প্রেমের পাঁচফোড়ন পর্ব_২৫

0
1921
  • প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
    #পর্ব_২৫
    #Writer_Afnan_Lara
    🌸
    জামাটা চেঞ্জ করে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে আহানা
    এত ভিজেছে সে এখন মনে হয় মাথাটা ছিঁড়ে হাতে চলে আসবে,পাশে থাকা একটা কঙ্কর নিয়ে জোরে সোরে সামনে নিক্ষেপ করলো মাথা ব্যাথার চোটে
    .
    আউচচ!
    .
    আহানা মাথা থেকে হাত সরিয়ে মুখ তুলে তাকালো
    শান্ত হাত ডলতে ডলতে এগিয়ে আসতেসে
    .
    কি?আবার ভিজাবেন?একবারে শান্তি হয়নি?
    .
    নাহ তোমাকে নিয়ে এক জায়গায় যাব চলো
    .
    যাব না আমি,যান এখান থেকে!
    .
    শান্ত নিচু হয়ে আহানার হাত মুঠো করে নিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
    .
    আহানা বলতেছে হাত ছাড়তে শান্ত সেদিকে মন না দিয়ে ঝাউ গাছগুলোর অপরুপ দৃশ্য পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে
    .
    কি হলো?কথা কানে যায় না আপনার?এই যে শুনুন,আমার হাত ছাড়ুন,আমার মাথা ব্যাথা করতেসে,প্লিস ছাড়ুন
    .
    অনেকটা দূরে শান্ত আহানাকে নিয়ে চলে এসেছে,একটা চায়ের দোকান,আশেপাশে মানুষ নেই বললেই চলে
    শান্ত টুলটা সামনে এনে আহানাকে বসতে বলে চায়ের দোকানদারকে দুকাপ দুধ চা দিতে বলে নিজেও বসে পড়লো
    .
    কি হলো?বসো,চা খাওয়াতে এনেছি তোমাকে,বলসিলাম না একসাথে চা খাবো
    .
    আহানা ব্রু কুঁচকে টুল টেনে বসলো
    শান্ত বিসকুট নিয়ে আহানাকে এক প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে নিজেও গাপুসগুপুস করে খেয়ে যাচ্ছে
    আহানা প্যাকেট খুলে একটা বিসকিট খেয়ে বাকি বিসকিট লুকিয়ে ফেললো,ঢাকায় ফিরে সেটা খেয়ে ভার্সিটিতে যাওয়া যাবে,ভাত বেঁচে যাবে এই ভেবে লুকালো
    .
    শান্ত হাত থেকে বিসকিটের গুড়ো ঝাড়তে ঝাড়তে বললো আরেক প্যাকেট কিনে দিবো,আপাতত এই প্যাকেট খাও,আমি জানি তোমার খিধা পেয়েছে
    .
    আহানা একটা ভাব ধরে লুকিয়ে রাখা বিসকিটের প্যাকেটটা বের করে খাওয়া ধরলো
    শান্তর বুক ফেটে হাসি পাচ্ছে,অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে চায়ের কাপ নিতে গেলো
    আহানা তো চা পেয়ে মহা খুশি,মনে হয় আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে,গরম গরম পুরো এক কাপ চা ৩সেকেন্ডে শেষ করে ফেললো সে
    শান্ত থ হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,তারপর তার কাপে এক চুমুক দিয়ে দোকানদারের দিকে তাকিয়ে বললো মামা আরও দুকাপ চা দেন
    আহানা চমকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে
    আরও দুকাপ কেন?কার জন্য
    .
    আমার আর তোমার জন্য,এই এক কাপে আমার মাথা ব্যাথা গেলেও তোমার যাবে না তাই বললাম আরও ২কাপ,যেভাবে গরম গরম চা শেষ দিসো বাপরে বাপ!
    .
    😒
    .
    দোকানদার চা বানাচ্ছে,আহানা টুল থেকে উঠে একটু দূরে হাঁটতে গেলো
    দুপাশে পুকুর,সম্ভবত কারো মাছ চাষ করার পুকুর,আহানা কিনারায় গিয়ে পুকুরের দিকে এক নজর চেয়ে রইলো,মাছ আর মাছ,তাহলে ঠিক ধরেছিলাম এই পুকুরগুলোয় মাছ চাষ করা হয়
    .
