প্রেমাসুখ #পর্ব_২৫ (প্রেমের তিক্ততা) #লেখনীতে_নবনীতা_শেখ

0
488

#প্রেমাসুখ
#পর্ব_২৫ (প্রেমের তিক্ততা)
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ

বড্ড গম্ভীর ও থমথমে পরিবেশ। কারো মুখে রা নেই। সুমিতা বেগম কথাটা বলেই চুপ হয়ে গিয়েছেন। আর এদিকে সাঁঝ ও হৃদ, দুজনই হতভম্বের ন্যায় বসে আছে। খানিকটা চমকেছে উপমাও।

সবার এমন বিমূঢ় ভাব-গতিক দেখে, সুমিতা বেগম হেসে বলল, “তুমি যেমনটা বর্ণনা দিয়েছ, আমার মেয়েটাও ঠিক তেমনই।”

এতক্ষণে যেন তাদের শ্বাসকার্য স্বাভাবিক হলো। হৃদ অপ্রুস্তুত হেসে বলল, “ওহ্ আচ্ছা!”

সাঁঝ জলদি খাওয়া শেষ করে উঠে চলে গেল। হৃদ মাথা নিচু করে ঠোঁট কামড়ে হাসল। ঠিক কীভাবে লজ্জায় পরে গিয়েছিল সাঁঝ!

উপমাও উঠে পড়ল। সুমিতা বেগম হৃদকে উদ্দেশ্য করে বলল, “ভাবি তোমার ব্যাপারে অনেক বলেছে। কীভাবে এত ব্যস্ততায়ও সময় বের করে আমাদের মেয়েদের পড়ালে..”

“তেমন কিছু না, আন্টি। উপমা আমার বোনের মতো, এটা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে আমার।”

মনোয়ারা বেগম পান চিবাতে চিবাতে বলল, “সাঁঝও আজ থেকে তোমার বোন। তুমি যা করেছ, ভাইও করে না।”

“না না, আন্টি। এভাবে বলবেন না।”

সুমিতা বেগম সূক্ষ্ম নজরে তাকিয়ে বলল, “কেন?”

“এটা আমার দায়িত্ব ছিল, আন্টি।”

“হ্যাঁ, বোনের প্রতি ভাইয়ের দায়িত্ব থাকেই।”

হৃদ উঠতে উঠতে বলল, “এভাবে জনে জনে বোন বানালে, বউকে আপু ডাকতে হবে। তার থেকে শুধু উপমাই ঠিক আছে।”

মনোয়ারা বেগম কিছুটা দূরে থাকায় হৃদের এত আস্তে বলা কথা শোনেনি। সুমিতা বেগম শুনেছে। তবে বুঝে ওঠার আগেই হৃদ আবারও বলল, “আচ্ছা, আন্টি। আজ তবে আসি।”

“সে-কী, বাবা? এত জলদি?”

হৃদ আস্তে ধীরে বুলি আওরাল, “বউ হওয়ার আগেই কাগজে কলমে বোন বানানোর আগেই বিদায় নিতে হবে। নাহলে ভাগ্যে সংসার নেই।”

সুমিতা বেগম শুনতে না পেরে বলল, “হ্যাঁ?”

“জি, আন্টি! বললাম, আজ ক্লাস না থাকলেও এগারটার দিকে একটা সার্জারী আছে। যেতে হবে। আসি।”

_____________
“একদম ফোন ধরবি না তুই। আগে আমার সাথে কথা বলবি।”

উপমাকে উদ্দেশ্য করে সাঁঝ কড়া কণ্ঠে এ’কথা বলল। উপমা অনুনয়ের সুরে বলল, “দ্যাখ, তোর ভাই কল দিয়েছে। একটু কথা বলতে দে না।”

“তোর ‘একটু’ সাধারণ জনগণের ‘এত্তোওও’ এর সমান।”

