গল্প – প্রেমময় তৃষ্ণা
পর্ব – ১৪
লেখিকা – তানিয়া
ফাহিম আজ দেশে ফিরেছে,দেশে এসেই প্রথমে শুভর সাথে দেখা করতে আসলো।শুভর বিয়ে আরুশীর সাথে,এ কথা শুনেই ফাহিমের মাথা গরম হয়ে গেছে।মাত্র কয়েক মাসের জন্য অর্পাকে নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলো বোনের সাথে দেখা করতে,সেখানে থাকা অবস্থায় কলি আর শুভর মাঝে কিছু প্রোভলেম চলছে শুনেছে,কিন্তু এসব কারনে শুভ আরুশীকে কেনো বিয়ে করবে,এই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র শুভ দিতে পারবে আর আজ তা জানার জন্যই অর্পাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে নিজে ডিরেক্ট অফিসে চলে এলো।
ফাহিমের মাথায় আসছে না এটা কি করে সম্ভব।যে শুভ কলি বলতে পাগল,কলির জন্য এতো বছরে কোনও মেয়েকে নিজের ধারের কাছেও ঘেষতে দেয়নি,কলেজের কতো সুন্দরী মেয়ে শুভর আশেপাশে ঘুড়তো,কিন্তু ও কলি ছাড়া কারো সাথে কথাও বলতো না,আর সে শুভ নাকি কলিকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে।এটা ফাহিমের বিশ্বাসই হচ্ছে না।কারন কলি কি শুভর জন্য,কলির ইম্পোর্টেন কতো শুভর জীবনে এটার একমাত্র সাক্ষী ফাহিম নিজে।
ফাহিম শুভর রুমে ডুকেই হাতের কার্ডটা শুভর টেবিলে ছুড়ে মেড়ে এসব কি শুভ?।___শুভ ল্যাপটপ থেকে মুখ সরিয়ে ফাহিমের দিকে তাকালো,what’s!! ____তুই না কলিকে ভালোবাসিস তাহলে,এখন আরুশীকে কেনো বিয়ে করছিস। ____শুভ কার্ডটা হাতে নিয়ে,কেনো সমস্যা কি।___কি সমস্যা তুই জানিস না____দেখ ফাহিম তুই যদি কলির ব্যাপারে কিছু বলতে চাস,তাহলে এখানেই স্টোপ।আমি ওর ব্যাপারে কিছু শুনতে চাই না।আর আমার পারসোনাল লাইফে নাক না গলালে আমি খুশি হবো।
___কি বললি তুই,তোর পারসোনাল লাইফ।আমাদের মধ্যে “তোর- আমার” এ ব্যাপার টা কবে থেকে আসলো।___ফাহিম এনাফ,আমি আর কোনও কথা শুনতে চাইনা।বিয়ের অনেক কম সময় আছে,তোরাও তোদের প্রস্তুুতি নিয়ে নে।এতো বছর পর তোর বন্ধু বিয়ে করতে যাচ্ছে তোর এখন খুশি হবার কথা।
____শুভ তুই জানিস না তুই কি করছিস।তোর কাছে একটা অমুল্য হীরা আছে,যা তুই অবহেলায় দূরে সরিয়ে দিচ্ছিস।এখনো সময় আছে শুভ,তা না হলে তোকে অনেক প্রস্তাতে হবে মনে রাখিস।
ফাহিম চলে গেলো,ফাহিম মনে করে কানা ব্যক্তিকে পথ দেখালে সে ঐ পথেই চলবে,কিন্তু যে চোখ থেকেও কানা হয়ে বসে থাকে তাকে পথ দেখিয়ে লাভ নেই।শুভও আজ তেমন।
||
||