    বিকাল না হয়ে যদি সকাল হতো আমি এই পুকুরে নেমে মাছ ধরতাম
    .
    হ্যাঁ,আর মালিক এসে কান ধরে টানতো
    .
    জি না,মালিক হলেন মানিক হক,উনি আমার বাবার বন্ধু,উনি আমাকে কোলে করে পুকুরে নামাবে বুঝছো?
    .
    হুহ,মগেরমুলুক!
    .
    পরেরবার আসলে প্রমান দিয়ে দিব তোমাকে,এখন চলো চা বানানো হয়ে গেছে মনে হয়
    আহানা ফিরে এসে চায়ের কাপ নিয়ে টুলে বসে বারবার একটা গাছের দিকে তাকাচ্ছে,একটা বরই গাছ,পাতা যতগুলো বরই ঠিক ততগুলো
    আহানা এই নিয়ে ৪৯বার তাকিয়েছে
    শান্ত বিষয়টা খেয়াল করে সেও তাকালো,ও মাই গড! এত বরই!!এগুলা তো চুরি করতে হবে আজই,এখনই
    .
    আপনার জন্য আমি দৌড়ানি খেতে চাই না
    .
    তোমাকে বেশি কিছু করতে হবে না,আমি গাছ নাড়া দিব তুমি ওড়না ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে
    .
    হ্যাঁ গাছ নাড়ানো এত সোজা আর কি
    .
    কি বলো,আমি ডেইলি জিমে যাই,আমার কাছে এসব কিছু না,আমার বডি দেখছো?মনে হয় দেখো নাই,একদিন দেখাবো
    .
    শাট আপ!আপনার বডি এলিনাকে দেখান,আমার এত শখ নাই
    .
    কথা হলো গিয়ে বরই গাছটার মালিক হলেন গিয়ে আক্কাস মিয়া,উনি অনেক সম্মানীয় একজন মানুষ,তার রাগ কপালে থাকে
    .
    কপালে মানে?আমি তো জানতাম রাগ মানুষের মাথায় থাকে
    .
    আরে কপালে মানে হলো উনি রেগে গেলে উনার কপাল ৬ভাগে ভাগ হয়ে যায়,আই মিন সাগরের ঢেউয়ের মতন,অদ্ভুত লাগে তখন,তুমি দেখলে নির্ঘাত জ্ঞান হারাবে
    .
    আচ্ছা তো?
    .
    তো মানে,শুনো আমি বলতেসি,তুমি ওড়না ধরে দাঁড়াবা,উনার পেয়াদারা আসা ধরলে আমরা দুজনে পশ্চিম দিকে দৌড় মারবো ওকে?
    .
    কিন্তু আমরা তো এসেছি উত্তর দিক থেকে
    .
    আরে গাধি!পশ্চিম দিক দিয়ে শর্টকাট রোড আছে,আশ্রমে ৫মিনিটেই যেতে পারবো
    .
    আচ্ছা তাহলে চলুন,বরই খাবো😍
    .
    😒এক শর্তে
    .
    কি?
    .
    আমার সাথে আজ ঢাকায় ফিরে যেতে হবে তোমাকে
    .
    পারবো না,আমার শরীর ঠিক লাগতেসে না,আমি কাল যাবো
    .
    ওহহ শিট!!একটা কথা তো তোমাকে বলতে ভুলেই গেছিলাম আমি!
    মিষ্টির আম্মু নাকি তোমাকে কল করেছিলো,ধরো নাই কেন?
    .
    কই কখন কল করেছে?ফোন তো বাজলো না
    .
    আমাকে তো বললো
    .
    কি বললো?
    .
    বললো মিষ্টির কদিন বাদেই পরীক্ষা শুরু,তুমি যেন কাল সকাল থেকে টিউশনি শুরু করো
    .
    সত্যি বলছেন নাকি মিথ্যা?
    .
    মিথ্যা বলে আমার কি লাভ,থাক যেও না,আর একদিন মিস দিলে মিষ্টির মা তোমার টিউশনি অফ করে দিবে,আমার কি হুহ!