কথাটা বলেই উপমার হাতের ফোনের দিকে তাকাল। অর্ণব একতালে কল দিয়ে যাচ্ছে। সাঁঝ খপ করে উপমার হাত থেকে ফোন নিয়ে রিসিভ করে কানে তুলল।

অর্ণব এপাশের কথা খেয়াল না করে নিজ ভঙ্গিতে এক শ্বাসে বলতে লাগল, “এত কীসের ব্যস্ততা আপনার? একটু বরকেও সময় দিন, বউজান।”

“এ্যাই এ্যাই! থাম তুই। ফোনের এপাশে তোর বউজান না, বোন।”

“জেরি!”

“চিল্লাস না। আর কী বললি? সময় দিতে? ভাই, রেহাই দে একটু।”

“কী করেছি? আমার বউকে দে।”

“এক ঘণ্টার মধ্যে কল দিলে এমন ব্যবস্থা করব, যাতে আগামী তিনদিন কথা বলতে না পারিস।”

“এটা পারবি করতে? বউ থাকতেও এতিম রাখবি?”

“হু, ঘুমা।”

অর্ণবকে আর কিছু বলতে না দিয়েই সাঁঝ কল কেটে দিল। সামনে উপমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

সাঁঝ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল, “কী?”

“কী কথা বলবি, জলদি বল।”

“বলছি তো।”

“ফায়ায়ায়াস্ট!”

“কেন?”

“তোর বেচারা ভাই আর আমার অভাগা বর, আমার অপেক্ষায় আছে। জানিসই তো, বর ডাকলে অপেক্ষা করাতে নেই। জলদি জেতে হয়।”

“নেটওয়ার্ককে সাক্ষী রেখে ফোনে সংসার করছিস?”

“ধরে নে তাই। বইন আমার, সময় অপচয় করিস না। তোর কথা শোনার জন্য আমার কানদুটো মরে যাচ্ছে।”

“ওকে ওকে! বল, ঐ হৃৎপিণ্ড এখানে কী করছে?”

“হৃদ ভাইয়া?”

“হু। বাসায় তো এই ক’মাসে একবারও আসতে দেখিনি। এখন কী? এই সকালে! তাও আবার হঠাৎ!”

“ওহ্! এই ব্যাপার! আসলে সব প্রি-প্ল্যান্ড ছিল। শুধু আমরাই জানতাম না।”

“প্রি-প্ল্যান্ড!”

“মামী কালকেই আম্মুকে বলেছিল, ঢাকা আসবে। আর তার আগের দিন হৃদ ভাইয়ার সাথে আম্মুর কথা হয়। আম্মু হৃদ ভাইয়াকে লাঞ্চে বা ডিনারের জন্য ইনভাইট করেছিল। কিন্তু আগামী বেশ কয়েকদিন ভাইয়া এই সময়গুলোতে বাসায় থাকতে পারবে না। আর আজ! আজ সকালের ক্লাসগুলো হুট করে অফ হয়েছে বলেই হৃদ ভাইয়া ব্রেকফাস্ট ইনভাইটেশন এক্সেপ্ট করে। মামীও সেই হিসেবেই আজ সকালে এসেছে।”

“ওহ্! এত কিছু হয়ে গেল! জানলামই না! হতাশ আমি, হতাশ।”

“ব্যাপার নাহ্!”

“ব্যাপার আছে। তুই কীভাবে জানলি এসব? ব্যাপারটা কী?”

“কোনো ব্যাপার-স্যাপার না। সকালে তুই যখন ছাদে ছিলি, তখন মামী ও আম্মুর কথা শুনেছি।”

“ওহ্! বুঝলাম।”

“হয়েছে? এবার যাই?”

“না, আরও কথা আছে।”

উপমা এবার বিছানার উপর আয়েশ করে বসল। ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলল, “প্রশ্ন করতে থাক। একদম থামবি না। থামলেই চলে যাব।”

“ওঁর কীসের ক্লাস?”