আজ প্রায় এ সপ্তাহ কেটে গেলো,কলি অনেকটা পাথর হয়ে গেছে,একদম চুপ হয়ে থাকে,কারো সাথে কোনও কথা বলে না।সারাদিন জানালার পাশে বসে দূরের ঐ গাছটার দিকে তাকিয়ে থাকে।কলির চোখে এখন আর জল দেখা যায় না,মনে হয় মনের কস্টে চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে।শিলা অনেকবার এসে কলির মন ভালো করার চেস্টা করছে কিন্তু কলি সে তো মূর্তির মতো বসে থাকে,ওর ভেতরের সব অনুভূতি গুলো মনে হয় দাফন দিয়ে দিয়েছে।আজ নিজেকে একটা জিন্দা লাশ মনে হচ্ছে তার,যার মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য কোনও প্রেরণা নেই।
||
||
কলির এমন অবস্থা দেখে আসলাম আমীরও খুব টেনশনে পরে গেলো।শুভর বিয়ের কথা শুনেই এমন অবস্থা, আর শুভ যখন বিয়ে করে ফেলবে তখন কলি কি করবে আল্লাহই জানে।এমন অবস্থায় আসলাম আমীর এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো,তিনি কলির বিয়ে ঠিক করে ফেললো।শুভর আগে কলিকে বিয়ে দিতে হবে,তাহলে হয়তো কলি এই কস্ট থেকে মুক্তি পাবে আসলাম আমীর মনে করছে।
||
||
চেয়ারম্যান অনেকদিন ধরে আসলাম আমীরকে তার বড় ছেলে শাহিন এর সাথে কলির বিয়ের কথা বলেছে।কিন্তু আসলাম আমীর কলির বিয়ে এতো তারাতারি দিতে চায়নি,তাই বারবার মানা করে দিতো।কিন্তু এখন মেয়ের মতিগতি তার ভালো লাগছে না,তাই শাহিনের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেললো।আর কলিকে ও এসে তার সিদ্ধান্তের কথা জানালো,বাবার মুখে নিজের বিয়ের কথা শুনে কলি এতোদিন পর, একবার তার বাবার দিকে তাকালো।____কলির বাবা কেনো জানি মেয়ের চোখের দিকে তাকাতে পারলো না,তাই সাথে সাথে চোখ সরিয়ে রুম থেকে চলে গেলো।আর কলি আবাক দৃস্টিতে বাবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
কি অদ্ভুত ব্যাপার, যে দুটো মানুষকে কলি সবথেকে বেশি ভালোবাসতো,সে দুটো মানুষকেই কলির আজ অচেনা লাগছে।এক হলো তার বাবা,আরেক হলো শুভ।
||
||
বিয়ে ঠিক হওয়ায় চেয়ারম্যান সাহেব আজ অনেক খুশি,কারন তার এতো দিনের প্লানিং আজ সফল হচ্ছে।শুভ যেদিন থেকে চেয়ারম্যান এর ছোট ছেলে শিহাব কে মেরেছে,সেদিন থেকেই সুযোগের আশায় ছিলো কিভাবে প্রতিশোধ নিবে।নিজের কাজ সফল করার জন্য শুভর বাবা আজমাল চৌধুরীকে কলির সম্পর্কে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছে,কলির চরিত্র ভালো না,টাকার লোভে শুভকে ফাশিয়েছে ইত্যাদি ।আর অন্যদিক দিয়ে আসলাম আমীরকে রাজি করাবার চেস্টা করেছে কলির সাথে শাহিনের বিয়ে দেয়ার জন্য।একবার কলিকে ছেলের বউ করে নিতে পারলে,কলি ও শুভ দুজন থেকেই বদলা নেওয়া যাবে বলে মনে করে।
||
||