    .
    আরে না,ঠিক আছে আমি যাব আপনার সাথে
    .
    আচ্ছা তাহলে চলো বরই নিব
    শান্ত বরই গাছের নিচে এসে আহানাকে বললো ওড়না খুলো হাতে ধরতে
    আহানা ব্রু কু্চকে চেয়ে আছে ওর দিকে
    .
    কি?তোমার চুল আছে না?তুমিই তো বলছিলে ওড়না না থাকলে সেফটি হিসেবে কাজ করে চুল,তো এখন এমন করে চেয়ে আছো কেন?
    .
    আহানা ওড়না খুলে চুল সামনে এনে ওড়না লম্বা করে ধরলো
    শান্ত হাত লাগিয়ে একটু ঠেলা দিতেই বরইয়ের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো,আহানা ইয়া বড় হা করে তাকিয়ে আছে
    .
    হেহে!দেখেছো??এটা কে বলে ছেলেদের পাওয়ার,তোমরা মেয়েরা এই গাছের পাতাও নাড়াতে পারবে না বুঝলা
    .
    ঢং কম করেন,গাছ নাড়ানো বড় কোনো ব্যাপার নাহ
    .
    তো তুমি নাড়িয়ে দেখাও তাহলে
    .
    আমি কি বলসি আমিও পারি?হুহ,আমি বলসি অন্য ছেলেরাও পারবে
    .
    কে রে?কে ওখানে?চোর চোর চোর!!
    .
    আহানা দৌড়াও!!!
    .
    আহানা ওড়নাতে গিট্টু দিয়ে দৌড়ানো শুরু করে দিলো
    আহানার স্পিড ছিল শান্তর চেয়েও কম
    শান্ত থেমে ওর হাত ধরে দৌড় দিলো,দুজনে দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছে
    আশ্রমের একটু কাছে এসে থামলো,শান্ত হাঁপাতে হাঁপাতে একটা গাছের সাথে লেগে গেলো
    আহানা ও হাঁপিয়ে গেছে,দুজনে হেসে দিলো একসাথে
    শান্ত হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পড়লো
    আহানার হাত ধরে ওকেও বসিয়ে দিলো
    .
    নাও ভাগ করো,তোমার ৪০% আমার ৬০%
    .
    মানে কি?
    আমার ৫০% আপনার ও ৫০%
    .
    ইস শখ কত!আমি গাছ না নাড়লে তুমি বরই পেতে না
    .
    আমি ওড়না না ধরলে সব মাটিতে পড়তো আর আপনি বরই কুড়ানোর সময় পেতেন না,পেয়াদা এসে কেলানি দিতো ততক্ষণে
    .
    আচ্ছা,তোমার ৪৮% আমার ৫২%
    .
    না হবে না,৫০/৫০
    .
    আমার বোন মিতুকে দিতে হবে,বাচ্চা মেয়ে ও,তাকে কম দিলে হয়?
    .
    আমাকেও তো আশ্রমের কত বাচ্চাকে দিতে হবে
    .
    আচ্ছা ফাইন,৫০/৫০ যাও
    .
    ভাগ করা শেষে আহানা উঠে পড়লো
    .
    যাও সন্ধ্যায় রেডি হয়ে থেকো,মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ৬টা ১০মিনিটে ফ্ল্যাটফর্মে আসবে,আমরা সেখান থেকে উঠবো
    .
    ঠিক আছে,বাই
    আহানা চলে গেলো আশ্রমের দিকে
    শান্ত ও তার বাসার দিকে ফিরে গেলো

    সন্ধ্যায় আহানা সবার থেকে বিদায় নিয়ে গেটের বাইরে পা রাখতেই শান্ত এসে দাঁড়ালো ওর সামনে
    .
    আপনি এখানেই ছিলেন?
    .
    হ্যাঁ মায়ের কবরটা দেখতে গেছিলাম
    .
    ওহ!
    .
    চলো যাই
    শান্ত আহানার হাত ধরে হাঁটা ধরলো
    .
    এই হাত ছাড়ুন,সবসময় আমার হাত ধরেন কেন আপনি?
    .