“হৃদ ভাইয়ার?”

“হু।”

“মেডিকেলের লেকচারার সে।”

“ফুপ্পি ওঁকে দাওয়াত দিয়েছে কীসের জন্য?”

“আমাদের এতদিন পড়ানোর জন্য।”

“সোজা বিয়ে সম্পর্কিত প্রশ্ন করল কেন?”

“তোকে বিয়ে দিতে?”

“মানে!”

সাঁঝ চমকে উঠল। সাঁঝের বিস্মিত কণ্ঠস্বর শুনে উপমা হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে বলল, “এরকম তো হচ্ছে না। তাহলে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলি কেন? জানিস না? মুরুব্বীরা সিঙ্গেল কাউকে দেখলেই তাকে বিয়ে করানোর চাকরিটা বিনা বেতনেই নিয়ে নেয়।”

“হু, তাও ঠিক।”

“নেক্সট প্রশ্ন কর।”

সাঁঝের আরও একটা প্রশ্ন করার আছে। কাল রাতেই ভেবে রেখেছিল। মনে পড়ছে না কেন?
সাঁঝকে চুপ থাকতে দেখে উপমা সাঁঝের হাত থেকে ফোন নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “ওকে, বাই।”

তৎক্ষণাৎ সাঁঝের সেই প্রশ্ন মনে পড়ল। উপমার উদ্দেশ্যে তার অশান্ত বুলি, “এই! এই! এই! না। শোন।”

“কী?”

“কাল ঐ চিরকুটটা তোকে কে দিয়েছিল?”

উপমার সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়লেও সাঁঝকে বুঝতে দিল না। শুকনো ঢোক গিলে মেকি হেসে বলল, “কোন… কোন চিরকুট?”

“নীল রঙের।”

“কী জানি! মনে পড়ছে না।”

“বল।”

“তোর ভাইটা অপেক্ষা করছে, জানু। যেতে দে।”

“বলে, তারপর যাবি।”

“আমি ভাই পিউর আদর্শ বউ। তোর কথা শুনতে পারলাম না। টাটা।”

কথাটা বলেই রুমের দরজার দিকে পা বাড়াল। সাথে বলল, “আ’ম কামিং জামাইমশাই।”

সাঁঝ কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। ভাবল, একে ধরতে পারলেই অসুখের পুরো রহস্য সামনে আসবে
সাঁঝ মনে মনে গোটা তিনেক প্ল্যান কষে ফেলল। যাতে একটা বিফলে গেলেও যাতে অন্যগুলো কাজে লাগে।

________________
“কোথায় যাচ্ছ, সাঁঝ?”

ড্রয়িং রুম থেকে সুমিতা বেগমের তীক্ষ্ণ আওয়াজ পেয়ে সাঁঝ নিজের জায়গায় থেমে যায়। দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। সাঁঝ তৈরি হয়ে ক্যাফের উদ্দেশ্যে বেরোচ্ছিল, তখনই সুমিতা বেগমের খপ্পরে পড়ল। বেরোনোর তাড়াতে কোনো বাহানা ভেবে আসেনি। কী বলবে এবার?

সাঁঝকে চুপ থাকতে দেখে সুমিতা বেগম আবারও বলল, “কী ব্যাপার? কথা বলছ না কেন?”

“ইয়ে… আম্মু।”

“কী?”

“শপিং! হ্যাঁ, শপিংয়ে যাচ্ছিলাম।”

“শপিং?”

“হু।”

“ক’দিন আগেই না করলে?”

“হ্যাঁ, আসলে পরশুদিন ভার্সিটিতে নবীনবরণ। তাই শাড়ি কিনতে যাব।”

“ওহ্! তা একা যাচ্ছ?”