কলির বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।বাড়ীতে অনেক মেহমান আসা শুরু হয়ে গেছে।বিয়েতে যাতে কেউ কোনও বাধা দিতে না পারে তার জন্য চেয়ারম্যান এর লোকজন বাড়ীর আশেপাশে পাহাড়া দেয়।কলির কাছে এসব একটা তামাশা ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না,এমন সময় মামুন এসে কলির কাধে হাত রাখে।কলি তাকিয়ে দেখে মামুন।মানুম কলির পাশে গিয়ে বসে।____মামুন কে দেখে কলি এতোদিনপর মুখ খুললো।মামুন ভাই শুধু একবার আমাকে শুভর সাথে দেখা করিয়ে দেও।প্লিস।তোমার কাছে আমার শেষ চাওয়া আর কোনও দিন জ্বালাবো না,শুধু একবার।
____মামুন কিছু বললো না,শুধু কলির মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো।আর কলি আবার নিরাশ হয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলো।
||
||
আজ কলির গায়ে হলুদ,গাঢ় হলুদ রং এর শাড়ীটা কলির দুধ সাদা গায়ে ফুটে উঠেছে,তার সাথে মাথায় হাতে গাধাফুলের গহনায় কলিকে কোনও পরীর থেকে কম লাগছে না।শুধু একটা জিনিসের অভাব,এই পরীর মুখে হাসি নাই।মুখে তার বউয়ের মতো কোনও লাজ নাই। আছে শুধু বিষণ্ণতা।সন্ধ্যার মধ্যেই হলুদের কার্যক্রম শেষ হলে,কলি ঘরের দিকে পা বাড়ালে কেউ কলিকে টেনে বাড়ীর পেছনে নিয়ে যায়।প্রথমে কলি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলেও,একটু পর বুঝতে পারে সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তিটা আর কেউ না মামুন।মামুন কলিকে বাড়ীর পেছনের রাস্তা দিয়ে বাড়ী থেকে বের করে আনে,হাতে একটা মোবাইল আর কিছু টাকা দিয়ে, মামুনের একটা চেনা ছোট ভাইকে বলে,রাফি আমার বোনটাকে সাবধানে নিয়ে যাস,ও ওখানকার কিছু চিনে না,তুই ওকে চৌধুরী বাড়ীর সামনে পর্যন্ত দিয়ে আসবি।
____কলি অবাক হয়ে মামুনের দিকে তাকিয়ে আছে,কলির নিরাশ জীবনে এই একটি মানুষ এখনো কলিকে আশার একটি প্রদীপ জ্বালাতে সাহায্য করছে।
___মামুন কলির হাত দুটো ধরে,তুই চিন্তা করিস না বোন,আমি এখানে সব সামলিয়ে নেবো।আমার বিশ্বাস তুই শুভ ভাইয়ের সাথে একবার দেখা করলে দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে।কলির মাথায় হাত রেখে আশির্বাদ দিয়ে তারাতারি করে ওখান থেকে একটা গাড়ীতে উঠিয়ে দেয়।কলিও চলে যায় মনে একটু আশা নিয়ে শুভর সাথে দেখা করতে।কিন্তু কলি জানেই না আজ ওর জীবনের সব আশার প্রদীপ এক সাথে নিবে যাবে।
||
||
