটফট করে, আদৃতও তেমনই ছটফটিয়ে মরলো ভেতর ভেতর! তবে তার সেই যন্ত্রণা কেউ দেখলো না বুঝলো না।
আদৃত দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বসে পড়লো। মুহুর্তের ব্যবধানে ঋতমবাবু এলেন, পেছনে হৃদিতা। আদৃত উঠে দাঁড়ালো। নিদারুণ নমনীয় কন্ঠে বললো,
“নমষ্কার আঙ্কেল।”
ঋতমবাবু বাৎসল্যের হাসি হাসলেন, স্নেহসিক্ত স্বরে প্রত্ত্যুত্তর করলেন,
“নমষ্কার!বসো,বসো!”
আদৃত বসলো। ঋতমবাবুও বসেলেন মুখোমুখি সোফাটায়। হৃদিতা মায়ের কাছে গেল। অতিথি এসছে, কিছু আয়োজন তো প্রয়োজন।
তবে, এই যে হৃদিতা চলে গেল, আদৃতের উপস্থিতি নিষ্ঠুরতার সাথে উপেক্ষা করলো, সেই ভয়ানক যাতনায় ধরাসায়ী হলোসে। দম আটকে আসতে চাইলো ক্ষণে ক্ষণেই। তবুও নিজেকে সামলালো।
একতরফা অনুভুতির রাজত্ব সাজিয়ে রাখার ফল এমনই হওয়া স্বাভাবিক ভেবে নিজের মনেই নিজেকে তিরষ্কার জানালো, হাসলো তাচ্ছিল্যময় হাসি।
ঋতমবাবু তখন কাজের কথা শুরু করেছেন, আদৃত প্রপার্টি পেপারস বের করে বুঝিয়ে দিলেন সবটা। ঋতমবাবু অভিজ্ঞ মানুষ। তার বিচক্ষণ চোখে পরখ করে নিলেন সব আইনি কাগজ। নাহ্!সবই ঠিকটাক,একদম নিঁখুত।তার বুঝতে ভুল হয়নি, ছেলেটা যথেষ্ট এফিশিয়েন্ট।
ঋতমবাবু সই করলেন, সই করলো আদৃতও। তারপরে ২০ লক্ষ টাকার একটা চেক এগিয়ে দিল ঋতমবাবুর দিকে। ঋতমবাবু অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিলেন। জমিগুলো কোনটাই তার নয়। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে,উত্তরাধিকার সূত্রেই পাওয়া। বাবার জমি বেঁচে টাকা নেবার রুচি তার কোনকালেই হয়না। যা আছে তাই তো অনেক। কি লাভ, অতিরিক্ত লোভে।
তবে, তার যেমন আত্মসম্মানবোধ আছে, তেমনই বিপরীত দিকের মানুষটারও আত্মসম্মানবোধ সমান।হয়তো কিঞ্চিৎ বেশি। তাই বিনামূল্যে জাযগা ক্রয়ের কথা বলে অন্য কারোর আত্মসম্মানে আঘাত হানার ঘৃণ্য ইচ্ছে ওনার নেই।একটুও না।
আইনি কাজকর্মের মাঝেই টাপুর দেবী জল খাবারের ট্রে হাতে ড্রয়িংরুমে এলেন। টেবিলের মাঝখানে একে একে নামিয়ে রাখলেন, সবজির চপ, পানতুয়া আর চা।
আদৃত একবার ঘাড় ঘুরিয়ে রান্নাঘরের দরজার দিকে তাকালো। না হৃদিতা আসেনি। আদৃত হতাশ চোখে মুখ ফেরালো। টাপুর দেবী আদৃতের উদ্দেশ্যে বললেন,
“নাও বাবা। শুরু করো!”
আদৃত ব্যস্ত কন্ঠে প্রত্ত্যুত্তর করলো,
“আরেহ্!এত কিছু কেন করতে গেলেন আন্টি?এতসবের কি দরকার ছিল?”
টাপুর দেবী উত্তর দেবার আগেই রান্নাঘর থেকে দুটো জলের গ্লাস হাতে বেরিয়ে এলো হৃদিতা। কাচের ছোট্ট ট্রেটা সমেত জলের গ্লাসগুলো টেবিলের ওপরে নামিয়ে রাখতে৷ রাখতে বললো,
“নিন না। কাল আপনি আবার আসবেন বলে গেলেন যে, তা শুনে মা নিজের হাতে বানিয়েছেন। কাল তো ঠিকমতো আপ্যায়ণ করা হয়নি আপনার। আমি তো তেমন পারিনা কিছু, তাই আর কি।
আজ মা যখন এত আশা করে বানিয়েছেই তখন খা নাহয়।”
আদৃতের হতাশ নয়নে এবার আবছা খুশির ঝিলিক খেলে গেল। কথা না বাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে মুখে নিল খাবার। মনে মনে প্রসংশা করলো, ” রান্নার হাত চমৎকার!”
তবে মুখে তেমন কিছু বললো না।জল খাবারের পর্ব মিটলে যখন বিদায় নেবার জন্য দরজার দিকে এগিয়ে গেল, তখন গতদিনের মতো,আজো একে একে ঋতমবাবু ও টাপুর দেবীর থেকে বিদায় নিয়ে হৃদিতার উদ্দেশ্যে বললো,
“ভালো থাকবেন হৃদ!আবার দেখা হবে!”
ব্যাস!হৃদিতার শান্ত মনে আবার উথাল পাথাল ঢেউয়ের তাণ্ডবনৃত্য চললো। নিজেকে সামলে নেবার ব্যর্থ চেষ্টার মাঝপথেই দরজা ডিঙিয়ে চোখের আড়াল হলো সেই নিঠুরতম ব্যক্তি!তার শান্তিহরণকারি,আদৃত!
হৃদিতা ভাবলো, যে ছেলের নামটাই আদর আদর, সে এমন নির্লিপ্তভাবে অন্যকে জ্বালিয়ে দিয়ে যায় কিভাবে? তবে উত্তর মিলল না একদমই!
.
সেই রাতটাও অমন আনচান করেই পেরোলো দুজনেই। কয়েশ ক্রোশের ব্যবধানে দাঁড়িয়ে অবুঝ দুটো মন, অবাধে পরষ্পরের বিরুদ্ধে দোষের পসরা সাজালো। হাজারটা অভিযোগ করে করেই কেটে গেল তমসাবৃত শর্বরী!
শেষ রাতের দিকে সেই হাজার অভিযোগ, অভিমাণ, দোষারোপের ডালা নিজের হাতের মুঠোয় আকড়ে নিয়েই এক হলো চোখের পাতা।
আর সকালটা করলো, কোন এক নতুন সাক্ষাতের সূচনা!
#চলবে!
[🤭 গল্পের মধ্যে পড়া ঢুকিয়ে দিয়েছি বলে কি পাঠকরা আমাকে বকবে?
ভাষা কি খুব কঠিন লাগে?🥺 আমার এর চেয়ে সহজ করে লেখাই আসে না। এখন কি করবো?🥺 বলুন। একদম সরল ভাষায় লিখি? না এমন থাক?
মতামত জানানোর অনুরোধ করা হলো।
রি-চেইক করা হয়নি। ভুল-ত্রটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। হ্যাপি রিডিং!]