“উপমা কোথায়? ওকে নিয়ে যাও।”

“তোমার ছেলের বউ তোমার ছেলের সাথে প্রেমালাপে ব্যস্ত।”

সুমিতা বেগম সামান্য কেশে বলল, “মেয়েটার আক্কেল-জ্ঞ্যান নেই। কোথায় কী বলতে হবে, তার বিন্দু মাত্র কমনসেন্স যদি থাকত!”

সাঁঝ দাঁত কেলিয়ে বলল, “আর কিছু জানতে চাও? বলব? আমি তো একদম বাবার মতো হয়েছি, স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলতে জানি না। এই যে! দ্যাখো! সেদিন আব্বু কীভাবে বলল, বয়স তো হচ্ছে। এখন প্রতিদিন তোদের আম্মুর সাথে ডেইটে যেতে ইচ্ছে..”

“সাঁঝ! যা তুই। বের হ।”

সাঁঝ আবারও দাঁত কেলাল। গুনগুন করতে করতে বাসা থেকে বের হয়ে গেল। সুমিতা বেগম সাঁঝের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “এই বাবা-মেয়ে মিলে আমার জীবনটা শেষ করে দিল।”

পাশে বসে মনোয়ারা বেগম সরু দৃষ্টিতে সবটা দেখে প্রসন্ন হেসে বলল, “একদম আমার ভাইটার কপি।”

হঠাৎ মস্তিষ্কে কোনো একটা কথার বিচরণ হলো যেন, মনোয়ারা বেগম সুমিতা বেগমকে বলল, “ভাবি! সাঁঝকে নিয়ে একটা কথা ছিল।”

সুমিতা বেগম স্বাভাবিক গলায় খানিকটা হাস্যজ্জ্বল কণ্ঠে বলল, “তা বল।”

মনোয়ারা বেগম প্রথমে ইতস্তত বোধ করলেও, পরে ব্যাপারটা খুলে বলল। সুমিতা বেগম গভীর মনযোগে সবটা শুনে গেল। বলাই বাহুল্য, আরিফ সাহেব তার বিচক্ষণতার প্রেমেই পড়েছিলেন।

সবশেষে মনোয়ারা বেগম বলল, “দ্যাখো ভাবি, মেয়েকে যতই ভালোবাসো না কেন, সারাজীবন তো আর নিজের কাছে রাখতে পারবে না। আর ছেলেতো লাখে একটা।”

সুমিতা বেগম মিহি হেসে বলল, “ওর মতো ছেলে পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু…”

_______________
সঠিক সময়ের ঘন্টা খানেক পূর্বেই সাঁঝ ক্যাফের সামনে চলে এসেছে। এতক্ষণ বসে বসে অপেক্ষা করা মোটেও সাঁঝের মতো মেয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। আশে পাশে নজর বুলিয়ে নিল। পাশেই একটা শপিংমল দেখে কোনো কিছু না ভেবেই ঢুকে পড়ল। অতঃপর ভেবে নিল, মিথ্যে বাহানাকে সত্যি করবে। নবীন বরণের জন্য শাড়ি কিনবে এখন।

ইতোমধ্যেই ওদের ডিপার্টমেন্টের একটা চ্যাট গ্রুপ খোলা হয়েছে। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মেয়েরা কালো শাড়ি ও ছেলেরা ডার্ক মেরুন পাঞ্জাবি পরবে। উপমার কাছে কালো শাড়ি থাকায়, সাঁঝ আর কেনাকাটায় আগ্রহ দেখায়নি। তবে এখন যেহেতু এসেই পড়েছে, কিনে নেওয়াটাই সাঁঝের কাছে ঠিক মনে হলো।
অনেক দেখে শুনে নিজের জন্য একটা কালো রঙা শাড়ি কিনল, ছাঁই রঙা পার। অনেক শাড়ির ভিরেই এটাই যেন তার মন কাড়ল।