আজ চৌধুরী বাড়ীতে ডিনার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।তাই পুরো বাড়ীতে আজ মেহমানদের আনাগোনা।ডিনার পার্টিতে আরুশীর আর ফাহিমের ফ্যামিলি জয়েন হয়েছে।সবাই ডিনার শেষে বিয়ের আয়োজন নিয়ে টুকটাক কথাবার্তায় ব্যস্ত ঠিক এসময় বাড়ীর দারওয়ান এসে দরজায় বেল দেয়।মাহির গিয়ে দরজা খুলে দারওয়ানকে দেখে জিঙ্গেস করে কি সমস্যা,দারওয়ান এর কথা শুনে মাহির কিছু সময়ের জন্য নিরব হয়ে গেলো।তারপর ভেতরে গিয়ে শুভকে খুঁজতে লাগলো।সবাই নিচে কিন্তু শুভ এখানে নেই।মাহির মনে মনে ভাবছে যার বিয়ের আয়োজন নিয়ে কথা চলছে,তারই কোনও ইনটেরেস্ট নেই।
মাহির শুভর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে,কারন তার রুমে প্রবেশ করা এই বাড়ীর সবার জন্য নিশেধ। কেনো নিশেধ কেউ জানে না,তবে কলির সাথে কথা বন্ধ করার পর থেকেই শুভ তার পরিবার থেকেও অনেকটা এড়িয়ে চলে,এটা সবাই লক্ষ্য করেছে।মাহির দরজা নক করে,প্রথমে ওপাশ থেকে কোনও জবাব না আসলে,আবারও নক করে,এবার শুভ ডোন্ড ডিস্টার্ব মি বলে চিল্লিয়ে উঠে।মাহির শুনেও আবার নক করলে,এবার শুভ দরজা খুলে মাহিরের উপর রাগ জারতে থাকে।____মাহির স্থির দৃষ্টিতে শুভর দিকে তাকিয়ে,ভাই,____what’s?____ভাই বাহিরে কলি দাঁড়িয়ে আছে,মেয়েটার সাথে একবার দেখা করে আস।প্লিজ ভাই।
||
||
_____শুভ প্রথমে মনে করলো,ও ভুল শুনেছে।তাই মাহিরকে আবার জিঙ্গেস করলো।___মাহির এবারও যখন একই কথা বললো,শুভ বুঝতে পারলো এটা ওর কল্পনা না সত্যিই কলি এসেছে।শুভ নিচে নেমে বাহিরে চলে গেলো।শুভ বাহিরে গিয়ে দেখে একটা মেয়ে হলুদ শাড়ী পরে দাঁড়িয়ে আছে,শুভ মেয়েটির চেহারা দেখতে পারছে না,মেয়েটা শুভর দিকে উল্টো করে দাঁড়িয়ে ছিলো।শুভ গিয়ে যখন কলি বলে ডাক দিলো।
_____কলি পেছনে ঘুড়ে দেখে শুভ দাঁড়িয়ে আছে।___আর শুভ কলির দিকে একদৃষ্টিতে থাকিয়ে আছে,কলিকে আজ প্রথম শাড়ীতে দেখলো শুভ,হলুদ শাড়ীতে কলিকো হলুদ পরী মনে হচ্ছে শুভর কাছে।শাড়ী পড়ায় কলিকে আজ একদমই পিচ্ছি মনে হচ্ছে না,শুভর নযরে কলিকে আজ একজন পূর্ণ নারী মনে হচ্ছে।____শুভকে এতো মাস পরে দেখে কলি নিজের মনকে সংযত করতে পারেনি,দৌঁড়ে গিয়ে শুভকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
||
এদিক দিয়ে শুভ ও মাহিরকে বাহিরে জেতে দেখে ফাহিমও বাহিরে এসে পরে,আরুশীর কিছু সন্দেহ হলে,আরুশী ও দেখতে আসে বাহিরে কি চলছে।
||
কলি শুভকে জরিয়ে ধরলেও শুভ কলিকে একবারও ধরেনি,কিছুক্ষন পর শুভ নিজেই কলিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়,বিহেভ ইউর শেল্ফ কলি,এটা কেমন ধরনের আচরন,তুই এখন ছোট না।অনেকটা কর্কশ কন্ঠে বলে।
||
কলিকে শুভ এভাবে সরানোর কারনে কলি কিছুটা শোকড হলেও,পরে নিজেকে সামলিয়ে নেয়।আই এম সরি,আ…স…লে অনেক দি…ন পর দেখলামতো।
||
শুভ কলিকে খুব শক্ত গলায় জিঙ্গেস করলো,তুই এখানে কি করছিস, এতো রাতে,তা আবার এভাবে।কার সাথে এসেছিস।