    হুহ,ফাইন,পিছন থেকে কোনো বখাটে টান মারলে বলিও শান্ত প্লিস হেল্প মি,সেভ মি প্লিস!
    .
    অলক্ষুনে কথা বলেন কেন এত??
    .
    হইসে থামো,আর ক্ষেতে নামো,লেট হয়ে যাবে তোমার সাথে ঝগড়া করতে গেলে
    ক্ষেতে নেমে আহানা চুপচাপ হেঁটে চলেছে,শান্ত এতক্ষণ চুপচাপ ছিল হঠাৎ থেমে গিয়ে পকেট থেকে সিগারেট একটা নিয়ে ধরালো
    .
    এখন দেরি হয় না?
    .
    চুপ!আমি সব পারবো,তুমি কিছু পারবে না বুঝছো তুমি?এখন চলো!
    ফ্ল্যাটফর্মে পা রাখতেই ট্রেন এসে গেলো,শান্ত আহানাকে নিয়ে ট্রেনের কেবিনে ঢুকলো,একটা ছেলে জানালার সিটে বসে আছে
    .
    এই যে ভাই??ওটা আমাদের সিট,সরে বসো
    .
    আমি জানালার সিটে বসবো প্লিস
    .
    আমার পাশে যে এই মেয়েটা আছে না?ওর বমি করার অভ্যাস,এখন তুমি কি চাও ও ট্রেনের ভেতরে বমি করুক?
    .
    ছেলেটা শান্তর কথা শুনে চোখ কপালে তুলে তড়িগড়ি করে তার নিজের সিটে ফিরে গেলো
    .
    এই মিথ্যা বললেন কেন আপনি?আমি বুঝি বমি করি?
    .
    তো?এটা না বলে কি বলতাম আমি?জানালার সিট খোয়ানো যায় না কোনো মতেই,তুমি না বসলে বলো আমি জানালার পাশে বসবো
    .
    নাহহহ,আমি বসবো
    .
    বসো যাও,এই নাও ধরো সিগারেটটা হাতে রাখো আমি দোকান থেকে পানি কিনে আনতেসি
    .
    এটা ফেলে দেন,আমাকে দিচ্ছেন কেন
    .
    এই সিগারেটের দাম জানো তুমি?হাতে নিয়ে বসে থাকো চুপচাপ!
    শান্ত ব্যাগটা তার সিটের উপর রেখে পানির জন্য চলে গেলো
    আহানা সিগারেটটার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে,এদিক ওদিক একবার চোখ বুলিয়ে নিলো,পাশের ছেলেটা ফোনে গেমস খেলছে,আর সামনে ২টা মেয়ে একটা ছেলে তারা ব্যাগ রেখে কোথায় যেন গেছে মাত্র
    আহানা সুযোগ বুঝে সিগারেটটা আবারও দেখতে লাগলো,এটা মানুষ কেন খায়,এটার ধোঁয়া মুখের ভেতর নিলে কেমন ফিলিং হয়?এটা জানার খুব শখ আহানার,আর এখন মোক্ষম সুযোগ,এই সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না
    টুপ করে মুখে নিয়ে নিলো সে সিগারেট টা
    শান্তর মতো করে এক টান দিয়ে আবার বের করলো
    কিন্তু না,যতটা সহজ মনে করেছিল ততটা সহজ না বিষয়টা
    মুখের ভিতরে মনে হয় আগুন লেগেছে,দম বন্ধ হয়ে আসতেসে সাথে মনে হয় সব পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে
    মুখ থেকে ধোঁয়া সব বের করে কাশতে কাশতে আহানার নাকের পানি চোখের পানি একসাথ হয়ে গেলো
    পাশে থাকা ছেলেটা ফোন থেকে চোখ তুলে চেয়ে আছে ওর দিকে
    মেয়ে মানুষ সিগারেট খায় তা লাইভ দেখে নিলো,এমন জানলে সে আগেই একটা ছবি তুলে নিতো,আর ফেসবুকে পোস্ট করতো
    “”সব মেয়েরা এক,আমার এক্স সিগারেট খেতো আর আজ এই আপুটাও সিগারেট খাচ্ছে””
    ইস কেন যে পিক তুললাম না,এই জন্য হয়ত মা বলে সবসময় ফোনের ভেতর ডুবে থাকিস না,মাঝে মাঝে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিস,পেলেও পেতে পারিস ফেসবুকে দেওয়ার মতন পোস্ট!