ফেরার সময় জেন্টস ওয়ার্ল্ডে একটা কালো পাঞ্জাবিতে তার দৃষ্টিতে পড়ল।মুহূর্তেই সে পাঞ্জাবির সাথে হৃদকে কল্পনা করে ফেলল।
মনে মনে বলে ফেলল, “এই পাঞ্জাবিটা আমার ডাক্তার সাহেব ছাড়া আর কারো গায়ে মানাবে না।”

কিনে নিল ওটাও। আবারও ফিরে এলো ক্যাফেতে। এখনো বিশ মিনিট বাকি। বাইরের কাঁচের দেওয়াল থেকে ভেতরের দিকে হৃদকে বসে থাকতে দেখে সাঁঝ কপাল কুঁচকে ফেলল। অবাক হলো হৃদের ঠোঁটে লেপ্টে থাকা হাসি ও চোখের সেই খুশির ঝলক দেখে। সাঁঝের ঠোঁটে আবারও স্বল্পক্ষণের এক হাসির দেখা মিলল। সঙ্গে সঙ্গে তা মিইয়ে গেল, হৃদের পাশে বসে থাকা এক রমণীকে দেখতেই। ফরসা, গোলগাল মুখশ্রীতে বেশ বড়ো একটা গোল ফ্রেমের চশমা। সেই মেয়েও হাসছে। মূহুর্তেই সাঝেঁর গা রি রি করে উঠল। তার সাথে একটা মেয়ে ঝগড়া করছিল বলে সেদিন কী কাহিনীটাই না করল! আর এখন! হাতে হাত ধরে হাসছে! এ কেমন খুশি হওয়া! সাঁঝের সহ্য হচ্ছে না। তবুও নিজেকে শান্ত করে নিল। নিজের মনকে বোঝাল, হয়তো বন্ধু হবে। হতেই পারে। আবার নিজের মনকেই প্রশ্ন করল, যা ইচ্ছে হোক! বন্ধু হোক বা প্রেমিকা হোক! তাতে কার কী? তার কেন অস্থির লাগছে? মস্তিষ্কে প্রশ্নোত্তর খেলতে খেলতে ভেতরে প্রবেশ করল। হৃদের পেছনের ফাঁকা টেবিলটাতে বসতে নিয়েই তার হাত-পা অসাড় হয়ে গেল। ওদের কথোপকথন শুনতে পেল।

মেয়েটি প্রশ্ন করল, “এত ভালোবাসিস?”

“হু, নিজের চেয়েও বেশি। এজন্যই এখনও বিয়ে করিনি।”

“আগে বলিসনি কেন?”

“খুঁজে পাইনি, তাই।”

“বাদ দে। কবে থেকে ভালোবাসিস?”

“পুষ্পির বিয়ের সময় থেকে।”

তাদের কথা চলল। তবে কানে এলো না সাঁঝের। যেভাবে পেছনের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছিল, সেভাবেই ক্যাফে ত্যাগ করল। এখানে তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মনটা বিষিয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
জলদি একটা রিকশাতে উঠে পড়ল। মাথায় যন্ত্রণার সাথে আপাতত দুটো প্রশ্ন ঘুরপাক করছে।
হৃদের সেই প্রেমময়ী চাহনিটা! কেন সেই চাহনি দিয়ে সাঁঝের অস্থির হৃদয়ে ঝড় তুলত?
হৃদের প্রতি তো প্রেম নেই! তবে কেন বুকটা পুড়ে যাচ্ছে, প্রতিনিয়ত?

অসুখের কথা আর তার মন কিংবা মস্তিষ্কে এলো না। সে এখানে কেন এসেছিল, তা ভুলে গিয়েছে। এমন তিক্ত অনুভূতি এর আগে হয়নি। তার ব্রেকআপেও না।
হায় সাঁঝ! প্রেমের এই অসুখে জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হচ্ছ, অতঃপর ভস্ম হয়ে আবারও মিশে যাচ্ছ এই প্রেমেরই মাঝে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here