||
কলি কিছুক্ষন শুভর দিকে তাকিয়ে থেকে,আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো আমার,আমি বেশি সময় নেবো না।______শুভ অন্যদিকে তাকিয়ে বল,কি বলবি।_____শুধু একটা প্রশ্ন কেনো।কেনো আপনে আমার সাথে এমন করলেন,কেনো আপনে আমার মনটা নিয়ে খেললেন।কেনো আমাকে এভাবে ধোকা দিলেন।কেনো আমার হাতটা মাঝ রাস্তায় ছেড়েদিলেন।শুধু এই কেনো কথাটির উত্তরটি দিয়ে দেন।আমি চলে যাবো,প্রমিজ আর কখনো আপনাকে জ্বালাতে আসবো না।কিন্তু আমার উত্তর চাই।আমাকে স্বপ্ন দেখিয়ে সেই স্বপ্ন নিজের হাতে ভেঙ্গে দিলেন,একটি বারও কি আমার কথা মনে পরেনি আপনার।আমার ফিলিংস এর কোনও দাম নেই আপনার কাছে।বলুন শুভ, প্লিস বলুন।কলি শুভর হাতদুটো ধরে,আমার কি দোষ ছিলো, কোন অপরাধের শাস্তি দিচ্ছেন।একবার বলুন, প্লিস।না হলো আমি পাগল হয়ে যাবো এসব চিন্তা করতে করতে।
||
||
শুভ কিছু বলতে নিবে,তার আগে আরুশী পেছন দিয়ে শুভকে ডাক দেয়।একে একে বাড়ীর সবাই বাহিরে এসে পড়ে।____শুভ এই মেয়েটা কে,আরুশী একদম শুভর সামনে এসে।___শুভ চোখ দুটো বন্ধ করে জরে একটা নিশ্বাস ছাড়ে,কলিকে উদ্দেশ্য করে বলে,কলি এই হলো আমার হবু ওয়াইফ আরুশী।তুই জানতে চেয়েছিলি না কেনো,তোর কেনোর উত্তর এটাই,আরুশী তোর থেকে রুপে,গুনে,পড়ালেখায় কোনও দিক থেকে আমার চেয়ে কম না,আর সব থেকে বড় কথা ওর স্ট্যাটাস। আমাদের পরিবারের জন্য,আর আমার জন্য একদম পারফেক্ট।তাইতো তোর আর ওর মধ্যে আমি ওকে বেছে নিছি।তোর মধ্যে কোনও খারাপ কিছু নেই,কিন্তু শুভর জন্য বেস্ট তুই না,আরুশী। তাই আমি আরুশীকে বেছে নিছি।
||
কলি শুভর কিছুটা কাছে এসে,তাহলে আমার সাথে এতোদিন যা করেছেন তা কি ছিলো অভিনয়।______হা হা কলি, তুই সত্যিই এখনো সেই পিচ্ছি রয়ে গিয়েছিস। শুভ চৌধুরী কারো সাথে অভিনয় করে না।তোর সাথে অভিনয় করে কোনও লাভও নেই,ওটাকে জাস্ট একটু টাইম পাস মনে করিস।_____শুভর মুখে টাইমপাস কথাটা শুনে কলির সারা শরীল মনে হয় জ্বলে যাচ্ছে,শুভ এতোদিন ওর সাথে টাইমপাস করছে তা ভেবেও নিজের প্রতি ঘৃণা হচ্ছে কলির।কলি চোখমুখ খিঁচে শুভর কথার উত্তর দিলো,তাহলো এতোদিন আমি আপনার জন্য মনোরঞ্জন এর বস্তু ছিলাম।আপনে জাস্ট আমার মন নিয়ে খেলেছেন।ভালোবাসাতো ছিলোই না,অন্তত আপনার পক্ষ থেকে না।
কলি কিছুক্ষন নিরব থেকে ___ওকে,ধন্যবাদ আপনাকে শুভ চৌধুরী।আমাকে এতো বড় সত্যে বলার জন্য।অনেক অনেক ধন্যবাদ।শুভ চোয়াল শক্ত করে অন্যদিকে তাকিয়ে কলির কথাগুলো শুনছিলো।ফাহিমের খুব রাগ উঠছে শুভর এমন আচরনে।তবুও কিছু বলতে পারছে না।সবাই দাঁড়িয়ে দেখছে,তবে শুভর পরিবার শুভর এমন রুপ দেখে কিছুটা অবাক।কারন সবাই জানে শুভ এমন না,তাহুলে শুভ কেনো এমন করছে।