    শান্ত পানির বোতল আর চিপস চকলেট নিয়ে এসে আহানার অবস্থা দেখে তাড়াহুড়ো করে সব হাত থেকে সিটের উপর রেখে আহানার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো কি হয়েছে,এমন কাশতেসো কেন??পানি খাবে?
    .
    আপনার জিএফ আপনার অবশিষ্ট সিগারেটটা খেয়ে নিয়েছে
    .
    কথাটা শুনে শান্ত চোখ কপালের সাথে লাগিয়ে আহানার হাত থেকে সিগারেটটা ফেলে পানির বোতল নিয়ে ওকে পানি খাওয়ালো,পকেট থেকে টিসু নিয়ে দিলো ওকে
    .
    ভাই ও আমার গার্লফ্রেন্ড নাহ ওকে?
    আহানা!তোমারে কি মাঝে মাঝে ভূতে ধরে?আর ইউ ম্যাড? মেয়ে হয়ে সিগারেট টেস্ট করার ইচ্ছা জাগছে তোমার?এখন হলো তো, মেয়েদের এসব সুট করে না জানো না তুমি?
    .
    আহানা মুখ মুছে শান্তর দিকে মুখ তুলে তাকালো,চোখমুখ রেড ভেলবেট কেকের মত হয়ে গেছে
    .
    শান্ত ফিক করে হেসে দিয়ে বললো আমি দিনে ৬/৭টা খেলেও আমার এমন অবস্থা হয় না আর তুমি কিনা একটার অর্ধেক খেয়ে চোখ মুখের এই অবস্থা করলে?
    আর খাবা?
    .
    জীবনেও না
    .
    গুড😂
    .
    ভাই?
    .
    হ্যাঁ বলো ভাই
    .
    পাবজি খেলবা আমার সাথে?
    .
    তাই নাকি,তাহলে তো ভালোই হয়,চলো খেলি
    শান্ত আর ছেলেটা পাবজি খেলে যাচ্ছে তো যাচ্ছে
    আহানা মুখ গোমড়া করে একবার ওদের দেখছে আবার সামনে থাকা মেয়েগুলোকে দেখছে আবার বাইরে তাকাচ্ছে
    অন্ধকারে বাইরে তাকিয়ে লাভ নেই কোনো,কিছুই দেখা যায় না,আহানা বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো
    .
    এই যে ভাইয়া
    .
    হ্যাঁ বলো আপু
    .
    আপনার গার্লফ্রেন্ড ঘুমিয়ে পড়েছে,মাথা জানালার বাইরে চলে গেছে টেনে কাছে নিয়ে আনেন নাহলে বিপদ হতে পারে
    শান্ত সাথে সাথে পাশে তাকিয়ে দেখলো তাই তো
    ওকে টেনে কাছে নিয়ে আসলো,আহানা ঘুমের ঘোরে শান্তর কাঁধে মাথা রেখে হাত নিয়ে ওর বুকের উপর রাখলো
    মেয়েগুলো মুচকি হেসে তাদের কাজে মন দিলো
    শান্ত লজ্জা পেয়ে ওর হাতটা নিয়ে ওর হাঁটুর উপর রাখলো তারপর আবার গেমস খেলায় মন দিলো
    ঢাকা ফিরতে ফিরতে রাত ৯টার উপর বেজে গেলো
    .
    বিড়াল যেমন সাউন্ড করে খাবার খায় ঠিক তেমন করে কে যেন খাবার খাচ্ছে,ঘুমের মধ্যে বেশ ভালোই টের পাচ্ছি আমি
    আহানা চোখ খুলে পাশে তাকালো,শান্ত চিপস খাচ্ছে দেখে মনে হচ্ছে ভাতের লোকমা ধরে খাচ্ছে,পেটুক কোথাকার!
    আহানা আরেকটু ভালো করে চেয়ে দেখলো তার মাথা শান্তর কাঁধে
    বাতাসের গতিতে ছিঁটকে সরে গেলো সে
    শান্ত খাওয়া বন্ধ করে ওর দিকে তাকিয়ে এমন একটা ভাব নিলো যে যত্তসব ঢং বুঝালো
    আহানা ব্র‍ু কুঁচকে বললো আমাকে কি বললেন?
    .
    তুমি যেটা ভাবলে সেটাই বললাম,ধরো
    .
    আমি চিপস খাবো না
    .
    তোমাকে আমি খেতে দিই নাই,প্যাকেটটা তোমার ব্যাগে রাখো ফ্ল্যাটফর্মে আসলো ময়লার ঝুড়িতে ফেলবা
    .
    ইহরে এত কষ্ট আমি কেন করবো?খেয়েছেন আপনি,ফেলবেন ও আপনি
    .
    শান্ত গাল ফুলিয়ে প্যাকেটটা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিলো
    সামনের মেয়েগুলো হাসতেসে ওদের ঝগড়া দেখে
    .
    চলো!
    .
    কোথায়?
    .
    আপনার শ্বশুরবাড়ি এসে গেছে
    .
    মানে?
    .
    ঢাকা!!চলেন,ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন এসে গেছে,নেমে আমাকে ধন্য করুন আহানা ম্যাডাম
    .
    আহানা মুখ বাঁকিয়ে শান্তর পিছন পিছন গেলো
    .
    মামা যাবেন?৩০০টাকা? কিন্তু আমি তো ২০০দিয়ে আসছি,ওকে সমস্যা নাই
    আহানা চলো
    দুজনে একসাথে সিএনজিতে উঠে পড়লো
    আহানা ফিসফিস করে বললো এই শুনুন,আপনার বাসা তো আমার বাসা থেকেও দূরে তাহলে তো ৩০০টাকাই ভাড়া হবে,আপনি এমন ভাব করলেন কেন যে ২০০টাকা ভাড়া?
    .
    আরেহহ আমি তোমাকে তোমার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে সেখান থেকে রিকসা নিয়ে বাড়ি যাব,সোজা আমার বাসায় সিএনজি যাবে না,ভিআইপি এরিয়া তো
    .
    আপনি বুঝি ভিআইপি?
    .
    ভিআইপি ২কারণে বুঝানো হয়
    ১.নেতা হলে
    ২.টাকার জোর থাকলে
    .
    আপনার কোনটা?
    .
    ২নাম্বারটা
    .
    ইহহহহহহহহ
    .
    চুপ!
    সিএনজি থেকে নেমে শান্ত পকেটে হাত দিতেই আহানা ২০০টাকা লোকটাকে দিয়ে এক দৌড় দিলো
    .
    আরে আহানা,আমি দিতাম,তুমি দিসো কেন?
    .
    আপনার ২হাজার টাকা তো শোধ করতে হবে তাই না?
    আহানা মুচকি হেসে চলে গেলো
    .
    শান্ত ও হাসলো,আমার টাকা আমাকেই ফেরত দিয়ে আমারই ঋণ শোধ করছে?বোকা মেয়ে
    শান্ত রিকসার খোঁজে হাঁটা ধরলো
    .
    এই যে শুনুন!
    .
    শান্ত থেমে গিয়ে পিছন ফিরে আহানার দিকে তাকালো
    .
    তোমাকে বলসি না আমাকে এমন করে ডাকবা না?তুমি কি আমার বউ?
    .
    😒চা খাবেন?
    .
    সেটা হলে তো ভালো হয়,তোমার মত জঙ্গলিকে এতদূর সহ্য করে নিজের কাঁধে ঘুমাতে দিয়ে এনেছি,শুধু চা না সাথে বিসকিট ও খাওয়াতে পারো
    .
    আসেন
    .
    শান্ত ছুটতেই আহানা আবার থামিয়ে দিলো ওকে
    .
    আবার কি?
    .
    যান দুধের গুড়ি,আর চা পাতা আনেন,বাসায় নেই,এই নেন ১০০টাকা,মিনি প্যাক গুলো আনবেন
    .
    তুমি এমন করে আমার টাকা ফেরত দিচ্ছো?
    .
    হুম😁
    চলবে♥
    (একটা কাজে ব্যস্ত থাকবো সারাদিন,,তাই এখন গল্প দিয়ে দিলাম)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here