||
___কলি পেছনে ঘুড়ে চলে জেতে নিলে,আবার কি মনে করে থেমে যায়।আবার শুভর দিকে ব্যাক করে বলে,আপনার একটা জিনিস আমার কাছে আছে,সে জিনিসটার যোগ্য না আমি তখন ছিলাম না এখন,তাই আপনার জিনিস আপনার কাছেই রেখে দেন বলে শুভর হাতে কলিকে দেয়া আংটিটা ফিরিয়ে দেয়।আমি দোয়া করবো,শুভ ভাইয়া,আপনে জীবনে অনেক সুখে থাকেন।____কলির মুখে শুভ ভাইয়া শুনে এবার শুভ কলির দিকে তাকায়।____আপনাদের দুজনকে একসাথে অনেক সুন্দর লাগছে,আমি দোয়া করবো কারো যাতে নযর না লাগে।আপনারা অনেক সুখে থাকেন।শুভ ভাইয়া আপনার বিয়ের সবথেকে বড় গিফ্ট আমি দেবো।দেখবেন সারা জীবন এই গিপ্টের জন্য আমাকে স্মরন করবেন।এটা বলেই কলি শুভর হাতটা ছেড়ে বাড়ীর বাহিরে রাস্তার দিকে যেতে নিলে,শুভ পেছন থেকে ডাক দেয়,কলির ইচ্ছা নেই শুভর ডাকে সারা দেবার তবুও কেনো জানি পা টা থেমে গেলো,______এতোরাতে তোর একা যাওয়ার দরকার নেই,মাহির তোকে দিয়ে আসবে।
||
______কলি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলে,তা আর দরকার পড়বে না,শুভ ভাইয়া।আমার বাকিটা পথ একাই পাড় করতে হবে।ওখানে আমি কাউকে সাথে করে নিতে পারবো না।এ কথা বলেই কলি বাড়ীর গেট দিয়ে বাহিরে চলে যায়।আর শুভ কলির যাওয়ার দিকে এক দৃস্টিতে থাকিয়ে থাকে,হঠাৎ শুভর টনক নড়ে,কলির লাস্ট কথার অর্থ কি,শুভ দৌঁড়ে বাড়ীর বাহিরে রাস্তায় গিয়ে যা দেখে তার জন্য শুভ একদম রেডি ছিলো না।কলি একটা চলন্ত গাড়ীর সামনে এসে পরলে,মুহুর্তের মধ্যে কলিকে ছিটকে রাস্তার ওপর পাশে ফেলে দেয়।____শুভ কলি বলে একটা চিৎকার দিয়েই রাস্তায় বসে পরে,রাস্তায় পরে থাকা কলির নিথর দেহটার দিকে তাকিয়ে থাকে শুভ।কোনও কিছু ভাবার বা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে শুভ,শুভর চিৎকারে বাড়ীর সবাই বাহিরে এসে পরে।
কিছু মানুষ ভালোবাসা হারানোর বেদনাটা সহ্য করতে পারেনা।তারা উপর দিয়ে নিজেকে সবার সামনে অনেক স্ট্রোং দেখালেও ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড দূর্বল।আমাদের সমাজে কলির মতো এমন অনেক লাভার আছে যারা ভালোবাসার মানুষটি কে হারানোর বেদনা সইতে না পেরে,এ পদক্ষেপ নেয়।কিন্তু এটা কে আমি কোনও ভাবে সাপোর্ট করিনা বাস্তবে।
…………
……………….
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে…….]
#প্রেমময়_তৃষ্ণা #তানিয়া #গল্পের_ডায়েরি #TaNiA #GolperDiaryOfficial